সামাজিক মাধ্যমে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থির ড্রেসকোড সম্পর্কিত অকারন জটিলতা

সব প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কিছু নিয়ম নীতি থাকে। তা মেনেই একজনকে ঐ প্রতিষ্ঠানে থাকতে হয় নইলে ওটার অংশ হওয়া থেকে বিরত থাকতে হয়। এটাই এসটাবলিশড পদ্ধতি। এটা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তোলার কোন সুযোগ নাই।
গনস্বাস্থ্যে নি্যুক্তির শর্ত হল, ওখানে কর্মরতদেরকে অধুমপায়ী হতে হবে। এর অর্থ হল এই যে শুধু অফিস টাইমে সিগারেট খাবো না, বাসায় গিয়ে খাবো, তা নয়। ধুমপান পুরোপুরি ছেড়ে দেয়া। কেউ তা করতে ব্যর্থ হলে শর্তভঙ্গের কারনে প্রতিষ্ঠান তাঁর বিরুদ্ধে প্রযোজ্য ব্যবস্থা নিতে পারবে।
আমি এমন একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে সংশ্লিষ্ট ছিলাম যেখানে পুরুষদের নির্দিষ্ট রঙ ও ডিজাইনের প্যান্ট-সার্ট, জুতা মোজা পরা এবং নারীদের শর্তাধীন পোশাক পরা বাধ্যতামুলক ছিল। ওখানে সুযোগ প্রাপ্তিকালে ভিন্ন পোশাকে অভ্যস্তদের এই পোশাকের বিষয়টা জানানো হত। আমি দেখেছি শুধু নারী নয়, অনেক পুরুষও এই পোশাকজনিত বাধ্যবাধকতা না মানতে পারার কারনে ঐ প্রতিষ্ঠানে যোগদান করা থেকে (শুধু ছাত্র হিসাবে নয়, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী হিসাবেও) বিরত থেকেছেন। এ নিয়ে আজ পর্যন্ত কোথাও কোন সমস্যা হয় নাই।
সম্প্রতি একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের “একজন” স্টুডেন্টের ক্যাম্পাসে মুখ ঢাকা না-ঢাকা কে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বেশ সরগরম হয়ে উঠেছে। আজকের এই লিখাটার উদ্দেশ্য এ ঘটনাটার বিশ্লেষন করা।
এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য গুলি এরকম-
১) ভর্তির আগেই জানানো হয় যে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ড্রেস-কোড আছে এবং যদিও তা মানা বাধ্যতামুলক বলে অনুমিত হয় তবে তা মানা না হলে কি ব্যবস্থা নেয়া হবে তাঁর কোন সুনির্দিষ্ট উল্লেখ নাই।
২) সংশ্লিষ্ট স্টুডেন্টটি সম্ভবত ২০১১-তে ভর্তি হয়েছিল (আইডি দেখে তাই মনে হয়)।
৩) মে ২০১৩-তে তাঁকে ড্রেস-কোড না মানার জন্য কৈফিয়াত তলব করা হয়।
৪) সেপ্টেম্বর ২০১৩-তে তাঁকে জানানো হয় যে ড্রেস-কোড না মানলে সে ক্যাম্পাসে ঢুকতে এবং পরবর্তি সেমিস্টারে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবে না। এর অর্থ হল সে যদি ড্রেস-কোড মানে তবে সে ক্যাম্পাসে ঢুকতেও পারবে এবং পরবর্তি সেমিস্টারে রেজিস্ট্রেশন করতেও পারবে।
৫) স্টুডেন্টটিকে ড্রেসকোড মানতে এবং তাতে অভ্যস্ত হতে পর্যাপ্ত সময় দেয়া হয়েছিল।
৬) ক্যাম্পাসে অবস্থানকারী যেকোন ব্যক্তির মুখ ঢেকে রাখাটা প্রতিষ্ঠান তাঁর নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ মনে করে।
৭) স্টুডেন্টটিকে বহিস্কার করা হয় নাই। শর্তসাপেক্ষে প্রতিষ্ঠানে ঢুকতে ও পরবর্তি সেমিস্টারে রেজিস্টার করতে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। শর্ত মানলে ঐসকল নিষেধাজ্ঞা আর প্রযোজ্য নয়।
এই ঘটনা বিশ্লেষণে যে সব তথ্য ঘাটতি রয়েছে, তা হল –
১) প্রতিষ্ঠানের দাবী অনুযায়ী ড্রেসকোড-এর বিষয়টা যথেষ্ট গুরুত্বের সাথে কমুনিকেট করা হয় কি না?
২) যদি স্টুডেন্টটি ২০১১-তে ভর্তি হয়ে থাকে, মে ২০১৩ পর্যন্ত সে ড্রেসকোড মানছিল কি না?
৩) যদি না মেনে থাকে, সে বিষয়ে আগে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল কি না? হয়ে থাকলে কি? না হয়ে থাকলে কেন এবং দু’বছর পর ড্রেসকোড নিয়ে প্রশ্ন তোলার পিছনে অন্য আরও কোন কারন আছে কিনা? যদি থাকে তা কি?
৪) যদি ড্রেসকোড আগে মেনে থাকে তাহলে তো বোঝা যাচ্ছে সে নিয়ম সম্পর্কে ওয়াকেফহাল। সেক্ষেত্রে এখন হঠাৎ না মানার অর্থাৎ নিয়ম ভঙ্গ করার পিছনে মূল উদ্দেশ্যটা আসলে কি? কারন, সেটা যদি হয় ধর্ম রক্ষা, তবে তা তো নিজ থেকে প্রতিষ্ঠান ত্যাগ করার মাধ্যমে করা সম্ভব। আর সেটা যদি হয় অকারন সমস্যা সৃষ্টি, তা নিশ্চই সমর্থনযোগ্য নয়।
৫) প্রতিষ্ঠানের সাথে স্টুডেন্টের যেসব যোগাযোগ, চিঠি-পত্র আদান-প্রদান হয়েছে তা সব ব্যক্তি পর্যায়ের। এগুলো ভুল অনুবাদে, মিথ্যা বর্ননায়, অসদোদ্দেশ্যে কে, কেন উন্মুক্ত করলো?
৬) এই প্রতিষ্ঠানে এই স্টুডেন্টটি কি একমাত্র যে ড্রেস কোড ভঙ্গ করে চলছিল? নাকি আরো কেউ আছে। যদি থাকে, তাদের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিভঙ্গি, পদক্ষেপ কি?
এখন এইসব তথ্য ও তথ্য ঘাটতির মধ্যেই বিষয়টা বিশ্লেষন করে দেখা যাক;
১) একটি প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কিছু নিয়ম থাকতে পারে যা ঐ প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পর্কযুক্তদের জন্য মানা বাধ্যতামুলকও করা যায়।
২) কেউ শুরু থেকেই সে নিয়ম না মানতে চাইলে নিজ থেকে ঐ প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পর্কে না জড়ানোটাই সবচেয়ে কাম্য সমাধান।
৩) যদি কেউ সম্পর্কে জড়ানোর পরে নিয়ম সম্পর্কে ওয়াকেফহাল হন, সেক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্থ পার্টির জন্য উদ্যোগ নিয়ে বিষয়টার তাৎক্ষনিক সমাধান নিশ্চিত করানো জরুরী। ঝুলিয়ে রাখার কারনে কোন পক্ষই পরে সুবিধা দাবী করতে পারে না।
৪) দুই বছর ধরে কেউ নিয়ম ভেঙ্গে গেলে এবং সেজন্য কোন বাধার সম্মুখিন না হলে, “নিয়ম ভাঙ্গাটাই এখানকার নিয়ম” – এই দাবী যেমন নিয়মভঙ্গকারীর জন্য যুক্তিযুক্ত একই ভাবে, “এতদিন অনেক সুযোগ দেয়া হয়েছে, আর না” – এই দাবীও তেমন প্রতিষ্ঠানের জন্য যুক্তিযুক্ত।
৫) প্রাতিষ্ঠানিক নিরাপত্তার খাতিরে প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে অবস্থানকালে সকল ব্যক্তিবর্গের পরিচয় প্রকাশিত রাখার চাহিদা করা যেকোন কর্তৃপক্ষের জন্যই যুক্তিযুক্ত।
৬) অসদোদ্দেশ্যে যেকোন প্রতিষ্ঠানের আভ্যন্তরিন বিষয় ভুলভাবে, মিথ্যা তথ্য সন্নিবেশ করে প্রকাশ প্রচার করা খুউবই অনাকাঙ্খিত। এতে প্রতিষ্ঠানের সাথে সাথে নিজের সম্মানও ক্ষুন্ন হয়।
৭) প্রতিষ্ঠান যেমন স্টুডেন্টটিকে নিয়মে অভ্যস্ত হতে যথেস্ট সময় দিয়েছিল, স্টুডেন্টটিও একইভাবে যথেস্ট সময় পেয়েছিল অন্য কোথাও থিতু হবার জন্য। সেক্ষেত্রে আকস্মিকভাবে ব্যবস্থা নেয়ায় স্টুডেন্টটির ক্ষতিগ্রস্থ হওয়াজনিত অনৈতিক কিছু ঘটে নাই।
মন্তব্যঃ
সহজ সমাধানযোগ্য একটি বিষয় নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে অকারন উত্তাপ ছড়ানো ও তাতে ধর্মিয় রঙ লাগানোর প্রচেষ্টা দেখতে পাচ্ছি। আশা করি এজাতিয় নন-ইস্যু থেকে তরুন সমাজ অচীরেই মুখ ঘুরিয়ে নেবেন।

৫,৬৮৫ বার দেখা হয়েছে

৫১ টি মন্তব্য : “সামাজিক মাধ্যমে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থির ড্রেসকোড সম্পর্কিত অকারন জটিলতা”

  1. মোকাব্বির (৯৮-০৪)

    মোটামুটি সয়লাব হয়ে গিয়েছে ফেইসবুক নিউজ ফীড। খুব বাজে ভাবে বলতে গেলে বাঙালী ফেইসবুক যুবসমাজের হাতে বাজার গরম করার মত নতুন ইস্যু নেই। সর্বশেষ বাজার গরম করা ইস্যু ছিল অধিকার প্রধানের গ্রেফতার ও ঐশী। সেও অনেক অনেক কাল আগের কথা (আগস্ট মাসের ১৬ তারিখ প্রথম খবর ছাপা হয় এই ঘটনায়)

    আপনার প্রশ্ন, তথ্যের ঘাটতি ও শেষে উত্তর পাবার চেষ্টায় আসলে নতুন কিছু যোগ করার নেই। তবে যতদূর মনে পড়ে ২০১০ সালের দিকেই ব্র্যাকে হঠাৎ ডিবি পুলিশ এসে হানা দিয়ে কম্পিউটার হার্ডডিস্কসহ দুই কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এর ছাত্রকে বাংলাদেশে হুজি সংযোগ সন্দেহে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। এরপর থেকে আইডি চেক নিয়ে বেশ ঝামেলা করতো ব্র্যাক ভার্সিটি। পুরানো ছাত্র হিসাবে বেশ গজগজ করতাম আমরা। মনে আছে গার্ড ব্যবস্থা ও আইডি চেকিং ব্যবস্থা পুরো ঢেলে সাজিয়েছিল ব্র্যাক। এরপরে সম্প্রতি বাংলাদেশ তথা গোটা আমেরিকা দেখলো নর্থ-সাউথের ভার্সিটির ছাত্র নাফিসের কেরামতি। এরপর থেকে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মানসম্মান ও অস্তিত্ব রক্ষার্থে শিথিল ড্রেসকোডের উপর (যদি থেকে থাকে এবং ব্র্যাকের ছিল) হঠাৎ জোর আরোপ করতেই পারে। ব্র্যাকের আরেক বন্ধু মুনিয়ার স্ট্যাটাস পড়ে তার সাথে কথা বলে জানতে পারি সে খোঁজ নিয়েছে, এখানে যে ড্রেস কোড ভায়োলেশানের কথা ব্র্যাক বলছে সেটা নেকাব বা ফেইস মাস্ক যেটা পরিধান করলে চোখ ছাড়া আর কিছু দেখা যায় না। নিরাপত্তা ইস্যুতে ফেইসমাস্ক বা নেকাব পরিধান করলে কাউকে ছাড় দেয়া উচিৎ নয়। যতদূর মনে পড়ে বোরখা বা মাথা সম্পূর্ণ ওড়নায় পেচিয়ে রাখা পর্দানশীল ছাত্রী প্রচুর ছিল ব্র্যাকে। কিন্তু শুধু চোখ দেখা যায় এরকম ভাবে পর্দা করে কাউকে দেখিনি। বন্ধু মুনিয়ার তথ্য যদি সঠিক হয়ে থাকে তাহলে ব্র্যাকের উচিৎ এই ব্যাপারে প্রয়োজনে একটি প্রেসনোট ছাড়া। আরো জানতে পারলাম এটি নাকি হাইকোর্টে যাচ্ছে রিট হিসাবে। দেখা যাক জল কতদূর গড়ায়।

    এটুকু নিশ্চিত পোলাপানের আগামী এক মাস নেশা করার খোরাকী জোগানো হয়ে গিয়েছে।


    \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
    অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

    জবাব দিন
  2. সামিউল(২০০৪-১০)

    বোরকা পরতে না দেয়া আর নেকাব দিয়ে মুখ ঢেকে রাখতে না দেয়ার মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে।
    পাবলিক এইসব ঠিকমত না জেনে, চিন্তা-ভাবনা না করেই লাফালাফি শুরু করে দেয়।

    আমরা আসলেই মাঝে মাঝে খুব আবেগপ্রবন, ধর্মান্ধ এবং হুজুগে হয়ে যাই। (সম্পাদিত)


    ... কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালবাসে!

    জবাব দিন
  3. সিরাজ(১৯৯১-১৯৯৭)

    নেকাব আর হিজাবের পার্থক্য আমরা অনেকেই বুঝিনা। আর না জেনে না বুঝেই আমরা হুজুগে মেতে উঠিা। আমার কেন জানি মনে হচ্ছে অতি উৎসাহি কেউ কেউ এই ঘটনার সুযোগ নিচ্ছে ।


    যুক্তি,সঠিক তথ্য,কমন সেন্স এবং প্রমাণের উপর বিশ্বাস রাখি

    জবাব দিন
  4. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    সিরিয়ায় চলতেছে মূতার বন্যা আর বাঙলাদেশে ড্রেস কোড।
    আজকেই এই ভিডিওটা শেয়ার করতে হইলো ফেবুতে।
    দুরন্ত ধর্মানুভুতিকে বেধে রাখে সাধ্য কার!
    সুলতানের ষাড়ের চাইতেও এ শক্তিশালী।
    ">


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
    • পারভেজ (৭৮-৮৪)

      এই লোকটার কথা শুনলে সাথে সাথে এঁর ছাত্র হয়ে যেতে ইচ্ছা করে। কারো কথার মধ্যে এতটা ক্লারিটি থাকতে পারে, ভাবতেই পারি না। থ্যাঙ্কস ফর দ্যা লিঙ্ক, রাজীব।


      Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

      জবাব দিন
      • রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

        ডকিন্স সাহেব মাঝে মাঝে ক্রিয়েশনিষ্টদের সাথে বিতর্ক করেন দেখে মনে হয় কেন যে তিনি আজাইরা টাইম পাস করতেছেন!
        আমি বরং তার বক্তৃতা আর এরপর প্রশ্নোত্তর বেশি পছন্দ করি।

        পরে ভাবলাম ডকিন্স সাহেব তো বোকা না। তারপরো যখন এইসব পতনবাদীদের সাথে বিতর্ক করেন তখন নিশ্চয়ই কারণ আছে।

        তো আমার খুজে পাওয়া কারণতি হলো, স্যার বিজি মানুষ। সারাক্ষন কাজ করেন। কিন্তু জীবনে বিনোদন ও দরকারী। আর সেই বিনোদন উনি পান পতনবাদীদের কুপোকাৎ করে।


        এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

        জবাব দিন
  5. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    আমার ফেসবুক ফ্রেন্ডলিস্টের শুদ্ধি অভিযান বেশ কার্যকরী হয়েছে বোঝা যাচ্ছে, এই খবর নিউজ ফিডে চোখে পড়েনি 😛

    বেশ কিছুদিন আগে হলিক্রসেও এরকম একটা ঘটনা নিয়ে অনলাইন জগত গরম হয়েছিল, তখন এ নিয়ে বেশ কিছু প্যাচালে যোগ দিয়েছিলাম। ড্রেসকোড নির্দিষ্ট করে দেয়া যেকোন প্রতিষ্ঠানে যোগ দেয়ার পর সেই ড্রেসকোড না মেনে তা নিয়ে ক্যাচাল তৈরী করা অযৌক্তিক। সবচেয়ে অবাক হই যখন ছয় বছর পুরোপুরি ড্রেসকোডের মাঝে থাকা এক্সক্যাডেটরা এ নিয়ে কথা তোলে, অপেক্ষায় আছি কবে গার্লস ক্যাডেট কলেজ নিয়ে এ বিতর্ক ওঠে।


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
    • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

      শুদ্ধি অভিযানে নামাটা জরুরী মনে হচ্ছে। এত পন্ডিত, এনালিস্ট, স্পেশালিস্ট দেখতে ভাল লাগে না! ক্যাডেট কলেজ কোন ব্যাপার না। ২০ বছর জেল খাটতে দেন। ডোরাকাটা জামা পরা থাকুক। বের হয়ে প্রথম ডাউট দিবে ড্রেস কোড নিয়ে। বাঙালীর ধর্ম এটা। তবে ক্যাডেট কলেজের ড্রেস কোড নিয়ে ঘাপলা কখনোই হবে না কারণ সবাই জানে এটার নিয়মকানুন প্রতিষ্ঠিত। হলি ক্রস কিংবা আইডিয়ালেও কঠোর ড্রেস কোড নিশ্চিত করা হয় কিন্তু এদুটোকে ক্যাডেট কলেজের পাশাপাশি সার্ভে করে দেখেন ড্রেস কোড, ডিসিপ্লিন সেন্স সম্পর্কে ভিন্ন জনমত পাবেন। এই একই কারণে প্রচলিত ভাবে ড্রেস কোড এনফোর্স করে অভ্যস্ত নয় কিংবা জনগণ দেখে অভ্যস্ত নয় এরকম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ড্রেস কোড এনফোর্স করতে গেলে সমস্যার সম্মূখীন হবেই।


      \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
      অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

      জবাব দিন
    • রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

      আমি বিভিন্ন গ্রুপের মাধ্যমে পাই।
      আর এখনো গোটা কয়েক ছাগু রেখে দিয়েছি লিষ্টে। জীবন বিনোদন শুন্য করতে চাই না/


      এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

      জবাব দিন
  6. মাহমুদুল (২০০০-০৬)

    আমার মনে একটা প্রশ্ন আসছে। এখন কোন ক্যাডেট যদি বলে আমি খাকির সাথে কিস্তি টুপি পড়ব। তা না পড়তে দিলে তার কি ধর্মীয় বা মানবাধিকার লঙ্ঘন হবে???


    মানুষ* হতে চাই। *শর্ত প্রযোজ্য

    জবাব দিন
    • পারভেজ (৭৮-৮৪)

      খুউব ভালো প্রশ্ন।
      আমার মনেহয়, ওকে কলেজ থেকে বের করে দেয়া হবে।
      কি কারনে বের করে দেয়া হয়েছে, লজ্জায় সে কাউকে বলবে না। আর বললেও কেউ বিশ্বাস করবে না।
      সবাই বলবে, নিশ্চয়ই গুরুতর কোন অন্যয় করে, চুরিধারী করে, নকলবাজি করে বের হয়ে এইসব চাপাবাজি করে যাচছে।
      তাঁর বাবাকে প্রিন্সিপাল যখন বলবেন, "আপনার ছেলেকে তো কিস্তিটুপি না পরতে দিলে তাঁর ধর্মীয় বা মানবাধিকার লঙ্ঘন হবে, ওকে কি করি, বলেনতো"
      বাবা বলবেন, "কানের গোড়ায় কোষে একটা থাপ্পড় মারেন। এই রকম কুলাঙ্গাররে আমি বাড়ি নিতে পারবো না। দরকার হয় সিএমএইচের সাইকিক ওয়ার্ডে ভর্তি করে দেন।"
      কথাগুলা বললাম, ঐ হাইপোথেটিকাল ক্যাডেটের উদ্দেশ্যে না বরং ঐ হাফসা না কি নামের মেয়েটার উদ্দেশ্যে।
      মেয়েটা হয়ত জানেও না তাঁকে, তাঁর ব্যক্তিগত চিঠিপত্রগুলোকে নিয়ে কেউ হয়তো এসব খেলা খেলছ।
      অথবা হয়তো জেনেছে পরে, কিন্তু লজ্জায় কিছু বলতে পারছে না।
      অথবা, খুউবই বোকার মত নাম পরিচয় সহ এইখেলায় অংশ নিচ্ছে পরিনতি না ভেবেই।
      এ তিনটার যেটাই ঘটে থাকুক, শেষ পর্যন্ত এই মেয়েকে ও তাঁর পবিবারকে এই বাজে প্রচারনার জন্য অদুর ভবিষ্যতে অনেক মূল্য দিতে হলে অবাক হবার মত কিছুই হবে না।


      Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

      জবাব দিন
  7. পারভেজ (৭৮-৮৪)

    হিজাব পরা সম্পর্কিত একটি ডেমনেস্ট্রেশনে দেখা যাচ্ছে, যে হিজাবের সাথে মুখ ঢাকার কোন সম্পর্ক নাই।
    তাছাড়া এখানে বলা হয়েছে যে, "The majority of Muslim scholars, including the four schools of fiqh, maintain that niqab is not obligatory. They base their view on many evidence that are discussed below in details. Only some of the Hanbali scholars see that niqab is obligatory."
    ব্রাক ইউনিভার্সিটির হাফসা ইসলাম নামের মেয়েটি যদি ঐসব কতিপয় হাম্বালি অনুসারি না হয়ে থাকে (যে সম্ভবনা খুবই কম, ওরা বেশির ভাগই কাতার ও সৌদি আরবের), সেক্ষেত্রে মুখ ঢাকা নিয়ে অপ্রয়োজনিয় জটিলতা সৃষ্টি করে সে তাঁর দীর্ঘ ভবিষ্যত বিতর্কিত করে ফেলছে।
    যারা আজ তাঁর পাশে জেহাদি উত্তেজনা নিয়ে এত লম্ফঝম্ফ করছে, মিথ্যার উপর ভিত্তি করে সৃষ্টি এই সব লম্ফঝম্ফ উবে যেতে খুব একটা সময় লাগবে না।
    খুব শীঘ্রই সে আর কাউকে তাঁর পাশে পাবে না। কিন্তু তাঁর ক্যারিয়ারে যে দাগ লেগে গেল, এটা দীর্ঘ্য দিনের জন্য তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে বোয়ে বেড়াতে হবে বলেই মনে হচ্ছে।
    আর একটা কথা -
    আমার এক বন্ধু জানতে চাইলো, "তুমিতো ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির কেউ না। ওদের ওখানে মুখ ঢাকা না ঢাকা নিয়ে কি হচ্ছে না হচ্ছে তা নিয়ে তোমার এত লিখালিখির কি আছে?"
    আমি তাঁকে সেই পুরোনো কবিতাটা স্মরণ করিয়ে দিলাম -
    First they came for the Jews
    and I did not speak out
    because I was not a Jew.
    Then they came for the Communists
    and I did not speak out
    because I was not a Communist.
    Then they came for the trade unionists
    and I did not speak out
    because I was not a trade unionist.
    Then they came for me
    and there was no one left
    to speak out for me.
    আমার বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে যখন মিথ্যাচার হয়েছিল, আমার পাশে কাউকে পাই নাই। আমার অনেক কষ্ট হয়েছিলো একা একা যুদ্ধ করতে, সে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে।
    একা যুদ্ধ করার কষ্ট আমি জানি।
    আমি চাই না মিথ্যার বিরুদ্ধে আর কেউ একা লড়ুক।
    যেখানেই মিথ্যার বিরুদ্ধে লড়াই হবে, আমি তাঁর অংশ হই বা না হই, সে লড়াই-এ আমি তাদের সাথে আছি, থাকব কাম হোয়াট মে...... (সম্পাদিত)


    Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

    জবাব দিন
    • রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

      First they came for the Jews
      and I did not speak out
      because I was not a Jew.
      Then they came for the Communists
      and I did not speak out
      because I was not a Communist.
      Then they came for the trade unionists
      and I did not speak out
      because I was not a trade unionist.
      Then they came for me
      and there was no one left
      to speak out for me.

      এইটাই বটম লাইন।

      আর হুমায়ুন আজাদ তো বলেছেনই,
      

      এখনো বিষের পেয়ালা ঠোটের সামনে তুলে ধরা হয়নি, তুমি কথা বলো।


      এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

      জবাব দিন
    • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

      আপাদত ফেবু ঠান্ডা মেরে গিয়েছে। মনে হয় এরা বুঝতে পারছে নেশা করার মত যথেষ্ট উপকরণ নাই। খুব সহজেই ধরা পড়ে গিয়েছে পার্থক্যটা। আর একটা মানুষের পোস্টে আরেকজন ব্যাপারটা তুলে ধরলে আরো ১০০জন কিন্তু খেয়াল করছে। যেভাবে ইস্যু শুরু হয়, জায়গামত ধরতে পারলে সেভাবেই ঠান্ডা করে দেয়া যায়। সেই ছোট ভাইয়ের কাছে আর উত্তর পাইনি। হাহাহা! জিজ্ঞাসা করেছিলাম হিজাব ও নেকাবের পার্থক্য জানে কিনা!


      \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
      অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

      জবাব দিন
    • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

      আমি মানব জমিনের কোন খবর বিশ্বাস করি না। ব্র্যাকের ফ্যাকাল্টির সাথে যোগাযোগ করসি সে বলসে বহিষ্কার করা হইছিল নেকাব পরার কারণে। বোরখা ও হিজাব কখনোই বন্ধ করে নাই। তবে পিছু হটার অন্য কারণ থাকতে পারে। সামনে সময় খারাপ। এই ইস্যু ধইরা আমাদের ব্ল্যাক বেঙল সোসাইটি ভার্সিটি ভাঙচুর করলে, আগুন ধরায় দিলে সেটার দায় ভার দিন শেষে অথরিটির।

      আর তা ছাড়া যেটা আগেও বলসি ব্র্যাকের পরিচালনা পর্ষদে ঘাগু লোকের সংখ্যা অনেক বেশী। যদি ঘটনা সত্য হয়ে থাকে অবশ্যই উপযুক্ত কারণ আছে।


      \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
      অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

      জবাব দিন
    • পারভেজ (৭৮-৮৪)

      টাইটেলের সাথে বর্ননা কি মেলে?
      আমার কাছে তো ঘটনা বেশ ঘোলাটে মনে হয়।
      তাছাড়া মেয়েটা একা না, সপরিবারেই ধর্মান্ধ বলেই তো এখন মনে হচ্ছে।
      "তার জন্য মহিলা নিরাপত্তা কর্মী নিয়োজিত থাকবে। " - এর অর্থটাও পরিষ্কার না।
      এটার অর্থ কি এই যে, সে যতক্ষন ক্যাম্পাসে মুখঢাকা অবস্থায় থাকবে, একজন নারী নিরাপত্তা কর্মি তাঁর সাথে সাথে থাকবে? বা তাঁর গতিবিধি কভার করবে? তাহলে তো তা হবে অনেকটা কয়েদির জীবন। কেমন হবে সেটা?
      বিশ্ববিদ্যালয়ের চিঠি দেখে আমার কিন্তু একবারও মনে হয় নাই যে তাঁরা তাকে বহিস্কার করেছেন। সেক্ষেত্রে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করার সুযোগ কোথায়?
      আগে বলা হয়েছিল, মুখ ঢেকে রেখে নিরাপত্তায় বিঘ্ন ঘটানো যাবে না আর এখন সম্ভবত বলা হলো মুখ ঢাকা অবস্থায় নারী নিরাপত্তা কর্মীর কভারে থাকতে হবে।
      শর্ত কিন্তু থাকছেই।
      তাছাড়া অবস্থান থেকে সরে আসা মানেই পিছু হটা, এটা সবসময় ঠিক না। এখানে এখনও আমার সেরকম মনে হচ্ছে না।
      শেষকথা, ব্র্যাক শেষপর্যন্ত একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান-ই। তাই কাস্টোমারের স্বার্থে অবস্থানের পরিবর্তন ঘটানোতে খুব বিচিত্র কিছু আছে কি?


      Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

      জবাব দিন
      • মোকাব্বির (৯৮-০৪)
        শেষকথা, ব্র্যাক শেষপর্যন্ত একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান-ই। তাই কাস্টোমারের স্বার্থে অবস্থানের পরিবর্তন ঘটানোতে খুব বিচিত্র কিছু আছে কি?

        :thumbup:

        আসল কথা হলো এটাই। স্ট্র্যাটেজিক ম্যানেজমেন্ট!


        \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
        অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

        জবাব দিন
  8. ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

    এই আমেরিকাতে একবার এক বাসায় দাওয়াতে গিয়েছিলাম। সে বাসার মালকিন নেকাব পড়ে এবং সাহেব তাবলীকি। স্বভাবতই ছেলেদের আর মেয়েদের বসার স্থান আলাদা এবং পর্দা দিয়ে আড়াল করে রাখা। কিন্তু মালকিনকে দেখি খালি গজগজ করছে যে ছেলেরা নাকি বেডরুমের দিয়ে হা করে তাকিয়ে থাকে। সে যেই জীবনব্যবস্থা বেছে নিয়েছে তার প্রতি আমার কোন আপত্তি নেই - আমি শুধু কাছ থেকে তার মানসিকতা বোঝার চেষ্টা করলাম। এবং যা বুঝলাম তা হলো পোষাক শুধু পোষাক নয়, এটি আসলে আমাদের মানসিকতারও প্রতিচ্ছবি। আমি যদি জন্ম থেকেই এই ধারণা নিয়ে বড় হই যে ছেলেদের আর কোন কাজ নেই মেয়েদের দিকে হা করে তাকিয়ে থাকা ছাড়া তাহলে আমি মূলত কোন ছেলেকেই রেসপেক্ট করতে পারবো না। আর নিজের সম্পর্কে এমনটা ভাবি যে আমি একটি লোভাতুর বস্তু যা অনেকেই পেতে চাইবে - তাহলে নিজের প্রতিও আমার কোন শ্রদ্ধাবোধ জন্ম নেবে না। কোনটা ঠিক কোনটা ভুল সেটা বলার আমি কেউ না - তারপরও আমার শুধু ওদের জন্য কষ্ঠই লাগে। ওরাও নিশ্চয় ভাবে যে এই মানুষগুলো সময় হলেই দোজখের আগুনে জ্বলতে থাকবে।


    “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
    ― Mahatma Gandhi

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।