অতীত বয়ান – কেউ যদি শুনতে চায় (নারীকথ্ন)

mom_dau[1]

নারীদের জন্য আলাদা দিবস কেন?

প্রথমেই একটা কুইজ দিয়ে শুরু করি।
এক গাড়ি দুর্ঘটনায় বাবা মারা গেলেন আর ছেলে মারাত্মকভাবে জখম হলো। অপারেশন থিয়েটারে রোগীর চেহারা দেখে ডাক্তার চিৎকার দিয়ে উঠলেন, ‘এটা তো আমার ছেলে।‘
কিভাবে সম্ভব?

এক – দুই – তিন – সময় শেষ।

যে নারীকে একজন পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে পরিগণিত করে তার পক্ষেই মুহূর্তের মধ্যে একজন মহিলা ডাক্তারের কথা ভাবা সম্ভব। সঠিক উত্তরদাতাদের অভিনন্দন। আর বাকী সবার জন্য উত্তর – এ কারণেই নারীদের জন্য একটা দিন সংরক্ষণ করা হয়েছে।

আমি কি নারীবাদী? মাথায় ঘুরপাক করা এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গুগল ঘেটে দুটো সংজ্ঞা বের করলাম। বলাবাহুল্য সবচেয়ে নরম দুটো সংজ্ঞা নিয়েছি।
তাকেই নারীবাদী বলে –
১। যে নারী নিজেকে যাচ্ছেতাই ভাবে ব্যবহার হতে দেয় না।
অথবা
২। যে জীবনের সর্বক্ষেত্রে স্বাধীনতা আর সমতাতে বিশ্বাস করে।

প্রথম সংজ্ঞা অনুযায়ী আমি একজন নারীবাদী। দ্বিতীয় সংজ্ঞা অনুযায়ী না। কারণ বোয়ামের শক্ত মুখ খুলতে গেলে এখনও নির্ঝরকে ডাকি। রান্নাঘরের উপরের তাক থেকে জিনিষ নামাতে গেলে কষ্ট করে টুলের সাহায্য না নিয়ে নির্ঝরের সাহায্য নিই। আবার হেসেলের কোন কাজেই নির্ঝরকে হাত দিতে না দিয়ে পুরোটা আমার নিয়ন্ত্রনে রেখেছি। সবাই নিশ্চয় ভাবছে মেয়েটা কতো পতিব্রতা। আসল রহস্য হলো এর থেকে সময়ে সময়ে বড় ফায়দা লোটা যায়। এই যেমন সেদিন নির্ঝর বললো, শান্তা তোমার গাড়ির সার্ভিসিং এর তারিখ পার হয়ে গেছে। এখনই যাও।
আমি উত্তর দিলাম, চুলায় মাছটা মাত্র বসিয়েছি। তুমি রান্নাটা দেখ, আমি যাচ্ছি।
তৎক্ষণাৎ পতির প্রতিত্তুর, না না। তুমি দেখ। আমিই যাচ্ছি।

আমার কাছে সমতার থেকে পরিপূরক শব্দটা আমার বেশি পছন্দের। গত বার বছর ধরে একটা ছেলের সাথে মোটামুটিভাবে শান্িতপূর্ণ সহাবস্থান করে আমার এই বোধোদয়। জীবন থেকে নেওয়া।


ক্যাডেট কলেজে থাকতে নিজেকে আমি যে আলাদা কিছু, মানে নারী জাতীয় কিছু একটা, এই অনুভূতিটা তেমন বোধ করিনি। অধিকাংশই বোধহয় আমার মতোই ছিল। বাইরের পৃথিবী একটু অপরিচিত লাগতো। এখন হয়তো ব্যাপারটা ডালভাত। কিন্তু একানব্বই সালের দিকে ইচ্ছে হলো বলে মেয়েরা ধুম করে ফুটপাথে ফুচকা খেতে বসে গেলাম কিম্বা সানরাইজের কাছে মিষ্টির দোকানে ঢুকে সেখানকার বেঞ্চ-টেবিলে আড্ডা দিতে শুরু করলাম – বিষয়টা আমাদের কাছে কিছু না মনে হলেও সমবয়সী নন-ক্যাডেট মেয়েদের কাছে ভ্রুকুটিতুল্য। দৈত্যকুলে প্রহçাদের মতো আমাদের অতীব রমণীয় ক্যাডেট ম একদিন বলল, আমরা যে এইসব খারাপ কাজ করছি তা ওর মামীকে আমাদের সাথেই কোচিং করা একটা মেয়ে বলে দিয়েছে। ম আবার ছিল ক্লাসের ফাস্ট-সেকেন্ড হওয়া ছাত্রী। জানি না এই কথা শুনেই কিনা রেজালট বেরুনোর পর পর সানরাইজে কোচিং করা মেয়েরা সব ধুপধাপ করে দেশের বাইরে চলে গেল। শুধু ম আর আমি রয়ে গেলাম এবং মকে অনুসরন করে আমিও একজন নারী হওয়ার চেষ্টা করতে লাগলাম। ম কতোটা পেরেছে তা জানি না তবে বুয়েট বাকী কাজটা করে দেয়।

আমাদের ক্লাস শুরু হয়েছিলো তিরানব্বইয়ের ২৬শে সেÌেটম্বর। সেই ৯৩ থেকে ৯৮ – বুয়েট থাকাকালীন সময়টাতে নিজেকে খুব বেশি নারী নারী বলে মনে হতো। বুয়েটে আমাদের ব্যাচে সাড়ে পাচঁশ ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে শুধু পঞ্চাশ জন মেয়ে। আগে পরে সব ব্যাচেই একই অবস্থা। সংখ্যালঘুরা এমনিতেই দৃষ্টব্য আর মেয়ে হলে তো কথাই নেই। বুয়েটটা ছিল বড্ড বেশি ছেলেময়।
এক স্যার ছিলেন একস-ক্যাডেট। জীবনে নাকি কখনও দ্বিতীয় হননি। একজন ভূতপূর্ব অর্থমন্ত্রীর নামে নাম। ক্লাসে দেখতাম মেয়েদেরকে খুবই অসম্মান করে কথা বলতেন। একদিন তো বলেই ফেললেন বুয়েটে মেয়েরা হচ্ছে ছেলেদের বিনোদন। কথাটা মনে পড়লে স্যারের উপর এখনও রাগ হয়। সেই স্যার শুধু যে নিম্ন মানসিকতা ধারন করতেন শুধু তাইই নয়, ক্লাসেও ঠিক সময়মতো আসতেন না, পড়াতেন না। শিক্ষকতার অধিকাংশ সময়ই ব্যয় করতেন নিজের ব্যক্তিগত উন্নয়নের কাজে। ফলস্বরূপ উনার ছিল নাকি সবচেয়ে বেশি পাবলিকেশনস। আর টপাটপ প্রমোশন। নিজের ধান্ধায় ব্যস্ত থাকা আরকি। সেই থেকে আমার ধারণা যারা নারীদের সম্মান করতে পারে না তারা মানুষ হিসেবেও তেমন ভালো না। অবশ্য শুধু এই একজন স্যারকে দোষ দিয়ে কী হবে? আমরা মেয়েরাই কী সবাই নিজেদের সম্পর্কে সঠিক সম্মানজনক ধারণা পোষণ করি?


আমার নানীরা ছিলেন দুবোন, একভাই। বৃটিশ আমলে ভাই গিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ায় পশু চিকিৎসার উপর পড়াশোনা করতে। নানীর ছোটবোন – ছোটনানী ১৯৪৫ সালে পাবনা এডোয়ার্ড কলেজ থেকে øাতক ডিগ্রি লাভ করার পর অবিবাহিত অবস্থাতেই চাকুরী করতে পশ্চিম পাকিস্থানের করাচীতে চলে যান। আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার উনার পাবনা এডোয়ার্ড কলেজ বিষয়ক একটা লেখায় ছোটনানিকে সে কলেজের প্রথম মুসলিম মহিলা গ্রাজুয়েট হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। মেট্রিক পরীক্ষা পাশের পর পরই নানীর বিয়ে হয়ে যায় ১৯৩৬ সালের দিকে। কথিত আছে নানা নাকি নানীর বাড়ির উঠোনে এসে নানীর সাথে বিয়ে না দিলে আত্মহত্যা করবেন বলে হুমকি দিয়েছিলেন। নানীর বাবা-মা তখন কলকাতা থেকে এসে সদ্যই পাবনায় আশ্রয় গড়েছিলেন। এলাকার একজন প্রভাবশালীর ছেলের এই হুমকিতে আর দেরী না করে তাড়াতাড়ি নানার সাথে নানীর বিয়ে দিয়ে দেন। তবে নানীকে কোনদিন শ্বশুরবাড়ি পাঠাননি। আমার নিজের নানীর ছিল খুব গল্পের বই পড়ার নেশা। খুব সুন্দর করে গল্প বলতে পারতেন। উনার হাত ধরেই আমার রূপকথার রাজ্যে প্রবেশ। আমার মা মূলত নিজের নানা-নানীর আদরেই বড় হয়েছেন। পঞ্চাশের দশকের প্রথম দিকে নিজের এলাকায় যখন মেয়েদের বিজ্ঞান পড়ার তেমন কোন সুবিধা ছিল না, সে সময়টাতে আম্মা মেট্রিকে বিজ্ঞান বিভাগে মেধা তালিকায় স্থান করেছিলেন। তবে আম্মার আসল প্রতিভা ছিল সাহিত্যে। খুব সুন্দর সুন্দর কবিতা লিখতেন।
আমার একমাত্র ফুফুকে একবার জিজ্ঞেস করেছিলাম, আচ্ছা ফুফু, আপনারা মাত্র একভাই একবোন। অথচ আপনি লেখাপড়া শিখলেন না, ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত পড়েছেন মাত্র আর আপনার চাচাতো বোনরা সেই পঞ্চাশের দশকে ঢাকার ইডেন কলেজে গিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। এর কারণটা কী?
ফুফুর উত্তর ছিল, সে সময় গ্রামে ক্লাস ফাইভের বেশি পড়ার সুযোগ ছিল না। লেখাপড়ার জন্য চাচাতো বোনদের চাচারা শহরে নিয়ে যায়। কিন্তু লেখাপড়া করতো বলে গ্রামের সবাই তাদের নিন্দা করতো। ফুফু দেখলো যে লেখাপড়া না করলে লোকে ভালো বলে। সেই লোকের ভালো শোনার জন্য ফুফু লেখাপড়া ছেড়ে দিলেন। নইলে বাপ-চাচারা নাকি অনেক জোর করেছিলেন।
ফুফু উনার জীবনটা অতোটা সম্মানের সাথে কাটাতে পারেননি। বিশেষ করে এই বৃদ্ধ বয়সে মনের মধ্যে অনেক দুঃখ নিয়েই দিন পার করতে হচ্ছে। লেখাপড়া শিখলে কি ফুফুর জীবনটা অন্যরকম হতে পারতো? তাই বা বলি কী করে। আমার আগের প্রজন্মে আম্মার দিককার মেয়েরা তো সবাই লেখাপড়া শিখেছিলেন। তারাও কি খুব একটা সুন্দর জীবন কাটাতে পেরেছিলেন? সবারই কিছু না কিছু নাগরিক সমস্যা ছিল।ইচ্ছা থাকা সত্বেও কেউ কোন ক্যারিয়ার করতে পারেননি। এমনকি ছোটনানির মেয়ে বিয়ের আগে আমেরিকা থেকে ডিগ্রি নিয়ে এসেও শুধু ঘর-সংসার করে গেছেন। এক ধরনের অতৃপ্ততা তাদের ঘিরে থাকতো। যখন নানা ধরনের বিশ্লেষনে মনের মধ্যে অনেক প্রশ্ন জাগতে শুরু করেছে তখন আর আম্মা নেই। শাশুড়িকে কাছে পেয়ে উনাকে প্রশ্ন করতাম। উনারও মোটামুটি একই অবস্থা। ষাটের দশকে ঢাকা ভার্সিটি থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে øাতক ডিগ্রি নিয়েছিলেন। প্রথম জীবনে বাবা পরবর্তী জীবনে স্বামী বাইরে চাকুরী করতে দেননি। প্রগতিশীল মানসিকতা দিয়ে তিন ছেলেমেয়ে মানুষ করেছেন। আজ তারা সুপ্রতিষ্ঠিত। কিন্তু খুব কাছ থেকে আমি উনার দীর্ঘঃনিশ্বাস অনুভব করতে পারি। উনি নিজের সে কথা আমাকে বলেন। অল্পবয়সে সাগর দেখতে চেয়েছিলেন, পারেননি। নিজের ঘরটাকে যেভাবে সাজাতে চেয়েছিলেন, পারেননি। নিজের জীবনটাকে শখ-আহçাদ দিয়ে যেভাবে পূর্ণ করতে চেয়েছিলেন, পারেননি। এরকম ছোটখাট থেকে শুরু করে আরো অনেক বড় না পারা তাকে এখনও ভোগায়। ভাল লাগুক আর না লাগুক শ্বশুরের নির্দেশনামা পালন করেই জীবনটা কাটিয়ে দিতে হয়েছে। তবে নিজের স্বপ্নগুলো ছড়িয়ে দিয়েছেন ছেলেমেয়েদের মধ্যে। আম্মাও বোধহয় তাই করেছিলেন। নইলে ভালোই তো ছিলাম। হঠাৎ করেই বা লিখতে শুরু করবো কেন?


গত বছর দুটো মুভি দেখেছিলাম। রেভোল্যুইশনারী রোড আর ম্যারলী এন্ড মী। দুটোর বিষয়বস্তু প্রায়ই একই। আমেরিকান পারিবারিক জীবন। বিয়ে, সংসার, সন্তান হওয়ার আগে পরে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক, স্বপ্ন হারানোর দারপ্রান্েত স্বপ্নকে বাঁচিয়ে তোলবার শেষ চেষ্টা, মধ্যবয়সের সংকট আর তার মোকাবেলা – দুটি ছবিতেই ঘুরেফিরে একই বিষয়গুলো এসেছে। তবে সময়টা ভিন্ন। প্রথম ছবিটা পঞ্চাশের দশকের প্রেক্ষাপটে আর পরেরটা সমকালীন।
সমকালীন ম্যারলী এন্ড মীর জেনিফারের চরিত্রটা দেখে মনে হয়েছে আমাদের জেনারেশনকে তুলে ধরেছে। নারী আর এখন শুধু সুতোয় বাধা পুতুল নয়। সে ঘটনা নিয়ন্ত্রন করার ক্ষমতা রাখে। সে স্বনির্ভর, সে আত্মবিশ্বাসী। যখন প্রয়োজন মনে করছে নিজ ইচ্ছায় ক্যারিয়ার ছেড়ে সংসার-সন্তানকে সময় দিচ্ছে। সে জানে সে কী চায়, কিভাবে অপ্রত্যাশিত চ্যালেঞ্জকে মোকাবেলা করতে হয়। সর্বোপরি নিজেকে সে ভালোভাবেই বুঝতে পারে এবং তা প্রকাশ করতে পারে।
রেভোলুইশনারী রোড ছবিতে কেটকেও একই অবস্থার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছিলো। কিন্তু সেই পঞ্চাশের দশকে নারী বোধহয় তার ভেতরকার টানাপোড়েন, যন্ত্রণার ভাষাটা তখনও আবিষ্কার করতে শেখেনি। সে সময় নারী রোল মডেল বা সুযোগের অভাব ছিল। সে জানতো না কিভাবে সমস্যার সমাধানের পথ খুঁজতে হয়। তাই অভিমানী মন নিয়ে তাকে ভেতরে ভেতরে দ© হতে হয়েছে। কখনওবা আত্মগ্লানিতে জর্জরিত হয়েছে। কিন্তু আত্মঅহমের কারণে তা প্রকাশ করতে পারেনি।

মানব সভ্যতা কতোটা সময় পার করে এতোদূর এসেছে। কিন্তু নারীর ভেতরে যে বিচিত্র অনুভূতির অনুরণন তা প্রকাশের ভাষাটা সবে মাত্র আবিষ্কার হতে চলছে। আগে যেখানে নারীরা নিজের প্রতিভার জলাঞ্জলী দিয়ে আত্মত্যাগে অভ্যস্ত ছিল, এখন নারীরা আর সেই আত্মত্যাগের বলি হতে চায় না। হোক তাদের যতো পরিশ্রম, তারপরও সে নিজেকে প্রকাশ করতে চাচ্ছে। সে বুঝে গেছে অভিমানকে চেপে রেখে কোন লাভ নেই। তা ভাষায় প্রকাশ করতে হবে। আগের যুগে নারীরা তাদের সমস্যা জানতো কিন্তু সমাধান জানতো না। এ যুগে নারীরা তা জানার চেষ্টা করছে যদিও এদের সংখ্যা খুব কম। আগে পুরুষেরা নারীদের ঘরের বাইরে যেতে দিত না। কী মনে করে এখন জানি দিচ্ছে। এ যুগের আত্মবিশ্বাসী মায়েরা নারীর ব্যাপারে ছেলেদের দৃষ্টিভংগির আমূল পরিবর্তন করে দিচ্ছে। স্বামীরাও স্ত্রীদের ক্ষমতা এবং মতামতকে প্রাধান্য দিচ্ছে। কারণ তারা বুঝতে পারছে এতে তাদের নিজেদেরও অনেক চাপ কমে যায়। আর নারীরাও জেনে গেছে স্বামীর উপর অতিমাত্রার নির্ভরশীলতা অনেক ঝুকিপূর্ণ। এখানকার অনেক নারী স্ব-ইচ্ছায় একা থাকার সির্দ্ধান্ত নিচ্ছে। আমি এরকম অনেকের সাথে কথা বলে দেখেছি। তাদের বক্তব্য হলো যদি একান্তাই পছন্দমতো কাউকে পায় তবেই তারা সংসার করার কথা ভাববে। তার আগে নয়। ঠিকই তো, দরকার না থাকলে নারী কেন আপোষ করবে? আর আপোষ হলেও হবে সমানে সমান বা একটু Œনিশ-বিশে, দশ বা নব্বইয়ের সাথে নয়। কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই বলে কতো নারী মুখ বুজে আপোষ করে সংসার করে গেছে, এখনও যাচ্ছে।


একটা ছেলে জন্ম থেকেই দেখে আসছে সমাজে তারা অর্থোপর্জনকারী। তাই দেখা যায় একটা ছেলে পড়াশোনা করুক বা না করুক, ফলাফল যেমনই হোক পরিশেষে সে ঠিকই একটা কর্মসংস্থান জুটিয়ে নিচ্ছে। অর্থোপর্জনের সাথে ক্ষমতায়নের একটা গভীর সম্পর্কে আছে। নারীবাদী লেখক ভার্জিয়ানা উলফ একবার বলেছিলেন যে মেয়েরা কম লেখে তার অন্যতম প্রধান কারণ তারা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী নয় বলে। প্রগতিশীল মন মাানসিকতার সাথে সাথে নবাব ফয়জুন্নেসা, বেগম রোকেয়া স্বামী বা বাবার থেকে অর্থপ্রাপ্ত হয়েছিলেন বলে বাংগালি মুসলিম নারী শিক্ষা প্রসারে তারা ভূমিকা রাখতে পেরেছিলেন। বেগম রোকেয়া আমার কাছে এক পরম বিস্ময়। একক চেষ্ঠায় বাঙ্গালি মুসলিম নারী সমাজকে অনেকখানি এগিয়ে দিয়েছিলেন।
এ যুগে অনেক নারী নিজেরাই তাদের ক্ষমতায়নের ধারণা পোষন করতে পারে না। স্বনির্ভর হয়ে এক বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে পুঁজিবাদের হাতছানিতে আরেক বন্দিদশায় পতিত হচ্ছে। এখানকার চাকুরীসূত্রে বা পতির কারণে অনেক বিত্তশালী মহিলাদের দেখেছি অতিমাত্রায় শাড়ি, গয়না, ইথান এলেন বা ড্রেক্সেল হেরিটেজের ফার্নিচার, নরডসট্রমের জুতো, ব্যানানা রিপাবলিকের ওভারকোর্ট, ফ্রেঞ্চ ফেসিয়াল কিম্বা মাকস-ফাকটরের প্রসাধনীর জন্য শপিংমলে ঘুরে বেড়াচ্ছে। মহিলাদের জমায়েতে একেকজন কতো বড় ভোক্তা তার বয়ান চলে। দেখা যায় কোন চ্যারিটির জন্য তাদের হাত দিয়ে এক পয়সাও সহজে গলছে না। সবাই অবশ্য এরকম নয়। অনেকে এখানে বসে দেশের জন্য উন্নয়নমূলক অনেক কাজ করছেন। তারা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার।

সেদিন তসলিমা নাসরিনের একটা বই পড়লাম। বইটার নাম,’আমি ভালো নেই, তুমি ভালো থেক দেশ’। বইটাতে লিখেছেন যে নারী স্বাধীনতার রূপ উনি দেখতে চেয়েছিলেন, ইউরোপের পশ্চিম দেশগুলোতে সেটাই দেখতে পেলেন। পরে সে সমাজের মধ্যে অনেকদিন বসবাস করে আবিষ্কার করলেন সেখানকার অন্তঃসারশুন্যতা। মানুষের সুখ-দুঃখের একটা বড় পরিমাপক মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্ক – অর্থাৎ সামাজিকতা। এদিকটাতে আমরা পূবের মানুষেরা এখনও এগিয়ে আছি। এই ব্লগেই আমি কতো মানুষকে দাওয়াত দিয়ে দিয়েছে, আবার কতোজনের কাছ থেকে দাওয়াত পেয়েছে তা কিন্তু পশ্চিমের কোন ব্লগে অকল্পনীয়। লেখক দেখেছেন পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোতে অল্পতেই বেড়িয়ে পড়ে তাদের রেসিস্ট চেহারা, বাহ্যিক ভদ্র ব্যবহারে আড়াল করে রেখেছে ভেতরের পংকিলতা, সে দেশে মনরোগ চিকিৎসকদের কাছে ভীড় লেগেই থাকে, সব আছে তারপরও আত্মহত্যার হার অনেক বেশি, বৃদ্ধবয়সের অসহনীয় জীবন, সব মিলিয়ে অসম্ভব ধনশালী দেশগুলোর মধ্যে বসে নিজের নারীবাদ আর নাস্তিক্যবাদের চর্চা আর কথা বলার যথেচ্ছা স্বাধীনতা পেলেও মনে পাননি সুখ। মাঝে মাঝে লেখকের আত্মহত্যার ইচ্ছা জাগতো। আরজ আলী যেমন জানতেন না বলে গ্রামে বসে নিজেই আবার গতিসূত্র আবিষ্কার করেছিলেন, ঠিক তেমনি মফস্বলে বসে তসলিমা নাসরিন হিপিইজম কেন ব্যর্থ হলো সে খবর রাখেননি। এখানে মৌলবাদীদের হাত থেকে বাঁচতে গিয়ে ওখানে মিডিয়ার ফাঁদে বন্দি হলেন। হুমায়ুন আজাদ, জাহানারা ইমামের উপরও তো মৌলবাদীদের খÍগ ছিল। কিন্তু পশ্চিম ঠিকই বুঝেছিলো, অল্পবয়সী নারী মিডিয়ার শুন্য পাতা পূর্ণ করার জন্য বেশি বানিজ্যিক হবে। যাইহোক একজন বাংগালি নারী নিজের জীবনটাকে অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে নিয়ে গিয়ে তার দর্শন লিখে গেছেন তা নিঃসন্দেহে আমাদের সাহিত্য এক উল্লেখযোগ্য সংযোজন। যেহেতু তার নিজেরই উপলদ্ধি – ’আমি ভালো নেই’ তাই সে পথ অনুসরণ করারও কোন কারণ দেখি না। যে দর্শন অনুসরণ করলে জীবনের যে কোন মূহুর্তেই ভালো থাকা যায় আমি সে দর্শন অনুসরণ করতে চাই।


বাংলাদেশে এখন মেয়েদের পাশের হার বেশি, ভালো ফলাফলের হারও বেশি। কিন্তু সঠিক লক্ষ্য বা রোলমডেলের অভাবে অনেকে দিকভ্রান্ত হচ্ছে। বুয়েটে ক্লাসে প্রথম হওয়া যে মেয়েকে প্রায়ই ছেলে আর মেয়েদের সমতা নিয়ে কথা বলতে শুনতাম, প্রবাসে সেই একই মানুষকে বলতে শুনলাম – মেয়েরা একদিক দিয়ে সুবিধাভোগী, কর্মজীবি স্বামী থাকলে কাজ করার অতো বাধ্যবাধকতা থাকে না। এভাবে ভাবাটা কেন জানি শুনতে ভালো লাগে না। নিজের পরিবারের জন্য হয়তো থাকে না কিন্তু গরিব দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় বিনে পয়সায় পড়ে এসে আমরা কী করে দেশের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতার কথা ভুলে যাই? মেয়েটির জায়গায় যদি কোন গরিব ছেলে পড়তে পারতো, হয়তো সে তার পরিবারের পরের প্রজন্মকে শিক্ষার আলোতে আলোকিত করতে পারতো।
তবে সবচেয়ে ধাক্কা খেয়েছি বান্ধবী ম এর চিন্তা ভাবনার বর্তমান অবস্থা দেখে। আমি ঠিক বুঝি না কোন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে একজন প্রতিভাময়ী নারী সম্পূর্ণভাবে তার নিজস্বতা হারিয়ে স্বামীর চোখে পৃথিবী দেখতে শুরু করে। বুয়েটে থাকতে ওর সাথে ধর্মের কোন সম্পর্ক দেখিনি। কিন্তু এখন বোধহয় নিজের গোঁড়া স্বামীকেও হার মানিয়ে দিয়েছে। ধর্মের সাথে আমার কোন বিরোধ নেই। এখানে আনচলিক সংস্কৃতি দ্বারা প্রভাবিত এবং অনেক মনিষী দ্বারা দূষিত ধর্মের কথা বোঝাচ্ছি না। আমি ধর্মের আধ্যাত্মিকতা থেকে অনেক সুবিধাপ্রাপ্ত। মূল ধর্মের থেকে এই নির্যাসটুকু নেওয়ার জন্যও আরেক স্তরের জ্ঞান লাগে। তবে ধর্মের মধ্যে কোন ভুল, অপব্যখ্যা, অন্ধবিশ্বাস ঢুকে গেলে সেটা সমাজে এটম বোমের থেকেও বেশি ক্ষতি করে। বান্ধবী ম এর সাথে অনেকদিন পরে কথা বলার পর বিষয়টা আরেকবার উপলদ্ধি করলাম।
আমেরিকা হয়তোবা দেশেও মেয়েদের বাচ্চা সামলে বাইরে চাকুরী করতে যাওয়া অতো সহজ নয়, কেউ না চাইলে সেটা করারও অতো বাধ্যবাধকতা আমি দেখি না। তবে কেউ যদি সেটা করে থাকে তবে তাকে নিরুৎসাহীত করবার কোন কারণ নেই। বান্ধবী ম বা আরো মহিলাদেরই বলতে শুনি যে ইসলাম মেয়েদের ঘরে থাকতে বলে। মেয়েদের আসল কাজ বাচ্চা পালন করা। বান্ধবী ম এর তো আরেক স্তর উপরের কথাবার্তা – যতোগুলো সম্ভব ততোগুলো বাচ্চা নেওয়া উচিত, রিজিকের চিন্তা আমাদের করার কথা না। আমি জিজ্ঞেস করলাম – তাহলে তুমি মাত্র তিনটাতে থেমে থাকলে কেন? সেক্ষেত্রেও তার ইসলামের দোহাই, স্বাস্থ্যে না কুলালে সেক্ষেত্রে ধর্মমতে বাচ্চা না নেওয়া যায়।
আমার শুধু মনে হচ্ছিল এসব বলার সময় ওর কি একবারও মনে হচ্ছিল না যে পুরোনো বান্ধবীর কাছে তাকে কী পরিমান অসম্ভব শোনাচ্ছিল! আমি তো তার মনঃস্তত্ব খুব ভালো করেই বুঝি। ম এর মতো অনেকেই সহজে হাল ছেড়ে দিয়ে ধর্মকে বর্ম বানিয়ে সান্ত্বনা খোঁজার চেষ্টা করছে। ধর্মের কথা না বলে সে যদি বলতো, আমার নিজের ইচ্ছায় আমি সংসার-সন্তানকে সবকিছুর আগে অগ্রাধিকার দিয়েছি তাহলে তার প্রতি শ্রদ্ধাটা আমার আগের মতোই থেকে যেত। তার কারণ এই ধরনের মেয়েরা যখন ধর্মকে এভাবে উপস্থাপন করে তখন সমাজে তার কিছুটা অপ-ভূমিকা প্রভাব ফেলে। এরা সহজেই অন্যমেয়েদের রোল মডেল হয়ে যায়। আমি অনেক বাংগালি মেয়েকে বলতে শুনেছি, এতো ভালো রেজালট করা একটা বুদ্ধিমান মেয়ে যখন এই কথা বলছে তখন নিশ্চয় এটাই ঠিক।
কে তাদের বোঝাবে যে ভালো ফলাফল করে একজন শুধু তার ব্যবহারিক জ্ঞানকেই শুধু শানিত করে যা চিন্তাভাবনাকে আপনা আপনিই প্রগতিশীল করে তোলে না।


আমার দাদি অত্যন্ত গোড়া ধার্মিক ছিলেন। উনার কঠোর পর্দা নষ্ট হয়ে যেতে পারে এই আশংকায় শহরে স্বামী-ছেলের সাথে না থেকে মেয়েকে নিয়ে গ্রামেই থেকেছেন। আমার অতি শিক্ষিত এবং আধুনিক আম্মাকে ঠিক অতোটা পছন্দ করতে পারেননি। দাদিকে খুশি করার জন্য আম্মা শ্বশুর বাড়িতে গেলে বোরখা পরতেন। দাদি মেয়েকে তার দীক্ষায় দিক্ষিত করেছেন। আমার কাছে পোশাকের থেকে মনের পর্দা তথা অপ্রগতিশীল চিন্তাভাবনাকে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধক বলে মনে হয়। পরবর্তী সময়ে ফুপুর পাঁচ মেয়ের কেউই মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্তও শিক্ষা পাননি। তবে আজ ফুপুর মেয়েরা এ অপ্রগতিশীলতা থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছে। কারণ তারা দেখেছে শিক্ষার ক্ষেত্রে পিছিয়ে থেকে সামাজিক আর অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অনেকটাই পিছিয়ে গেছে। এখন তাদের কষ্টটা অনেক বেশি। শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। আর এক্ষেত্রে নারীর দায়িত্ব অনেক।

উপসংহার টানতে চাই এই বলে যে নারীকে তার জগৎ বাড়াতে হবে। এটা দুভাবে সম্ভব। সশরীরে সে নিজে বাইরের জগতে প্রবেশ করতে পারে কিম্বা ঘরে বসে বিভিন্ন বিষয়ের উপর বই পড়াশোনা করতে পারে। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের পথ তৈরীর দায়িত্ব আমাদের হাতে। একদিকে আমরা ঝুম্পা লাহিড়ি বা সাবা মাহমুদের মতো ক্ষমতাশালী নারী প্রজন্মের স্বপ্ন দেখতে পারি আরেকদিকে আবার বেগম রোকেয়ার অন্তপুরবাসিনীর জড়ভরত জীবনে ফিরে যেতে পারি।

আমার চার বছরের মেয়ে রাইসা এই কিছুদিন আগ পর্যন্তও বড় হয়ে প্রিন্সেস হতে চাইতো। এখন সে মামনি হতে চায়। মেয়েটা কী সূক্ষ্নভাবে মেয়েটা আমাকে খেয়াল করছে! আমাদের নানি-মায়েরা নানারকম প্রতিকুলতার মধ্যেও রিলে রেসের মতো একটু একটু করে সামনের দিকে আলোর মশাল এগিয়ে দিয়েছে এখন এ মশাল নিয়ে আমি কী সামনের দিকে এগিয়ে যাব নাকি আবার ফুফু-দাদির পথে পিছনের দিকে হাটা শুরু করবো? নাকি পুঁজিবাদের ভোক্তা, মিডিয়ার পন্য, গোঁড়া নারীবাদ আরো কত রকম ফাঁদ আছে, পথ আছে – সেদিকে চলতে শুরু করবো?

হে নারী সিদ্ধান্ত এখন তোমার হাতে।

৯,৩৭৩ বার দেখা হয়েছে

৯১ টি মন্তব্য : “অতীত বয়ান – কেউ যদি শুনতে চায় (নারীকথ্ন)”

  1. সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)
    আমার চার বছরের মেয়ে রাইসা এই কিছুদিন আগ পর্যন্তও বড় হয়ে প্রিন্সেস হতে চাইতো। এখন সে মামনি হতে চায়। মেয়েটা কী সুক্ষভাবে মেয়েটা আমাকে খেয়াল করছে!

    অসাধারণ পর্যবেক্ষণ। চমৎকার লিখেছো শান্তা। একটানে পড়ে গেলাম। ভালো করে মন্তব্য করার আগে আরো এক-দুইবার পড়তে হবে। :thumbup:


    "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

    জবাব দিন
      • সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

        আসলে সেরকম কিছু না শান্তা। তুমি নারীবাদকে যেভাবে দেখেছো, তাতে ভিন্নমতের অবকাশ কম। আমার মনে আছে সম্ভবত নব্বইয়ের দশকে নারীপক্ষের এরকম একটা শ্লোগান ছিল, "দেহ আমার, সিদ্ধান্ত আমার"। সেটা নিয়ে প্রগতিশীল নামধারী অনেককে সমালোচনা করতে শুনেছি। মনে-প্রাণে উদার হওয়া আসলেই কঠিন। একেকটা পরিস্থিতি সামনে আসলে পুরুষের স্বরূপটা বোঝা যায়।

        নারী অধিকার নিয়ে এদেশে গত তিনযুগে অনেকে কাজ করেছে। আমার একসময়ের রাজনৈতিক দলের নারী সংগঠন "মহিলা পরিষদ" সম্ভবত এক্ষেত্রে সবচেয়ে পুরনো। কিন্তু মজার ব্যাপার কি জানো, এক তসলিমা নাসরিন এই সমাজটাকে যেভাবে নাড়া দিয়েছে, অনেক অনেক সংগঠনের মিলিত শক্তিও তা দশকের পর দশক ধরে পারেনি। তসলিমা পুরুষদের একেবারে ন্যাংটো করে দিয়েছিল। তাই ডান-বাম সব দিক থেকে গেল গেল রব উঠেছিল! তসলিমার ব্যাপারে আমারও সমালোচনা আছে। কিন্তু ওর লেখা বাংলাদেশের শিক্ষিত নারী সমাজের মধ্যে চিন্তায়-মানসিকতায় বলা যায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনে দেয়। এর গুরুত্বকে অস্বীকার করি কি করে?

        আসলে আমি মনে করি, সমাজে নানারকম শক্তি থাকবে। নরম-গরম, মানিয়ে চলা-আঘাত করা, ধীরে ধীরে পরিবর্তনের জন্য কাজ করা আবার সমাজটাকে একেবারে ষাঁড়ের শিংয়ের আগায় তুলে আছাড় দেওয়া; এসব মিলিয়েই তো সমাজটা এগোবে। আমি তাই কোনোটাকে বাদ দিই না। এরকমও একটা দৃষ্টিভঙ্গী হতে পারে তো, নাকি? ভালো থেকো। শুভকামনা।


        "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

        জবাব দিন
        • মেলিতা

          ভাইয়া, আপনার প্রতি শ্রদ্ধা অনেক অনেক গুন বেড়ে গেলো
          তসলিমা নাসরিন সম্পর্কে আপনি যা বল্লেন তা আমাদের প্রজন্ম, আমাদের পরের প্রজন্মের শতকরা ৯০ ভাগই ভাবতে পারে না, যদিও তার বড় কারন অধিকাংশই উনার কলাম গুলো পড়ে নি। উনার অনেক অনেক দোষ থাকতে পারে, সাহিত্য তেমন উচু মানের না হতে পারে, কিন্তু কেন আমরা একজনের দোষ গুলো দেখবো। আমি তার সবলেখা কে সমর্থন করি না, কিন্তু সেই লেখা গুলো কিন্তু আমাদের চিন্তার খোরাক যুগিয়েছিল।আর কিছু না হোক আমি তার অপরিসীম সাহস কে শ্রদ্ধা করি।
          আমার মনে আছে আমি, আমার বড় বোন, আমার আব্বু, আম্মু আমরা তার কলাম গুলো পড়ে তার পক্ষে বিপক্ষে যুক্তি দিতাম, রেফারেন্স চেক করতাম।আমার যুক্তি দিয়ে বিচার করার অভ্যাসটার ভিত কিন্তু তৈরি হয়েছে মুহাম্মদ জাফর ইকবাল ও তসলিমা নাসরিনের লেখা পড়ে।অনেক অপ্রাসংগিক কথা বলে ফেল্লাম, কাউকে আঘাত করে ফেল্লে আমি দুঃখিত। আপনার মন্তব্যটা পড়ে অনেক ভালো লাগছে দেখেই বলে ফেললাম।

          জবাব দিন
  2. আন্দালিব (৯৬-০২)

    ইন্টারনেটের সবচেয়ে বড়ো সুবিধা হলো কাকতালীয়ভাবে অনেক সময়ে নিজে যা বলতে চাই, প্রকাশ করতে চাই অথচ অনভিজ্ঞতা বা অপরিপক্কতায় গুছিয়ে উঠতে পারি না সেটা অন্য কাউকে হুবহু বলতে বা প্রকাশ করতে দেখি! তখন কষ্ট কমে যায় আর মন ভালো হয়ে যায়। আপনার লেখাটা পড়ে ঠিক এই অনুভূতিই হচ্ছে, আপু।

    "নারীবাদ"-এর বিভাজন মনে হয় বাংলাদেশের নদীবিভাজনের চেয়েও বেশি। এতো এতো রূপ আছে নারীবাদের, এই কারণে ভণ্ডামি, ব্যবসায়ী মনোভাবে নারীকে পণ্য করাও চলছে দেদার। বোরকা পরিয়ে পড়াশোনা করতে না দিয়ে নারীকে রান্নাঘরে আটকে রাখা আর তাকে পণ্য করে বাণিজ্য করা দুইদলের "পুরুষতান্ত্রিক"-ই আসলে ক্ষতিকর। দেখা যায় এই মানসিকতাটা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে অনেকেই ধারণ করেন, এবং বাকিরা অনেকেই সেটা বুঝতে পারেন না। এজন্যে "নারীবাদী" হয়ে গেছে একটা কটাক্ষের বিশেষণ!

    আপনার পুরা লেখার অনেকগুলো লাইন খুব বেশি ভালো লেগেছে। উদ্ধৃত করলাম না, তাহলে বিরাট মন্তব্য হয়ে যাবে! 🙂

    ভালো থাইকেন অনেক অনেক!

    জবাব দিন
  3. ফয়েজ (৮৭-৯৩)

    :goragori: :goragori:

    উত্তর পেরেছি জন্য আনন্দিত আরকি। অন্য কিছু না 😀

    আগের নারীবাদ নিয়ে এত চিন্তা করতাম না, চিন্তা শুরু হয়েছে বিয়ে করার পরে। শারমিন (আমার বউ) যাতে একা একা চলতে পারে সেটার ট্রেনিং শুরু করতে গিয়ে। মেয়ের বাবা হবার পরে সেটা মনে হয় আরও জোড়ালো হয়েছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, আমি মহা আস্তিক মানুষ, কিন্তু ব্যাপারটা আমার কাছে ধর্মের সংগে কন্ট্রাডিকটি মনে হয় না।

    আপনার মেয়ের জন্য অজস্র দোয়া থাকলো।


    পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

    জবাব দিন
  4. কামরুল হাসান (৯৪-০০)

    ভালো লেগেছে।
    অত্যন্ত লজ্জার সংগে একটা কথা বলি- আমি ধাঁধাটার উত্তর পারিনি 🙁


    ---------------------------------------------------------------------------
    বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
    ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।

    জবাব দিন
  5. আপু, আপনার পোস্ট পড়ে অবাক হলাম খুব। এতো গভীর উপলব্ধির কথা এতো সুন্দরভাবে বলে যাওয়াটা অসাধারণ লাগলো! আমি মাঝেমাঝে সিসিবির লেখা পড়ি। কমেন্ট করি নি, কিন্তু আপনার লেখাটা দেখে কমেন্ট করে ফেললাম। আপনার রাজকুমারী খুব ভাল থাকুক, বাইরে-ভেতরে অসাধারণ একজন হয়ে বড় হোক!

    জবাব দিন
  6. আছিব (২০০০-২০০৬)

    শান্তাপু......ধাঁধাটা পেরে গেলাম 🙂
    আমার অনেক ছোটবেলায় পাশের বাসায় এক আন্টি থাকতেন।আমার আম্মু যখন বি.এড করতে চলে যেত,তখন তিনি আমাকে আমার বাসার পাশের জানালা দিয়ে খাইয়ে দিতেন।আত্মীয়তার বন্ধন না,জাস্ট আমি খুশি হই,সে খাইয়ে দিলে; এইভাবেই তাদের ফ্যামিলির সাথে আমাদের পরিচয়.....তখন আমার বয়স ছিল তিনের কাছাকাছি।
    সেই আন্টি আমার আম্মুর চেয়ে অল্প জুনিয়র।তিনি ডিইউ থেকে ফিজিক্স এ পড়ে মনোবুশু নিয়ে জাপান গিয়েছিলেন।মাঝখানে প্রায় ১৫ বছর তাকে আমি দেখিনি।শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যার প্রফেসর তিনি এখন।২০০৮ এ তার সাথে আমি দেখা করতে যাই,সিলেট ঘুরতে গিয়ে......কতটা খুশি যে লাগছিল আমার ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না...
    কিন্তু আমি তাকে দেখে এতটাই কষ্ট পেয়েছিলাম যে সেই বাসা থেকে চলে আসার পর আমি চোখের পানি আটকাতে পারিনি।কারণ,তিনি আমাকে বললেন,তার ব্রেস্ট ক্যান্সার হয়েছে।অনেকদিন পর আমাকে দেখে খুশিই হয়েছিলেন।আমার সাফল্যে তিনি আনন্দিত হলেন,যে কয়েক ঘণ্টা তার সাথে ছিলাম,তিনি আমার সাথে অনেক কিছু শেয়ার করলেন......মেয়েদের অবস্থা,তার ক্যারিয়ার ইত্যাদি......মনে হল আমাকে পেয়ে তার মনের জমে থাকা হাজারো কথা বলে ফেললেন।কেমোথেরাপি দিয়ে তার চেহারা বুড়ীয়ে গেছে,চুল উঠে গেছে,কত লম্বা সুন্দর চুল ছিল তার,ব্রেস্ট অপারেশন হয়েছে...কিছুদিন পর পর চিকিতসার জন্য দেশের বাইরে যেতে হয়,তার একটা ৫ বছরের ছেলে আছে.........তিনি বললেন, ''জীবন,বাঙ্গালী মেয়েদের পিছুটান অনেক বেশি। সংসার করলে ক্যারিয়ার হয় না,ক্যারিয়ারের কথা ভাবলে সংসারে সুখ আসে না।আমার ছেলের বয়স ৫ না হয়ে এতদিনে ১৫ হবার কথা।অথচ ক্যারিয়ারের কথা ভেবে আমি দেরী করেছি।তোমার আংকেল মাঝখানে জাপান গিয়ে থেকেছে আমার সাথে।আমি তখনও সন্তান নেইনি।ভেবেছি,নিজের দেশেই মা হব,নিজের দেশেই মাথা উঁচু করে থাকব।অথচ,দেখো ,কি অবস্থা আমার!! ভার্সিটী তে ক্লাস নেয়ার চাইতে হাস্পাতালেই যাই বেশি।''
    আপু বিশ্বাস করবেন না,এতদিন পর একটা মানুষকে দেখতে গিয়ে এর থেকে বেশি ধাক্কা কেউ খায় কিনা!! আন্টির কথাগুলা আমার কানে এমনভাবে ঢুকেছে যে যে কয়টা লাইন লিখলাম সব তার নিজের মুখে বলা।
    আন্টি অনেক কষ্ট করেছেন, তার কথা ভেবেই নারীদের প্রতি আমার সম্মান আরো বেড়ে গেছে।নিজের ব্লগে না লিখে এখানেই বলে ফেললাম।আরো বিস্তারিত লিখতে গিয়েও পারলাম না।আফটার অল,কমেন্ট করতেছি,ব্লগ না তো!
    আপনার সাথে আমি একমত।নারীরাও কিন্তু দ্বিধাবিভক্ত।আমার অনেক বান্ধবীরাও বলে,''চাকরী করে কি করমু।জামাই যা করার করবে,আমি ঘরে বইসে খালি খামু আর স্টার প্লাস দেখমু......''
    আমি খালি বলি, '' জামাই চিরকাল নাও থাকতে পারে,মরে গেলে কে কি করবে তোর জন্য,ভাবছিস কিছু?স্টার প্লাস দেখে খালি সংসারে আগুন ধরানোই শিখবি,ভালো কিছু শিখস?''
    .........আপু,বুয়েটের শিক্ষক টার নাম টা ধরতে পারলাম মনে হয়।আমরা পাই নাই যদিও।১৫ তারিখ থেকে টার্ম ফাইনাল,দোয়া কইরেন প্লিজ......আপনার ব্লগ পড়ে না কমেন্টাইয়া থাকতে পারলাম না...... :boss:

    জবাব দিন
    • ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

      ভালো করে পরীক্ষা দাও।
      তোমার আন্টির কথা শুনে খারাপ লাগছে। তবে এ ঘটনা তো পুরুষদের জীবনেও অহরহ ঘটছে। এই জায়গায় জীবনটা বড় বেশি ভাগ্যের হাতে সমর্পিত বলে মনে হয়।

      তোমার বান্ধবীদের মনোভাব পাল্টে যাবে এই আশা করছি।


      “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
      ― Mahatma Gandhi

      জবাব দিন
  7. আশহাব (২০০২-০৮)

    একটানে পড়ে শেষ করলাম, অসাধারণ লাগলো আপু | আপনি এতো সুন্দর লেখেন কিভাবে? অনেকগুলো লাইন পছন্দ হয়েছিল, তাই আর উদ্ধৃত করলাম না | ভালো থাইকেন আপু, আর আপনার রাজকুমারীর জন্য অনেক অনেক দোয়া রইলো |


    "Never think that you’re not supposed to be there. Cause you wouldn’t be there if you wasn’t supposed to be there."
    - A Concerto Is a Conversation

    জবাব দিন
  8. মেলিতা

    আপু আপনাকে কি বলে ধন্যবাদ দিব বুঝতে পারছি না
    ঠিক ঠিক এই কথা গুলো এইভাবে অনেক বার বলতে চেয়েছি, মনের ভাব প্রকাশের অক্ষমতা, সময়ের অভাব এর কারনে বলতে পারি নি। সব মেয়েই এই জিনিস গুলো অনুভব করে, কিন্তু বলে না, লিখে না, কিন্তু আসলে লেখা দরকার। নারীর মন সহস্র বছরের সাধনা ধন এইসব ফ্যান্টাসি থেকে বের হয়ে আসার সময় হয়েছে। অনেক কিছ লেখার ইচ্ছা ছিল, ল্যাব আছি তাই পারলাম না। বাসায় গিয়ে লিখবো। আবার ধন্যবাদ আপু।

    জবাব দিন
    • ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

      আমাদের একদম ঠিক ঠিক ভাবে প্রকাশ করা উচিত। একদম বেশিও না কমও না।
      তোমার লেখার অপেক্ষায় রইলাম।


      “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
      ― Mahatma Gandhi

      জবাব দিন
      • মেলিতা

        আপু আমি কিন্তু আপনার অনুমুতি ছাড়া আপনার লেখাটা ফেইসবুকে শেয়ার করেছি(আমার বরও)
        নারী দিবসে আমার এক ফ্রেন্ড ফেইসবুকে নারী দিবসের অপ্রয়োজনীয়তা নিয়ে একটা স্ট্যাটাস দেয়। তার কথা হলো নারীদের জন্য আলাদা দিবস থাকাটা অসম্মানজক। বিভিন্নজন সেখানে এসে তার পক্ষে এসে মন্তব্য করতে থাকে। মজা হলো ২ জন বাদে সবাই ছেলে। আমি এবং অন্য মেয়েটার কথা ছিল নারী দিবসের দরকার আছে। আমি অবাক হয়ে দেখলাম মেয়েদের কি করা উচিত, কতটুকো স্বাধীনতা পাবে, মেয়েরাই মেয়েদের আসল শত্রু, ইত্যাদি নিয়ে ছেলেরা নিজেরাই সিদ্ধান্ত দিয়ে ফেলছে।
        আরেক্টা ব্যপার হল এক্টা জনপ্রিয় কথা হল মেয়েরাই মেয়েদের প্রধান শত্রু।
        এটা যারা বলেন, তাদের বলছি, আজকের পত্রিকা খুলে সব খুন/জখম গুলো দেখে বলুন তার মধ্যে কতগুলো মেয়েরা মেয়েকে করেছে, কতগুলো ছেলেরা ছেলেদের। ভাইয়ের হাতে ভাই খুন হলে কেউ বলেন না ছেলেরা ছেলের প্রধান শত্রু?
        যারা শ্বাশুড়ী বউয়ের দ্বন্দ নিয়ে বলেন তাদের কে বলছি, তাদের কি বন্ধুদের সাথে কখন কথা কাটাকাটি হয় না? অফিসে কলিগের সাথে সাময়িক শীতল সম্পর্ক? অথবা অফিসের বসের উপর অনেক রাগ?
        পরিবার টা এখনও বাংলাদেশের মেয়েদের জন্য প্রধান কর্মক্ষেত্র। আর পরিবারটা কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ন প্রতিষঠআন, স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি, অফিস এর মত। অধিকাংশ ক্ষেত্রে শ্বাশুড়ী বউ এর সম্পর্ক কিন্তু অনেক ভাল। এটা শ্বাশুড়ী ও জানেন, বউও। কিন্তু মেয়েরা
        তাদের মতামত গুলো কিন্তু বলে না, শুধু শুধু আরেকজনের সাথে কথা কাটাকাটি করে কি হবে? আপুর লেখাটা পড়ে কেন যেন মনে হল একটু বলেই দেখি।
        আবারো,কাউকে আহত করে থাক্লে আমি দুঃখিত।

        জবাব দিন
        • ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

          মেলিতা তোমার চিন্তা ভাবনাগুলো গুছিয়ে লেখ। ভালো হবে।
          মেয়েরা মেয়েদের প্রধান শত্রু - এটাও একটা অপ-প্রচার যা আমরা মেয়েরা না বুঝে অনেকটা বিশ্বাস করে নিই এবং সে অনুয়ায়ী ব্যবহার করতে থাকি। অনেকটা না বুঝে ভুল ধর্ম পালনের মতো।


          “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
          ― Mahatma Gandhi

          জবাব দিন
          • মেলিতা

            ঠিক বলেছেন আপু,
            আমার এক পরিচিত মেয়ে সদ্য এইচএসসি পাশ করেছে
            একদিন দেখি খুব মেয়েদের বদনাম করছে। সে বলতে চায় মেয়েরা খুব বাজে। কিন্তু আসল ব্যপারটা হল সে মেয়েদের স্কুলে পড়েছে, মেয়েদের কলেজে পড়েছে, মেয়েদের হোস্টেলে থেকেছে। কাজেই সে মেয়েদের খুব কাছ থেকে দেখে তাদের মন্দটা বের করতে পেরেছে। কিন্তু তার পরিচিত ছেলের সংখ্যা নিতান্তই কম, বাবা ভাই, আত্নীয়দের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
            আসলেই আপু মাঝে মাঝে লিখা দরকার। আমি অনেক কম জানি, কম বুঝি, কিন্তু অবস্থা দেখে মনে হ্য় আমার চেয়েও কম বোঝে এমন কেউ কেউ আছে।

            জবাব দিন
  9. শান্তা আপু,
    আমার বড় আপুর মেয়েটার নামও রাইসা 🙂 ও এখনও কথা বলতে শিখেনি...

    এরকম লেখা আমি পড়িনি কখনও... আপনার মতন এরকম নারীবাদী মানুষ দেশে অনেক হওয়া দরকার... তাতে সামগ্রিক অনেক উন্নতি আসতে পারে। কিন্তু পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী। অনেক ডিগ্রিধারীদের মানসিকতা আজও ৭০ বছর পূর্বেকার আপনার নানীর সমান হয়নি...

    আপু, অনেকগুলো জিনিস ভালো লেগেছে এই লেখার... মানে প্রতিটি বিষয়ই। আপনার লেখাগুলো পড়লে মনে হয় এভাবে অনেক ভেবেছি কিন্তু হয়ত প্রকাশ করতে পারিনা দেখে বলা হয়নি, বা এরকম বিষয়গুলো যথেষ্ট যুক্তিপোযোগী প্রকাশ হয়না আমার দ্বারা বলে সংকোচেই চেপে থেকেছি...
    প্রিয়তে। এমনকি আমার ব্যক্তিগত সংগ্রহের সেরা তালিকায়... 🙂

    জবাব দিন
  10. সাইফ শহীদ (১৯৬১-১৯৬৫)

    শান্তা,
    তোমাকে আমি কখনো দেখিনি বা চিনিনা কিন্তু যতই তোমার লেখা পড়ছি ততই তোমাকে খুব যেন আপন মনে হচ্ছে অর্থাৎ তোমার অভিজ্ঞতার সাথে সহজে relate করতে পারছি । আমি যখন ঝুম্পা লাহিড়ি বা লিজিয়া জং-এর লেখা পড়ি তখন ভাবি এমন লেখিকা কি আমাদের দেশে জন্মাবেনা - এখন বুঝলাম তার জন্ম ইতিমধ্যে হয়ে গেছে ।

    সময় অভাবে শুধু কয়েকটা বিষয় এখানে আলোচনা করতে চাই । এগুলি অবশ্য সম্পূর্ণ আমার নিজস্ব অভিজ্ঞতা প্রসূত ।

    "নারী আর এখন শুধু সুতোয় বাধা পুতুল নয়। সে ঘটনা নিয়ন্ত্রন করার ক্ষমতা রাখে। সে স্বনির্ভর, সে আত্মবিশ্বাসী। যখন প্রয়োজন মনে করছে নিজ ইচ্ছায় ক্যারিয়ার ছেড়ে সংসার-সন্তানকে সময় দিচ্ছে। সে জানে সে কী চায়, কিভাবে অপ্রত্যাশিত চ্যালেঞ্জকে মোকাবেলা করতে হয়। সর্বোপরি নিজেকে সে ভালোভাবেই বুঝতে পারে এবং তা প্রকাশ করতে পারে।"

    এই শেষ লাইনটাতে আমার একটু দ্বিধা আছে । তোমাদের ১২ বছরের তুলনায়, ৩৯ বছরের বেশী একই নারীর সাথে সংসার করছি আমি, এখনো তাকে আগের মতই ভালবাসি । সে বিয়ের আগেও স্বাধীন ছিল (পাকিস্তানী আমলে বিমানবালা) এখনো স্বাধীন আছে (আমেরিকার পাবলিক স্কুলের শিক্ষিকা) । জীবনে অনেক চড়াই-উৎড়াই পার হয়েছি আমরা এক সাথে । কিন্তু আজও যেন আমি তার সব ভাষা বুঝি না।

    আসলে নারী পুরুষের ভাষার algorithm ভিন্ন । এখন ভাবি যদি ক্যাডেট কলেজে বা BUET-এ, কখনো কাজে লাগে না এমন অনেক বিষয়ের বদলে 'Men Are from Mars, Women Are from Venus' জাতীয় বই পড়ানো হত তাহলে আরো অনেক সুন্দর হতে পারত অনেকের জীবন ।

    "আমি অনেক বাংগালি মেয়েকে বলতে শুনেছি, এতো ভালো রেজালট করা একটা বুদ্ধিমান মেয়ে যখন এই কথা বলছে তখন নিশ্চয় এটাই ঠিক।"

    'ইন্জিনিয়ারিং-এ ভালো রেজালট করা' আর 'বুদ্ধিমান' বা 'জ্ঞানী' বোধ হয় এক অর্থে ব্যবহার করা যায় না । সত্যিকারের শিক্ষা বা জ্ঞান মানুষের মনকে উন্মোচিত করে, সত্য সন্ধানী করে। সেটা কি ইন্জিনিয়ারিং-এ কখনো শেখানো হয়? (সৌভাগ্য বা দূর্ভাগ্য বসত আমিও একজন ইন্জিনিয়ার)

    তোমার এবং অন্যদের আরো মন্তবের অপেক্ষায় থাকলাম ।

    জবাব দিন
    • ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

      আপনি আমার সম্পর্কে অনেক বেশি বলে ফেলেছেন - তবে দুহাতে আজলা ভরে এরকম স্নেহ নিতে ভালো লাগছে।
      আমারও মনে হয় কতো কী হাবিজাবি পড়ানো হয় - তার থেকে জীবনে সুখী হবার বিষয়ে জ্ঞানদান মূলক কিছুই শেখানো হয় না।
      ইংরেজী ভাষায় তো সব বড় বড় জ্ঞানীগুণীরা লিখছেন, অন্য ভাষার সুন্দর সুন্দর বইও অনুবাদ হচ্ছে। এখানকার কিছু ভালো বই পড়ার পর আমার মনে হলো ১৪ কোটি মানুষের জন্য কয়জন এরকম সুন্দর সুন্দর লেখার চেষঠা করছেন? লেখাগুলো উঠে আসতে হবে সে সমাজ থেকে - অনুবাদ ঠিক পোষাবে না। সমকালীন বাংলা সাহিত্য পড়তে গিয়ে এরকম খুব বেশি খুঁজে পাচ্ছি না।

      আপনি বরং আপনার অভিজ্ঞতা নিয়ে একটা ব্লগ লেখেন। অনেকেই উপকৃত হবে।


      “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
      ― Mahatma Gandhi

      জবাব দিন
  11. এটা আমিও খেয়াল করেছি যে, মেয়েদের মাঝেই অনেকে নিজের অধিকার বা কর্তব্য নিয়ে সচেতন নন। মানসিকতা পরিবর্তন শুধু ছেলেদেরই নয়, মেয়েদেরও প্রয়োজন।
    অসাধারণ লাগল পোস্টটা।

    জবাব দিন
  12. আপু,
    লেখাটা পরে মনে হলো অনেক দিন ধরে মনের মধ্যে জমে থাকা কথা
    গুলি যেন এবার সামনে এলো.খুব ভালো লেগেছে.আসলেই আমি জানিনা কেন cadet
    কলেজ থেকে বের হয়ে যখন বুএট এ আসার পর থেকেই আমি নারী এই কথাটা হটাত kore খুব beshi onubhob করেছিলাম.তখন মনে hoto এদেশের ছেলেরা মেয়েদের কে মেয়ে ছাড়া কিছুই ভাবতে পারেনা .তা না হলে একই সাথে ভর্তি পরিখ্খায় অবতীর্ণ হয়ে যোগ্যতার প্রতখ্খ প্রমান দেওয়ার পরেও সবসময় এটাই শুনতে হত মেয়েরা engineering বোঝে না.যদি দেশের মেধাবী ছাত্র সমাজ ই মেয়ে দের মূল্যায়ন করতে না পারে তাহলে বাকিদের কাছে র কি ই বা আশা করা যায়.তখন ভাবতাম যে নারীরা বোধহয় নিজেদের মূল্যায়ন করতে পারবে.কিন্তু আজ আমেরিকায় এসেও যখন দেখি আমাদের মেধাবী ভাবিরা অনেকেই সংসার করেই নিজের জীবন কে সার্থক করছেন তখন সত্যি সত্যি আমার গরিব দেশটার জন্যই বেশি দুখখ হয়.ভালো লেগেছে আপু.অনেক শুভকামনা রইলো আপনার রাজকন্যার জন্য.

    জবাব দিন
  13. শাহাদাত মান্না (৯৪-০০)

    নারীবাদী শব্দটার মধ্যেই একটা পুরুষবাদী মানসিকতা আছে।পরে এই নিয়ে আলাপ পারবো।তার আগে আপু ভালোলাগার কথা অল্পতেই সেরে ফেলি। বলি, শান্তা আপু জিন্দাবাদ,জয় শান্তা আপু :boss: । খুব ব্যালেন্স করে বললাম 😀 ,এই অভাগা দেশে ''জিন্দাবাদ,জয়'' এই শব্দগুলো ও রাজনীতিকরণের হাত থেকে বাঁচেনি। 🙁
    আর আপনার লেখাটা খোমাবইতে শেয়ার করলাম।

    জবাব দিন
  14. ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

    লেখাটা দেওয়ার পর একটু চিন্তায় ছিলায়। নারী নিয়ে লিখতে চাইলে অনেক সংবেদনশীল বিষয় উঠে আসে। সেসব বাদ দিয়ে লিখতে চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু সন্তুষ্ঠি পাচ্ছি্লাম না। সবার মন্তব্য আমার সাহস বাড়িয়ে দিল। মন্তব্যের প্রতিটা লাইনই আমি বিশ্লষন করি।
    সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ ধের্য ধরে নেটে এতো বড় লেখা পড়বার জন্য।
    রাতে বাসায় গিয়ে প্রশ্নের উত্তর দিব।


    “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
    ― Mahatma Gandhi

    জবাব দিন
    • আপূ নারীবাদী অনেক লেখিকার লেখা ভাল লাগতো না কারন আমার মনে হই নারীর সমান অধিকার কি সেটাই মনে হই জানেনা। তবে আপনার পরিপূরক শব্দটার ব্যবহার যথোপুযুক্ত মনে হয়েছে। কিন্তু ইসলাম ধর্মে স্ত্রীকে ধর্মপালনে জোর করার বিধান রয়েছে জানি। কিন্তু নারী শিক্ষা বা তাদের কর্মসংস্থান এর বিরুদ্ধে কিছু বলা আছে কিনা জানা নাই।

      আপু আপনার লেখাটা অনেক থটফুল এবং যুক্তিসঙ্গত মনে হয়েছে। একটা লেখার কথা এখনো মন্র আছে লেখিকা একি সঙ্গে নারীর সমঅধিকার চাইলেন এবং সর্মথ একজন নারীকে বাস এ দাঁড়িয়ে যেতে দেখেও কাউকে উঠে বস্তে না দেয়ার জন্য পুরুষদের মানুষিকতার চরম সমালোচনা করলেন...ব্যাপারটা আমাড় মাথায় ঢুকলো না।

      জবাব দিন
      • ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)
        ইসলাম ধর্মে স্ত্রীকে ধর্মপালনে জোর করার বিধান রয়েছে জানি।

        এ কথা বলো কী করে যেখানে এটাও বলা আছে যে ধর্ম পালনের কোন জোর-জবরদস্তি নেই।

        এখন আমাকে যদি বলা হয় স্বামী দাসি ভোগ করতে পারবে, একাধিক বিয়ে করতে পারবে, ধর্ম পালনে বৌকে পিটাতে পারবে স্বাভাবিকভাবেই আমি সে ধর্ম পালন করবো না। এভাবে কোন ধর্মকে তুলে ধরলে সেটা সেই ধর্মকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে।
        খলিফা ওমরের থেকে তো নিশ্চয় অন্য কোন মনিষী ইসলাম বিষয়ে বেশি জ্ঞান রাখেন না। ওনার সময় আরব দেশে যখন একবার খুব বড় একটা দুর্ভিক্ষ হয়েছিলো। উনি সেসময় শরিয়া আইন বন্ধ করে দিয়েছিলেন।
        ধর্ম বলতে অধিকাংশই কিছু আচার অনুষ্ঠান পালন বোঝে - দর্শনটা বোঝে না।


        “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
        ― Mahatma Gandhi

        জবাব দিন
  15. মো. তারিক মাহমুদ (২০০১-০৭)

    @ শান্তাপু:
    প্রথমেই আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এমন সুন্দর একটা লেখা শেয়ার করার জন্যে। নিচে "নারীবাদ" বিষয়ে আমার ব্যক্তিগত মতামতটা সবার সাথে শেয়ার করলাম।
    - - - - - -- ---- -------- -------- ------- --------------
    আসলে প্রচলিত "নারীবাদ" যা নারীর "সমান অধিকার" বুঝায় - ব্যাক্তিগতভাবে আমি এই নীতিতে বিশ্বাসী নই। কারণটা আপনিই বলে দিয়েছেন "পরিপূরক" শব্দের স্বার্থক ব্যবহারের মাধ্যমে।

    "সমঅধিকার" বলতে আমরা নারী-পুরুষের একই কাজ করার অধিকারকে বলতে পারি না। বরং সমঅধিকার বলতে এমন একটা ব্যবস্থাকে বোঝানো হবে যেখানে "নারী তার নিজস্ব স্বকীয়তা বজায় রাখার সকল সুযোগ পাবে।" অর্থাত সমঅধিকার যেমন নারীর মাতৃত্বকালীন সময়ে তার সকল সুযোগ-সুবিধা-সেবা নিশ্চত করবে, তেমনি সন্তান পালনে পুরুষের দায়িত্ব পালনও নিশ্চত করবে। তেমনি কর্মক্ষেত্রে সমঅধিকার বলতে আমি প্রাকৃতিক শারীরিক গঠনানুযায়ী কর্মের অধিকারকেই বুঝতে চাই। সমঅধিকারের নামে নারীর অনুপযোগী (শারীরিকভাবে অনুপযোগী) কাজে কেবল "নারীবাদ" - এর দোহাই দিয়ে নারীর অংশগ্রহণ মেনে নিতে চাই না । একটা ছোট্ট উদাহরণ দিতে চাই:
    আজকাল পাশ্চাত্যের অনেক নারীর মাঝে ক্যরিয়ার এবং মাতৃত্ব নিয়ে যে দ্বন্দ্ব - সেখানেইতো আমরা নারীবাদের মৌলবাদী রূপ দেখতে পাই। তারা বেমালুম ভুলো যাচ্ছে যে, " মাতৃত্বও তার ক্যারিয়ারের একটা অংশ; সফল মাতৃত্ব তার ক্যারিয়ারের মুকুট স্বরূপ।" ব্যাপারটা এমন হয়ে দাড়িয়েছে যে, কোন কোন নারী তার ক্যারিয়ার গড়ার জন্য মাতৃত্ব কিংবা শিশুর যন্ত নেয়ার সময় পাচ্ছে না। অথচ পুরুষের চেয়ে শিশু পালনে নারী ১০০ গুণ বেশি দক্ষ। সমঅধিকারের নামে যদি পুরুষকে তার ২/আড়াই ব্ছরের শিশুর সর্বক্ষণ যত্ন নিতে হয়, সেটা ঐ শিশুকে তার মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করার সমান, কারণ শিশুর জন্য বাবার চেয়ে তার মাকে বেশি দরকার। সুতরাং কর্মক্ষেত্রে সমঅধিকার বলতে এমন ব্যবস্থাকে বোঝাতে চাই, যেখানে একই সাথে নারী তার অফিসিয়াল কাজের পাশাপাশি সন্তানকে সময় দেবার জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ পাবে। সেটা এমনও হতে পারে যে, যে সকল নারীর ৪/৫ বছরের কম বয়সী শিশু আছে, তাদের official working hour পুরুষের চেয়ে কিছুটা কম হবে এবং সে ঐ সময়টা তার সন্তানকে দেবে। কিন্তু সে পুরো salary পাবে। নারীবাদ যদি "সমঅধিকার"-এর নামে নারীকে তার মৌলিক দায়িত্বপালনে নিরুতসাহিত করে, কিংবা নারীবাদ যদি নারীর মৌলিক অধিকার নিশ্চিত না করে কেবল "সকল ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ" এর সুযোগকেই সমঅধিকার হিসেবে চিহ্নিত করে, তবে সেটা সমাজের জন্য্ ই অকল্যাণকর।
    "পাশ্চাত্যের নারীবাদ" নারীর সমঅধিকার নিয়ে যতটা চিন্তিত, তার চেয়ে তারা "পুজিবাদের দৃষ্টিতে নারীত্ব" প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে বেশি মনোযোগী। তাইতো যেখানে পুরো পাশ্চাত্য-পৃথিবী "নারীর সমঅধিকার" নিয়ে উচ্ছলম্ফ করছে, সেখানে যখন "হিজাব নিশিদ্ধ" করা হচ্ছে - তখন পাশ্চাত্যের নারীবাদিরা একেবারে নিশ্চুপ; তারা এর মধ্যে নারীর অধিকার-হরণ খুঁজে পাচ্ছে না। কেন ??? সমঅধিকার কি নারীকে তার নিজস্ব পোশাক পছন্দ করার অধিকারের কথা বলে না ???
    তাই সমঅধিকার বলতে শুধুমাত্র "একই কাজ করার অধিকার"কে মেনে নিতে চাই না, বরং "নারীর জন্যে সকল ক্ষেত্রে অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চত করা"কে বোঝাতে চাই। তাই নারীবাদের নামে "পারিবারিক বন্ধন ভেঙে যাওয়া", "জন্মের পর থেকেই একটি শিশুর Child Home এ বেড়ে ওঠা" - এসব দেখতে চাই না। নারীকে যেমন মা হিসেবে সফল দেখতে চাই, তেমনি তাকে পেশাজীবী হিসেবেও সফল দেখতে চাই; "নারীবাদ" বলতে সমঅধিকার নয়, বরং "কোন কাজেই নারীর অধিকারকে খর্ব না করা"কে বুঝতে চাই।

    -- --- ---- ------ ------- ----------- -----------------

    জবাব দিন
    • ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

      পরিপূরক কথাটা শুধু নারী-পুরুষের মধ্যেই নয় সর্বক্ষেত্রে প্রযোজ্য। যেমন তোমরা তিনবন্ধু মিলে একটা প্রজেক্ট করবে। একই কাজ তো সবাই করবে না - কাজ তো ভাগাভাগি করে নিবে তাই না?
      তোমার কিছু কথার সাথে একমত হতে পারছি না। শারীরিকভাবে পারবে না বলে আগেভাগেই নারীকে কোন কাজে অনুৎসাহিত বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা ঠিক নয়। এক্ষেত্রে সমান সূযোগ থাকতে হবে তাহলে পরিবারগুলো ছেলে সন্তানের জন্য বেশি আগ্রহী হয়ে উঠবে না।
      আমেরিকায় ডেকেয়ারে যারা বাচ্চা দেখার দায়িত্বে থাকে তাদের অনেক পড়াশোনার মধ্যে দিয়ে আসতে হয়। বরং আমি দেখেছি অনেক বাসায় থাকা মায়েরা জানে না কিভাবে বাচ্চা দেখাশোনা করতে হয়। হয় নিজে টিভি দেখছে না হয় বাচ্চাদের টিভির সামনে বসিয়ে রাখছে।
      একবার যে মা হয় সে সারাজীবনের জন্যই মা। প্রথম চার-পাঁচ বছর বাচ্চাকে সময় দিলেই সব হয়ে যায় না। সেটা মাকেই ঠিক করতে দেওয়া হোক সে কি করবে।


      “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
      ― Mahatma Gandhi

      জবাব দিন
      • মো. তারিক মাহমুদ (২০০১-০৭)

        আপু , প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির পক্ষে নই। তবে, "হাইরাইজ বিল্ডিয়ের কন্সট্রাকশনের কাজে কিংবা রাস্তা মেরামতের কাজে যখন পুরুষের পাশাপাশি নারীকেও দেখি মাথায় ১০/১২ টা ইট নিয়ে সিড়ি বেয়ে উঠতে ... ..." - তখন "নারীবাদের সমঅধিকার তত্ত্ব" - একটু বেমানান মনে হয়। তবে আপনার একটা কথা হৃদয় ছুয়ে গেল, একবার যে মা হয় সে সারাজীবনের জন্যই মা। :hatsoff: অবশ্য এ প্রসঙ্গে আমি যে বিষয়টা তুলে ধরতে চাইছিলাম তা হচ্ছে : "পাশ্চাত্য নারীবাদ: ক্যারিয়ার এবং মাতৃত্ব " । নারীদিবসে "পাশ্চাত্য নারীবাদ: ক্যারিয়ার এবং মাতৃত্ব - সংঘাত এবং সমোঝোতা " শিরোনামে লেখাটা ব্লগে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পরীক্ষার চাপে পুরো লেখাটা শেষ করতে পারিনি। আশা করি , পরীক্ষার পরে share করব।

        জবাব দিন
  16. এই প্রথম আপনার একটি ব্লগ পড়া।।ভাল লেগেছে।। নারী শিক্ষা, নারীবাদ এবং নারী স্বাধীনতা এক নয়।। এটা আমাদের নারীরা বুঝে না।। তাই প্রতিটি মা যেন আপনার মত ভাবে।।

    জবাব দিন
  17. মইনুল (১৯৯২-১৯৯৮)
    সেদিন নির্ঝর বললো, শান্তা তোমার গাড়ির সার্ভিসিং এর তারিখ পার হয়ে গেছে। এখনই যাও।
    আমি উত্তর দিলাম, চুলায় মাছটা মাত্র বসিয়েছি। তুমি রান্নাটা দেখ, আমি যাচ্ছি।
    তৎক্ষণাৎ পতির প্রতিত্তুর, না না। তুমি দেখ। আমিই যাচ্ছি।

    আমার মনে হয় এইটা ব্ল্যাকমেইলের পর্যায়ে পড়ে ...... 🙁 🙁 🙁
    খুবই দারুন লাগলো লেখাটা আপু ......

    অফ টপিক ---
    আমার ব্যাক্তিগত মতে, সবারই সব কাজ কিছু কিছু শিখে রাখা উচিৎ। ছেলেরা কিছু কিছু রান্নাবান্নার কাজ জানা দরকার। তাইলে দেশের বাইরে চলে এলে, যে সমস্ত জায়গাতে গৃহকর্মিদের বেতন শুনে নিজেরি গৃহকর্মি হয়ে যেতে ইচ্ছে করে, সেই সব জায়গাতে বেশ সুবিধা হয়। আর একটু ভালো করে রান্নাবান্না শিখে যদি অ্যানিভার্সারি বা জন্মদিনে বউকে হোম কুকড ডিনার খাওয়ালেই জ্যাকপট ......

    জবাব দিন
  18. শাওন (৯৫-০১)
    আমার কাছে সমতার থেকে পরিপূরক শব্দটা আমার বেশি পছন্দের। গত বার বছর ধরে একটা ছেলের সাথে মোটামুটিভাবে শান্িতপূর্ণ সহাবস্থান করে আমার এই বোধোদয়। জীবন থেকে নেওয়া।

    সম্মান জানাই এই পরিপূর্ন নারীকে......হাজার সালাম...সত্যিকারের সমতা-ই হলো "পরিপূরক" ...।


    ধন্যবাদান্তে,
    মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান শাওন
    প্রাক্তন ক্যাডেট , সিলেট ক্যাডেট কলেজ, ১৯৯৫-২০০১

    ["যে আমারে দেখিবারে পায় অসীম ক্ষমায় ভালো মন্দ মিলায়ে সকলি"]

    জবাব দিন
    • আমার কাছে সমতার থেকে পরিপূরক শব্দটা আমার বেশি পছন্দের। গত বার বছর ধরে একটা ছেলের সাথে মোটামুটিভাবে শান্িতপূর্ণ সহাবস্থান করে আমার এই বোধোদয়। জীবন থেকে নেওয়া।

      জবাব দিন
  19. আমিন (১৯৯৬-২০০২)

    পড়েছি আপু। লেখাটা ভালো মত পড়েছি। দু এক জায়গায় হয়তো একটু দ্বিমত থাকতে পারে তবে সেটা খুব বড় ধরণের মত দ্বৈততা নয়। লেখার মূলসুরের সাথে খুব ভালো মত একমত। ইচ্ছা ছিলো পয়েন্ট টু পয়েন্ট ধরে এই পোস্টের উপর আমার মতামত গুলো দিবো। সময় করে সেটা দেয়ার আশা রাখি। তবে আপনার চিন্তাভাবনা গুলো কিছু কিছু জায়গায় বেশ পরিষ্কার মনে হয়েছে।
    আপাতত শোকেসে রাখছি সময় করে বলে যাবো।
    একটা কথা শুধু বলে যাই আমি নিজে নারী স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। তবে সে স্বাধীনতার স্বরূপ কর্পোরেট দেখানো সস্তা তথাকথিত স্বাধীনতায় না বরং মননে কর্মে চিন্তায় নিজেকে স্বাধীন করে তোলা (যদিও খুব বেশি পুরুষও মনে হয় এদিক থেকে স্বাধীনতা লাভ করেছে বলা যায় না )।
    পোস্টের জন্য আপনাকে স্যালুট.....।

    জবাব দিন
  20. সেলিনা (১৯৮৮-১৯৯৪)

    আপু এই লেখাটা বেশ কয়েকবার পড়েছি। আপনার নারীবাদের দুইটা সংজ্ঞাকে যদি কন্টিনিউয়াস স্কেলে রাখা যায় তাহলে আমি মনে হয় মাঝামাঝি থাকবো। আকাশ আর আমি দুজনে বাসার সব কাজ মোটামুটি আধা আধি ভাগ করে নিয়েছি- সেটা রান্না হোক আর গাড়ির সার্ভিসিং-ই হোক।
    নারী অধিকার, মুক্তিযুদ্ধ, পরিবেশ রক্ষা এমন আরো কিছু বিষয় আছে যেটাতে আমরা আমি আছি বলে লিপ সার্ভিস দিতে যতটা অভ্যস্ত, সেই থাকাটাকে বাস্তবে প্রয়োগ করতে ঠিক ততটাই অনভ্যস্ত। এখাঙ্কার কিছু কমেন্টেও সেটা ওঠে এসেছে। লাবলু ভাইয়ের ভাষায় - 'মনেপ্রাণে উদার হওয়াটা আসলেই কঠিন'।
    আমার মনে হয় এ সমস্যাটা সব দিক থেকে আমাদেরকে আষ্টে পৃষ্ঠে বেঁধে ফেলেছে- পরিবার, সমাজ, শিক্ষা ব্যবস্থা, ধর্ম, পূঁজিবাদ সবগুলোর অপ/কু প্রয়োগ নারীকে বস্তু, পণ্য, হিসেবে উপ্সথাপন করছে। আর আমরা সমাজবদ্ধজীবেরা (নারী ও পুরুষ সকলে) নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী কখনো শিকার করছি আবার কখনো শিকার হচ্ছি।
    এ চক্র থেকে উত্তরণের উপায়ও সর্বগ্রাসী হতে হবে- অর্থাৎ পরিবার, শিক্ষা ব্যবস্থা, সমাজ সব জায়গায় একই সাথে কাজ করতে হবে।
    আমার কাছে আরো একটা জিনিষ মনে হয়, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা না আসলে নারী কোন দিনই পরিবারে ও সমাজে নিজের অবস্থান শক্তভাবে তুলে ধরতে পারবেনা।
    অনেক ক্ষেত্রেই নিজের পরিবারের মধ্যেই নারীর (কখনো কখনো পুরুষেরও- যদিও সেটা খুব কম) অবদমন দেখেও যখন (মন থেকে মেনে নিতে না পেরে) চোখ বন্ধ করে রাখি, ভাবি এটা তার নিজস্ব চয়েস তখন এসব কথা জানা-বোঝার জন্য নিজেকে হিপোক্রিট মনে হয়।

    জবাব দিন
  21. তানভীর (৯৪-০০)

    বেশ কয়েকবার পড়লাম লেখাটা, চমৎকার লেগেছে। গুছিয়ে লেখার কারণে আপনার বক্তব্য বুঝতে কোন সমস্যা হয়নি।

    আত্মবিশ্বাস থাকা আর স্বাবলম্বী হওয়া- এ দুটো জিনিস আমাদের সবারই খুব দরকার (এ মুহূর্তে মনে হয় নারীদের একটু বেশি দরকার)। সে সাথে দরকার আমাদের দৃষ্টিভংগীর পরিবর্তন। নারীদের নারী না ভেবে মানুষ ভাবতে পারলেই অনেক ল্যাঠা চুকে যায় (যদিও ব্যাপারটা বেশ কঠিন, কিন্তু এর বিকল্প নাই)।

    যে দর্শন অনুসরণ করলে জীবনের যে কোন মূহুর্তেই ভালো থাকা যায় আমি সে দর্শন অনুসরণ করতে চাই।

    আমিও 🙂

    অফটপিকঃ ধাঁধার উত্তর সময়ের মধ্যেই পেরেছিলাম। 😀

    জবাব দিন
  22. সাইফ শহীদ (১৯৬১-১৯৬৫)

    আর একবার এসে সব মন্তব্যগুলি পড়লাম। ভালো লাগলো সবার ম্যাচুউর চিন্তা ক্ষমতা দেখে । শান্তা, তুমি লিখেছ "আপনি আমার সম্পর্কে অনেক বেশি বলে ফেলেছেন – তবে দুহাতে আজলা ভরে এরকম স্নেহ নিতে ভালো লাগছে" - আসলে আমি অতিরঞ্জিত কিছু লিখিনি । সত্য বলতেই আমি সাধারণত বেশী পছন্দ করি ।

    একটা জিনিস জানতে ইচ্ছে হচ্ছে - বাংলাদেশে বসবাসকারী নারী ও পুরুষরা কতটা মুক্তমনা হতে পেরেছে নারীবাদের ব্যাপারে । আমাদের শ্রদ্ধেয় দুই নেত্রী যদি হাসিনা ও খালেদা না হয়ে - হাসান ও খালেদ হতেন তবে কি এখনকার মতই ব্যবহার করে চলতেন ? অবশ্য দুজনেরই তিন কুড়ির বেশী বয়েস এবং উত্তর-মেনোপজ পিরিয়ডে আছেন - এর কারণও তাঁদের এই ব্যবহারে প্রতিফলিত হতে পারে [আমি জানি যে এ ধরনের মন্তব্যের জন্যে আমেরিকার এক নামকরা বিচারককে পদত্যাগ করতে হয়েছিল - তাই এই প্রশ্নে কেউ বিব্ব্রত হলে ক্ষমা চাচ্ছি ]

    জবাব দিন
    • ফয়েজ (৮৭-৯৩)

      ভাইয়া আমার ধারনা দুজনেই "ব্লক মাইন্ডেড"। তারা নারী ঠিকই কিন্তু তারা বড় হয়েছেন পুরুষতান্ত্রিক বা পুরুষকেন্দ্রিক পরিবেশের মাঝে, তাই দুজনেরই মানসিকতাই "ব্লকড", স্বাভাবিক চিন্তা করতে পারেন না। চিন্তা ভাবনা গুলো অসংখ্য গলি-ঘুপচি পেরিয়ে সিদ্ধান্তে আসে।

      এটা আমার ধারনা 🙁


      পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

      জবাব দিন
  23. মেহেদী হাসান (১৯৯৬-২০০২)

    বেশ কিছুদিন পর সময় করে লেখাটা পড়লাম। খুবই ভাল লেগেছে। নারীবাদ নিয়ে এমন লেখা কখনোই পড়া হয়নি। আপনার মন্তব্যের মধ্যে আপনি বলেছেন অনুবাদ নয়, লেখা উঠে আসা উচিৎ সমাজের ভিতর থেকে। এই বিষয়টির সাথে আমি একমত। আপনার লেখায় অনেক বাস্তবতার প্রতিফলন পেয়েছি। লেখাটা এমন সুন্দর করে উপস্থাপনের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন।

    জবাব দিন
  24. অনেক সময় নিয়ে লেখাটা ২য়বারের মতো পড়লাম শান্তাপু।অনেক ভালো লাগলো আপনার এত গুছানো লেখাটা পড়ে,সত্যটাকে কি দারুণ করে তুলে এনেছেন।
    যতদিন বাসায় ছিলাম,বাবা চাচা মামা বা ভাই,সে যেই হোক না কেন আমাদের পরিবাবের কোন মেয়েকে কখনও নিজেদের থেকে আলাদা করেননি,তাই মেয়ে প্রধান না ছেলে প্রধান এই ধরনের কোন দৃষ্টিভঙ্গির সাথে মোটেও পরিচিত ছিলাম না।কিন্তু ইন্টার এর পরে বাইরে এসে,বিশেষ করে বন্ধু মহলেই সবচেয়ে বেশি যে কথাটা শুনেছি,'তুই তো মেয়ে' অথবা 'আমরা তো মেয়ে'।আমি মেয়ে তাই আমি কোন টেকনিক্যাল জিনিস বুঝব না,আমি মেয়ে তাই আমি আর একটা ছেলে বন্ধুর সাথে একা বসে কথা বলতে পারবোনা,যদি না সে আমার বয়ফ্রেন্ড না হয়,আমি মেয়ে তাই এটা করতে পারবো না,ওটা করতে পারবোনা।

    আমার নারীত্বই আমার সত্তা।কিন্তু মাঝে মাঝে মনে হতো মেয়ে শব্দটা যেন খুব বাজে একটা গালি,খুব প্রকট কোন physical or mental disability.
    আপু,যেহেতু আমার সদস্যপদ নেই,তাই লেখাটা প্রিয়তে নিতে পারলাম না,কিন্তু আমার মনে এই লেখাটা আজিবন থাকবে।

    জবাব দিন
  25. মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

    এই লেখায় পরিশীলিত মন্তব্য করার যোগ্যতা আমার এখনো হয়নি-শুধু আমার সমর্থন্টুকু জানিয়ে গেলাম।আমার ছোটবোনকে লেখাটা পড়াবো,মা কেও।শান্তাপু,আই এম প্রাউড টু বি ইয়োর ব্রাদার।

    জবাব দিন
  26. জিহাদ (৯৯-০৫)

    সবাই সবকিছু নিয়ে বলে গেছে। আমি শুধু ছবিটার কথা বলে যাই। অনেকক্ষণ মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলাম। মা-সন্তানের এমন চমৎকার কম্পোজিশন অনেকদিন কোন ছবিতে চোখে পড়েনি।


    সাতেও নাই, পাঁচেও নাই

    জবাব দিন
  27. সাবিহা জিতু (১৯৯৩-১৯৯৯)

    এফবি তে কেউ একজন এই লিখা টা আগেই পোস্ট দিয়েছিল, তখনি পড়েছি এবং আমার নিজের ওয়ালেও সেয়ার করেছি। কিন্তু জানতাম না কি করে কমেন্ট দিতে হয়। নারীবাদ নিয়ে এতো লেখা পড়েছি কিন্তু সত্যি বলছি, আপনার এই লিখাটার মতো এতো ভাল কোনোটা লাগেনি।


    You cannot hangout with negative people and expect a positive life.

    জবাব দিন
  28. "বুয়েটে ক্লাসে প্রথম হওয়া যে মেয়েকে প্রায়ই ছেলে আর মেয়েদের সমতা নিয়ে কথা বলতে শুনতাম, প্রবাসে সেই একই মানুষকে বলতে শুনলাম – মেয়েরা একদিক দিয়ে সুবিধাভোগী, কর্মজীবি স্বামী থাকলে কাজ করার অতো বাধ্যবাধকতা থাকে না। এভাবে ভাবাটা কেন জানি শুনতে ভালো লাগে না। নিজের পরিবারের জন্য হয়তো থাকে না কিন্তু গরিব দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় বিনে পয়সায় পড়ে এসে আমরা কী করে দেশের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতার কথা ভুলে যাই? মেয়েটির জায়গায় যদি কোন গরিব ছেলে পড়তে পারতো, হয়তো সে তার পরিবারের পরের প্রজন্মকে শিক্ষার আলোতে আলোকিত করতে পারতো।"
    apu আপনি কি শেষের লাইনটি একটু বিশ্লেষণ করবেন? আপনি কি বোঝাতে চাচ্ছেন যে buet এ প্রথম হওয়া মেয়েটি যিনি কোনো জব করছেন না, ( অথবা তার মত অন্যান্য মেধাবী তরুনীরা যারা তাদের মূল্যবান degree কাজে লাগাচ্ছেনা, জব করে দেশের উন্নয়নে শরিক হচ্ছেনা ) এভাবে তিনি তার সন্তান বা পরবর্তী প্রজন্মকেও প্রপার way তে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করছেনা অথবা তাদেরকে সুশিক্ষা থেকে বঞ্চিত করছেন?

    জবাব দিন
    • ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

      আয়েসা ধন্যবাদ ধন্যবাদ তোমার প্রশ্নের জন্য। তুমি যেই প্রশ্নটা করলে তার উত্তরে আমি এক্টা পুরো ব্লগ লিখে ফেলতে পারি। এই বিষয়টার উপর ছোট করে এ মাসে এখানকার একটা লোকাল পত্রিকায় কিছুটা আলোকপাত করেছিলাম। পরশী সার্চ দিয়ে দেখতে পারো।
      narI kothone খেয়াল করবে জব করা না করার প্রতি আমি তেমন আলোকপাত করিনি। আমার প্রধান ফোকাস মা হিসেবে আমি কেমন? একজন চ্যালেঞ্জিং বা স্বপ্নদেখা মায়ের সন্তানদের অনেক সম্ভাবনা যে তারাও একদিন সেরকম চ্যালেঞ্জিং এবং সম্ভাবনাময় হয়ে উঠবে। খুব কষ্ট করা বা প্রতিভাবানদের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম তো ঘটেই। এটা তো স্বীকার করবে যে কষ্ট করে ব্যালেন্স করে ঘরে বাইরে দুদিক সামলাচ্ছে সে যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং। এই ব্যালেন্স জিনিষটা কিন্তু এতো সহজে আয়ত্তে আনা যায় না। অনেকে চাকুরি করতে গিয়ে ঘর-সন্তান ঠিক রাখতে পারছে না আবার অনেকে ঘর-সন্তান ঠিক রাখতে গিয়ে চাকুরী করতে পারছে না। বাংলাদেশে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আমরা মেয়েরা কথাশোনা লক্ষী সন্তান। যতোই ভালো রেজাল্ট করি না কেন অনেকাংশেই দেখা যাচ্ছে আমাদের পৃথিবীটা আসলে পড়ার ঘরের থেকে বেশি বড় হয়ে উঠতে পারেনি। লেখাটা অনেক বড় হয়ে যাচ্ছে। আমি বরং একটা পোস্ট দিই।
      তোমাকে অনুরোধ রইলো আলোচনায় আরো অংশগ্রহন করার। হয়তো তোমার থেকেই আমি নতুন কিছু শিখতে পারবো যা এর আগে ভাবিনি। (সম্পাদিত) (সম্পাদিত)


      “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
      ― Mahatma Gandhi

      জবাব দিন
  29. দিহান আহসান

    অনেক আগেই পড়েছিলাম, মন্তব্য করতে পারিনি, পিসি ছিলোনা।
    আপি আপনার লিখা সম্পর্কে বলার কিছুই নাই, শুধু আমার ভালো লাগাটা জানিয়ে গেলাম।
    খুব সুন্দর হয়েছে ছবিটা। রাইসা মামনি'র জন্য অনেক আদর রইলো। ভালো থাকবেন। 🙂

    আপনার ধাঁধাঁ'র উত্তর আগে থেকে জানা ছিলো। 🙂

    জবাব দিন
  30. আপু ,
    আপনার কাছ থেকে এমন promt response পেয়ে খুব ভালো লাগলো. ধন্যবাদ আপনাকে. আশা করি , আপনি উল্লেখ্য বিষয়টি তে আলোকপাত করে বিশদ ভাবে লিখবেন. আমার নিজস্ব কিছু অভিব্যক্তি থাকলেও আমি অন্যের যুক্তিযুক্ত মতামতগুলো নির্বিঘ্নে নিজের করে নিতে পারি. হ্যাঁ, আপনি প্রত্যক্ষভাবে মেয়েদের job করা নিয়ে কিছু লেখেননি. ম অপুর বেপারে যা পরলাম তা সত্যিই হতাশাজনক। এভাবে ধর্মীয় গোড়ামি টেনে না নিয়ে যদি তিনি বলতেন বাচ্চাগুলোকে দেখব বলেই আমি বহির্মুখী হইনি, তাতে আপনার আর আমার কষ্ট কিছুটা লাঘব হত বৈকি. আমি একজন তুখোড় মেধাবী মহিলা কে কাছ থেকে দেখেছি, যিনি তার ছেলেটি highschool grad এর পর usmle পাশ করলো, এখন উনার residency ও শেষ. আরেকজনকে দেখেছি buet এর 1st 2nd হওয়া একজনকে, উনিও বাচ্চাগুলো যখন ছোট ছিল কিছুই করতেন না . কিন্তু এখন যখন ছেলেটি uni তে আর মেয়েটি high school এ উনি জব করা শুরু করেছেন. যদিও উনি হয়তবা উনার batchmate দের কাছ থেকে পিছিয়ে আছেন, তারপরও তিনি গর্বিত. এই বিদেশ বিঁভুই-এ বাচাগুলো তিনি নিজের হাতে সময় দিয়ে মানুষ করেছেন
    . আমি বলছিনা সবাই কে তাদের মত হওয়া উচিত, একেজনের priority লিস্ট এ

    জবাব দিন
  31. একেকটি জিনিস অগ্রাধিকার পেয়ে থাকে. . Mo apu amader moto holey ki ba korte parto, khub beshi hole Intel e ekta job korte parto. Asha kori uni onar islam shomporke vranto dharona theke khub shighroi ber hoye ashben. Ar totodine onar bachchagulo ektu boro hoye jabey. Intel na hoy ei 7-8 bochor nai ba pelo Mo apuke. kintu bachchagulo to tader precious years gulote Maa er সান্নিধ্য
    pelo..... ja tader sharajiboner পূঁজি hoye thakbe. Mo apu ebong unar moto jara dhormiyo কুসংস্কারে আচ্ছাদিত,তাদের যেন বোধদয় সেই আশায়.....আমি আয়শা.....

    PS...amar bangla -english shongmisroner jonno ami khoma chachchi, bangla type korte onek deri hoy.
    Apu.... thanks once again. u take care. 🙂

    জবাব দিন
  32. অসাধারণ লেখা। অনেক ধন্যবাদ। নারী মুক্তির সাথে পুরুষ মুক্তি যে একই সূত্রে গাঁথা এই কথাটা বুঝতে আমাদের সমাজে আর কত সময় লাগবে তা দেখার বিষয়।

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : ফখরুল (১৯৯৭-২০০৩)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।