চালকের বাংলাদেশ, বাংলাদেশের চালক


হাড়ির একটা ভাত টিপেই বোঝা যায় হাড়ির সব ভাতের অবস্থা। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় মনে হয়েছে বাংলাদেশের অবস্থা বোঝার জন্য সারা বাংলাদেশ না ঘুরলেও হয়। বিভিন্ন যানবাহনের চালকের সাথে গল্প জুড়ে দিলেই হবে। বাংলাদেশে যখন বেড়াতে যাই তখন আমি ছিন্নমূল। নিজের কোন বাহন নেই। তাই অনেকের বাহন ব্যবহার করতে হয়। অনিচ্ছাতেই। দেশে থাকতে আমি সব সময়ই একা চলে অভ্যস্ত। পদব্রজ, পাবলিক বাস, রিক্সা, গাড়ি – যখন যা দরকার। কিন্তু পেছনে এখন প্রবাসী তকমা থাকাতে দেশের আত্নীয়স্বজন দায়িত্ব নিতে চায়। আবেগের জায়গাটির কথা চিন্তা করে নিজের স্বাধীনতা বিসর্জন দিই। এতে লাভ হয় এই যে বেশ কয়েকজন গাড়িচালকের সাথে অনেকটা সময় জুড়ে গল্প করা যায়। দেশের যানজট সে সুযোগ দেয়। আমাদের কথার মধ্যে ধীরে ধীরে ফুটে উঠে দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক দৃশ্যাবলী। সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা।


ইসলাম ভাইকে চিনি সেই ১৯৯৩ সাল থেকে। বড়বোনের গাড়িচালক। বড়বোনের সাথে রবীন্দ্রনাথের ‘কাবুলীওয়ালা’র মিনির মায়ের চরিত্রের অনেক মিল। সে সব সময়ই মনে করে বাইরের পৃথিবী মানেই বিপদসংকুল আমাজনের জংগল। পাকাচুল তার গাড়িচালকের অন্যতম যোগ্যতা। নিজের তিনটা মেয়ে আছে। বোধহয় হিন্দি সিনেমায় দেখা যুবক ড্রাইভার আর গাড়ির মালিকের মেয়ের পালিয়ে যাবার গল্প তার দুস্বপ্নে হানা দিত। গতবার ইসলাম ভাই অনেক সার্ভিস দিয়েছিলেন। ধানমন্ডি-গুলশান আসা যাওয়ার পথে যতবারই ধানমণ্ডি লেকের পাশে বত্রিশ নম্বর রোডের সেই বিখ্যাত বাড়িটি পার হয়েছি, ততবারই ইসলাম ভাই আপন মনে বলে উঠতেন, ” বুঝলেন ছোটআপা, আজকে বাংলাদেশে এতো সমস্যা কেন?”
“কেন ইসলাম ভাই?”
“বঙ্গবন্ধুরে খুন করছে তাই।”
“হু ইসলাম ভাই, আমাদের বড়ই দুর্ভাগ্য।”
“সাবও এই কথা বলে।”
সাব মানে সাহেব। সাহেব মানে বড়দুলাভাই। সব সময়ই উনাকে দেখে এসেছি কড়া আওয়ামীলীগার হিসেবে। মজার ব্যাপার হচ্ছে রাজনৈতিকভাবে অতি নিরপেক্ষ একটি পরিবারের বড়মেয়ে উনাকে বিয়ে করার একমাসের মাথায় কড়া আওয়ামীলীগার বনে যান। তবে আওয়ামীলীগ যখন বিরোধী দলে থাকে তখনই উনাদের আওয়ামীচর্চা চলে। তবে আমাদের পরিবারকে নিরপেক্ষ না বলে নির্মোহ বলাই ভাল। লক্ষ্যে পৌছাবার জন্য নিজের উপর বিশ্বাস রাখতে শিখেছি। তাই কাউকে পীর বলে মানতে পারিনা। তবে অধিকাংশ মেয়েদের ক্ষেত্রেই দেখেছি বিয়ের পর স্বামীর চোখে পৃথিবি দেখতে শুরু করে।
এই বছর গিয়ে দেখি বড়বোনের গাড়িতে নতুন চালক। ইসলাম ভাইয়ের বড়ভাইয়ের ছেলে। নাম আসলাম। ইসলাম ভাইয়ের রেফারেন্সেই চাকরি হয়েছে। খেয়াল করে দেখলাম এই চালক ভদ্রলোক বয়সে যুবক। কিন্তু মুখে বিশাল ঐশী দাড়ি। মাথায় টুপি। ইনিও সুযোগ পেলে ইসলাম ভাইয়ের মতো অনেক গল্প করেন। তবে হাতে স্টিয়ারিং হুইল না থাকলে সবসময় মাটির দিকে চোখের দৃষ্টি নামিয়ে রাখেন। বড়বোনের এখনও এক মেয়ের বিয়ে বাকী। এই যুবক ড্রাইভার রাখার রহস্য বুঝতে পারলাম। এই দাড়ি-টুপি একটি বিশেষ বার্তা বহন করে। সচ্চরিত্রের সার্টিফিকেট। অর্থাৎ এই লোক আর যাই করুক হিন্দি সিনেমার মতো মেয়ে পটানোর মতো কোনো কারণ ঘটাবে না। এই ব্যাপারটা এখন বাংলাদেশীদের মধ্যে ছড়িয়ে পরেছে। হিজাব পড়লে কপালে ‘ভালো মেয়ে’র তকমা জুটে। ইসলাম চাচার ভাতিজাকেও আমি ভাই ডাকি। আর ভাতিজাও চাচার মতো আমাকে ছোটআপা ডাকে। তবে চাচার সাথে ভাতিজার স্বভাবে একটা বড় পার্থক্য আছে।
“বুঝলেন ছোটআপা, এই দেশে আল্লাহর আইন ছাড়া আর কোন উপায় নাই।”
“আল্লার আইন কী জিনিষ?”
“আপনি শিক্ষিত মানুষ, এইটা কি প্রশ্ন করলেন?”
সবসময় মাটির দিকে তাকিয়ে কথা বলা আসলাম ভাই আমাকে এতো সহজে বোল্ড আউট করে দিবে তা ভাবিনি। এবং বুঝলাম যতোটা ভাল বলে নিজেকে মনে করতাম, ততোটা ভালো আমি নই। আমার না-জান্তা টাইপের ভাণ এতো সহজে ধরা পড়ে যাওয়াতে বুকের ভেতর একটু জ্বলুনি হচ্ছে। বড্ড বাজে এই জ্বলাতংক রোগ। আমি জানালা দিয়ে বাইরের দিকে তাকালাম। টোকাই আর ফালানীরা পপকর্ণ, মুড়ির মোয়া, সেপটিপিন, কালোক্লিপ, আর কদমফুল বিক্রি করছিল। টাটকা বেলফুলের মালা দেখে একগুচ্ছ কিনে ফেললাম। প্রাণজুড়ানো বেলফুলের গন্ধে সব অবসাদ কেটে গেল। তখন রোজার মাস। খেয়াল করে দেখেছি যে গাড়ির চালকরা অনেকেই এই সময় ওয়াজ শোনেন। আসলাম ভাইকে উনার ওয়াজের ক্যাসেটটা চালিয়ে দিতে বললাম। ওয়াজ শুরু হলো। সব ওয়াজই সাঈদী নয়। সেখানে নারীকে প্যাকেটজাতকরণ টাইপের কিছু শুনলাম না। দুর্নীতির বিরুদ্ধে জ্ঞান দেওয়া হচ্ছে। গতদুদিনে বাংলাদেশের পত্রিকা দেখে সেই আসলাম ভাইয়ের কথা মনে পড়লো। সাঈদী জেলে গিয়ে গাড়ির মালিকদের খুব বিপদে ফেলেছে। কোথায় সেই নারীদের কাপর-চোপরের বর্ণনাসহ রঙ্গ-রসে ভরপুর সাঈদীর ওয়াজের বয়ান? তার বদলে কিনা দুর্নীতি? তথাকথিত গনতন্ত্রের ঢালের আড়ালে লুকিয়ে রাখা দুর্নীতির কালো বেড়াল বোধহয় আর লুকিয়ে রাখা গেল না। উনারা কি বড্ড বেশি সাঈদীকে মিস করছেন?


“আপা আপনি যে সেদিন কথাটা বললেন তা পুরোপুরিই ঠিক।” মেজবোনের গাড়ির চালক সাত্তার ভাইয়ের কথায় চিন্তার জগত ছিন্ন হলো।
এতোক্ষণ আনমনে বসুন্ধরা মার্কেটের দিকে তাকিয়ে ছিলাম আর ভাবছিলাম মার্কেটেরও প্রাণ আছে। আরেক জগদীশ চন্দ্র বসু টাইপের যুগান্তকারী আবিষ্কার। মার্কেটে হরেকরকম মানুষ আসছে, যাচ্ছে। কেউ বিয়ের বাজার করতে, কেউ ডেটিং করতে, কেউবা শুধুই উইন্ডো শপিং করতে। ঢাকা শহরের জ্যাম আমাকে বিরক্ত করে না। কারণ শহরে আমি পরিব্রাজক। মহিলা হিমুর মতো। গাড়ি চললেও যা, না চললেও তা। অন্ধের যেমন রাত আর দিন।
“সাত্তার ভাই, আপনাকে আমি কি বলেছিলাম?”
“আমাকে বলেন নাই, স্যারকে বলতেছিলেন যে গ্রামে এখন মানুষ গরু পালতে পারে না। আপনার সেই কথাটা ঠিক।”
কথাটা আমার চাচী শাশুড়ির কাছে শোনা। উনি গ্রামের অনেক প্রজেক্টের সাথে জড়িত। উনার কথা গ্রামের লোককে এখন একটা গরু দিলে কোন উপকার হয় না। পরের দিনই হাটে গিয়ে বেচে আসে। কারণ গ্রামে এখন আর আগের মতো খোলা প্রান্তর নেই। গরু কোথায় গিয়ে ঘাস খাবে? তাই গৃহস্তের গোয়াল শূন্য।
“আপনার গ্রামেও কি একই সমস্যা?”
“অনেক বছর পর সৌদি থেকে এসে দেখলাম সব খালি মাঠ-ঘাট ঘর-বাড়ি দিয়ে ভরে গেছে। মানুষ শুধু শহরে না গ্রামেও।”
“আপনি সৌদিআরবে ছিলেন অনেক বছর? তাহলে তো আপনার অবস্থা ভালো হওয়ার কথা।” সরাসরি আর জিজ্ঞেস করতে পারলাম না গাড়ি চালাচ্ছেন কেন?
“সৌদি থেকে সব টাকা বিশ্বাস করে বড় সমন্ধিকে পাঠিয়েছিলাম। ঐ লোক সব টাকা দিয়ে নিজের নামে একটা জমি কিনেছে।”
খুব কষ্ট লাগলো সাত্তার ভাইয়ের জন্য। একটা সময় এই দেশ চলতো বিদেশী সাহায্যের টাকায়। এখনও চলছে সেই বিদেশী টাকায় – যার নাম আমরা দিয়েছি রেমিট্যান্স। সাত্তার ভাইদের মতো মানুষদের চিপড়ে চিপড়ে সেই টাকা নানান দেশ থেকে বাংলাদেশে আসে। সুইস ব্যাংকে নাকী ভারতীয়দের একাউন্ট সবচেয়ে বেশি। আচ্ছা বাংলাদেশীদের একাউন্টের সংখ্যা কতো? জানিনা। শুধু চোখের সামনে দেখতে পাই সাত্তার ভাইদের কোন উন্নতি হয় না। ব্যক্তিমালিকানায় বিশাল বিশাল ইমারত গড়ে উঠে। কিন্তু সরকারের জিম্মায় থাকা ভাংগা রাস্তাঘাটগুলোকে দেখতে বড়ই এতিম লাগে। আমরা নিজেদের অধিকারটুকু নিয়ে সোচ্চার হতেও যেন ভুলে গেছি। বেশিক্ষণ নৈরাশ্যের মধ্যে ডুবে থাকতে পারলাম না। আশার কথা সাত্তার ভাই’ই শোনাল।
“এই সরকারের টার্ম শেষ হলে পরের টার্মে যখন বিএনপি আসবে তখন গ্রামে চলে যাব।”
“পরের টার্মে বিএনপি আসবে কিভাবে বলছেন?”
“আপা আওয়ামিলীগের আর আশা নাই। দেখেননা রাস্তাঘাটের অবস্থা? শুধু রাস্তাঘাট না সব জায়গাতেই মানুষ ক্ষেপায় দিছে। আমার সাথে একজন সৌদি থেকে এসে সব টাকা শেয়ার মার্কেটে ঢালছিল। সব গেছে।”
এই শেয়ার বাজারকে আমার হাঙ্গর মাছ চাষের একটা খামার বলে মনে হয়। আর প্রান্তিক খুঁচরো বিনিয়োগকারীরা সব ছোটমাছ। বড়মাছ অনবরত ছোটমাছকে গিলে খাচ্ছে। সেদিন শুনলাম আমার এক কাজিনের কথা। সামরিক বাহিনীতে চাকরি করেন। কয়েক বছর জাতিসংঘের মিশনে গিয়ে অনেক টাকা আয় করেছিলেন। কিন্তু এখন শেয়ার বাজারে সব খুইয়ে বসে আছেন। এখন আর হাঙ্গরদের উপর রাগ হয়না। সব রাগ গিয়ে পড়ে ছোটমাছদের উপর। কেনই যে সব শর্টকাটে বড়লোক হতে চায়? ক্ষুধার্ত হাঙ্গরদের কাছ থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকার মতো সাবধানতাটুকু যদি না নাও, তাহলে হাসিমুখে হও তাদের ইংলিশ ডিনার। পরমুহূর্তেই মনে হয় তরুণ সমাজ করবেটাই বা কি? তাদের এলোকেট করার মতো পলিসি নিয়ে কি সরকারের চিন্তাভাবনা আছে? থাকলে জানতে চাই।
সাত্তার ভাইকে জিজ্ঞেস করলাম, “বিএনপি আসলে গ্রামে চলে যাবেন কেন?”
“বিএনপি করি গ্রামের লোকজন জানে। আমাদের এলাকার বিএনপির যে এমপি হবে তার ভাগিনার সাথে একসাথে কলেজে পড়েছিলাম। বিএনপি আসলে সব টেন্ডার আমাদের হাতে চলে আসবে। আগেরবার এই ভাবে কিছু পয়সা করছিলাম। কিন্তু কেয়ারটেকার সরকার আসাতে তাড়াতাড়ি পালিয়ে সৌদি চলে যাই। নইলে জেলে নিত।”
আমি এবার নতুনভাবে সাত্তার ভাইয়ের দিকে তাকাই। পত্রিকার টেন্ডারবাজদের কথা পড়ি। এরা টেন্ডার ছিনতাই করে। প্রতিপক্ষ দলের সাথে মারামারি করে। অন্য ঠিকাদারদের টেন্ডারের দরপত্র কিনতে বাঁধা দেয়। টেন্ডারবাজদের প্রতি একধরনের বিতৃষ্ণা এবং ঘৃণা আমার মধ্যে জমে আছে। এখন এই সাত্তার ভাই’ই তাহলে সেরকম একজন টেন্ডারবাজ। কেন জানি আমার ভেতর থেকে এতোদিনকার বিতৃষ্ণা এবং ঘৃণা বরফের চাই গলতে শুরু করলো। কি করবে এই সাত্তার ভাই’রা? আমরা ভোট দিয়ে একটি দলকে সরকারে পাঠাই। সরকারের একটি অত্যাবশ্যকীয় দায়িত্ব হচ্ছে কর্মসংস্থান তৈরি করা। এতো মানুষ – কতো তাদের চাহিদা। কলকারখানা, চাকরি-বাকরি কেমন তৈরি করছে তা জানার উপায় নেই। শুধু দেখি যে নিজ দলের কর্মীদের টেন্ডারবাজ বানাচ্ছে। হঠাৎ করে সাত্তার ভাইয়ের উপর আমার দৃষ্টিভঙ্গি পালটে গেল। আমেরিকার কালোদের পাড়া ওকল্যান্ডের আবাসিক এলাকার আশপাশে গ্রোসারি স্টোর খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। অথচ ঠিকই লিকারের দোকান পাওয়া যায়। এমনি এমনিই তো কালোরা আর ড্রাগ-এডিক্ট, এলকোহলিক হয়ে উঠেনা। বাংলা ছবির মতো মাথার মধ্যে একটা সংলাপ ঘুরেফিরে বাজতে লাগলো, ‘ কেউ টেন্ডারবাজ হয়ে জন্মগ্রহণ করে না। সমাজ তাকে টেন্ডারবাজ বানায়।’
আচ্ছা, সাত্তার ভাইয়ের সম্বন্ধি তো উনার টাকা মেরে দিয়েছিলেন। উনার স্ত্রীকে এরজন্য কি কোন হাঙ্গামা পোহাতে হয়?
“আপনার সম্বন্ধি টাকা মেরে দেওয়াতে আপনার বৌ নিশ্চয় একটা নাজেহাল অবস্থার মধ্যে পড়েছে? ”
“ওর তো কোন দোষ নাই। এর জন্য ওকে আমি কিছু বলি নাই।”
আমাদের দেশের ছেলে গুলো কোমলে কঠিনে মেশানো। সাধেই কি এরা বেস্ট পীস কিপার বাহিনীর সদস্য হয়? মালয়েশিয়ার মেয়েদের কাছে নাকি বর হিসেবে এদের খুব ডিমান্ড।


গাড়ির চালক হিসেবে রশিদ ভাই ফুলটাইম কাজ করলেও, সাথে আবার পার্ট টাইম বিজনেসও করেন। ডেসটিনি গ্রুপের প্রোডাক্ট বিক্রি করেন। এই গ্রুপের প্রোডাক্টের জন্য কোন বিজ্ঞাপন হয় না, কোন নির্দিষ্ট বিক্রয় কেন্দ্র নেই। পিরামিড আকৃতিতে একজন থেকে ক্রমশ হাজার হাজার এজেন্ট তৈরি হয়। প্রোডাক্ট বিক্রি করতে পারলে এজেন্ট কমিশন পান। প্রথম প্রথম যখন আমেরিকায় এসেছিলাম তখন ওয়ালমার্ট ধরনের রিটেইল শপে গেলে প্রায়ই দেখা যেত হাসি হাসি মুখে কোন ভারতীয় এগিয়ে আসছে। ‘তোমার স্কার্টটা সুন্দর’ এই ধরনের কথা দিয়ে শুরু করে শেষ পর্যন্ত কোন প্রোডাক্ট গছিয়ে দিতে চাইতো। এরপর থেকে কোন অপরিচিত ভারতীয়র হাসি হাসি মুখ দেখলেই আমরা সটকে পড়তাম। ডেসটিনি বোধহয় বাংলাদেশেও এই বিজনেস পদ্ধতি চালু করেছে। রশিদ ভাই এর একজন এজেন্ট। বললেন ভালই ইনকাম করেন। দুইছেলের পড়াশোনার পেছনে অনেক খরচ করছেন। সময় পেলেই ফোন করে ছেলেদের খোঁজ খবর নিচ্ছেন। নিজেও খুব ফিটফাট থাকেন। দেখলে মনে হবে কর্পোরেট অফিসে চাকরি করেন। কথাবার্তা খুব পরিশীলিত এবং যথেষ্ট ব্যক্তিত্বসম্পন্ন। আমাকে একবারও কোন প্রোডাক্ট কিনতে বলেননি। গাড়িও খুব দক্ষ হাতে চালান। সবচেয়ে কম সময়ের মধ্যে কোন জায়গায় পৌছে দিতেন।
তবে রেন্টে কারের চালকদের ডেসটিনি নয় বরং স্বয়ং আজরাইলের এজেন্ট বলে মনে হয়েছে। বিপদজ্জনক বাঁকে অনায়াসে তারা সামনের গাড়িকে টপকে যাচ্ছে। তীব্রগতিতে বিপরীত দিক থেকে আসা আরেকটি গাড়ির সাথে যখন সংঘর্ষ প্রায় অনিবার্য ঠিক তখনই আবার নিজের লেনে ফিরে যাচ্ছে। আমরা এরকম অনেক ভিডিও গেম খেলেছি। কিন্তু বাংলাদেশের হাইওয়েগুলোতে চলার সময় নিজেরাই সেই বাস্তব ভিডিও গেমের অংশ হয়ে গিয়েছিলাম। কেন তারা এমন করে? গত কয়েক বছরের পরিসংখ্যাণ পর্যালোচনা করে আমেরিকাতে পলিসি মেকাররা দেখতে পেলেন যে সড়ক দুর্ঘটনার জন্য টিনএজ চালকদের একাংশ বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। এবং দুর্ঘটনার কারণ তারা গাড়ি চালানোর সময় ফোনে টেক্সটিং করে। যখন তাদের এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলো তখন তাদের উত্তর ছিল যে তাদের জেনারেশন জানে না যে গাড়ি চালানোর সময় টেক্সটিং বা সেল ফোন ব্যবহার করা বিপদজ্জনক। তখনই পলিসি মেকাররা আইন করে চলন্ত গাড়ির চালকের জন্য সেলফোন এবং টেক্সটিংকে নিষিদ্ধ করা হয়। খোঁজ নিয়ে দেখা যাবে বাংলাদেশে যারা বিপদজ্জনকভাবে গাড়ি চালাচ্ছে তাদের অনেকেই আইন বা রক্ষণাত্মক ড্রাইভিং সম্পর্কে কোন জ্ঞান রাখেন না। আর প্রবাসে আমরা যারা প্রতিনিয়ত মাইলের পর মাইল, ঘন্টার পর ঘন্টা ড্রাইভিং করছি তারা জানি যে দূর পাল্লার ড্রাইভিং ব্যাপারটা কতো বিরক্তিকর। তার উপর গাড়িচালকের উপর যদি কোন চাপ থাকে, বা সাইড-ড্রাইভিং করা হয় তাহলে সেটাও চলমান গাড়ির বিপদের ঝুঁকি বাড়ায়। গতবছর বাংলাদেশে থাকার সময়ই তারেক মাসুদ আর মিশুক মুনীর সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। এরপর যে কয়দিনই দেশে ছিলাম মনে হতো চারপাশে যেন ঝুলছে শোকের কালো পর্দা।


এবার আসি হঠাৎ করে হিরো বনে যাওয়া রেলমন্ত্রীর এএসপির গাড়িচালক আজমের কাহিনীতে। কার্যকারণ যাইহোক মোট কথা চালক আজম একটি দুঃসাহসিক ধরনের ভালো কাজ করেছেন। ছোটবেলায় নিজাম ডাকাতের গল্প শুনেছিলাম। ডাকাতি ছিল নিজামের পেশা। যেদিন সে জানতে পারে যে অপরাধ সে করছে তার ভাগিদার কেউ হবে না। না পুত্র-কন্যা, না স্ত্রী এমনকি জন্মদাত্রী মাতাও। নিজামের বোধদয় ঘটে। তারপর সে ডাকাত থেকে পুরো দরবেশ বনে যায়। এই গল্পে নিজাম একজন হিরো। শেষে তো মহাপুরুষ। তবে গল্পের আর্দশটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। হোক তা পাঁকে পড়ে কিংবা ঘটনার আবর্তে – কেউ যদি তার হারানো মনুষত্য খুঁজে পায় তাহলে সমাজ তাকে স্বাগত জানাতে দ্বিধাবোধ করে না। তাই চালক আজমের পক্ষাবলম্বন করতে কোন দ্বিধাবোধ নেই। এই ঘটনায় বেশ কজন প্রত্যক্ষদর্শী ছিল। তারপর বর্তমানের এই টেকনলজির যুগে কারও ফোনের কললিস্ট দেখলেই কার সাথে কার যোগাযোগ হয়েছে তা পরিষ্কার ভাবে ফুটে উঠে। তবে সবচেয়ে বড় প্রমাণ রেলমন্ত্রী নিজে। বারে বারে সাংবাদিকদের সামনে এসে তার ‘আমি কলা খাই না’ – টাইপের বয়ান অতি প্রকটভাবে চোখে ধরা পড়ে। দুয়ে, দুয়ে চারের মতো যেখানে অপরাধী কে তা বুঝতে কোন গ্রে-ম্যাটারই খরচ করতে হয়না, সেখানে ‘গনতন্ত্র’এর বাহানা দিয়ে অপরাধীরা পার পেয়ে যাচ্ছেন। এসব ঘটনা নাকি সাজানো হয়েছে গনতন্ত্রকে বিপন্ন করতে। আমরা গনতন্ত্রের নতুন সংগা শিখলাম। রাজনিতিবিদরা দুর্নীতি করলে তা মেনে নিতে হবে। নইলে গনতন্ত্র বিপন্ন হবে। এবার দেখি এইসব রাজনীতিবিদেরা আমাদের কি রকম গনতন্ত্র দিচ্ছে। এরজন্য আমাদের কিছু খুচরা হিসেব করতে হবে। রেলের নিয়োগ বানিজ্যের জন্য যারা ঘুষ দিচ্ছিলেন তারা কমবেশি নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের। তাদের জন্য তিনলাখ টাকা যোগার করা কম কথা নয়। হয়তো অনেকেই ঘরের মহিলাদের সোনার যে যৎসামান্য গয়না ছিল তা বিক্রি করে দিয়েছে, কেউ কেউ শেষ সম্বল গ্রামের জমি বিক্রি করেছে, কিংবা কেউ কেউ চড়া সুদে ঋণ নিয়েছে। এখন পদের সংখ্যা সাত হাজারকে তিন লাখ দিয়ে গুণ করলে কত হয়? অনেক টাকা তাই না। অন্যদিকে আমরা দেখতে পারি রেলমন্ত্রির ছেলে পাঁচ কোটি টাকা দিয়ে টেলিকোম্পানির লাইসেন্সের অধিকারী হয়। সোজা হিসাব – গরীব আরও গরীব হচ্ছে আর বড়লোক আরও বড়লোক হচ্ছে।

রেলমন্ত্রী সুররঞ্জিত তো এই ঘটনার পর থেকেই কুরঞ্জিত হয়ে গেছেন। এখন শুধু রক্তরঞ্জিত হবার অপেক্ষায়। না হয়ে উপায় কি? চালক আজম গুম না হলে যে সব তথ্য ফাঁস হয়ে যাবে।

১,৮৬৯ বার দেখা হয়েছে

১৪ টি মন্তব্য : “চালকের বাংলাদেশ, বাংলাদেশের চালক”

  1. নাফিজ (০৩-০৯)

    আপনার লেখায় ইসলাম ভাই, রাস্তায় ঝালমুড়ি বেচতে থাকা বুড়ো চাচা থেকে শুরু করে আমি, সবার একই প্রশ্ন-

    বাংলাদেশের মূল সমস্যাটা কোথায় ?

    ভাবতে শেখার পর থেকে শুধু ভাবছি, খুঁজছি। আদতে কোন উত্তর আছে কিনা- তাও জানিনা।

    অনেকগুলো প্রসঙ্গ দেখলাম লেখাটায়। তাই ঘুরে ফিরে এই কথাটাই আবার মনে আসলো ।


    আলোর দিকে তাকাও, ভোগ করো এর রূপ। চক্ষু বোজো এবং আবার দ্যাখো। প্রথমেই তুমি যা দেখেছিলে তা আর নেই,এর পর তুমি যা দেখবে, তা এখনও হয়ে ওঠেনি।

    জবাব দিন
  2. তানভীর (২০০১-২০০৭)

    আপু, লেখার মধ্যে কয়েকটি বিষয় উঠে এসেছে যেটা সম্পর্কে আপনি আগেই বলেছেন।
    প্রথমত, রাজনৈতিক দলগুলোর প্রসঙ্গে বলি, আমাদের দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের প্রতি দেশের আমজনতা সম্পূর্ণভাবে আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। তাছাড়া বাকি শরিকী দলগুলো ও এই দুই দলের সাথে যোগ দেওয়ারপর নিজেদের নীতিতে অটুট থাকছে না। যদিও মুখেমুখে গণতন্ত্রের বুলি শুনালেও কাজে তার কোন প্রতিফলন নেই। আর যে দু-চারজন জনগণের কথা ভাবছে যেমন, তাদেরকে শেষ পর্যন্ত দল ছাড়তে হচ্ছে। বি . চৌধুরী বা সোহেল তাজ এর কথা আমাদের সবার ই কম বেশী জানা আছে।
    ধর্মভিত্তিক রাজনইতিকদল সম্পর্কে আমার মনে হয় দেশের মানুষের বিশেষ করে তরুণ সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন এসেছে। সময়ের সাথেসাথে মানুষ তাদের ভণ্ডামি চিনতে শিখেছে। পূর্বে দেশের সহজ-সরল মানুষের ধর্মীয় আবেগ কে নিয়ে যত সহজে তারা খেলা করেছে সময়ের সাথে তার দিক পরিবর্তন হচ্ছে।
    টেন্ডারবাজদের কথা শোনার পর চোখের সামনে আমার এক নানার কথা মনেপড়লো। ভদ্রলোক একটি সরকারী অফিসের প্রধান কর্মকর্তা ছিলেন। সেবার তার আন্ডার এ বড় একটি প্রোজেক্ট ছিল। যথারীতি সেই পুরনো দৃশ্য রাজনৈতিক নেতার অস্ত্রের মুখে তিনি ও অসহায়। শুনে বললাম এ আর এমনকি।তবে তার কথা শুনে ভাবলাম নিজের ক্ষেত্রে হলে কি করতাম।
    শেয়ারটা এত ভাল বুঝিনা। তবে মানুষের নিঃস্ব হবার কথাশুনে মনে হয় কখনও " এত আকাশ ছোঁয়ার ইচ্ছা তো নিজের পায়ের দিকে খেয়াল নাই কেন?"
    মন্ত্রীদের দুর্নীতির কথা তো জন্ম থেকেই শুনছি ,আগে দাদু- নানু দের কাছে রূপকথার গল্পশুনে আমরা মজা পেতাম, রাক্ষস আর দানবের কথা শুনে গায়ের লোম খাড়া হয়ে যেত।এখন মনেহয় চোখের সামনে সেইসব দেও- দানব। তাদের চলাচল রাজপুত্রদের মত। দলথেকে বলা হচ্ছে এটা ষড়যন্ত্র। সত্যি কি আজব দেশ!!!!!!
    সড়ক দুর্ঘটনা এখন তো মনেহয় আমাদের অতি পরিচিত ব্যাপার হয়ে এসেছে। আমার মনে হয়, যে সকল চালক আছে তাদেরকে তদারকি করে এবং ভাল প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের দক্ষতা বাড়ানো যেতে পারে।
    খুব ভাল লাগল পড়ে। সবশেষে মনে হয়,পরিবর্তন আমাদের আসবে তবে তখন মনেহয় দেয়ালে পিঠ ঠিকে যাবে।


    তানভীর আহমেদ

    জবাব দিন
    • ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

      আসলে রাজনীতি একটি হতাশাবাদী টপিক। এইটা নিয়ে লিখতে গেলে হতাশা ছাড়া আর কিছুই দেখা যায় না। পৃথিবীর আরও অনেক উন্নয়নশীল দেশ আছে তাদের সাথে বাংলাদেশের পার্থক্য এই যে বাংলাদেশীদের ব্যক্তিগত অর্জন অনেক বেশি। আমরা একটি প্রমাণিত বুদ্ধিমান জাতি। দুঃখ এই যে নিজ দেশের সীমানার মধ্যে আমাদের সে অর্জন দেখাতে অনেক বাঁধা পেরুতে হয়।


      “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
      ― Mahatma Gandhi

      জবাব দিন
  3. সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

    শান্তা,

    বাংলাদেশ নিয়ে তো সবই সবাই জানে বোঝে। ওকলাহোমার গল্প শুনলাম এক ইরানী বংশদ্ভূত ব্যবসায়ীর মুখে। ওদের বাবা-চাচারা এখানে জমি ও বাড়ির ব্যবসা করে। কখনো কখনো বাইরের কেউ ভালো ব্যবসা নিয়ে এলে তাকে নির্দিষ্ট ব্যবসার পার্টনার করে।

    জিজ্ঞাসা করেছিলাম, এইরকম পার্টনাররা কেউ দুইনম্বরী করে না? বা তোমাদের ঠকানোর চেষ্টা করে না? ও জবাবে বললো, এ কারণেই তার বাবা ওকলাহোমা সিটির বাইরে তাদের ব্যবসা প্রসারের কোনো চেষ্টা করে না। জমি-জমা কিনতে গেলে কোনো সমস্যা দেখলে তার বাবা প্রতিপক্ষকে রীতিমতো হুমকি দেয়, বাবাজি এখানে সব জাজ আমার পরিচিত। আমার সাথে উল্টাপাল্টা করে পার পাবে না!

    কি অদ্ভূত না! ক্ষমতার দৈরাত্ম শুধু বাংলাদেশের একার বিষয় নয়। আমেরিকাতেও এটাই সমান সত্য।


    "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

    জবাব দিন
    • ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

      সানা ভাই,
      আপনি এখন ওকলাহোমাতে? ক্যালিফোর্নিয়াতে এসে বেড়িয়ে যান। কবে আসবেন বলেন?

      বিখ্যাত "গড ফাদার" ছবিটা তো আমেরিকার প্রেক্ষাপটেই লেখা। বাংলাদেশ বলেন আর নাইজেরিয়া বলেন সবই তো সেই গড ফাদারের প্রতিচ্ছবি। শুধু আমেরিকা নয় যে কোন প্রবাসেই গড ফাদার খুঁজে পাবেন। এখন গড ফাদারদের কথা বাদ দিয়ে সাধারণ জনগনের কথাই আসি। আমার এই লেখারই একটা অংশ এখানে তুলে দিচ্ছি যেখানে আমেরিকার কথা লেখা আছে

      ওকল্যান্ডের আবাসিক এলাকার আশপাশে গ্রোসারি স্টোর খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। অথচ ঠিকই লিকারের দোকান পাওয়া যায়। এমনি এমনিই তো কালোরা আর ড্রাগ-এডিক্ট, এলকোহলিক হয়ে উঠেনা। বাংলা ছবির মতো মাথার মধ্যে একটা সংলাপ ঘুরেফিরে বাজতে লাগলো, ‘ কেউ টেন্ডারবাজ হয়ে জন্মগ্রহণ করে না। সমাজ তাকে টেন্ডারবাজ বানায়।’

      এখন আমি নিজে তো বাংলাদেশরই। আমার আত্মীয়-স্বজনরা যারা বাংলাদেশে আছে তারা ভালই আছে বলব। এবং আমেরিকাতে আমরাও ভালো আছি সো ফার। তাহলে যে জীবন আমার না সে জীবনের কথা লিখে বদা্র্রড হচ্ছি কেন?
      প্রথমেই আমাদের শিক্ষা ব্যাবস্থার কথা ধরি। আপনাদের সময় হয়তো আপনারা দেখেছেন কিভাবে ভার্সিটির পরিবেশ বদলে গেল। আমাদের সময়ও আমরা দেখেছি বুয়েটে কিভাবে রাষ্টীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পরিবেশ নষ্ট করলো। আমি হয়তো রাজনীতির থেকে ছাত্রদের দোষই বেশি দেব। কারণ নাই ক্রিকেট/ফুটবল খেলা দেখবে বলে বুয়েট অটো। তারা সারা দেশের প্রেক্ষাপটে দেখছে সারা দেশই স্লো - শুধু শুধু নিজেদের ফাস্ট দৌড়িয়ে লাভ কি? এখন ধরেন আমার এই এলাকাতেই ওবামা আসবে কোন ফান্ড রাইজিং ডিনার করতে। টিকিটের দাম $২৫০০। দেখা যাবে ২০০০ ভারতীয় সে ডিনারে অংশগ্রহণ করছে। একজন বাংলাদেশীও নেই। তাহলে পলিসি মেকিংএর সময় ওবামা ভারতীয়দের সেবা করবে না কেন? আবার ভারতীয় উন্নত অবস্থায় চলে যাচ্ছে তাদের শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য। সেখানে দেখছি যে শুধু মাত্র শিক্ষাব্যবস্থা এবং আন্তর্জাতিক মানসিকতার অভাবে আমাদের দেশের মানুষ বেশিদূর যেতে পারছে না।

      গড়পত্তা একজন আমেরিকানের একটা চাকরি, গাড়ি, বাড়ি, গার্লফ্রেন্ড - এসব জীবনে কয়েকবার বদলাতে পারলে হয়তো তারা নিজেদের পরিপূর্ণভাবে - আর ভ্যাকেশন এবং বাস্কেটবল দেখার ফুসরত মিললেই তারা খুব সুখী। বাংলাদেশীদের জীবনও এর ব্যতিক্রম নয়।

      আমি যদি ইংরেজি পাঠকের জন্য লিখি তাহলে আমার বিষয়বস্তু অন্যকিছু হবে। বাংলায় লিখছি তাই দেশের প্রেক্ষাপটে লিখছি। কেন লিখছি সেটার উত্তর হলো স্বভাব।


      “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
      ― Mahatma Gandhi

      জবাব দিন
  4. মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

    এই লেখাটা বেশ গুছানো, আপনার অন্য সব পোষ্টের মতোই। সবথেকে ভালো লেগেছে, আপনি রাজনীতি কিবাভে আম-জনতাকে দুর্নীতির চক্রে আবদ্ধ করে ফেলে তা'র একটা বাস্তব বর্ণনা।


    There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

    জবাব দিন
  5. রিদওয়ান (২০০২-২০০৮)

    আমাদের সমস্যাটা কী তা বোঝার চেষঠা করছিলাম আপনার লেখাটা পরার সময়। আসলেই তো, আমি নিজেও জানি না যে আমাদের মূল সমস্যা বলতে কিছু আছে কিনা নাকি সমস্যা অনেক। আর লেখার জন্য :clap:

    জবাব দিন
  6. Saif (95-01)

    🙂 খুব শুন্দর হয়েছে লেখা টা। দেশের সমসা আমার কাছে মনে হয় আমরা আমাদের মুল্লবধ হারান কেই মনে করি। শিখা বলতে আমরা বই পরা বুঝিয়ে থাকি কিন্তু শেটা কে জিবনে বাবহার করাটা অনেক Important. Custom etiquette এখন আমরা কয়জন Follow করি। আমরা ই আমাদের Problem. ভুল থেকে মানুশ শিখখা অরজন করে কিন্তু আমরা আমাদের ভুল টা শিকার করা টাও ভুলে গিয়েছি।। তা হলে কি এর সমাধান। প্রস্ন থেকেই যায় ? আর উত্তর আমাদের কাছেই


    Saif

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।