ফ্ল্যাশব্যাক ০৬

১। আমাদের পৌরনীতির ইসহাক আলী স্যার খুব জনপ্রিয় ছিলেন। স্যার অনেক ফ্রি ছিলেন এবং অনেক সময় সিরিয়াস রোমান্টিক কথা বলতেন। স্যারকে আমরা গুরু মানতাম আর বলতাম *ক্স আলী। মাঝে মাঝে বাংলাদেশের পলিটিক্স নিয়ে বলতে গিয়ে উত্তেজিত হয়ে যেতেন।তার একটা নমুনা-
“এই সেই আব্দুল বিশ্বাস(আব্দুর রহমান বিশ্বাস) যে খালেদা জিয়ার পে*কোট ধোয়”
পৌরনীতি পরীক্ষায় কোন প্রশ্নের উত্তর মানেই বেশি নম্বরের আশায় একগাদা পয়েন্ট আর কোটেশন, তার সাথে মার্কার দিয়ে কালার করা। আমাদের ইমিডিয়েট সিনিয়র একজন রাষ্ট্রবিজ্ঞান সম্পর্কে লিখতে গিয়ে কোটেশন দিয়েছিলেন এরকম-
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী মেজবাহ উ’চ্যাং বলেছেন, “রাষ্ট্র মানুষকে সেক্স দেয়”
এবং যথারীতি গুরুর কাছে ধরা। :bash:

২। ভার্সিটিতে একটা দড়জায় হঠাৎ একটা লেখা চোখে পড়ল।আমি পড়লাম “ক্যাডেট্‌স আর নট এলাউড বিয়ন্ড দিস ডোর”।
একটু পরই ঘোর কাটলো- বুঝতে পারলাম এখন আমি ক্যাডেট কলেজে না।আসলে লেখা ছিল “ স্টুডেন্টস আর নট এলাউড বিয়ন্ড দিস ডোর ”।
ক্যাডেট সত্তা যে রক্তে মিশে আছে সেদিন আবারো টের পেলাম। 😀

৩। এবার প্রথম রোজার দিন ইফতারের আগে টেলিভিশনে রমজান বিষয়ক সওয়াল জবাবের লাইভ অনুষ্ঠান দেখছিলাম। অনেকেই টেলিফোনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানতে চাচ্ছিলেন। একজন প্রশ্ন করলেন- কেউ যদি রোজা না রাখতে চান তাহলে তাকে রোজা রেখে আবার ভাংতে হবে নাকি।তার যুক্তি ছিল এরকম ”সেহরী খেয়ে তারপর সকাল ১০ টায় রোজা ভাংতে হবে। এর পিছনে যুক্তিটাও বেশ অদ্ভুত- পাতিল না বানালে ত ভাংগা সম্ভব না তাই রোজা রেখে তারপর ভাংতে হবে” ! 😮
৪। আমাদের অফিসে এক ফাঁকিবাজ গার্ডকে শায়েস্তা করার জন্য তাকে ওয়ার্নিং এপ্লিকেশন লেখানো হয়েছিল তার মধ্যে কিছু পয়েন্ট ছিল এরকম-
–আমি আমার অবস্থান থেকে ১০ গজের বেশি দূরে যাবনা
–ঠিক সময়ে ডিউটি করবো
–দিনে ২ বারের বেশি বাথরুমে যাবনা
–বেশি বাথরুম যাতে না চাপে তাই ১ লিটারের বেশি পানি খাবনা
–এদিক সেদিক বেশি তাকাবনা
–ড্রেস এবং জুতা ঠিকমত মেইনটেইন করব
–এর কোন ব্যতিক্রম হলে আমার বিরুদ্ধে যে কোন ব্যবস্থা নিলে আমি খুশি মনে মেনে নেব। :duel:
৫। আমাদের ভূগোলের শিক্ষক ছিলেন অখিল চন্দ্র কুন্ডু। তিনি কখনোই পরিসংখান বলার সময় পুরো ডাটা বলতেন না। যেমন কোন কিছুর দৈর্ঘ্য ১১ লক্ষ সামথিং হাজার সামথিং। ~x(
আবার তাঁর কমন ডায়ালগ ছিল-যদিও বলা যায় নদীটি খরস্রোতা, তবুও বলা যায় অর্থনৈতিক দিক থেকে খুব গুরুত্বপূর্ণ। আবার-
যদিও বলা যায় আগ্নেয়গিরিটি সুপ্ত, তবুও বলা যায় যে কোন সময় লাভা উদ্গিরণ ঘটতে পারে। :goragori:
আবার মরুভূমির গুরুত্ব বুঝাতে-“মরুভূমি থেকে খেজুর উত্তোলন করা হয়” :pira:
৬। আমাদের ফিজিক্সের ডেমোনেষ্ট্রেটরের নিকনেম ছিল গোল আলু(গোল মুখমন্ডলের কারনে) সেটি উনিও জানতেন। কারন কেউ কেউ ওপেন টিজ করত। আমাদের অক্সিজেন(ইনহেলার ইউস করত) আবার জানতনা। মঙ্গলবার আর বৃহস্পতিবার দুপুরে লাঞ্চে আলুভর্তা দিত। সেদিন ছিল মঙ্গলবার ফিজিক্স প্র্যাক্টিকাল ক্লাস। আমাদের একজন অক্সিজেনকে জিজ্ঞেস করল আজ লাঞ্চে কি দিবেরে?
অক্সিজেনের তড়িৎ জবাব- আলু
আর যায় কোথায় ! সাথে সাথে আলু স্যারের প্যাঁদানি (স্কেলের) আর সাথে কঠিন ডায়ালগ বর্ষন-
“তোর বাপরে যদি আমগাছ কই তাইলে তোর কেমন লাগবো ?” :khekz:
অক্সিজেনের ত বিস্ময় কাটেনা কেন স্যার এমন ক্ষিপ্ত !

৩,৪২৬ বার দেখা হয়েছে

৩৬ টি মন্তব্য : “ফ্ল্যাশব্যাক ০৬”

  1. কামরুল হাসান (৯৪-০০)
    “এই সেই আব্দুল বিশ্বাস(আব্দুর রহমান বিশ্বাস) যে খালেদা জিয়ার পে*কোট ধোয়”

    আচ্ছা তাইলে ইয়ে টা কে ধোয় ? 😛


    ---------------------------------------------------------------------------
    বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
    ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।

    জবাব দিন
  2. আব্দুল্লাহ্‌ আল ইমরান (৯৩-৯৯)
    ভাইয়া যতদূর জািন ইসহাক স্যার পরোেলাক গমন করেছন।

    তাই নাকি ! ইন্নালিল্লাহ :((
    স্যার টাঙ্গাইল আমাদের বাসায় গিয়েছিলেন আমি শহীদ কোচিং এ পড়তাম এইটা জানার পর তাঁর ছেলে শিহাবকে ভর্তি করার জন্য। শিহাব আমাদের কলেজে চাঞ্চ পেয়েছিল।খুব ভাল ছেলে।স্যারকে আমি অনেক রিস্পেক্ট করি :salute: ।শিহাব এখন আরেক ফৌজিয়ান নরবার্ট জি মেন্ডেস ভাইয়ের 'এনেম অমনি' গ্রুপে জব করে।আমি নরবার্ট ভাইয়ের ওখানে প্রায়ই যাই,সেদিনও গিয়েছিলাম ।তখন উনি বললেন শিহাব এখানে বাট দেখা হয়নি।দেখি খোঁজ নিতে হবে।

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।