১৫ই আগস্টে ঘটে যাওয়া কতিপয় ব্যক্তিগত ক্ষতি

৭২ এর শুরু থেকে ৭৫-এর শেষ, এই চার বছর আমি ইউনিভার্সিটি ল্যাব-এ পড়েছি। ঐ সময়কালে শেখ রাসেলও ছিল ঐ স্কুলের ছাত্র। আমরা এক ক্লাসে না পড়লেও বিরল এক কারনে তারসাথে আমার কিছুটা সখ্যতা গড়ে ওঠে।
আমার বড়ভাই ছিল গভঃ ল্যাবের ছাত্র। ওর ক্লাশ শুরু হত দশটার আশেপাশে। আমারটা সোয়া এগারোটায়। দুইজন একসাথে রিকশায় আসতাম। আমাকে স্কুলগেইটে নামিয়ে দিয়ে ভাইয়া যখন চলে যেত, তখনও ক্লাশ শুরুর ঘন্টাখানেক বাকি। এসময়টা আমার খারাপ কাটতো না কারন আমার মত এরকম আরও কিছু ছেলে ছিল যারা ক্লাস শুরুর আগ পর্যন্ত ঐ সময়টাতে এসে জুটত। আমরা সবাই একসাথে বোমবাস্টিং, সাতচাড়া, রেসকিউ, টিলো এক্সপ্রেস ইত্যাদি খেলে কাটাতাম।
রাসেলের বেশী আগে আসার কোন বাধ্যবাধকতা না থাকলেও শুধুমাত্র এই খেলাটার আকর্ষণেই ও ঘন্টা খানেক আগে পৌছে যেত। প্রথম প্রথম আমরা আলাদা ক্লাসের বলে আলাদা ভাবেই খেলতাম, কিন্তু এক পর্যায়ে খেলোয়ার কমে যাওয়ায় আমরা একসাথে খেলা শুরু করি।
আমি পুরান ঢাকার বাসিন্দা হওয়ায় আর ও জাতির জনকের সন্তান হওয়ায় আমাদের দুজনেরই এই সময়টুকুর বাইরে খেলাধুলার খুব একটা অবকাশ ছিল না। আমরা দুজনেই তাই এই একঘন্টার খেলাধুলাটা প্রানপনে খেলতাম এবং তা থেকে সর্বোচ্চ আনন্দ পেতে চাইতাম। এটাই ছিল আমাদের সখ্যতা গড়ে ওঠার কমন কজ।
১৫ই আগস্টের বেশ আগেই সোয়া এগারোটায় স্কুল শুরুর ব্যাপারটা বদলে যায়। মাঝে মধ্যে টিফিন-টাইমে বা ছুটির পরে ছাড়া আর তেমন একটা খেলাধুলা একসাথে করা হয় নাই। কিন্তু ক্লাস শুরুর আগের ঐ খেলাটা আমি খুব মিস করতাম। রাসেলও করতো সম্ভবত। স্কুলের বারান্দায় চলাফেরার সময় আমাদের দেখা হলে পরিচিত দৃষ্টিবিনিময়, কখনো বা তারথেকে একটু বেশী কিছু সেকথাই মনে করিয়ে দিত।
১৫ই আগস্টে দেশ জাতি অনেকে অনেক কিছু হারিয়েছে। আমি অবলিলায় আমার এক খেলার সাথি হারিয়েছিলাম।
আর কোনদিনও তারসাথে সেই পরিচিত দৃষ্টি বা মৃদু দীর্ঘশ্বাস বিনিময় করা হয়নি।

পরবর্তীতে কেউ কেউ আমার কাছে জানতে চেয়েছে, রাসেল কেমন ছেলে ছিল? খেলার সময়টার বাইরে খুব কোন সখ্যতা ছিল না। তবে যতটুকু দেখেছি, খুব লাজুক ছিল। সে যে জাতির জনকের সন্তান এবং এ জন্য তাঁকে কেউ কেউ একটু অন্যভাবে দেখছে এটা বুঝতে পারলে খুব বিব্রত বোধ করত।

ওকে নিয়ে যে গাড়িটা আসতো, সেটা স্কুল শেষ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করত। এটা নিয়ে ওর ছিল সীমাহিন অভিমান। ও চাইতো অন্য আর দশটা ছেলে-মেয়েদের মত গাড়ি ওকে নামিয়ে চলে যাক। এনিয়ে প্রায়ই চালকের সাথে ওর মান-অভিমান চলত।

বুদ্ধিমান চালক গাড়ি নিয়ে চলে যাবার ভান করত এবং ভিসির বাংলোর কাছে গিয়ে অপেক্ষা করতো।

আমরা বা ওর বন্ধুরা মাঝে-মধ্যে খুনসুটি করে সেটা ওকে জানাতাম। এটা জানালে আরেক দফা বিব্রত হত রাসেল।

ঐদিন রাসেলের সহপাঠি আরিফ সেরনিয়াবাদ ও নিহত হয়। আরিফের পিঠাপিঠি বড় বোনটি আমার সহপাঠি ছিল। ১৫ই আগস্টের পর ওকে আর কখনো দেখি নাই।

তাজউদ্দিন সাহেবের ছোটমেয়ে জাবিনও আমার সহপাঠি ছিল। দুর্দান্ত ছাত্রী ছিল ও। ক্লাস থ্রীতে আমি ফার্স্ট হই, জাবিন সেকেন্ড। ক্লাস ফোরে মোজাদ্দেদ ফার্স্ট, জাবিন সেকেন্ড, আমি থার্ড। মোজাদ্দেদ গভঃ ল্যাব-এ চান্স পেয়ে চলে গেল। ক্লাস ফাইভের হাফ ইয়ারলি পর্যন্ত আমি জাবিনের সাথে মনে মনে প্রতিযোগিতা চালিয়ে গেলাম। রেজাল্ট মনে নেই তবে কাছাকাছিই ছিলাম। ফাইনালে হবে চুড়ান্ত শো-ডাউন।

এক ১৫ই আগস্ট এসে সব ভেস্তে দিল। জাবিন আর ক্লাসে ফিরলো না। যতদুর মনে পড়ে ফাইনালের আগে একবারই এসেছিল জানতে যে কবে পরীক্ষা, ও পরীক্ষা দিতে পারবে কিনা। সম্ভবত দিয়েও ছিল। এর বেশী কিছু মনে নেই।

১৫ই আগস্ট-এর ঘটনাবলী ক্লাস ফাইভে পড়ুয়া এক বালকের ছোট ছোট অনেকগুল ক্ষতি করে দিয়ে গেল……

৪,২৬৪ বার দেখা হয়েছে

৩০ টি মন্তব্য : “১৫ই আগস্টে ঘটে যাওয়া কতিপয় ব্যক্তিগত ক্ষতি”

  1. নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

    পারভেজ ভাই,
    সারাদিনের কাজ পড়ে আছে -- আসবোনা আসবোনা করেও সিসিবিতে এসে এলেখাটা পড়ে অস্থিরতায় আক্রান্ত হলাম। কিছুতেই আর কাজের টেবিলে ফিরে যেতে ইচ্ছে করছেনা। 'হারানো-নিরুদ্দেশ' এর কথাগুলো পড়ে ওই সময়ের ছোট্ট আপনার মানসিক যাতনার কিছুটা অনুভব করতে পারছি যেন।

    ব্যক্তিগত ইতিহাসের এটুকু পাঠ, যা কি না আমাদের জাতির ইতিহাসে সবচে' দুর্যোগপূর্ণ দিনটির সঙ্গে সম্পর্কিত, আমাকে এলোমেলো করে দিলো।

    জবাব দিন
    • পারভেজ (৭৮-৮৪)

      ভাই নূপুরঃ কষ্টটা ট্রান্সফার করার দায় আমার। পোষ্টটা দেয়ার পর বুঝতে পারছিলাম যে সংবেদনশীল কেউ কেউ আমার অবস্থানটাতে পৌছুতে পারবে। তবে তা এত তাড়াতাড়ি হবে, তা বুঝি নাই।
      একদিনে আমাদের স্কুলের তিন-তিন জন ছাত্র-ছাত্রী নিহত হলেনঃ বেবী আপা, আরিফ, আর রাসেল অথচ সবাই এমন একটা ভাব করতে লাগলেন, যেন কিছুই হয়নি কোথাও।
      না এসেমব্লিতে কোন শোক বার্তা, না কোন এক মিনিটের নিরবতা, না কোন মিলাদ বা দোয়া বা মুনাজাত।
      অথচ আমরা দেখতাম কোন ছাত্র-ছাত্রীর শোক-সংবাদ এলে তাৎক্ষনিক স্পেশাল এসেমব্লি হতো। নিরবতা এবং/অথবা দোয়া/মুনাজাত -এর পর স্কুল ছুটি হয়ে যেত।
      এই ব্যাপারটাও আমাকে দীর্ঘদিন পুড়িয়েছে। কিন্তু চেপে ছিলাম। আজ যখন বলতে এসেছি, সবটুকুই বলে ফেলি, কি আর করার।
      ফিবছর একাএকা কষ্ট পাবার বদলে সবাই মিলে নাহয় একদিন দুফোটা চোখের জলই ফেলি।
      মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।


      Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

      জবাব দিন
  2. জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

    পারভেজ ভাই, এই লেখায় মন্তব্য করা সম্ভব নয়... 😐
    আপনার কষ্ট কিছুটা হলেও আমাদের ছুঁয়ে গেছে জানিয়ে গেলাম... 🙁


    ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

    জবাব দিন
    • পারভেজ (৭৮-৮৪)

      মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আমার জন্য এই মন্তব্যটা উৎসাহ ব্যাঞ্জক। তবে আমি বেশী খুশী হব যদি দেখি আরও অনেকে এইসব "ছোট ছোট দুঃখ-কথা"-র ঝাঁপি খুলে দেন। যেকোন বড় ঘটনা/দুর্ঘটনার আগে-পিছে একরকম অনেক ছোট-খাটো মানবিক বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটে যায়। নানা কারনে এগুলো শেয়ার করা কঠিন ছিল। তবে এখন ব্লগের কল্যানে সম্ভব।
      একজন সাধারন মানুষ আরেকজন সাধারন মানুষের কষ্ট বুঝবেন, পাশে দাড়াবেন। কিন্তু কষ্টের অবস্থানটা না জানলে তা হবে কি ভাবে?


      Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

      জবাব দিন
      • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

        সম্পূর্ণ সহমত ভাই। বড় ঘটনা বা দুর্ঘটনার বর্ণনা কিন্তু সাধারণ জনতার কাছ থেকে অার শোনা হয়না। জাতির পিতা হারানোর শোকের পিছনে বন্ধু হারানোর শোক থাকতে পারে সেটা ক'জনায় খেয়াল করে; অার খেয়াল করলেও ক'জনায় তা মুখ ফুটে বলে? অাপনাকে অনেক ধন্যবাদ এই লেখাটির জন্য!


        \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
        অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

        জবাব দিন
    • পারভেজ (৭৮-৮৪)

      "এই দৃষ্টিকোণ থেকে এরকম কিছু পড়িনি আগে" - কারন দৃষ্টিকোণটি "আমজনতার" দৃষ্টিকোণ। আর আমরা আমজনতাগণ আগে কখনো দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরার জন্য কোন ফোরাম পাই নাই। কদাচিৎ পেলেও, তা শোনার মত তেমন কেউ ছিল না কোনকালেও...
      মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।


      Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

      জবাব দিন
  3. সিরাজ(১৯৯১-১৯৯৭)

    পারভেজ ভাই খুব বেশি কিছু বলার নাই। আপনি তখন ছোট ছিলেন কিন্তু পরোক্ষভাবে আপনি কষ্ট পেয়েছেন রাসেলের মৃত্যুতে এই অনুভুতি কি ওদের ছিল যখন তারা রাসেল কে হত্যা করে। তাদের মনে কি রেখাপাত করেছিল যে এই শিশুটিকে মেরে ফেল্লে আর কতজন কষ্ট পাবে। লেখাটি মনের অনেক গভীরে ঢুকে গেলো। আমরা এতদিন শেখ মুজিবর রহমানের মৄত্যু নিয়ে হা হুতাস করেছি কিন্তু রাসেলের মৄত্যু নিয়ে এভাবে ভাবিনি।


    যুক্তি,সঠিক তথ্য,কমন সেন্স এবং প্রমাণের উপর বিশ্বাস রাখি

    জবাব দিন
    • রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

      সব মিলিয়ে ৪ টা শিশু ও মনির প্রেগনান্ট স্ত্রীকেও খুনিরা হত্যা করে.
      যদিও অনেকের চোখেই এইসব খুনিরা ত্রাতা.


      এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

      জবাব দিন
      • পারভেজ (৭৮-৮৪)

        ভাই রাজীব, মুনীরের কমেন্টের উপর প্রতি-কমেন্ট করার সময় তোমারটার উপর যা বলার ছিল, প্রায় সবই কাভার করে ফেলেছি। নতুন যা বলা যায় তা হল, এই "ত্রাতা" সম্পর্কিত বিশ্বাস নিয়ে।
        এটা দুঃখজনক যে এখনো কাউকে কাউকে গুঞ্জন করতে শোনা যায় যে, যদি ১৫ই আগস্ট না হত তা হলে এই হত, সেই হত, ইত্যাদি।
        এই সব কুলাঙ্গারদের জন্য আর্মিতে থাকতে শেখা একটা বানী দিতে ইচ্ছা করে - "ইফ আন্টি উড হ্যাভ বলস, আঙ্কেল উড হ্যাভ বীন প্রেগনেন্ট"।
        আর এইসব ইফস বা বাটস দিয়ে যারা হত্যাকান্ডের পক্ষে সাফাই গায়, তারা আর যাই হোক, মানুষ না।
        অমানুষদের সম্পর্কে মন্তব্য করা থেকে আপাতত বিরত থাকলাম...


        Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

        জবাব দিন
    • পারভেজ (৭৮-৮৪)

      ভাই মুনির, যদিও আমি সেরকমভাবে কোথাও পাই নাই, তারপরেও গভীরভাবে বিশ্বাস করি, এইসব খুনীরা ছিল, মার্সেনারি। তাদের এক্সসিকিউশনের পিছনে প্রধান শুধু না সম্ভবত একমাত্র মটিভই ছিল "মানি মটিভ" আর মানি মটিভ থাকলে যা হয়, যত খুন তত টাকা। তাই খুনের মুহুর্তে তাদের আর কোন বোধ কাজ করে নাই। ভিক্টিম নারী না শিশু না প্রৌঢ়, তাঁর মৃত্যুতে কে কে ক্ষতিগ্রস্থ হবে কিংবা কার কি লাভ হবে, এরচেয়ে তাদের কাছে অধিক গুরুত্বপূর্ন ছিল তিনি (ভিক্টিম) একটি সংখ্যা। আর সংখ্যাটা যতবড় হবে পেমেন্টও তত বেশী হবে।
      ১৫ই আগস্টের ঘটনা যে, কোন বিপ্লব ছিল না তা প্রমানের সবচেয়ে বড় অস্ত্র হল, হামলাকারীদের নির্বিচার হত্যাকান্ড সংঘটন।
      বিপ্লবিরা আর যাই করুক, কখনো নির্বিচার হত্যাকান্ডে জড়ায় না।
      তাছাড়া অকারনে নির্বিচারে নারী ও শিশু হত্যা আরেকটা অপরাধের সংজ্ঞার শর্ত পুরণ করে। আর তা হল 'জেনোসাইড" যার প্রচলিত ভুল বাংলা পরিভাষা গনহত্যা।
      ভুল বলছি, কারন মাস মার্ডারের বাংলা হওয়া উচিৎ ছিল "গনহত্যা" আর জেনোসাইডের বাংলায় যে টোনটা আসা উচিৎ ছিল তা হল গোত্রনিধনের জন্য পরিচালিত হত্যাযজ্ঞ বা গোত্রহত্যা বা গোত্রনিধন বা এ জাতীয় কিছু একটা।


      Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

      জবাব দিন
  4. শাহরিয়ার (০৬-১২)

    ::salute::
    ভাইয়া কমেন্ট করার ভাষা পাচ্ছি না। ১৫ আগস্টে আমাদের হারানোর হিসাব খুললে খাতা শেষ হয়ে যাবে হয়তো।


    • জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব - শিখা (মুসলিম সাহিত্য সমাজ) •

    জবাব দিন
  5. পারভেজ (৭৮-৮৪)
    আপনি তখন ছোট ছিলেন কিন্তু পরোক্ষভাবে আপনি কষ্ট পেয়েছেন রাসেলের মৃত্যুতে

    মোহাম্মদ সিরাজুম মুনির(১৯৯১-১৯৯৭)-এর এই উক্তিটি পড়ে আমি ভাবতে বসি, আমার সেইসময়কার কষ্টের স্বরূপ কি ছিল?
    ১৫ই আগস্টের পর থেকে আমার দিনের প্রত্যহিক সূচনা বদলে গিয়েছিল।
    আমাদের আর রাসেলদের ক্লাসরুম ছিল পাশাপাশি। ক্লাসে ঢুকতে, বেরুতে, টিফিনের সময় ওর সাথে দৃষ্টি বিনিময়, আজ ছুটির পর খেলা হবে কি হবে না সেই মত বিনিময় ইত্যাদি আর হত না। ওর ক্লাসের দিকে চোখ পড়লে দেখতাম ওর চেয়ারটা খালি পরে আছে। একধরনের শুন্যতা বুঝতাম কিন্তু তা যে আর কখনো পূরন হবার না, সেটা ঠিক সেভাবে বুঝতাম না।
    আমাদের ক্লাসে মেয়েরা সংখ্যায় এমনিতেই বেশ মাইনরিটি ছিল। তার উপরে, কি এক অজ্ঞাত কারনে যেন আমরা ওদের সাথে কথা বলতাম না। এই সংখ্যালঘু মেয়েরা দুজন সহপাঠিনির নিয়মিত অনুপস্থিতিতে আরও বেশী সংখ্যালঘুতে পরিনত হল।
    প্রতিদিন ক্লাসে ঢুকে আমার চোখ খুঁজে ফিরত হারিয়ে যাওয়া সহপাঠিনীদের। কিন্তু ওদের সাথে যে কথা বন্ধ, কাউকে জিজ্ঞাসাও করতে পারতাম না কি খবর ওদের, আর কি আসবেনা কেউ?
    জাবিনের সাথে যে আনফিনিশড মোকাবিলা ছিল, কি হবে তার?
    এসবের বাইরেও অনেক কথা জানার ছিল যা কাউকে জিজ্ঞাসা করতে পারতাম না। একটা দমবন্ধ করা শুনসান পরিবেশ চারিদিকে।
    একটা শুন্যতা ঘিরে থাকত সবসময়ে। পরবর্তিতে যতদিন ঐস্কুলে ছিলাম ততদিনই এটা ছিল...


    Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

    জবাব দিন
  6. সামিউল(২০০৪-১০)

    কষ্ট, অনেক কষ্ট।
    সহপাঠী, বন্ধু কিংবা খেলার সাথী যে হারায় সেই বোঝে।

    অনেক ধন্যবাদ ভাই আমাদের সাথে এটা শেয়ার করার জন্য।


    ... কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালবাসে!

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।