ক্যাডেট হিসেবে আত্নপ্রকাশ করার আগে থেকেই জেনে আসছি আমাদের কলেজের নাম ঐতিহ্যবাহী ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ । আমাদের কলেজের সবকিছুই ঐতিহ্যবাহী। যেকোন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বা প্রিন্সিপালের ভাষনে অথবা বার্ষিকীতে বাণী লেখার সময় ঐতিহ্যবাহী শব্দটা ব্যবহার করতে কার্পণ্য করতেন না কেউই। আমাদের একটা ঐতিহ্যবাহী দীঘিও আছে যেটির সাথে সব হাউসের বাথরূমের লাইনের কানেকশন। বলা বাহূল্য আমাদের গোসলের পানির সাপ্লাই আসতো দীঘি থেকেই। বিড়াট বড় শান্ত দীঘি এবং ভরপুর পানি। কখনো পানির অভাব হবে এটা আমাদের কল্পনাতেও ছিলনা। আমরা যখন ১২ ক্লাসে তখন আমাদের সব অনুমান মিথ্যা প্রমাণ করে শান্ত দীঘি অশান্ত হয়ে আমাদের পানি সাপ্লাই দিতে অপারগতা প্রকাশ করলো । রীতিমত ১৪৪ ধারা জারি করে উনার পানি কমে গেল।
তাই জরূরী ভিত্তিতে কলেজ ছুটি ঘোষণা করা হল। :awesome: কিন্তু কিছু সোনার ছেলেদের কলেজে অবস্থান করতে হল তাদের আসন্ন এইচ এস সি পরীক্ষার জন্য। এখন আমরা কলেজে একা। নো জুনিয়র, নো সিনিয়র। অবধারিতভাবে কলেজের ডিসিপ্লিন চাঙ্গে উঠলো। তখন আমাদের প্রিন্সিপাল ছিলেন লেফট্যানেণ্ট কর্ণেল বশির উদ্দীন। আমাদের দেখা বেষ্ট প্রিন্সিপাল ছিলেন লেফট্যানেণ্ট কর্ণেল বশিরূল আনাম। :hatsoff: ঠিক তার পরই কিভাবে এই বস্তাপচা ওর্ষ্ট প্রিন্সিপাল বশির উদ্দীনের আবির্ভাব হলো এই রহস্য আজও আমরা ভেদ করতে পারিনি। বশির উদ্দীন রেসীডেণ্টশীয়াল মডেল স্কুলের স্টুডেন্ট ছিলেন। ক্যাডেট কলেজকেও তাই মনে করতেন এবং কম্প্যেয়ার করতেন। উনি ‘বি এম এ’র টীচার ছিলেন(এডুকেশন কোর)।
আমাদের খাবার পানি সাপ্লাই হত ডাইনিং হল থেকে। কিন্তু শুধু আমাদের জন্যও পানি সাপ্লাই যথার্থ ছিলনা। ~x( এ অবস্থায় করণীয় কি ভাবতে লাগলাম। ‘যে জাতি তাদের ভাগ্য পরিবর্তনে সচেষ্ট হয় না, আল্লাহ্ও তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করেন না ’। তাই আমরা আমাদের ভাগ্য পরিবর্তনে সচেষ্ট হলাম । আমাদের রবীন্দ্র হাউসে মিটিং এ সিদ্ধান্ত হল আমরা মিছিল করে এর প্রতিবাদ জানাবো। :dreamy: এটা তেমন কোন পরিকল্পিত সিদ্ধান্ত ছিলনা। আমাদের পুরো ব্যাচও এটেন্ড করেনি।
ঐদিন সন্ধার পর আমরা যারা রবীন্দ্র হাউসের সামনে ছিলাম তাদের মধ্যে কয়েকজনের উর্বর মস্তিষ্কের কল্পনাপ্রসূত ফল এবং তখনি একশন (অবশ্যই স্যারদের থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে)। কারন ক্যাডেট কলেজে মিছিল! :just: ভাবাই যায়না। আমি ব্যক্তিগত ভাবে শখ করেও কোন মিছিলে যাইনি। তাই আমার উত্তেজনা ছিল দেখার মত। :duel: আমার মধ্যে তখন কবি নজরূলের বিদ্রোহী চেতনা ভর করেছিল-
আমি মানিনাকো কোন আইন
আমি ভরাতরী করি ভারাডুবি
আমি টর্পেডো, আমি ভীম ভাসমান মাইন
………………………………………………
আমি বিদ্রোহী রণক্লান্ত আমি সেইদিন হব শান্ত ।
আমরা শ্লোগান রেডি করলাম এবং বদনা, লাঠি এগুলো নিয়ে মিছিলে নেমে পড়লাম।(ইস্ যদি মশাল মিছিল করা যেত !) বজ্রকন্ঠে আওয়াজ তুললাম…
বাচার মত বাচতে চাই/ হাগা মূতার পানি চাই
বশির উদ্দীনের চামড়া / তুলে নেব আমরা
আমাদের দাবী- মানতে হবে মানতে হবে
আমরা সবাই ক্যাডেট সেনা / ভয় করিনা বুলেট বোমা
:gulli2: :gulli:
আমরা মিছিল করতে করতে স্যারদের কোয়ার্টারের দিকে চলে গেলাম। তবে অবশ্যই চোখ কান খোলা রেখে। সব ধরনের অবস্টাকল ফেস করার জন্য প্রস্তুত ছিলাম। আমরা ভিপি’র বাসা ফেলে আসার পর দেখলাম প্রিন্সিপালের গাড়ী বের হচ্ছে। :bash: তখনি একেবারে ঝেড়ে দৌড়। মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত আর আমাদের দৌড় ছিল হাউস পর্যন্ত। আমাদের মিছিল একেবারে বৃথা যায়নি। নজরুল এবং ফজলুল হক হাউস গার্ডেনে গভীর নলকূপ বসানো হয়েছিল। :guitar:
🙂
আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই
ফার্স্ট :grr: :grr: :grr: :grr: :grr: :grr:
আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই
সেকেন্ড :grr: :grr: :grr:
হাহাহাহা!
ভাইয়া, আপনার লেখাগুলা পুরা উড়াধুরা হয়! :gulli2: :gulli2:
আমি তো হাসতে হাসতে পিরা গেলাম! :pira: :pira:
আমরা তখন কোন ক্লাসে যেন হঠাৎ খবর পাইলাম ফৌজদারহাট বন্ধ হয়ে গেছে পানির জন্য। সত্যি কি যে জেলাস হইছিলাম ঐ একবার ভাবছিলাম যদি ফৌজদারহাটে পড়তাম।
ওনলী ওয়ান টাইম?আর ভাবলানা কেন? এফ সি সি অনেক মজ়ার জ়ায়গা। ;))
আমার কাছে অবশ্য সিলেটই বেশি ভাল এইটা মনে হয় সবার কাছে সবার কলেজ সাম্প্রদায়িকতা আর কি। শুধু আমাদের জায়গা কম ছিল নইলে মজার দিক দিয়ে আমরাও কম যাই না।
আমরাও না B-)
আমরাও না। 😀
কামরুল, ঐবার আসলেই আফসোস হয়েছিল। কেন যে আমাদের কলেজে পানির কষ্ট হল না...??
ঐতিহ্যবাহী পোষ্ট 😉
😀 😀 :)) :)) =)) =))
:khekz: :khekz: :khekz:
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
ঐতিহ্যবাহী সানা ভাই এর সিসিবিও ঐতিহ্যবাহী হাসি
রবিন তোমার মন্তব্যটাও ঐতিহ্যবাহীদের জন্য ঐতিহ্যবাহী =)) =)) =))
চারিদিকে এত ঐতিহ্যবাহী, আমি তো দেখি মাকাল ফল......।। :shy: :shy:
:khekz: :khekz: :khekz:
ভাই স্লোগানটা হেভভি ইচছিল।
:khekz: :khekz: :just: :pira:
পানি ছাড়া গতি নাই। :khekz: :khekz:
:khekz: :khekz: :pira:
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
:khekz: :pira:
:khekz: :khekz: :khekz: :khekz: :khekz: :pira:
লেখা পড়ে হাসতেই আছি, জোশ লেখা আবদুল্লাহ ভাই । মির্জাপুরেও একবার পানির সমস্যা হয়েছিল '৯৫ এ মনে হয় ।
:thumbdown:
দারুণ লিখলেন ভাই আমাদের কখনো সমস্যা হয়নাই
বরিশাল ক্যাডেট কলেজ তো তাই :thumbup:
:khekz: :khekz:
মজা পাইলাম। ফাইনাল ডে তে চ্যাম্পিয়ন হবার পর কলেজে আমরাও একবার বিশাল মিছিল করছিলাম। তবে আমাদের ৯৫-০১ ব্যাচের বিশাল সাহসে সেটা হয়েছিল স্যারদের চোখের সামনে দিয়ে। মিছিলের শেষে শরীয়তুল্লাহ হাউস গার্ডেনের সামনে জড়ো হয়ে সে কী বিট হাউসমাস্টারদের।
টাল, গরিলা, বদা
সব শালায় গাধা ...
ফাইনাল ডে'র বিট আর হাড়ি ভাঙ্গার কথা মনে পড়ে গেল... তবে সবচেয়ে মজা ছিল মনে হয় এসবের পর কমনরুমের গানের আসর... ভয়াবহ সব লিরিকস... 😛
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
হাতে নাই জুতা পায়ে নাই স্যান্ডেল
দুই হাতে আশরাফ ধরে তার হ্যান্ডেল :grr: :grr: :grr:
:)) :))
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
=)) :))
আরে মিয়া ফাইনাল ডে বা যে কোন গেমসের চ্যাম্প মিছিল ত নরমাল।
৯৫-০১ ব্যাচের বিশাল সাহসে
:gulli: :gulli: B-) B-) :grr: :grr:
তৌফিক ভাইয়ের লাফালাফি এখনও মনে পড়ে 😀
আহা :dreamy: আগে অল্পতেই কত মজা পাইতাম, ধুম-ধাম যা মন চায় করতাম। :tuski: :guitar: :awesome:
আর এখন :bash: :bash: :bash:
আমরা তো প্রত্যেক বছর ফাইনাল ডে-র দিন আর পরের দিন মিছিল করতাম। আর ৩য় হওয়া হাউসের জানালার গ্লাস ভাংতাম...
মাহমুদ, তোদের হাউসের গ্লাস কয়বার ভাঙ্গা হইছিলো রে?????? :grr: :grr:
:khekz: :khekz: :khekz: :khekz: :khekz: :khekz:
:khekz: :khekz: :khekz: জটিল স্লোগান
এই স্লোগান আমার আইডিয়া। =)) :grr:
ফাটায়া লেখছিস আব্দুল্লাহ =)) =))
তবে বশিরুদ্দীন স্যার আমাদেরকে জটিল একটা চান্স দিছিলো শেষ মুহূর্তে। আমাদের ইন্টারের একেবারে শেষ পর্যায়ে বশিরুল আনাম স্যারের টার্ম শেষে উনি জয়েন করেন। আমাদের ইন্টার যখন শেষ হয় তখন কলেজ ছুটি ছিলো, তাই অন্যান্য কলেজের আমাদের ব্যাচকে বাকীদের অনুপস্থিতিতেই কলেজ ছেড়ে আসতে হয় 🙁 কিন্তু এফসিসি'র ট্র্যাডিশন একটা লাস্ট কালচারাল ফাংশন, ফেয়ারওয়েল ডিনার আর পুরো কলেজের কাছ থেকে বিদায় নেয়ার সুযোগের জন্য আমরা উনার কাছে পরের টার্মে আবার কলেজে জয়েন করার সুযোগ চাই। কী বুঝে উনিও অনুমতি দিয়ে দিলেন।
এরপর আমরা বিরল সেই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে সবার কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক টা টা জানাতে পারি। আমাদের ফাংশনটাতে আমাদের ব্যাচের রংপুরের শাহেদ গীটার বাজিয়ে পুরো কলেজ মাত করে দিয়েছিলো।
তবে এইটা ঠিক,
স্যারকে :salute: :salute:
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
কেম্নে কি 😮
এইচ এস সি এর পরে আবার কলেজে জয়েন করছেন, শুধু মাত্র কালচারাল শো, ডিনার আর বিদায় নিতে?? কয় দিন ছিলেন??
বড়ই জটিল, মাথার উপরে দিয়া যাইতাছে :no: :no:
ছিলাম কয়েকদিন :thumbup: :thumbup:
শাহেদ রংপুরের। বাসা চিটাগাং এ। ওরা তো আর আমাদের মতন সুযোগটা পায়নাই 🙁 তাই আমাগো কালচারাল শো তে আইসা পারফর্ম করতে পারছিলো 😀
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
:- 😮 😮 😮 😮 😮 😮 😮 😮 কন কি!!!!!!!
😮 😮 😮 😮 😮 😮
এও কি সম্ভব...???
😮
মনে করতে পারতেছি না কেন? :bash:
জটিল ডাউট...... ;;; ;;;
এইরকম একটা গ্যাড়াকলে আমরাও জুনের ৮ তারিখে বেরিয়ে গেলাম। বলা হ্ল ১৬ তারিখে ফেয়ারওয়েলের জ়ন্য আসতে। আমার বাড়ী টাংগাইল। তাই 'সি ইঊ এফ এল'এ খালার বাসায় থেকে ্যাই। কিন্তূ আবার ডেট ক্যান্সেল করে ~x( :bash:
আর আসা হয়নি আমার। আমাদের অনেকেই ঐ :just: নিয়মরক্ষার ডিনারে আসেনি।জ়ুনিয়ররাও কলেজ়ে ছিলনা মনে হয়।
হায় পোড়া কপাল 😮 :goragori:
:)) :))
জটিল হয়েছে ভাইয়া।