আমাদের ছেলেবেলা । (এপিসোড ২)

কিছু ঘটনা জায়গায় উপস্থিত ছিলাম না তাই ডায়লগ চেঞ্জ হতে পারে কিন্তু মূল ঘটনা অপরিবর্তিত।

১) ক্লাস নাইন। গেমস্‌ এর ফলিন। আমি রেজোয়ানের ডান পাশে দাড়ানো ছিলাম।  ইলেভেন এসে দাড়াইছে। আমি সামনের লাইনে চলে গেছি। রেজোয়ান দেখে নাই। সামনে JP আরমান ভাই। রেজোয়ান ইলেভেনের শাকিল ভাইয়ের কাধে হাত দিয়ে বলল “দেখ আরমান ভাইরে কি চিকি লাগতেসে।” শাকিল ভাই ওকে বলল হাউসে গিয়ে দেখা করবা। আর যায় কই। এডাম টিজিং এর অভিযোগে ৭দিন ব্যাপি পুরা ইলেভেনের হাতে মাইর খাইলো ।

২) ক্লাস এইট। হাউস প্রিফেক্ট সায়েম ভাই। ধরল আমাদের হায়দারকে। অভিযোগ সিনিয়ারের সাথে বেয়াদবি। ঝাড়ি হইল ঠিক মতো। এক পর্যায়ে সায়েম ভাই বলল “তুমি শপথ কর। আমি যা যা বলব ঠিক তাই বলবা।” হায়দার বলল জ্বি ভাইয়া। সায়েম ভাইএর কথা শেষ হয় নাই। বলতেছেন “আমি হাউস প্রিফেক্ট। তুমি আমার সামনে বেয়াদবি কর।” হায়দার বলল “আমি হাউস প্রিফেক্ট। তুমি আমার সামনে বেয়াদবি কর।” আর কি? যা হওয়ার তাই হইল।

৩) ক্লাস টুয়েল্ভ । আমি, অভিষেক আর রাজিব যাচ্ছি সিগারেট খাইতে। যাওয়ার সময় অভিষেক বলতেছে “একটা ব্যাপক আইডিয়া পাইছি। ইমপ্লিমেন্ট কইরা দেখলাম; ফাটাফাটি।” এর আগের কয়েক দিন অভিষেক রাতে পাঞ্জাবি পায়জামা পইড়া থাকত। আমরা দুই জন জিগাইলাম “কি তারাতারি বল।” আমরা তো ভাবছি নতুন কোন শয়তানির আইডিয়া পাওয়া গেছে। বিশাল উত্তেজিত। অনেক দিন নতুন কিছু করি না। অভিষেক বলল “আমাকে দুই টান বেশি দিতে হবে।” আমরা বুকে পাথর চাপা দিয়ে রাজি হয়ে গেলাম। সিগারেট ধরাইয়া বসেই রাজিব চিৎকার দিয়ে উঠল। “অভিষেক তোর পাজামা ছেড়া।” তাকিয়ে দেখি ডান হাটু থেকে বাম হাঁটু পর্যন্ত পাজামার সেঁলাই পুরাটাই খোলা। জাদুঘর পুরা OPEN. জয়বাংলা দেখা যাইতেছে। অভিষেক সবগুলা দাঁত বের করে কেলাইয়া একটা হাসি দিয়া বলল “এটাইতো আইডিয়া। গরম লাগে না।”

৪) ক্লাস টুয়েল্ভ। ফার্স্ট টার্মেন্ড এর ম্যাথ পরীক্ষা।সারফরাজের কাছ থেকে লুজ নিছে তানজিল অংক করবে। পরীক্ষা শেষ হওয়ার ১০মিনিট বাকি। সারফরাজ লুজ ফেরত চাইছে। তানজিল বলতেছে তুই আবার কর আমি করার টাইম পাই নাই। আমি এইডা জমা দিয়া দিলাম। সারফরাজ কোন কথা ছাড়া উঠে দাড়ালো ওর ডেস্ক এর সামনে গেলো লুজ কেড়ে এনে খাতা জমা দিল। বেল দেয়া মাত্র আমরা দেখলাম তানজিল সামনে পেছনে সারফরাজ দৌড়াচ্ছে।

৫) ক্লাস টুয়েল্ভ। নাইট প্রেপ। মফিজুর ব্যাপক ডিস্টার্ব করতেছে হায়দারকে। হায়দার চেইত্তা গিয়া বলল এক চড় মারব। মফিজুর বলল মার। সঙ্গে সঙ্গে ঠাস। মফিজুর বলল মারলি কেন? হায়দারের উত্তর তুই ই তো বললি মারতে। এর পর থেকে মফিজুর বর্তমান কাল মানে এখন পর্যন্ত  চেষ্টা করতেছে। হায়দারের সাথে দেখা হলেই বলে হায়দার তোকে একটা চড় মারি। কিন্তু হায়দার ঘাগু মাল। এখনও ভোলে নাই।

১,৮৮০ বার দেখা হয়েছে

১৭ টি মন্তব্য : “আমাদের ছেলেবেলা । (এপিসোড ২)”

  1. মুহিব (৯৬-০২)
    রেজোয়ান ইলেভেনের শাকিল ভাইয়ের কাধে হাত দিয়ে বলল “দেখ আরমান ভাইরে কি চিকি লাগতেসে।” শাকিল ভাই ওকে বলল হাউসে গিয়ে দেখা করবা।
    তুই আবার কর আমি করার টাইম পাই নাই। আমি এইডা জমা দিয়া দিলাম।
    জবাব দিন
  2. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    লেখা ভালো হইছে। কিন্তু লুজ নিয়া কোনও কিছু এইখানে দিস না। ক্যাডেটদের এফ বি গ্রুপে দিস। এই ব্লগ বাইরের লোকজন ও পড়ে।


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : মোর্শেদ (৯৮-০৪)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।