অযান্ত্রিক

ঋত্বিক ঘটকের অনন্য শব্দসংযোগ এবং সম্পাদনার প্রথম নিদর্শন অযান্ত্রিক। সিনেমার ইতিহাসে প্রথম সিনেমাগুলোর একটি যাতে কোন জড় বস্তুর সাথে মানুষের সম্পর্ক দেখানো হয়েছে। ক্ষেত্রবিশেষে অযান্ত্রিকে কিছু কল্পবিজ্ঞান থিম ফুটে ওঠে। আধুনিক ডিজনি সিনেমাগুলোতে গাড়ির ওপর যেভাবে প্রাণ আরোপ করা হয় সম্পূর্ণ বাস্তবতাবাদী গণ্ডীর মধ্যে থেকেই ঋত্বিক ঘটক সেটি অসাধারণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। কল্পবিজ্ঞান বা রূপকথার আবহ তৈরির জন্য তাকে ফ্যান্টাসি সিনেমার ব্যকরণ প্রয়োগ করতে হয়নি। পোস্ট-প্রোডাকশনে ধারণকৃত বিভিন্ন শব্দ এবং ট্যাক্সির ভেঙে যাওয়া বিভিন্ন অংশের আপাত-অবাস্তব নড়াচড়ার মাধ্যমে গাড়িরও যে প্রাণ আছে তা ভাবতে বাধ্য করেছেন তিনি।

সিনেমার কাহিনী বিমল মাস্টারকে নিয়ে, একজন গ্রাম্য ট্যাক্সি চালক। ১৫ বছর ধরে তার সেই পুরনো মডেলের লক্কর ঝক্কর 1920 Chevrolet jalopy টিই চালাচ্ছে, জগতে তার এই ট্যাক্সি ছাড়া আর কেউ নেই, সে তার নাম দিয়েছে জগদ্দল। জগদ্দলই তার একমাত্র সম্বল এবং প্রিয়তম বন্ধু, পৃথিবীর অন্য সবার সাথে তার যোগাযোগের মাধ্যম। ট্যক্সির সাথে সে কথা বলে, ট্যাক্সিকে পানি খাওয়ায়, ওকে নিয়ে খারাপ কথা বললে রেগেমেগে আগুন হয়ে যায়, জগদ্দলের বিন্দুমাত্র অপমান বা অবহেলা সহ্য করে না। বিমল মাস্টার সত্যজিৎ রায়ের অভিযান সিনেমার ট্যাক্সি চালক নরসিংহ (সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় অভিনীত) চরিত্রটির অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করে থাকতে পারে। ওদিকে আবার নরসিংহ মার্টিন স্কোরসেজি-র ট্যাক্সি ড্রাইভার সিনেমার ট্র্যাভিস বিকল চরিত্রের অনুপ্রেরণা বলেও মনে করেন অনেকে। সেদিক দিয়ে অযান্ত্রিক একটি ঐতিহ্যের ধারক এবং পথ প্রদর্শক।

ভারতের বিহার অঙ্গরাজ্যের একটি মফস্বলের বাস স্টেশনে কাজ করে বিমল। অন্যদের চকচকে গাড়ির কারণে তার কাস্টমার খুব বেশি জোটে না। কিন্তু যা জোটে তাতেই তার হয়ে যায় এবং তা নিয়ে সে গর্বিত। জগদ্দলের বিদায়ের আগে আগে বিমলের জীবনে ঘটে যাওয়া বেশ কিছু ঘটনার আলেখ্যচিত্র হিসেবে কাজ করলেও সিনেমার মূল বিষয়বস্তু একটি যন্ত্রের সাথে বিমলের সম্পর্ক, যেই বিমলকেও আবার বেংগল ক্লাবের লোকেরা ব্যঙ্গ করে যন্ত্র আখ্যা দেয়। সেন্সেস অফ সিনেমার লেখিকা ও চলচ্চিত্র তাত্ত্বিক মেগান ক্যারিজির (Megan Carrigy) মতে অযান্ত্রিকে ট্যাক্সি ও বিমলের সম্পর্ক ফিল্ম ক্যামেরার সাথে স্বয়ং ঋত্বিক ঘটকের সম্পর্কের প্রতি ইঙ্গিত করে।

কুমার সাহানির (ঘটকের ছাত্র) সাথে ঋত্বিক ঘটক নাকি প্রায়শই লুমিয়ের ভাইদের “L’Arrivée d’un train à la Ciotat” দেখতেন আর হাসতেন। পৃথিবীর প্রথম সার্থক চলচ্চিত্র হিসেবে খ্যাত এই ছবিটিতে দেখা যায় একটি ট্রেন এসে স্টেশনে থামছে। একটি যন্ত্র (ক্যামেরা) কিভাবে আরেকটি যন্ত্রের (ট্রেন) দিকে তাকিয়ে আছে এই দেখে তাদের হাসি পেতো। অযান্ত্রিকে তেমনি অনেক বার ট্রেনের দিকে তাকিয়ে থাকার সুযোগ হয়েছিল ঘটকের ক্যামেরার। তবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার এই যে, ঘটক দাবী করতেন সিনেমার প্রতি তার কোন টান নেই, সিনেমার মাধ্যমে কম সময়ে সবচেয়ে বেশি মানুষের কাছে পৌঁছানো যায় বলেই একে বেছে নিয়েছেন। সেদিক থেকে কোন শিল্পমাধ্যমের প্রতিই তার বিশেষ টান ছিল না। তার টান ছিল বাংলার মানুষের প্রতি, তিনি পৌঁছাতে চাইতেন এই মানুষদেরই কাছে।

তারপরও এতো একাগ্রতার সাথে ঘটক এতগুলো সিনেমা বানিয়েছেন যা দেখে আমাদের মানতে ইচ্ছে করে না যে সিনেমার প্রতি তার কোন টান ছিল না। ক্যামেরার সাথে ঘটকের সম্পর্ক পরীক্ষা করার সবচেয়ে ভাল উপায় হিসেবে তিনি নিজেই রেখে গেছেন অযান্ত্রিক। বেংগল ক্লাবের লোকে বিমলকে যন্ত্র বলে, আর বিমল এমনকি তার যান্ত্রিক গাড়িটিকেও মানুষ বলে দাবী করে। তার কথা মতে অন্য গাড়ির মত জগদ্দলের নাকি কখনও সর্দি-কাশি হয় না। তবে তার ক্ষুধা-তৃষ্ণা পায়। জগদ্দলকে খাওয়ালে পড়ে সে তৃপ্তির ঢেকুর তোলে। সাউন্ড এডিটিং এর মাধ্যমে গাড়ির উপর এসব মানবীয় গুণ আরোপ করেছেন ঘটক। মাঝেমাঝে জগদ্দলের হেডলাইট নিজের ইচ্ছামত নড়াচড়া করে। এসব দৃশ্য এবং সিনেমার নাম থেকে বোঝা যায় যন্ত্রটির সাথে বিমলের সম্পর্ক পুরোপুরিই মানবিক তথা অযান্ত্রিক। এমনকি গাড়ির স্বাধীন ইচ্ছার স্বীকৃতিও দিয়েছে বিমল। নতুন পার্টস কিনে লাগানোর পরও যখন জগদ্দল অকেজো হয়ে পড়ে তখন রেগে গিয়ে সে একের পর এক বড় বড় পাথর এনে পিছনের সিট ভর্তি করে, উদ্দেশ্য তাকে কষ্ট দেয়া। মেরেও সোজা করতে না পেরে অবশেষে হাল ছেড়ে দেয় বিমল, জগদ্দলের মৃত্যুর পর ঘুষি মেরে সামনের কাঁচ ভেঙে স্টিয়ারিং হুইলের উপর মাথা রেখে কাঁদতে থাকে।

সাধারণ মানুষের কাছে বিমলের যন্ত্রপ্রেম গ্রহণযোগ্য নয়, আমাদের কাছে সে পাগল। কেবল শিশু, গ্রাম্য চাষা বা সর্বপ্রাণবাদী আদিবাসীরাই তার প্রেমকে স্বাভাবিক মনে করতে পারে। আধুনিক শহুরে মধ্যবিত্তদের কথা হচ্ছে, পাথর বা নদীর প্রেমেও পড়া যায় কিন্তু যন্ত্রের নয়। ওদিকে আবার উচ্চিবিত্তের গাড়িপ্রীতিও রয়েছে। একটু অন্য রূপে গাড়ির প্রতি মানুষের প্রেম অন্য অনেক জায়গাতেই আছে এবং ঘটক সে ব্যাপারে সচেতনই ছিলেন। সবদিক থেকেই তাই বিমল চরিত্রটি খুব গুরুত্বপূর্ণ, সমাজ-সচেতন এবং তার প্রতি সিনেমার মায়াও প্রতিটি দৃশ্যে প্রকাশিত। বিমল ঘটকের অন্য অনেক সিনেমার মতই লোকশিল্প, গ্রামবাংলার জীবন এবং আধুনিক শিল্পযুগের মধ্যে সীমারেখা টেনে দেয়। আধুনিকতার চাহিদা হচ্ছে যুগের সাথে তাল মেলাতে যত দ্রুত সম্ভব পুরনোকে ফেলে দিয়ে নতুন কিছু খরিদ করতে হবে, নয়তো ফ্যাশন ধরে রাখা সম্ভব হবে না। এমনকি আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধব ছেড়ে হলেও এই যুগ উন্নতির দাবী তোলে। কিন্তু লোকশিল্প এবং আপামর বাংলার দাবী হচ্ছে পুরনোকে মায়া দিয়ে জড়িয়ে রাখা, আর মায়ার জিনিস কখনও হাতছাড়া না করা। বিমল অবশ্যই দ্বিতীয় গোত্রের লোক।

কিন্তু ঘটক কোন গোত্রের?- তিনিও বিমলের সহযাত্রী কিন্তু তাদের যাত্রার বাহন এক নয়। যেই যন্ত্র তার জীবিকা সেই যন্ত্রেরই প্রেমে পড়েছে বিমল, ঘটকের জীবিকাও একটি যন্ত্র- ক্যামেরা, কিন্তু তিনি এর প্রেমে পড়েননি বরং এই প্রেমটিকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে গেছেন। এখানেই প্রথা ভাঙার প্রয়াস। নিজেকে কেবলই চলচ্চিত্রকার ভাবতে রাজি ছিলেন না ঘটক, তিনি হতে চেয়েছিলেন রেনেসাঁর পথিকৃৎ, হতে চেয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথের মত সর্বজনীন শিল্পী। বিমলের আত্মীয়-স্বজন নেই কোন, ঘটকও দেশত্যাগী হয়েছেন। সব হারিয়ে মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য সিনেমাকেই বেছে নিয়েছেন শেষ পর্যন্ত। তার এই স্বেচ্ছাকৃত পছন্দেরই প্রতিধ্বনি বা আর্তনাদ বিমলের স্বতঃস্ফূর্ত যন্ত্রপ্রীতি। তবে এই আর্তস্বর একইসাথে হাস্যকর, এজন্যই বোধহয় অযান্ত্রিক একদিক দিয়ে কমেডি সিনেমা।

বিমল ও ঘটকের আরেকটি মিল হচ্ছে তারা দুজনেই নিজের জীবিকার সাথে সম্পূর্ণ প্রথাবিরোধী একটি সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। ঘটক সিনেমার সকল নিয়মই ভেঙেছেন, গড়েছেন নতুন নিয়ম, যুগের ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে সম্পূর্ণ স্বাধীন থেকেছেন। ক্যারিজির মতে সেদিক থেকে, বিমল ও ঘটকের সম্পর্কের ভিত্তি এই যান্ত্রিক যুগ নয়, বরং নিজেদের সম্পূর্ণ স্বাধীন এবং ব্যতিক্রমী প্রেম ও ভিশন যা তাদেরকে জগৎ থেকে আলাদা করে দিয়েছে।

অযান্ত্রিক ঘটকের প্রথম সিনেমা যা বাণিজ্যিকভাবে মুক্তি পায়। এতেই বেশ কিছু থিম সাজিয়ে ফেলতে পেরেছেন তিনি যেগুলো পরের অনেকগুলো সিনেমাতেই দেখা গেছে। একটি হচ্ছে নারীর ভূমিকা। ঘটকের সিনেমায় নারী সবসময়ই আরাধ্য, কারণ তার সিনেমার নারী ঠিক সাধারণ মা, প্রেমিকা বা কন্যা নয়, বরং গোটা মাতৃভূমি। তার নারীপ্রীতি কেবলই নাড়ির প্রতি টান, মূলে ফিরে যাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা। অযান্ত্রিকের একমাত্র নারী চরিত্রটিও সে কথা বলে। বিয়ের দিনে প্রেমিকের সাথে পালিয়ে এসেছে মেয়েটি। বিমলের গাড়িতে করেই তারা একটি ডাকবাংলোতে ওঠে। নিজের যাত্রীদের মধ্যে একমাত্র এই মেয়েটির প্রতিই বিমলের টান লক্ষ্য করা যায়, তার প্রতি মেয়েটির আচরণ দূরের হলেও খুব মায়াময়। ট্যাক্সির ছাদে ফুটো দেখে মেয়েটি সমালোচনা করে না বরং বলে, এই ফুটো দিয়ে খুব সুন্দর আকাশ দেখা যায়। পুলিশ খোঁজ করলেও বিমল বলে সে এই চেহারার কাউকে দেখেনি। একদিন আবার রাস্তায় দেখা হয় মেয়েটির সাথে, তার সব গয়না নিয়ে প্রেমিক পুরুষটি পালিয়েছে। মেয়েটির এখন বাপের বাড়িও নেই, শ্বশুর বাড়িও নেই, চোখে মায়ার সাথে শিশুতোষ আনন্দের বদলে এবার যন্ত্রণার ছাপ, তাদের দূরত্বটি ঠিক আগের মতোই। দূরত্ব ঘোঁচাতে স্বতঃস্ফূর্তভাবেই সে বলে ওঠে যে ছাদের চাদর সেলাই করে দিয়েছে। আকাশ দেখা যাচ্ছে না বলে মেয়েটি কষ্টই পায় কিনা কে জানে।

ট্রেন স্টেশনে মেয়েটিকে কলকাতার টিকেট কেটে দিয়েও দ্বিধায় ভুগতে থাকে সে। ওদিকে মেয়েটি কিছু না বলে ট্রেনে উঠে যায়। অযান্ত্রিকে আধুনিকতার দুর্নিবার টানের প্রতিভূ ট্রেন- সেই ট্রেনই মেয়েটিকে নিয়ে ছুটে চলে অজানার পথে। বিমলের মা, মাটি আর মাতৃভূমি হারিয়ে যায় চিরতরে। যাওয়ার সময় ট্রেনের শব্দে তারা কেউই কারও কথা শুনতে পায় না। অনেকটা ফেদেরিকো ফেলেনি-র লা দোলচে ভিতা-র সমুদ্র দৃশ্যের মত। সমস্যা হল মেয়েটি ট্যাক্সিতে একটি কাপড়ের পুটলি ফেলে গেছে। সেটি ফিরিয়ে দিতে ট্যাক্সি করে ট্রেনের সাথে পাল্লা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিমল, কিন্তু এখান থেকেই তার সবকিছু ছিন্নভিন্ন হতে শুরু করে, ঘনিয়ে আসতে থাকে জগদ্দলের মৃত্যুঘণ্টা। মূলোৎপাটিত হয়ে কোথাও আর ঠাঁই খুঁজে পায় না বিমল। দেশছাড়া হয়ে ঘটকও হারিয়েছিলেন অনেক কিছু, তারচেয়েও বড় কথা তিনি সচক্ষে মানুষকে সর্বস্ব হারাতে দেখেছিলেন। সেই হারানোর বেদনা তার সব সিনেমাতেই প্রস্ফূটিত।

আদি, অকৃত্রিম এবং লোকশিল্পের প্রতিনিধি হিসেবে আদিবাসী আচারানুষ্ঠান এই সিনেমাতেই প্রথম দেখিয়েছেন ঘটক যা পরেও অনেক দেখা গেছে। তবে অযান্ত্রিকে আমার সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং লেগেছে গীর্জা, গীর্জার ঘণ্টা এবং খ্রিস্টানদের সমাধিস্থলের ব্যবহার। ক্রুশচিহ্ন এখানে অবশ্যই মৃত্যুর প্রতীক হিসেবে এসেছে। মৃত্যুর পর জগদ্দলকে ভেঙে টুকরো টুকরে করে পুরনো লোহা লক্কর হিসেবে ২ টাকা মণে বিক্রি করে দেয় বিমল। ঠেলাগাড়িতে করে লোহার টুকরোগুলো নিয়ে যাওয়ার পর বিমলের ফোরগ্রাউন্ডে পরপর ভেসে ওঠে দুটি ক্রুশ চিহ্ন, প্রথমে একটি ধবধবে সাদা এবং পরে একটি কালো ক্রুশ। দেখানো সম্ভব হয় কারণ বিমলের বাড়ি একটি গোরস্থানের পাশে যেখান থেকে চার্চের ঘণ্টাও শোনা যায়।

তবে শেষ পর্যন্ত অযান্ত্রিক নৈরাশ্যবাদী নয় বরং আশাবাদী সিনেমা। সাদাকালো ক্রুশের রহস্যময় ছবির পরই একটি শিশুকে জগদ্দলের একটি পার্টস নিয়ে খেলতে দেখা যায়। সেই পার্টসের শব্দ আর স্মৃতিতে থাকা আদিবাসীদের গানের আবহে হাসি ফুটে ওঠে বিমলের মুখে।

২,৫১৭ বার দেখা হয়েছে

১০ টি মন্তব্য : “অযান্ত্রিক”

  1. নাফিজ (০৩-০৯)

    দারুণ একটা মুভি রিভিউ লিখলেন তো ভাইয়া।

    ঋত্বিক ঘটকের একটা মুভিও দেখি নাই, ভাবতেসি এইটা দিয়েই শুরু করবো কিনা।


    আলোর দিকে তাকাও, ভোগ করো এর রূপ। চক্ষু বোজো এবং আবার দ্যাখো। প্রথমেই তুমি যা দেখেছিলে তা আর নেই,এর পর তুমি যা দেখবে, তা এখনও হয়ে ওঠেনি।

    জবাব দিন
  2. সাইফুল (৯২-৯৮)

    "অযান্ত্রিক এর রিভিউ" এবং "ঋত্বিক ঘটক-এর কাজ" এই দুটো বিষয় লেখাতে অনেকবার মিশে গেছে বলে মনে হয়েছে আমার, যদিও পড়তে দারুণ লাগলো। দুটো বিষয় আরেকটু আলাদাভাবে নিয়ে আসলে মনে আরও অসাধারণ হত...

    জবাব দিন
    • মুহাম্মদ (৯৯-০৫)

      সিনেমার রিভিউ কিন্তু অনেকটাই পরিচালকের কাজের আলোচনা। এখানে বিষয় দুটো আরও জড়িয়ে গেছে কারণ সিনেমা ব্যাখ্যা করার জন্য একটি দৃষ্টিভঙ্গিই হচ্ছে সিনেমার মূল চরিত্রের সাথে ব্যক্তি ঋত্বিক ঘটকের মিল-অমিল। তথাপি নোটিস করার জন্য ধন্যবাদ...

      জবাব দিন
  3. ফয়েজ (৮৭-৯৩)

    ইস, ছবিগুলো যদি তোমার মত চোখ দিয়ে দেখতে পারতাম মুহাম্মদ ! কি অসাধারন দৃষ্টিভংগি তোমার :hatsoff:

    ছবি না দেখেও বিমলের ব্যাথাটা বুঝতে পারলাম। তার আনন্দ, আকুতি, বেদনা।

    বাংলা ছবিতে রূপকের মাধ্যমে আশার কথা তুলে ধরা দেখিনি তেমন। অবশ্য আমি ছবি দেখিও অনেক কম। আর ইংরেজী ছবিতে এরকম কোন দৃশ্য দেখলে আশাবাদী হই, তবে সেই আশা অবশ্য ছবিটার সিক্যুয়েল এর জন্য অন্য কিছু নয়। 😀

    ইতালী আর জার্মান এর ফরেন ব্যুরোকে ধন্যবাদ, তাদের কারনেই মনে হয় তোমার লেখা পাচ্ছি আমরা অনেকদিন পরে, কি বল?


    পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

    জবাব দিন
    • মুহাম্মদ (৯৯-০৫)

      ঠিকই বলছেন মনে হয়- ভিসা ছাড়া থাকতে গিয়া ভিসা ছাড়া একমাত্র যেই দেশে থাকা সম্ভব সেই দেশের কথা মনে পড়ে বেশি, এজন্যই এত লেখালেখি... 😀
      না এবার কন্টিনিউ করতে চাই। বিদেশ আসার পর এতো বিপুল পরিমাণ সিনেমা দেখছি, দেশে থাকতে যেগুলা পাওয়াই ছিল অসম্ভব, সবই অবশ্য পাইরেসির কল্যানে। পাইরেসি ছাড়া গরিবের মুভি দেখার উপায় নাই ইউরোপ প্রবাসীদের। কারণ সিনেমা হলে চলে এদেশীয় সিনেমা, কোন সাবটাইটেল নাই তাই দেখার উপায় নাই। তাছাড়া টিকেটের দাম ৭ ইউরো। আর একটা সিনেমার ডিভিডির দাম কমপক্ষে ১০ ইউরো। তাই পাইরেসিই ভরসা।
      সিনেমা নিয়েই রেগুলার লিখব ভাবতেছি। লেখা না আগানোর একটা বড় কারণ উচ্চাকাঙ্ক্ষা, মনে হয় লেখাটা মনে হয় ভাল হয় নাই, এত শত চিন্তা না করে যা মনে আসে তাই লিখে ফেলাই তাই সর্বোত্তম।

      জবাব দিন
  4. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    ঋত্বিক ঘটক এর নাম অনেক দিন ধরেই শুনেছি কিন্তু কিছুই জানা ছিল না, তোমার লেখার মাধ্যমে তার কিছুটা পরিচয় পেলাম, এবার সুযোগ করে মুভিও দেখতে হবে।

    তোমাকে সিসিবিতে দেখে ভাল লাগছে, আশা করি নিয়মিত লেখা পাব 🙂


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
    • মুহাম্মদ (৯৯-০৫)

      অনেকে বলেন এই বাংলাকে সবচেয়ে বেশি ভালবাসতেন শেখ মুজিবুর রহমান। শেখ মুজিবকে আমি বাংলার প্রেমে পড়া শীর্ষ কয়েকজনের একজন বলেই মনে করি। কিন্তু আমার মতে বাংলাকে সবচেয়ে বেশি ভালবেসেছিলেন ঋত্বিক ঘটক, শুধু ভালই বাসেন নি, তিনি বাংলাকে ভালবাসতে শিখিয়েছেন। কোনদিন বাঙালি নিজের পরিচয় নিয়ে সংকটে পড়লে পরিচয় উদ্ধারের জন্য ফিরে যাবে ঋত্বিক ঘটকের কাছে। আমার কাছে বাংলা মানেই ঘটক আর ঘটক মানেই বাংলা। ঋত্বিক ঘটকের জন্য এই বাংলাকে এতো ভালবাসি...

      জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : সাইফুল (১৯৯২-১৯৯৮)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।