অরন্যের একটি দিন এবং একটি রাত্রি…





ওপেনিং শট।
লিংক রোডের মাথায় স্থানীয় বাজারে তখন লোক সমাগম একেবারেই নেই বললেই চলে।
রাস্তার পাশে চা’র স্টলে কোন ক্রেতা নেই। দোকানদার বসে গোছগাছ করছে ঝাপি তুলবার জন্য।
ক্যামেরা ডানে প্যান করে মসজিদের বাইরে এসে স্থির হবে-
গ্রামের মসজিদে তখনো তারাবী নামাজ চলছিল।
কাট করে – শুভ’র গাড়ি।
শুভ গাড়ি থেকে নেমেই চিৎকার করবে- কেউ আছেন। রাস্তায় ডাকাত পড়েছে।
আমাদের আরেকটি গাড়ি পেছনে আটকা পড়েছে। কেউ কি আছেন…?
ফ্রেম এর বাম দিক থেকে –
ওর চিৎকার শুনে ঐ দোকানদার এগিয়ে এলো।
সে ঘড়ি দেখে জানাবে –কিছুক্ষনের মধ্যেই নামাজ শেষ হবে। তখন বেশ কিছু লোকজন পাওয়া যাবে।
নেক্সট ছোট একটা এস্টাব্লিশিং শট-
মসজিদের পাশে একটু তফাতে একটা ফার্মেসীতে তখনো আলো জ্বলছে।
গাড়ি থেকে স্নেহা’দের নামিয়ে শুভ ফার্মেসির কাছে বেঞ্চিতে বসতে বলবে।
বাচ্চা আর মেয়ে’রা বসলে ফ্রেমে আসবে মুন্না-
সে নিজ থেকেই বলবে – তুই লোকজন নিয়ে যা; আমি বরং এদের সাথে থাকি।
শুভ সায় জানাবে।
ফ্রেমে স্নেহা আসবে-
স্নেহা’র থেকে বিদায় নেয়ার সময় শুভ খালি ওর হাতে হাত রেখে খালি বলবে- আমি ওদের নিয়ে আসতে যাচ্ছি।
স্নেহা নীরবে মেনে নিবে। ও শুভ’কে চেনে। বিপদের চেয়েও ওর কাছে বাকিদের ফিরিয়ে আনার তাগিদ অনেক বেশি।
ক্লোজ শটে শুভ-মুন্না’র দিকে তাকিয়ে বলবে –
খেয়াল রাখিস সবার।
জুম আউট-
শুভ দ্রুত গাড়ির দিকে এগুবে।
এরপর, ফ্রেম কাট করে আসবে বাজার আসবে –
ততক্ষণে বেশ ক’জন জড় হয়ে গেছে। মুহুর্তেই নিস্তব্ধ লোকালয়টি যেন জীবন্ত হয়ে উঠবে।
দেখা যাবে-
লোকজন হাতে লাঠি – বাঁশ –কাস্তে -টর্চ আর মশাল নিয়ে চকিতেই তৈরী হবে।
প্রকৃতিই যেন এদের অভ্যস্ত করে তুলেছে। অগ্রভাগে আছে গফুর মিয়া।
তিনি শুভ’কে পথ দেখাতে বলে বাকিরা একটা টেম্পুতে উঠে বসবে।
শুভ সাথে দুজন কে নিল গাড়িতে।
ফ্রেমে তখন অন্ধকার রাস্তায় গাড়িটি উড়ে চললো।

ক্লোজ শটে শুভ-
মনে শংকা – আর দ্বিধা নিয়ে ড্রাইভ করছে ও।
কিছু দূর যেতেই- ফ্রেমে অপর দিক থেকে ধেয়ে আসা হেড লাইট দেখা যাবে।
দাঁড়াতে হবে ওদের।
ছুটে আসছে ভিন্টেজ’টি -অবিশ্বাস্য হলেও সামনে জ্যাকি’র গাড়ি দেখে ও আশ্বস্ত হবে।
হাল্কা জুম আউট –
লাফিয়ে নেমে শুভ জিজ্ঞেস করবে – সব ঠিক আছে তো?
ক্যামেরা গাড়িটা এক পাক খেয়ে ড্রাইভিং সীটের জানালায় এসে থামবে-
ভাঙ্গা উইন্ড শীল্ড আর দুমড়ানো বনেট বাদ দিলে যাত্রীদের মধ্যে বাকিরা অক্ষত আছে।
তবে জ্যাকি’র হাতে ডাকাত কোপ দেয়ার চেষ্ঠা করায় খানিকটা কেটে গেছে।
শুভ ওদের সাথে একজন দিয়ে তাড়াতাড়ি বাজারে পাঠিয়ে দিবে।
যাওয়ার আগে জ্যাকি বলবে – শালার ডাকাতরা তখনো ধাওয়া করছিলো।
জ্যাকিদের বিদায় দিয়ে শুভ বাকিদের নিয়ে আবার রওনা দিলো স্পটে।

ফ্রেমে- হেড লাইটের আলোয় নির্জন রাস্তা।
সেখানে পৌঁছানোর পর একটা এস্টাব্লিশিং শট-
তারপর ফ্রেমে আসবে –
অন্ধকারে টর্চ আর মশালের আলোর দাপাদাপি।
ডাকাতদের কাউকে আর দেখা যাবে না; অন্ধকারে ঘা ঢাকা দিয়েছে হয়তো সেই নরপিশাচের দল।
আলো জ্বেলে কিছুক্ষন খোঁজাখুঁজি করার পর ফ্রেমে আসবে আরেকটি ভয়ংকর দৃশ্য।
হাল্কা জুম ইন; ফ্রেমে আসবে –
ট্যাক্সি ক্যাবের ওই ড্রাইভার কে ব্যাপক মারধর করে আধমরা করে মুখ-হাত-পা বেঁধে ঝোপের পাশে ফেলে গেছে ডাকাতেরা।
জুম ইন-
রক্তাক্ত একটি মুখ – গামছা পেঁচানো। ওরা না এলে রক্তক্ষরনেই বুঝি মারা যেত বেচারা।
জুম আউট-
দ্রুত তাকে উদ্বার করে বাজারে ফিরে যাবে ওরা সবাই।
কাট – টু কাট করে আসবে-
অদূরে রাজেন্দ্রপুর সেনানিবাস এর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ড্রাইভারকে নেয়া হবে। জ্যাকিও ওর হাতে ব্যান্ডেজ করিয়ে নি্বে।

লং শট- ততক্ষণে পুলিশ এসেছে। ফ্রেমে আসবে থানার ওসি সাহেব।
জুম ইন- টনা শুনে তিনি উত্তেজিত হয়ে বলবেন – এটা নিশ্চয়ই কুদ্দুস এর দল। এদের খুব বাড় বেড়েছে। গত দু’মাসে ও চারটি বড় ডাকাতি করছে এলাকায়। মানুষ মেরেছে পাঁচ জন।
তিনি আরো বলবেন – গ্রামবাসীদের সহায়তায় র‍্যাবের সাথে তারা শীঘ্রই একটি যৌথ অপারেশন চালাবেন এই এলাকায়।
ফ্রেম কাট করে আসবে শুভ’রা।
সকলে ধাতস্থ হবে- গ্রামবাসীদের ধন্যবাদ জানিয়ে তারা আল্লাহ’কে অশেষ শুকরিয়া জানিয়ে ঢাকার রাস্তা ধরবে।
জুম আউট- ফ্রেমে ওদের চলে যাওয়া দেখা যাবে।
তারপর ফ্রেম -ব্ল্যাক আউট।


ফ্রেমে একটি টিভি।
চ্যানেল ৭১ এর শীর্ষ খবর চলছে।
সংবাদ পাঠক জানাবেন – রাজেন্দ্রপুর লিংক রোড সংলগ্ন এলাকার কুদ্দুসিয়া বাহিনীর প্রকোপ বেড়েছে। ধারালো অস্ত্রের মুখে গ্রামে বেপরোয়া ডাকাতি করে বেড়াচ্ছে। স্বল্প জনবল নিয়ে পুলিশ প্রশাসন স্থানীয় এলাকার নিরাপত্তা প্রদানে ব্যর্থ।
কাট করে আবার খবর-
সংবাদ পাঠিকা জানাবেন- পুলিশের টহল দলের উপর হামলা। দুইজন সদস্য গুরুতর আহত। কুদ্দুস ডাকাতের দল তাদের অস্ত্র ও গোলা বারুদ লুট করেছে। এলাকার জনমনে আতংক; সশস্ত্র ডাকাতির আশংকা। পুলিশ প্রশাসন নিরাপত্তা জোরদার করার পরিকল্পনা।
লং শট- ব্যস্ত রাস্তায় রেল গেট আটকানো। হকার পেপার বিক্রিতে তৎপর। একজন বাস যাত্রী একটি পত্রিকা কিনবেন। প্রথম পাতায় বড় হেডলাইন- লিংক রোডে প্রাইভেট কার থামিয়ে কুদ্দুসিয়া বাহিনীর সশস্ত্র ডাকাতি। শিশু সহ একই পরিবারের তিনজন নিহত। গ্রামবাসীর থানা ঘেরাও কর্মসুচি ঘোষনা।
ব্ল্যাক আউট।
ফেড ইন -র্যা ব সদর দপ্তর। কাট করে ইন্টেরিয়র।
কনফারেন্স রুমের প্রজেক্টরে ভেসে উঠবে ডাকাত কুদ্দুসের ছবি। অপারেশন অফিসার চলতি পাক্ষিকে এ দলের সকল অপরাধের সমীক্ষা এবং কৌশল ব্যাখা করবেন। শেষে তিনি স্থানীয় পুলিশের সাথে শীঘই একটা যৌথ অপারেশন এর সুপারিশ করবেন।
ক্লোজ শট -স্পেশাল ব্রাঞ্চ ডাইরেক্টর সব শুনে একটা ফোন করবেন। কথপোকথন শোনা যাবে না। ফোন রেখে তিনি বলবেন – ‘Go for it. Apply Shoot to Kill if fired upon.’
ফেড আউট।

লিংকঃ পনের দিন পর …
রাতের আকাশ দেখিয়ে ক্যামেরায় একটা ডিসেন্ডিং শট।
অন্ধকার ফুঁড়ে একটি সাদা প্রাইভেট কার ছুটে চলেছে লিংক রোডে।
ফ্রেমে গাড়ির হেডলাইটের আলোয় কিছুক্ষণ রাস্তা অনুসরন দেখা যাবে।
এরপর ক্লোজ শটে একে একে যাত্রীদের দেখানো হবে। জানালা গুলি খোলা।
পাঁচজনই র‍্যাবের সদস্য। সাদা পোষাকের নিচে বুলেট প্রুফ জ্যাকেট পড়া।
ড্রাইভিং সীটে চৌকস ড্রাইভার মাহমুদ। সেকেন্ড সীটে আজকের অপারেশনের কমান্ডার রকিব।
পেছনে আরিফ, কবির আর জাহিদ। সবার হাতেই স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র।
জুম শট -রকিব কমিউনিকেশন চেক করে নিল। ওর কানে হেড ফোন আর মুখের কাছে মাইক।

লং শট- ওদের থেকে ঠিক দুই কি.মি. পেছনে একটা র‍্যাবের পিক আপ আর একটা পুলিশের ভ্যান মূল দলকে কভার করার জন্য আসছে। ওদের সাথে সাথে একটা অ্যাম্বুলেন্স ও আসছে।
সেখানে দলের টু আই সি মুহিব এর সাথে রকিব যোগাযোগ রাখছে নিয়মিত।
এই নিয়ে গত দু সপ্তাহে টানা চতুর্থবার অপারেশোন চালাচ্ছে ওরা। প্রয়োজনে ‘শুট টু কিল’ এর আদেশ দেয়া আছে হেড কোয়ার্টার থেকে।
ইন্টেলিজেন্স এর তথ্য অনুযায়ী – কুদ্দুস এর দল সশস্ত্র হামলা করার পরিকল্পনা করছে।
ক্লোজ শট- ফ্রেমে রকিব।
উত্তেজনায় ও বাম ভ্রু খানিকটা উঁচু করে রেখেছে। হেড লাইটের আলোয় ও রাস্তায় তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখবে।
কাট করে ক্যামেরা ফ্রন্ট সিটে-
সামনে একটা মোড় দেখা যাবে।
প্যান ইন করে রকিব আসবে ফ্রেমে।
ও আলতো করে মাহমুদ এর কাধে হাত রাখবে। যার অর্থ – সতর্ক থাকো বৎস।
প্যান আউট করে রাস্তা-আচমকা একটা বিকট শব্দ। ফ্রেমে স্থির হেড লাইট।
একটা বিশাল গাছের গুড়ি আড়াআড়ি করে ফেলা হয়েছে রাস্তায়।
রকিব সেটে জানাবে – কন্ট্যাক্ট রিপোর্ট।
মুহিব রিপোর্ট পেয়েই পুলিশের ওসি কে জানালো। তারা এবার গতি বাড়িয়ে দিয়ে স্পটের উদ্দেশ্য রওনা দিল। ওরা সময় নিবে ২ মিনিট। কাছে আসতেই পরিকল্পনা অনুযায়ী ওরা কভার দিবে মূল অ্যাকশন দলটিকে।
এ সময় ডাকাত দল অন্ধকার থেকে গুলি করবে গাড়ি লক্ষ্য করে।
জুম শটে – রকিব, আরিফ, কবির এবং জাহিদ প্রত্যেকে চকিতে অস্ত্র কক্‌ করবে।
মাহমুদ পরিকল্পনা অনুযায়ী রিভার্স করার চেষ্ঠা করবে।
এবার – পেছন দিক থেকে আরেকটি গুড়ি ফেলে রাস্তা ব্লক করে দেয়া হলো।
কিছুক্ষণ প্রতীক্ষা –
এরপর দুপাশ থেকে হৈ হৈ চিৎকার করে অন্ধকার থেকে বেরিয়ে এলো কুদ্দুসিয়া বাহিনীর সদস্যরা।
থেমে থেমে গুলি ছুড়ছে দুইজন ডাকাত সদস্য। অন্ধকারে আলোর ঝলকানি তাদের অবস্থান জানান দিবে।
ক্লোজ শট এ রকিব।
অস্ত্রধারীদের লক্ষ্য করে বামে অস্ত্র তাক করে রকিব ফায়ার শুরু করলো। একই সাথে পেছন সীট হতে ডানে জাহিদ আর বামে আরিফ গুলি ছুঁড়তে থাকলো।
এহেন আকস্মিকতায় বিহবল কুদ্দুস এর ডাকাত দল।
কে এক জন চিৎকার করবে – র‍্যাব – র‍্যাব…..।
রকিব’দের স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের সামনে কুদ্দুস বাহিনী অসহায় ঠেকলো। ডাকাত দলের ফায়ারিং বন্ধ হয়েছে। ঘিরে থাকা হিংস্র মানুষ গুলির আর প্রতিক্রিয়া দেখা যাবে না।
দ্রুত একটা ৩৬০ ডিগ্রি শট। পরিস্থিতি নিরীক্ষা করে ফায়ার বন্ধের আদেশ দিবে কমান্ডার।
লং শট-ততক্ষণে কভারিং ফোর্স এসে যাবে।
সার্চ লাইট জালিয়ে স্পট আলোকিত করা হবে।
জুম ইন – আরিফ এর গলা’র বাম দিক ভেদ করে একটি গুলি গাড়ির ব্যাক শীল্ড ছিদ্র করে বেরিয়ে গেছে।
মুভিং ক্যামেরা –
মোট ষোল জন ডাকাত সদস্যকে স্পটেই পাওয়া যাবে। এর মধ্যে সাতজন কিল্ড ইন অ্যাকশন। বাকি নয় জন উন্ডেড ইন অ্যাকশন। আশপাশের এলাকা সার্চ করে একটু দূরে আরো দুই জন পাওয়া গেল গুলিবিদ্ধ অবস্থায়। আহতদের একত্র করা হবে। জুম ইন – রকিব ডেডবডি গুলো দেখে দেখে কুদ্দুসের লাশটি সনাক্ত করবে। ওর মাথায় আর বুকে বুলেট লেগেছে।
ক্লোজ শট- হেড কোয়ার্টারে মিশন কম্‌প্লিশন রিপোর্ট জানাবে রকিব।
জরুরী ভিত্তিতে আরিফের সাথে বাকি গুরুতর আহতদের অ্যাম্বুলেন্সে তুলে হাসাপাতালে পাঠানো হবে।
তারপর ডেডবডি গুলি ভ্যানে তোলা হবে। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রকিব’রা রওনা দিবে।
ফেড আউট।
ফেড ইন –
বাজার কাছে আসতেই – গ্রামবাসীরা ওদের ঘিরে ধরবে।
গোলাগুলির আওয়াজে ওরা আগেই বাজারে জড় হয়ে ছিল।
আজকের অপারেশনে কুদ্দুস বাহিনীর সমূলে উৎপাটনে তারা যার পর নাই খুশী।
মুভিং শট –
গ্রামবাসী থেমে থেমে র‍্যাবের জন্য জয়ধ্বনি দিবে। উৎসাহী কেউ কেউ ভ্যানে উঁকি দিয়ে দেখার চেষ্ঠা করবে।
কাট করে ফ্রেমে– চ্যানেল ৭১ এর লাইভ মোবাইল রিপোর্টিং টীম। ওরা বাজারের কাছে আগে থেকেই অপেক্ষা করছিল।
রকিব’কে দেখে তারা এগিয়ে আসবে।
উল্লসিত জনতার একাংশ দেখিয়ে রিপোর্টার রকিবের একটি ছোট সাক্ষাতকার নিবেঃ
আপনাদের অপারেশন এর সফলতায় অভিনন্দন।
তবে, এতে আপনারা কি অধিক বল প্রয়োগ করেছেন?
-দেখুন, আমাদের কাছে তথ্য ছিল ওরা সশস্ত্র। এবং ফায়ার ওপেন করার পর আমরা ফায়ার ওপেন করি। মূলতঃ যারা অস্ত্র হাতে ফায়ার করছিল তাদের লক্ষ্য করেই। এতে আমাদের এক সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
আপনাদের যিনি আহত হয়েছেন তার অবস্থা এখন কেমন?
-ওর অবস্থা ক্রিটিক্যাল। ওর গলায় গুলি লেগেছে। তাকে হাসাপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বাকি আহত ডাকাতদের ব্যাপারে কি সিদ্ধান্ত আপনাদের?
-সবাইকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা শেষে কাস্টডি নেয়া হবে।– বাকি তথ্য আপনাদের প্রেস ব্রিফিং এ দেয়া হবে। ধন্যবাদ আপনাদের।
ক্যামেরা প্যান করে ভ্যানের কাছে যাবে।
তারপর ক্যামেরা বন্দী করবে অ্যাকশনে মারা যাওয়া কুদ্দুস বাহিনীর সাত ডাকাত। এবং আহত আটককৃত ডাকাতদের একে একে দেখিয়ে ফিরে আসবে জনতার কাছে।
ফ্রেম কাট করে – শুভ’দের বেড রুম।
ফ্রেম ভাগ হয়ে – ডান পাশে ভেসে উঠবে জ্যাকির’র বাসা – তারপর মাল্টিফ্রেম স্ক্রীনে ভিন্ন ভিন্ন বাসায় আপামর জনগনকে দেখা যাবে টিভি সেটের সামনে।
সবাই চ্যানেল ৭১ দেখছে।
– ওসি সাহেব শুভ’কে ফোন করেছিলেন বাজারে এসেই।
লাইভ খবর দেখে ওদের সেই রাতের ভয়াবহতার কথা মনে পড়ে যাবে।
কিছুটা ফ্ল্যাশ ব্যাক – ওদের ঘটনা সহ অন্যান্য ডাকাতির চিত্র।
ডিসল্ভড ফ্রেম- আজ এই এনকাউন্টার অপারেশনে ডাকাত দলের পরিণাম দেখে সেই গ্রামবাসীদের সাথে সাথে ওরাও আশ্বস্ত হবে।
সুপার ইম্পোজ করে ফ্রেমে আবার ভেসে উঠবে স্পট-
অন্ধকার চুরি যাওয়া লিংক রোডে তখন র‍্যাব –পুলিশ এর লাল – নীল আলোর ঝলকানি।
আর নিস্তব্ধতা ছাপিয়ে শোনা যাবে অ্যাম্বুলেন্স এর সাইরেন ।
ক্যামেরা জনতাদের ভীড় থেকে বেছে নিবে একটি মুখ।
তিনি গ্রামের চেয়ারম্যান।
রিপোর্টার তার কাছে জানতে চাইবেন প্রতিক্রিয়া।
মুরুব্বী প্রসন্ন চিত্তে বলবেন – আল্লাহ আমাদের দিকে মুখ তুইল্যা তাকাইছেন। গত একমাস ধইরা কুদ্দুস আমাদের এলাকায় ঘুম হারাম কইরা রাখছিল। আমাদের দোওয়া আজ কবুল হইছে; আলহামদুলিল্লাহ। এই শক্ত জবাবের দরকার আছিল। এই এলাকায় কোন বাপের ব্যাটা আর এই কাম করার দিশা নিব না। আমি আপনেগো সবাইরে ধন্যবাদ জানাই।
এরপর ধীরে জুম আউট ।
ফ্রেমে দেখা যাবে জনতার ভিড় – বাজার – রাতের লোকালয়।
তারপর সারি বেঁধে র‍্যাব আর পুলিশের গাড়ির চলে যাওয়া দেখানো হবে -এরিয়াল শটে।
জুম আউট -শেষে ফেড আউট।
-সমাপ্ত-
(সম্পাদিত)
কৃতজ্ঞতাঃ নুপুর’দা

১,২০৫ বার দেখা হয়েছে

৮ টি মন্তব্য : “অরন্যের একটি দিন এবং একটি রাত্রি…”

  1. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    ভুলেই গেছিলাম এই সিরিজের কথা, পুরোটা আবার রিভিসন দিয়ে আসলাম। দারুন লাগলো 🙂


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  2. নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

    ওবায়দুল্লাহ,
    আমিও আগের পর্বটা পড়ে নিয়ে তারপর এটা পড়লাম।তাড়াহুড়ো সে করেছো সেটা স্পষ্ট। বর্ণণায় যা কিছু সমস্যা আছে, সেটা ঘষামাজা করে ঠিক করে নেয়া যেতেই পারে।
    কিন্তু আমার মনে হচ্ছিলো, এক্কেবারে শেষে এসে ডাকাতদলের বিরুদ্ধে এ্যাকশনটা প্রতিশোধমূলকই হয়ে গেলো বেশি। ওরা যে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আসেনা সেটা তো পরিষ্কার আগের পর্বেই, তাহলে র‍্যাব কেন 'শুট টু কিল' নীতিতে যাবে।গেলেও সেটা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।

    শেষে এসে এজন্যে গতিময় কিছু এ্যাকশন ছাড়া ইমোশনের সংকট কিছু পাচ্ছিনা। আমার মনে হয় পুলিশ, র‍্যাব, গ্রামবাসী, চেয়ারম্যান এসব অনুষঙ্গের উপস্থিতি আরেকটু বাড়ানো যেতে পারে - বেশ প্যাসিভ মনে হচ্ছে এদের।

    ব্যাপারটা যেন শুধু শুভ ও তার পরিবারের প্রতি অপরাধ/মাস্তানির জাস্টিস।

    প্রথম চারপর্বে প্লটটার অনেক সম্ভাবনা দেখছিলাম; এভাবে সরলভাবে শেষ করে না ফেলে আরেকটু প্যাঁচাও। শিরোনামেই যখন সত্যজিত রায়ের বিখ্যাত ছবির ছোঁয়া আছে, প্রত্যাশা তো বহুগুণ হবেই - তোমার কাছে তা চাওয়াটাও যে অন্যায্য নয় তার প্রমাণ তুমিই আগে দিয়েছো। ছাড়ান নাই অতএব।

    জবাব দিন
    • ওবায়দুল্লাহ (১৯৮৮-১৯৯৪)

      দাদা,
      একশ ভাগ সহমত।

      মিসিং লিংকগুলো জুড়ে দিয়ে আর কিছু ঘষা মাজা করে বার ছেপে দিলাম।

      ::salute::

      আপনার মন্তব্যের অপেক্ষায় রইলাম।
      :dreamy:


      সৈয়দ সাফী

      জবাব দিন
      • নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

        নিজেকে পুরা মাস্টার মাস্টার মনে হচ্ছে!
        ওবায়দুল্লাহ, তুমি এত নিরহংকার, এত মাটির মানুষ!
        আমি একটু ভাবছিলাম, তোমার ভালোমানুষির সুযোগে কেমন খাটিয়ে নিচ্ছি।
        যে কোন কিছু, বিশেষ করে সাহিত্যিক প্রচেষ্টাকে ক্রিটিক্যালি দেখা আমার স্বভাবে দাঁড়িয়ে গেছে। বিশেষ কিছু বুঝিনা, তবু ফট করে মতামত দিয়ে ফেলি।আমার এসব বাড়াবাড়িকে তুমি যে সহজভাবে নিচ্ছো তাতে অভিভূত হয়ে যাই।

        যাক, আসল কথায় আসি। এখন অনেক ভালো লাগছে শেষটা, জাস্টিফায়েড মনে হচ্ছে একটু। কিন্তু মন ভরেনি। আমার কাছে মনে হচ্ছে নিদেনপক্ষে আরো দুটো পর্ব এসে যেতো মাঝখানটায়।

        আমি চাই, লোকে আমার লেখাকেও কড়াচোখে দেখবে, ভুলগুলো শুধরে দেবে। এক রাজীব কিছুটা করে।

        তুমি এমনিতে আছো কেমন? নিশচয়ই খুব ব্যস্ত দিন কাটছে!

        জবাব দিন
        • ওবায়দুল্লাহ (১৯৮৮-১৯৯৪)

          ::salute::
          সুপ্রিয় নুপুর দা,
          আপনার প্রশ্রয়মাখা সাধুবাদ পেয়ে দারুন ভাল লাগলো। :shy:

          আপনার মন ভরবেনা - জানতাম। আমারই মন ভরে নি দাদা।

          আমি গত পর্ব লিখেছিলাম - সেপ্টেম্বর ২০১০ আর এ পর্ব লিখলাম নভেম্বর ২০১২।
          এখানে চার আর পাঁচ পর্ব এক বারে দিয়েছি।
          এ পরিসরে আরো দুটি পর্ব স্বাভাবিক ভাবেই এসে যেত। 😐
          বর্তমান পরিস্থিতি এবং আমার ব্যস্ততার কারনে সে সুবিচার করতে পারলাম না।
          অনিচ্ছাস্বত্ত্বেও তড়িঘড়ি করে প্লটটির একটি কাঠামো তৈরী করে রাখলাম।
          আপনার কাছে খানিকটা জাস্টিফাইড হয়েছে - এই আপাততঃ যথেষ্ঠ।
          আগামীতে না হয় আর ডিটেইলিং সহ প্লটটির শেষাংশের শাখা- প্রশাখা বিস্তার ঘটাবো। আপনার নির্দেশনা তখন পাথেয় হবে আবারো ইনশাআল্লাহ।

          অনেক শুভেচ্ছা নিন।

          অঃটঃ
          কেমন কাটছে ? - এর উত্তরে বলতে পারি - সময় যেন উড়ে চলছে। আমি ঢালু পথে নুড়ি পাথরে ঘষা খেতে খেতে ক্রমশঃ গড়িয়ে যাচ্ছি বহতা গতিতে।

          দোওয়া করেন।
          🙂 (সম্পাদিত)


          সৈয়দ সাফী

          জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : ওবায়দুল্লাহ (১৯৮৮-১৯৯৪)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।