বিশ্বকাপ দেখাদেখির অভিজ্ঞতা

ভাবছি বিশ্বকাপ দেখাদেখির অভিজ্ঞতা নিয়ে একটা অনুব্লগ লিখে ফেললে কেমন হয়?

২০০৬ সালেও ফ্ল্যাট টিভি মোটামুটি আধুনিকই একটা জিনিষ। সবার নাই। গড় পড়তা মানুষের মত আমার বাসাতেও ২৫ ইঞ্চি সাধারন এক টিভি আর বেডরুমের জন্য ১৪ ইঞ্চি একটা মিনি টিভি। বিশ্বকাপ শুরুর আগের দিন সন্ধায় হাটতে বেরিয়েছি। মালিবাগ চৌরাস্তায় সনি র‍্যাংগস শো রুমে দেখি ২৯ ইঞ্চি ফ্ল্যাট টিভিতে বিশ্বকাপের প্রমো চলছে। হঠাৎ মনে হলো, এইরকম টিভিতেই যদি খেলা না দেখতে পারি তো কিসের খেলা দেখা?,

প্রায় দেড় মাসের আয়ের সমান টাকা দিয়ে ক্রেডিট কার্ডে কিনে ফেললাম টিভিটা। ২৯ ইঞ্চি সি আরটি টিভি বিশাল জিনিষ। রিকশা, বেবীতে ধরে না। ভ্যানে তুলে দিয়ে হেটে বাসায় চলে এলাম।

সঙ্গত কারনে কাউকে বলতে পারছি না অনেকটা ভয়ে ভয়ে। দু-দুটো টিভি থাকতে আবার টিভি, ঝাড়ি একটাও মাটিতে পড়বে না। রাত দশটার দিকে টিভি এসে পৌছুল। দেখেতো আমার স্ত্রী চরম বিরক্ত। এত বড় টিভি কোথায় লাগাবো? কেনই বা লাগবে?

যাহোক ঐ সব ইমোশনাল কথা বলে রাজি করালাম টিভি প্রবেশে কিন্তু কঠিন আদেশ জারী হলো, ওটা বেডরুমে ঢোকানো যাবে না। একদিকে খুশি যে রাতে একা একা সিগারেট খেতে খেতে খেলা দেখা যাবে। অন্যদিকে মন খারাপ, একা একা খেলা দেখতে হবে। শুনসান নিরবতায় খেলা দেখতে হবে। খেলা দেখার সময় একটু চিল্লা পাল্লা, গল্পগুজব না হলে জমে নাকি?

খেলা দেখা নিয়ে যখন এই টানা পোড়েন চলছে, ব্রাজিল গেল ছিটকে। আম ছালা দুই নিয়ে কি যে টানাটানি, কে দেখে তা? কে রাখে তার খবর?

তার আগের মানে ২০০২-এর বিশ্বকাপ বেডরুমে শুয়ে শুয়ে দেখার সুবিধার জন্য কিনে এনেছিলাম এক ১৪ ইঞ্চি নিপ্পন টিভি। কি বিশ্রি জিনিষরে বাবা। আজ শব্দ থাকেনা তো কাল রঙ থাকেনা অবস্থা। তবুও ব্রাজিল চ্যাম্পিয়ান হলো বলে রক্ষা। ঐসময়ে এমআইএসটিতে এবং মেসে থাকার কারনে এনটে রুমেও অনেকগুলো খেলা দেখেছিলাম। তবে বেশির ভাগই একাএকা।

৮২ সালের বিশ্বকাপ যখন হয় তার, আগ পর্যন্ত বাসায় ব্ল্যাক এন্ড হোয়াইট টিভি। বিশ্বকাপ উপলক্ষে কালার্ড টিভি কেনা হলো। সাদাকালোয় অভ্যস্ত চোখে রঙ্গিন টিভিতে যখন খেলা হতে দেখতাম, মনে হতো, টিভিতে না মাঠে বসেই যেন খেলা দেখছি। কি যে মনোরম সে দৃশ্য, আজন্ম রঙ্গিন টিভি দেখা প্রজন্ম সেটা কোনদিনও বুঝবে না।

৮৬ তে তো প্রায় পুরোটাই বিএমএ-তে এনটে রুমে খেলা দেখা। ওখানকার রিসিপশন ততটা ভালো ছিল না। ঝিলমিল স্ক্রিনে কষ্টই হয়েছে দেখতে। কিন্তু সব কোর্সমেট একসাথে বসে হৈহুল্লোড় করে খেলা দেখাটা অনেকটা স্টেডিয়ামে খেলা দেখার মত। ৯০ আর চুরানব্বুই এর কথাতো আগেই বলেছি। নতুন করে আর বললাম না।

৯৮-এর বিশ্বকাপের সময়ে আমার পোস্টিং সাভারে। হলে কি হবে, তখন চলছে আশ্রয়ন প্রকল্পের কাজ। ভূমিহীনদের জন্য ব্যারাক হাউজ নির্মান। সফিপুর থেকে ৫-৬ কিমি উত্তরে ভুলুয়া নামক এক অজপাড়া গায়ে আমার দায়িত্ব পড়লো সৈনিক সহ ক্যাম্প করে ব্যারাক হাউজ নির্মানের। টেন্টে বসে বসেই ছোট্ট এক টিভিতে আবারো একা একা বিশ্বকাপ দেখা।

২০১০-এ এখন যে বাসায় আছি সেখানেই দেখলাম বিশ্বকাপ। তাও বেশিরভাগ সময়েই একা একা। ভেবে দেখলাম, এই একা একা বিশ্বকাপ দেখাটা আমার পিছু ছাড়ছেই না।

এইবার কি আছে কপালে কে জানে?

তবে এইবার একটা ভাল জিনিষও আছে। আমার ক্লাসগুলি দুপুর বা তার পরে। যতরাত পর্যন্তই হোক খেলা দেখা নিয়ে কোন টেনশন নাই। যখন যেদিকে আওয়াজ পাবো, উড়াল দিয়ে চলে যাবো সদলবলে খেলা দেখতে, দেখি কে আটকায়! “পারলে ঠেকা”

এবারের মটো হবে:

থাকবো না আর বদ্ধঘরে
দেখবো এবার বিশ্বকাপটারে…

৩৯ টি মন্তব্য : “বিশ্বকাপ দেখাদেখির অভিজ্ঞতা”

  1. মোকাব্বির (৯৮-০৪)

    চিন্তা করছি ক্লাশ রুমের প্রজেক্টরগুলোকে ব্যবহার করে বিগ স্ক্রীন বানিয়ে খেলা দেখবো! কেউ বাগড়া না দিলেই হয়। লাইভ স্ট্রিমিং লাগবে। দেখা যাক!

    ৯৮ বিশ্বকাপ পর্যন্ত দেখেছি ২০ ইঞ্চি রঙীন নিপ্পন টিভিতে। তারপরে দুই ভাইয়ের আবদারের পর ৯৯তে কেনা হলো সনি ২১ ইঞ্চি রঙীন টিভি। সেবার মনের সুখে বিশ্বকাপ ক্রিকেটটাও দেখা হলো। সেটা এখনো জীবিত আছে। ভাইয়া বিয়ে করার পরে ২৫ ইঞ্চি আরেকটা সনি এল ঘরে। এরা সবাই বাক্স। তখনো ফ্ল্যাট স্ক্রীন কেনা হয় নাই। দেখি এবারে ভাবছি গিয়ে ফ্ল্যাট কিছু কেনা যায় কিনা। 🙂


    \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
    অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

    জবাব দিন
    • পারভেজ (৭৮-৮৪)

      এইবার বাসায় এইচডি দেখা যায় এরকম টিভি আছে কিন্তু কানেকশন নাই। কানেকশন নিতে পারলে দেখাটা জম্পেস হতো...
      কি আর করা, এনালগ সিগনালই দেখতে হবে এলইডি টিভিতে। (সম্পাদিত)


      Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

      জবাব দিন
      • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

        টেকনিকাল প্রশ্ন। আমি ঠিক বুঝি না। শুনেছি এইচডি টিভির মজা নেয়ার জন্য এইচডি চ্যানেল লাগে। বাঙলাদেশের কোন চ্যানেল কি এইচডি সাপোর্টেড? বাইরের যেগুলো আসে সেগুলো কি এইচডি? জানি না।


        \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
        অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

        জবাব দিন
        • পারভেজ (৭৮-৮৪)

          এখানে এখন যে এইচডি চ্যানেলগুলা আছে তারা এইচডি সিগনাল পাঠায় কিন্তু আমাদের অপারেটরদের কাছে তা রিসিভ করার ইন্টারফেস নাই। এইজন্য লোকাল অপারেটররা যা সার্ভ করে তা ১০০% এনালগ, ০% ডিজিটাল।
          ডিজিটাল এইচডি বা থ্রীডি দেখতে হলে ইন্ডিয়ান সেট টপ বক্স কিনতে হবে। এটা পাবলিকলি এভেলেবল না, ব্ল্যাক থেকে কিনতে হয় যা একটা বিরাট সমস্যা।


          Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

          জবাব দিন
  2. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    দারুন একটা আইডিয়া পারভেজ ভাই, দেখাদেখির ইতিহাস।

    ৯০ এ থাকতাম অনেকটা যৌথ পরিবারের মত, পিলিপস এর ২০ ইঞ্চি সাদাকালো টিভিতে সবাই মিলে খেলা দেখার আলাদা মজা ছিল। ৯৪ এর বিশ্বকাপের আগে বাসায় আসলো নতুন ২৪ ইঞ্চি রঙ্গীন টিভি, তবে এবার বেশিরভাগ খেলা দেখেছি শুধু আমি আর আব্বু মিলে, আম্মু থাকতো নিস্ক্রিও দর্শক হিসেবে। ৯৮তে বেশিরভাগ খেলাই দেখা হয়েছে কলেজে, অথরিটি সদয় থাকায় অনেকগুলো খেলাই দেখা হয়েছে, কমন রুমে পতাকা ব্যানার লাগিয়ে একাকার। ফাইনাল দেখেছিলাম বাসায় বসে, আমার ছোট ভাইয়ের বয়স তখন পাঁচ, মমে আছে ওকে জোর করে জাগিয়ে রেখেছিলাম খেলা দেখার জন্য, নিয়মিত ওর জন্য স্পেশাল ধারাবিবরনী দিচ্ছিলাম কিন্তু হাফ টাইমের পরে আর পারিনি।

    ২০০২ ও একই অবস্থা, প্রথম ভাগ কলেজে শেষের ভাগ বাসায়। আমাদের তখন এইচএসসি চলে, পুরো কলেজ ছুটি তাই খেলা দেখায় কোন সমস্যা হয়নি, কয়েকটা খেলা অবশ্য অন্য ক্যাডেটরা আসার পরেও পেয়েছিলাম।

    ২০০৬ এ যমুনা সেতুতে, ডিস সার্ভিস ছিল না, মেসের ডিস টিভি কানেকশনই ছিল ভরসা। সবাই মিলে একসাথে রাতভর খেলা দেখা আর সাথে চা-পানি খাওয়ার অভিজ্ঞতাও ছিল দারুন।

    ২০১০ এও মেসে আর মাঝে এক সপ্তাহ এক্সারসাইজে রাজেন্দ্রপুরের জঙ্গলে(ওই গ্লপ আগে বলে ফেলেছি)

    এবার প্রথম বিশ্বকাপ দেখবো নিজের কেনা টিভিতে, ৪০ ইঞ্চি এলএডি 😛 কিন্তু এবারই মনে হয় প্রথমবারের মত বেশিরভাগ খেলাই একা একা দেখতে হবে, তর্ক জমানোর জন্য ব্লগ ফেসবুকই ভরসা 🙁


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  3. নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

    :clap: :clap: :clap:
    '৯০ এ আমরা তখন এইচএসসি দিচ্ছি। কিছু খেলা পরীক্ষার্থী ব্যাচ হিসেবে আমরা নিজেরাই দেখলাম কলেজে। কিছু খেলা মিস করলাম সংক্ষিপ্ত ভ্যাকেশনে বাসায় বাবার কড়াকড়িতে --- সবাই খেলা দেখছে, আমাকে নাকি ঘুমিয়ে পড়তে হবে।

    তারপর কলেজে যখন ফিরে এলাম -- একটা লেটনাইট ম্যাচ -- বোধহয় ব্রাজিলের গ্রুপ পর্বের কোন একটা -- দেখার অনুমতি মেলেনি প্রিন্সিপালের অফিস থেকে শেষপর্যন্ত (তখন ঢালাওভাবে অনুমতি দেয়া থাকতোনা, কলেজ প্রিফেক্ট বা সিনিয়র টিচারের দূতিয়ালিতে আদায় হতো --- বেশ একটা টানটান উত্তেজনা থাকতো আজকের ম্যাচ দেখতে পাচ্ছি কি পাচ্ছিনা তা নিয়ে।) তো, আমরা ঠিক করলাম ম্যাচটা দেখবোই। হাউজের নানান 'গুরুত্বপূর্ণ' বিষয় নিয়ে আলাপ করবো বলে রাতে লাইটস অফ এর ঠিক আগে আগে হাউস মাস্টারের (বাংলার হুমায়ূন কবীর স্যার) কাছে সবাই মিলে গেলাম। আমাদের সবাইকে কলেজ ছাড়ার আগে আগেও হাউস নিয়ে এতো ভাবিত দেখে স্যার বেশ আবেগপ্রবণ আর বিগলিত হয়ে গেলেন -- এদিকে আমাদের উদ্দেশ্য ছিলো হাউজ বেয়ারা এসে সব জানলার (কাঁচ আর নেট দুটোরই) ছিটকিনি চেক করে যাবার পরই কোন একটাকে undo করা। 😀 তখন এফসিসিতে জানলায় কোন গ্রিল ছিলোনা (এখন শুনেছি হয়েছে)। ও হ্যাঁ, রাতে টিভিরুম থেকে টিভি হাউস মাস্টারের রুমে নিয়ে আসা শুরু হয়েছিলো বিশ্বকাপজনিত শৃংখলাভঙ্গ রোধ করা জন্য। :khekz: :khekz:

    তো যথাসময়ে টিভি বের করে খেলা দেখে নির্বিঘ্নে টিভি যথাস্থানে রেখেও এসেছিলাম কোন অঘটন ছাড়াই। কয়েকদিন পরেই আমাদের উদাহরণ অনুসরণ করতে গিয়ে এফসিসির বর্তমান প্রিন্সিপালের হাউসের পোলাপান (নজরুল হাউস) বিশাল ধরা খেলো। :duel: :duel: :duel:

    জবাব দিন
    • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

      আজ খেলা দেখা যাবে কিনা এই উৎকন্ঠায় আমরাও থেকেছি। এই উৎকন্ঠায় থাকারো এক ধরণের মজা ছিল কি বলেন? ইদানিং শুনেছি প্যাকেজ পারমিশান দেয়া থাকে। সময়মত দেখতে বসে যাও। পারমিশান না মিললে লুকিয়ে খেলা দেখার মজাই তো থাকলো না! 🙂


      \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
      অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

      জবাব দিন
      • নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

        আমার মতে বিশ্বকাপের প্রতিটা ম্যাচ দেখতে দেয়া উচিত। এটাকে একটা শিক্ষণীয় ব্যাপার হিসেবে গণ্য করা উচিত। অন্যান্য একাডেমিক ব্যাপারগুলোকে একটু এডজাস্ট করে নিলেই তো হয় -- চুরি করে খেলা দেখার অনেক ঝুঁকিও তো আছে।

        জবাব দিন
        • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

          এখন শুনেছি তাই করে। একাডেমিক স্বার্থে করে কিনা বলতে পারছি না তবে লীগ পর্যায়ের ফাইনালের অনুমতিও নাকি খুব সহজেই মিলে। তবে যেটা বললেন খেলাগুলো দেখতে দেয়ার মাঝে শিক্ষণীয় বিষয়টাই মূল।


          \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
          অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

          জবাব দিন
    • আমিন (১৯৯৬-২০০২)

      নুপূরদা, এইচএসসি পরীক্ষার্থী হিসাবে বিশ্বকাপ পাওয়াটা কিছুটা মজার এবং কিছুটা মিশ্র ভাগ্যের। ২০০২ সালে আমরা যখন এইচএসসি পরীক্ষার্থী তখন বিশ্বকাপ হয়। সেইসময়, পুরো কলেজ ভ্যাকেশনে ছিলো শুধু আমরা এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা ছিলাম। সেই দিন গুলো খুবই দারুণ ছিলো। বিশ্বকাপ শুরুর আগেই আমাদের প্রায় সব পরীক্ষা শেষ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বাদ সাদে বিশ্বকাপ শুরুর একদম পরেরদিনই কেমিস্ট্রী ২য় পরীক্ষা থাকায়। ঘটনা ক্রমে আমাদের হাউস মাস্টার রসায়নের বিখ্যাত রাখাল স্যার। সেনেগাল ফ্রান্সের স্মরনীয় খেলার মাঝে মাগরিবের আযান পড়লে তিনি টিভি রুম বন্ধ করে দেন। শত দেন দরবার করেও আমরা শেষ ২০ মিনিট মিস করি। তারপরের দিন গুলো ছিলো উত্তাল। কারণ ম্যাথ পরীক্ষার আগে বেশ লম্বা গ্যাপ। আমি এবং আড়ো কয়েকজন বালিশ টিভির রুমে রেখে দিতাম। সারাদিন খেলা দেখা চলত। আড় চলতো আম চুরি। রাতে সেই আম ভর্তা বানানো হত।

      ক্যাডেটরা ভ্যাকেশন থেকে চলে এলে অবশ্য সমস্যা হয়ে যায়। তখন রেগুলার একটিভিটিতে এটেনড করতে হতো বলে কয়েকটি খেলা মিস হয়ে যায়। তারপরেও সব মিলিয়ে চারটির বেশি খেলা মিস হয় নি। খারাপ লাগত যখন প্রেপের টাইম হতো আমরা টিভির রুম আটকে খেলা দেখতাম এবং রেগুলার ক্যাডেটরা প্রেপে যেত। ঐ সময় সুযোগ বুঝে কেউ ঢুকবার চেষ্টা করলে তাদের তাড়ানোর ডার্টি জব আমাকে করতে হত। বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের আগে অবশ্য আমরা কলেজ থেকে চলে আসি। মনে আছে আমাদের ফেয়ারওয়েল ডিনারের আগে আমরা তুরস্ক আড় সেনেগালের খেলা দেখে তারপরে সেখানে এটেন্ড করি।
      অবশ্য জাপান কোরিয়াতে খেলা হওয়ায় টাইম জোন আমাদের যথেষ্ট সাহায্য করেছিল।

      জবাব দিন
  4. পারভেজ (৭৮-৮৪)

    শুনলাম সনি সিক্স এইচডি-তে বিশ্বকাপ লাইভ দেখাবে।
    গেটিং সনি সিক্স এইচডি টুমরো। 🙂
    এইবার দেখি, ৪২ ইঞ্চি এলইডি টিভিতে লাইভ ওয়ার্ডকাপের এইচডি কাভারেজ দেখতে কেমন লাগে? 😀


    Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

    জবাব দিন
  5. মোকাব্বির (৯৮-০৪)

    কথাটা বলার জন্য জায়গা খুঁজছিলাম। আপাতত আপনারটায় বলি, রোনাল্দোর ১৫ গোলের রেকর্ড এবার আশা করা যায় ভেঙে দিচ্ছে ১৪ গোলে বসে থাকা ক্লোসা! নিজে ও দল ঠিক মত খেললে বেশ কঠিন একটা রেকর্ড গড়বে বলে আমার মনে হচ্ছে।


    \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
    অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

    জবাব দিন
    • আহসান আকাশ (৯৬-০২)

      আপনাকে একরাশ হিংসা পারভেজ ভাই 🙁

      আমি দেশি পন্য দেখে ধন্য, মাছরাঙ্গা দেখি 🙂


      আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
      আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

      জবাব দিন
    • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

      প্রথম কথা দিনের বেলা আয়োজন স্ট্র্যাটেজিক ভুল। রঙ ও বাহারের ৬০% নাই হয়ে গেসে লাইটিং ও আতশবাজির অনুপস্থিতিতে। দ্বিতীয় কথা খুবই আনাড়ি লাগলো সব কিছু। হতাশ হইলাম বিশ্বের সর্ববৃহৎ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের এই হাল দেখে।


      \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
      অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

      জবাব দিন
    • নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

      পারভেজ ভাই,
      আপনি তো পুরাই মাঠে চলে গেছেন।
      আমার টিভি বড় হওয়া সত্ত্বেও কম্পিউটারেই মাগনা খেলা দেখবো। চান্দা দিয়ে দেখার ইচ্ছা নাই।
      তবে বড় পর্দায় দেখার খায়েশ ছিলো।

      জবাব দিন
      • পারভেজ (৭৮-৮৪)

        "চান্দা দিয়ে দেখার ইচ্ছা নাই।"
        আমার জন্যেও এইটা একটা কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু পরে ভেবে দেখলাম, চার বছর পরে আসা এতবড় একটা টুর্নামেন্ট, সেই তুলনার ইনক্রিমেন্টাল কস্ট খুবই সামান্য: মাত্র ১০০০ টাকা। মানে বছরে ২৫০। মাসে বিশ টাকা। পাওয়া যখন যাচ্ছে সুযোগটা, সদব্যবহার করি-ই। 🙂


        Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

        জবাব দিন
        • নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

          বস,
          আমার বাসায় কেবল কানেকশন নেই। এখন নতুন করে নিতে গেলে ২ বছরের জন্য বাঁধা পড়তে হবে। প্রতিমাসে খরচ ৬০-৭০ ডলার বেড়ে গিয়ে দুইবছরে কত দাঁড়াবে হিসেব করে দেখেন একবার। 😀
          তবে ট্যাব থেকে মিরর শেয়ারিং পদ্ধতিতে খেলা টিভিতে ফেলে দেখবো। আজ পর্যন্ত কাজে থেকে খেলা দেখছি।

          জবাব দিন
          • পারভেজ (৭৮-৮৪)

            বাপরে বাপ। মাসে ৬০-৭০ ডলার? এতো ভয়ঙ্কর কস্টলি।
            আমরা যে কি সস্তায় টিভি দেখি, ভাবাই যায় না!!!

            তাছাড়া ফ্রী পেলে পয়সা দিয়ে দেখার দরকার কি?
            ঠিকই আছে।
            (সম্পাদিত)


            Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

            জবাব দিন
            • নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

              বিভিন্ন কেবল কোম্পানির বিভিন্ন রেট আর প্যাকেজ। এক মাসের জন্য নেয়া গেলে ভালো হতো -- কিন্তু তার উপায় নেই। দুই বছরের জন্য বাঁধা পড়তে হয় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে। এরা মোটামুটি চুষে খায় গ্রাহকদের। ফার্স্ট রাউণ্ড তো ফ্রি দেখতে পারব, তারপরের গুলো লিগালি দেখতে গেলে কিনতে হবে।

              জবাব দিন
              • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

                স্থানীয় পানশালায় সন্ধ্যায় ঢুঁ মেরেছিলাম। দুটো টিভি। ফাঁকা দেখে ফুটবলের চ্যানেল খুঁজে ছেড়ে দিলাম। কিছুক্ষণ পরে গোটাকতক সফটবল খেলে আসা ছেলেমেয়ে গর্জন করার মাঝে বললো, mind if I switch to Hockey? সেই যে ছুটলো আর পাওয়া গেলনা। আরেকটাতে চলছিলো এনবিএ তৃতীয় ফাইনালের হাইলাইট্স। পুরোনো খেলা দেখার কি আগ্রহ। পরে বাসায় ফেরত এসে পড়লাম। ভাবছিলাম, এই ভালবাসাটুকু ফুটবলে দিলে আমেরিকা সম্ভবত বেশ কয়েকবার বিশ্বকাপ জিততো।


                \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
                অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

                জবাব দিন
  6. পারভেজ (৭৮-৮৪)

    দুইটা হিসাব:
    ১) একসময় আমার আব্বার সাভারে ১৫ কাটা জমি ছিল। সত্তরের শেষ বা আশির গোড়ায় তিনি তা ৬০ হাজার টাকায় বিক্রয় করেন। কিছুদিন পরে হাজার বিশেক টাকা দিয়ে একটি কালার্ড টিভি কিনে ছিলেন। তার মানে ৫ কাটা জমির বিনিময়ে একটা রঙ্গিন টিভি। ঐ জমির এখনকার বাজার দর কাটা প্রতি কমপক্ষে ১০ লাখ। সেই হিসাবে আমরা ৫০ লাখ টাকার টিভিতে ৮২ বিশ্বকাপ দেখেছিলাম।
    ২) আশির দশকে শোনা গেল ভারতের টিভি দেখা যাবে ঢাকায় বসে। তবে এই জন্য হাড়ি-পাতিল লাগানো এক বিশেষ ধরনের এন্টেনা লাগাতে হবে। দাম সাড়ে তিনশো টাকা। সোনার ভরি তখন চৌদ্দশো টাকা। মানে চার আনা সোনার দামে ঐ হাড়ি-পাতিল কিনে ছাদে লাগিয়ে টিভিতে যা পাওয়া গেল, তা কেবলই চোখ ব্যাথ্যা বাড়িয়ে ছিল। এখন চার আনা সোনার দাম ১২ হাজারের উর্ধে।
    তাই,
    সাড়ে এগারো হাজার টাকায় সেট টপ বক্স ইনস্টল এবং এক হাজার টাকা চার্জ করে চোখ জুড়ানো খেলা দেখার পর কারোরই "পোস্ট পারচেজ ডিসওনেন্স" হবার তেমন একটা সুযোগ আছে বলে মনে হয় না।
    ওয়ান মে গো ফর ইট। আমার মতো 🙂 😀 :))


    Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

    জবাব দিন
  7. রায়েদ (২০০২-২০০৮)

    ভাবছি ভাইয়ার বাসায় এসে একটা দুইটা ম্যাচ দেখব কিনা? একা দেখাতে আসলেই কোন মজা নাই। একটা সিসিবি গেটটুগেদার + বিশ্বকাপ ম্যাচ হলে কিন্তু মন্দ হয় না। কি বলেন পারভেজ ভাই।

    আর একা একা দেখার সবচেয়ে বড় কষ্ট মাঝের ওই এক ঘন্টার ব্রেক। টানা দুইদিন আমার একটার খেলাটা মিস হয়েছে।

    জবাব দিন
  8. পারভেজ (৭৮-৮৪)

    এত ভাবাভাবির কি আছে, জাস্ট ড্রপ ইন। ইউ ইউল নট রিগ্রেট, আই গ্যারান্টি।
    আমার ফেবু আইডি Pervez840, ওখানে ইনবক্স করলে ফোন নং, ঠিকানা জানিয়ে দেব।


    Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : পারভেজ (৭৮-৮৪)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।