কাঁঠাল বৃত্তান্ত

কলেজের স্মৃতিচারণ করা হয় না বহুদিন। আজকে তাই নোটপ্যাড খুলে কিবোর্ড নিয়ে বসে পড়লাম। যা থাকে কপালে, একটা কিছু তো বেরোবে। স্মৃতিচারণটুকু একটা স্পর্শকাতর ঘটনা নিয়ে, তাই নাম উল্লেখ করলাম না অনেকের।

তখন আমরা ক্লাস টুয়েলভে। থাকি সোহরাওয়ার্দী হাউসের দোতালার বক্সরুমে। বক্সরুম বলার কারণ হলো গিয়ে, ওইরুমের কোন নাম নাই, নম্বরও নাই। যদিও হাউসের বাকী সবগুলো রুমেরই একটা নাম বা নম্বর আছে। অন্য রুমগুলোর সাথে নম্বর মিলালে গিয়ে হয় ১০ নম্বর রুম। সেই ১৯৯৬ সাল থেকে দেখে আসছি রুমটার নাম নম্বরওয়ালা সাইনবোর্ডটা নিখোঁজ। এই রুমের বাসিন্দারা সবাই ক্লাস টুয়েলভেরই হয়ে থাকেন এবং ঐতিহ্যগতভাবে তামাক এবং গঞ্জিকা সেবন পছন্দ করেন। রুমের একদিক সরাসরি এডজুট্যান্ট বাংলো থেকে দেখতে পারার কথা থাকলেও সেটা হয়নি একটা বিশাল কাঁঠাল বৃক্ষের কারণে। গত রি-ইউনিয়নে গিয়ে দেখছি আমাদের পর্দা দেওয়া সেই কাঁঠাল গাছটা কেটে ফেলা হয়েছে। প্রয়াত সেই কাঁঠাল গাছটাই আমার স্মৃতিচারণের কেন্দ্রীয় চরিত্র।

ক্লাস তখন বন্ধ, হাউস প্রেপ চলে কয়েকদিন পরের উচ্চমাধ্যমিকের জন্য। আমি বসে বসে পড়ি আমার পড়ার টেবিলে। তার সামনেই রুমের জানালা আর জানালা থেকে ফুট ছয়েক দূরেই ঝুলে অনেক গুলো কাঁঠাল। পুরা বেহেশতি ব্যাপার স্যাপার। বিছানায় শুয়ে, পড়ার টেবিলে বসে খালি কাঁঠাল দেখি। আমার সংযমের বাঁধ ভাঙল, একদিন দিনে দুপুরেই গিয়ে উঠলাম গাছে। গাছে থাকা অবস্থায়ই নিচের রাস্তা দিয়ে প্রিন্সিপালের গাড়ি গেল। ভাগ্য প্রিন্সিপালের কাছে ধরা না খাওয়ার মতো ভালো থাকলেও, দূরে দাঁড়িয়ে থাকা গার্ড মহোদয়ের কাছ ধরা না খাওয়ার মতো ভালো ছিল না। যথারীতি হাউস মাস্টারের কাছে রিপোর্ট হয়ে গেল, সন্ধ্যার পর উনি আসলেন সরেজমিন তদন্ত করতে- কে এই কাঁঠাল চোর। তদন্ত করে উনি যথারীতি ব্যর্থ হলেন। কারণ হলো, কাঁঠালটা পারার পরপরই ছাদে পানির ট্যাঙ্কের নিচে রেখে আসা হয়েছিল পাকানোর জন্য। যদিও ছাদ সবসময়ই তালাবন্ধ থাকত, সেই তালা খোলাটা কোন ব্যাপারই ছিল না বন্ধু প্রিন্সের কারণে। কথিত আছে যে, প্রিন্সকে দেখামাত্রই তালারা নাকি বাপ বাপ বলে খুলে যায়। অতিরঞ্জিত? অবশ্যই। প্রিন্সের আসলে দক্ষতা ছিল কেঁচি দিয়ে তালার ভেতরের কলকাঠি নেড়ে চাবি ছাড়াই তালা খুলে ফেলার। প্রিন্স ছাদের তালা খুলতে পারত বলেই কাঁঠাল চুরিটা খুব সহজ হয়ে গিয়েছিল আমার জন্য। একবার হাউসের ভেতরে কাঁঠাল ঢুকাতে পারলেই হল, অথরিটির সাধ্য নাই কাঁঠাল বের করে।

সেই কাঁঠাল কয়েকদিন পর হাউসের সবাই মিলে খেলাম। রুমমেট ফিরোজ উচ্ছিষ্ট ফেলে দিয়ে আসল লেকের পাড়ে। কিন্তু হাউস মাস্টারের কাছে রিপোর্ট হয়ে যাওয়ার কারণে দিনের বেলায় শুরু হল কাঁঠাল গাছের উপর ব্যাপক নজরদারি। দিনের বেলা কাঁঠাল পারা অসম্ভব একটা ব্যাপার। পরের কাঁঠালটা পারব রাত্রেই, সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলাম। কিন্তু রাতে পারাটা খুবই কঠিন একটা ব্যাপার। কারণ রাতে হাউস থাকে তালাবন্ধ। প্রিন্সের জারিজুরি ছাদের তালা পর্যন্তই, হাউসের দরজার বেয়াদব তালাটা প্রিন্সকে যথাযোগ্য সম্মান দিয়ে খুলে যেতে নারাজ। অল্টারনেটিভ হলো জানালা দিয়ে নামা, দোতালার জানালায় গ্রিল থাকে না। একদিন শুভ রাত্রি দেখে কালো প্যান্ট আর কলেজ এথলেটিক্স টিমের কালো ট্র্যাক-সুটের জ্যাকেট পরে জানালা দিয়ে শরীরটা ঝুলিয়ে দিলাম। ফুট দেড়েক নিচেই একতালার সান-শেড। হাত ছেড়ে দিতে সানশেডের উপর গিয়ে পা ঠেকল। জমি থেকে তখন আমি ফুট সাতেক উপরে। লাফিয়ে নামলাম মাটিতে, সেখান থেকে কাঁঠাল গাছে। চোর হিসাবে আমার ইকুইপমেন্ট খুবই প্যাথেটিক ছিল, ছুরি নাই, পেপার কাটারই ভরসা। সেই পেপার কাটার দিয়ে বড় বড় দেখে দুটো কাঁঠাল কেটে মাটিতে ফেলে দিলাম। এখন সেগুলো দোতালায় তুলতে হবে। দোতালায় তোলার জন্য আগেই ব্যবস্থা করে রেখে এসেছিলাম অবশ্য। আমার ট্র্যাভেল ব্যাগের সাথে বেডকভার গিট্টু দিয়ে কাঁঠাল হয়েস্টিং ডিভাইস বানিয়েছিলাম একটা। সেইটাতে দুটো কাঁঠাল তুলে দিয়েছি, উপর থেকে প্রিন্স আর আরেফিন টেনে তুলছে কাঁঠালদুটো। এমন সময় কেয়ামত নাজিল হলো। মিটার শতেক দূরে দেখলাম টর্চ লাইটের আলো আর গার্ডদের তীব্র হুইশেল। আমার মধ্যে ফ্ল্যাশ আর স্পাইডারম্যানের একটা ককটেল ভর করল। এক লাফে উঠলাম সানশেডে, সেখান থেকে হাঁচড়ে পাঁচড়ে আমার রুমের মধ্যে। এতোই তাড়াতাড়ি উঠেছিলাম যে তাড়া করা গার্ডরা ঠিক ঠাওর করতে পারেনি আমি কোথায় গিয়েছি। তারা টর্চ লাইট আর হুইশেল নিয়ে হাউস তওয়াফ করা শুরু করল দৌড়ে দৌড়ে। এইদিকে ঘটে গেছে আরেক বিপত্তি। কাঁঠাল হয়েস্টিং ডিভাইস তার প্রথম অপারেশনাল ডেপ্লয়মেন্টেই ফেল মেরেছে, গিট্টু খুলে এতো কষ্টের কাঁঠালদুটো ব্যাগবন্দি হয়ে পড়ে গেছে সানশেডের উপরে। সেই ব্যাগে আবার আমার নাম লেখা- ক্যাডেট তৌফিক।

গার্ড ভাইরা বেশ কয়েকবার হাউস তওয়াফ করার পর বুঝলেন যে ক্যাডেট হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে। তারা এসে কাঁঠাল গাছের নিচে জড়ো হলেন। এবং উপরে টর্চ মেরেই দেখতে পেলেন আমার নামসহ ব্যাগ। সেই ব্যাগ তারা গ্রেফতার করে চলে গেলেন। সেই রাত্রে আর কিছু ঘটল না। আসল ঘটনার শুরু অবশ্য পরের দিন থেকে।

গার্ডরা ঘটনাটা রিপোর্ট করলেন সিএইচএম স্টাফ সুবেদার কবীর চৌধুরীর কাছে। উনি লাঞ্চ ব্রেকের পর আমাকে ডাকলেন, জিজ্ঞাসা করলেন কি ঘটনা। লুকিয়ে লাভ নাই, বললাম নিজের কুকীর্তির কথা। আমি ভেবেছিলাম উনি হয়তো এডজুট্যান্ট মেজর মাসুদ রানার কাছে কেস ফরোয়ার্ড করবেন। কিন্তু সেটা না করে উনি ইনিয়ে বিনিয়ে বলা শুরু করলেন কি মারাত্মক ভুল আমি করেছি এবং এর জন্য আমার কি কি খেসারত দিতে হবে। উনার কথাবার্তার ধরন আমার কাছে কেমন কেমন জানি ঠেকছিল। কিছুক্ষণ এরকম কথাবার্তা চলার পরে উনি সরাসরিই বললেন, উনি না হয় এই ঘটনা চেপে যেতে পারেন আমার কথা ভেবে। কিন্তু গার্ড ভাইদের আয় রোজগার কম, উনাদের কিছু না দিলে উনারা তো ঘটনা ফাঁস করে দেবেন। সিম্পল হিসাব, কিছু পেতে হলে কিছু দিতে হবে। উনি আমার কাছে গার্ডদের জন্য পাঁচ হাজার টাকা দাবী করলেন। এতো টাকা নেই বলার পর উনি আব্বার অফিসের নাম্বার চাইলেন। উনার চালবাজি বোঝার মতো বুদ্ধি আঠারো বছর বয়েসই আমার ছিল। আব্বার অফিসের নাম্বার দিলাম ভুয়া একটা আর বললাম হাজার দুয়েক দিতে পারব। কারণ আমি জানি, আমার কাছ থেকে টাকা নেয়ামতরই আমি হয়ে যাব ভিক্টিম, কলেজ অথরিটি নিজেদের লজ্জা ঢাকতেই ব্যস্ত হয়ে পড়বে তখন। উনি দুহাজার টাকাতেই রাজি হলেন। একটা কথা বলা দরকার, উনি টাকাটা নিজের জন্যই রাখতে চাইছিলেন এটা আমি তখনই বুঝেছিলাম। গার্ডদের কথা বলেছেন নেহায়েত চক্ষুলজ্জার কারণে। গত দুই টার্মের বাঁচানো পকেট মানি দিয়ে উনার ঘুষের আবদার রক্ষা করলাম আর নিজের পিঠ বাঁচালাম। কলেজে থাকাকালীন সময়ে এই নিয়ে আর কোন কথা শুনতে হয় নাই।

কলেজ থেকে বের হওয়ার পর ঢাকায় আসলাম, কোচিং করি ভর্তির। কোচিং শেষে আড্ডা দেই আর কলেজের গল্প করি। সেই সময় এই কাহিনী বললাম বন্ধুদের। আমাদের আল-মাহমুদও জানল ঘটনাটা। এইদিকে আল-মাহমুদের সাথে মেজর রানার খাতির ভালো ছিল। উনি ঢাকায় আসলে আল-মাহমুদ গিয়ে দেখা করে আসে, কথা-বার্তা হয়। আল-মাহমুদ এই কাহিনী বলে দিল মেজর রানার কাছে। উনি কি করেছিলেন জানি না, তবে আল-মাহমুদ মারফত আমার কাছে এত্তেলা পাঠালেন। আমি যেন এসে ঘুষের টাকাটা নিয়ে যাই। একদিন গিয়ে দেখা করলাম উনার সাথে, উনি টাকাটা ফেরত দিলেন। স্টাফ কবীর চৌধুরীকে চেপে ধরার পর সে টাকা ফেরত দিতে বাধ্য হয়েছে। আমাকে বকাঝকা করলেন কেন সেসময় তার কাছে যাইনি বলে। স্যারকে ধন্যবাদ একজন অসৎ লোককে শায়েস্তা করার জন্য।

সতর্কীকরণ: কলেজ পড়ুয়া ছোট ভাইরা, পেছন ফিরে তাকালে মনে হয় কাজটা খুব রিস্কি হয়ে গিয়েছিল। হাত পা ভাঙতে পারত, কিংবা মাথা ফাটতে পারত। ভাগ্য ভালো ছিল, ভাঙে নাই। আমার মতো বোকামি কইরো না, ভাগ্য পরীক্ষা করতে যেয়ো না। আর যে কায়দায় দোতালা থেকে মাটিতে নামছিলাম সেই কায়দা করার জন্য সোয়া ছয়ফুট উচ্চতা আবশ্যিক। মোদ্দা কথা, আমার স্মৃতিচারণ তোমাদের ঢোলের বাড়ি যেন না দেয়।

২,৮৩২ বার দেখা হয়েছে

৫৪ টি মন্তব্য : “কাঁঠাল বৃত্তান্ত”

  1. আমিন (১৯৯৬-২০০২)

    লুকজন দেখি নাই । ফাঁকা মাঠে কমেন্ট করি। আমাদের প্রিন্সের কিছু দুর্দান্ত স্কিল ছিলো। তার মধ্যে একটা হলো নষ্ট হয়ে জিপার নিমিষে ঠিক করে ফেলা 🙂
    মেজর মাসুদ রানাকে অবশ্য আমি ভালৈ পাই। তবে কলেজ পরবর্তী তার সাথে আমাদের কোন ক্লাশমেটের ইমোশনাল ঠান্ডা যুদ্ধটা ব্যাপক এনজয় করচিলাম।
    গল্প গুলি মোটামুটি কাছ থেকেই দেখা। আবার পইড়া চর্বিত চর্বণ করলাম। তয় একটা জিনিস মনে হয় মিস কইরা গেছ। তুমার পায়ের গুতায় মনে হয় পানির পাইপ ছুইটা সারারাত পানি পড়ছে। 🙂

    জবাব দিন
    • তৌফিক (৯৬-০২)

      ঠিক। একটা ভালভ ভেঙ্গে ফেলছিলাম। ওইটাতে লাথি দিয়াই তো নিজেরে সানশেডের উপরে তুলছিলাম। ইচ্ছা কইরাই দেই নাই, ডিটেইলস বাড়ে হুদাই। প্রিন্সের স্কিল আসলেই দুর্দান্ত ছিল। পোলাটার সাথে শেষ দেখা হইছে তিন বছর হয়া গেল।

      জবাব দিন
  2. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    ব্লগে কলেজের স্মৃতিচারন অনেক কমে গিয়েছে, তোর এইটা পড়ে বেশ ভাল লাগল।

    কাঁঠাল হয়েস্টিং ডিভাইস

    :)) :))

    অটঃ কাঁঠাল হল আমার অপছদের এক নম্বর ফল, আমের মত এত দারুন একটা ফল থাকতে কেন যে এইটাকে জাতীয় ফল বানানো হলো 🙁


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
    • তৌফিক (৯৬-০২)

      থ্যাংকু। লেইখা বেশি মজা পাই নাই, পইড়া লোকজন কতটুকু মজা পাইব আল্লা মালুম। রকিব ঝুলাঝুলি করছিল খোমাখাতায়, তাই লিখে ফেললাম। জাতীয় দল নিয়া পোস্ট দেস না ক্যান? 🙂

      জবাব দিন
    • কিবরিয়া (২০০৩-২০০৯)

      আকাশদা, বাংলাদেশে আম কিন্তুক জাতীয় গাছ... ( কেম্নে যে দিলো আল্লায় জানে, ঝিনাইদাহের আমের টেষ্ট ভালু না)


      যেমন রক্তের মধ্যে জন্ম নেয় সোনালি অসুখ-তারপর ফুটে ওঠে ত্বকে মাংসে বীভৎস ক্ষরতা।
      জাতির শরীরে আজ তেম্নি দ্যাখো দুরারোগ্য ব্যাধি - ধর্মান্ধ পিশাচ আর পরকাল ব্যবসায়ি রূপে
      - রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ

      জবাব দিন
  3. রাশেদ (৯৯-০৫)
    কিছুক্ষন এরকম কথাবার্তা চলার পরে উনি সরাসরিই বললেন, উনি না হয় এই ঘটনা চেপে যেতে পারেন আমার কথা ভেবে। কিন্তু গার্ড ভাইদের আয় রোজগার কম, উনাদের কিছু না দিলে উনারা তো ঘটনা ফাঁস করে দেবেন। সিম্পল হিসাব, কিছু পেতে হলে কিছু দিতে হবে। উনি আমার কাছে গার্ডদের জন্য পাঁচ হাজার টাকা দাবী করলেন।

    😮


    মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

    জবাব দিন
  4. সামিয়া (৯৯-০৫)

    আমার নিজের কাঠাল চুরির কথা মনে পড়ে গেল :D. আমি অবশ্য এত কষ্ট করি নাই, দিনের আলোয় হেটে হেটে ল্যাবের পিছন দিয়ে চুরি করে নিয়ে আসছি। মনে হয় কেউ চিন্তা করতে পারে নাই মেয়েরা চুরি করবে, তাই ওইদিকে গার্ড তেমন ছিল না।
    এরপর থেকে অবশ্য রাতের বেলা চুরি করতে হইসে।

    সেইসময় দুইহাজার টাকা চাইসিলো?? আমার কাছে একশো টাকা চাইলেও তো মনে হয় দিতে পারতাম না।

    জবাব দিন
  5. কিবরিয়া (২০০৩-২০০৯)

    কিছুক্ষন এরকম কথাবার্তা চলার পরে উনি সরাসরিই বললেন, উনি না হয় এই ঘটনা চেপে যেতে পারেন আমার কথা ভেবে। কিন্তু গার্ড ভাইদের আয় রোজগার কম, উনাদের কিছু না দিলে উনারা তো ঘটনা ফাঁস করে দেবেন। সিম্পল হিসাব, কিছু পেতে হলে কিছু দিতে হবে। উনি আমার কাছে গার্ডদের জন্য পাঁচ হাজার টাকা দাবী করলেন।

    😮 😮


    যেমন রক্তের মধ্যে জন্ম নেয় সোনালি অসুখ-তারপর ফুটে ওঠে ত্বকে মাংসে বীভৎস ক্ষরতা।
    জাতির শরীরে আজ তেম্নি দ্যাখো দুরারোগ্য ব্যাধি - ধর্মান্ধ পিশাচ আর পরকাল ব্যবসায়ি রূপে
    - রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ

    জবাব দিন
  6. রকিব (০১-০৭)

    থ্যাঙ্কু!!!! :hug:
    চুরির কাঁঠালের স্বাদটা কেন যেন একটু বেশিই হয়। বিশ্বকাপ ফুটবল ০৬ এর সময় খাটের নিচ ভরিয়ে ফেলা হয়েছিল কাঁঠাল দিয়ে, ধরাও খাইছিলাম হাউস বেয়ারার কাছে, যদি কোন টাকা ছাড়াই ম্যানেজ হইছে। 😀 😀
    আপনি বড় বাঁচা বেঁচে গিয়েছেন!!!!
    ভাইয়া, নিচের বানানটা একটু বদলে দিয়েনঃ
    উচ্ছিস্ট= উচ্ছিষ্ট


    আমি তবু বলি:
    এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

    জবাব দিন
  7. সাব্বির (৯৫-০১)

    হায়রে কাঠাঁল, দিনের বেলা দেখে রাখতাম, রাতের মিশনের টার্গেট। অপছন্দের এই ফল টা কেন যে চুরি করতাম 😕
    চুরির থ্রিল টাই মনে হয় বেশী উপভোগ করতাম।
    হাজার টাকা 😮 , আমি পনের/বিশ টাকা অথবা দুই/চার টা গোল্ডলীফের বিনিময় বেশ কয়েক বার ছাড়া পাইছি গার্ডের হাত থেকে 😀
    স্মৃতিচারণ সব সময়ই ভাল পাই। তৌফিক কে ধন্যবাদ।

    জবাব দিন
  8. রেশাদ (১৯৯৩ -৯৯)

    আহারে প্রিন্সিপালের বাসার পেয়ারা, হাউসের পিছনের ডাব আর আমড়া। পেয়ারার লগে লেডিস ক্লাবের পথে--------- ওরে নারে না। 🙁

    ডিভাইসটা ভাল ছিলো, বাচ্চালোগ যারা এই ডিভাইস ব্যবহার করবা, ব্যাগের ট্যাগটা খুইলা নিবা, আর কলেজ ব্যাগ এর বদলে অন্য ব্যাগ ব্যবহার করলে আরো ভালো 😀 😛

    জবাব দিন
  9. আহমদ (৮৮-৯৪)

    কোন ক্যাডেট কলেজে এতটা অসৎ হতে পারে তা আমার ধারনার বাইরে।

    আমার স্মৃতিচারণ তোমাদের ঢোলের বাড়ি যেন না দেয়

    বর্তমান ক্যাডেটরাও কি পরবর্তী জেনারেশনকে একই পরামর্শ দেবে? 😀


    চ্যারিটি বিগিনস এট হোম

    জবাব দিন
  10. সন্ধি (১৯৯৯-২০০৫)

    আপনার কাহিনী পড়ে তো আমাদের এইচ এস সি র সময়ের কথা মনে পড়ে গেল। রাত জাগার কারণে সকালের নাস্তা কারও খেতে ইচ্ছা হত না। আর কলেজে ছিল অধেল পরিমান কাঁঠাল গাছ, বেশি ভাগেরই সকালের নাস্তা ছিল কাঁঠাল। যদিও বাসায় মা বহুত কাকুতিমিনতি করেও এই জিনিস খাওয়াইতে পারে নাই, কিন্তু কলেজের পরিবেশ আর অপরিসীম ক্ষুধার কারণে এইটারেই ওই সময় বেহেস্তি খানা মনে হত। তবে আমাদের সবচেয়ে বেশি চুরি হত খেজুরের রস। এই রস চুরি নিয়ে কাহিনীর কোন শেষ নাই, পরে না হয় কোনদিন লিখব এই নিয়ে। 😀

    জবাব দিন
  11. মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

    ছোট ভাইদের উদ্দেশ্যে বলি- এইচএসসি টাইপ অতি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার আগে এই জাতীয় থ্রিল করতে গেলে যথাযথ সতর্কতা অবশ্যি নিবা।আমাদের অল্টারনেট ব্যাচের আলম ভাই এই কাজ করতে গিয়া হাত ভেঙ্গে চরম বেকায়দায় পড়ছিলেন,পরে ক্লাস টেনের একজনকে ডায়রেকশন দেওয়ার মাধ্যমে বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষা দিতে হইছিলো-যেইটার অনুমোদন করতে অনেক কাঠ-খড় পোড়ানো লাগছিলো আমাদের ভিপি স্যারের।কাজেই-নিষেধ করতেছিনা কিন্তু সাবধানতা বাঞ্ছনীয়।

    জবাব দিন
  12. সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

    ভাগ্যিস, ফৌজদারহাটে এই কাটা ও আঁঠা "জাতীয় ফল" নেই! খেজুরের রস, আর তাতে রান্না করা ক্ষীর, ডাব, নারকেল, বরই, আনারস ছিল অঢেল। 😀 আর ডাব, নারকেলের স্টোর রুমটা ছিল সবচেয়ে নিরাপদ হাউস ক্যাপ্টেনের খাটের তলা!! আমাদের সময়ের বয়-বেয়ারা আর নাইট গার্ডরা ছিল সব দারুণ মানুষ।


    "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

    জবাব দিন
  13. তাইফুর (৯২-৯৮)
    সতর্কীকরণ: কলেজ পড়ুয়া ছোট ভাইরা, পেছন ফিরে তাকালে মনে হয় কাজটা খুব রিস্কি হয়ে গিয়েছিল। হাত পা ভাঙতে পারত, কিংবা মাথা ফাটতে পারত। ভাগ্য ভালো ছিল, ভাঙে নাই। আমার মতো বোকামি কইরো না, ভাগ্য পরীক্ষা করতে যেয়ো না। আর যে কায়দায় দোতালা থেকে মাটিতে নামছিলাম সেই কায়দা করার জন্য সোয়া ছয়ফুট উচ্চতা আবশ্যিক। মোদ্দা কথা, আমার স্মৃতিচারণ তোমাদের ঢোলের বাড়ি যেন না দেয়।

    শা__ ভন্ড, সিগারেট কোম্পানী'র ষ্টাইল ধরছে ...

    (তৌফিক ... লেখা চ্রম ভাল লাগছে ...)

    (নিয়মিত লেখা দিন, কমেন্ট করুন … প্রতিদিন অন্তত আধ ঘন্টা হলেও সিসিবির সাথে থাকুন)


    পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
    মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥

    জবাব দিন
  14. তন্ময় (২০০৬-২০১২)

    তৌফিক ভাই,এখনকার পোলাপাইন আরো বহুত স্মার্ট হইসে । আমরা(২০০৬) পুকুর থিকা মাছ ধইরা সেই মাছ ভাইজা খাইছি.......... :)) তবে সবচেয়ে বেশি মজা হইছে তিনতালায় বিরিয়ানী রান্না কইরা খাওয়া...... পুরাই সিরাম অবস্থা । :bash: :bash:


    চলো বহুদুর.........

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : তৌফিক (৯৬-০২)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।