ক্যাডেট কলেজে বিভিন্ন পার্টি থাকে। এইসব পার্টি একেকটা ফ্র্যাটার্নিটির মত। স্মোকার পার্টি, কলেজ পালানো পার্টি, ডেয়ারিং পার্টি, প্রেমিক (মোবাইল ফোন)পার্টি আরো কত কি । আমাদের সময় অন্যতম বড় একটা পার্টি ছিল ফুটবল পার্টি! এই পার্টির গর্বিত মেম্বার ছিলাম কলেজে। কলেজে আমাদের কিছু কর্মকান্ডের বর্ণনা দিচ্ছি :
১) দিন রাত ফুটবল নিয়া গঠনমূলক আলোচনা করা। বিভিন্ন টিমের ফর্মেশন নিয়ে বিশ্লেষণ ধর্মী আলোচনা করে প্রেপ টাইমকে কাজে লাগানো।
২)গেমস টাইমে টিম করে ফুটবল ম্যাচ খেলা এবং ভালো ফুটবল ও মাঠের দখল নিশ্চিত করা।
৩)বিভিন্ন টিমের নাম এ ক্লাব ফুটবল চালু করা।পরিচালনা কমিটি গঠন করা ও প্লেয়ার ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে সুষম বন্টন নিশ্চিত করা।
৪)নাইট ডিউটি মাস্টারের লিস্ট সংগ্রহ করা ও কোনদিন কোন হাউজে নৈশকালীন খেলা গুলো দেখা অধিক নিরাপদ তা নির্ণয় করা এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী বিকল্প পরিকল্পনা গ্রহণ করা।
৫)প্রয়োজনে বিভিন্ন কমন রুমে সরেজমিনে রেকি করা ও পরিস্থিতি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা রাখা।
৬) হাউজ বেয়ারাদের হাত করা। প্রয়োজনে তাদের আর্থিক সাহায্য প্রদান করা।
৭) থার্ড প্রেপের পর টিভি রুমের রিমোর্ট দখলে রাখা এবং মিউজিক ও মুভি পার্টি কে খেলা দেখায় কোনো ডিস্টার্ব করতে না দেওয়া।
৮)চ্যানেল না থাকলে কালিয়াকৈরের ডিশ অপারেটর কে ফোন দিয়ে বেনামে হুমকি ধামকি দেওয়া এবং সঠিক সময়ে সঠিক চ্যানেলের উপস্থিতি নিশ্চিত করা।
৯) খেলা দেখার পারমিশন আনতে যাওয়ার জন্য পৈতা ধারী প্রিফেক্টদের উপর নানান ভাবে চাপ সৃষ্টি করা।
১০) টিভি রুমে পর্যাপ্ত পরিমান কম্বলের উপস্থিতি নিশ্চিত করা ও সেগুলো দিয়ে জানালা ঢেকে দিয়ে নিরাপদ পরিস্থিতি নিশ্চিত করা।
১১) পরিশেষে রাতে খেলা দেখার পর পরদিন পিটিতে ঢুলতে ঢুলতে যাওয়ার সময় বাকি ক্যাডেট দের স্কোর ও খেলার স্কোর সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা প্রদানের মাধ্যমে একটু ভাব মারা !
ব্লগের এই সরগরম অবস্থা দেখে দিলাম পোস্ট করে এটা.. আরো কিছু লিখা যেতো, কিন্তু অপেক্ষা করার ধৈর্য্য নেই.. 🙂
হে মানব জাতি, তোমাদের বড়ই তাড়াহুড়া!! O:-)
'৯৮ সালে বিশ্বকাপের আগে ও পরে আমাদের ব্যাপক হাইপ উঠেছিল। তখন ফুটবল নিয়ে যে গবেষণা আমরা করেছি তা জার্নাল আকারে প্রকাশ করলে বিশ্ব ফুটবল চার থেকে সাড়ে পাঁচ ধাপ এগিয়ে যেত... ট্রু স্টোরি!! O:-)
তবে, আমাদের আলাদা করে কোন ফুটবল পার্টি ছিল না। আমাদের ছিল স্পোর্টস পার্টি, যে কোন খেলায় ঐ ঘুরেফিরে আমরাই... B-) B-)
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
ক্যাডেট কলেজের ক্রীড়া প্রজন্ম দুই ভাগে বিভক্তঃ
লীগ ফুটবল বিখ্যাত হবার আগের প্রজন্ম ও লীগ ফুটবল বিখ্যাত হবার পরের প্রজন্ম। আমাদের যত গবেষণা ছিল ২০০২ এর বিশ্বকাপের পর ছুটি থেকে কলেজে এসে। আর মূল মারামারিটা তখন হতো ক্রিকেটে। ওভার অল স্পোর্টসে আবার আমাদের ব্যাচ ছয় বছর চমকের পর চমক দেখিয়ে গিয়েছে। দুই একজন ছিল সব জায়গায় বস, তা বাদে বেশীর ভাগ খেলায় স্পেশালাইজড খেলোয়ার ছিল ব্যাচ থেকে।
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
তাড়াহুড়া বড়ই বেশি ভাই.. 😀
ইদানিং টাইপ করতেও আলসেমি লাগে।
আমি কোন খেলাতেই ভাল ছিলাম না কলেজে। মকরা ক্যাডেট একেবারে।
খালি একটু আধটু ভলিবল মাঠে লাফালাফি করতাম।
পোলাপান ফুটবল লীগ বানিয়ে খেলা শুরু করলে আমিও চান্স পেতাম......
তবে দুধভাত- ডিফেন্ডার হিসেবে... 😛 😛
... কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালবাসে!
দুধভাত- ডিফেন্ডার কি জিনিস ? 😀
খেলা পারেনা কিন্তু আর প্লেয়ার না থাকায় যাকে খেলায় নেয়া হয় ডিফেন্ডার হিসেবে...... 😛 😛 😛 ~x(
... কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালবাসে!
:clap: :clap: :clap:
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
:hatsoff:
আমরা ক্লাব ফুটবলের জোয়ার পেয়েছিলাম কলেজের শেষ দিকে এসে, তাও সেটা সীমিত ছিল গুটিকয়েক কিছু ফ্যানাটিক এর ভিতরে। তবে এর কারনে ফুটবল নিয়ে মাতামাতির কোন অভাব ছিল না, ৯৮ বিশ্বকাপ তো ছিলোই। এছাড়া আমাদের নিজেদের পার্মানেন্ট দুটো ফুটবল দল ছিল, নিয়মিত খেলা হতো। প্রতিটা আফটারনুন প্রেপ ছিল টিম মিটিং 🙂
এসএসসির পরে এসে লীগ ফুটবল সম্পর্কে খোজ খবর শুরু হয়, আমরা যারা ফলো করতাম তাদের একমাত্র সম্বল ছিল মঙ্গল বারের ডেইই স্টার আর ইনডেপেন্ডেন্স। পরে রেডিও নিয়ে গিয়েছিলাম, বিবিসিতে খেলার কমেন্ট্রি আর নিউজ শোনার জন্য।
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
আমাদের সময় সব ইজি হয়ে গেছিল। আমরা যখন ক্লাস ১২ এ তখন মাঝে মাঝে অফিশিয়ালি অথরিটি রাতে ফুটবল খেলা দেখার পারমিশন দিতো।