কলেজ জীবনের সাতকাহন (গ্যাং অব চোর) – শেষ পর্ব

আগের পর্ব

“এই! আপনাঁরা এখানে কীঁ করশেন ষ্যার?”

– সাইদ বিশ্বাস স্যারের ট্রেডমার্ক আওয়াজ। উপরে তাকিয়ে দেখি, হ্যাঁ তিনিই। বায়োলজি ডিপার্টমেন্টের ঠিক উপরে দোতলার বারান্দা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। ঈশ! টাইমিংটা একটু এদিক সেদিক হলেই ওনার শ্যেনদৃষ্টিটা এড়ানো যেত। জানি, এসময়ে মাথা ঠাণ্ডা রাখতে হয়। মাথার ভিতরে ঢ্যাঢ্যাং ঢ্যাঢ্যাং করে ছয় বছর আগে শোনা সিএইচএম শহিদ ওস্তাদের অমোঘ বানী বাজতে লাগলো, “ক্যাডেটস! বন্দুকের গুল্লি আইলেও হিলবা না, ফন্না থুলা শাফ দ্যাকলেও গাফরাইতা না (ফনা তোলা সাপ দেখলেও ঘাবড়াবে না)”। সাপ-বিচ্ছু দেখে না ঘাবড়ালেও মিঃ বিশ্বাসকে দেখে না ঘাবড়ে থাকাটা সেই সময়ে খুব একটা সহজ কাজ ছিল না। কলেজের অন্যতম সিনিয়র ফ্যাকাল্টি মেম্বার, এবং সেকালে ক্যাডেট মাত্রেই ওনার ভয়ে সদা থরকম্প অবস্থায় থাকতো। তার উপরে উনি তখন খায়বার হাউজের হাউজ টিউটর। আমাদেরকে ধরিয়ে দিতে পারলে হাউজ ডিসিপ্লিন কম্পিটিসানে তাঁর হাউজ আমাদের চেয়ে এগিয়ে যাবে। শান্ত থাকার আপ্রাণ চেষ্টায় লিপ্ত আমাদের কেউ একজন বলল, “স্যার, এই তো, এসেছিলাম একটু নিরিবিলিতে গ্রুপ স্টাডি করতে। সেটা শেষ করে এখন একটু ঘুরে বেরাচ্ছি মাথটা রিফ্রেশ করার জন্য”। আমাদের কেউ খারাপ ছাত্র না, আমি আর সহিদ ছিলাম SSC তে স্ট্যান্ড করা, বাকিরাও কাছাকাছি, ফেলনা নয় কেউ, জ্ঞানের সাধনায় বেলায়-অবেলায় একাডেমিক ব্লকে তো আসতেই পারি। স্যারের চেহারায় একটু কি বিভ্রান্তির ছাপ দেখতে পেয়েছিলাম? ঠিক মনে নেই। এর পরে টুকটাক দুএকটা কথাবার্তার পরে তিনি বললেন, শুনলাম কারা নাকি কাঁঠাল পেরেছে। এই সময়ে এদিকে ঘোরাঘুরি না করে হাউজে চলে যাও। আমরাও একযোগে আকাশ থেকে পড়ার ভান করে সুবোধ বালকদের মত সেখান থেকে চলে এলাম।

ভেবেছিলাম এযাত্রায় বোধ হয় পার পেয়েই গেলাম। কিন্তু না, শনির দশায় পড়ার পরেও কারো দিন ভালো গেছে এরকম নজির তো তাবৎ পাঁজি-পুঁথি ঘেঁটেও কোথাও পাই না। আমাদের বেলায় ব্যতিক্রম হবে কেন? রাতেই হাউজ মাস্টারের রুমে তলব পেলাম আমরা ছয়জন। বাংলার মাহবুবুল আলম স্যার, হাউজ মাস্টার, লম্বা লম্বা পা ফেলে ঘরময় পায়চারী করছেন। উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে হাতের পাঞ্জা দুটিকে এক নাগাড়ে ভেনাস ফ্লাই ট্র্যাপের মত করে এক করছেন আবার দুরে সরিয়ে নিচ্ছেন। আমরা লাইন দিয়ে দেয়ালের সামনে দাঁড়িয়ে টেনিস ম্যাচের আম্পায়ারের মত একযোগে একবার ডানে একবার বামে মাথা ঘুরিয়ে চোখ দিয়ে ওনাকে অনুসরণ করে যাচ্ছি। একসময় তিনি হঠাৎ আর্তনাদের মত করে বলে উঠলেন, “নাচ্ছিম! একি করলে তোমরা? ইজ্জৎ তো দেখছি ডুবিয়েই দিলে!!” নাসিমও মুহূর্তের মধ্যে চোখে মুখে ততোধিক মর্মাহত হবার ভাব ফুটিয়ে মাথাটা নীচের দিকে তাক করল। ভাবখানা এমন যে, এই বুঝি ধরণী দ্বিধা হবে আর অমনি সে সুরুৎ করে সেখানে সেঁধিয়ে যাবে। আমরা বাকিরাও নাসিমের দেখাদেখি ধরণীপানে আঁখিসম্পাত করিয়া উহাতে গর্ত, ফাটল কিংবা নিদেন পক্ষে একটুখানি চিড় আবিষ্কার করিবার জোর প্রচেষ্টায় মগ্ন হইলাম।

যাহোক, এরপরে স্যার যা বললেন তার সারসংক্ষেপ হল এরকম – আমরা চলে আসার পরে মিঃ বিশ্বাস সিঁড়ির নিচে রাখা কাঁঠালগুলি আবিস্কার করেন। কাঁঠালগুলির কয়েকটা একটু পাকা পাকা ভাব ছিলো, হাল্কা গন্ধ ছড়াচ্ছিলো। এরপরে তাঁকে আর দুয়ে দুয়ে চার মেলাতে কোন বেগ পেতে হয়নি। রিতিমত ইউরেকা মোমেন্ট! সোজা ছুটে গেলেন মিটিং রুমে। প্রিন্সিপ্যাল স্যার এবং অন্যান্য শিক্ষকগন তখনও সেখানেই ছিলেন। তাঁদের সামনে কলেজের সম্পদের এহেন “mass destruction” এর জন্য বদর হাউজের ছয় বদ-ক্যাডেটকে দায়ী করে জ্বালাময়ী বক্তৃতা দিয়ে এক আবেগঘন পরিবেশ তৈরি করে ফেললেন। সব শুনে প্রিন্সিপ্যাল স্যার পারলে সেই মুহুর্তেই আমাদেরকে বাসায় পাঠিয়ে দেন। কিন্তু মিঃ মাহবুব ও অন্যান্য শিক্ষকগন এটা তুচ্ছ পাপে মহা দন্ড হয়ে যাবে বলে তাঁকে বোঝাতে সক্ষম হন। শেষমেশ মিঃ বিশ্বাসের নেতৃত্বে একটা তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তবে তদন্ত কমিটির কাজ শুরুর আগে নিজেই একটু খতিয়ে দেখতে চাইলেন মিঃ মাহবুব। অবিশ্বাস্য ভাবে দিন দুয়েক সময় মঞ্জুরও হল। এর ধারাবাহিকতায় এখন তিনি আমাদের সাথে কথা বলছেন। তিনি এও বললেন যে, আমরা যদি সত্য স্বীকার করি তাহলে তিনি আমাদেরকে বাঁচানোর জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন।

আমরা ততক্ষনে বুঝে গেছি যে, ঘটনা অস্বীকার করে খুব একটা লাভ হবেনা। তারচেয়ে বরং মাহবুব স্যারের তৈরি করে দেয়া সুযোগটা কাজে লাগানোটাই বুদ্ধিমানসুলভ আচরণ হবে। সকপটে সব কিছু স্বীকার করলাম। মানে সবকিছু না, শুধু ওই ১৮ টি কাঁঠালের ব্যাপারে সবকিছুই খোলাখুলি স্বীকার করলাম। এর সাথে কিছুটা আবেগ মিশিয়ে আমরা বললাম যে, ক্যাডেট জীবনের এই সায়াহ্নে এসে দু’মুঠো কাঁঠালই তো খেতে চেয়েছিলাম। তাও নিজেদের বাড়ির গাছের কাঁঠাল। সেজন্যে এত গঞ্জনা! সেজন্য আমাদেরকে চোর বলে অভিহিত করা! এই কলেজ প্রাঙ্গণটাকেই তো এতদিন নিজের বাড়ি মনে করে এসেছি, আর শ্রদ্ধেয় শিক্ষকগণকেই তো পরিবার ও বাবা-মায়ের স্থানে দেখে আসছি, ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি…

এক পর্যায়ে মিঃ মাহবুব আমাদেরকে থামিয়ে দিলেন, এমন আবেগাপ্লুত ভাষণ শুনে তিনি নিজেও হয়তো কিছুটা আর্দ্র হয়ে পড়েছিলেন। আমরাও থামলাম, এখনই সব আবেগ শেষ করে ফেললে আগামীতে প্রয়োজনের সময়ে ঢালবার মত আবেগ আর অবশিষ্ট থাকবে না। তিনি আমাদেরকে দুএক দিনের মধ্যেই আমাদের বলা কথাগুলো বিবৃত করে একটা ব্যাখ্যাপত্র লিখে তাঁর কাছে জমা দিতে বললেন। আমরাও পত্রপাঠ ঝাঁপিয়ে পড়লাম। HSC র পড়াশুনা সিকেয় তুলে দিনরাত খেটে তিনদিনের মধ্যে নামিয়ে দিলাম ২২ পৃষ্ঠার এক বিশাল ব্যাখ্যাপত্র। সেখানে খুব সামান্য অংশ জুড়ে ছিল মূল ঘটনার বিবরন, বাকিটা ছিল আমাদের আঘাতপ্রাপ্ত অনুভুতির এক বিশাল বহিঃপ্রকাশ। আগাগোড়া আবেগের ঠাস বুননে গাঁথা সেই পত্রে ইতিহাস ছিল, ভুগোল ছিল, ছিল কিশোর মনস্তত্ত্ব। আমাদের যার যতটুকু সাহিত্য প্রতিভা ছিল তার সবকিছুই ঢেলে দিয়েছিলাম সেখানে। তার সাথে যোগ করেছিলাম হরলাল রায়ের বাংলা ব্যকরণ ও রচনা থেকে শুরু করে তৎকালীন বাংলা নোটবই উচ্চ নাম্বারের সিঁড়ি। এমন কি বাংলা সিনেমায় শাবানা কিংবা রঞ্জিৎ মল্লিকের ভাষন থেকে সংগৃহীত সাহিত্য নির্যাসও বাদ পড়েনি। সেই ইতিহাসের সূচনা ক্যাডেট কলেজে ভর্তির প্রস্তুতি থেকে। (একটু কাঁপা কাঁপা গলায় পড়তে হবে) … দেশ মাতৃকার সেবায় জীবন উৎসর্গ করে দেবার মহান বাসনা নিয়ে আজ থেকে প্রায় সাত বছর আগে যে শিশু ঝাঁপিয়ে পরেছিল ক্যাডেট কলেজ অ্যাডমিসন টেস্ট নামক এক দুরূহ সংগ্রামে … কালের প্রবাহে আজ সে সাফল্যের সাথে ক্যাডেট জীবন শেষ করার দ্বারপ্রান্তে … এই দীর্ঘ সময়ের কঠোর নিয়মানুবর্তিতা থেকে তাঁর এই ক্ষণিক বিচ্যুতিকে আমরা কি অপরাধ হিসেবে আখ্যায়িত করব? না কি এই কলেজ প্রাঙ্গণকে অন্তর থেকে নিজের মনে করার এক স্বতঃস্ফূর্ত বহিঃপ্রকাশ হিসাবে গণ্য করব? … ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি। এরকম আরও হাজারো আবেগি কথাবার্তা দিয়ে ২২ পৃষ্ঠা ভরে ফেলেছিলাম। আর সেই ব্যাখ্যাপত্রের শেষ লাইনে একথা জানাতে ভুললাম না যে, শুধুমাত্র আমাদের পিতৃতুল্য হাউজ মাষ্টারের স্নেহ, ভালোবাসা আর দায়িত্ববোধের কাছে পরাস্ত হয়েছি বলেই তাঁর কাছে কিছুই লুকোতে পারিনি।

তিনদিন পরে হাউজ মাষ্টারের রুমে গিয়ে সেই পত্র দিলাম মিঃ মাহবুবের হাতে। রিডিং গ্লাসটা পরে নিয়ে তিনি সেটি পড়তে বসলেন, গভীর মনোযোগে। স্থাণুর মত দাঁড়িয়ে আমরা ছয়জোড়া চোখ চেয়ে আছি। একসময় দেখি হাউজ বেয়ারার এবাদত ভাইও রুমের ওপ্রান্ত থেকে গলা লম্বা করে পত্রের লিখন পড়ার চেষ্টা করছে। হাউজ বেয়ারারের এহেন বেয়াড়াপনা দেখেও বিরক্ত হবার মত মানসিক অবস্থা ছিল না আমাদের একজনেরও। মাহবুব স্যার পড়ছেন, কখনও হয়তো কপালে ভ্রুকুঞ্চন দেখা দিচ্ছে তো একটু পরে তা অপসৃত হয়ে যাচ্ছে। কখনও মাথাটি মৃদু নাড়লেন, বার দুয়েক সশব্দে নিশ্বাস ছাড়লেন নিজের অজ্ঞাতেই। একবার তো হাত দুটোকে দিয়ে তাঁর সেই বিখ্যাত ভেনাস ফ্লাই ট্র‍্যাপ ও বানালেন! পত্রের শেষ লাইনটা পড়ার সময় একটু জোরের সাথেই মাথাটি উপর-নিচ করলেন। পড়া শেষ করে আমাদের দিকে মুখ তুলে তাকালেন তিনি, সেই সাথে বুঝি ভাগ্যদেবীও। চোখে মুখে সাংঘাতিক রকমের ইম্প্রেসড অভিব্যক্তি নিয়ে বললেন, “নাচ্ছিম! এটা তোমরা কি লিখলে? সবাই কে তো দেখছি আবেগে ডুবিয়ে মারবে!!” আমরা বুঝলাম, শনির দশা কেটে গেছে।

বিশেষ করে শেষ লাইনটা তাঁকে সাংঘাতিক রকমের ইম্প্রেসড করেছিল। সেটা তাঁর কথার মাঝে বারবার প্রকাশ হয়ে যাচ্ছিলো। যাহোক, এই ব্যাপারটি নিয়ে আমাদেরকে আর কোন দুঃচিন্তা না করে HSC র পড়াশোনায় মনোনিবেশ করতে বললেন। আর বাকিটা কিভাবে কি করা যায় সেটা তিনি দেখবেন বলে আশ্বস্ত করলেন। তবে কথা দিতে হবে, আর কখনও এরকম দুষ্টুমি করব না। তাঁর উচ্ছ্বাস এবং আশ্বাসবাণীতে আমাদের যেন ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়লো। নো প্রবলেম, অকাতরেই আমরা সেই শর্তে রাজি হয়ে চৌর্য্যবৃত্তি ছেড়ে দেবার অঙ্গিকার করলাম। তারপরে মনে একটা স্বস্তির ছোঁয়া নিয়ে ফিরে এলাম ডর্মে। প্রিন্সিপ্যাল স্যারের ফাইনাল ভারডিক্ট কি হবে সেটা নিয়ে ভাববার সময় নেই, আজকে আফটার লাইটস আউট ফিস্ট হবে, ফিয়েস্তা দি য়াকা – কাঁঠালভোজের মচ্ছব। মস্কের পাশের গাছ থেকে আনা সেই ২২টা কাঁঠাল এই ক’দিনে বেশ পেকে উঠেছে।
(লাইটস আউট)

 

গল্প শেষের গল্পঃ
প্রিন্সিপ্যাল স্যারের ফাইনাল ভারডিক্ট নিয়ে চিন্তা করতে চাইনি, কখনও করতেও হয়নি। সপ্তাহ খানেক পরে কোন একদিন লাঞ্চের আগে হাউজে ঢুকতে গিয়ে দেখি সামনের লনে যত্ন করে রাখা সুবিশাল এক কাঁঠাল। ডর্মে ঢুকে দেখি আমাদের ছয়জনের প্রত্যেকের টেবিলের উপরে একটা করে বাচ্চা কাঁঠাল! এবাদত ভাই জানালো, এগুলো আমাদের জন্য প্রিন্সিপ্যাল স্যারের উপহার। তিন হাউজের ক্লাস টুয়েলভ এর জন্য তিনটা হাল্ক সাইজের কাঁঠাল আর আমাদের ছয়জনার জন্য স্পেশাল ভাবে ছয়টা ছোট কাঁঠাল। লাঞ্চের সময়ে প্রিন্সিপ্যাল স্যার স্বয়ং ডাইনিং হলে এসে ঘুরে ঘুরে আমাদের ছয়জনের কাছেই এসেছিলেন। পাশে এসে জিজ্ঞাসা করছিলেন, হাউ ইজ দ্য টেস্ট অব দ্য কাঁঠাল, ইজ ইট সুইট? মনে মনে বলেছিলাম, আপনার অফিসের পেছনের বাগানের গুলো আর টেস্ট করতে পারলাম কই! শুধু শফিউল্লাটা মিনমিন করে বলে উঠলো, স্যার একটু সর্ষের তেলের যোগান দিলে ভালো হয়, কাঁঠাল ছাড়াতে ছাড়াতে আমাদের স্টক প্রায় শেষ অথচ ডর্মে এখনও অনেকগুলো কাঁঠা… এই পর্যায়ে জোর চিমটি দিয়ে ওকে না থামালে সর্বনাশটা প্রায় ঘটেই যাচ্ছিলো! যাহোক, সবকিছু ভালো ভাবেই শেষ হল, আর এরপর থেকে প্রতি সপ্তাহে একদিন নিয়মতভাবে আমাদের টেবিলে কাঁঠাল কিংবা অন্য কোন মৌসুমি ফল আসতে থাকলো।

৪,৪৬১ বার দেখা হয়েছে

৩৬ টি মন্তব্য : “কলেজ জীবনের সাতকাহন (গ্যাং অব চোর) – শেষ পর্ব”

    • মুজিব (১৯৮৬-৯২)

      আমার কাছে নাই তবে JCC র প্রিন্সিপ্যাল অফিসের দেরাজ ঘাঁটলে হয়তো মূল পত্রটাই পাওয়া যেতে পারে।
      থ্যাংকস মাহবুব ভাই


      গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।

      জবাব দিন
  1. নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

    মুজিব,
    কি লিখলা এইটা? আ হা, স্বাদু এবং সাধু!
    মাহবুবুল আলম স্যারকে আমরা পেয়েছিলাম। আপাত কঠোর কিন্তু স্নেহপরায়ণ আর আবেগপ্রবণ ছিলেন। অনেক অত্যাচার করেছি।

    জবাব দিন
    • মুজিব (১৯৮৬-৯২)

      থ্যাংকস নূপুরদা।
      মাহবুব স্যার না থাকলে ওই সময়েই হয়তো আমাদেরকে লোটা-কম্বল নিয়ে বাসায় রওনা দিতে হত। ওনাকে কখনোই কোন ক্যাডেটের কোন ক্ষতি করতে দেখিনি। কিন্তু উপরে উপরে সব সময়ে একটা ক্রূর অভিব্যক্তি নিয়ে চলাফেরা করতেন।


      গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।

      জবাব দিন
  2. ইশহাদ (১৯৯৯-২০০৫)
    আমাদের আঘাতপ্রাপ্ত অনুভূতির এক বিশাল বহিঃপ্রকাশ

    ঈমানে কন তো মুজিব ভাই, ৫৭ ধারার ড্রাফটিং-এ কি এই দলের কেউ ছিল? হুমম!! B-)

    পুনশ্চঃ তথ্যসূত্র হিসেবে আলোচ্য চিঠিটির সংযুক্তির দাবীতে গলা মিলায়া গেলাম 😀



     

    এমন মানব জনম, আর কি হবে? মন যা কর, ত্বরায় কর এ ভবে...

    জবাব দিন
  3. সাইদুল (৭৬-৮২)

    অসাধারণ !
    মিঃ দেওয়ারিকে একবার এধরণের একটা চিঠি দিতে হয়েছিল, কমনরুমের চাবি চুরি করে চিনি দেখার জন্যে

    মিঃ মাহাবুবুল আলমের তুলনা তিনিই, লিখতে ইচ্ছে করছে, সময় পেলেই লিখে ফেলবো


    যে কথা কখনও বাজেনা হৃদয়ে গান হয়ে কোন, সে কথা ব্যর্থ , ম্লান

    জবাব দিন
    • মুজিব (১৯৮৬-৯২)

      থ্যাংকস সাইদুল ভাই।
      আসলে ওখানে মিঃ মাহবুব ছিলেন বলেই আমরা এতটা নির্ভার হতে পেরেছিলাম। আমাদের মনে এই বিশ্বাস ছিল যে উনি আমাদেরকে বাঁচানোর জন্য সবকিছুই করবেন। করেছিলেনও।
      স্যারকে নিয়ে আপনাদের অভিজ্ঞতা জানার অপেক্ষায় থাকলাম।


      গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।

      জবাব দিন
  4. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    সাঈদ বিশ্বাস স্যার এর আমাদের কলেজে এসেও হাউজ ফিলিং জারি ছিলো।
    কোনভাবে স্যারদের যদি হাউজ এর বাইরে রাখা যেতো তাহলে বেশ হতো।
    অনেকের অনেক কদর্য চেহারা দেখতে হতো না।

    মাহবুবুল আলম স্যার এর স্ত্রী কি তাহমিনা ম্যাডাম ছিলেন///
    তাহলে মাহবুবুল স্যার কে আমরা ভিপি হিসাবে পেয়েছি।

    আর ডি এ কে দেওয়ারি স্যার আমাদের কলেজে প্রিন্সিপাল হয়ে আসেন।


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
    • মুজিব (১৯৮৬-৯২)

      হাউজ কম্পিটিশনে নিজে এগিয়ে যাবার চেয়ে অন্যকে পিছিয়ে দেবার এই ধ্বংসাত্মক প্রবনতাটা কিছু কিছু শিক্ষকগনের মাঝে খুব ভয়াবহ ভাবে বিরাজমান ছিল। এখনও আছে বলেই আমার বিশ্বাস। অথচ তাঁদের অন্যতম দায়িত্ব হল এই প্রবনতাকে প্রতিরোধ ও প্রতিকার করা।
      আমার মনে হচ্ছে তুমি এই মাহবুবুল আলম স্যারকেই ভিপি হিসেবে পেয়েছিলে (পুরোপুরি নিশ্চিত নই, তবে শুনেছি উনি নাকি পরবর্তিতে বিসিসির প্রিন্সিপ্যাল হয়েছিলেন)
      দিওয়ারি স্যারকে আমরা পাইনি, তবে কলজে থাকতে ওনার নাম অনেক শুনেছি।
      থ্যাংকস ফর দ্যা কমেন্ট রাজিব


      গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।

      জবাব দিন
  5. পারভেজ (৭৮-৮৪)

    গতরাতেই পড়লাম কিন্তু লগ ইন না থাকায় আর মন্তব্য করা হয় নাই।
    জমজমাট গল্প।
    যদিও সেট আপ বেশ পরিচিত তবুও বর্ননের গুনে শিল্পোতির্ণ হয়েছে।
    কেবলই স্মৃতিচারনা হিসাবে রয়ে যায় নাই।

    চলুক চলুক আরও আরও এরকম স্মৃতিচারনামূলক গল্প-গাঁথা.........


    Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

    জবাব দিন
    • মুজিব (১৯৮৬-৯২)

      থ্যাংকস পারভেজ ভাই :hatsoff:
      স্মৃতি চারন চলতে থাকুক জোর কদমে।


      গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।

      জবাব দিন
  6. জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

    হা হা...দারুণ লাগলো মুজিব ভাই।
    শফিউল্লাহ ভাই এর তেল চাইবার অংশটুকু পড়ে হো হো করে উঠলাম।

    আমি শিওর আপনার স্টকে এরকম প্রচুর স্মৃতি আছে।
    জলদি লেখা দেন...

    তা না হলে আপনার নামে ব্লগ এডুর কাছে কিন্তু এরকম চিঠি দেব-

    দেশ মাতৃকার সেবায় জীবন উৎসর্গ করে দেবার মহান বাসনা নিয়ে আজ থেকে প্রায়...

    :grr:


    ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

    জবাব দিন
    • মুজিব (১৯৮৬-৯২)

      😀 😀 😀
      স্মৃতি তো আছে অনেক। মোটামুটি সবারই একই ফরম্যাটের, শুধু সময় আর চরিত্রগুলো আলাদা। হ্যা, আস্তে ধীরে সেগুলো নিয়েও লিখবো, আশা রাখি।


      গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।

      জবাব দিন
  7. খায়রুল আহসান (৬৭-৭৩)

    চমৎকার, রসোত্তীর্ণ স্মৃতিকথা।
    "আমাদের কেউ খারাপ ছাত্র না" - সব ক্ষেত্রেই মেধার প্রয়োজন। স্ট্যান্ড করতেও যেমন, কাঁঠাল চুরিতেও তেমন, ফলদায়ক দলিল লেখনিতেও তেমন।
    "সেখানে খুব সামান্য অংশ জুড়ে ছিল মূল ঘটনার বিবরন, বাকিটা ছিল আমাদের আঘাতপ্রাপ্ত অনুভুতির এক বিশাল বহিঃপ্রকাশ। আগাগোড়া আবেগের ঠাস বুননে গাঁথা সেই পত্রে ইতিহাস ছিল, ভুগোল ছিল, ছিল কিশোর মনস্তত্ত্ব। আমাদের যার যতটুকু সাহিত্য প্রতিভা ছিল তার সবকিছুই ঢেলে দিয়েছিলাম সেখানে।" - সেই ২২ পষ্ঠার দলিলটা পড়তে ইচ্ছে হচ্ছে।
    "আমরা বুঝলাম, শনির দশা কেটে গেছে" - যাক, পাঠকের দুশ্চিন্তাও ঘুচলো!

    জবাব দিন
  8. মুজিব (১৯৮৬-৯২)

    থ্যাংকস খায়রুল ভাই।
    জেসিসির প্রিন্সিপ্যালের দেরাজ ঘাঁটলে সেই ২২ পৃষ্ঠার দলিলের একটা কপি পাওয়া যেতে পারে। তবে এত বছরে সেটিকে ঘিরে মনের মাঝে যে একপ্রকার রোমান্টিসিজম তৈরি হয়েছে সেটা নষ্ট করার ঝুঁকি নিতে চাইনা। 🙂 :dreamy:


    গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : মুজিব (১৯৮৬-৯২)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।