ইয়াহু চরিতঃ বাল্যখিল্য মূল্যবোধ

250px-Gullivers_travels

 

 

 

 

 

 

লিমুয়েল গালিভার ছিলেন এক মহাপণ্ডিত। ইয়াহু জাতির বৈশিষ্ট নিয়ে ভয়ানক নাক সিটকাতেন। এজন্য তাকে অনেকে মঙ্গল গ্রহের মানুষ বলতো। মনুষ্য সমাজে তিনি জোনাথন সুইফট নামে পরিচিত ছিলেন। পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে ভ্রমণ করে উদ্ভট চিন্তাধারা আর আজব সব প্রথা সম্পর্কে ব্যাপক জ্ঞান অর্জন করেন  তিনি। এসব নিয়ে তাঁর ভ্রমণ কাহিনী ১৭২৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত হয়। তাঁর বিচিত্র পর্যবেক্ষণ বিদগ্ধ গ্রন্থকীটদের জন্য উপাদেয় বিবেচিত হতে পারে।

প্রত্যেক সরকারের পুরস্কার ও তিরস্কারের ব্যবস্থা থাকে। কিন্তু প্রয়োগ কম। তিরস্কার বা শাস্তি প্রদানে সরকার অনেক ক্ষেত্রে অনেক উদার কিন্তু পুরস্কারের বেলায় মহাকঞ্জুস। এ ব্যাপারে বাল্যখিল্যরা নমস্য। তাদের চিন্তাচেতনা বোঝার জন্য কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করা গেল।

যদি কোন নাগরিক প্রমাণ করতে পারে যে, সে ৭৩ চাঁদ ধরে দেশের আইন শৃংখলা কঠোর ভাবে মেনে চলেছে তাহলে তার জীবনযাত্রার মান অনুসারে আর্থিক পুরস্কার দেয়া হয়। সেটি সে ইচ্ছা মত খরচ করতে পারে। এছাড়া তাদের আইনমান্যকারী উপাধিতে ভূষিত করা হয়। তবে এই উপাধি পুরুষানুক্রমে ভোগ করা যায় না। বিলাতি ফৌজদারী দণ্ডবিধিতে শাস্তির বিধান আছে কিন্তু পুরস্কারের ব্যবস্থা নেই। এটা শুনে তারা খুব অবাক হত। আমাদের ন্যায় দেবীর চোখ বাঁধা কিন্তু তাদের ন্যায়দেবীর ৬টি চোখ। ২টি সামনে, ২টি পিছনে আর ২টি দুইপাশে। তিনি সব দিক দেখেন। তাঁর ডান হাতে একথলি সোনার মোহর আর বাম হাতে খাপে ভরা তলোয়ার। শাস্তির চাইতে পুরস্কারের ব্যবস্থা বেশি।

ঈশ্বরকে বিশ্বাসীকে চাকুরীতে নেয়া হয় কারণ সম্রাট ঈশ্বরকে বিশ্বাস করেন। সেই ঈশ্বরের অস্তিত্ত্ব যে বিশ্বাস করেনা সে সম্রাটেরও বিশ্বাসভাজন হতে পারে না।চাকরীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যতা, নৈতিক চরিত্র ও সততার উপর জোর দেয়া হয় । জনগণের জন্যই সরকার। জনগন যেন সরকারী কাজকর্ম সহজ ও সরলভাবে বুঝতে পারে । অতি বুদ্ধিমান কাউকে নিযুক্ত করলে সে যদি অন্যায় করে তবে চতুরতার আশ্রয় নেয়। কিন্তু সরল একজন দোষ করলে সঙ্গে সঙ্গে তা স্বীকার করে। সরল মানুষকে বোঝা অনেক সহজ। ক্রিড়াকৌশলে প্রার্থীর দক্ষতার পরীক্ষা নেয়া হয় যাতে কারচুপির সুযোগ না থাকে।

বাল্যখিল্যদের দেশে অকৃতজ্ঞতাকে মস্ত অপরাধ গণ্য করা হয়। যে অকৃতজ্ঞ সে মনুষ্যজাতির শত্রু এবং তার বেঁচে থাকার কোন অধিকার নেই।

সন্তানের জন্ম , লালন পালন বিষয়ে বাল্যখিল্যদের চিন্তা অন্যরকম। তারা বলে-পশুপ্রবৃত্তির ফলে মানুষ সন্তানের জন্ম দেয়। সন্তান তার অজান্তেই পৃথিবীতে এসছে অতএব পিতামাতার প্রতি তার দায় দায়িত্ব না ও থাকতে পারে। তাই সন্তানদের শিক্ষার ভারও পিতামাতার উপর ছেড়ে দেয়া যায় না। রাষ্ট্র বিষয়টি দেখবে। কিন্তু খরচপাতি পিতামাতাকেই দিতে হবে। জীবন যাপনের প্রয়োজনীয় শিক্ষা তাদের স্কুলেই দেয়া হয়।

১,১৩৬ বার দেখা হয়েছে

১৪ টি মন্তব্য : “ইয়াহু চরিতঃ বাল্যখিল্য মূল্যবোধ”

  1. মোকাব্বির (৯৮-০৪)

    গালিভার্স ট্রাভেলসের একটা অনুবাদ পড়েছিলাম অনেক আগে। খুব ভালো লেগেছিল। আবার মনে হচ্ছে ভাল লাগবে! পরের পর্ব দিয়ে দেন। বসে আছি! 😀 😀


    \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
    অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : মোস্তাফিজ (১৯৮৩-১৯৮৯)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।