অরন্যের একটি দিন এবং একটি রাত্রি – ২

ব্যাকগ্রাউন্ডে তখনও বাজছে –
Hooray! Hooray! It’s A Holi-Holiday
what a world of fun for everyone, holi-holiday
Hooray! Hooray! It’s A Holi-Holiday

ফ্রেমে একে একে ভেসে উঠছে রিসোর্টটির লোকেশন।
সবুজ ঘাসে উপর হরিন হেঁটে বেড়াচ্ছে – পাশে সুইমিং পুল।
কৃত্রিম লেকে বোট রাইডিং – ঝিরি ঝিরি বাতাসে গাছের পাতা গুলো দুলছে…
সব মিলিয়ে খুবই প্রানবন্ত একটি বিকেল।

(গান থামতেই , ক্যামেরা এসব ফ্রেম বন্দী করে চারপাশে একটা ঘূর্ণি খেয়ে -ছাতার নিচে গোল টেবিলে বসা তিন বন্ধুর কাছে চলে আসবে। ক্লোজ আপ শটে শুভ’র মুখ।)

-(মুখে হাসি ধরে রেখে বলবে) আজকের প্রোগ্রামে ১০ এ সাড়ে ৯ দিলাম। ০.৫ কাটলাম আচমকা বৃষ্টি হওয়ার জন্য – যা অবশ্য পরে ঝরঝরে হয়ে উঠেছে কিছুক্ষণ বাদেই।
-(জ্যাকি সায় জানিয়ে বললো) রোজার পর এসে নাইট স্টে করলে দারুন হবে।
– (মুন্না ওর মুখের কথা কেড়ে নিয়ে বললো) সারারাত আড্ডাফাই , গানা-বাজানা –জম্পেশ হবে রে !

হাল্কা জুম আউট করলে ফ্রেমে দেখা যাবে-

তিন পরিবার কত্রী বাচ্চাদের রেডী করে ল’নের দিকে এগিয়ে আসছে।

সবাই তৈরী হয়ে যাওয়ায় এলো বিদায় ঘন্টা।

গাড়ী দুটিতে আগের মতই যাত্রীরা আরোহনের পর তারা রওনা হয়ে গেল মুন্নার পরিচিত রেস্টুরেন্ট এ ইফতারের উদ্দেশ্যে।

পরের ফ্রেম।
সুসজ্জিত ডাইনিং টেবিলে রকমারি ইফতার।
মাগরিব এর আজান শোনা গেলে ওরা সবাই রোজা খুলবে।
ইফতার সেরে জামাতে নামাজ পড়া হয়ে গেলে বাইরে বারান্দায় বসলো চা-সিগারেট সমেত মিনি আড্ডা।
মূল বিষয় রাজেন্দ্রপুর থেকে ফেরার সময় কোন পথে ফেরা হবে। গতানুগতিক ভাবে মেইন রোড না কি জ্যাম এড়ানোর জন্য গাজীপুর লিংক রোড ধরে ফেরা হবে – এই নিয়ে হাল্কা আলাপচারিতা – সাথে ‘চা’ আর ‘টা’।

শুভ রাতের বেলা এই লিংক রোড নিরাপদ হবে কিনা জানতে চাইলে – মুন্না নিজেকে এই এলাকা এক্সপার্ট দাবী করে বললো, “ আমি চাকরীর শুরু থেকেই এই রাস্তায় চলাচল করছি। রিক্সায় তোর ভাবীরে নিয়ে আমার অনেক রোমান্টিক সময় কেটেছে এখানে। কান্টনমেন্ট এর কাছাকাছি এসব জায়গায় বেশী একটা ঘাপলা হয়না দোস্ত।“
একে তো ইফতারে মুন্নার নির্ভুল আয়োজন আর সাথে তার এহেন উপচে পড়া কনফিডেন্স বাকি’দের যথেষ্ঠ আশ্বাস জোগালো। সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্বান্ত হয়ে গেল বাড়ি ফেরা হবে লিংক রোড হয়ে।

বোর্ডিং প্ল্যান আগের মতই। শুধু জ্যাকি’র গাড়িতে যোগ হলো তারেক। সে মুন্নাদের কোম্পানীতেই কাজ করে। গাড়ীতে জায়গা থাকায় সে সহজেই এই লিফটটুকু পেয়ে গেল।

কিছুবাদে দেখা গেল গাড়ি দুটি রওনা হয়ে গেল । রাজেন্দ্রপুর জঙ্গলে মাঝে নিঝুম রাস্তায় আলো ফেলে এঁকেবেঁকে ছুটে চলেছে – প্রথমে ফিল্ডার ও পরে স্প্রিণ্টার টি।

কিছুক্ষণ হেডলাইটের আলো অনুসরন করার পর ফ্রেমে আসবে প্রথম গাড়ীর ইনসাইড শট। স্টিল ফ্রেমে ড্যাশবোর্ড দেখিয়ে ক্লোজ শটে শুভ’র মুখ। স্টেরিওতে তখন লো ভলিউমে জাগজিৎ এর গজল চলছে।
‘‘দুনিয়া… যিসে ক্যাহতাহে
যাদু কা খিলোনা হ্যায়।
মিল যায়ে তো মিট্‌টি হ্যায়;
খো যায়ে তো সোনা হ্যায়।
দুনিয়া…।’’

শুভ আর মুন্নারা বিবিধ বিষয় নিয়ে টুকটাক আলাপচারিতায় মগ্ন। একে একে সবাইকে দেখিয়ে ফ্রেম বাইরে রাস্তায় চলে যাবে। অন্ধকার বাঁক গুলোতে আলো ছড়িয়ে ছড়িয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলো ফিল্ডারটি।

পরের ফ্রেমে স্প্রিন্টারের ফ্রন্ট শট। উইন্ডশিল্ডে কিছুক্ষন স্টিল হয়ে ভেতরে চলে আসবে ফ্রেম। একে একে প্যাসেঞ্জারদের দেখিয়ে ধীরে রাস্তার বাঁকের সাথে তাল মিলিয়ে করে ডান দিকে বেঁকে বেরিয়ে আসবে ফ্রেম। ফুটে উঠবে গাড়িটির ব্যাক সাইড ভিউ। ব্যাকলাইট দুটো থেকে জুম আউট হয়ে এরিয়াল শটে দুটো গাড়ীকেই একসাথে দেখানো হবে রাস্তায়।

ফ্রেমে নীচে ডান দিকে ডিসল্ভ হবে ডিজিটাল টাইম 09:30 PM । একটু পর তা আবার মিলিয়েও যাবে।

(এরিয়াল শট হতে ক্যামেরা নীচু হয়ে ফ্রেমে চলে আসবে ফিল্ডারের ফ্রন্ট সীটের থেকে সামনের ভিউ।)
হেডলাইটের আলোয় দেখা যাবে একটু দূরে ঘন জঙ্গলের মাঝে সামনে পথ এমন সরু হয়ে এসেছে যে কেবল একটি গাড়ি পেরুতে পারে। ঠিক এরপরই আচমকা রাস্তাটি একটা বামে বিপদজনকভাবে মোড় নিয়েছে। ঠিক এসময়ে রাস্তার মাঝে অন্ধকার ছাপিয়ে অস্বাভাবিক কিছু একটা শুভ’র নজরে এলো।
দেখা গেলো – সামনে খানিকটা আড়াআড়ি ভাবে একটা নীল মারুতি ট্যাক্সি ক্যাব রাখা আর –সামনে একটা মোটা গাছের গুড়ি ফেলে সম্পূর্ণ পথ রোধ করা আছে।

ক’ সেকেন্ড পেরুতেই পুরো বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে ঠেকলো।
চকিতেই একটা হিমশীতল অনুভূতিতে শুভ শিউরে উঠলো।

আড়চোখে ও দেখে নিল সেকেন্ড সীটে মুন্না তার ছেলে’র সাথে দুষ্টুমি করছে।
পেছনের সীটে ও আর মুন্নার সহধর্মিনীদ্বয় বাকি বাচ্চাদের নিয়ে তন্দ্রাচ্ছন্ন।

সেকেন্ডের মধ্যে ব্যাপক শব্দ তুলে হার্ড ব্রেক কষলো শুভ। !!!

শীঘ্রই আসছে…

১,০৮৫ বার দেখা হয়েছে

৯ টি মন্তব্য : “অরন্যের একটি দিন এবং একটি রাত্রি – ২”

  1. ওবায়দুল্লাহ (১৯৮৮-১৯৯৪)

    সিরিজ এর এই পর্বটা দিতে অনেক দেরী হয়ে গেল।
    যারা অপেক্ষা করেছিলেন - তাদের জন্য ~x(
    আমি সত্যি দুঃখিত।
    ঈদ বিরতির রেষ কাটিয়ে পরেরটা দ্রুত দিব ইনশাআল্লাহ।


    সৈয়দ সাফী

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : ওবায়দুল্লাহ (১৯৮৮-১৯৯৪)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।