প্রায় সিগারেটের সমান হয়ে এসে ছাইয়ের লম্বাটে কায়াটা আর পারলোনা, টুপ করে খসে পড়লো মেঝেয়।আরেকটা ধরাবো কি ধরাবোনা ভাবতে ভাবতে মার্লবোরোর প্যাকেটটা নিয়ে নাড়াচাড়া করতে থাকি, অস্থিরতাটুকু আড়াল করবো বলে।
জানলা দিয়ে বারোতলা থেকে আকাশ দেখছে পৃ, দেখেই চলেছে।অনেকক্ষণ কোন শব্দবিনিময় নেই, কেবল মনে মনে নিরুচ্চারে পরষ্পর কথা কয়ে চলেছি দুজনে।ও জানলায়, আমি এইখানে ছাইদানের পাশে উবু হয়ে।
সিগারেটের একচোখা আগুনটাকে পিষে ফেলতে ফেলতে আমি ওকে জিজ্ঞেস করি, না গেলে হয়না?
হয়না, যেতেই হবে।
এই তো এলি, এরি মধ্যে আবার দেশছাড়া হবি?
উপায় নেই জানিস।তবু কেন রক্ত ঝরাস এমন করে!
কোন কথা খুঁজে পাইনা।পৃ ভালো করেই জানে আটকে রাখার মানুষ আমি নই, অক্ষম হাহাকারটা শুধু দুজনের মধ্যিখানে হা হা করে ওঠে।
বাইরে তখন তপ্ত দুপুরবেলাটা কেবল মোলায়েম বিকেলের দিকে ঝুঁকে পড়তে শুরু করেছে।আকাশে সাদা মেঘেরা ছোট ছোট দলে উপদলে বিস্রস্ত ছড়িয়ে।নীচে স্রোতের মতো বয়ে চলা ঢাকা।আর আমরা দুটি পলায়নপর ইমোশনাল জীব অফিস কামাই করে এই ঘরটায় পৌঁছে দুটো নিস্পন্দ মোমের মূর্তি দু’কোণায় একটু একটু করে গলছি।
প্রাণপণ ইচ্ছে হয় একছুটে পৃ-র কাছে যাই, দুহাতে কাঁধ ঝাঁকাই কি জড়িয়ে ধরি। অথচ এইটুকুনি দূরত্ব কি দুর্লঙ্ঘ্য মনে হয়!
একেকটা সবুজ-বাঘের-মতো
-বিকেলবেলার পেটে
আমরা দুজনে
অনায়াসে এঁটে
যেতাম কি না
এমন উদ্ভট তর্কে নেমে
পার্কের পেটে
চলে গেছি রোজ,
ঘাসে ঘাসে ছড়িয়ে
বাদামের খোসার অরাজকতা
রাখিনি খোঁজ
আকাশের চেয়েও কতটা
কমনীয় ভেবে গেছি
তোর ওড়নার নীল অত্যাচার….
হঠাৎই একটা বাঘের মতোই আমি লাফিয়ে উঠি।
পৃ চমকে উঠে পেছনে তাকিয়েই খিলখিল করে হেসে ফেলে, এক্ষুণি ট্যাক্সি চলে আসবে।ড্রিংকটা বানাবিনা?
সে আর বলতে!দু-তিন লাফেই গিয়ে ভদকার ঘাড়টা মটকে ধরি।
আজকে খুব তাড়াতাড়ি যা বানাচ্ছি তার উপকরণগুলো:
Absolut Citron (লেমন ফ্লেভারড যে কোন ভদকা হলেও চলবে)- ৬০ মি.লি.
Tequila – ৩০ মি.লি.
Sweet Vermouth – ১/২ চা চামচ
লেমনেড – ৬০ মি.লি.
সোডা – ৩০ মি.লি.
স্ট্রবেরি (মাঝারি সাইজ) – ৩টা
লেবু – ১ টুকরো ও ১টা গোল স্লাইস
আইসকিউব কয়েকটা
প্রথমে গ্লাসটাকে উল্টো করে ধরে কিনারায় লেবুর টুকরোটা দিয়ে হালকা করে বুলিয়ে নি’। তারপর কিনারাটাকে একটা প্লেটে রাখা লবণে একটু চেপে চেপে ঘুরিয়ে নিলে লবণের দানাগুলো লেপ্টে যাবে সেখানটায়।
২টা স্ট্রবেরি চপিং বোর্ডে নিয়ে একটা গ্লাসের পরিস্কার তলা দিয়ে ভালো করে পিষে নিলাম।(ব্লেন্ড-ও করে নেয়া যেতে পারে)
তারপর shaker এ ভদকা, টেকিলা, সুইট ভেরমুথ, লেমনেড, পিষে নেয়া স্ট্রবেরি আর ৪-৫ টা আইস কিউব নিয়ে মুখ বন্ধ করে ভালোমতো ঝাঁকালাম যতক্ষণ পর্যন্ত shaker-এর গা-টা বেশ chilled না হয়েছে।
এই মিশ্রণকে অতঃপর ছেঁকে গ্লাসটাতে নিয়ে সোডা যোগ করে দিলাম।
হালকা নেড়ে লেবু স্লাইসটাকে গ্লাসে ছেড়ে দিয়ে বাকি স্ট্রবেরিটাকে একটু চিরে গ্লাসের ঠোঁটে ঝুলিয়ে পৃ-র ঠোঁটের দিকে জুলুজুলু চাইতেই ও চিয়ার্স বলে জড়িয়ে ধরলো।
আলতো করে ওর গাল ছুঁয়ে দিতে সেখানে স্ট্রবেরির লাল ছোপ লেগে গেলো।
আমি ফিসফিসিয়ে উঠেছি,
যাই বলা নাই, বলো আসি
বলো আবার আসমু, হইবে দেখা…
দ্বিতীয় কবিতা-উদ্ধৃতি: তারাপদ রায়।
প্রথম ।
:clap: :clap: :clap:
:thumbup: :thumbup:
নূপুর ভাই সংগ্রীহিত নাকি নিজের? নাম কি এটার?
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
আচ্ছা আমি খুব বোকার মত একটা প্রশ্ন করলাম। বলেই দিয়েছেন ব্যক্তিগত রেসিপি। :bash:
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
মোকাব্বির,
এই রেসিপিটা আমার নিজেরই।তবে অন্য পর্বগুলোতে বেশির ভাগ রেসিপিই ইন্টারনেট বা ককটেল রেসিপি বুক থেকে নেয়া, নিজস্ব কিছু ইম্প্রোভাইজেশন সহ।
'ব্যক্তিগত রেসিপি' নামটা এসেছে রেসিপির নিজস্বতার জন্যে নয়, বরং গল্প বলার ধরণের জন্যে। বোকার মতো প্রশ্ন মোটেই হয়নি।গল্পগুলোও আমার নিজের গল্প কি না তা তো আর জিগাও নাই! 😀
ওহ...আচ্ছা। তাহলে ঠিক আছে। 🙂 অন্যরকম একটা অনুভূতি তৈরী হয়েছিলো। ঠিক যেন গল্পের মধ্যে হারিয়ে গিয়ে শেষে একটা চমৎকার ককটেল রেসিপি! :hatsoff: (সম্পাদিত)
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
অশেষ ধন্যবাদ মোকাব্বির।
চমৎকার...
পান করার পরে নাকি আগে? 😛
আমার বন্ধুয়া বিহনে
আমারো এই প্রশ্ন : আগে না পরে?
সামিয়া হোসেন 😀
নুপুর দা, 'চমৎকার' মন্তব্যটা কয়েকদিন পরেই দিচ্ছি 😀
নিশ্চয়ই।
অপেক্ষায় থাকলাম। 🙂
নুপুদ্দার এই সিরিজের প্রতীক্ষায় থাকি। প্রতীক্ষা সার্থক করে দেন প্রতিবারই।
You cannot hangout with negative people and expect a positive life.
ওয়াস্তকাফিরুল্লামিনযালেক! এহেন অধঃপতন! 😀
আমার বন্ধুয়া বিহনে
😉
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
আমি কেবল সাহিত্যের স্বাদ নিছি :-B :-B
You cannot hangout with negative people and expect a positive life.
আজ হঠাৎ করেই নূপুরের রেসিপি পড়ার ইচ্ছে হলো। খুঁজে বের করে পড়ছিলাম আর চায়ের কাপে চুমুক দি্ছিলাম। আম্মাজানের মন্তব্য আর প্রতি-মন্তব্যের পর জিতুর মন্তব্যে রাব্বীর জবাব পড়ে মুখে জমে থাকা চায়ের তরলটাকে আটকে রাখা গেল না! ভাগ্যিস কাপড় নস্ট হয়নি!!
সিসিবি এ কারণেরই রক করে!!
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
তোমার লেখালেখি কই?
কন্যা আছে কেমন।
দাদা, কীবোর্ড আর আঙ্গুলে মনকষাকষি চলতেছে, তাই অনেকগুলা লেখা স্টোর রুমে মন খারাপ করে বসে আছে।
কন্যা ভালো আছে- বড় হয়ে যাচ্ছে আমাকে বুড়ি বানিয়ে 🙂
You cannot hangout with negative people and expect a positive life.
কীবোর্ড আর আঙুলে তাড়াতাড়ি ভাব জমাও, লেখা ঝাড়ো।
জিতুপ্পি কি শুধু রেসিপি পড়েন না ট্রাইও করেন?
আমি কেবল সাহিত্যের স্বাদ নিছি :-B :-B
You cannot hangout with negative people and expect a positive life.
দারুন দেখতে তো ককটেলটা! স্বাদ কেমন? ককটেলের দিক দিয়ে মার্গারিটা এবং মার্টিনি এগিয়ে।
আপনার গদ্যও খুব ভাল।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
স্বাদ বেশ ভালো।কালই বন্ধুদের বানিয়ে খাওয়ালাম।
ঠান্ডা কিছু নাই, এই কোকমোক দিয়া বানান যায় এইরকম 🙁
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
ভাই, মোক এর স্বাদ কেমন? খাইতে মঞ্ছায়।
রিবিন, আবার ফয়েজের পেছনে লাগছো!! 😀
দীর্ঘদিন পর নতুন রেসিপি নিয়ে, সাধু.... সাধু...... নূপুর। অনেক অনেক ধন্যবাদ। ক্যাডেট কলেজ ক্লাবের নতুন ভবনে বারটা আরো বড় হয়েছে। চাকরি খালি আছে। চইল্যা আসনা নিকি??
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
সানা ভাই,
এই রেসিপিটা সেদিনই ট্রাই করলাম। দোস্তরা তো ভালোই বললো। দেশে যাইতে যে কি মন চায় সানা ভাই কি বলবো। কিন্তু উপায় নাই গোলাম হোসেন।
ক্যাডেট কলেজ বারে গিয়েও ভালোমন্দ চেখে দেখার বিরাট সাধ।
ভাইয়া, বারে আপনার সাথে বসতে মঞ্ছায়।
🙂 🙂
ক্যান যাইবো না ভাই।
তয় নতুন কইরা আবার রব উঠছে কোকে নাকি এলকোহল পাওয়া গেছে।
যাই হোক সমস্যা নেই। আমাগো পেটেও নানান জাতের এলকোহল তৈরি হচ্ছে।
প্রথমে একটি ৫০০ মিলি কাচের গ্লাস নিন।
চারটে বরফের টুকরা নিন গ্লাসে।
এরপর কোক ঢালুন।
এক চিমটি লবণ দিন।
একটা ফালি করে কাটা লেবু ছেড়ে দিন।
এবার চুক চুক করে পান করুন।
ইজিচেয়ারে শুয়ে পান করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
ট্রাই কইরা সত্বর জানান বস।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
ফয়েজ,
প্রতিবারই ভাবি কোক-মোক দিয়াই বানাবো, কিভাবে জানি অ্যালকোহল চইলা আসে। 😀
লেখা ভালো
রেসিপি ভালো
কিন্তু ক্যান জানি আবার মিক্সচার ভাল লাগে না।
চাইরটা বরফ আর কিছু না; না কোক না পেপসি, না অন্য কিছু।
বুদ্ধদেব গুহের বইতে ভাল ভাল রেসিপি পাওয়া যায়।
কোন তরল কিভাবে পান করতে হয় তাও বলেছেন উনি।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
:thumbup:
'চাইরটা' বরফ দিয়া আমারো ভালো লাগে অনেক।
স্পেশালি হুইস্কি, কনিয়াক আর লাইম জিন।
কিন্তু বেশির ভাগ সময় স্বাদটা মাস্ক করে খেতে ভালো লাগে।
এখানে চইলা আসো রাজীব দিন সাতেকের সময় নিয়া। জমানো যাবে।
নুপুরদা, রেসিপি নিয়া একটা বই হইলে কেমন হয়? কেমন আছেন?
::salute::
ভালো আছি রেশাদ।
বইয়ের কথা ভাবলেই কেমন ভয় করে।
বই পাবলিশ করার মতো লেখক তো হতে হবে আগে!
নুপুর ভাই আপনার রেসিপি পড়ে যাদের অভ্যাস আছে, তারা বসে থাকতে পারবে না আর আমরা যারা একসময় একটু আধটু টেস্ট করতাম, এখন মিস করছি। নেক্সট এ একটা জুসের রেসিপি দিবেন, টেস্ট করবো। :))
ধন্যবাদ জিয়া।তোমার মন্তব্যে অনুপ্রেরণা পেলাম অনেক।
মকটেল - এর রেসিপি দিবো এর পরের পর্বেই।
অনেকদিন ধরেই একথা বলছি যদিও।
মঞ্ছায় :dreamy:
কি মঞ্ছায়?