মানসিক চিন্তার রেলগাড়ী

ওরা বললো-
নরাধম খৃষ্টানেরা, ধর্মান্তর হউ অথবা মৃত্যু।
রাতের আঁধারে রুদ্ধশ্বাসে, সন্তর্পণে হেঁটে যায়।
হঠাৎ কেঁদে ওঠা খোকার মুখ চেপে ধরে মা।

ওরা ঘোড়া চেপে দিতেই কেঁপে উঠলো-
কালাশনিকভ, দেহ। শেষ কয়টি বুলেট-
শিস বাজিয়ে স্থান নিল হাড় মাংসে।
ফিনিক্স পাখি ডানা মেললো নিথর দেহে।

ওরা ডাক দিল খেলাফতের।
আগুন জ্বললো ঘরে বাহিরে।
ঘরের কোণে ছেলেটির চুপসে যাওয়া বল,
মেয়েটির পুতুলটি–আধাপ‌োড়া।

ওরা হুংকার দিয়ে উঠলো। গর্জে উঠলো-
মেশিনগান, রাইফেল, কালাশনিকভ।
যুদ্ধবন্দিরা নেচে উঠলো হাত বাধা পুতুলের মত।
ইমামের কালো আলখাল্লায় লুকালো কালো রক্ত।

“হিন্দু না ওরা মুসলিম? ওই জিজ্ঞাসে কোন জন?
কান্ডারী! বল, ডুবিছে মানুষ, সন্তান মোর মার।”
প্রিয় কবি,
মায়ের সন্তানেরা আজো ডুবে যায় রক্ত গঙায়।

ওদের অপরাধ?
ওরা মানুষ নয় শিয়া। ওরা মানুষ নয় খৃষ্টান।
ওদের জন্য মন কাঁদে না। ওদের বাঁচাতে-
পতাকা হাতে বিক্ষোভের ভাষা খুঁজে পাই না।

আমার মনুষ্যত্ব, আমার বিবেক,
আমার প্রতিবাদ শুধু পবিত্র ভূমির তরে।
শুধু পবিত্র ভূমির মানুষের তরে।
কারণ আমি মানুষ। শিয়া নই। খৃষ্টান নই।

১,১৪০ বার দেখা হয়েছে

১৩ টি মন্তব্য : “মানসিক চিন্তার রেলগাড়ী”

    • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

      সম্ভব না নূপুরদা। এক চোখ বন্ধ করে রাখলে মেলে রাখা দৃষ্টির অর্ধেকটা ধরা দেয়। বাকিটা দেখতে ঘাড় বাঁকাতে হবে। মসুল ও পাশ্ববর্তী এলাকায় গত ৫-৬ মাসে প্রাণ হারিয়েছে পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার বেসামরিক লোক। গতমাসে তেলখনি দখল করার পর একদিনে প্রায় আড়াইশো কর্মচারীকে হত্যা করা হলো। এদের অপরাধ একটাই, এরা হয় শিয়া না হয় খৃষ্টান। কই তখন তো আমি তো আমি কারো প্রোফাইলে ইরাকের পতাকা দেখি নাই। দেখি নাই জ্বালাময়ী ফেইসবুক স্ট্যাটাস। দেখি নাই ফেইসবুক কাভার ফটো যেখানে রক্তে ভেজা অক্ষরে লেখা, "You don't have to be a Muslim to support Iraqi residents in Mosul, you just have to be a human." এই দ্বৈত সত্বার থেকে মুক্তি কবে মিলবে?


      \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
      অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

      জবাব দিন
      • জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

        আমার মনে হয় এখানে দ্বৈত স্বত্তার কিছু নেই - টাটকা জিনিস নিয়ে কথা বলতে আমরা পছন্দ করি। ইরাক বহু বছর হল লস্ট কজ, আমরা প্রথমে খুব আগ্রহ নিয়ে খবর দেখতাম/শুনতাম, খোঁজ রাখতাম। এখন তাও রাখি না। পুতুল সরকার, পশ্চিমা হস্তক্ষেপ- সব মিলিয়ে উগ্রপন্থীদের মাথা চেড়ে ওঠার জন্য যুতসই পরিবেশ ছিল, ঠিক যেমনটি হয়েছে আফগানিস্তানে...

        ফিলিস্তীন নিয়ে আমাদের হাহাকার মাস খানেক থাকবে, এরপর ঈদ... ঈদ পুনর্মিলনী, সাকিব, যুদ্ধাপরাধীর বিচার, বিরোধী দলের 'আন্দোলন', বছর শেষ, বিশ্বকাপ ক্রিকেট...এরপর আবার হয়ত ইরাক, কাশ্মীর, নাইজেরিয়া কিংবা ফিলিস্তীন! এভাবেই চলবে!

        দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে এসব ব্যাপারে যেসব আন্তর্জাতিক সংস্থার বেশি সোচ্চার হবার দরকার ছিল সেই ইউ এন, এইচ আর ডব্লিউ, এমনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল কুৎসিতভাবে নিরবতা পালন করে চলেছে!


        ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

        জবাব দিন
        • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

          তারপরেও ভাই। আইএসআইএস এর হত্যাকান্ড কিন্তু মাত্র মাস ছয়েক পুরাতন। মসুল আক্রমনের কাহিনী সবে একমাস হতে চললো। যতই বাস্কেট কেস বলেন, শিয়া মরলে খুব একটা গায়ে লাগে না আমাদের। এইটা স্বীকার করেন আর নাই বা করেন, সত্য কথা। অপরদিকে প্যালেস্টাইন হাজার বছরের পুরাতন দ্বন্দ্ব তাই একটু খোঁচা লাগলেই সবাই গরম হয়ে যায়। এদিকে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো কবে কোথায় সঠিক ভূমিকা পালন করেছে? আমার তো মনে পড়ে না।

          যাই হোক। প্যালেস্টাইনের এই গেঞ্জাম আপাতত খুব শীঘ্রই থামছে। এটা বলে দিলাম। এরপরে বাকিটা আপনার কথা মতই যাবে, অর্থাৎ থামার পরে আর সপ্তাহ দুয়েক তারপরে নতুন টাটকা খবরের খোঁজে।


          \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
          অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

          জবাব দিন
  1. তোমার লেখা পড়ে বুঝতে পারছি যে তোমার লেখার হাত ভাল। প্রকৃতি নিয়ে কখনও কিছু লিখেছ? যুদ্ধ, রাজনীতি , সমাজতত্ত্ব দিয়ে কবিতা লিখতে গেলে পক্ষ বিপক্ষ তৈরি হয়, এই জন্য বললাম। আসলে বিচ্ছিন্ন ভাবে দেখলে তোমার কবিতার যে সরাসরি বক্তব্য তা যথার্থ। কিন্তু আমার ধারণা বিষয়টা এত বিচ্ছিন্ন না। মানুষের মানসিকতার পর্যায়ক্রমিক ইতিহাসের একধরনের যোগফলগত বহিপ্রকাশ রয়ছে। এগুলো ফ্যাক্ট। এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। তোমার কবিতায় সেই সচেতনতা পুরোটাই অনুপস্থিত।
    নিজেকে নিরঙ্কুশভাবে সঠিক ভেবে কিছু লিখতে গেলে আরেকজন তার চিন্তার সঠিকটা তোমাকে জানাতেই চাইবে, তাইনা? তুমি খুব শক্ত ভাবে দুটো খারাপ কাজের তুলনা টানছ, যা অযথার্থ। বিশেষ করে যখন ভুল তথ্য দিয়ে কবিতার ব্যাখ্যা দাও এবং নিজেকে প্রকাশ কর তখন। তোমাকে কে বলেছে যে ফিলিস্তিন সমস্যা হাজার বছর পুরনো? এত সুন্দর একটা কবিতা লিখে এভাবে অজ্ঞের মত কথা বললে সেটা অত্যন্ত দুঃখজনক।
    ফিলিস্তিন সমস্যা কিভাবে হাজার বছর পুরনো সেটার একটা তথ্য বহুল আলোচনা আশা করছি তোমার কাছে, এখানে।

    জবাব দিন
    • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

      মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আহসান ভাই। প্রথমে দুটো বিষয় স্বীকার করে নেইঃ ক) কবিতা লেখাটা আমার ঠিক যায় না। খ) সম্ভবত ইতিহাস সম্পর্কে ভুল কিছু জানি।
      "হাজারবছর" শব্দটি ব্যবহার করা উচিৎ হয় নাই এটা ধরতে পারছি। টাইম লাইনের ক্ষেত্রে আরো সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার ছিল। ক্ষমাপ্রার্থী। যদি জিজ্ঞাসা করেন কি জানো ফিলিস্তিন সম্পর্কে তাহলে লজ্জায় কানে ধরলাম। কিছু জানি না। লিবিয়ার এক কলিগের সাথে ওদের এক আলোচনায় গিয়েছিলাম। সারমর্ম যতটুকু বুঝেছিলাম (বা ভুল বুঝেছিলাম), ফিলিস্তিন ইসরায়েলের এই বৈরীতা অনেক পুরাতন।

      তবে কবিতার ব্যাখ্যার ব্যাপারে আপনার মতে "অযাচিত" তুলনার বিষয়টিকে মানতে পারলাম না। বরং আপনি বলুন অযাচিত কেন? দুটো পরিস্থিতিই ভয়াবহ কিন্তু যেই পরিমান আলোচনা, সমালোচনা ইরাকের বিষয়টি নিয়ে হওয়ার কথা ছিল, মানবতার খাতিরে, তার কানাকড়িও করা হয়নি। বিষয়টি খারাপ লেগেছে। খুব আইডিয়ালিস্টিক কথা হয়ে যায় তবুও সৃষ্টিকর্তা যিনিও হোন, দিনের শেষে তো আমরা তো মানুষ তাই না? প্রতিবাদ হলে সবার জন্যই হবে। ধন্যবাদ।


      \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
      অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

      জবাব দিন
  2. ইমাম আহসান __(৯৬-০২)

    প্রথম কথা হচ্ছে আমি 'অযাচিত' বলিনি, বলেছি অযথার্থ। দুটো শব্দের অর্থ নিকটবর্তী নয় বরং আলাদা। মানবিকতা বা মানবতা একটা সাধারন পরিসীমা বোঝায়, যার দ্বারা সুনির্দিষ্ট মতামত দেয়া সম্ভব নয় যদিনা তুমি পারিপার্শ্বিক শর্তাবলী বিবেচনায় নাও। ইরাকে যা চলছে সেটি রীতিমতো যুদ্ধ, নিয়মিত সামরিক বাহিনীর বিপরীতে মুসলিম জঙ্গি গেরিলা বাহিনী যুদ্ধ করছে। এছাড়া সেখানে জাতিগত সহিংসতা রয়েছে যেখানে শিয়া নিয়ন্ত্রিত সরকার সুন্নিদের হত্যা করছে বা তাদের অধিকার হরণ করছে যেমনটি আগে সাদ্দাম হোসেন করেছিল শিয়াদের সাথে এবং কুর্দিদের সাথে, বিপরীতে সুন্নিরা জঙ্গি বাহিনী তৈরি করে তাদের সাথে লড়ছে।
    আর ফিলিস্তিনে যা চলছে সেটি হচ্ছে অত্যাধুনিক মারণাস্ত্রের বিপরীতে পাথর ছুরে মারার অসম চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধ, তুমি অবশ্যই জান ফিলিস্তিনের কোন প্রতিরক্ষা বাহিনী নেই। এখানে সুস্পষ্টভাবে এবং নিশ্চিতভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া ছাড়া ফিলিস্তিনিদের কোন রাস্তা খোলা নাই। এমন নয় যে অন্য কোন দেশ ফিলিস্তিনিদের সাহায্য করতে সক্ষম অস্ত্র দিয়ে। ইরাকের ব্যাপারটা মোটেই সেরকম কিছু না। সেখানে একটা সরকার রয়েছে যাদের সেনাবাহিনীর পেছনে ১০০ কোটি ডলার বার্ষিক খরচ করা হয় আর দিন শেষে তারা জঙ্গি দমনে ব্যর্থ হয়। ব্যাপারটা এমনি। এক্ষেত্রে তুমি যদি কাউকে দায়ী করতে চাও তো নুরি আল মালিকির সরকার কে দায়ী করতে পার। এই আলচনার আরও লেজুড় আছে যা সবাই জানে, সুতরাং সেদিকে যাচ্ছি না।

    নিছকই মানবিকতার নিরিখে যদি কোন আলোচনা করতে হয় তো সেটা ফিলিস্তিন প্রসঙ্গেই সবচেয়ে যথার্থ যাদের বৈশ্বিক পরাশক্তির চাপিয়ে দেয়া হত্যাকাণ্ড সয়ে যাওয়া ছাড়া কোন পথ খোলা নাই। আর ইরাকিদের ভূমি তো কেউ দখল করে নেয়নি। সেখানে চলছে নিয়ন্ত্রন কার থাকবে সেই যুদ্ধ। আর ফিলিস্তিনিদের তো নিজ রাষ্ট্র থেকেই উচ্ছেদ করা হয়েছে আর এখন চলছে পুরো জাতিসত্তা মুছে ফেলার প্রক্রিয়া। তাহলে তুমি বল, কিভাবে তুলনা যথার্থ?

    জবাব দিন
    • নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

      আলোচনা জমে উঠতে দেখে আমিও দু'কথা বলতে এলাম।
      আমার মনে হয় মোকাব্বির যা বলতে চেয়েছে সেটা হচ্ছে, একশ্রেণীর জনগণের উথলে আবেগটা মুলত ধর্মীয় সহমর্মিতার উপর দাঁড়িয়ে আছে। মানবিকতার প্রশ্ন সেখানে সেকেণ্ডারি। এ অবস্থার মধ্যে হিটলার যে কত ভালো কাজ করেছিলো ইহুদী নিধন করে --- সবগুলোকে শেষ করে যেতে পারলে পৃথিবীর জন্যে কতই না মংগল হত এমন বাক্যে অনলাইন সয়লাব ।

      মুসলমানেরা যখন নিজেরা মারামারি করছে বা অন্যদের নিগ্রহ করছে তখন নিশ্চুপ থেকে বা সমালোচনা করতে ব্যর্থ হয়ে অন্যদিকে ভিন্ন জনগোষ্ঠীর দ্বারা মুসলমান উৎপীড়ন নিপীড়ন নিয়ে আস্ফালন সংক্রান্ত দ্বিচারিতা নিয়েই মনে হলো মোকাব্বির হতাশ। সেখানে তুলনার উনিশ বিশ থাকতে পারে -- কিন্তু ওর এ পর্যবেক্ষণটি অব্যর্থ।

      যদিও আমি মনে করি, যে কোন ভাবেই হোক প্রতিরোধের একটা দেয়াল গড়ে ওঠা দরকার। ধর্মীয় বা যে কোন অনুভূতি দ্বারাই হোক, ভ্রাতৃত্বের প্রাসংগিকতায় মানুষ বাঁচুক। একটা অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে মন সায় দিচ্ছেনা বলে আরেকটারও না করে নিষ্ক্রিয় বসে থাকার কোন মানে হয় না। তাছাড়া একজনকেই বাবরি মসজিদ, গোধরা, বোকো হারাম, ইরাক, কাতার, প্যালেস্টাইন, রোহিংগা এবং বাংলাদেশে পাহাড়ি বা হিন্দু বৌদ্ধ নিগ্রহের জন্যে হিসেব করে সোচ্চার থাকতে সক্ষম হতে হবে এমন তো কথা নেই। তবে এই সুযোগে ধর্মের ঝাণ্ডা তুলে যারা বলার সাহস পায় ইহুদীদের শেষ করে দেয়া ভালোই ছিলো, হিটলার মহানায়ক ছিলো তাদের জন্যে থুতুও কম হয়ে যায়।

      জবাব দিন
      • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

        কথাটা বলতে চাই নাই, কিন্তু গত দুই মাস ধরে দুই অঞ্চলের খবরই অনুসরণ করে আসছি। উপরে অবশ্য জুনাদা কথাটা ভাল বলেছেন। টাটকা টপিক নিয়ে খই ভাজতে পছন্দ করি। হিসাবে ইরাকের কেইস পুরাতন। তার উপরে সেখানে নাই দেশ দখলের হুমকি উনি উনার বক্তব্যে ঠিকই আছেনঃ আমরা দুর্বলের পাশে দাঁড়াবো (বিঃদ্রঃ পাশে মরে সাফ হয়ে যাক সেটা সরকারের অব্যবস্থাপনার দোষ।)

        আমি আসলেই বলতে চাই, হেইল হিটলার। হলোকাস্টে এভাবে ইহুদী নিধন না করলে আজকের এই ফ্রেশ ফ্রম দ্য ওভেন হট টপিকে লাফ-ধাপ-ঝাঁপ দেয়ার সুযোগ হতে আমাদের একচোখা সত্বাকে বঞ্চিত করতেন। :brick:


        \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
        অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

        জবাব দিন
    • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

      কবিতা লেখা আমাকে দিয়ে সাধারণত হয় না। চেষ্টা করি তখনই যখন একটু বেশী আবেগ তাড়িত হই। এবারো আবেগ তাড়িত হয়েছি ছোট একটি ঘটনার প্রেক্ষিতে। হয়তো কবিতার শেষে লিখে দেয়া দরকার ছিল "সত্য ঘটনা অবলম্বনে।" আমার বিশ্ববিদ্যালয় মিশিগান টেক এর এক ইরানের এক ছেলে। ছেলের জন্মসূত্রে ইরানি হলেও দাদাবাড়ি ইরাকের মসুল শহরে। আইএসআইএস মসুল আক্রমন করার পরে অন্যান্য আত্মীয়রা পালালেও ভিটামাটি ছাড়তে চাননি ছেলের দাদা। সপ্তাহখানেক নিখোঁজ থাকার পরে গুলিবিদ্ধ লাশের খোঁজ পেয়েছে লাশের স্তুপের মাঝে। পেশায় মসজিদের ইমাম এই মানুষটিকে হারানোর শোকে কাঁদতে থাকা ছেলেটি প্রলাপ বকছিল। আরেক পরিচিত ইরানিকে জিজ্ঞাসা করলাম কি বলছে ও? উত্তর দিল, "আমার দাদার অপরাধটা কি? আমরা কি মানুষ নই? এই হিংসার শেষ কোথায়?" আরো ইত্যাদি নানান কথা। এসব দেখে মন মেজাজ ঠিক রাখাটা কষ্টকর হয়ে যায়। আমার কপাল ভাল এই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্যালেস্টাইনের কোন ছেলে পড়ে না। অন্তত ব্যক্তিগত ভাবে চিনিনা। না হলে এরকম মরা কান্না প্রতিদিন দেখতে হতো। আমার খারাপ লাগে এই ভেবে যে এর শেষ নেই। এরকম চলতেই থাকবে। প্যালেস্টাইন চোখের সামনে মুখ থুবড়ে পড়বে, ইরাক আবারো অস্থিতিশীল, নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়বে কিন্তু আমরা ততটুকুই দেখি ও শুনি যতটুকু আমরা দেখতে ও শুনতে চাই। যাই হোক, আর কথা বাড়াবো না। সবকিছু ইদানিং জটিল লাগে। আমার চিন্তাভাবনা অপরিপক্ক ও সরলরৈখিক। তাই মানুষ মানুষের দুঃখে কাঁদবে আমি এই অসম্ভব চিন্তাটি আমি সবসময় করি। এইটুকুই।


      \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
      অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

      জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।