অতঃপর ব্লগর ব্লগর – ৩

ক্যাডেট কলেজ থেকে শুরু করে আজ অবধি একটা বিষয় আমি খুব কন্সিস্টেন্সি সহ লক্ষ্য করে আসছি। প্রাকৃতিক ভারসাম্যহীনতা কিংবা অবক্ষয়ে প্রকৃতিতে ঋতু বদলের সময়সীমায় পরিবর্তন আসে। এমন কি সনাতন রচনা বই গুলোতে লিখিত ষড় ঋতুর বৈশিষ্ট্যতেও আজকাল খুঁজে পাওয়া যায় গড়মিল। কিন্তু ,এই একটা বিষয় আমি দেখলাম এক্কেবারে অনড় এবং নিশ্চিত। সেটা হচ্ছে ছুটিতে ‘সময়’ এর দ্রুততার সাথে পথ অতিক্রম এর ব্যাপারটা। কোন এক অজানা কারনে বোধকরি পৃথিবীটাও ঐ সময়ে সূয্যিমামার চতুর্দিকে অধিকতর ‘জায়রো’ শক্তিতে চক্কর দেওয়া শুরু করে।

ক্লাস সেভেন থেকে শুরু করে প্রতিটি ছুটিতেই ব্যাগ ভর্তি বইখাতা যেভাবে বাসায় নিতাম -ঠিক সেভাবেই ছুটি শেষে ফেরত এনে আমিও সমান হারে নিজের ধ্রুবতা প্রমান করেছি টানা ছয়টি বছর। :dreamy:

ক’দিন আগে বলেছিলাম – ঘোড়াকে পানি খাওয়ানোর চেষ্ঠায় আছি। আহারে ! সে প্রচেষ্ঠা বোধকরি দেশে গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠা টাইপ একটা বিষয় হয়ে ঠেকবে শেষে। থাক ! এসব কথা এখন বাদ রাখি। সামনে পথ আরো বাকি। আমরা বরং স্বপ্ন দেখি আরো কিছুদিন। 😐

এর থেকে ভাল – সবাই একটু ফুরফুরে মেজাজের একটা লেখা পড়ি।
সেদিন রাশেদের রেলভ্রমনের লেখা পড়ে দিব ভাবছিলাম।
আর ফয়েজ ভাই ( :salute: ) হয়তো ভাববেন – একে তো পুরাতন লেখা। তারপর আবার সুখী সুখী গোছের। :no:
ইদানীং লেখালেখি হচ্ছেনা। তাই পুরান মালই দিচ্ছি। আর সুখী সুখী টাইপ কবিতা এ কারণেই যে ছুটি নিয়ে ভাবতেই অনাবিল এক প্রশান্তি আসে মনে। :party:

আহ! কবে যাব ছুটি ?
ফিরবো বাড়ীতে।
“বাড়ী ফেরা – ঠিক ঠিক বাড়ী ফেরা…”

ঞ্ছুটির আমেজ।

ঞ্ছুটির আমেজ।


জংশন এ দাঁড়িয়ে

ঝুম বৃষ্টি শেষে ফুরফুরে আকাশ
চনমনে রোদ মনেও দেয় উঁকি।
আমি এক কাপড়েই বেরিয়ে পড়ি ।
সামনের রিক্সাতে উঠি এক লাফে
অমনি সেটাও চলতে শুরু করে।

আমি কোন গন্তব্য না বলাতেও
সেই কিশোর ছেলেটা এক টানে
আমায় রেলস্টেশনে নিয়ে এলো।
আমায় দেখে কি পর্যটক মনে হচ্ছে ?
আজ বুঝি আমার পথ হারানোর দিন!

দিনের এই সময়টায় জংশনটা একদম ফাঁকা।
আমি ফুটওভার ব্রীজে উঠে- দাঁড়াই মাঝখানটায়।
খানিক বাদেই হুইসেল বাজিয়ে প্ল্যাটফর্মে
এসে দাঁড়াবে- আপ কিংবা ডাউন এর কোন ট্রেন।
স্টেশনের দোকান তাই এখন জনহীনতায় ঝিমুচ্ছে !

চাপা উত্তেজনায় কোন টিকেট কেনা হয়না আমার;
যে ট্রেন আসুক দৌড়ে আমি ওতেই উঠে পড়বো।
ড্রাইভার বাবু যেখানে নিয়ে যাবেন সে পথই ধরবো।
আমি তাই প্রতীক্ষায় আছি – জংশনে দাঁড়িয়ে !
তারপর শুরু হবে ঝিকঝিক পথঘাট,ঝিকঝিক সবুজ ক্ষেত,
খাল-বিল ঝিকঝিক আকাশ-নদী ঝিকঝিক …
ঝিকঝিক ঝিকঝিক !
:guitar:

২,১৪০ বার দেখা হয়েছে

২৮ টি মন্তব্য : “অতঃপর ব্লগর ব্লগর – ৩”

  1. তাইফুর (৯২-৯৮)
    আহ! কবে যাব ছুটি ?
    ফিরবো বাড়ীতে।
    “বাড়ী ফেরা - ঠিক ঠিক বাড়ী ফেরা…”

    আমাদের দেশে ফিরতে আর মাত্র ৯ দিন বাকি বস ...

    ক’দিন আগে বলেছিলাম - ঘোড়াকে পানি খাওয়ানোর চেষ্ঠায় আছি। আহারে ! সে প্রচেষ্ঠা বোধকরি দেশে গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠা টাইপ একটা বিষয় হয়ে ঠেকবে শেষে।

    মিরপুর আপনারে ডাকে বস ...


    পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
    মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥

    জবাব দিন
  2. জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)
    সুখী সুখী টাইপ কবিতা এ কারণেই যে ছুটি নিয়ে ভাবতেই অনাবিল এক প্রশান্তি আসে মনে।

    ভাই, বাকি ক'টা দিন চোক্ষের পলকে কেটে যাবে...এই শুভ কামনা রইল... :thumbup:


    ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

    জবাব দিন
  3. তানভীর (৯৪-০০)

    ভাইয়া, চমৎকার লাগল আপনার লেখাটা।
    কলেজের টার্ম শেষের ছুটিগুলো মুহূর্তের মধ্যেই কেটে যেত।

    কবিতাটা পড়ে মনের ভিতরের উদাসী মানুষটা যেন জেগে উঠতে চাইল। এরকম করে নিরুদ্দেশ যাত্রা করতে পারলে খারাপ হতো না!

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : তানভীর (৯৪-০০)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।