ডার্টি সিক্স

[ ব্লগ অ্যাডজুটেন্ট স্যারের কাছে প্রথমেই ক্ষমা চাচ্ছি ডার্ট পোস্ট করার জন্য । স্যার যদি খাতির করেন তাহলে চা খাওয়াব ]
এক সময় কাসিম  হাউসের  ছয়  নম্বর রুমে ছিলাম। ঐ রুমে বসবাসকারীরা ঐতিহ্যগতভাবে নোংরা ছিল। নোংরামিটা বেশি ছিল মোজা নিয়ে। মোজা কাচতে ভীষন অনীহা। একজন তো মোজা খুলে কৌটায় রাখতো। জুনিয়রদের জন্য ঐ কৌটাবদ্ধ মোজার গন্ধ শোঁকা ছিল মেজর পানিশমেন্ট। আর একজন জাংগিয়া কাচতো না, প্রতিবার ছুটি শেষে কলেজে আসার সময় বেশ কয়েকটা জাংগিয়া নিয়ে আসতো। যেটা আর পরা যেতনা সেটা ফেলে দিত। একজন কয়েকদিন ফ্লাস্কে রেখে পচানো চা খেত। এ রকম বিভিন্ন কারণে ছয় নম্বর রুমকে বলা হত ডার্টি সিক্স। এক ছুটির রাতে হান্নান স্যার এবং হাসিম উদ্দীন স্যার বারান্দা দিয়ে হাঁটছেন। আমাদের রুমের সামনে দিয়ে যাবার সময় বাতাসে ধাক্কা খেয়ে হান্নান স্যার বলে উঠলেন- ওহ্ মাই বয়, মজার গন্ধ পাওয়া যায়। তার পর ডার্টি ক্যাডেটদের শায়েস্তা করতে দরজা খুলেই আরেক ধাক্কায় বলে উঠলেন – হাছিম ভাই এদিকে আসবেন না, এরা সব ল্যাংটা ফ্যাংটা পরে আছে।কয়েকজন ড্রেস চেঞ্জ করছিল। সেই ডার্টি রুমমেটদের স্মরণে সিক্স ডার্টি  প্র্যাক্টিক্যাল জোকস-

 ১। ইনোসেন্ট চাইল্ড
বাচ্চাদের সামনে বেফাঁস কথা বললে বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরী হতে পারে। এমন একটা সত্যি ঘটনা বলছি। ক্লাস টু এর এক ছেলে আখ কাটা দেখে বাড়ি ফিরেছে। বাড়িতে বড়রা আলাপ করছিল শ্রমিকদের বদমায়েশি নিয়ে। তার বড় ভাই বলছেন ‘ লেবারেরা ছালপালের সামনে ম্যালা কতাই কয়। ক্যারে কেডা কি কইলি ক তো ? সব মুনে আচে তো ?’ ছেলেটা বল্লো  ‘ হ, সবই তো মুনে আচে। নজরুল চাচা কইলি আজ রাইতে বাপু যা -গী -দিচি।আমি খালি চার আনা দিচি।’ এটুকু বলতেই তার ভাই ধমকে উঠলেন ‘এই, থাম থাম। আর কতে হবিলি।’

 ২। হট ইজ প্রজনন
সওদাগর  ছবি দেখে রিকশায় ফেরার পথে অঞ্জু ঘোষের অ্যানাটমি আলাপ করছি বন্ধুর সাথে। ঐ রিকশাআলাও বেশ মজা পেয়েছিল। তার মন্তব্য- ও ভাই ! অঞ্জু ঘোষ যে ভূড়ি দোল্যালে, মনে হোয়লো টোয়নকো  হাত ড্যলি দি। সে না হয় গেল । কিন্তু রঞ্জু স্যার পরদিন ভালই ধোলাই দিলেন। তিনি বায়লজী পড়াতেন। তার ভাষাতেই বলি-
হট ইজ প্রজনন ?প্রজনন হয়লো পুনরায় উৎপাদন।
এইযে বর্ষাকালে ঘ্যাংগর ঘ্যাং করতে করতে একটা ব্যাং আর একটা ব্যাং এর উপরে উটচে।
মোরগ কক কক করে মুরগীকে ডাকচে, মুরগী বলচে না না আমি আসপনা। তাও মোরগ উটচে।
দিস ইজ প্রজনন। ডিম থেইকে বাচ্চা হচ্চে।
এই যে আমার খোকা । ও অ্যালো কোত্থেকে ? আমি যদি খোকার মার উপর না উটতাম তালে অরে কি পাতাম?   দিস ইজ প্রজনন। চ্যারদিকে দেইখে শিখতে হয়। তোরা তো এসব দেখপিনে। মেয়েগের বুকের কাপড় উইড়ে যাচ্চে, তাকি থাকচিস। অঞ্জু ঘোষের বাঙ্গীফাটা নাচ দেকচিস। নাইট পলিশান হই যাচ্চে। ক্লাসে আসতে পারচিসনে। যদিউবা আসচিস পড়া বলতে পারচিসনে। কই বোল। পড়া বোল।

৩। ঘরের টাকা ঘরেই থাকতো
নো অফেন্স সাহাজ। একবার এক ইউএনও স্যারের রুমে বসে খেজুরে আলাপ চলছে। হঠাৎ স্যার বললেন এই সমীর, সাহারা তো খুব কৃপন হয়। এ নিয়ে একটা গল্প আছে। তোমার আপত্তি না থাকলে বলতে পারি। তোমরা তো ব্যতিক্রম । অসুবিধা নাই, কি বল ? সমীরদা বল্লেন, কন স্যার। গল্পটাতো শুনি। স্যার বল্লেন, ঠিক আছে, তবে শোন সাহা দেবর ভাবীর গল্প-
: বৌদি, ও বৌদি, দুটো টাকা দাওতো।
: কেনরে ছোট ? টাকা কি হবে ?
: দাওনা বৌদি, তোমার দুটো পায়ে পড়ি।
: কি করবি বল । তাহলে দিব।
: আমার  াল মাথায় উঠে গেছে। ঐ পাড়ায় যাব।
: আ মোলো যা। আগে বলবি তো। এই মাত্র চান করে এলুম । নইলে ঘরের টাকা ঘরেই থাকতো।

৪। লস্ট ব্রিগেড
এক সৈনিক গণিকালয়ে গেছে। জায়গাটা অনেক বড় বলে এক পর্যায়ে সে তার বুট হারিয়ে ফেলল। কি আর করা। গহবরে নেমে সে বুট খুজতে লাগলো। হঠাৎ তার ব্রিগেডিয়ারের সাথে দেখা। সাথে সাথে স্যালুট। তার পর তাদের কথোপকথন-
: হোয়াট দা হেল ইউ আর ডুইং হিয়ার ?
: ফাইন্ডিং মাই বুট স্যার।
: হেল ইওর ফাকিং বুট। আই হ্যাভ লস্ট মাই হোল ব্রিগেড হিয়ার। জাস্ট ফাকঅফ।

৫। কিতা খাড়া হইয়া যায় ?
সিলেট থাকাকালে একবার বিয়ানীবাজার গিয়েছিলাম। সিলেটি ভাষায় জালসা হচ্ছে দেখে শুনতে লাগলাম। হুজুর তার ভাষায় বর্তমানের বেহায়া তরুনীদের ব্যাপারে বয়ান দিচ্ছেন-
আইজখাইলকার মাইয়াপোলারা অলানঅলান চলইন আর তারার বুক গুলানর অলান অবস্থা খরিয়া রাখইন। তারার বুক গুলানর অলান অবস্থা দেইখা আমরার যারা যুবক পোলাপান তারার কিতা খাড়া হইয়া যায় ? হুজুর চুপ করে আছেন। পাবলিক ভাবছে। তিনি বল্লেন-লোমা খাড়া হইয়া যায়।
(আপনে কিতা ভাবছিলায়? )।
অলান অবস্থা দেইখা তারার কিতা  টিপা দিতে ইচ্ছা করে ? আবারও পাবলিক ভাবছে। ভাবছি আমিও। তিনি বল্লেন- তারার গলায় টিপা দিতে ইচ্ছা করে।
বাঁচলাম বাবা। কত বাজে কথাই ভাবছিলাম। বুকে হাত দিয়ে বলুন তো আপনি কি ভেবেছিলেন ?

৬। পানি নাই ক্যা ?
একবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের লতিফ হলে ঠিকমত পানি পাওয়া যাচ্ছিলো না।পানির দাবিতে ছাত্ররা থালা বাটি বাজিয়ে মিছিল নিয়ে গেল প্রভোষ্ট স্যারের বাসায়। প্রভোষ্ট ভাবীতো খুব রেগে গেলেন। তিনি স্যারকে  ধমকালেন- “ সবার োলেত পানি আছে তোমার োলেত পানি নাই ক্যা ? ( তিনি চাঁপাই ছিলেন। হল কে োল বলতেন)। তার পর রিউমার। স্যারের ইয়েতে পানি না থাকায় ম্যাডাম খুব টেনশনে আছেন।

২,৪৫৮ বার দেখা হয়েছে

২১ টি মন্তব্য : “ডার্টি সিক্স”

  1. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    😀
    :))
    =))
    সব ভালো তবু গন্ধ ওয়ালা মোজা,আন্ডার ওয়ার এইসব নাকে ধাক্কা দেয়।
    সুশীল হয়ে গেছি বোধ হয়।
    ভালো লাগলো পড়ে।
    কিছু ভাষা বুঝতে কসরৎ করতে হইছে এই যা।
    প্রজনন, তেতুল শফির খালাতো ভাই বেশি ভালো।


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  2. মুহিব (৯৬-০২)

    ভাই ক্যাডেট কলেজের জোক্সগুলা পইড়া কলেজের কিছু গান্ধা ক্যাডেটের চেহারা ভেসে উঠল। যদিও তারা কালের পরিক্রমায় এখন অনেক সভ্য। তবে এইরকম গান্ধা দেখি নাই।

    আর ২ এবং ৫ নাম্বার জোক্স পইড়া ভাই আমার জানি কিতা খাড়া হইয়া যায় ? (মৌলানা সাহেবরে জিগাইয়া লইয়েন, আমি কমু না) :goragori: :pira: :tuski:

    জবাব দিন
  3. মোকাব্বির (৯৮-০৪)

    ইংরেজীর হান্নান স্যার আর ফিজিক্সের হাসিম উদ্দিন স্যারের কথা বললেন নাকি?! 😀

    হান্নান স্যারকে নিয়ে কাহিনী আর কাহিনী। কোন এক আইসিসিতে গিয়ে লাঞ্চের সময় ডাইনিং টেবিলে উনি পরোটা আর গরু দেয়া হয়েছিল। উনি বাটলারকে ডেকে বললেন, "আমি তো গরু খাই না।"
    "তাহলে স্যার খাসী দেই? আজকে খাসী রান্না করসি।"
    "আমি তো খাসিও খাই না।"
    "স্যার তাহলে একটু বসেন গতকাল রাতের মুরগী আছে গরম করে দিচ্ছি।"
    "আমি তো মুরগীও খাই না। মাছ আছেরে? দুটো টুকরো মাছ দে খেয়ে দেখি।"
    স্যার পরোটা দিয়া মাছ খাইতে চাওয়ায় বেকুব হইয়া বাটলার ভাই, "দেখতাসি স্যার" বইলা গেলো গিয়া। এরপরের কাহিনীটুকু পোলাপান বলে নাই বা মনে নাই।

    হাসিম উদ্দিন স্যারের উপর আমাদের ব্যাচ কিঞ্চিত মনক্ষুন্ন। এসএসসি পরীক্ষার সময় সিগারেট টাইনা ধরা খাইলো নজরুল হাউজের পঞ্চপান্ডব। উইথড্র এর সুপারিশ ছিল হাউজমাস্টার (হাসিম উদ্দিন স্যার) আর প্রিন্সিপালের। অবজার্ভেশান এন্ড সিভিয়ার পানিশমেন্টের সুপারিশ ছিল ভিপি আবু সাইদ বিশ্বাস স্যার আর এডজুট্যান্ট মাহমুদ স্যারের (ককক, ১ম ব্যাচ)
    যদিও পঞ্চপান্ডব এইচকিউতে ওভারট্রাম করে সকলের চোখে তাক লাগিয়ে এসএসসির তিন মাস ছুটির পর বীরদর্পে হাউজে ফেরত আসে! :p


    \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
    অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

    জবাব দিন
    • টিটো মোস্তাফিজ

      ইংরেজীর হান্নান স্যার আর ফিজিক্সের হাসিম উদ্দিন স্যারের কথাই বলেছি 😛

      হান্নান স্যারকে অনেক ভয় পেতাম। একদিন একটু মজা পেয়েছিলাম।ক্লাশ এইটে থাকতে। টাইয়ের চিকন দিকটা উপরে ছিল। কেউ বলার সাহস পায়নি। ঐ ক্লাশে কেন যেন হাসিন খুব উদাস ছিল। স্যার বল্লেন, হাশিন কি ভাবছ ? বলো আমাকে ? ও তো কিছু বলেনা। স্যার বল্লেন , অশ্লীল কিছু ভাবলে বলার দরকার নাই। অশ্লীল কিছু না হলেও সব কি স্যারকে বলা যায় ?
      হাসিম উদ্দিন স্যারের উপর আমিও কিছুটা মনক্ষুন্ন ছিলামরে ভাই। তখন সবে চিঠি সেন্সর করা শুরু হয়েছে। কয়েকজন বন্ধু খবর দিল মুস্তাফিজের খবর আছে। হাসিম উদ্দিন স্যার চিঠি আটকে দিয়েছে। মিল্ক ব্রেকের পর দেখা করতে হবে। দুরু দুরু বক্ষে স্যারের সামনে হাজির হলাম।
      " প্রেম করতা হায় ?"
      না স্যার।
      "এনি ফ্রেন্ড প্রেম করতা হায় ?"
      জানিনা স্যার।
      " ভালো কয়রা পড়াশুনা করব্যা ? প্রেম করলে ক্যাডেট কলেজ ছ্যাড়বা। যাও ।"
      সেটা ছিলো আমার সম্ভাব্য প্রথম প্রেমের জন্মের পূর্বেই মৃত্যু :dreamy:


      পুরাদস্তুর বাঙ্গাল

      জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : মোস্তাফিজ (১৯৮৩-১৯৮৯)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।