পুরনো ঢাকা’র গল্পঃ এক

ওয়ারির এই ছায়াঘেরা স্থানটি বাইরের কোলাহলের সাথে মানাচ্ছে না। শুনেছিলাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একবার এখানে অবকাশ যাপন করতে এসেছিলেন, জয় হাউজে থেকেছেন। এই বলধা গার্ডেন দেখতে এসে অনেক বৃক্ষের বাংলা নামকরণ করেছিলেন। ‘ক্যামেলিয়া’ রচনার পেছনের ইতিহাস এখানকার ক্যামেলিয়া বাগানটি!

তন্ময় হয়ে ভাবতে ভাবতে হাঁটছি। বড় অশোক গাছটির পেছন থেকে এক পুরুষ কন্ঠ ভেসে এল, “আল্লার কছম! তুমারে ক্যামনে বুঝাই? আমি বুড়া হইবার পারি, মাগার আমার দিলডা এক্কেরে কচি, কচি সছার লাহান!”
একজন বেশ বয়স্ক মানুষের স্কুল/কলেজ পড়ুয়া এক মেয়ের সাথে আবেগঘন সংলাপের সাক্ষী হয়ে রইল এই অশোক গাছ আর আমি। খানিক পড়ে মেয়েটির চোখের ঔৎসুক্য আর পুরুষ মানুষটির চোখের আকুলতা আমায় মুগ্ধ করল!
মুগ্ধ করল কি?
চোখের ভাষা যে কত দুর্বোধ্য হতে পারে আমার চোখে চোখ রেখে তুমি এখনও বোঝনি?

পুনশ্চঃ ‘ক্যামেলিয়া’র লাইনগুলো মনে পড়ছে, আর আমি প্রেমিক-প্রেমিকাদের মাঝ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি, ফিরে যাচ্ছি নগরের চেনা কোলাহলে, পথ থেকে পথে …
“বাইরে থেকে মিষ্টিসুরে আওয়াজ এল, ‘বাবু, ডেকেছিস কেনে?‘
বেরিয়ে এসে দেখি ক্যামেলিয়া
সাঁওতাল মেয়ের কানে,
কালো গালের উপর আলো করেছে।
সে আবার জিগেস করলে, ‘ডেকেছিস কেনে?‘
আমি বললেম, ‘এইজন্যেই।‘
তারপরে ফিরে এলেম কলকাতায়।”

জুলাই ২৬, ২০১৫
টরন্টো, কানাডা।

৪ টি মন্তব্য : “পুরনো ঢাকা’র গল্পঃ এক”

মওন্তব্য করুন : রানা (৯৬-০২)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।