তৃণমূল রাজনীতির হালচাল

বিডি নিউজ ২৪-এ প্রকাশিত আরেকটা রাজনীতি বিষয়ক অপএড

এই লিখাটার একটা ইতিহাস আছে।
মাস খানেক আগে “রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরীন ব্যবস্থাপনা: কিছু প্রস্তাব” শিরোনামে একটা অপ-এড লিখেছিলাম। ওটা পড়ে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসি কবি-শিক্ষক-গবেষক বন্ধু মিল্টন হাসনাৎ বললো পরের বার দুইদলের গঠনতন্ত্র ভিত্তিক কিছু একটা লিখতে। সেইখান থেকেই এই লিখাটার ধারনা পাওয়া।

এইটা মোর অব অপিনিয়ন বাট বেসড অন সাম এনালাইসিস।
পছন্দ হলে শেয়ার করে অন্যকে বলুন।
পছন্দ না হলে আমাকে জানান।

=========================================

ব্রিটেনের রক্ষণশীল দলের পূর্ণ সদস্য হতে হলে এবং তা বজায় রাখতে চাইলে বছরে ২৫ পাউন্ড করে চাঁদা দিতে হয়। প্রশ্ন উঠতে পারে, নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোই হল যে রাজনীতি, সেই রাজনীতি করার জন্য বছরে নিজের গাঁট থেকে এতগুলো পাউন্ড গুনতে হবে কেন?

উত্তর হল, দলের পূর্ণ সদস্য হবার সঙ্গে সঙ্গে একজন সদস্য বেশ কিছু অধিকার অর্জন করে। যেমন, বিভিন্ন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা, ভোটদান করা, দলের বিভিন্ন সম্মেলনে অংশগ্রহণ ইত্যাদি। এর প্রত্যেকটিতেই বিপুল অংকের অর্থব্যয় প্রয়োজন।

একজন সুবিধাভোগী হিসেবে অংশগ্রহণকারীর স্বাভাবিক দায় বর্তায় প্রাপ্ত সুবিধার মূল্য পরিশোধের। সেটা এই বাৎসরিক চাঁদার মাধ্যমেই হয়ে যাচ্ছে। এতে রাজনীতিতে আগ্রহী একজন সদস্যের সঙ্গে দলীয় কর্মকাণ্ডে জড়িত হবার জন্য এক ধরনের অংশীদারিত্ব সৃষ্টি হচ্ছে।

রক্ষণশীল দলের সদস্য প্রকারভেদ ও বাৎসরিক চাঁদার হার

চিত্রঃ রক্ষণশীল দলের সদস্য প্রকারভেদ ও বাৎসরিক চাঁদার হার ( দেখুন )

এবার এদেশের প্রধান দুটি দলে সদস্য হবার প্রক্রিয়া এবং সদস্যগণের কী কী অধিকার জন্মে, সেই অধিকার আদায়ে তাদের কী কী নৈতিক শক্তি থাকে সেই বিষয়টা খতিয়ে দেখার ও বোঝার চেষ্টা করি।

প্রথমেই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র থেকে উদ্ধৃতি দিচ্ছি–

রক্ষণশীল দল সদস্যদের যে ধরনের অধিকার অঙ্গীকার করছে, আওয়ামী লীগ তার কাছাকাছি অধিকার ভোগ করার পরিস্থিতি বর্ণনা করছে

 

চিত্রঃ রক্ষণশীল দল সদস্যদের যে ধরনের অধিকার অঙ্গীকার করছে, আওয়ামী লীগ তার কাছাকাছি অধিকার ভোগ করার পরিস্থিতি বর্ণনা করছে

দেখা যাচ্ছে, ব্রিটেনের রক্ষণশীল দল তার সদস্যদের জন্য যে ধরনের অধিকার অঙ্গীকার করছে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ঠিক সে ধরনের অঙ্গীকার না করলেও তার কাছাকাছি অধিকার ভোগ করার মতো পরিস্থিতি বর্ণনা করছে। তবে সেজন্য সদস্যদের নামমাত্র খরচ বহন করতে হবে। তিন বছরে মাত্র ১০ টাকা চাঁদা, ব্রিটেনের রক্ষণশীল দলের চাঁদার এক হাজার ভাগের এক ভাগ!

একদিক থেকে ভাবলে এটাকে দলের বদান্যতা মনে হলেও, কার্যত এই ক্ষুদ্র চাঁদা যে সদস্যদের অধিকারের দাবি পূরণে কোনো ভূমিকা রাখে না, সেটা সাধারণ জ্ঞানবুদ্ধিসম্পন্ন যে কোনো মানুষই বুঝতে পারবেন।

এবার একটু দেখে নেওয়া যাক, সদস্য সম্পর্কে কী আছে বিএনপির গঠনতন্ত্রে

প্রথমেই সেখানে ব্যাখ্যা করা আছে যে, এ দলের সদস্য মানেই প্রাথমিক সদস্য

চিত্রঃ বিএনপির গঠনতন্ত্র। প্রথমেই যেখানে ব্যাখ্যা করা আছে যে, এ দলের সদস্য মানেই প্রাথমিক সদস্য

প্রথমেই সেখানে ব্যাখ্যা করা আছে যে, এ দলের সদস্য মানেই ‘প্রাথমিক’ সদস্য। আওয়ামী লীগ থেকে এটা ভিন্ন এবং খানিকটা ‘কনফিউজিং’। ব্যাখ্যা করছি।

আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে প্রাথমিক সদস্য মানে অস্থায়ী সদস্য, এটার উল্লেখ আছে যা থেকে অনুমিত হয় প্রাথমিক সদস্যদের বাইরে সবাই এক ধরনের স্থায়ী সদস্য। তবে গঠনতন্ত্রে তাদেরকে পূর্ণাঙ্গ সদস্য বলা হয়েছে। বিএনপির গঠনতন্ত্রে যাদের প্রাথমিক সদস্য বলা হয়েছে, তারা যদি পূর্ণাঙ্গ সদস্য হয়ে থাকেন, তা বর্ণনা করার জন্য সদস্য শব্দের আগে ‘প্রাথমিক’ প্রিফিক্সের কী গুরুত্ব বোঝা কঠিন।

সাধারণত ‘প্রাথমিক’ শব্দটি পেলে আমরা স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে এরপর মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, উচ্চতর ইত্যাদির অনুসন্ধান করি। কেউ যদি বিএনপির সদস্যপদে সে রকম কোনো শ্রেণিবিভাগ আছে কিনা তা খোঁজ করেন, তাকে কি দোষ দেওয়া যায়?

আরও দুটি অ-নিষ্পন্ন বিষয় আছে এখানে। একটি হল, প্রাথমিক সদস্যপদটি একটি কর্তৃপক্ষের অনুমোদন-সাপেক্ষে গৃহীত হবে। অন্যটি হল, এই পর্যায়ে সদস্যদের অধিকার সম্পর্কে কিছু বলা নেই। তা বলা না থাকলেও দলীয় প্রধানের বিবেচনায় যে কোনো সময়ে এই প্রাথমিক সদস্য যে দল থেকে প্রায় বিনা প্রশ্নে বহিস্কৃত হতে পারেন, সেটা কিন্তু খুব ভালোভাবে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে।

দেখা যাচ্ছে, সদস্য অন্তর্ভূক্তিতে দলের আন্তরিকতার ঘাটতি রয়েছে, কিন্তু অন্তর্ভূক্ত সদস্যকে বিদায় করার ব্যাপারে দল কিন্তু বেশ খড়গহস্ত।

চাঁদার ব্যাপারটাও বেশ লক্ষণীয়। যতটা গুরুত্ব দিয়ে তা আদায়ের পদ্ধতি বর্ণনা করা হয়েছে, পরিমাণ ততটাই গুরুত্বহীন। গড়ে বছরে পাঁচ টাকা! এই পাঁচ টাকা চাঁদার বিনিময়ে ওইসব প্রাথমিক সদস্য কী কী অধিকার দাবি করবেন তা সহজেই অনুমেয়।

তবে অন্যত্র পড়ে বোঝা যায় যে, এই পাঁচ টাকার সদস্যদের জন্যেও কিছু কিছু অধিকার প্রয়োগের সুযোগ রয়েছে। যেমন, বিভিন্ন পর্যায়ে ক্ষেত্রবিশেষে ন্যূনতম ১০০ থেকে ১৫০ জন প্রাথমিক সদস্য নিয়ে একটি কাউন্সিল করার কথা উল্লেখ আছে। এই কাউন্সিল থেকে আবার কমিটি নির্বাচনের কথা বলা আছে।

সদস্য অন্তর্ভূক্তিতে দলের আন্তরিকতার ঘাটতি রয়েছে, কিন্তু সদস্যকে বিদায় করার ব্যাপারে দল খড়গহস্ত

চিত্রঃ সদস্য অন্তর্ভূক্তিতে দলের আন্তরিকতার ঘাটতি রয়েছে, কিন্তু সদস্যকে বিদায় করার ব্যাপারে দল খড়গহস্ত

এ থেকে ধরে নেওয়া যায় যে ওইসব ১০০/১৫০ প্রাথমিক সদস্য মিলে একটি গণতন্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটিগুলো গঠিত হবে। এটা খুশির কথাই, কিন্তু সমস্যা হল, একশ সদস্যের কাছ থেকে পাওয়া এই পাঁচশ টাকায় কীভাবে নির্বাচনের ব্যয় মিটবে? আর একশ জন মিলে নিজেদের মধ্য থেকে যে ৫১ জনকে নির্বাচন করবেন, তাদেরকে আসলেই কতটা প্রতিনিধিত্বশীল বলা যাবে?

একটি ওয়ার্ড বা ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষের মধ্য থেকে মাত্র ১০০ বা ১৫০ জন করে প্রাথমিক সদস্য বিনা রিসোর্সে বিএনপির তৃণমূলের রাজনীতি কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে তা তো দেখলাম। এবার দেখি তৃণমূলের রাজনীতি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের গঠনতান্ত্রিক অবস্থান কী, সেটি।

শুরুতে যদিও নির্বাচনের মাধ্যমে পঁচিশ হাজার জনসংখ্যার জন্য একজন কাউন্সিলর নির্বাচনের কথা বলা আছে, কিন্তু সেই নির্বাচনের নির্বাচক কারা তা নিয়ে যথেষ্ট ধোঁয়াশা রয়ে গেছে। আর তা নিরসনে মনোনীত কাউন্সিলরের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

তাহলে কী দাঁড়াচ্ছে? কাউন্সিলর মনোনয়ন দিয়ে চাঁদা আদায়ের সুযোগ ছেড়ে কে চাইবেন গাঁটের পয়সা খরচ করে নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে? গাঁটের পয়সা কেন? কারণ চাঁদা তো তিন বছরে ১০ টাকা। দশ হাজার নিয়মিত নির্বাচক থাকলেও বছরে আসবে ৩৩ হাজারের মতো। সেই টাকায় না হবে অফিস ভাড়া, না কোনো নির্বাচন।

এই পর্যন্ত আলোচনার উদ্দেশ্য ছিল যে বিষয়টা সামনে আনা তা হল, গঠনতান্ত্রিকভাবে বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলি তৃণমূলের জন্য রাজনীতিবান্ধব নয়, গণতন্ত্রমুখীও নয়। তৃণমূল থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জনগণকে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করার কোনো স্ট্র্যাটিজি বা ইচ্ছাও খুঁজে পাওয়া গেল না। আর সেটা গণতান্ত্রিকভাবে ঘটার সুযোগ তো আরও বিরল।

তাছাড়া এসবের জন্য যে রুটিন কিছু খরচাপাতি আছে, তা কোথা থেকে আসবে তারও কোনো উল্লেখ নেই। যদি ধরে নিই, কেন্দ্র সেই অর্থের জোগান দেবে, তাহলেও প্রশ্ন জাগবে–

১. কেন্দ্রের ওই অর্থের উৎস কী?

২. কেন্দ্রের অর্থে নির্বাচন করার সময় তৃণমূলের স্বার্থ, নাকি কেন্দ্র থেকে অর্থ জোগানদাতার স্বার্থ মূখ্য হয়ে দেখা দেবে?

গঠনতান্ত্রিকভাবে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলি তৃণমূলের জন্য রাজনীতিবান্ধব নয়, গণতন্ত্রমুখীও নয়

চিত্রঃ গঠনতান্ত্রিকভাবে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলি তৃণমূলের জন্য রাজনীতিবান্ধব নয়, গণতন্ত্রমুখীও নয়

এটা তো জানা কথা যে, একই সঙ্গে কেন্দ্র ও তৃণমূল উভয়েই রাজনীতিতে সমানভাবে শক্তিশালী হতে পারে না। হয় কেন্দ্রকে তৃণমূলের উপরে, না হয় তৃণমূলকে কেন্দ্রের উপরে নির্ভর করতে হয়। কেন্দ্র যখন তৃণমূলের উপরে নির্ভর করে, তখন দলের রন্ধ্রে রন্ধ্রে স্বতঃস্ফুর্তভাবে প্রাণচাঞ্চল্য সংক্রামিত হয়। এর জন্য কাউকে ফান্ড কালেকশন বা অন্যভাবে বললে চাঁদাবাজিতে নামার প্রয়োজন পড়ে না।

এ দেশে সত্তর-পূর্ব রাজনীতিতে সে রকম অনুশীলন ছিল বলেই শোনা যায়। কিন্তু যখন কেন্দ্র হয়ে পড়ে সবকিছুর নিয়ন্ত্রণকারী, তৃণমূল সব উৎসাহ হারিয়ে হয়ে পড়ে পরমুখাপেক্ষী বা কেন্দ্রাভিগ। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, এখন দেশ ও তার রাজনীতি সেই অবস্থার মধ্য দিয়েই যাচ্ছে।

এই অস্বাভাবিক অবস্থার মধ্য দিয়ে তৃণমূলের রাজনীতিকে টেনে নিতে কেন্দ্র ও সংশ্লিষ্টরা যা যা করছেন তাকে আর যা-ই বলা যাক, সুস্থ রাজনীতি বলার কোনো সুযোগ থাকছে না। অথচ তৃণমূলের মানুষের রাজনীতিতে যে আগ্রহ, আড্ডা দেওয়ার যে উৎসাহ এবং ভোট দেওয়ায় যে উদ্দীপনা, তাকে পুঁজি করে তৃণমূলে দলের কার্যক্রম গড়ে তোলা খুব কি অসম্ভব?

আমার তো মনে হয় না দেশে এমন কোনো ওয়ার্ড বা ইউনিয়ন আছে যেখানে একটি খোলা জায়গা নেই। তা যদি থাকে, সেখানে প্রত্যেক দল যদি ৫০ টি করে প্লাস্টিক চেয়ার রাখে আর সন্ধ্যার পর রাজনৈতিক আড্ডার ব্যবস্থা করে, খুব অল্প সময়েই ওয়ার্ড বা ইউনিয়নের তৃণমূল পর্যায়ে রাজনীতির বীজ বপন করা সম্ভব।

এরপর তাকে স্বাভাবিকভাবে বাড়তে দিলে, মানে দলে যোগদান, নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্বের উত্থান ইত্যাদির সুযোগ দেওয়া হলে, তা থেকে রাজনীতি-সচেতন মহীরুহ সৃষ্টি কেবলই সময়ের ব্যাপার।

তবে চলতি রাজনীতির ধারার সঙ্গে তা হবে সাংঘর্ষিক। এতে লেজুড়বৃত্তির রাজনীতি হালে পানি পাবে না। আর তারাই যখন রাজনীতির ধারক-বাহক, এসব কর্মকাণ্ডের ভাবনা দিবাস্বপ্নই মনে হবে অনেকের কাছে।

দিবাস্বপ্ন মনে হলেও, মূলত যেটা বলতে চাইছি, তা হল এই যে, দেশের রাজনীতির জন্য এখনও ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ আছে। আর তা খুব কঠিনও নয়। সু-রাজনীতিবান্ধব একটি পরিবেশ তৈরিতে শীর্ষ নেতৃত্বের সদিচ্ছায় দু’ থেকে চার বছরের মধ্যেই দেশে তৃণমূলভিত্তিক রাজনীতির উত্তরণ ঘটানো সম্ভব।

বর্তমান নেতৃত্ব যদি তা না ঘটান, ভবিষ্যতে অন্য কেউ তা ঘটাবেনই। মাঝখানে এঁদের কৃতিত্ব পাবার সুযোগটা হাতছাড়া হয়ে যাবে, এই আর কী!

১,৪২৩ বার দেখা হয়েছে

৮ টি মন্তব্য : “তৃণমূল রাজনীতির হালচাল”

  1. গুলশান (১৯৯৯-২০০৫)

    ভাইয়া যা জানি, বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটা তিক্ত সত্য আছে। সেটা হল- জামাতের মত একটা দল এইসব নিয়ম-টিয়ম মেনে চলে। তাদের সদস্য, পরবর্তী পদ ইত্যাদি সব নিয়মমাফিক হয়। বাস্তবতার খাতিরে তাদের নিয়মগুলোও এভাবে পর্যালোচনা করতে পারেন। অবশ্য যদি আপনার আপত্তি না থাকে। 🙂

    জবাব দিন
  2. পারভেজ (৭৮-৮৪)

    কিছু কিছু প্রাকটিস জামাতে যত ভাল ভাবেই থাকুক না কেন, ওদের গোড়াতেই গলদ আছে। জামাত মূলতঃ কোন "সার্বজনিন" রাজনৈতিক দল না।
    জামাতে কি কোন ভিন্ন ধর্মাবলম্বি আছে? থাকার সুযোগ আছে? যদি না থাকে, শুরুতেই তাঁরা ধর্মিয় ডিসক্রিমিনেশন করে নিজেদেরকে সংবিধান পরিপন্থি সংগঠন হিসাবে প্রমান করছে। এইরকম একটা সংগঠন কিভাবে রাজনৈতিক দল হয়? তাঁদের প্রাকটিসগুলো যতই নিয়মতান্ত্রিক হোক না কেন তাঁরা রাজনৈতিক দলের শর্ত পুরোন করে না।
    তাছাড়া যতদুর জানি ওদের ওখানে চাদা যা দেয়া লাগে, রিক্রুটরা তাঁর চেয়ে ঢের বেশি আয় করে বিভিন্ন অজুহাতে। যেমন পুরষ্কার, যাতায়ত খরচ ইত্যাদি।
    এই বেতনভুক রাজনীতি চর্চ্চার কর্মিদের আমি স্বাভাবিক রাজনীতি কর্মি হিসাবে মানতে পারি না। কার্যতঃ জামাত একটি কর্পোরেট সংগঠন যার লক্ষ্য ভ্যালু ম্যাক্সিমাইজেশন ফর ইটস স্টেইকহোল্ডারস।
    অনেক ভাল ভাল সাংগঠনিক প্রাকটিস বামেদেরও আছে। কিন্তু ওদেরও একই সমস্যা। দলটা ক্যাডার কেন্দ্রিক, সার্বজনিন না।


    Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

    জবাব দিন
    • মোকাব্বির (৯৮-০৪)
      কার্যতঃ জামাত একটি কর্পোরেট সংগঠন যার লক্ষ্য ভ্যালু ম্যাক্সিমাইজেশন ফর ইটস স্টেইকহোল্ডারস।

      এই Elephant in the room টা অনেক সমঝদারও বোঝে না। বাঙলাদেশ নিয়ে ৯৯টি কষ্টের সাথে এটি ১টি ফাও! 🙂


      \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
      অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

      জবাব দিন
  3. মোকাব্বির (৯৮-০৪)

    চাঁদা শব্দটি বাঙলাদেশে হাতেকলমে এমনভাবে ব্যবহার করা হয় বা হয়েছে যে দশ টাকা যে চাইবেন হাহাহাহাহা।

    যেই সম্ভাবনার কথাগুলো বললেন, এগুলো আমার মতে বড় গদিতে বসা কেউ চাইলেও মধ্যম পর্যায়ের অনেকের এতে আগ্রহ নেই। বিশেষ করে তৃণমূল পর্যায়ের রাজনীতি ও তাদের কালচার করে সুস্থভাবে বড় করে তোলার মাঝে জেলা পর্যায়ে বা উপজেলা পর্যায়ে অনীহা আছে। বড় গদিতে যারা তাদের কথা তো বাদই দিলাম। তাদের সদিচ্ছা যদি থেকেও থাকে বেশীরভাগ সময়ই এই মাঝপথে এসে তা পাল্টে যায়। বর্তমান দলগুলোর এমন অবস্থা যেগুলোকে ব্লাড ট্রান্সফিউশান স্টাইলে পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়। ফিনিক্স পাখি হতে হবে।


    \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
    অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

    জবাব দিন
    • পারভেজ (৭৮-৮৪)

      এই নিরাশাবাদে আমিও কম বেশী আক্রান্ত।
      তারপরেও আশায় বুক বাঁধি একটা কথা ভেবে, যে যারা এই হাওয়ায় গা ভাসিয়ে দেয়া রাজনীতি করছেন, তারা কিন্তু ঠিকই জানেন এটা কোন চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত নয়।
      আজ হোক কাল হোক প্রকৃতির নিয়মে একটা সময়ে হাওয়ায় টান পড়বেই। কি হবে তখন তাঁদের?
      তারা কি সেই দুঃসময়ের জন্য যথেষ্ট রকমের প্রস্তুতি নিয়েছেন?


      Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

      জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : পারভেজ (৭৮-৮৪)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।