যে সীমান্তে শুধুই বসন্ত ! (৪)

চমকিত বিজলী

প্রথম আমাদের দেখা হয়েছিল
জমকালো এক শপিং মলের
অলস দুপুর পেরিয়ে রোমাঞ্চকর সেই বিকেলে।
তুমি কালো শাড়ি পড়েছিলে,
আর আমি পড়েছিলেম
সাদা জমিনে কমলা সুতোয় কাজ করা পাঞ্জাবী।
অথচ জানিনা আমরা দুজনের কেউই
‘কালো’ আমার আর ‘কমলা’ তোমার প্রিয় রঙ।

বড়রা তখনও সৌজন্যমূলক আলাপচারিতায় মত্ত।
আজকের এই দেখা হওয়াটাকে তারা সবাই মিলে-
নেহায়েৎ – কাকতালীয় (!)
একটা লেবেল লাগানোর মিছে প্রয়াসে মশগুল।
দোকানের এটা ওটা হাতে নিয়ে
আমি অহেতুক নাড়াচাড়া করছি।
এক ফাঁকে আড়চোখে তোমাকে দেখতে যেয়েই
চোখাচোখি হয়ে গেল দু’জোড়া শিকারী চোখের।
অজানা এক শিহরনে কেঁপে ঊঠলো এই ভীরু হৃদয়।
ইশ্‌শ…চকিতে দুজনেই চোখ নামিয়ে ফেললাম।

এর পর আমি লজ্জার আপাদমস্তক ডুবিয়ে
বারংবার তোমার পানে চেয়ে বিকাল গড়ালো; তথাপি
মায়া মায়া ঐ দুটি চোখ আর দেখা হলো না আমার।
আহা! তুমি সেদিন আর মুখ তুললেই না !
লজ্জায় লালচে তোমার অবনত চাহনি খুব সযতনে
নজরবন্দী করে, রঙীন প্রজাপতির ফুরফুরে মেজাজে –
গোধূলীর লালিমা আকাশে লাগিয়ে ফিরে এলাম বাড়িতে।

খাওয়ার টেবিলে বাবা আমায় শুনিয়ে মা’কে
‘তোমায়’ তার মহাপছন্দের রায় শোনালেন।
আকাশচুম্বী আনন্দের জোয়ারে লাগাম টেনে
আমি তখন হাসলাম একটু খানি –
আর সাথে সাথেই চোখ নামিয়ে নিলাম।
পরে শুনেছি তোমার কাছে ;
মা নাকি একদিন বলেছিলেন- ‘জানিস নীলিমা,
আকাশের দু’চোখে সেদিন দারুন বিজলী চমকাচ্ছিল ‘!
:guitar:

১২ টি মন্তব্য : “যে সীমান্তে শুধুই বসন্ত ! (৪)”

  1. নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

    তোমার এই লেখাটা নিয়ে তখনি কিছু একটা বলতে চেয়েছিলাম, কিন্তু পোস্টে পোস্টে distracted হয়ে গেছিলাম।
    তুমি যে ছবিগুলো আঁকছো, সেগুলো সবই অনন্য।
    বিশেষ করে এই লেখাটার ক্ষেত্রে আমি বলবো, পুরো ইমোশানটাকে যদি স্রেফ চার লাইনে নামাতে পারতে আর পাঠকের কল্পনা বা অনুমানপ্রবণতার কাছে বাকীটা ছেড়ে দিতে তাহলে আরো অনেক বেশী ভালো হতো।

    জবাব দিন
    • ওবায়দুল্লাহ (১৯৮৮-১৯৯৪)

      দাদা,
      লিংক খুঁজে কষ্ট করে আসার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
      আমি আপনার থেকে এরকম কিছুই আশা করছিলাম।

      আমি বুঝতে পারছি এখন - আমার কবিতার ছবিটা খুব সহজপাঠ্য হয়ে ঠেকছে।
      এতে পাঠকের নিজস্ব ভাবনার অবকাশ থাকছে না।
      মেঘ আর রোদের লুকোচুরি টা অনুপস্থিত।
      ::salute::

      একটা চেষ্ঠা করে দেখি - হাতে নাতেঃ এই কবিতাটাই পাঁচ লাইনে...

      আমাদের প্রথম দেখা

      অলস বিকেলে সেদিন কাকতাল আবহ-
      তুমি পড়েছিলে কালো আার আমি সাদা ।
      একবার চোখাচোখি হতেই নামিয়ে নিলে মুখ;
      অবনমিত মায়াবী চোখদুটোর দেখা হলো না
      আর অপর দু'চোখের বিজলীর চমক!

      :duel:


      সৈয়দ সাফী

      জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।