পাঠ প্রচেষ্টা ঃ আবার সৈয়দ হক

দিনপঞ্জী থেকে/
গাজী ইস্টিমারে বরিশালের পথে সন্ধ্যায়

সৈয়দ শামসুল হক

কাল সকালে যখন তুমি জেগে উঠবে,
যখন অমাবস্যার অন্ধকার চুল সরিয়ে প্রকাশিত হবে
ধবল পর্বতের মতো তোমার মুখ,
তখনই তো দেখতে পাবে এই বদ্বীপের প্রকৃত মানচিত্রটি;
এবং দেখতে পাবে সকলেই আমার সব কিছু —
দিনের ভেতর দিয়ে গলে যাওয়া আয়নার মতো বয়ে চলেছে নদী,
তার স্রোতে ভাসমান সব নৌকো
এবং সেই নৌকোর পাল আমাদেরই জীবনের গল্পের মতো
টুকরো টুকরো সংঘাতময় রঙের কাপড়ে সেলাই করে গড়া।

আমি তোমার দিকে তাকিয়ে ছিলাম
আমি তোমার দিকে তাকিয়ে আছি
এবং আমার একটি ইচ্ছে তো এই, যে,
আমি তাকিয়ে থাকব তোমারই দিকে।
কাল সকালে আমি যখন জেগে উঠব
যেন অন্ধ হয়ে জেগে না উঠি সেই প্রার্থনায়
প্রতিরাতে তোমার সন্নিকট সুগন্ধের ভেতরে ডুবে যাই।
বর্ষাভেজা মাটি তোমার সুগন্ধ,
মেঘনার জল তোমার সুগন্ধ,
আমার কলমের কালি তোমার সুগন্ধ,
আমার দরোজার কাঠ বহন করে তোমার সুগন্ধ।
এই সুগন্ধ আমাকে রক্ষা করুক অন্ধ হয়ে যাওয়া থেকে
কাল সকালে।
প্রতিটি নৌকো এবং তার ফুলে ওঠা পাল তোমাকে জাগিয়ে দিক
প্রতিটি সকালে।।

৩,৬৩১ বার দেখা হয়েছে

২৪ টি মন্তব্য : “পাঠ প্রচেষ্টা ঃ আবার সৈয়দ হক”

  1. পারভেজ (৭৮-৮৪)

    নানা ব্যাস্ততায় সিসিবিতে একটু অনিয়মিত হয়ে পড়েছি তাই শুনতে ও প্রতিক্রিয়া জানাতে দেরী হয়ে গেল।
    দুঃখিত!!!

    বরাবরের মতই শ্রুতিমধুর - যাকে বলে, কান জুরানো পাঠ-প্রচেষ্টা। কোন সন্দেহ নাই এতে।

    তবে সৈয়দ হকের কবিতা যেহেতু, কবিতা জুড়ে একটা গল্প থাকে।
    সেই গল্পটা শ্রোতার কাছে আরও ভালভাবে পৌছুনোর জন্য কন্ঠের আরও উত্থান পতন অর্থাৎ নাটকিয়তা আশা করেছিলাম।
    আমার মনে হয়েছে, আর দশটা স্বাভাবিক পাঠের চেয়ে এই কবিতায় আরও একটু বেশি নাটকিয়তা আনা উচিৎ.........


    Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

    জবাব দিন
    • নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

      পারভেজ ভাই,
      মাঝে খুব ব্যস্ততা গেল বলে উত্তর দেয়া হয়নি।
      অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার ফিডব্যাকের জন্যে। ঠিক বলেছেন, আমার কণ্ঠে এ নাটকীয়তাটুকু অনুপস্থিত -- একেবারেই। চর্চা নেই -- প্রাতিষ্ঠানিক শীলন নেই, ফলে চাইলেও আসেনা।
      আরেকটি কারণ আছে --- আমি মূলত পাঠ করতে চাই শুধু, ছাপা অক্ষরগুলোকে যতটা সম্ভব নিরাবেগভাবে পড়ে যাওয়া। আবৃত্তি তাই বলতে পারিনা এসব পাঠপ্রচেষ্টাকে।
      কিন্তু শ্রোতার দিক থেকে যে অনুযোগ --- তাকে অনুধাবন করতে পারি। আমার মূল কাজ শুধু শ্রোতাকে কবিতাটিত সঙ্গে পরিচিত করা। আপনার মন্তব্যে এই যে একটি উপলব্ধি হল --- এর পরেরবার যদি এটি পড়ি, তাহলে যেমনভাবে চাইলেন সেভাবে চেষ্টা করব। 🙂 🙂

      জবাব দিন
  2. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    ঐ সময় মনে হয় শেয়ার দিয়াই কাজ সারছিলাম, নাহইলে আমার প্রিয় কবির কবিতা আবৃত্তি হইলো অথচ আমার কমেন্ট নাই!!!


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  3. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    বৈশাখে রচিত পংতিমালা করে ফেলবেন নাকি সময় নিয়ে।
    ইউ টিউবেও দিয়া দিয়েন।


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।