পুরোনো পাতায়ঃ বরফের দেশের গল্প ৯

২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪, মঙ্গলবার রাত বারোটা ৪ মিনিট

সবাই কিছু না কিছু বলছে। কবিতা, গুছিয়ে কিছু মনের কথা। আমি পারছি না। এর আগেও পারি নাই। স্বীকার করতে হবে ২৫শে ফেব্রুয়ারী হত্যাকান্ডের ব্যাপারে আমার মাঝে জোরালো নিস্পৃহা কাজ করে। আজকে বিকালে ক্লাশ শেষে চিন্তা করছিলাম কেন এমনটা হচ্ছে। বিশেষ কোন ঘটনা কি ঘটেছিল? মনে করতে পারলাম না। তবে কি আমার চেনা পরিচিত কেউ প্রাণ হারাননি দেখে এরকম হচ্ছে? হতে পারে। সেনাবাহিনীর প্রতি কোন রাগ বা ঘৃণা পুষে রাখিনি। তবুও নির্জলা নিস্পৃহা। শুধু ক্যাপ্টেন মাজহার ভাইয়ের ছবিটার দিকে তাকিয়ে কেমন জানি পেট গুলিয়ে উঠলো। এই মানুষটা বেঁচে নেই। একটা চাপা বিষন্নতা যখন সন্তর্পনে মাথায় চেপে বসছিল তখন ফেবুতে একটি ছবি ও সেই ছবির মন্তব্য গুলো দেখে মেজাজ খিচড়ে গেল। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠী La Reve এ ম্যানেজার হিসেবে নতুন ঢুকেছে। প্রোফাইল ফটোতে দুইজন মডেলের সাথে দাঁড়ানো একটি ছবি। একজনের চেহারা পুরুষালী। দেখে মনে হলো হিজড়া। La Reve এর সাহসী পদক্ষেপের তারিফ করতে মন্তব্য করতে যাব, ততক্ষণে প্রথম মন্তব্যটি করলো আরেক সহপাঠী। জিজ্ঞাসা করলো বামপাশের জন ট্রান্সজেন্ডার কিনা। এরপরে সেখানের মন্তব্যে যা শুরু হলো সেটা পড়ে দেখার মত রুচি আর হলো না। চোখ বুলাচ্ছিলাম কারা মন্তব্য করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য ছোট ভাই। তাদের একজনের ছবিতে সাথে সুন্দরী বউ। একজন ক্যাডেট কলেজের পরিচিত ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠী। অবাক হইনি কারণ পশুত্ব দেখানোর জন্য মানুষ হলেই যথেষ্ট, ক্যাডেট হওয়াটা উপরি পাওনা। সবশেষে, আরেক সহপাঠী যাকে নিয়মিত হাদিস ও কুর’আনের আয়াত আরবী হরফ ও অর্থসহ ফেবু স্ট্যাটাস আপডেট করতে দেখা যায়। ধন্যবাদ এসব মানুষদের। ঈশ্বর হতে অনেক দূরে সরে আসতে সহায়তা করার জন্য। বাস্তবতা হলো, জাতীয় পরিচয় পত্রে “হিজড়া” যোগ করে ভোটাধিকার দেয়ার যতই চেষ্টা করা হোক, বাঙলাদেশের মানুষ যতদিন হিজড়াদের মানুষ ভাবা শুরু না করবে ততদিন কোন চ্যাটের বাল হবে না। বাজে কথা বললাম এবং এর জন্য বিন্দুমাত্র দুঃখিত নই কারণ আমি নেড়ি কুকুর। চিৎকার হবে তফাতে গিয়ে। ক্রোধটুকু গিলে খেয়ে, দুই পায়ের ফাঁকে লেজটি নামিয়ে এখানে চলে আসলাম চিৎকার করতে। “আমেরিকা গিয়ে খুব হিউম্যান রাইটস শিখেছিস” এই ধরনের কোন কথার জ্বালা ধরানো অশ্লীল সংস্করণ সহ্য করতে পারব না দেখে কেটে পড়লাম। এদিকে কার্জনের সামনে স্কার্ট টপস পড়া মেয়েরা চলচিত্রের শ্যুটিং করছে দেখে “দেশজ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য” আট (০৮) রিখটার স্কেলে কম্পিত কিন্তু টি২০ বিশ্বকাপের মূলগানের ভিডিওতে সেই একই নাচানাচি হলে বাহবা? বাঙালীর মাঝেও যে Not In My Backyard বা NIMBY উপসর্গ আছে সেটা জানতাম না।

২৫ ফেব্রুয়ারী, দুপুর ২টা ৫০মিনিট
এভাবে প্রত্যাখাত হবো ভাবিনি। সকালে ক্লাশে যাবার পথে দেখলাম ক্যাম্পাসে আমেরিকান রেডক্রসের স্বেচ্ছায় রক্ত দান কর্মসূচি দল এসেছে। গতবার সময় পাইনি তাই এবারো দিবই দিব বলে গেলাম। আধাঘন্টা বসে থেকে, বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়ে ওজন, উচ্চতা, রক্তচাপ, হৃদস্পন্দন, তাপমাত্রা স্বাভাবিক জানার পরে নিজেরই ভালো লাগল‌ো। তবে রক্তে লোহার পরিমাণ মাপতে গিয়ে ডাক্তার জানালো আমার রক্তে লৌহের পরিমাণ অনেক বেশী ও পরিমাণ নির্ণায়ক যন্ত্রের সর্বোচ্চ সীমার উপরে তাই কিছু দেখাচ্ছে না। কিঞ্চিত চিন্তিত হলাম। সুস্থই আছি আবার সুস্থ নই? সমস্যা হলো যখন জানতে পারলো বাঙলাদেশের নাগরিক এবং আমেরিকা এসেছি মাত্র দুই বছর। ম্যাডকাউ রোগের জন্য ইউরোপের প্রায় সব দেশ এবং ম্যালারিয়ার জন্য বাঙলাদেশে একটি নির্দিষ্ট সময়্ অবস্থান করলে তারা সেই মানুষের রক্ত নিবে না। বাঙলাদেশ থেকে আগত যেকোন ব্যক্তি আমেরিকায় টানা তিন বছর অবস্থান করার পরেই রক্তদানে উপযুক্ত হবে। আমি আমেরিকা এসেছি প‌ৌনে দুই বছর। ডাক্তার মহিলা কষ্ট করে আসার জন্য আমাকে অনেক শান্তনা দেয়ার চেষ্টা করলেন। কি আর করা। মন খারাপ করে চলে আসলাম। আসতে আসতে দেখি কিছুক্ষণ আগে রক্ত দিয়ে হেঁটে চলে যাওয়া এক ছাত্র আস্তে করে মাটিতে লুটিয়ে পড়লো। সম্ভবত মাথা ঘোরাচ্ছে। রক্তদানের পর যথেষ্ট বিশ্রাম ও পানি পান না করলে যেটা হবার সম্ভাবনা থাকে। হঠাৎ আরো মনে হলো হেপাটাইটিস-বি এর টীকার সর্বশেষটি গত বছর ছিল দেয়া হয়নাই। সম্ভবত নতুন করে আবার শুরু করতে হবে। চশমার পাওয়ারও মনে হয় বদলেছে। এখন যুক্ত হলো রক্তে অতিরিক্ত ল‌োহার উপস্থিতি। নিজেকে বয়স্ক লাগছে হঠাৎ করে।

লাহোর থুক্কু ফতুল্লা স্টেডিয়ামে পাকিস্তান ও শ্রীলংকার খেলায় পাকিস্তানি পতাকা গালে এঁকে, পতাকা হাতে নিয়ে, জার্সি পরে “পাকিস্তান জিতেগা” বলেই স্লোগান দেয়া দর্শকদের দেখাটা ছিল উপভোগ করার মত একটি ঘটনা। সবাই লাহোর বলছে কেন এর কারণ জানতাম না। ইসলামাবাদ হতে সমস্যা কোথায়? আহসান ভাই জানালেন পাকি-কাপ্তান নাকি বলেছে ঢাকায় খেলতে আসলেই নাকি তার লাহোর লাহোর লাগে। লাগাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তর্কগুলো উপভোগ করছিলাম। ঘুরে ফিরে খেলা ও রাজনীতি না মেশানোর ঝালমুড়ি ও ঘুগনি। এখন পর্যন্ত অনেক ধরনের খেলা আন্তর্জাতিক খেয়াল করেছি। ফুটবল, ক্রিকেট, বাস্কেটবল, টার্ফ হকি, আইস হকি, টেনিস ইত্যাদি। নিজ দেশের সমর্থনের ক্ষেত্রে প্রত্যেকটি দেশই কিছুনা কিছু পাগলামি করে থাকে। ফুটবল ও ক্রিকেটে সেটার চূড়ান্ত অবস্থা দেখা যায়। তবে ফুটবল নিঃসন্দেহে এগিয়ে। নিজের দেশ ভাল খেলুক কি খারাপ খেলুক চিৎকারটা নিজের দেশের জন্যই দেয় সবাই। সারাদিন বইয়ের দিকে তাকিয়ে থাকা নেপালের মেয়ে আসমাও পরের দিনের প্রেজেন্টেশানের তোয়াক্কা না করে ক্রিক ইনফোর লাইভ আপডেট পাতায় তাকিয়ে ছিল ধ্যান মগ্ন হয়ে। তারপরে নেপাল জিতে টি-২০ বিশ্বকাপের কোয়ালিফায়ার খেলার যোগ্যতা অর্জন করার পর তার আনন্দ আর দেখে কে। আমাকে ডেকে তার ফেবু নিউজ ফীড দেখাচ্ছিল। পুরো নেপাল ভাসছে আনন্দের সাগরে। বাঙলাদেশ জিতলে আমিও মোটামুটি একই কাজ করি। আমার বন্ধু তালিকায় প্রায় সবাই একই কাজ করে। কিন্তু নেপালের সাথে আমাদের যে বড় পার্থক্য সেটা হলো ওরা ভুলেও ভারত, পাকিস্তান এমনকি বাঙলাদেশকে সমর্থন করার বিন্দুমাত্র আগ্রহ দেখাবে না। ঠুনকো দল নিয়ে হয়তো কোয়ালিফায়ারের গন্ডীই পার হতে পারবে না। তাতে কি? দেশ খেলছে এরচেয়ে বড় বিষয় আর কি হতে পারে? আর আমরাঃ- “পাকিস্তান জিতেগা!” পাকি প্রেমে পোড়া দেহ, কি দিয়ে জুড়াই বলো সখি?

কিছুটা ভিন্ন প্রসঙ্গঃ সামনে আসছে বিশ্বকাপ ফুটবল। আবারো পতাকায় ছেয়ে যাবে ঢাকা তথা বাঙলাদেশের অনেকটুকু। ফেবু স্ট্যাটাসে পতাকার ব্যবহার ও আইনী বিষয় নিয়ে সকালে ছোট ভাই নাফিজ জানতে চাইছিল। প্রথমে ঠাট্টা করছিলাম পতাকা ও পতাকার রঙের ব্যবহার নিয়ে। এরমাঝে একজন মহানায়ক উপস্থিত হলেন। উনি মহানায়ক নাকি মহাজন সেটা নিশ্চিত না। যেটা সমস্যা সেটা হল‌ো (১) সে অন্যদেশের পতাকা উত্তোলন, টাঙানোর ব্যাপারে কোন সমস্যা খুঁজে পাচ্ছে না, এবং (২) দেশপ্রেম ও ওভার সেন্সিটিভ দুইটার মার্জিন কম। পারসন টু পারসন ভ্যারি করে [উদ্ব্যক্তি সংযুক্ত] শেষে বাধ্য হয়ে ঠাট্টা বাদ দিয়ে পতাকা বিষয়ক আইনটি সবার সামনে তুলে ধরলাম। আইনের নাম Bangladesh Flag Order, 1972 ইংরেজীতে লিখে গুগলে চাপলে এসে যাবে। জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে প্রত্যেকটি দেশেরই আইন আছে। এই ধরনের আইনে মূল বিষয়গুলো বলা থাকে। অর্থাৎ নিজের দেশের পতাকা নিয়ে কি করা যাবে কি করা যাবে না। অন্য দেশের পতাকার সাথে থাকলে কি করা যাবে করা যাবে না ইত্যাদি। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই এই আইনগুলোতে জনগণের ব্যক্তিগত মন মানসিকতা নিয়ে কিছু বলা থাকে না। কারণ আইন প্রণেতারা ধরে নেয় তাদের দেশের জনগণ সমস্যা করলে নিজের দেশের পতাকা নিয়েই করবে। কিন্তু সমস্যাটা হলো, বাঙলাদেশ একটি চমৎকার ছোট ব্যতিক্রম যারা নিজের দেশের পতাকা বাদ দিয়ে অন্য দেশের পতাকা নিয়ে হইহুল্লোড় করে। খেলার সাথে রাজনীতি নাহয় নাই বা জড়ালাম। কিন্তু নিজের দেশের পতাকার সাথে যে আত্মসম্মান ও দেশাত্ববোধ জড়িত সেটা আমাদের মাঝে সাধারণত গড়ে উঠে না। উঠলেও খুব স্বল্প পরিসরে। আর এই কারণেই পতাকার ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তুললে সেখানে সমস্যা দেখতে “না” পাওয়া কিংবা সেটা “ওভারসেন্সিটিভ” মনে করলে আমি খুব একটা অবাকও হইনা কারণ আমরা এই শিক্ষায় শিক্ষিত নই। কিছু মহাজন হয়তো ভাববে আমি বড় বড় কথা বলছি। দেশের মানুষ খেতে পায় না, চারিদিকে মানুষ মরছে, বিদ্যুৎ নেই, দেশ বিক্রি হচ্ছে ইত্যাদি এদিকে আমি আছি পতাকা নিয়ে। মধ্যরাতের টক-শো-জীবিদের মত। দেশাত্ববোধ, আত্মসম্মান এগুলো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে কফির পেয়ালা হাতেই মানায়। অস্বীকার করছি না। উনারা এসব কথা বেঁচে দিয়েছেন বলেই আপনি-আমি এখন কারণে অকারণে স্রোতের বিপরীতে হাঁটি। আগে জানতাম স্রোতের বিপরীতে হাঁটা একটি ঝুঁকিপূর্ণ ও পরিবর্তনমূখী সিদ্ধান্ত। কিন্তু এখন সেটা হয়ে গিয়েছে কেতাদুরস্ত অভ্যাস।

২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা ১০ মিনিট
চেষ্টা করছি ভার্সিটির সব জায়গায় বসে লেখালেখি করার। আজকে টিএ ক্লাশে বসেই লিখা শুরু করলাম। যদিও কোন এক অজ্ঞাত কারণে ইন্টারনেটে সংযোগ পেতে ঝামেলা হচ্ছে। নাম হলো মিশিগান টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটি অর্থাৎ আর কিছু থাকুক না থাকুক এখানে প্রযুক্তিগত বিষয়ে উৎকর্ষতা থাকবে। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস এখানে সবচাইতে বেশী ঝামেলা হয় প্রযুক্তিগত বিষয়েই। কয়েকদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল সার্ভারের উন্নয়ন কাজ চালানোর এক পর্যায়ে–আমার মত প্রযুক্তি প্রতিবন্ধীকে বোঝানোর ভাষায় বলতে গেলে বলতে হয়–ধ্বসে পড়লো। শুনেছি এই ধরনের পরিস্থিতিতে ব্যাক-আপ ব্যবস্থা রাখা হয়। জানতে পারলাম, দুর্ভাগ্যবশত মূল সার্ভার ও ব্যাক-আপ সার্ভার একই সাথে ধ্বসে পড়েছে। গোটা এক সপ্তাহ ধরে ভার্সিটির কোন কম্পিউটারে কাজ করা যায় নি। যাই হোক। আজকে পরিবেশ বিষয়ক পাঠদানের তৃতীয় দিন। ইকোলজি, বায়োডাইভারসিটি এই বিষয় গুলো নিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ের জ্ঞান দেয়ার চেষ্টা করছেন প্রফেসর। শতকরা ৯০ জন প্রকৌশল বিভাগের ছাত্রের এই ক্লাশে এইসব ব্যাপারে আগ্রহ খুবই কম। অনেকেই ঝিমাচ্ছে, দুষ্টামি করছে, চাইছিলাম না কিন্তু বাধ্য হয়ে দুইজনকে থামতে বললাম! ক্ষমা চেয়ে চুপ করে গেল! আজকের দিনটা বেশ ঠান্ডা ও শুকনো।

২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০‍১৪, শুক্রবার, সকাল ৯টা
সকালে আটটার দিকে জোসেফ জাগিয়ে তুললো। বললো, “ভাই, কলে পানি নাই। বাড়িওয়ালাকে ফোন দিব?” আমি হ্যাঁ বলে ঘুমে ডুবে গেলাম। ঘন্টাখানেক গড়াগড়ি ও একআধটা স্বপ্ন দেখার পাশাপাশি হঠাৎ মাথায় এলো, “হালায় কয় কি? পানি নাই মানে?” ভাবতে ভাবতে উঠে দাঁড়িয়ে গেলাম। দৌঁড়ে রান্নাঘরে গিয়ে কল ছেড়ে শুনি সেই পুরোনো শব্দ। প্রায় দেড় বছর হতে চললো এই শব্দ শোনা হয় নি। সর্বশেষ শুনেছি ঢাকায়–পানি চলে গেলে কলের সেই উদ্ভট কাশি দেয়ার মত শব্দ। ঘুম কেটে যাবার পরে এই ঘটনার পরবর্তী ফলাফলগুলো চিন্তা করে বিরক্ত লাগা শুরু করলো। প্রযুক্তি নির্ভর তথা বিদ্যুৎ নির্ভর একটি দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। গতবছর টের পেয়েছিলাম কিভাবে বিদ্যুৎ বিভ্রাট যুক্তরাষ্ট্রের মত দেশের দৈনন্দিন জীবনকে কার্যত বিকল করে ফেলতে পারে। আস্তে আস্তে চিন্তা করতে লাগলাম। পানি নাই মানে পানি নাই্। কল থেকে সরাসরি পানি পান করি, টয়লেটেও ব্যবহার প্রয়োজনের প্রেক্ষিতে। অর্থাৎ এই মূহুর্তে ব্যবহার করার মত পানির কোন সরবরাহ আমার কাছে নাই। পুরো ব্যাপারটা মনে করে হঠাৎ খুব অসহায় লাগলো। গতকালই কোথায় যেন পড়ছিলাম, first world problem নিয়ে। আজকে হাতে কলমে শিক্ষা পেলাম। পানি চলে যাওয়া একটি চিন্তা করার মত বিষয়। সেটা নিয়ে আবার অসহায়ের মত বসেও আছি। অবস্থা বেগতিক দেখলে বিশ্ববিদ্যায়লে চলে যেতে হবে। আপাদত মনে হলো দেশে যাওয়াটা খুব জরুরী।

২ মার্চ, ২০১৪ রবিবার সন্ধ্যা ৬টা
ভেবেছিলাম খেলাধুলা, ক্রিকেট, জাতীয়তাবাদ, দেশাত্ববোধ এইসব নিয়ে নতুন করে কিছু লিখবো না। জঘন্য একটা ব্যাপার। রাতে ঘুমানোর আগে ভেবেছিলাম সকালে উঠে কোনভাবেই ফেইসবুকে যাওয়া যাবে না। হয় চাঁদতারা নাহয় চক্রের উল্লাসে ঢেউ তুলবে। তারপরেও আসক্তির কাছে হার মেনে গেলাম। এবার কিছুটা বমি আসলো। অসুস্থতা নয়। আসলেই কেমন যেন পেট গুলিয়ে উঠলো। পাকিস্তান আজ জিতেছে ভারতের সাথে। ভাল কথা। এই নিয়ে যে উল্লাস, উল্লাসের পক্ষে সাফাই চলছে সেগুলো অবর্ণনীয়। বিশাল বিশাল স্ট্যাটাস দিয়ে সাফাই দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে ইংরেজীতে কিংবা বাঙলায়। সম্ভব হলে উর্দু ও হিন্দিতেও দিত কিনা ভেবে দেখার বিষয়। সাফাই দিচ্ছে তরুণ প্রজন্মেরা। এই আমরাই বা আমাদের কিছু পরের যারা তারা। কেউ ইনিয়ে বিনিয়ে, কেউ বা স্পষ্ট। লিংকন্স ইনের বড় বড় ব্যারিস্টাররাও লিখছেন কেতাদুরস্ত ইংরেজীতে। জানাচ্ছেন আমাদের দেশাত্ববোধ ঠুনকো। এত স্পর্শকাতরতা দুর্বলতার বহিঃপ্রকাশ। খুব মন খারাপ হলে আজগুবি চিন্তা করি। আজকেও করা শুরু করলাম। নিজেকে চাক নরিস ভাবা শুরু করলাম। চিন্তা করলাম সেই ব্যারিস্টার সাহেবের মুখের সামনে বন্দুক ধরে রেখে বলছি, শেষ বারের মত বল, “পাকিস্তান জিন্দাবাদ” বা “জয় হো ইন্ডিয়া” তারপরে গুলি করে ছাতু করে দিতাম মাথা। আচ্ছা বেশী বলে ফেলছি। আসলে মনটা খুব খারাপ। খেলায় অন্য দলকে সমর্থনের নামে আমরা যা করছি সেটা ভুল করছি এটা কেউ বুঝে উঠতে চাইছে না। কারণ দুটোঃ
ক) আমরা বিষয়টা দেখতে দেখতে অভ্যস্ত। আর মানুষের বহুল প্রচলিত অভ্যাস সহজে পরিবর্তন হয় না। মনোভাব হয়তো সাময়িক টলোমলো হতে পারে। বাঙলাদেশ ক্রিকেটের যখন কোন খবর ছিলো না তখন এই ভারত-পাকিস্তানের খেলা দেখেই বিনোদন নিত মানুষ। তখন কিন্তু শ্রীলংকাও ছিল না। তাই এখন খেলার মাঠে শ্রীলংকার পতাকার রঙ মুখে মেখে, জার্সি পরে কাউকে দেখবেন না। কারণ অভ্যাসে নাই।

খ) দ্বিতীয় কারণটির জন্য প্রথমটি বেশ খানিকটা দায়ী। আমাদের নিজেদের ক্রিকেট দলটি বর্তমানে অনেকটা মেটামরফসিসের মাঝামাঝি এসে আটকে গিয়েছে। এই পর্যায় থেকে সামনের দিকে আগানোর জন্য অনেক কিছু দরকার যেগুলো ঘাটতি। বিবেচক ক্যাপ্টেন, অনুশীলন, বোর্ডের উদ্ভট নির্বাচন ও নজরদারী বন্ধ করা ইত্যাদি অনেক কিছুই বোদ্ধারা তুলে ধরবেন। আমার দৃষ্টিতে দর্শক ও সমর্থকের পর্যায় থেকে যেটা দরকার সেটা হলো শক্ত সমর্থন। মাটি কামড়ে পড়ে থাকা সমর্থন। খারাপ খেলুক ভাল খেলুক বাঙলাদেশ। কিন্তু ঐযে আমাদের মন পড়ে আছে চাঁদতারা ও চক্রের দিকে। বাঙলাদেশ ক্রিকেট দলও আমাদের খুব কষ্ট দিয়ে তারপরে হতাশ করে আর আমরা বারে বারে ফিরে যাই আমাদের পূর্বের ভালোবাসার কাছে। লিওন ফেস্টিঙগারের কগনিটিভ ডেজোনেন্স থিওরী এখানে ব্যর্থ। ভদ্রলোক বেঁচে থাকলে “explain me this shit” লিখে চিঠি পাঠাতাম। দারিদ্রের দুষ্টচক্রের মত আমরা ক্রিকেটের দুষ্ট চক্রে পড়েছি। ব্যাপারটা অনেকটা এরকম। একটা ক্রিকেট দলের ভাল খেলার জন্য অন্তত বাঙলাদেশের মত আবেগী দেশে শক্ত সমর্থন দরকার। সেটা আবেগী সমর্থন হলেও সেটা হতে হবে নিয়মিত। ইনায় বিনায় হোক আর গালে প্রতিবেশী দুই দেশের পতাকার রঙ মেখে, জার্সি পরে হোক—-এই ধরনের সমর্থনের ইতি টানতে হবে। সেটা কিভাবে হবে সেটা জানি না। এককালের ভারত সমর্থন করা আমার পক্ষে সম্ভব হলে অনেকের পক্ষেই সেটা সম্ভব বলে বিশ্বাস করি। ফেইসবুকের এই যুগে আমাদের এই কর্মকান্ড আমাদের খেলোয়াররা দেখছে। তারা নিজেরাও হয়তো দুই দেশের কোনটার সমর্থক। তারপরেও আমি নিশ্চিত প্রতিবেশী দেশের খেলায় গ্যালারীর উত্তাল দর্শক দেখে তাদের কিছুটা হলেও খারাপ লাগে। না চাইলেও লাগে।

আমি আসলে চেষ্টা করছি একটা ঠুনকো ব্যাখ্যা দাঁড়া করাতে কিন্তু পারছি না। এত যত্ন নিয়ে নিজের আকুন্ঠ সমর্থন ও তার সাফাইয়ের নমুনা দেখে নিজেকে বিখ্যাত টিভি এপিসোড ওয়াকিং ডেড এর গুটিকয়েক বেঁচে থাকা মানুষের একজন মনে হচ্ছে। একটা খেলায় নিজের দেশ একেবারে খারাপ খেলেনা সেই খেলায় গালে অন্য দেশের পতাকার রঙ মেখে, জার্সি পরে, পতাকা নিয়ে সমর্থন শুধু বাঙলাদেশেই দেয় আর কোন দেশ দেয় না। আমি দেখিনি। কেউ দেখেনি সেটাও হলফ করে বলে দিতে পারি। এক দুইজন থাকলেও এভাবে গোটা স্টেডিয়াম নয়। এখানে খেলাধুলার সমাদর, কিংবা স্পোর্টসম্যানশীপের কিছু নেই। এটি একটি অসুস্থতা এবং এটি বোঝার মত মানুষের সংখ্যা দিন দিন কমে আসছে।

অনেক দুঃখ প্রকাশ করে ফেললাম। এখানেও একগাঁদা মৃত মানুষের মাঝে কথা বলছি কিনা কে জানে। যাই হোক গতকাল ছিল আফ্রিকান নাইট। আফ্রিকা মহাদেশের বিভিন্ন দেশের সঙ্গীত, নৃত্য ও সমসাময়িক পোষাক নিয়ে ফ্যাশন শো ছিল উপভোগ করার মত। সাথে খাবার ছিল অসাধারণ। এখানে নতুন করে ছবি আপলোড দেয়ার চেষ্টা আর করলাম না। আলসেমী লাগছে। তাই লিংক দিয়ে দেই চাইলে দেখে নিতে পারেন।

২,৭০৭ বার দেখা হয়েছে

৩১ টি মন্তব্য : “পুরোনো পাতায়ঃ বরফের দেশের গল্প ৯”

  1. টিটো মোস্তাফিজ
    এখানে খেলাধুলার সমাদর, কিংবা স্পোর্টসম্যানশীপের কিছু নেই। এটি একটি অসুস্থতা এবং এটি বোঝার মত মানুষের সংখ্যা দিন দিন কমে আসছে।

    উদ্ধৃত করলাম এইটুকু কিন্তু পুরোটাই একমত :boss: :boss: :boss:


    পুরাদস্তুর বাঙ্গাল

    জবাব দিন
  2. নাফিস (২০০৪-১০)

    সৈয়দ মুজতবা আলী র যোগ্য উত্তরসুরি। 🙂 (একটুকুও তেল মারছি না )
    এই সিরিজ চালিয়ে যান আর বই পাবলিশ করার কথা সিরিয়াসলি বিবেচনা করেন। সুখপাঠ্য জিনিস !

    জবাব দিন
  3. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)
    অবাক হইনি কারণ পশুত্ব দেখানোর জন্য মানুষ হলেই যথেষ্ট, ক্যাডেট হওয়াটা উপরি পাওনা।

    B-)


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  4. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)
    লাহোর থুক্কু ফতুল্লা স্টেডিয়ামে পাকিস্তান ও শ্রীলংকার খেলায় পাকিস্তানি পতাকা গালে এঁকে, পতাকা হাতে নিয়ে, জার্সি পরে “পাকিস্তান জিতেগা” বলেই স্লোগান দেয়া দর্শকদের দেখাটা ছিল উপভোগ করার মত একটি ঘটনা।

    :goragori:


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  5. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    লাহোর এই কারণে বলা যে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়াম ওদের খুব বিখ্যাআত স্টেডিয়াম।


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  6. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    THE BANGLADESH NATIONAL ANTHEM, FLAG AND EMBLEM ORDER, 1972

    (PRESIDENT'S ORDER NO. 130 OF 1972).
    [31st October, 1972]

    WHEREAS it is expedient to make provision relating to the National Anthem, National Flag and National Emblem and for matters ancillary thereto;

    NOW, THEREFORE, in pursuance of the Proclamation of Independence of Bangladesh, read with the provisional Constitution of Bangladesh Order, 1972, and in exercise of all powers enabling him in that behalf, the President is pleased to make the following Order:-

    1

    1. (1) This Order may be called the Bangladesh National Anthem, Flag and Emblem Order, 1972.

    (2) It extends to the whole of Bangladesh.

    (3) It shall come into force at once.

    2
    2. The National Anthem shall be the first ten lines of Kabi Guru Rabindranath Tagore's “Amar Sonar Bangla”as set out in the First Schedule.

    3
    3. The National Flag shall consist of a circle, coloured red throughout its area, resting on a green background. The size and other features of the National Flag shall be in accordance with the specifications set out in the Second Schedule.

    4
    4. The National Emblem shall be the national flower Shapla (nymphaea nouchali) resting on water, having on each side an ear of paddy and being surmounted by three connected leaves of jute with two stars on each side of the leaves, as specified in the Third Schedule.

    4A
    1[ 4A. Whoever Contravenes any provision of this Order or of any rules
    made thereunder shall be punishable with imprisonment for a term
    which may extend to one year or with fine which may extend to
    Taka five thousand, or with both.]

    5
    2[ 5. The Government may, by notification in the Official Gazette, make
    rules for carrying out the purposes of this Order.]

    6
    6. Subject to the provisions of this Order, the People's Republic of Bangladesh Flag Rules, 1972, and the National Emblem Rules, 1972, shall, so far as applicable and until amended and repealed, continue to have effect.


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  7. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)
    চিন্তা করলাম সেই ব্যারিস্টার সাহেবের মুখের সামনে বন্দুক ধরে রেখে বলছি, শেষ বারের মত বল, “পাকিস্তান জিন্দাবাদ” বা “জয় হো ইন্ডিয়া” তারপরে গুলি করে ছাতু করে দিতাম মাথা।

    :gulli2:


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  8. নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

    পিলখানা দিবসের সঙ্গে আমার একটা মিশ্র সম্পর্ক আছে। এ'দিন পার হবার পর হতভম্ব অবস্থায় বিস্তারিত জানবার জন্য অন্তর্জাল যখন তোলপাড় করে ফেলছি, তখন ক্যাডেট কলেজ ব্লগ নামে একটা নতুন ব্যাপারের সঙ্গে পরিচিত হলাম -- উচ্ছ্বসিত বা অবাক হবার মতন মনের অবস্থা ছিলোনা তখন। গোগ্রাসে মন্তব্যগুলো পড়ছিলাম।সামিয়ার খবর পেয়ে মনটা এত মুষড়ে পড়েছিলো! আত্মীয়তাবোধ করার জন্য কাউকে আসলে জানতে হয়না। রাব্বী (৯২-৯৮)-র সঙ্গে সীমানার এপার থেকে কত কথাই না বললাম অথচ অনেক পরে জানছি -- ওর বড় ভাইও! ওর লেখাটা পরে যখন পড়ছি, তখনো রুদ্ধশ্বাস আমিও কি ওর বয়ানের পাশাপাশি প্রতীক্ষা করছিলাম অন্যরকম কিছু শুনবার?

    তারপর তো সিসিবিতেই লেখালেখিগুলোকে পোস্ট করা, মাতামাতি, পিকনিকে ফোনেই অংশগ্রহণ করা -- তোমাকে, নাফিসকে -- আরো অনেকের মাঝে শুধু কণ্ঠস্বর দিয়ে চেনা। এই জন্যে -- ওই অচেনা ভাগ্যাহত মানুষগুলোর প্রতি আমার ভীষণ অপরাধবোধ কাজ করে -- আমার সৃষ্টিশীলতা, আনন্দ আর অবসরের অন্যতম অনুষঙ্গ সিসিবির সঙ্গে আমার পরিচয় ঘটেছিলো কল্পনাতীত এক দুঃখের অধ্যায়ের ভেতর দিয়ে। স্বার্থপর নিস্পৃহতা আমার ভেতরেও থাকে এসময়, থাকে পলায়নপরতা।

    জবাব দিন
    • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

      সময়টা ঠিক মত খেয়াল করি নাই। ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারী। মানসিকভাবে স্থিতিশীল ছিলাম না। সবকিছুতে ধাক্কা খাচ্ছিলাম। তাই হয়তো স্বার্থপরের মত আচরণ করেছি। সিসিবির সাথে পরিচয় তারও পাঁচ মাস পরে জুলাইতে। খুব লজ্জাও লাগছে স্বীকার করতে যে চেনা পরিচিত ও ক্যাডেট কলেজের যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের পুরো তালিকা জানতে পেরেছি ২০১৪ তে এসে। সামিয়ার বাবা, রাব্বী ভাইয়ের বড় ভাইও যে এই তালিকায় আছেন জানতাম না। যতদিনে নিজের মনের মানসিক স্থিতিশীলতা এসেছে ততদিনে এই ঘটনা অন্তত গণমাধ্যমে শান্ত হয়ে এসেছে। "যার দুঃখ সে বোঝে" - এটি একটি ভয়াবহ সত্য কথা।


      \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
      অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

      জবাব দিন
  9. টিটো মোস্তাফিজ

    পিলখানা দিবসের সঙ্গে আমারো একটা মিশ্র সম্পর্ক আছে। বিষয়টা বুঝে উঠতে অনেক খানি সময় লাগলো। এ বিষয়ে এই প্রথম লিখলাম পিলখানা শিরোনামে। লেখা ব্যাপারটা মনে হয় হৃদয় থেকে আসে। আর হৃদয় সব সময় যুক্তি মেনে চলেনা।


    পুরাদস্তুর বাঙ্গাল

    জবাব দিন
    • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

      ভাই বিষয়টা আমাকে খুব পীড়া দেয়। আমি চাই দুঃখ অনুভব করতে কিন্তু পারি না। মিথ্যা অনুভূতি দেখানোর অভ্যাস নেই তাই প্রতিবছর একদম চুপ মেরে যাই! 🙁


      \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
      অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

      জবাব দিন
  10. তাওসীফ হামীম (০২-০৬)

    মোমেন্টাম একটা বড় ব্যপার ভাই, শ্রীলঙ্কার সাথে প্রথম ম্যাচে জেতা উচিত ছিল, তাইলে পরের ম্যাচের ফলাফলগুলো অন্য রকম হইতে পারতো, এশিয়া কাপ অন্য রকম হতে পারত। 🙁


    চাঁদ ও আকাশের মতো আমরাও মিশে গিয়েছিলাম সবুজ গহীন অরণ্যে।

    জবাব দিন
    • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

      খেলায় সেই মোমেন্টাম আনার জন্য অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি কিছুটা হলেও দর্শকদের একনিষ্ঠ সমর্থন লাগে। আবেগ দিয়ে খেলা দেখার ভাল মন্দ দুটোই আছে। মন্দটা হলো এটা যে খুব তাড়াতাড়ি আমরা হাল ছেড়ে দেই।


      \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
      অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

      জবাব দিন
  11. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    পিলখানাকে ঐ সময় কাছ থেকে দেখার দূর্ভাগ্য হয়েছে, এরপর থেকে এ বিষয়ে পুরো নাম্ব, কোন বক্তব্য নেই।

    মেয়েদেরই মানুষ হিসেবে মনে করতে পারলাম না, হিজড়া তো বহুত দূর!

    পাকি প্রেমিদের বিরুদ্ধে কথা বলা শুরু করেছিলাম সেই কলেজ থেকে, ক্লান্ত হয়ে, হতাশ মাঝে বাদ দিয়ে দিয়েছিলাম কিন্তু এবার এশিয়া কাপে আবারো সব লাইভ দেখে মাথা ঠিক রাখতে পারিনি, আবার শুরু করেছি।

    দিনলিপি চলতে থাকুক :thumbup:


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  12. তাহমিনা শবনম (৮৪-৯০)

    চাঁদতারা/চক্র প্রেম অসহ্য !!!!!

    পিলখানা নিয়ে কথা বললেই কি আর না বললেই কি!
    ঘটনার উপর পর্দার পর পর্দা ফেলা হয়েছে,হচ্ছে...

    তোমার লেখা গুলো থেকে যাচ্ছে। এই সময়কে প্রতিনিধিত্ব করবে।ভাল লাগছে।


    আমি চোখ মেললুম আকাশে
    জ্বলে উঠলো আলো পূবে পশ্চিমে

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।