মেঘদূতম্‌

মেঘের নাম দিলেম মাদকতা,
বৃষ্টিকে উচ্ছ্বাস –
হা তোমার বালিকাবেলা
কাদামাটি
হ্যাঁ বালকের দিনগুলো
উদ্ভাস।

মেঘের ভেতর থেকে
পত্র আসে,প্রণয়ের গুপ্তকথা।
উচ্ছ্বাস তোর বাড়িতে
কে কে থাকে,
বজ্রের ক’জন সখা

আয় তবে সহচরী
এক্ষণে আচরি
প্রেম,
খাম খুলে পড়ো
বিরহী যক্ষ
কি লিখে পাঠালেম

কালার কালো
অক্ষর পড়ে
স্তনশীর্ষ জাগে,
যমুনার পাড়ে
বৃষ্টি নামে
মেঘমল্লার রাগে

কলস হায়
চোখ বুঁজে ছিলো –
অলস খোঁপা
কবে’
খসে গেছে
তষ্করের ত্রস্ত হাতে।
অনুনয় শোনেনি,
স্পর্শ লুটে গেছে
সম্মোহনের করাঘাতে

প্রণয়ের নামে
বাড়ি বয়ে আসে
সন্ত্রাস
স্পর্ধার কোন
কিনারা থাকেনি আর,
টিনের চালে নেমেছে
বর্ষণের
অবিরাম উল্লাস

পাড়াময়
তাড়া তাড়া
চিঠি ওড়ে
সহস্র দোয়াত
ভেসে যায়,
বুক পোড়ে

পেট পোড়ে।
একগুচ্ছ নেগেটিভ
জ্বলে যায়,
কাদামাটির
অ্যালবাম-দিন দেখে
বালকবেলা
মেঘে মেঘ মেখে
নিঃশেষে
আকাশে মিলায়…..

২,০৬৯ বার দেখা হয়েছে

১৭ টি মন্তব্য : “মেঘদূতম্‌”

  1. নাফিস (২০০৪-১০)

    বরাবরের মতন ই লা জবাব :boss: ( আরবি(?) বিশেষণ ব্যবহার করলাম 😛 )
    এমন একটা সময়ে কবিতাটা পড়লাম যখন বাইরে ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে। ঘড়ি কাটায় রাত ২:২৮। শুক্রবার বিকালের লম্বা উইকেন্ড ঘুমের পর আজ আর সহজে ঘুম আসবে বলে মনে হয়না। জানালার কাচ দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখি বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির আওয়াজ না পেলে কেমন জানি অস্থির লাগে। টিনের চালে বৃষ্টির চেয়ে ঘোর লাগা কোন শব্দ মনে হয় আর কিছু নেই !
    "প্রণয়ের নামে
    বাড়ি বয়ে আসে
    সন্ত্রাস
    স্পর্ধার কোন
    কিনারা থাকেনি আর,
    টিনের চালে নেমেছে
    বর্ষণের
    অবিরাম উল্লাস"

    অসম্ভব সুন্দর লাগলো নূপুর দা ! (সম্পাদিত)

    জবাব দিন
    • নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

      যাক, অন্তত একজন পাঠকের জন্যে এ-লেখা কাকতাল হতে পেরেছে - আমার লেখার মুহূর্তে তোমার ওখানে ঝুম বৃষ্টি আর প্রকাশ করার পরপরই তোমার নজরে পড়ে যাওয়া -- বিশাল ব্যাপার আমার কাছে। যদিও আমি লিখেছি হেডফোনে বজ্রসহবৃষ্টি আর মেঘমল্লার শুনতে শুনতে। 😀
      টিনের চালে বৃষ্টির মতো মধুর শব্দ আর কিছু হয়না -- একদম খাঁটি কথা।
      এ-লেখাটার ভাষায়, ভাবনায় জয় গোস্বামীর গুরুতর প্রভাব আছে। ' বাড়িতে কে কে থাকে/বজ্রের ক'জন সখা' টিপিক্যাল প্রথমদিকের জয় গোস্বামী।

      জবাব দিন
  2. রেজা শাওন (০১-০৭)

    নূপুর দা অসাধারণ। আপনার কবিতা হচ্ছে বরফ কবিতা, আমি যখন পড়ি ঠাণ্ডা লাগে। আমার সাধারণত কিছুই মনে থাকে না, যা পড়ি- ভুলি। কিন্তু কীভাবে যেন এই লাইনটা মাথায় গেঁথে গেছে-

    "কংকাবতী তোমার ফোনে আজ
    অবিরল বৃষ্টির শব্দ লেগে ছিলো"

    কীভাবে পারেন জিজ্ঞেস করা যাবে না। যারা পারে, তাঁরা পারেই। চলুক... :thumbup: :thumbup:

    জবাব দিন
  3. মোকাব্বির (৯৮-০৪)

    আপনার কবিতা বুঝে ফেললে খুব স্বস্তি আসে। লাইনগুলো তখন বারবার পড়ে দেখি। আজকে কেমন ঠিকরে বের হয়ে যাচ্ছে মাথা থেকে। 🙁


    \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
    অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

    জবাব দিন
  4. সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

    তোমার লেখায় আবারও মুগ্ধ.... এটা জানাতেই সিসিবিতে অনেকদিন পর লগইন করলাম।

    ধন্যবাদ নূপুর। কোনো এক রাতে তোমার বানানো প্রিয় কোনো ককটেলে চুমুক দিতে দিতে তোমার কণ্ঠেই তোমার কবিতা শুনতে চাই....

    খুব কি বেশি চাওয়া!!


    "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

    জবাব দিন
  5. শাহরিয়ার (০৬-১২)

    প্রথমদিনই কমেন্ট করেছিলাম। কি সমস্যা হইছে বুঝলাম না। যাই হোক। আপনি যে খুব বেশী সুন্দর একটা জিনিস লিখে ফেলছেন এইটা আমরা পাঠকরা বুঝতে পারছি। রেজা শাওন ভাই জিজ্ঞাসা করে নাই, আমি করলাম। ভাইয়া কীভাবে পারেন?? :clap: :clap:


    • জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব - শিখা (মুসলিম সাহিত্য সমাজ) •

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।