একরাতে – মিশিগানের পথে

ওই দ্যাখো,
হাইওয়ের শেষে
চাঁদের হঠাৎ উল্লম্ফন!
বুনো ঝাড় আর
দুর্বিনীত-লজ্‌ঝরে ট্রাকের
গা বেয়ে আকাশে
উঠে আসে
একটিমাত্র লাফে’

বিস্তৃত পথ তখন নদী হয়ে গেলে
হরিণেরাও
ত্রস্ত থাকেনা আর।
দী-ঈ-র্ঘ দী-ঈ-র্ঘ পায়
জলাভূমি ঠেলে
এপার ওপার করার
দুর্মর বাসনায়
তাদের চন্দ্রাহত চোখ
খানিক
জুলজুল করে উঠেই –

চরাচর বধির করে
আমাদের বনেটে
আছড়ে পড়ে -‘থাড্‌’!

নিমেষে চাঁদ ডুবে যায়;
থোকা থোকা রক্তজবার ভিড়ে
হা চোখে
হরিণেরা পড়ে থাকে –
যতদূর চোখ যেতে চায়

২,৭৯৩ বার দেখা হয়েছে

৩৩ টি মন্তব্য : “একরাতে – মিশিগানের পথে”

  1. মোকাব্বির (৯৮-০৪)

    মিশিগানে আইসাই বাড়ি খাইলেন নাকি?

    সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণঃ গাড়ি চালানোর সময় মিশিগানের প্রকৃতি দেখা হতে বিরত থাকুন! 😛 😛


    \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
    অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

    জবাব দিন
    • নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

      না, না। নিশ্চিন্ত থাকতে পারো।
      তবে গরমের দিনে হাইওয়ে ধরে ছুটে চলার সময় কত যে প্রাণী রাস্তার পাশে পড়ে থাকে! বিশেষ করে বিরাটাকৃতি হরিণগুলো পড়ে থাকে ঠ্যাং উঁচু করে, কেউ কেউ যেন শুধু চুপচাপ ঘুমোচ্ছে। তখন মানবসভ্যতার প্রতি আমার খুব রাগ হয়। এটা সেই কষ্টের বহিঃপ্রকাশ মাত্র। আমার সঙ্গে সরাসরি এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেনি। আর ঘটলেও আসলে ড্রাইভারের কিছু করার থাকেনা। হরিণেরা শেষমুহূর্তে হঠাৎ কোন দিকে লাফ দেবে বলা খুব মুশকিল।
      একবার কেবল, একটা হরিণ এক্কেবারে কোন ক্লুনা দিয়ে আমার গাড়ির সামনে দিয়ে একলাফে পেরিয়ে যাবার সময় পেছনের পায়ে সেই থাড্‌ শব্দে ভেতরের সবাইকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল। অবশ্য প্রাণী এবং যান সবই অক্ষত ছিল সে যাত্রা।

      জবাব দিন
      • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

        আচ্ছা। সমস্যা যেটা হয় বড় ধরনের বাড়ি লাগলে গাড়ি সামলে নেয়াটাও কঠিন হয়ে পড়ে। ঐ থাড শব্দ শোনাটা খুব ট্রাউমাটাইজিং হবার কথা! 🙁


        \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
        অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

        জবাব দিন
        • নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

          কানে এখনো সেই শব্দটা লেগে আছে।
          পায়ে নিশ্চয়ই ব্যাথা পেয়েছিলো ভালোই, কিন্তু মুহূর্তেই আড়াল হয়ে গেছিলো। জানার কোন উপায় ছিল না কী হল।
          আর এত বড় প্রাণীর সাথে ধাক্কা লাগলে উভয়ের ভর আর বেগের সম্মিলনে একটা যা তা ব্যাপারই হবার কথা। মাঝে মাঝে উভয়পক্ষই fatalityর শিকার হয়।
          আর জানোই বোধ হয় এভাবে হরিণ মারা পড়লে সেটাকে নিয়ে গিয়ে বনবিভাগকে অবগত করলে সেই হরিণ তোমার হয়ে যাবে -- মানে মাংস খাওয়ার আইনী বাধা থাকবেনা। অবশ্য সেসব ঝক্কি নেবার মত সরঞ্জাম আর দম যদি থাকে।

          জবাব দিন
          • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

            খুব আজগুবি এক চিন্তা মাথায় এলো। চিন্তা করলাম শিকার করে হরিণের মাংস খাবার সখ তা কিন্তু নয় কিন্তু আমার মনে হয় আমার গাড়ির আঘাতে কোন হরিণ মারা গেলে তাকে খাবার চেয়ে কবর দেয়ার ইচ্ছা আমার বেশী থাকবে। কেন এরকম মনে হচ্ছে বুঝতে পারছিনা। 😕


            \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
            অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

            জবাব দিন
            • নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

              আজগুবি চিন্তা মোটেও নয়। আমি আইনের কথা বললাম মাত্র।
              কেউ তো গাড়ি থামিয়ে কবরও দ্যায়না। দিনের পর দিনের রাস্তায় শব পড়ে থাকে। লোকের এত সময় কই বল!
              অবশ্য খেয়ে নিলে তো ফুড চেইনের একটা সুরাহা হল --- পরিবেশ দূষণও কম হল।
              জীবনানন্দের হরিণ বিষয়ক কবিতাগুলো পড়েছ? এত করুণ!

              জবাব দিন
              • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

                নাহ। বলছেন যেহেতু পড়ে দেখতে হবে। কেউ থামেনা সেটা ঠিক। কার এত সময়। আমি নিজেও হয়তো থামতাম না। তবে আইনটা জানা গেল। চাইনা এরকম কিছু হোক কিন্তু অন্তত দুর্ঘটনা ঘটলে হয়তো মাথায় থাকবে ব্যাপারটা।


                \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
                অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

                জবাব দিন
                • আহসান আকাশ (৯৬-০২)

                  কিছুদিন আগে ইউটিউবে দেখা একটা ব্রিটিশ শোতে (QI) দেখলাম এভাবে একসিডেন্টে মারা যাওয়া প্রানীগুলো রান্না করে খাওয়ানোর জন্য আলাদা রেস্টুরেন্টও আছে, খুব সম্ভবত রোডকিল রেস্টুরেন্ট বলে। খোঁজ লাগাও মোকা


                  আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
                  আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

                  জবাব দিন
  2. জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

    গাড়ির সাথে কোন জন্তুর বাড়ি খাওয়া মানেই পরের সিনে খারাপ কিছু হবে... বহুত সিনেমায় এরকম কাহিনী দেখছি... :-B
    এইরকম হইলে কক্ষনো গাড়ি থেকে নাম্বেন না, হু... O:-)


    ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

    জবাব দিন
  3. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    আইজ সকালে গজবের বৃষ্টির মধ্যে গাড়ি চালাইয়া বাসায় আসছি।
    কবি হইলে আমিও লিখতাম
    কেন্ট থেকে লন্ডনের পথে..


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  4. ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

    আমি কবিতার মানুষ না তবে শব্দ আর বাক্য গঠন দেখার জন্য আপনার কবিতা পড়ি। এবং নিরাশ হই না। আমি কাজের সূত্রে দুবছরের জন্য ভার্জিনিয়া এসেছি। আপনাদের কাছাকাছি হয়তো। আশা করি দেখা হবে।


    “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
    ― Mahatma Gandhi

    জবাব দিন
  5. মুজিব (১৯৮৬-৯২)

    :boss: :boss:

    এদিক থেকে আমরা UK তে এই বিপদ থেকে মোটামুটি মুক্ত। এখানে খরগোশ, পাতি-শিয়াল আর মানুষ ছাড়া আর কোন বড় প্রাণী রাস্তার উপরে মরতে আসে না। তাও সংখ্যায় খুবই কম। একদিন এক ইডিয়েট pheasant এসে আমার গাড়ীর সাথে ধাক্কা খেয়েছিল। পাখিটা না উড়ে কেমন যেন গোঁয়ারের মত করে মাটির দিকে চেয়ে দৌড়ে পাশের ঝোপ থেকে সোজা রাস্তায় আমার গাড়ীর সামনে এসে লাফ দিল! লাফটা না দিলে হয়তো বনেটে বারি খেয়ে মরতে হত না। পরে আমার নেটিভ বন্ধুদের কাছে শুনেছি, এই পাখিগুলি নাকি হর-হামেশাই এরকম বেওকুফি করে থাকে। এটা জানার পরে আমার আত্মশ্লাঘা কিছুটা কমেছিল।


    গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।