বেহায়া শীত

[ বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ ইহা সুশীলদের জন্য নহে ]

কয়েক দিন হল মৃদু শৈত্য প্রবাহ চলছে । কেমন মৃদু ? হরতাল ঠেঙ্গাতে পুলিশ যেমন মৃদু লাঠিচার্জ করে সে রকম আর কি । যাই হোক মৃদু শীতে গুরুতর কম্পন ঠেকাতে হীটার ফ্যান কিনলাম। বিদ্যুতের দাম বেড়েছে। একটু বেশী দরেই উষ্ঞতা কিনতে হবে । এখন তো আর ভার্সিটিতে পড়িনা যে ফ্রি বিদ্যুত ব্যবহার করব! সেই সময়ের কথা মনে পড়লে এখন খারাপই লাগে। সুযোগ পেয়ে কত অপচয় ! রাজশাহী রেল স্টেশনে এক শীতের রাতে ট্রেন ধরার জন্য অনেক রাত হয়ে গেল । দুই পিচ্চিকে দেখি ধানের খড় ( পোয়াল ) বিছিয়ে তার উপর পাটি বিছাচ্ছে। একটু কৌতুহলী মন জানতে চাইল এসব বাস্তুহীন লোক কিভাবে শীত কাটায় । টোকাইদের  মুখে যা শুনলাম তা আপনাদের সুশীল কান বা চোখ হয়তো সহ্য করতে পারবে না। কুশিল হলে পড়ুন-

বেহায়া শীত ( গ্রামে )

বেড়ার ফাকেঁ কুয়াশা ঢুকে
নাইকো কাম ভাত।
কুত্তার ডাকে ন্যাংটা
হয়া গেল শীতের রাত।

বেহায়া শীত ( শহরে )

খ্যাড়ের উপুর পাটি
তার উপুর পাটি
তার উপুর খ্যাড়
ভিতরে আমরা জাড়।
জাড়ের ঠাপে শিয়াল কাঁদে
বাতাস গরম করি পাদে।

অবাক হচ্ছেন ? না কি গন্ধ লাগছে ? দুঃখিত ! এটাই বাস্তব । হলে শীতের রাতে আমরা বাতাস গরম করার জন্য সারারাত হীটার জালিয়ে রাখতাম। আর বাস্তুহীন গুল্লু ভেটুলেরা শীতের রাতে পোয়ালের উপরে পাটি ( খেজুর পাতার চাটাই)  বিছিয়ে তার উপর আরেকখান পাটি পোয়াল দিয়ে মাঝে ঢুকে। তার পর বাপ মা ভাই বোন সব মানব গ্যাসে বাতাস গরমের চেষ্টা। প্রিয়ভাজন মামুনুর রশীদ খান এবং তাওসীফ হামীমের লেখায় কিছু শব্দের ব্যবহার দেখে এই নোংরা ব্যাপার পোষ্টানর সাহস পেলাম।

২,৪৪৬ বার দেখা হয়েছে

৩০ টি মন্তব্য : “বেহায়া শীত”

  1. মামুনুর রশীদ খান(২০০১—২০০৭)

    "জাড়ের ঠাপে শিয়াল কাঁদে
    বাতাস গরম করি পাদে।"

    এপিক ছিল! 😀 😀

    বাই দ্যা ওয়ে,
    ভার্সিটি লাইফে উষ্ণতা শুধু ফ্রিই নয়,প্রাকৃতিক। আবার ক্ষেত্র বিশেষে জৈব-রাসায়নিক। 😀


    ক্যাডেট রশীদ ২৪তম,প ক ক

    জবাব দিন
  2. মোকাব্বির (৯৮-০৪)

    রূঢ বাস্তবতায় অশ্লীলতা নিঃশব্দে চাটাইয়ের ফাঁক দিয়ে বের হয়ে চলে যায়। 🙂


    \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
    অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

    জবাব দিন
  3. শাহীন (৯৬-০২)

    বলতে পারছি না যে আমার মন্তব্যটা সঠিক হবে কিনা।,মোস্তাফিজ ভাই ক্ষমা চয়ে নিচ্ছি আগেই।
    কিন্তু এটাই বাস্তবতা। আমাদের পৃথিবীটা এভাবেই চলছে আর চলতে থাকবে।
    গুটি কয়েক শব্দের আধারে এইটা পরিবর্তন সম্ভব না।
    যদিও চেষ্টার কোন শেষ নাই।

    তবে মনে আছে, ক্লাস এইটে এমন একটা রচনা লিখে হাইয়েস্ট পেয়েছিলাম।
    ঈদ শেষে কলেজে ফিরে পাক্ষিক পরিক্ষায়। (সম্পাদিত)


    The Bond Cadet

    জবাব দিন
  4. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    শীত থেকে রক্ষা পাবার সাশ্রয়ী উপায় বলে দিই রুম হিটারের চাইতে।
    ০১ হিটার ছাড়ুন তবে বিছানায় শোয়ার পরে নয়।
    ০২ বিছানার জন্য হিটেড ম্যাট্রেস ইউজ করুন। হিটেড ব্লাঙ্কেট কখনোই নয়।
    ১০ থেকে ১৫ মিনিট চালালেই সারা রাতের জন্য নিশ্চিন্ত। তবে এটা ২ থেকে ৫ হাজার টাকার ধাক্কা। এর বিকল্প হিসাবে ৩ নম্বর
    ০৩ ভালো জাতের, চায়না মেড হতে পারে। হট ওয়াটার ব্যাগে গ্রম পানি ভরে (একটু খালি রাখুন) ঘুমানোর বা বিছানায় শোয়ার আধ ঘন্টা আগে লেপ বা কম্বলের নিচে রাখুন। ভালো করে লক করবেন, নতুবা বিছানা ভিজে যেতে পারে।
    ০৪ পায়ে মুজা পড়ুন।
    ০৫ টপ ও বটম বডি ওয়ার্মার পড়ুন।
    ৬ :-B

    সেইসাথে একটা সাজেশন বিছানার পাশে একটা ফ্লাক্সে গরম পানি রাখুন।


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  5. মাহমুদুল (২০০০-০৬)

    থাকি উত্তরবঙ্গে। একটা কম্বল দিয়ে কলেজের ক্রিম রোলের ভিতরের ক্রিম হয়ে ঘুমাইতে যাই। সমস্যা হয় না।

    একবার ঢাকা ভার্সিটির ফুটপাতের পিচ্চিগুলোকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, ঠান্ডা লাগে না? ওদের উত্তর ছিল, না লাগে না। 😉 তবে আপনার মেসেজটা সত্যি। শীতের তুলনায় আমাদের যাদের সামর্থ্য আছে তাদের আয়োজন টা বেশিই থাকে।


    মানুষ* হতে চাই। *শর্ত প্রযোজ্য

    জবাব দিন
  6. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    দারুন মোস্তাফিজ ভাই :hatsoff:

    শীত কাকে বলে হাঁড়ে হাঁড়ে টের পেয়েছি যমুনার পাড়ে আর রাজেন্দ্রপুরের জঙ্গলে তাঁবুতে থাকতে গিয়ে। পায়ে মোজা, মাথায় কান টুপি আর গায়ে জ্যাকেট, পুরো প্যাকেট হয়ে কম্বলের নিচে ঢুকতাম। তাঁবু গরম রাখার জন্য মালসায় কয়লা জ্বালিয়ে রেখে দিতাম। তবে সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং ছিল এক শীতে কোন শ্যাম্পুর সাথে মিনি হেয়ার ড্রায়ার দিচ্ছিল। ওই হেয়ার ড্রায়ার অন করে কম্বলের নিচে রেখে দিতাম ঘুমানোর ঘন্টাখানেক আগে, বিছানা কম্বল ততক্ষনে গরম হয়ে দারুন ওম দিত 🙂


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।