বঙ্কিম ও ব্যাকরণ

রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ। রিইউনিয়ন ২০১২। আব্দুল হান্নান স্যারকে দেখেই  মনে পড়লো -বঙ্কিম, রেন এন্ড মার্টিন, শাকলিন,ব্যকরণ ।এভাবে ফিরে যাই অনেক দিন আগে।

DSC05940 copydfssadek

২৮ মে ১৯৮৩ সাল। রাজশাহী ক্যাডেট কলেজে  ২০তম ব্যাচের জন্মদিন।একাডেমিক ব্লকের সামনে বিশেষ কায়দায় আমাদের বরণ করে নেয়া হচ্ছে।দক্ষিণ দিকের বটল ব্রাশ গাছ গুলোর প্রত্যেকটির চারপাশে কয়েকজন নতুন ক্যাডেট- আমি বাদুড়, আমি  বাদুড় বলে  চিল্লাচ্ছে। ভাবছি এ আবার কি ধরণের সংবর্ধনা। হঠাৎ এক সিনিয়র ভাই আদেশ  দিলেন, ইউ চ্যাপ, অভিনয় করে দেখাও আমি মরে গেলাম, আমি মরে গেলাম। সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি ।প্রাণান্ত চেষ্টায় বাধা হয়ে দাঁড়ালো  একটা বাচ্চা হাতির চিৎকার। হাতির মতো মোটাসোটা আর কালো একজন চিৎকার করছে, আমি গোদল আমি হাতি। সে আমাদের ব্যাচের ফার্স্ট ক্যাডেট গোলাম সাকলায়েন। অসম্ভব মুখস্ত শক্তি, দ্রুত হাতের লেখা আর প্রচন্ড মেধাবী ।অবসর সময়টা সে পড়াশুনা করেই কাটাতো।

 

আমি গ্রামের ছেলে। বাড়িতে বিদ্যুত নেই।খেজুর পাতার পাটিতে বসে হারিকেনের আলোয় পড়ি। মাঝে মাঝে লাল কেরোসিন সাদা কেরোসিনের ঝামেলা।গরমের রাতে মায়ের পুরোনো শাড়ি থেকে ঠান্ডা নিই, আবার ফেলে দিই। মাথার নিচের বালিশ উল্টে পাল্টে একটু শীতলতা খুজি। আব্বার তিন ব্যান্ড রেডিও, স্কুল লাইব্রেরীর বই আর বাড়ি থেকে এক মাইল দূরে লোকমানপুর বাজারে ২টি মাত্র সাদা কালো টিভি ছিলো বিনোদনের উৎস। সেই আমি ক্যাডেট কলেজে, স্বপ্নের রাজ্যে- সব সময় বিদ্যুত, টিউবলাইটের ঝলমলে আলো, মাথার উপরে ফ্যান, আলাদা আলাদা বিছানা, চেয়ার, টেবিল, ক্লাসে চেয়ার আর ডেস্ক  ( স্কুলে থাকতে কোন  স্যারের সামনে চেয়ারে বসিনি ) আরও কত কী!

 

সেই স্বপ্নের রাজ্যে হানা দিলো এক দানব। বঙ্কিম ওরফে আব্দুল হান্নান স্যার।শুধু আমার নয় আরও অনেকের আতংক। একদিন নোবেল ভাই বললেন-ঐ মিয়া হাদিস কিনছো ? আমি বললাম, ভাই হাদিস তো মসজিদ লাইব্রেরীতেই কত আছে, আবার কিনতে হবে কেন ? নোবেল ভাই বললেন-ঐ হাদিস না মিয়া, হান্নান স্যারের হাদিস। এই দেখ, বলে লাল রংয়ের একটা বই দেখালেন। রেন এন্ড মার্টিনের লেখা হাইস্কুল ইংলিশ গ্রামার এন্ড কম্পোজিশন। হাদিসের বই রাল রংয়ের হয়। ঐটাও লাল। হান্নান স্যারের কাছে রেন আর মার্টিনের ঐ বইটাই প্রথম এবং শেষ কথা। সংজ্ঞা , উদাহরণ সব ওখান থেকে বলতে বা লিখতে হবে।অল্প কয়েকজন ‘মাই বয়’ বাদে আমরা সবাই ছিলাম হ্যাপি গো লাকি ফেলো, স্নেক চার্মার, ভিসিআর ( ভিলেইন + ক্রিমিনাল + রাস্কেল ) ইত্যাদি। সাকলায়েন, সজল, হাবিবুল্লাহদের মতো টেনশনমুক্তভাবে স্যারের ক্লাশ করতে পারিনি। পড়া না হলে  ক্লাশে আত্মবিশ্বাসী ভাব দেখানর প্রানান্ত চেষ্টা করতাম যাতে স্যার পড়া না ধরেন।এভাবে ক্লাশে হয়তো অনেক সময় শাস্তি থেকে বাঁচতাম কিন্তু পরীক্ষায় বাঁচাটা বেশ কঠিন ছিলো। ৫টা প্রশ্নে ৫ নম্বর। ৫টাই ঠিক লেখার পরে আমরা পেতাম ৪। ৪টা ঠিক হলে পেতাম ৩। ১টা ঠিক হলে দয়া করে ১দিতেন, শূণ্য দিতেন না। ক্লাশ এইটে থাকতে একবার নাম্বার যোগ না করেই স্যার আমাদের খাতা দেখতে দিলেন।৩৬ পেলাম। মানে ফেল। গো হোম। দুই বড় ভাইকে কলেজ আউট হওয়া দেখেছি পরীক্ষায় ফেল করার জন্য। বুকে স্বপ্নভঙ্গের বেদনা। সাকলায়েনকে বললাম দোস্ত আমাকে বাঁচা। সাকলায়েন যোগফল ৪০ লিখে জমা দিলো। আমি কলেজ আউট থেকে বাঁচলাম।কম নম্বর পাওয়া আমরা ১২জন অর্থাৎ  ডাল ( হেডেড) ডজন পুরস্কার হিসেবে পেলাম গেমস টাইমে বোনাস ক্লাশ।

 

আমরা তখন ক্লাশ নাইনে। হান্নান স্যারের মনটা খুব ভালো। ব্ল্যাক বোর্ডে হঠাৎ বিভিন্ন সাবজেক্টের নাম লিখতে শুরু করলেন।সম্ভাব্য সর্বোচ্চ নম্বর যা এসএসসি পরীক্ষাতে সাকলায়েন পাবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। সেটি ছিল এমন-

 

বাংলা ১ম পত্রঃ                           ৮৪

বাংলা ২য় পত্রঃ                           ৯০

ইংরেজী১ম পত্রঃ                         ৯৮

ইংরেজী ২য় পত্রঃ                         ৯৮

গণিতঃ                                       ১০০

ভূগোলঃ                                       ৯০

সাধারন বিজ্ঞান ১ম পত্রঃ             ৯৫

সাধারণ বিজ্ঞান ২য় পত্রঃ              ৯৫

উচ্চতর গণিতঃ                           ১০০

জ্যামিতিক ও কারিগরী অংকনঃ    ১০০

সর্ব মোট=                                   ৯৫০

 

স্যারের বিশ্বাস সাকলায়েন ৯৫% বা আরও বেশি নম্বর পেয়ে বাংলাদেশে  ফার্স্ট হবে। অতো নম্বর না পেলেও সাকলায়েন ১৯৮৭ সালে রেকর্ড নম্বরসহ রাজশাহী বোর্ড ও বাংলাদেশে ফার্স্ট স্ট্যান্ড করে। রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ ১৯৮৭ সালে সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা পায়।সাকলায়েন ক্লাশ টুয়েলভ-এ কলেজ প্রিফেক্ট হয়।সে এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী।

Jessore pspot

 

সাকলায়েনের প্রতি স্যারের স্নেহের প্রকাশ সব সময় এক রকম ছিলনা। একবার স্পেলিং বি প্রতিযোগিতায় ২১ তম ব্যাচের জার্জিস ১ম হয়ে ডিক্সনারী পুরস্কার পেল। পুরস্কার সাকলায়েনও পেল।হান্নান স্যারের বেধড়ক  পিটুনী।দৃশ্যতা আজও চো্খে ভাসে আর শুনতে পাই, “ডিক্সনারীতো অনেকেই কিনতে পারে পুরস্কার পায় কয়জন ? বেটা বদমাশ, ভিলেইন, ক্রিমিনাল, রাস্কেল। আমার আছার গুড়ে বালি দিলি।” প্রিয় ছাত্রের পরাজয় স্যার কিছুতেই  মেনে নিতে পারেননি।

 

ক্যাডেট কলেজে অদ্ভুত কিছু কারণে প্রায় সবার উপনাম থাকে। হান্নান স্যারের নাম বঙ্কিম স্যার। স্যার ক্লাশে পারতপক্ষে বাংলা বলতেন না। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ইংরেজী বলতেন না। তবে যে বাংলা বলতেন তা ছিল শুদ্ধ এবং বঙ্কিম চন্দ্র চট্টপাধ্যায়ের বাংলার মত কঠিন।১৯৮৬ সালের রিইউনিয়নে উলফাত ভাই এর একটি গল্পে বঙ্কিম স্যারের প্রিয় শিষ্যের নাম ব্যাকারণ হয়ে গেল। সেই গল্পটি এরকম-

তখন বর্ষাকাল।বন্যা হয়েছে।পন্ডিত মশাই তার দোকানের সামনে মাচায় বসে ছাত্রদের পড়াচ্ছিলেন।পাশে প্রিয় ছাগলটা বেঁধে রাখা। পন্ডিত মশাই ঘুমিয়ে পড়েছেন।ছাত্ররা চলে গেছে। এদিকে বন্যার পানি ক্রমেই বেড়ে চলেছে।মাচার দিকে চলে আসছে। ছাগলটা ব্যা ব্যা করছে। পন্ডিত মশাইয়ের ঘুম হালকা হয়ে এসছে। পানি উচু হচ্ছে।

ছাগলঃ ব্যা অ্যা।

পন্ডিত মশাইঃ কারণ ? ( ঘুমঘুম ভাবে)

ছাগলঃ ব্যা অ্যা

পন্ডিত মশাইঃ কারণ ?

ছাগলঃ ব্যা অ্যা

পন্ডিত মশাইঃ কারণ ?

শেষে জানের ভয়ে কোন রকমে দড়ি ছিড়ে মাচায় উঠে ছাগলটা তারস্বরে ব্যা অ্যা করে উঠে।ধড়মড় করে জেগে উঠে পন্ডিত মশাই বলেন, কারণ ? সেই থেকেই ব্যাকরণ নামটি এসেছে।

নিরিবিলি অবলোকনের দিকে যাবার পথে স্যারের সামনে পড়ে গেলাম। বেটা মুশতাফিজ ভালো আছ ? আমিতো অবাক ! স্যার আমার মতো ডাল হেডেড ক্যাডেটের নামটিও মনে রেখেছেন ! বয়সের কারণে বুঝতে পারিনি,স্যার আমাদেরও ভালোবাসতেন ! স্যারের মনটা ভালো ছিলনা। স্যার অবসর নিয়েছেন। একটি ছেলে রাজশাহী ক্যাডেট কলেজে পড়ে কানাডায় আছে।নিঃসঙ্গতা সঙ্গী। বললাম,  স্যার, সাকলায়েন কি আপনাকে ফোন বা ইমেইল করে ? স্যার বললেন, নারে বেটা।আমি বললাম স্যার, ওকে আচ্ছা মতো গালি দিয়ে মেইল করবো যেন আপনাকে ফোন দিতে ভুল না করে।স্যারের চোখ দুটো ছলছল করতে গিয়ে খেমে গেলো।ঠিক আছে, বলে একটু ঘুরে দাঁড়ালেন। তার পর পদ্মায় অনেক জল গড়িয়ে গেছে।না না ঝামেলায় আমি কথা রাখতে পারিনি।২০১৩ সালে কলেজের প্রতিষ্ঠা দিবসে স্যারের ছেলের সাথে দেখা হয়ে আবার মনে পড়ল। ফেসবুকে ব্যাকরণকে নক করি, পোক দেই।সাড়া দেয়না। আমরা কে কখন চলে যাব, কেউ জানে না।ব্যাকরণ, ব্যস্ত জীবনে একটুখানি সময় বের করে ফিরে এস বঙ্কিমের কাছে !

৩,২৫২ বার দেখা হয়েছে

২৭ টি মন্তব্য : “বঙ্কিম ও ব্যাকরণ”

  1. সিরাজ(১৯৯১-১৯৯৭)

    সাকলায়েন ভাইয়াকে বলছি।জানিনা এই লেখা আপনি দেখবেন কিনা। ভাইয়া প্লিজ একবারের জন্য হলেও আপনি হান্নান স্যারের সাথে যোগাযোগ করুন। হয়তো কোন ঝামেলা বা ব্যস্ততার জন্য আপনি স্যারের সাথে এতদিন যোগাযোগ করতে পারেন নি কিন্তু আপনি ছিলেন তার আদর্শ ছাত্র। আপনি তার আকাংখিত রেজাল্ট করেছিলেন। তিনি যে এখনও আপনাকে মনে রেখেছেন,আপনাকে এক্সপেক্ট করেন তার পুরোনো আদর্শ ছাত্র হিসাবে। আপনি তার সাথে যোগাযোগ করলে অত্যন্ত খুশি হবেন সেটা বলার অপেক্ষা রাখেনা। এই ব্যাচের কোন ভাইয়ের সাথে সাকলায়েন ভাইয়ের যদি যোগাযোগ থাকে তাহলে ভাই কে বলুন হান্নান স্যারের সাথে একটি বারের জন্য হলেও যেন কথা বলেন।


    যুক্তি,সঠিক তথ্য,কমন সেন্স এবং প্রমাণের উপর বিশ্বাস রাখি

    জবাব দিন
  2. মোকাব্বির (৯৮-০৪)

    স্যারকে নিয়ে একটি কাহিনী মির্জাপুরে (৯৮-০৪)

    দ্বাদশ শ্রেণীর বি ফর্মে একদিন ক্লাশে এসেছেন। সবাই ভয়ে তটস্থ। পড়া ধরতেন অার না পারলে পেটাতেন। হঠাৎ একজন খেয়াল করলো স্যারের প্যান্টের চেইন খোলা। স্যারকে জানিয়ে মার খাওয়া উচিৎ কি উচিৎ নয় এই করে ৪০ মিনিট কেটে গেল্। ক্লাশ শেষ করে স্যার বের হয়ে যাচ্ছেন, তখন তড়িঘড়ি করে অাশরাফুলকে স্কেপ গোট বানিয়ে বাইরে পাঠানো হলো ব্যাপারটি স্যারকে জানানোর জন্য। অাশরাফুল গিয়ে স্যারকে বলা মাত্রই ঘাড় ধরে পিঠের উপর কষে থাপ্পড় অার চিৎকার, "দুষ্ট বাবু অাগে বলিস নি কেন? এতক্ষণ বসে বসে দেখেছিস অার এখন এসে বলছিস।" 🙂


    \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
    অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

    জবাব দিন
    • টিটো মোস্তাফিজ

      :teacup:
      হান্নান স্যারের হাদিস বলি আর যাই বলি রেন এন্ড মার্টিনের সেই লাল বইটি অসাধারণ। আমি রাজশাহী বিশ্ব বিদ্যালয়ের অনেক ইংরেজী অনার্সের ছাত্রকে ঐ বই পড়তে দেখেছি। আর যে উপনামেই ডাকি সাকলায়েন একটা জিনিয়াস।


      পুরাদস্তুর বাঙ্গাল

      জবাব দিন
  3. আহমেদ সামিরা নিহা(০৬-১২)

    উনি আমাদের কলেজে ক্লাস নাইন পর্যন্ত ছিলেন । আজব এক মানুষ ছিলেন স্যার্। যখন অপদস্থ করতেন,তখন মান সম্মান ধুলোর সাথে মিশে লুটোপুটি খেতো। আর যখন প্রশংসা করতেন,তখন পারলে ঘাড়ে চড়ান আমাদের্। স্যার আমাদের জন্মলগ্ন থেকে ছিলেন। মায়ের পেট থেকে বের হয়ে নতুন পৃথিবীতে এসে প্রথম চোখ খুলে যেন মনে হয় হান্নান স্যারকে দেখসিলাম। নতুন কলেজ,আমরাও নতুন। কিছু বুঝিনা,এ পাশে,ও পাশে উষ্ঠা খাই। স্যার আমাদের সযত্নে তুলে দিতেন। অত্যন্ত শিশুসুলভ একটা মানুষ। মেন্টালিটির লেভেল ক্লাস ওয়ান পড়ুয়া বাচ্চাদের মত। বাচ্চা অভিমানী হলে যেমন করে ঠোঁট উল্টায়ে স্যাড পাপি ডগ লুক ক্রিয়েট করে,স্যার এক্সাক্টলি তাইই করতেন।
    স্যারের শুভদৃষ্টিতে পড়তে অনেক সময় লাগসে আমার্। তার আগ পর্যন্ত আমি মাডি ভিলেজ গার্ল,আনস্মার্ট ইডিয়ট ক্লাস বাঙ্কারই ছিলাম।
    এই রেন এন্ড মার্টিন কম জ্বালায়নি আমাদের্। বিদেশী গ্রামার কিছুই বুঝতাম না। আর স্যারের এক কথা,সেটাই পড়তে হবে।
    তো একদিন এইটে উনি উনার কতিপয় স্মার্ট মেয়েদের বুঝাতে পারতেসেন না রেন এন্ড মার্টিনের একটা গ্রামার্।

    ক্লাস এইটে রেন এন্ড মার্টিনের কি একটা জিনিস উনার কতিপয় স্মার্ট বাবুরা বুঝতে পারতেসে না বলে,উনি বলে কোনো আর্টিস্ট আছে কিনা। আমার বন্ধুরা আমারে ঠেলাঠেলি করে পাঠায়ে দিল।হুদাই একটা মেয়ের ছবি আঁকার পর স্যার যে এত খুশি হলো বলার মত না। আমি হয়ে গেলাম উনার প্রিয় আর্টিস্ট। কতবার স্যারের ছোট মেয়ের জন্য ছবি আঁকসি,ছবি উনার পছন্দ না হলে কাগজ ধরে ফেলে দিতেন আর গালাগালির ব্রাশফায়ার শুরু করতেন।
    উনার বাংলা আমাদের বোঝার অসাধ্য ছিল। সবাইকে নিয়ে কবিতা লিখতেন। কবিতার আগামাথা কিছুই বুঝতাম না। উনার কাছে প্রথম বুঝছি যে "হার্দিক" মানে হৃদয় সঙ্ক্রান্ত ।
    স্যার টুপ করে চলে গেলেন। কোথায় গেলেন,কেমন আছেন কিছুই জানলাম না। আজ আপনার লেখা পড়ে খুব কষ্ট কষ্ট লাগতেসে। ছবিটা দেখে মনে হলে উনার স্বাস্থ্য ভেঙ্গে গেছে। স্যারের বর্তমান অবস্থান জানতে পারলে ভাল হত।

    জবাব দিন
  4. সামিউল(২০০৪-১০)

    হান্নান স্যার কে পেয়েছিলাম ভিপি হিসেবে। উনার কথা বলার স্টাইলে বেশ মজা পেতাম।
    একদিন আমি আর কলেজের বন্ধু ইসলাম কলেজের গল্প করতে করতে অনেক চেস্টা করেও স্যারের নাম মনে করতে পারছিলাম না। আজকে ব্লগে তার ছবি দেখে মনে পড়ে গেল।

    অনেক ধন্যবাদ মোস্তাফিজ ভাই। :teacup: :teacup:


    ... কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালবাসে!

    জবাব দিন
  5. নাফিস (২০০৪-১০)

    রেন এন্ড মার্টিন বইটা একটা বিভীষিকা ছিল ! ক্লাস সেভেনে হান্নান স্যারের ক্লাসে তথস্থ হয়ে বসে থাকতাম। কখন যে স্যার বলে উঠতেন,"হে, দুষ্টু বাবু।" 🙂
    আমাদের নাহিয়ান কে স্যার খুব পছন্দ করতেন। স্যারের ভাষায় স্মার্ট বাবু। ক্লাস সেভেনে স্যার আমার স্পোকেন ইংলিশ পরীক্ষা নিয়েছিলেন। ফজলুল হক হাউজের হাউজ অফিসে। রাত ১০ টার দিকে। স্যার তখন ওই হাউজের হাউজ মাস্টার। আমি হসপিটালে থাকার কারনে ক্লাশ টাইমে পরীক্ষা দিতে পারিনি। স্যার প্রথম থেকেই অদ্ভুত একসেন্টে প্রশ্ন করা শুরু করেন। সব আমার মাথার উপর দিয়ে যাওয়া শুরু করে... অবশেষে কোনো মতে ৭৫ এ ৩৫ মার্কস যোগাড় করে বীরদর্পে হাউজে ফিরে আসি... 😀
    স্যার এর সেই শিশুসুলভ আচরণ গুলো এখনো চোখে ভাসে।

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : মোস্তাফিজ (১৯৮৩-১৯৮৯)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।