বাংলাদেশে সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমঃ মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা

বীর মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান। দেশ মাতৃকার জন্য চরম আত্মত্যাগকারী মুক্তিযোদ্ধাদের অনেকেই আর্থিক সমস্যায় রয়েছেন। তাঁদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য  ২০০০ সালে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়াধীন সমাজসেবা অধিদফতরের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়। ২০০১ সাল হতে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা প্রদান সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পরিবর্তে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বের আওতাভুক্ত করা হয়। মাঠ পর্যায়ে কার্যক্রমটি সমাজসেবা অধিদফতরের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হচ্ছে।

নীতিমালা অনুসারে মুক্তিযোদ্ধা অর্থ-

(১) মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মাননীয় প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক স্বাক্ষরিত সাময়িক সনদপত্র ধারী; অথবা

(২) জাতীয়ভাবে প্রস্তুতকৃত ৪টি মুক্তিযোদ্ধা তালিকার ( জাতীয় তালিকা, মুক্তিবার্তা পত্রিকায় প্রকাশিত তালিকা, ভোটার সূচক, মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাষ্ট তালিকা ) মধ্যে যার নাম কমপক্ষে ২টি তালিকায় রয়েছে; অথবা

(৩) সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ অথবা বাংলাদেশ রাইফেলস হতে প্রাপ্ত তালিকায় ( যেমন- ইবিআরসি তালিকা) যার নাম রয়েছে; অথবা

(৪) যার নাম মুক্তিযোদ্ধা গেজেটে আছে (  যেমন- ২০০৫ সালের ২২ নভেম্বর তারিখের অতিরিক্ত গেজেট, ২০০৬ সালের ৩০ মে তারিখের অতিরিক্ত গেজেট এবং ২০১০ সালে মার্চ মাসে সেনা বাহিনী, বাংলাদেশ রাইফেলস, পুলিশ  ও বিসিএস মুক্তিযোদ্ধাদের নাম সম্বলিত  বিশেষ গেজেট)।

 

উপজেলা/থানা কমিটি দরখাস্ত আহবান করে প্রাথমিকভাবে মুক্তিযোদ্ধা বাছাই করেন। উক্ত তালিকা জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে জেলা কমিটি কর্তৃক অনুমোদন করা হয়। হিসাব রক্ষণ অফিসার কর্তৃক ভাতা বই পাশ করা হলে ১০ টাকা দিয়ে ব্যাংক একাউন্ট খুলতে হয়। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ উক্ত একাউন্টের মাধ্যমে ভাতা পরিশোধ করেন। সম্মানী ভাতা প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা মৃত্যুবরণ করলে তাঁর বিধবা স্ত্রী ভাতা পান। বিধবা স্ত্রী মারা গেলে নতুন করে সম্মানী ভাতা ভোগী মুক্তিযোদ্ধা নির্বাচন করা হয়।

 

বর্তমানে ১ লক্ষ ৫০ হাজার মুক্তিযোদ্ধা মাসিক ২ হাজার টাকা হারে সম্মানী ভাতা পাচ্ছেন। মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতার বছর ভিত্তিক হিসাব দেখুন-

 

FF budget

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ঋণ পরিশোধ করার কোন সাধ্য আমাদের নেই । সম্মানী ভাতা প্রদান  তাঁদের প্রতি জাতির কৃতজ্ঞতা প্রকাশের প্রয়াস।

৮ টি মন্তব্য : “বাংলাদেশে সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমঃ মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা”

  1. ফারহান ( ২০০৪-২০১০ )

    :thumbup: :thumbup:
    ভালো লাগলো। আমার প্রয়াত পিতাও মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। কিন্তু কোনো এক অদ্ভুত কারণে উনাকে অনেক অনুরোধ করেও কোনো সম্মানী বা সুযোগ সুবিধার জন্য আবেদন করাতে পারি নি... 🙁

    জবাব দিন
  2. সিরাজ(১৯৯১-১৯৯৭)

    মোস্তাফিজ ভাই,মুক্তিযোদ্ধারা কোন কিছু পাওয়ার আশায় যুদ্ধ করেন নাই।যদি সম্মানী ভাতার নেয়ার চেয়ে সামাজিক বা অর্থনৈতিক অবস্থা ভাল থাকে তাহলে না নিয়ে ভালই করেছেন।দেখেছেন তো দেশের অবস্থা আর মানুষ কিভাবে আজকে সম্মান করে মুক্তিযোদ্ধাদের।উনি নিজেই নিজের সম্মান বাঁচিয়েছেন।আজকাল সম্মান চাইতে যেয়ে এমন কারো কাছে বা কারো পাশে দাড়াতে হয় যে নিজের আত্মসম্মানে লাগে।মনে হয় মুক্তিযোদ্ধারা করুনা আর ভিক্ষার পাত্র।


    যুক্তি,সঠিক তথ্য,কমন সেন্স এবং প্রমাণের উপর বিশ্বাস রাখি

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : ফারহান(মকক/২০০৪-২০১০)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।