১৯৯৯ সালের ১৭ই নভেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ২৫শে নভেম্বরকে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস হিসেবে ঘোষনা করা হয়। ক্ষুধা, দারিদ্র, অপুষ্ঠি, অশিক্ষা, বেকার সমস্যা এই সকল সাধারণ সমস্যার পাশাপাশি নারীদের আরো কিছু মারাত্মক সমস্যার মধ্যে দিয়ে যেতে হয় শুধুমাত্র তারা নারী বলে। মালয়েশিয়া কিম্বা মধ্যপ্রাচ্যে শ্রমিকদের অবর্ণনীয় দুঃখ কষ্ঠের কথা আমরা জানি। সেই শ্রমিক যখন নারী হয় তখন তার সাথে যোগ হয় শারীরিক আর যৌন নির্যাতন। আর দেশের মধ্যে তো এ নির্যাতনের কোন শেষ নেই। এসিড সন্ত্রাস, পারিবারিক সন্ত্রাস, যৌতুক, ধর্ষন, গন ধর্ষন, ফতোয়া, গৃহ পরিচারিকা নির্যাতন, মাস্তান সন্ত্রাস এরকম আরো অনেক নির্যাতনের কথা উল্লেখ করা যাবে। শুধু গত বছরের হিসাবেই দেশের বিভিন্ন থানায় প্রায় সতেরশর মতো মামলা লিপিবন্ধ করা হয়েছে। আর এর বাইরে কত শত ঘটনা যে লোকচক্ষুর অন্তরালে থেকে যাচ্ছে তার হিসেব হয়তো কোনদিনই পাওয়া যাবে না।
যুগ যুগ ধরে নারীরা বৈষম্যের শিকলে বন্দি। শারীরিকভাবে দূর্বল হওয়াটাই কি এর পেছনের একমাত্র কারণ? নিশ্চয় তা নয়। কেউ তো কারো সাথে পাঞ্জা লড়ে লড়ে শীর্ষ পদে যায় না। তবে কী নারীদের মানসিকভাবে পঙ্গু করে রাখা হয়েছে? হয়তোবা। শতাব্দীকাল ধরে পুরুষতান্ত্রিকতার ফল হলো আজকের মানসিক আর অর্থনৈতিকভাবে নির্ভরশীল নারী। কারণ খুব ভাগ্যবান কেউ কেউ এই বৈষম্যের শিকল থেকে মুক্তি পেয়ে তো ঠিকই তারা তাদের যোগ্যতার সাক্ষর রাখতে পারছে। যোগ্যতা বলতে ঘর-বাহির উভয় বা যে কোন একটি ক্ষেত্রকে বোঝাচ্ছি। এখনো অনেক পরিবারেই নারীর ঘরের কাজের কোন মূল্য দেয় না। অর্থোপর্জনটাকেই একমাত্র কাজ হিসেবে পরিগনিত করে। নারী পরিনত হয় অলিখিত দাসীতে। আত্মবিশ্বাস আর আত্মসন্মানটুকু নিংড়ে নিলে একটা মানুষের জড়ভরতে পরিনত হওয়া ছাড়া আর কিই বা উপায় থাকতে পারে?
অনেক পুরুষের লেখায় দেখেছি তারা অনুযোগ করছে যে বৈষয়িক জিনিষের চাপ প্রয়োগ করে অনেক নারী পুরুষদের উপর অত্যাচার করে থাকে। আসলে মূল্যবোধের অবক্ষয় থেকে তো নারী-পুরুষ কেউই মুক্ত নয়। স্কুলিংটা তো শুধু বিদ্যালয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ না, এটা গভীরভাবে প্রোথিত হয়ে আছে পরিবার আর পরিবেশের মধ্যে। খুব অল্পসংখ্যক ঘটনার জন্য আমরা আসল সমস্যা থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নিতে বা অস্বীকার করতে পারি না। যদিও মনে করি প্রতিটা সমস্যাই গুরুত্বপূর্ণ এবং তাদেরকে একসাথে মিলিয়ে ফেললে চলবে না।
বাংলাদেশের গ্রামবাংলা, মফস্বল কিম্বা শহরেও শতকরা কতভাগ ঘরে নারীর মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হয়? অনেকে হয়তো বলবে নারীই নারীকে নির্যাতন করে। আমার কাছে এটাকে একটা চক্র বলে মনে হয়। দুর্বলের উপর সবলের চক্র। কিম্বা একটা ছেলে সে তার মা-বোনকে যেভাবে জীবনযাপন করতে দেখেছে, নিজের স্ত্রীর ক্ষেত্রে হয়তো এর বেশী কিছু ভাবতে পারে না।
পেছনের কারণটা যেটাই হোক সামনের দিনগুলোতে আমরা সবাই একটা ইউটেপিয়া ধরনের সমাজব্যবস্থা দেখার অপেক্ষায় আছি যেখানে কোন নারী নির্যাতন থাকবে না।
ইতিহাসবিদেরা লিখবে ‘একবিংশ শতাব্দীতে শুধুমাত্র নারী হবার অপরাধে শেষ নারী নির্যাতনের রেকর্ড পাওয়া যায় …..’
সবশেষে সবাইকে ঈদের আগাম শুভেচ্ছা।
আপি আপনাকেও ঈদের আগাম শুভেচ্ছা
apu, iccheta apnar sathe mile mile jacche. kintu ami mone kori Utopia noi, really somvob. (basai gie boro kore banglai comment korbo)
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
ইউটোপিয়ারে ধর্বেন এইটা সন্দেহ কর্ছিলাম :grr: :grr:
------------------------------------------------------------------
কামলা খেটে যাই
ঠিকই ধরেছিলে বৎস্য :grr:
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
মনে হইল ট্রেইলার দেখায়ে আর মুভি দেখাইলেন না। 😛
শান্তাপা, আমার মনে হয় না ইউটোপিয় সমাজব্যবস্থা বা এর কাছাকাছি কোন অবস্থায় আমরা কখনো পৌঁছাইতে পারব। চারপাশে যতোটূকু দেখেছি তাতে নিজে বিরাটরকম সিনিক হয়ে গেছি। 🙁
এই মানসিকতাটা আমাদের খুব গভীরে প্রোত্থিত, বেশ সময় লাগবে এর থেকে বের হতে। তবে আমি আশাবাদী, আমরা আমাদের মানসিকতা পরিবর্তন করতে পারব এবং উপহার দিতে পারব নারী নির্যাতনবিহীন একটা সমাজ।
আপনাকেও ঈদ মোবারক আপু, ভালো থাকবেন। 🙂
আপি আপনাকেও ঈদের আগাম শুভেচ্ছা
লেখাটা আরো বড় হবে বলে মনে করেছিলাম .....
সেই সময়টাতে যেতে ইচ্ছা করে ...
ঈদ মোবারক।
নারীদের জন্য দুইটা দিবস নাকি? আমাগো জন্য এক্টাও নাই 🙁
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
কেন আপনার জন্য তো বাবা দিবস আছে 😕
আমাগো লাইগা দিবস আছে তো 😀 😀
মে দিবস(বিশ্ব শ্রমিক দিবস) 😀 😀
------------------------------------------------------------------
কামলা খেটে যাই
আমার,জুনাভাইয়ের,জুলাভাইয়ের,মেহেদী ভাইয়ের,জাফর ভাইয়ের আর চাওয়ালা রকিব্যার জন্য আছে ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস। B-) B-) B-)
=)) =)) =))
আমাদের জন্য দিবস নাই একটাও :(( :(( :(( :((
আপু ঈদ মোবারক অগ্রীম 🙂
ঈদ মোবারক আপু।
আমার মনে হয় পুরোটাই দূর্বলের উপর সবলের নির্যাতন। এর মাঝেই রয়েছে সবল পুরুষের দূর্বল নারীর উপর নির্যাতন, সবল নারীর দূর্বল নারীর নির্যাতন আর সুযোগ পেলে সবল নারীর দূর্বল পুরুষের উপরে নির্যাতন। সকল নির্যাতনের বিরুদ্ধেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
আমি এই মতটা পোষণ করি আপা। বাংলাদেশের একটা বড় সমস্যা কি জানেন আপা, ছেলেরা যতটা না, মেয়েরা তার চেয়ে বেশি মেয়েদের শত্রু। মেয়েরা যদি নিজেদের বঞ্চিত না করে রাখত, তাহলে কোন ছেলের সামর্থ্য নাই মেয়েদের বঞ্চিত করে রাখার। মেয়েদের মধ্যে এই জিনিসটা ক্লিকই করে না যে এটা তার অধিকার।
এই মানসিকতাটা আমাদের খুব গভীরে প্রোত্থিত, বেশ সময় লাগবে এর থেকে বের হতে। তবে আমি আশাবাদী, আমরা আমাদের মানসিকতা পরিবর্তন করতে পারব এবং উপহার দিতে পারব নারী নির্যাতনবিহীন একটা সমাজ।
আপনাকেও ঈদ মোবারক আপু, ভালো থাকবেন। 🙂
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
এইখানে আমার ঘোর আপত্তি। সময় চলে যাবে ঠিকই, কিন্তু মানষিকতার কোন বদল হবে না। কারণ, সময় গেলেই 'এমনি এমনি' মানসিকতা বদলায় না। তার জন্য আবশ্যক বিদ্যমান বস্তুগত সমাজকাঠামোর পরিবর্তন, যা'র জন্য সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে সমবেত ভাবে কিছু সংখ্যক মানুষকে চেষ্টা করতে হয়।
সময়ের হাতে সমাজ বদলের ভার ছেড়ে দেওয়া আর আমার হাতে মাইক্রোসফট ছেড়ে দেওয়া একই কথা 😉
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
উদাহরণটা সেইরকম হইছে =)) =))