প্রিয় বন্ধু আহসান এর পল্লীগীতিতে গোল্ড মেডেল অর্জনের কাহিনীটা পড়া শেষ হতে না হতেই আমার বুকের রিসাইকেল বিনে রাখা এক ঝাক স্মৃতির মধ্যে কয়েকটি এমন ভাবে নড়াচড়া করে উঠলো যে তাদের রিস্টোর করা ছাড়া আমার আর কোন পথ রইলো না।
অগত্যা- শুরু হোক আমার সংস্কৃতি(!)মনা মন’টার আদি হতে পথ চলা’র ইতিকথা।
ক্যাডেট হওয়ার আগের একটি ঘটনা দিয়ে গপ্পোটা শুরু করি। ভূমিকা হিসেবে ঘটনাটি পার পেয়ে যাবে আশা করি।
বাব মা’র প্রশ্রয় পর্ব পেরিয়ে নিজের ইচ্ছে কে মূল্য দেয়ার সময় হতে আমার যতদূর মনে পড়ছে- এই সংস্কৃতি(!)মনা হেঁয়ালীতে আমি কাবু হয়েছি ক্লাশ ফোর এর শেষে কিংবা ফাইভের শুরুতে। হাল্কা ফরমাল অনুষ্ঠানে স্ব-রচিত কবিতা পাঠের পর্বে আমি উদ্যোগী হলাম। কবিতার নাম ‘প্রিয় কলম’। (এখানে বলে রাখা ভাল যে~ আমার স্ব-রচিত কবিতায় প্রয়োজনীয় অস্ত্রোপাচার করে দিয়েছিলেন আমার বাবা। 😀 )
সেদিন হাউসফুল অডিটরিয়ামে রাজ্যের কৌতুহল নিয়ে হাজার খানের চোখ আমার দিকে নিষ্পলক চেয়ে রইলো।
আমি কিঞ্চিৎ ঘোর লাগা মুডে শুরু করলাম…
আমি আমার লেখা একটি কবিতা বলব। কবিতার নাম ‘প্রিয় কলম।’
একটি কলম ছিল আমার
সবার চেয়ে ভালো
নিবটি ছিল চকচকে
তার রংটি ছিল কালো।
এই পর্যন্ত এসে কি হলো জানি না; ~x(
আমি আর কিছুতেই পরের লাইন গুলো মনে করতে পারলাম না।
পুনরায় শুরু করলে হয়তো বলার ফ্লো তে মনে পড়ে যাবে- এই ভেবে ভাঙ্গা রেকর্ড কয়েকবার চালিয়ে দেখি ক্রমে ছোট হয়ে আসা পৃথিবীর মত আমার স্মরণ শক্তি আমার মাথা থেকে কবিতার প্রথম লাইনটাও পর্যন্ত উধাও করে দিল… !!
মাথা নীচু করে আমি অনড় রইলাম। অডিটরিয়ামে তখন হিস হিস হুস হুস আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। মঞ্চের ফ্লোরম্যাটে তন্নতন্ন করে খুঁজেও আমি হারিয়ে যাওয়া শব্দ গুলিকে উদ্ধার করতে পারলাম না আর। সেদিনের মাত্র ৩/৪ মিনিট সময়টুকু অনন্তকাল হয়ে ধরা দিয়ে আমাকে শেষমেষ ফুঁপিয়ে কাঁদিয়ে দিল। :(( এই পর্যায়ে কোন হৃদয়বান ব্যক্তি বুঝি আমাকে এক প্রকার টেনে হিঁচড়ে মঞ্চ থেকে নামিয়ে আনলেন।
😛
মনে মনে নিজেকে শাসন করলাম, ঐ দিকে আর না…।
কি জানি ! আজীব ব্যাপার! দেখলাম ‘সময়’ ব্যাটা খুব ফাজিল। একে তো নিজে গড়িয়ে গড়িয়ে ফুরিয়ে যাচ্ছে; আবার আমাদের আপার চেম্বার থেকে অনেক উপযুক্ত শিক্ষা বেমালুম গায়েব করে দেয় । না হলে কলেজে ঢুকে ক্লাস সেভেন এর ট্যালেণ্ট শো’র কথা শুনেই আমার ভিতরটায় অমন আকুলিবিকুলি করে উঠবে কেন? যেমন ভাবা – তেমন কাজ। লেগে গেলাম নিজের ট্যালেন্ট প্রদর্শনের খেলায়। অনুষ্ঠানের নাম ‘বালার্ক’ ।
আমি একটি গল্প বললাম। এর মাঝে কাহিনীর বিন্যাসে কোথাও ঘোড়ার ছুটে চলা, হেলিকপ্টার, দরজা খোলার শব্দ… ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি ‘হরবোলা’ করে মোটামুটি জমায় ফেললাম। এরপর আমায় আর পায় কে ! অনুষ্ঠান হলেই ডাক পড়বে এই রকম সুখী সুখী ভাব নিয়ে আমার দিন কাটতে লাগলো।
আর ঐ দিকে ক্যালেন্ডারের পাতায় পাতায় গড়িয়ে যায় ব্যাটা ‘সময়’…।
(চলবে…)
B-)
আসধারণ গতি। পড়তে বেশ ভাল লাগে।
পরবর্তী পার্টের জন্য আর আপেক্ষা করতে পারছিনা।
তারতারি শুরু করেন ভাইজান।
হে হে...
😀
হুম্ম, ধন্যবাদ সাব্বির।
দেখি কত তাড়াতাড়ি দিতে পারি ...
শুভেচ্ছা নিও ভাইয়া।
সৈয়দ সাফী
চলুক...
ছড়া আবৃত্তি নিয়ে আমারো এই টাইপের একটা স্মৃতি আছে। ঐটা মনে পড়লে আমার এখনো কান্না পায় :((
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
অনেক ধন্যবাদ জিহাদ।
স্মৃতিরা বড্ড জ্বালাতন করে আজকাল।
সে জ্বালাতন আনন্দ কিংবা বেদনার যাই হোক না কেন...তারা সব সময়ই খুব প্রিয় বৈকি !!
🙂
শুভেচ্ছা নাও।
সৈয়দ সাফী
Obi, chalai jao bondhu....jome jachche....
বন্ধু,
কি খবর?
খুব ভাল লাগলো তোকে দেখে।
আরও অনেকে মেম্বার হয়েছে দেখলাম।
ভাল থাকিস।
😉
জমে সব বরফ হয়ে যাক...
সৈয়দ সাফী
এত্তদিনে সঠিক লোক সঠিক জায়গায় এসেছে...
চালিয়ে যাও বন্ধু...
ওবু, আমি কি আতিক কে চিনি?
দোস্ত,
ম্যালা থ্যানক্স।
আতিক, আমাগো ক্লাস মেট। আমার হাউস। আমি হের যোগ্য(!) অ্যাসিস্ট্যান্ট আছিলাম।
বুয়েট থেকে আর্কিটেক্ট বনছে।।আমি বি এম এ থেকে এক ছুটিতে আইস্যা চান্দি ছিলা অবস্থায় ওর লগে ক্লাস করছিলাম। 😀
এখন অস্ট্রেলিয়ায়। তোর লগে দেখা হইছিল কিনা কইতে পারতেছি না। তয় পোলা ভালা 😉
শুভেচ্ছা।
সৈয়দ সাফী
মু হা হা...
পরের দিন যদি ইশটেজে উঠার কতা থাক্তো, তাইলে আগের্দিন রাইতে আমার ঘুম হৈতো না। =(( :(( :ahem:
মু হা হা...
খুব ঠিক কথা।
🙁
নিরন্তর শুভেচ্ছা ।
সৈয়দ সাফী
কি সুন্দর লিখা!! সবগুলা পর্ব একটানে শেষ করে ফেলসি... ব্যাচের মধ্যে আমি একমাত্র কেমনে কেমনে জানি ক্যাডেট কলেজ থেকে কোন গুণ ছাড়াই বের হয়ে চলে আসছি... 🙁 , আমি গান গাইতে পারি না, কবিতা পারিনা, হাতের লিখা দেখে ম্যাডাম একবার বলসিলেন ঐতিহাসিক জঘন্য হাতের লিখা 😕 ...খেলার মাঠে তো... :grr: ...
আমার এই অসংস্কৃত মনটাকে নিয়া একটা ব্লগ লিখতে খুব ইচ্ছা করে... 🙁 ...কিন্তু এত সুন্দর লিখতেও পারিনা :((
আমি তো এখানেই একটি সুন্দর ব্লগের ভূমিকা পড়ে নিলাম।
বাকি টা দেখতে চাই পরিপূর্ণ ব্লগে...
শুভেচ্ছা।
সৈয়দ সাফী