ফলাফলঃ জন্মদিন বিষয়ক পোস্ট

সিসিবির জন্মদিনে পোস্টের বন্যা। পোস্টাচ্ছে শীতনিদ্রায় থাকা সব পুরোনো বনেদী সিসিবিয়ানগণ। ব্যস্ততা কিম্বা অভিমানে দূরে থাকা এইসব পুরোনো বন্ধুদের দেখে নিশ্চয় সিসিবি আহ্লাদিত।

সবসময় যারা পাবলিকের কাছে উন্মুক্ত থাকেন তারা নিজেদের জীবনের অনেক বড় ঘটনা চুপিচুপি সারতে পছন্দ করেন। আমাদের সিসিবির সেই একই অবস্থা। সিসিবি প্রাঙ্গনে প্রতিদিনই উৎসব হচ্ছে। নতুন মানুষের আনাগোনা। কমেন্টের ছড়াছড়ি। কাদা ছোড়াছুড়ি? কক্ষনই নয়। আমাদের একটা মানসম্মান আছে না? সিসিবি মুচকি মুচকি হাসে আর দেখে। দেখে আর ভাবে। ভাবে আর যাবর কাটে। যাবর কাটে আর পাশে ফিরে। তারপর যখন বলতে যাবে, ‘কইরে গেন্দুর মা —‘ তখনই তার মনে হয় সে একা। অজস্র সন্তান-সন্ততি নিয়ে সে একা। সমুদ্রের বাতিঘরের মতো। কিম্বা কোন বিপত্নিক অথবা বিধবার মতো, কিম্বা যে কোন একাকী মানুষের মতো। তাকে একা থাকতে হয় সবার ভরসার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে।

যাই হোক লেখার শুরুতেই ঠিক করছি প্যাঁচাল পারুম না। তাই এখানেই সমাপ্তি।
যাওয়ার আগে সিসিবির জন্মদিন উপলক্ষ্যে আসা পোস্টগুলোর স্বঘোষিত বিচারক হিসেবে নিজেকে আবির্ভূত করলাম। নীচে ফলাফল দেওয়া হলো।

আহসান আকাশ (১৯৯৬-২০০২)ঃ আকাশের অনেক লেখা পড়ি। কিন্তু কিছু বুঝি না। কারণ সে খেলাধূলানিয়ে বেশি লেখে। ছবি দেখে মনে হলো নতুন বিয়ে করেছে। সিসিবিতে একটা অলিখিত নিয়ম থাকা উচিত। বিয়ে করলে লোকজন একটু ছবিটবি দিয়ে আমাদের একটু জানান-টানান দিবে। আমরাও একটু ঘটা করে বধূবরণ করলাম।
আকাশের প্রোফাইলে রোমান্টিক ছবি তারপর আবার ফুট্টুশ কৌতুক। যাইহোক অনেককিছু বলতে গিয়েও বললাম না। বড়আপাজনিত দূরত্ব বজায় রাখলাম।
ফলাফলঃ ফুট্টুশ

টিটো রহমান (১৯৯৪-২০০০)ঃ এডের মানুষ। খুব ব্যস্ত বোধহয়। তাই এড দিয়েই লেখা শুরু। সিসিবিতে ঢুকেই দেখতাম সবাই মিস্টি খাওয়া খাওয়ি করে। কেন করে বুঝতাম না। পরে যখন বুঝলাম তখন আর কেউ মিস্টি খায় না। বউ কথা কও পাখীরা বোধহয় তাদের কথা লোকজন বুঝে গেলে ডাকাডাকি থামিয়ে দেয়। টিটোর লেখার শেষে সুন্দর ছন্দ। পাঠক এরকম আরো ছন্দ দেখতে চায়।
ফলাফলঃ মিস্টিসহ ফ্রীজ

কামরুলতপু (৯৬-০২)ঃ ছেলেটা সবসময়ই এমন লেখা লেখে যা মনকে ষ্পর্শ করে। মনে আছে তপুর আপুসোনা বিষয়ক লেখাগুলো পড়ে আমার একটু অনুশোচনা হয়েছিলো। আমার দুজন ছোটভাই আছে। মনে আছে ক্যাডেট কলেজ থেকে বেড় হয়ে আমি খুব কড়া আপু ছিলাম যাতে তাদের কোনরকম লেখাপড়ার নড়চড় না হয়। আমার উদ্দেশ্য সফল হয়েছিলো তবে আরেকটু নরমশরম হলে হয়তো আমারও সেরকম একটা আপুসোনা ইমেজ গড়ে উঠতো।
সময়ের স্বাভাবিক পরিক্রমায় অল্পকয়েকজনের প্রাইভেট সিসিবি অনেকের পদাভারে পাবলিক হয়ে যাওয়াতে তপুর মনে কী একটু টকঝাল অভিমান?
ফলাফলঃ আপুসোনাদের সর্বোত্তম ভালবাসা

ফয়েজ (১৯৮৭-১৯৯৩)ঃ সিসিবিতে যখন আসি তখন পিচ্চিদের ভীড়ে আমার একটু কাছাকাছি সময়ের ফয়েজকে দেখে ভরসা পেয়েছিলাম। পরে এই ছেলেটা আমারে খুব কষ্ট দিছে। এতো ভালো লিখে কেন? আর এতো কমই বা লিখে কেন? সিসিবিতে ফয়েজ এখন কিম্বদন্তীর পর্যায়ে চলে গেছে। না লিখলেও পোলাপান খালি সময়-অসময়ে ফয়েজের উদাহরণ দেয়। ইসসিরে তাকে অমর করে দিয়েছে। এই পোস্টটা অবশ্য সেরকম কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা।
ফলাফলঃ ইসসিরে

কামরুল হাসান(১৯৯৪-২০০০)ঃ খুব দ্বিধাদ্বন্ধ মনে যখন সিসিবিতে জীবনের প্রথম কমেন্ট লিখলাম, এই ছেলেটা আমারে এমন আপন করে সম্বাষণ জানালো যে এক ফুৎকারে আমার সব জড়তা কেটে গেলো। মনে হয়না সিসিবিতে এখন এরকম কেউ আছে। হয়তো তার আর দরকার নেই। সিসিবি এখন তার আপন গতিতে চলতে শুরু করেছে। হয়তো কামরুলও। নইলে আর এখন দেখতে পাওয়া যায় না কেন? ছেলেটার বন্ধুদের লেখা পোস্ট পড়ে সবারই মনে হবে – ইশ আমি যদি এই বন্ধুতালিকায় থাকতে পারতাম! তবে এইবার কপি-পেস্ট মারা পোস্টের জন্য তোমার ব্যাঞ্চাইলাম।
ফলাফলঃ ড়ক্কেরে

রবিন(১৯৯৪-২০০০)ঃ আমার কাছে রবিনের ইমেজ অনেকটা এরকম – একটা খুব ধোপদুরস্ত ফিটফাট ছেলে। তার তৈরী নিজস্ব ভাষাশৈলী তো এখন সিসিবির সম্পত্তি। দেখি নতুন আসা একজন সিসিবিয়ানও রবিনীয় ভাষায় কমেন্ট করছে। এই পোস্টে খুব সুন্দরভাবে পুরোনো সিসিবির আবেদন প্রকাশ পেয়েছে। লেখার আবেগ আমাকে এমন ভাবেই ষ্পর্শ করেছে যে তার চেয়ারে বসে থাকতে পারছি না।
ফলাফলঃ পিরা গেলাম

তানভীর(১৯৯৪-২০০০)ঃ টুম্পা যদি তেড়েমেড়ে না আসে তবে নির্দ্বিধায় আমার মতামত ব্যক্ত করতে পারি এই বলে যে তানভীর একটা নির্ভেজাল ভালোছেলে। অনেকদিন সিসিবিতে অনুপস্থিত। কিন্তু আগে সব পোস্টেই তানভীরের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যেতো। অনেকদিন পর লেখা পোস্টে বিজয়ের মাসের কথা বলতে ভুললো না। তবে নিজের সম্পর্কে ভাবটা কেমন জানি হতাশাচ্ছন্ন। হয়তো অতিরিক্ত গ্রে-ম্যাটেরিয়ালের চাপ, কে জানে। তবে আমি লেখাটা থেকে এই বিজয়ের মাসে প্রানবন্ত হয়ে বিজয়ী হওয়ার উৎসাহ পেলাম।
ফলাফলঃ জটিল

জুনা(৯৫-০১)ঃ কী আশ্চর্য কিছুতেই জুনায়েদ কবীর লিখতে ইচ্ছে হলো না। এটাই সিসিবির যাদু। ব্যক্তিগত দুঃখ কাটিয়ে আবার সিসিবিতে ফিরে আসা। সুন্দর লেখা আর কমেন্টকারী জুনার নতুন পোস্ট দেখতে খুব ভালো লাগলো। জনগন বোধহয় নতুন ওয়েস্টার্নের অপেক্ষায় আছে। এই পোস্টটা সম্পর্কে কী বলা যায় তা ভাবছি।
ফলাফলঃ জাঝা

আমিও তালেতালে মাতব্বরীটাইপ পোস্ট লিখে নিজের ক্ষুধামান্দ্য রোগটাকে সারিয়ে নেবার চেষ্টায় আছি।

পরিশেষে সবাইকে জন্মদিনের শুভেচ্ছে। সুন্দর আগামীতে ভরে উঠুক আমাদের সবার জীবন।

৯০৬ বার দেখা হয়েছে

৫০ টি মন্তব্য : “ফলাফলঃ জন্মদিন বিষয়ক পোস্ট”

  1. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    রেজাল্ট একটা পাইলাম, কিন্তু ভাল পাইলাম না খারাপ পাইলাম বুঝতে পারলাম না 🙁

    আমি আমার গত পোস্টে সুখবরটা সিসিবিতে জানিয়েছিলাম। আর যা মনে আসে বলে ফেলতে পারেন, আমরা আমরাই তো 😛


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  2. আমিন (১৯৯৬-২০০২)

    হইবো না খেলুম না। আমাগো কাইয়ুম ভাই শীত নিদ্রা থেকে বাইর হইয়া কী লম্বা লম্বা কমেন্ট করলো , তার উপর সুচিন্তিত মতামত আশা করেছিলাম। সেটার অনুপস্থিতিতে শান্তাপুর পোস্ট শূন্যতায় ভুগেছে। আর ফয়েজ ভাইয়ের ছোট পোস্টের এত বড় সমালোচনা বাহুল্য দোষে দুষ্ট।
    ফলাফল: ভাল্লাগছে

    জবাব দিন
    • ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

      তোমার প্রোফাইলের ছবিটাও বদলে দাও। ছবিব্লগ তো এখনও পেলাম না।
      তোমার কমেন্ট বিবেচনা করে ভাবছি কমেন্টকারীদেরও বিচারের সামনে দাড় করাবো। ফয়েজকে সবাই মাথায় নিয়ে নাচে। আমিও সেই প্রথা বলবৎ রাখলাম। এই আর কি।
      ফলাফলঃ আইনের চোখে সবাই সমান না।


      “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
      ― Mahatma Gandhi

      জবাব দিন
    • ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

      ভালো আছি বইনডি। নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ডিসেম্বরের শেষ পর্যন্ত একটা হুড়াহুড়ি ভাব থাকে। বাসায় মেহমান আসে। আমরাও ঘুরতে যাই। বাচ্চাকাচ্চার লেখাপড়া, টেস্ট। আবহাওয়া গুমোট। ক্ষুধামান্দ্য, অতিভোজন। ইত্যাদি, ইত্যাদি।
      ফলাফলঃ মাথার মধ্যে লেখাগুলোর চিল্লাচিল্লি।


      “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
      ― Mahatma Gandhi

      জবাব দিন
  3. জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

    শান্তাপু, কোন কারন নাই...তাও আপনার লেখা পড়ে মনটা কেমন আর্দ্র হয়ে গেল। সম্ভবত আপনার মমতাময় কথাগুলোর জন্যই...


    ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

    জবাব দিন
  4. কামরুলতপু (৯৬-০২)

    লেখটা ফলাফলের দিকে না গিয়ে যদি ২য় প্যারা থেকে নিজের গতিতে চলত অসাধারণ একটা লেখা হত। ফলাফল আপু অন্য আরেকটা লেখায় দিতেন।
    ফলাফলঃ একটা সম্ভাবনাময় লেখার অপমৃত্যুতে আহা...
    ফলাফল গুলা দেখে আর নিজের নাম লেখা দেখে অসাধারণ লাগে। ভাগ্যিস একটা লেখা দিয়েছিলাম।
    ফলাফলঃ আত্মতৃপ্তি

    সময়ের স্বাভাবিক পরিক্রমায় অল্পকয়েকজনের প্রাইভেট সিসিবি অনেকের পদাভারে পাবলিক হয়ে যাওয়াতে তপুর মনে কী একটু টকঝাল অভিমান?

    এইটাতো আমাদের স্বপ্ন ছিল তাই বলে পুরানোরা স্বপ্নপূরণের আহ্লাদে শীতনিদ্রায় চলে যাবে তাই কি মেনে নেওয়া যায় আপু?
    ফলাফলঃ নস্টালজিক
    আর অবশেষে আমার লেখার ফলাফলে আমি যারপরনায় খুশি।

    জবাব দিন
  5. মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

    আপুর কাছে আমার মাইর পাওনা হইছে 🙁 যথারীতি ইমেইল দেরি করে পড়ায়(এইটা কোন অজুহাত না) এবং পরবর্তীতে লজ্জায় উনি একটা রিভিউ লেখতে দিছিলেন সেইটা লিখিনাই...এইবেলা মাপ চেয়ে নিলাম 🙁

    জবাব দিন
  6. কাইয়ূম (১৯৯২-১৯৯৮)

    শান্তা'পু, কেমন আছেন আপু?? বিচারক শান্তা'পুর প্রত্যাবর্তন…সিসিবিতে সবার প্রত্যাবর্তন…ভাল লাগতেছে 😀
    আর ফয়েজ ভাইকে এবার মাথায় তুলে নাচা ছাড়া আমাদের আর কোন উপায় ছিলোনাগো আপু, সিসিবিতে লগইন করেই তো দেখসেন মনে হয়, কাল সারাদিন উনি স্টিকি হয়ে ছিলেন 😛


    সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!

    জবাব দিন
    • টিটো রহমান (৯৪-০০)

      শান্তা আপার ব্লগ।
      ফলাফলঃ হাতে পাওয়া গেছে আকাশের চাঁদ!
      মন্তব্যঃ ফলাফল নিয়ে আবারো শান্তাপু ! ওয়াও! :guitar: :guitar: সবার প্রত্যাবর্তন স্টিকি হোক 🙂 🙂


      আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই

      জবাব দিন
      • আমিন (১৯৯৬-২০০২)

        শান্তা আপার ব্লগ।
        ফলাফলঃ হাতে পাওয়া গেছে আকাশের চাঁদ!
        মন্তব্যঃ ফলাফল নিয়ে আবারো শান্তাপু ! ওয়াও! সবার প্রত্যাবর্তন স্টিকি হোক 🙂 🙂
        পর্যালোচনা : স্টিকি করার আগে ফয়েজ ভাইকে কমান্ডার হিসাবে মনোনয়ন দেয়া হোক। (সম্পাদিত)

        জবাব দিন
        • সাবিহা জিতু (১৯৯৩-১৯৯৯)

          শান্তা আপার ব্লগ।
          ফলাফলঃ হাতে পাওয়া গেছে আকাশের চাঁদ!
          মন্তব্যঃ ফলাফল নিয়ে আবারো শান্তাপু ! ওয়াও! সবার প্রত্যাবর্তন স্টিকি হোক
          পর্যালোচনা : স্টিকি করার আগে ফয়েগ ভাইকে কমান্ডার হিসাবে মনোনয়ন দেয়া হোক।
          যাই ফিজ থেকে চমচম খাই গে 😛


          You cannot hangout with negative people and expect a positive life.

          জবাব দিন
          • ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

            জিতু আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়ার আশা করলে বেঁচে যাই। কারণ যেহেতু তা হাতে পাওয়া যায় না সেহেতু বস্তুত কিছুই পাওয়ার আশা থাকে না।
            ফলাফলঃ শান্তা আপার ব্লগ = এক রাশ শূন্যতা
            জিতুর ব্লগ = শাহী চিকেনের মৌ মৌ বাদশাহী গন্ধ


            “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
            ― Mahatma Gandhi

            জবাব দিন
  7. রাশেদ (৯৯-০৫)

    শান্তাপা অনেকদিন পর ব্লগ লিখছে 🙂
    ফলাফলঃ কতিপয় দুষ্ট বালক স্লোগান দিল- হায়, হায় একি হল শান্তা আপা ফিরে এল 😀
    অফটপিকঃ শান্তাপা কোথায় যেন কী একটা উপন্যাসের কথা শুনছিলাম মনে হয়, সেটার খবর কী 🙂


    মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : তানভীর (৯৪-০০)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।