মাকাল-জনতা

আমজনতা শব্দটার পরিবর্তন চাই। এই বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষন করছি। এদেশের সাধারন জনগন কে আম-জনতা বলাটা মোটেও ঠিক হচ্ছে না । আমি এর ঘোর বিরোধিতা করছি। এই দেশে মোটামুটি ৫০০০(রাজনীতিবিদ ও তাদের পরিবার বর্গ) বাদে বাকি ১৫ কোটি আবালরে শুধু শুধু আমের মত এমন সুস্বাদু, শাঁশালো ফলের সাথে নামাংকিত করে আম-জনতা বলার কোন যুক্তি নাই। এতে আমের অপমান হয়। এই আবালদের কাজ শুধু ৫বছরে একবার ভোট দেয়া, তারপর ৫বছর ধরে বাঁশ নেয়া। ৫বছর পর পর আবার কেঊ আসবে আবালদের পাছায় হাত বুলাইয়া দিবে সব ভুলে আবাল গুলা আবার কাওরে ভোট দিবে, তার পর আবার ৫বছর বাঁশ নিবে…… এই সব আবাল গুলারে ফলের রাজার নামে ডাকলে, ও বেচারার কি আর ইজ্জত থাকে?

দেশটা চালানোর, নীতি নির্ধারনের জন্য যেই আসুক নিজের দলের ভবিষৎ ছাড়া দেশের ভবিষ্যত নিয়ে কেউ কি ভাবে? নীতি নির্ধারনের ক্ষমতা যাদের আছে বা যারা যেতে চায় তারা কি কেউই দেশ নিয়ে ভাবে? বড় বড় নেতাদের কাম কাজ তো আমরা দেখতেছিই। কিন্তু নতুনেরাও কি একই পথেই যাচ্ছে না? আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখেছি, এলাকায় দেখেছি; নিজের উন্নয়ন ছাড়া কোন নতুন রাজনীতিবিদ কে দেশের জন্য কিছু ভাবতে দেখি নাই।

এই সিস্টেম থেকে কিভাবে বের হব আমরা? আমদের জেনারেশনেই আমরা ২২টাকার চাল ৫৮টাকা, ২০টাকার ডাল ১০০টাকা, ৫৫টাকার গরুর মাংস ৩০০টাকা, ৩ টাকার বেনসন ৮টাকা হতে দেখতেছি গত ১০-১৫ বছরে। মনে আছে ইতিহাস বইয়ে পড়ছিলাম টাকায় ৮মণ চাল পাওয়া যেত শেরশাহ এর আমলে। কি হাসাহাসি টাই না করছিলাম আমরা ক্লাশে। এখন মনে হয় আমার ছেলে-মেয়ের কাছে যখন বলব যে তোরা এখন ১৮০০টাকা কেজি(আরো ১৫বছর পর তো ৬ গুন হবে) খাচ্ছিস আর ৫৫টাকা কেজি গরুর মাংস আমি নিজে বাজার থেকে কিনেছি এক সময়, ওরাও সেই হাসিটাই দিবে।

দেখলাম আগের আমলে, এক মন্ত্রী বললেন “এ দেশে বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান হবে না।” অবুঝ শিশু ডাকাতের হাতে মারা পরল আর এক জন বললেন “আল্লাহর মাল আল্লাহ নিয়ে গেছেন।” দেখলাম বিদ্যুতের লাইন নাই কিন্তু পিলার লাগানোর কাজ। দেখলাম মানুষ দূর্ঘটনায় মারা পরলে তার ক্ষতিপুরন হিসেবে ছাগল দেয়া (অবশ্য ঠিকই আছে এ দেশের আবালদের চেয়ে ছাগলের দামই বেশী) ।

তত্ত্বাবধায়কের আমলে দেখলাম সব শালাই চোর। পরে লোকে বলে শুনি ও শালারাও চোর ধরার ফাকে ফাকে চুরিও কম করে নাই।

নতুন আশা নিয়ে আবার সেই পুরানো দলেরাই ফিরল। নতুন নতুন মন্ত্রী দেখলাম। আমরা আবালেরা ভাবলাম যাক কিছু তো পরিবর্তন আসবেই। আসল পরিবর্তন। বাঁশের জায়গায় তালগাছ। এখনকার মন্ত্রীরা বলেন “দাম বেশী কম খান।”, “বেড রুমের নিরাপত্তা দেয়া সরকারের পক্ষে সম্ভব না।” আজ দেখলাম জনগনের নিরাপত্তা দেয়ার জন্য সরকারকেই অঘোষিত হরতাল পালন করতে হয়। ভারত ভারত রব শুনতে শুনতে সার্বভৌম দেশে আছি কিনা ধান্দায় পড়ে যাই মাঝে মাঝে। মনমহোন সিং কে নিজেদের প্রধান মন্ত্রী আর ক্যাটরিনা রে নিজের দেশের নায়িকা মনে হয় নিজের অজান্তেই। আগে মনে হয় ১৫কোটি আবাল বাঁশ খাচ্ছিল আর এখন সাথে দেশের বাইরে থেকে বাঁশ ভাড়া করে এনে দেশটারও **** ভরতেছে।

আমরা তাকায়ে তাকায়ে দেখতেছি। কি বা করার আছে আমাদের? আমরা দেশের ১৫ কোটি আবাল। এই আবালদের কাজ শুধু ৫বছরে একবার ভোট দেয়া, তার পর ৫বছর ধরে বাঁশ নেয়া। ৫বছর পর পর আবার কেঊ আসবে আবালদের পাছায় হাত বুলাইয়া দিবে। সব ভুলে আমরা আবাল গুলা আবার কাওরে ভোট দিব, তার পর আবার ৫বছর বাঁশ নিব । কিছু কিছু আবাল মাঝে মাঝে এখানে ওখানে কিছু বলবে, ব্লগ, ফেসবুকে লিখবে আবার নড়েচড়ে বাঁশটাকে ঠিক মত সেট করে নিবে।

তাই যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট আমার আকুল আবেদন এই যে মুল্যবান এবং সুস্বাদু ফল আমের জায়গায় পরিবর্তন করে আমাদের ১৫কোটি আবাল কে মাকালফল-জনতা ডাকা হোক।

১,১৬৫ বার দেখা হয়েছে

৬ টি মন্তব্য : “মাকাল-জনতা”

  1. ইফতেখার (৯৫-০১)

    ডেমোক্র্যাসি নিয়ে সেই বিখ্যাত গেটিসবার্গ এ্যাড্রেস - অফ দ্যা পিপপল বাই দ্যা পিপল ফর দ্যা পিপল .. এইটা বদলায়ে এখন হয়ে গেছে (আসলে সংজ্ঞার্থে তাই হয়) অফ দ্যা ডাম্ব পিপল বাই দ্যা স্মার্ট পিপল ফর দ্যা ওয়েল্দি এ্যান্ড রিচ।

    জবাব দিন
  2. মইনুল (১৯৯২-১৯৯৮)
    তাই যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট আমার আকুল আবেদন এই যে মুল্যবান এবং সুস্বাদু ফল আমের জায়গায় পরিবর্তন করে আমাদের ১৫কোটি আবাল কে মাকালফল-জনতা ডাকা হোক।

    দারুন লিখেছো ......

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : ইফতেখার (৯৫-০১)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।