দেখা হয়নাই চক্ষু মেলিয়া, রাত্রি কাটিলো তাবু খাটাইয়া।

শনিবার সকাল সাড়ে আটটা। ল্যাপটপের সামনে বসে ঘুম তাড়াচ্ছি। সিড়িঘরে পায়ের আওয়াজ পেয়ে বুঝলাম ওরা বুঝি এলো। অমিত, ধ্রুব, সনেট, প্রিয়ম, ও নির্ঝর। আমার রুমমেট জোসেফের এমআইএসটির বড় ভাই ও তার বন্ধুবান্ধবের দল। মিশিগান আপার পেনিনসুলার প্রাকৃতিক নৈঃসর্গের সুনাম শুনে গাড়ি ভাড়া করে চলেই এল ইলিনয়ের দক্ষিণের রাজ্য ইন্ডিয়ানা থেকে। দুষ্ট মস্তিষ্ক আরেক দুষ্ট মস্তিষ্কের কথার তরঙ সহজেই ধরে ফেলে। আমার রুমে এসে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসে দু-চার মিনিটের পরিচয় পর্বের মাথায়ই নির্ঝর মার্লবোরোর প্যাকেট বের করে জিজ্ঞাসা করলো, “বস রুমে ধরানো যাবে রুমে?” ধীরে ভারী জড়ানো গলায় কথা বলে ছেলেটি। বললাম, “ধরিয়েই ফেল!” বিস্তৃত এক হাসি দিয়ে বললো, “বুঝছিলাম!” সবাই যে যার পকেটে হাত ঢুকালো। অমিত দেশী বেনসনের প্যাকেট বের করে এগিয়ে দিতেই ধূমপান ছেড়ে দেয়া যুবক কাঁপা হাতে হাত বাড়ালাম। শেষের স্পেলে গাড়ি চালানোর দায়িত্বটা বড় ভাইয়েরা ছোট ছেলে সনেটের উপর চাপিয়ে দিয়েছিল। তাই সে গোসল করে ঘুমিয়ে নিতে গেল। পরিকল্পনা হলো দুপুরের খাবার খেয়ে আমরা বেরিয়ে পড়বো ঘুরতে। ততক্ষণে গল্পেরা বাড়ি ভাড়ার তুলনামূলক পার্থক্য, সহজলভ্য খাবারদাবার, মজার ঘটনা, আমেরিকা, বর্ণবাদী অভিজ্ঞতা ইত্যাদিতে ঘুরপাক খাচ্ছে।

কিছু পরেই ভাত রান্না হয়ে গেলে সবাই ঝাঁপিয়ে পড়লাম খেতে। খুব স্বল্প সময়ে জোসেফ একটা মুরগী, ডাল, সবজী করেছে। ওরা দেখে অবাক। আমি আমার ডিমের তরকারী বের করে গরম করে যোগ করলাম। আমাদের তড়িৎকর্মা মনোভাব দেখে ওরা বারবার বলছে, “কি দরকার ছিল?” বাঙালীর এই ভদ্রতা দেখানোটা আমার খুব ভালো লাগে। অতিথিকে আপ্যায়ন করাটা যেন এক খেলা যেখানে হার জিত নেই। আছে শুধু তৃপ্তি। খাবার মুখে প্রশংসা শুনছি ভালই লাগছে। ওদের মাঝে প্রিয়মকে নিয়ে সবাই পড়লো। কারণ ও ভাত খাবার সময় কোন কথা বলে না। ওরা জানালো ওর মুখ থেকে কথা বের করার জন্য নিয়মিত বিভিন্ন চেষ্টা করে ওরা কিন্তু গত এক বছরে সফল হয়নি। বর্গীরা দেশে আসুক, জাপানীরা বোমা ফেলুক কিন্তু প্রিয়ম চক্রবর্তী ভাত খাবার সময় শুধু খেয়েই যাবে। খাবার তুলে দিতে চাইলে মাথা ঝেঁকে হ্যাঁ বা না বলবে। আর সবাই সেটা নিয়ে হাসাহাসি করবে। খেয়েদেয়ে মুখ ধুয়ে বললো, “ভাই রান্নাটা যা করেছেন না?” সবাই আরো এক চোট হাসলো। ক’দিন আগে চারটি আক্কেল দাঁত ফেলে দেয়া ধ্রুব ছিল সবচেয়ে বেগতিক অবস্থায়। জুস ও তরল জাতীয় খাবার সাথে নিয়ে এসেছে কিন্তু জেসমিন চাল ও মুরগীর তরকারীর সুগন্ধে এক সময় একটা প্লেট নিয়ে ঝাঁপিয়েই পড়লো। “কতদিন ভাত খাই না!”

খাবার ও চা-চক্র শেষে দুইজন গেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্ভিস থেকে তাবু ভাড়া করতে। রাতে ক্যাম্পিং করবো। আর বাকিদের নিয়ে আমি এদিক সেদিক ঘুরে দেখতে বের হলাম। বাড়ির পিছে লেক দেখিয়ে মাথা খারাপ করানোর দুষ্ট বুদ্ধি আমার। মোড় নিয়ে নিচে নেমে পুরো পটভূমিটা চোখের সামনে আসতেই শুরু হলো অবাক হবার পালা। “ভাই এইটা কোথায় থাকেন আপনারা?!” অমায়িক হেসে বলে যাচ্ছি, “ভাইরে মাত্র তিন-চার মাস। বাকিটা তো বরফ।” বেঞ্চিতে বসে ছবি তোলা গল্পগুজব চলছে। এদিক ওদিক হেঁটেও বেড়ালাম। IMG_20140616_160630_705

ওরা তাবু খাটানোর জিনিসপত্র নিয়ে ফেরত এলে আমরা রওনা দিলাম একটা দর্শনীয় স্থানের উদ্দেশ্যে। নাম লেক ওফ দ্য ক্লাউডস। অন্টোনাগন কাউন্টিতে অবস্থিত পর্কুপাইন মাউন্টেনের দুই পাহাড়ের মাঝে একটু লেক। যেতে সময় লাগবে ঘন্টা দেড়েক। গাড়িতে বসার জায়গা আরাম করে ৫টি কিন্তু আমরা লোকবল ছয়। অগত্যা পিছের সীটে চারজন এবং সকালের চালক ছোট ভাইকে আবার বলির পাঁঠা হিসেবে জীপের পিছের মাল রাখার জায়গায় একটি বালিশসহকারে ঢুকিয়ে দেয়া হলো। গাড়ি মফস্বলের আকাবাঁকা মহাসড়ক ধরে এগিয়ে চললো মেঘের দেশে। ঘটনাবিহীন দেড় ঘন্টা আড্ডা, হাসি দিয়ে নিমেশে চলে এলাম লেক অফ দ্য ক্লাউডসে। গাড়ি রেখে ৩০০ ফিট উপরে হেঁটে উঠে প্রথম যে দৃশ্যটা চোখে এলো সেটা দেখে কম করে পাঁচ সেকেন্ডের জন্য বাকরুদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম। গত দুই বছর ধরে এই এলাকায় আছি। হয়তো আমার মত মানুষদের জন্যই কবিগুরু লিখেছিলেন, “দেখা হয়নাই চক্ষু মেলিয়া, ঘর হইতে শুধু দুই পা ফেলিয়া।”
IMG_7767 সৌন্দর্যের কোন সীমা পরিসীমা নাই। সাথে বইছে দমকা বাতাস। তাতে গাছের পাতার শব্দ মিলিয়ে যেই আবহটা তৈরী হলো সেটা লিখে এমনকি তোলা ছবিতেও প্রকাশ করা সম্ভব নয়। এদিকে দুষ্ট ছেলের দল “অতিক্রম করা নিষেধ” এলাকায় দেয়াল টপকে প্রথমেই প্রবেশ করলো। বাকি বিদেশী পর্যটকরা মৃদু ভাষায় হায়হায় করে উঠার আগেই পাহাড়ের নিচের দিকে কোথায় হারিয়ে গেল। আমি আর জোসেফ বোকার মত দাঁড়িয়ে থাকলাম। কিছুটা দায়িত্ববোধ কিংবা অন্যকোন কারণে। তবে কপাল ভাল কিছুক্ষণের মাঝে দিগ্বিজয়ী পর্যটকেরা পর্যাপ্ত সেলফি তুলে বিপদজনক এলাকা থেকে ফেরত এল। এরপরে বিভিন্নভাবে একই জায়গার ছবি তুলে গেলাম। তৃপ্তি পাচ্ছিলাম না। চোখের দেখা প্রাকৃতিক সুন্দরকে ক্যামেরার ফ্রেমে বন্দি করার কৌশল এখনো রপ্ত হয়নি। অন্তত পোর্ট্রেইটের ক্ষেত্রে আমার দখল এরচেয়ে ভাল। সে যাই হোক। IMG_7792 এরপরে বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন মানুষের উপস্থিতিতে শুরু হলো ছবি তোলা। পুরো দলকে দেখতে হলে পরপর নিজের দুটো ছবি দেখুন। IMG_7793 বামে থেকে ডানেঃ অমিত, জোসেফ, ধ্রুব, নির্ঝর, প্রিয়ম, ও সনেট।
IMG_7796

লাইলী + মজনু = ভালোবাসা এই আঁকাআঁকি ভেবেছিলাম অন্তত মার্কিন দেশে এসে দেখা লাগবে না, কিন্তু এদিক সেদিক ঘুরতে ঘুরতে পেয়ে গেলাম ২০১৪ সালেই আসা সেই কপোত-কপোতিদের যারা মেঘের দেশে ভালোবাসা জানিয়ে গিয়েছিল এই পাথরের বুকে। IMG_7779 লেখাটা দেখা মাত্রই মান্না দে’র গান গেয়ে উঠলাম, “যদি পাথরে লেখ নাম পাথর ক্ষয়ে যাবে।”

বেলা পড়ে আসছে দেখে ফিরতি পথে রওনা দিলাম কারণ দিনের আলো থাকতে থাকতে ক্যাম্পিং সাইটে যেতে চাই। বাসায় এসে হাতমুখ ধুয়ে খেয়েদেয়ে তল্পিতল্পা গাড়ির ছাদে বেধে রওনা দিলাম কপার হারবারের উদ্দেশ্যে। সূর্য ডোবে ৯টা ৫ মিনিটে তারপরেও অনেক দেরী হয়ে গিয়েছিল। কপার হারবার মিশিগানের সর্ব উত্তরের এলাকা। বিশ্বের সবচাইতে বড় স্বাদু পানির হ্রদ লেক সুপিরিয়রের পাড়ে অবস্থিত। কপার হারবার থেকে সোজা উত্তরে রওনা দিলে কানাডা। যখন পৌঁছালাম রাত বাজে ১১টা। ফরেস্ট রেঞ্জার আমাদের সাইট খুঁজে পেতে সাহায্য করলো। সবকিছুতেই জীবনের প্রথমবার বলে একটি কথা আছে। সব প্রথমবারের অভিজ্ঞতা সবসময় সুখকর হয় না। সেই তালিকায় বেশ উপরের দিকে “জীবনের প্রথমবার তাবু খাটানো” থাকবে এতে কোন সন্দেহ নেই। গাড়ির হেডলাইটের আলো দিয়ে তাবু খাটানো শুরু করতেই আশেপাশের ঘুমিয়ে (!!) পড়া মানুষজন অভিযোগ করতে শুরু করলো। একটু হোঁচট খেলাম। ক্যাম্পিং এ এসে রাত ১১টার দিকে মানুষ ঘুমাবে কেন? গাড়ির বাতি বন্ধ করে ছোট একটি টর্চ ও সবার মোবাইলের আলোয় কাজ চালানো শুরু করলাম। মোবাইলের নেটওয়ার্কবিহীন এই এলাকায় আবার ওয়াইফাই দিয়ে ইন্টারনেট সংযোগ ঠিকই আছে। আজব লীলার কারখানা। ৮জন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন তাবু খাটাতে গিয়ে দম, ঘাম সব বের হয়ে যেতে লাগলো। ডানের রশি ছুটে তো বামের লাঠি খুলে যায়। এই কি বিপদে পড়লামরে বাপ। রেঞ্জার সাহেবান আবার ফেরত আসলেন। আমরা নাকি বেশী জোরে শব্দ করছি। আবারো অবাক হয়ে চুপ করে গিয়ে আগুন জ্বালানোর চেষ্টা করতে লাগলো দুইজন। কিন্তু সকালের বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়া কাঠে আগুন ধরাতো দূরে থাক ধোঁয়াটুকুও ঠিক মত বের হলো না। যাক কি আর করা। অনেক গবেষণা, ইউটিউব ভিডিও ও ফিসফিস আলোচনার পর প্রায় যখন দাঁড় করিয়ে ফেলছি তখন পাশের তাবু থেকে এক মার্কিন ভদ্দরনোক বেশ মারমুখি ভঙ্গিমায় এসে জানালেন তার আর চার ঘন্টার মাঝে উঠতে হবে এবং তার সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। সবার স্বার্থে তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করে ঘুমাতে যেতে বলে চলে গেল লোকটি। সবার মেজাজ তখন তিরিক্ষি হয়ে আছে। রঙ তামাটে আর ভাষাটা বিজাতীয় হলেই যা তা বলে ফেলা যায় সেটা আমরা আবার হজমও করি। রাত বাজে দেড়টা। তাবু কোনমতো দাঁড়িয়ে গেল। কিসের আগুন, আড্ডা, হইচই গান? ক্লান্ত ও পরদিনের চালক পার্টি ঘুমাতে চলে গেল। রয়ে গেলাম আমি, জোসেফ, ও অমিত। গাড়িতে বসে জানালা আটকে দিয়ে আমাদের বিখ্যাত কেবিসির বিয়ার বের করা পান করা শুরু করলাম।

বিয়ার শেষ হলে হাতে উঠে এল ওয়াইল্ড টার্কি। রাত বাজে তিনটা। তাতে চুমুক দিতে দিতে আস্তে করে বের হয়ে এলাম গাড়ি থেকে। এরপর চারপাশে হাঁটা শুরু করলাম। কিছুক্ষণ হেঁটে যেটা বুঝতে পারলাম আমরা বুকিংটা একটু ভুল জায়গায় দিয়েছি। আমাদের যেখানে জায়গা দিয়েছে সেটি একটি আরভি পার্ক বা আরভি ক্যাম্প। আরভি হলো ছোটখাট বাড়িসদৃশ গাড়িগুলো। গ্রীষ্মে নীচের রাজ্য থেকে এই আরভি নিয়ে পরিবারসমেত মার্কিনিরা “বনজঙ্গলে” থাকার অভিজ্ঞতা অর্জন করতে মৃদু আবহাওয়ার এলাকায় হিজরত করে। বাসাবাড়ির জীবনটাই দুই তিনদিনের জন্য তারা গাছের নিচে আরভিতে নিয়ে আসে। বাসাবাড়ির জীবন আর আরভির জীবনের সাথে মূল পার্থক্য হলো একটি বনে অপরটি লোকালয়ে। শত বিরক্তির মাঝেও হাসি পেল। কিছুটা করুণাও হলো তাদের জন্য। আরেক ধরনের ক্যাম্পিং সাইট আছে যেখানে আরভির দল যায় না। সেখানে মূলত যায় আমাদের মত বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলেমেয়ে। সেখানে চলে বনফায়ার, হইচই, গান ইত্যাদি। সেগুলো আশেপাশেই ছিল কিন্তু ভুল যা করার করে ফেলেছি। যাই হোক সে নিয়ে আর দুঃখ না করে আমরা তিনজন হাঁটা শুরু করলাম। হাতে কোক ও ওয়াইল্ড টার্কি। তাপমাত্রা অনেক কমে এসেছে। শীতে উষ্ণতা ধরে রাখতে ধীরে ধীরে চুমুক দিচ্ছিলাম। হালকা আসক্ত অবস্থায় কত যে কথা বের হয় মানুষের মুখ দিয়ে সেটা পরিস্থিতিতে থাকলেই বোঝা সম্ভব। চারটার দিকে গাড়িতে ফেরত এলাম। তাবুতে ঢুকতে গিয়ে দেখি তিন ঘুমন্ত নাসিকা ঘূর্ণিবায়ুর মত গর্জন করছে। ঘুমানো সম্ভব হবে না ভেবে গাড়িতে ফেরত এলাম আমরা তিনজন। ভোরেই উঠতে হবে। তাই আর দেরী না করে ঘুমিয়ে পড়লাম।

সকাল সাড়ে ছয়টায় সবাইকে ডেকে তুললাম। সবাই বেশ ঝটপট উঠে তৈরী হয়ে নিল। তাবু, স্লিপিং ব্যাগ গুটিয়ে গাড়িতে তুলে রওনা দিলাম বাসার উদ্দেশ্যে। গত রাতের অভিজ্ঞতা নিয়ে যখন আলোচনা চলছে হঠাৎ শব্দ করে গাড়ির ছাদ থেকে স্লিপিং ব্যাগগুলো উড়ে রাস্তায় পড়ে গেল। বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেনি। গাড়ি ঘুরিয়ে সবগুলো কুড়িয়ে আবার শক্ত করে বেঁধে নিলাম। কপার হারবারে রাতে পৌঁছানোর কারণে ছবিই তোলা হয়নি তবে এই অনাকাঙ্খিত বিরতিতে কোকের বোতল নিয়ে ছোট একটি আলোক চিত্রকর্ম দাঁড়া করিয়ে ফেললাম। IMG_7798 আধো ঘুমে পৌঁছে গেলাম হৌ’টন। ঝটপট ডিম, পরোটা ভেজে মুরগীর ঝোল গরম করে দিলাম। কারণ ওরা এখান থেকে একটু পরেই রওনা হবে পিকচার্ড রকস নামের আরেকটি প্রাকৃতিক দর্শনীয় স্থানের উদ্দেশ্যে। সেটি আবার এখান থেকে সাড়ে তিন ঘন্টার যাত্রা। বেচারাদের লজ্জায় ফেলে দিলাম। বারবার করে বলছিল ভাই যেভাবে আদর আপ্যায়ন করছো। কিন্তু কি যে ভালো লাগছিল। নাস্তা খাবার সময় জানতে পারলাম প্রিয়মের কথা বলার উপর নিষেধাজ্ঞা শুধু ভাত খাবার সময় প্রযোজ্য। প্রশ্ন উঠে এলো চালের রুটি খাবার সময় প্রিয়ম কি করবে?

নাস্তা, চা-চক্র, ধূমপান ইত্যাদি শেষে ঘন্টা দেড়েক পরে ওরা গাড়িতে উঠে পড়লো। হঠাৎ করেই যেন ইতি চলে এলো প্রায় ৪৮ ঘন্টার এই চমৎকার সময়ের। বিদায় জানিয়ে বাসায় আসতেই নিস্তব্ধতা ও একাকীত্ব ঘাড়ে চেপে বসলো। বাথরুমে গিয়ে ঝরণা ছেড়ে দিতেই রীতিমত কান্না পেয়ে গেল। এলাকার বাঙলাদেশীদের সাথে উঠাবসা নেই তাই গত দুই বছরে দেশী অতিথির সমাগম কখনো হয় নাই। এরকম বুক-পেট চেপে কান্না পেত সেই ছোটবেলায় যখন দাদা-নানা বাড়ি বেড়িয়ে সবাইকে বিদায় দিয়ে রিকশায় উঠতাম স্টেশানে যাবার জন্য তখন। গোসল শেষে বের হয় এসে তোলা ছবিগুলো নিয়ে বসলাম। মনটা ভাল হয়ে গেল। স্মৃতিগুলো তো আছে। এই নিয়ে একটি ব্লগও লিখে ফেলা যাবে। ওতেও শান্তি।

৩,৪৯০ বার দেখা হয়েছে

২৯ টি মন্তব্য : “দেখা হয়নাই চক্ষু মেলিয়া, রাত্রি কাটিলো তাবু খাটাইয়া।”

  1. সামিউল(২০০৪-১০)

    আম্রিকা ঘুরতে যাওয়ার ইচ্ছা আমার বহুদিনের। আপনের ব্লগ পইড়া আবার সেই ইচ্ছা মাথচাড়া দিয়ে উঠছে।
    যেতেই হবে একদিন। 🙂


    ... কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালবাসে!

    জবাব দিন
  2. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    দারুন লেখা, দারুন ছবি :hatsoff: আমিও আম্রিকা ঘুরতে যাইতে চাই :dreamy:

    শেষের ছবিটা দেখে কোকাকোলা ফিগারের জোকস মনে পড়ে গেল 😛


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  3. নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

    দেখলে কে বলবে কয়েকদিন পরেই হাড়কাঁপানো ঠাণ্ডা শুরু হবে ফের! বছরের এ সময়ে শীতকালের কথা আমি পুরোপুরি ভুলে থাকি -- না থাকলে অবশ্য বাঁচতেও পারতামনা।

    ছবিগুলো খুব ভালো লাগলো। লেখাও। (সম্পাদিত)

    জবাব দিন
  4. পারভেজ (৭৮-৮৪)

    তাবু টানানোর টেকনিক জানা থাকলে তা আসলেই "বা হাত কি খেল"।
    আর না জানা থাকলে যা যা বলেছো, সবই ঠিক।
    মজার অভিজ্ঞতা ও তার বর্ননা।
    পড়েই আংশিক অংশগ্রহন করে ফেললাম।


    Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

    জবাব দিন
    • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

      টেকনিক না জানা থাকলে যে বিশাল বিপদে পড়তে হবে এটা আমি জানতাম। তাই আমি বারবার জিজ্ঞাসা করছিলাম আমাদের মাঝে কেউ কি জানে ৮ জন মানুষের তাবু কিভাবে খাটাতে হয়? সবাই বলছিল আরে হয়ে যাবে। আমি জানতাম হবে না। কারণ প্রথম তাবু খাটানোর তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখালেখি মানুষজন প্রায় সময়ই করে থাকে। বিবিসি অটো শো টপ গীয়ারের একটি এপিসোডই ছিল তাবু খাটানোর হাঙামা নিয়ে। 😀

      ধন্যবাদ পড়ার ও আংশিক অংশগ্রহণ করার জন্য! :hatsoff:


      \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
      অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

      জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : মোকাব্বির (১৯৯৮-২০০৪)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।