ভয়

নিম্নচাপের ধাক্কায়, গভীর রাতে রুম থেকে ভয়ে ভয়ে বের হলাম। ড্রাইং রুম থেকে টয়লেটের মাঝামাঝি একটু খোলামেলা। আলো-আঁধারি মাখা ওই অংশটা আগে অতটা অনুভব করিনি, যতটা আমি অনুভব করছিলাম, ঐ গভীর রাতে, একলা। সুতরাং ওই জায়গাটা যতই কাছে চলে আসতে লাগলো ততই একটা ছমছমে অনুভূতি (শিরদাঁড়া বেয়ে ঠান্ডা সাপ নেমে যাওয়ার মত), raw একটা অনুভুতি আমাকে আচ্ছন্ন করে ফেললো। শুধু তাই না, মাটিতে অবস্থিত চারদিক ঘেরাও করে রাখা দেয়ালের ছোট্ট একটা কাঠামো (হয়তো তাতে ময়লা আবর্জনা রাখা বা অন্য কোন কাজে ব্যবহার করার জন্য) যা কিনা দিনের আলোতে প্রাণহীন নিরীহ কাঠামো ছিল আমার চোখে, রাতের আলো-আঁধারিতে তাই হয়ে উঠলো পাকা কবরের মতো অবয়ব। এই সব চিন্তায় ঘুরপাক খেতে খেতেই এক সময় টয়লেটে গেলাম। কাজ সাড়লাম, চপ্পল সহ পা ধুয়ে নিলাম। আস্তে আস্তে ভয় কাটতে আরম্ভ করলো। এবার ফেরার পালা। নিম্ন চাপ কমানোর আরামে প্রথমে খেয়াল করিনি। কিন্তু দ্বিতীয় এক সত্তার উপস্থিতি ঠিকই টের পেতে শুরু করলাম। সে আমার সাথেই তাল মিলিয়ে চলছিল। যখন আমি চলি সেও চলে, যখন আমি থামি সেও থমকে দাঁড়ায়। কেননা যখন আমি এক কদম এগিয়ে যাই ঠিক সেই মুহুর্তেই ঘাড়ের উপর কারো নিঃশ্বাসের শব্দ শুনতে পাই। একেবারেই স্পষ্ট। আবার থামলেই পিনপতন নিস্তব্ধতা। (‌হয়ত মাটিতে চপ্পলের ঘষা লেগে আওয়াজ হচ্ছে। অসম্ভব। ওইভাবে হাটার বদ অভ্যাস আমার কোন কালেই ছিল না।) একসময় মনে হতে লাগলো হয়তো আমার ছায়াই সেই অতিপ্রাকৃত সত্তা। আর পারলাম না। সেই শ্বাস-প্রশ্বাস ধারী অতিপ্রাকৃত ছায়াশরীরী সত্তাকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যেতে চাইলাম। উর্ধশ্বাসে দৌড়, শেষ পর্যন্ত। হাপরের মতো ওঠানামা বুক আর হালকা ঘামে সিক্ত দেহ নিয়েই দাঁতে দাঁত চেপে বিছানায় শুয়ে পড়লাম। বাকি রাতটুকু কেমন ঘুম হল আমার? সপ্তম শ্রেণীর ক্যাডেট ছিলাম, দুধ পিতা হুয়া বাচ্চা। আশা করি সবাই আন্দাজ করতে পারছেন।

কি মনে হয়? আছে কি কোন যৌক্তিক ব্যাখ্যা?

২,৯৮৩ বার দেখা হয়েছে

১টি মন্তব্য “ভয়”

মওন্তব্য করুন : খায়রুল আহসান (৬৭-৭৩)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।