আমার প্রেমিকাগন

তাঁরা প্রত্যেকেই একদিন নিজ থেকে সরে গিয়েছেন,
আমার মনে ভালবাসার জোয়ার নামিয়ে,
দেহে প্রেমের আন্দোলন তুলে।
আমি তাঁদের কারো পথ আটকাইনি,
অথবা জিজ্ঞাসা করিনি-
কেন ছেড়ে যাচ্ছো আমায়?

শুধু নির্লিপ্ত ভাবে
তাঁদের চলে যাওয়া দেখেছি
আর মনে মনে বলেছি: ভাল থেকো।
ভাল থেকো গানের পাখি
ভাল থেকো সান্ধ্য প্রদীপ
ভাল থেকো নীল পরী।

অনেক চেষ্টা করেও তাঁদের কাউকে
এতটুকু ঘৃণা করতে পারি নাই
কোন অভিশাপ দিতে পারি নাই
সামান্য ক্রোধও দেখাতে পারি নাই
কটুক্তি করা বা সম্মানহানিকর কথা বলা
সেতো আরও দুরের কথা,

বরং দূর থেকে প্রত্যেককে
সাধ্যমত আশীর্বাদ করে গেছি
আর মনে মনে বলেছি: সুখে থেকো।
সুখে থেকো গানের পাখি
সুখে থেকো সান্ধ্য প্রদীপ
সুখে থেকো নীল পরী।

কারন, হয়তো পেয়েছি যে অনেক কিছুই
এই যেমন সুসময়ে অনেক অনেক
উষ্ণতা-আলিঙ্গন-চুম্বন-খুনসুটি
আবার বিদায় বেলায় কিছু কিছু
অবজ্ঞা-উপেক্ষা-নিষ্ঠুরতা-রূঢ়তা
আরও কত কত কি…

আমি জানি তোমরা সবাই
চলে গেছো দূরে, অনেক অনেক দূরে-
আর সুখেই আছো নিজ নিজ শান্তিনীড়ে
কিন্তু পেছনে ফেলে গেছো কতিপয় সুখ-স্মৃতি।
আমি এখন ঐসব সুখস্মৃতি রোমন্থন করি
পারবে কি কখনো, ওগুলি নিয়ে যেতে সাথে?

নারীরা চলে যায়, রেখে যায় স্মৃতি
একাকি বসে সেইসব স্মৃতি নাড়াচাড়া করি
আর মনে মনে বলি “এখনো ভালবাসি”
ভালবাসি গানের পাখি
ভালবাসি সান্ধ্য প্রদীপ
ভালবাসি নীল পরী।

১,১০৩ বার দেখা হয়েছে

১৭ টি মন্তব্য : “আমার প্রেমিকাগন”

  1. সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

    আহা! ভালবাসার সাথে সাথে এমন আশীর্বাদ করনেওয়ালা প্রেমিকপ্রবর ছেড়ে তোমার প্রেমিকারা কি পেলো তাই ভাবছি! সমবেদনা জানানোর ভাষা আমার নাইগো, ভাইয়া! 😉

    প্রেমিক অনেকই মেলে, কিন্তু সকলেই কবি নয়! তোমার প্রেমিকাগণের কল্যাণে আমরা এট লিস্ট একজন কবি ভাইয়া পেয়েছি! 🙂 🙂

    জবাব দিন
    • পারভেজ (৭৮-৮৪)

      হিন্দি ফিল্মের একটা জনপ্রিয় ডায়লগ "কুচ পানে কি লিয়ে কুচ খোনা কি জরুরাত হায়"।
      তাই বলে কবি হতে প্রেম বিসর্যন?
      একটু বেশী হয়ে গেল না?
      তাছাড়া আরেক কবিই তো আবার বলে গিয়েছিলেন, "ভালবাসাহীনতায় কে বাচিতে চায় রে, কে বাচিতে চায়..."

      চলো, সবই ঠিক আছে। সবই চলবে আরকি...


      Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

      জবাব দিন
  2. মামুন (১৯৮৪-১৯৮৪)

    আমি শুধু নির্লিপ্ত ভাবে
    তাঁদের চলে যাওয়া দেখেছি
    আর মনে মনে বলেছি: ভাল থেকো- সুন্দর অনুভূতিতে প্রগলভ হলাম!
    আপনার লিখনির অনুভূতিতে নাড়া দিয়ে যাবার ক্ষমতা সত্যিই অসাধারণ ভাই।
    শুভকামনা রইল। :clap: :clap:


    নিজের মনের আনন্দে লিখালিখি করি।

    জবাব দিন
    • পারভেজ (৭৮-৮৪)

      মামুন,
      থ্যাংক ইউ ভাই।
      হয়তো এটা ঠিক, তারা কেউ কেউ আসলে চলে যেতে চায়নি,
      চলে যাবার কথা বলে দেখতে চেয়েছে, আমি তাঁদের আটিকাতে চাই কিনা।
      সমস্যা হলো
      আমি মানুষের স্বাধীনতায় বিশ্বাসি।
      কারনে হোক বা অকারনে, কেউ নিজ থেকে চলে যেতে চাইলে তার সেই ছেড়ে যাওয়ার অধিকারে হস্তক্ষেপ করতে মন টানে না।
      তা সে যাওয়ায় যত কষ্টই পাই না কেন?
      খুব বেশী কিছু দেবার সামর্থ নিয়ে তো আর পৃথিবীতে আসি নাই, তাই যা যা পারি, এই যেমন ব্যক্তি-স্বাধীনতায় স্বীকৃতি দেয়া - সেটাই দেবার চেষ্টা করি।
      থাকুক না মানুষ বন্ধনহীন কিছুটা সময় হলেও, সারাটা জীবনইতো নানা বন্ধনে কাটবে, আমি নাহয় ঐ বন্ধনহীনতার উপলক্ষই হলাম...


      Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

      জবাব দিন
  3. নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

    অসাধারণ লাগলো পারভেজ ভাই।
    তবে পুরো লেখাটার দিকে তাকিয়ে কেমন অনুবাদ অনুবাদ মনে হচ্ছে।
    আমার মনে হচ্ছে এটা একটানে লেখা - হয়তোবা আপনার আর সব কবিতার মতই। আমি বলবো, লেখা হয়ে যাবার পর ঘোরটা একটু কেটে গেলে লেখায় ফিরে গিয়ে আরেকটু ঘষামাজা করলে দ্যুতি আরো ঝলকাবে। যেমন, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় প্যারার শুরুতে 'আমি' না বসালেও অর্থের কোন পরিবর্তন হচ্ছেনা -- আমার বিবেচনায় না বসালেই যেন আরেকটু নান্দনিক ঠেকে।
    তবে আলোচনার উপলক্ষ্য হওয়াটাই মূল কথা। ভাবাবার মতো লেখা পেলে ভালো লাগে এটাই আসলে বলতে চাওয়া।
    কিছু বানান ঃ পাখি (প্রমিত বানানে হ্রস্ব-ই কার)
    প্রদীপ
    আশীর্বাদ
    শান্তিনীড় (নীর মানে পানি)

    জবাব দিন
  4. পারভেজ (৭৮-৮৪)

    প্রথমেই নূপুরের কথার উত্তর দেই।
    বড় লেখক নই বলেই আমার লিখা পয়সা খরচ করে কেঊ পড়বে না জানি। তাই পাবলিশার ও পাবো না। তার পরেও ব্লগে লিখি, যেটুকু সামর্থ আছে, তা পরখ করতে, যে তা নুন্যতম খরচে কারো পড়ার উপযুক্ত কিনা, জানতে। তাই কেউ সেটা পড়লেই বর্তে যাই।
    পড়ার পর একটি কষ্ট করে কিছু লিখলে তো রীতিমত মুগ্ধ হয়।
    আরেকটু কষ্ট করে এডিট করার পর যে খুশিতে আর কি কি করবো, খুজেই পাই না।
    সেইখানে এডিট সাজেস্ট করাকে অনভিপ্রেত বা অযাচিত ভাবার মত এতটা ইগোইস্ট হওয়া সম্ভব না।
    সময় নিয়ে কষ্ট করে দেখেছো, কারেকশন সাজেস্ট করেছো - অনেক অনেক খুশী হয়েছি। অন্যদের জন্যেও একই উপদেশ। যেকোন কারেকশন সাজেশন মোস্ট ওয়েলকাম।

    হ্যা রাজিব, ঐ অলক ভাই ই। আমরা ভাবতাম উনি একটু অন্য রকমের অভিমানি। কিন্তু পরে সেইটাই বাই পোলার ডিজর্ডার হিসাবে ডায়োগনাইজড হলো। সাদা চোখে উনি যা করেছেন, সেটা কে অনেকেই তোমার মতই আত্মহত্যা বলেই ভাববে। কিন্তু আমার ধারনা ওটা ওনার ঐ অসুস্থ্যতার একটা টার্মিনাল আউট কাম। স্বাভাবিক অবস্থায় বা চিকিতসায় থাকা কালে উনি খুবই আশাবাদি, উদ্দোগি ও ক্রিয়েটিভ একজন মানুষ ছিলেন। সফলও ছিলেন। ঐ অসুস্থ্যতা ছাড়া ওনার আত্মহত্যার আর কোন কারন ছিল না।


    Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : পারভেজ (৭৮-৮৪)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।