শুরুতেই ধরা খাইলাম !

সেই ক্লাস সেভেনে আমরা তখনও সব কিছু বুঝে উঠতে পারি নি। কোন রকমে মন শক্ত করে হাঁটি হাঁটি করা শিখছি। আমাদের বলা হলো- সবাইকে ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। বেশ; সে তো আনন্দের কথা। ভেতরে রোমাঞ্চকর অনুভূতি নিয়ে হাউস বেয়ারার মুনির ভাই এর সাপ্লাইকৃত ফর্ম লেখা শুরু করলাম। ঠেকে ঠেকে সব লিখে শেষে সাইন করবার জায়গায় এসে চিন্তায় পরে গেলাম। সে বয়সে তো আর নিজের সাইন কোথাও তেমন প্রয়োজন পড়ে নি। ডাউট দিলাম মুনির ভাইকে। মুনির ভাই সাথে সাথেই তার বিজ্ঞ মতামত দিয়ে দিলেন-
‘আরে মিয়া, পুরা নাম লিইখ্যা দেও। হেইটাই স্বাক্ষর।’

আমিও খুশী মনে আমার (প্রয়াত) শ্রদ্ধেয় পিতামহের দেওয়া ঐতিহাসিক নামটা লিখে দিলাম। আর যাই কোথায়?
বাকি ছয়টা বছর ব্যাংকের চেক লেখার সময় আমার রেল গাড়ী মার্কা নাম খানি ঘষতে হয়েছে ! 🙁

বিপাকে পড়েছি যখন ক্যালেন্ডারের পাতায় পাতায় গোঁফ দাঁড়ি গজিয়েছে। কেননা হাতের লেখা দিনে দিনে ক্রমশঃই বিবিধ পক্ষীর ঠ্যাং এর সাথে তাল মিলিয়ে নিজেদের রূপ বদলেছে। আর আমাকে প্রতি বারে অতিরিক্ত স্বাক্ষর দিয়ে নিজেকে সাধু প্রমান করতে হয়েছে।

হুম্‌ম। যে কারনে ঘটনাটা এলো। তা হচ্ছে। আজ এখানে অ্যাকাউন্ট খুলবার জন্য অফিসের কম্পিউটারে বসে ফর্মটা পূরন করলাম। অভ্র ছিল না সেখানে। তাই সব ইংরেজীতেই মারলাম। ভেবে রেখেছি রুমে যেয়ে পরে এডিট করে নিব। রুমে এসে সব এডিট শুরু করে দেখি শুধুমাত্র একটি লাইনে লেখা আছে – অপরিবর্তন যোগ্য। সেটা হলো অ্যাকাউন্ট এর নাম। ‘লে হালুয়া’। আমার এই শুরুটাও কিঞ্চিৎ হোচট খেয়েই হলো। আহ! (একটা দীর্ঘশ্বাস ! ) ইংরেজীতে লেখা ব্যবহারকারী হয়েই বুঝি এইপথ চলতে হবে…

যাক কথায় বলে- শেষ ভাল যার- সব ভাল তার। তাই শেষটা যেন ভাল হয় এই কামনা করি। ( এখানে ‘Morning shows the Day’– এই কথাটা চেপে গেলাম। 😛 ) আর তাই এই প্রিয় ব্লগে পথ চলাটার শেষ কবে হবে জানি না- তবে পথচলা টুকু যে নির্ভেজাল আনন্দঘন হবে তা বেশ বুঝতে পারছি।

🙂

আজ তাহলে ক্ষ্যামা দেই।
সবাইকে শুভেচ্ছা নিরন্তর।
:salute:

২,২২৯ বার দেখা হয়েছে

২৭ টি মন্তব্য : “শুরুতেই ধরা খাইলাম !”

  1. জিহাদ (৯৯-০৫)

    অবশেষে একজনকে পাইলাম!! ওয়ান অব দ্যা গ্রেট ফজলুলিয়ানস 😀

    ভাইয়া, ব্লগে স্বাগতম। 🙂

    মনির ভাইয়ের কথা মত আমাদের মোর্শেদও সেম কাজ করছিল।তবে ওর অবস্থা আপনার চেয়ে একটু ভাল ছিল। ও সিগনেচার হিসেবে ক্যাডেট মোর্শেদ লিখসিল।
    দেখা গেল কলেজ থেকে বের হবার পর ওর একাউন্টের বাকি টাকা যখন তুলতে গেসে তখনো তাকে ক্যাডেট মোর্শেদ সাইন দিয়ে তুলতে হইসে :))

    মনির ভাই পুরা নাম লেখার জন্য আমারও পটানোর ট্রাই করসিল যদ্দুর মনে পড়ে। কিন্তু আমি বেশি অলস দেখেই কীনা তার কথায় তেমন পাত্তা দেইনাই।
    কারণ আমার তখন পুরো নাম ছিল - মোহাম্মদ সাব্বির আবেদীন ওসামানী জিহাদ তরফদার 😀 আপনারটার চে কম খারাপ না, কি বলেন??

    লগইন নেম চেন্জ করে কি রাখতে চান দয়া করে xihad76 এট yahoo.com এ মেইল করে জানান।


    সাতেও নাই, পাঁচেও নাই

    জবাব দিন
    • অনেক ধন্যবাদ মুহম্মদ,
      ভাইয়া শুভেচ্ছা নাও। মির্জাপুরিয়ান বরাবরই একটু ধীরে চলে... 😉

      অসুবিধা নাই- জীবন দৌড়ে কখনো জলদি চল - কখনো ধীরে চল...
      আর কখনো বা স্রেফ বিশ্রাম !
      😀

      ভাল থেকো।

      জবাব দিন
  2. আহ্সান (৮৮-৯৪)

    হেই ওবায়েদ বন্ধু :hug: ,
    যাক, অবশেষে একটা ক্লাশমেট পেলাম। বড়ই সৌন্দর্য্য। আমার মনে হয় অবশেষে blog got the right man at right place. ব্লগের সব সদস্যরা কিছু ভালো ভালো মজার লেখা পাবে।

    দোস্ত, তোর লেখা পড়ে আমি একটা গল্প না বলে পারছিনা...
    একই ভাবে, আমাদের অ্যাকউন্ট খোলার সময় আমাদের কেউ একজন সিগনেচার করার জন্য কি করবে বুঝতে না পেরে হাউস মাস্টার কে জিজ্ঞেস করলো, "স্যার সাইনের করে কি লিখব?" স্যার বললেন "নাম লিখে দিতে পারো।" আমার বন্ধুবরের প্রশ্ন, "স্যার, পুরো নাম?" স্যার বিরক্ত হয়ে, "ইচ্ছে হলে দাও"। অতঃপর আমার বন্ধু যা লিখলেন, তা দেখে হাউস মাস্টার শুধু এটুকু বললেন, "কি করলে এটা?" তার উত্তর, "আমার পুরো নাম স্যার।"

    অতঃপর আমাদের শেই বন্ধুটি ৬ বছর ধরে শেই এক ই সিগনেচার মেরে গিয়েছে। তার পুরো নামের প্রতিটি শব্দের প্রথম অক্ষর ধরে তার সিগনেচার দাড়িয়েছিল, " মমইরা"।

    পুরো নাম টা না হয় আর নাইবা বললাম...

    জবাব দিন
    • ওবায়দুল্লাহ (১৯৮৮-১৯৯৪)

      🙂

      সুপ্রিয় আহসান,
      তোর বহুবিধ গুনের সাথে পরিচিত হয়েছিলাম আগেই !
      আর এখানে তোকে দেখছি সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গিকে।
      এত সাবলীল লেখা তোর। চমৎকার।

      আমার লেখা সম্পর্কে তোর ধারনা জেনে পুলকিত হয়েছি কিন্তু্‌... 😀

      এইতো বন্ধু লাইবেরিয়াতে ...
      যায় যায় দিন আর সাসে আসে রাত -
      সময় কাটানোর সাথে সাথে স্মৃতিটুকু ধরে রাখার এই প্রয়াসে জড়িত স্কলকে ধন্যাব্দ জানাই।
      আর তোকে স্পেশাল ধন্যবাদ আমায় এতে যুক্ত হতে প্তহ দেখানোতে...

      সামনে আরো কথা হবে বন্ধু...
      ভাল থাক...

      আঙ্কেল এর শরীর আশা করি ভাল।
      শুভেচ্ছান্তে~


      সৈয়দ সাফী

      জবাব দিন
  3. আলম (৯৭--০৩)
    "আমি অ্যাসিস্ট্যান্ট হাউস প্রিফেক্ট ছিলাম। অবশ্য শেষে এসে সবাই প্লেইন ক্যাডেট হয়ে বেরিয়েছি… 😀
    (সে এক বিরাট ইতিহাস ! :grr: )"

    ভাইয়া, সময় করে কাহিনীটা লিখে ফেলেননা।

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : আদনান

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।