ত্রিদেশীয় ভ্রমন -১ ইন্দোনেশিয়া (বালি)

গত অক্টোবরে আমাদের পুরা ফ্যামিলি মিলে ঘুরতে গিয়েছিলাম – তিনটি দেশ। বাবার শখ ছিল অনেক দিনের। আর আল্লাহ তা’য়ালা যখন সুযোগ করে দিলেন – তা হাতছাড়া করি কোন দুঃসাহসে।
প্রথমেই ছিল ইন্দোনেশিয়া’র বালি দ্বীপ।
সেখানে চোখের সামনে ভলক্যানো দেখে বিশ্বাস হচ্ছিল না যে আসলেই দাঁড়িয়ে আছি -এই ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরির সামনে !
আজ তবে আপনাদেরকে বলি সেই দিনটির কথা।
ভলক্যানোর ছবি, বালি ইন্দোনেশিয়া।

ভলক্যানোর বুকে জল !

বালি শহর ছাড়িয়ে সেদিন
আমাদের ছোট দলটি নিয়ে-
ভ্যান গাড়ীটি সর্পিল পথ বেয়ে
আকাশের কাছাকাছি পৌঁছে গেল ।
গাড়ী থেকে নামলাম সবাই একে একে।

অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখি
সামনে অদূরে দাঁড়ানো ভলক্যানো।
অসংখ্য ক্যামেরার শাটারে ক্লিক ক্লিক করে
বন্দী হচ্ছে আপাত নৈসর্গিক দৃশ্যটুকু।
চকিতে সম্বিত ফিরে পেয়ে আমি
ঠাঁই দাঁড়িয়ে রই ভিউ পয়েন্টে।
দুরন্ত হাওয়ায় উড়ন্ত মেঘের সাথে সাথে
আমিও হয়ে যাই বড্ড এলোমেলো ।

ট্যুর গাইড থেমে থেমে
তার বক্তৃতা দিয়ে যাচ্ছে-
শেষ কবে অগ্নুৎপাত হয়েছিল,
ভলক্যানোর জ্বলন্ত গলিত লাভায়
চারপাশ পুড়ে কালচে হয়ে আছে এখনো।

দলের মাঝে কেউ কেউ বলাবলি করছিল;
ঘুমন্ত পাহাড়ের নিদ্রা ভঙ্গের দিন নাকি আসন্ন।
আমি একটু তফাতে থাকায় গাইডের সব কথা
অত ভাল করে পাচ্ছিলাম না শুনতে।
ভূ-বিজ্ঞানের হিসাব নিকাশে
আমি খুব বেশী রকমের আনাড়ী।
আমার অভিধানে আজ ভূ-গর্ভে
গলিত লাভার রসায়ন ঝাপসা হয়ে গেছে।

ক্ষয়িষ্ণু মানবতার ক্রম অধঃপতনের ত্বরণে
নীরব স্বাক্ষী হয়ে নিঃশব্দে ভলক্যানো ঘুমিয়ে।
মহাজাগতিক ইশারায় দুলে উঠবে প্রকৃতি
আচমকা আবার জেগে উঠবে সুপ্ত পাহাড়টি !
প্রচন্ড আক্রোশে তছনছ করে দিবে চারিধার…

আমার মনটা খচ্‌খচ্‌ করছিল;
ক্রমশঃ মোহাবিষ্ট হয়ে পড়ছিলাম।
কেবলই ছুটে যেতে মন চাইছিল
ঐ পাহাড়ের খুব কাছে।
কান পাতলেই যেন শুনতে পাবো
আহত এক পাহাড়ের কান্না।
একান্ত চিত্তে নিজ হাতে
মাটির বুক চিরে চিরে দেখব-
অভিমানী ঐ ভলক্যনোর বুকে
এখনো কত জল আছে লুকানো!!
:-/

২০ টি মন্তব্য : “ত্রিদেশীয় ভ্রমন -১ ইন্দোনেশিয়া (বালি)”

  1. রহমান (৯২-৯৮)

    😮 😮 😮
    বস্‌,
    ..............................
    ..............................
    ..............................

    (ভাষা হারিয়ে ফেলেছিলাম)

    বিশ্বাস করেন, আমি প্রশংসা করার ভাষা খুজে পাচ্ছিলাম না। তিনবার তিনটা লাইন লিখে আবার ডিলিট করে দিয়েছি। বারবার মনে হচ্ছে আপনার এত ষ্ট্যান্ডার্ডের লেখায় আমার কমেন্ট অতি দরিদ্র আর বেমানান 🙁 । তাই মন খারাপ করে আর কোন প্রশংসা বাক্য লিখলাম না।

    শুধু একটা অনুরোধ করব- অন্য কোন ব্লগে দেয়ার আগে আপনার যেকোন লেখা আগে সিসিবিতে চাই, এটা কিন্তু আমাদের দাবী

    জবাব দিন
  2. জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

    ওবায়দুল্লাহ্‌ ভাই রক্‌স... :thumbup: :thumbup:

    একটা গান শোনাই... :guitar:

    হুম্‌ম...
    যদি কাগজে লিখ নাম...কাগজ ছিঁড়ে যাবে...
    .........
    .........
    .........
    বালিতে লিখ নাম...বোমায় উড়ে যাবে...
    যদি...


    ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

    জবাব দিন
  3. তানভীর (৯৪-০০)

    ভ্রমনকবিতা, চমৎকার, চমৎকার।

    কেবলই ছুটে যেতে মন চাইছিল
    ঐ পাহাড়ের খুব কাছে।
    কান পাতলেই যেন শুনতে পাবো
    আহত এক পাহাড়ের কান্না।

    কি অদ্ভুত সুন্দর।

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : ওবায়দুল্লাহ (১৯৮৮-১৯৯৪)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।