বৃষ্টি-২

একটুখানি শুকনো মাটি-প্রধান উঠোনমত জায়গা — ঘাস নেই, পরিধি ঘিরে কয়েকটি গাছ — ক’দিনের বিষ্টিতে-পিছল-কালো শরীর নিয়ে বিষণ্ণ ঝুঁকে। আজো, আকাশের সাদাটে ক্যানভাসে ৩B পেন্সিলের মোটা মোটা শেড লেগে আছে — যখন তখন শুরু হয়ে যাবে জলীয় সূঁচের অনবরত পতন; বৃক্ষেরা ঘিরে আছে যে জায়গাটুকুন,তাকে চকিতে ভীষণ সম্ভাবনাময় মনে হয়– মনে হয়, প্রকৃতির ইংগিতে আজ পাল্টে যাবে তার পুরনো পরিচয়।

বলতে না বলতে প্লাটুন-সেনানীর মতো বর্ষার বাহিনী আসে ধেয়ে– মাটির বুকে বাড়ি খায় নিপুণ প্যারাট্রুপারের নিপুণতর গড়ান দিয়ে, লাফাতে থাকে উঠোনের মসৃণ শরীরে; এই না দেখে চরাচরে আর যতো বৃষ্টি আছে সব, শুরু করে দ্যায় মাটির এইটুকুনি বুকের ভেতরে সেঁধোবার উৎসব— ফোঁটাগুলোর অব্যাহত চাপে উঠোনের পেট হা হ’য়ে জলের সঠিক আয়তন মাপে ….. এদিকে গাছেরা থিরথির কাঁপে, ঘনঘন মাথা নেড়ে বৃষ্টির ফোঁটাদের অকৃপণ ঝাড়ে আর সমবেত গান করে– “আমাদেরো ভাগ থাকুক আজকের এই সৃষ্টির ভেতরে!”

মেঘের বাষ্পগুলো ফুরিয়ে যাবার আগে কোমল মাটিটুক কবে’ পুকুর হয়ে গিয়ে কুলকুল কুলকুচি করে সমস্ত জল মুখে নিয়ে; আশপাশের সৌধ আর ঘরবাড়ি থেকে একটা দুটো ইট খসে খসে একের পিঠে অন্যে বসে গেলে পুকুরপাড় ঘেঁষে, — সমস্ত জনপদ ধ্বস্ত চেহারা নিয়ে শেষে গালে হাত দিয়ে দেখে, শানবাঁধানো এক দীঘি শুয়ে আছে সারাগায় রংধনু মেখে।

১,৫৪২ বার দেখা হয়েছে

১৫ টি মন্তব্য : “বৃষ্টি-২”

  1. মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

    গল্পটা খুব ভালো লাগল। 😀 :awesome:

    নূপুর ভাই, আমার মতো নাদান কিন্তু ভালা মাইনষের জন্য মাঝে মাঝে এরাম ছোটো গল্প ছাইড়েন বস।


    There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

    জবাব দিন
  2. রকিব (০১-০৭)

    শিউর না, মনে হই কী-বোর্ড টিপা :-B

    আবারো একরাশ ভালো লাগা উপহার দেয়ার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।


    আমি তবু বলি:
    এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : শার্লী (১৯৯৯-২০০৫)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।