পুরোনো পাতায়ঃ বরফের দেশের গল্প ৬

রাত ৯টা ৪০মিনিট, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০১৪ – শ্যামবর্ণ আমার। আমি আর্য নই।
বাঙলাদেশে সাম্প্রতিক গণহত্যায় ভারতীয় সেনাবাহিনী ও বিএসএফ এর সৈন্য ব্যবহার করেছে। সাতক্ষীরায় ধারনকৃত ভিডিওতে দেখাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী যৌথবাহিনী জামাতের মিছিল ছত্রভঙ্গ করে দিতে শটগানের গুলি ও টিয়ারগ্যাস শেল ছুড়ছে। এরপরে দেখাচ্ছে একটি ইমেইল ও দুইপাতা ফ্যাক্সবার্তার ছবি। নাহ বিশ্লেষণে যাবো না। সত্য মিথ্যা নিয়ে তর্ক আপাদত বন্ধ। তবে বিনোদন ছিলো অন্য দুটি ব্যাপার। এই ভিডিওগুলো বানালে ফেবুতে মখার মত ঝাঁকাঝাঁকি শুরু হয়ে যায়। কি যে দুঃখ আর কি যে বেদনা এই ভিডিওগুলোতে। দেশকে কেজি দরে বিক্রি হতে দেখলে কার না খারাপ লাগে বলুন? দ্বিতীয় বিনোদন হলো সন্দেহভাজন ভারতীয় সৈন্য। পোস্ট করা ছবিতে এক কি দুইজন হতভাগ্য থাকবেই যার ঝরঝরে স্বাস্থ্য, শ্যামলা কিংবা কালোমতন চেহারা ও চিকন মোচ আছে। হয়ে গেল তৈরী চটপট ভারতীয় সৈন্য। বিজিবির অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের ফটো গ্যালারীতে গিয়ে দেখি ভারতীয় সৈন্যে সয়লাব। বিজিবিতে এত গুপ্তচর যে ঢুকলো এটা কেউ ধরতে পারছে না তা কিভাবে সম্ভব? যাই হোক সাঈদী সাহেবকে বাঁশবাগানের মাথার উপর উঠা চাঁদে দেখার পর কেটে গিয়েছে অনেকদিন। এরমাঝে হেফাজতের লক্ষ লক্ষ শহীদের রক্তে মতিঝিলে হয়েছিল স্মরণকালের সবচাইতে ভয়াবহ রক্ত বন্যা। এরপরে আবারো কেটে গেল অনেকগুলো দিন। এবার ভারতের দেশ দখল নেবার পালা। শুনেছি দেশের নাম হবে পশ্চিমকনিষ্ঠবঙ্গ। স্বভাবতই ছোটদাকে পরিবারে বরণ করতে গিয়ে বড়দার নামটাও পরিবর্তিত হয়ে হবে পশ্চিমজৈষ্ঠ্যবঙ্গ।

রাত ২টা ১৯মিনিট, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০১৪
উপলব্ধি ক) বিদেশে আসার পর লবণ খাবার পরিমান অনেকটা কমে গিয়েছে। রুমমেট জোসেফের (ফকক ২০০০ – ০৬) মা কাবাব বানিয়ে দিয়েছেন সেটা খেয়ে মনে হলো লবণ বেশী। আসলে কাহিনী সেটা নয়। আমি লবণ কম খাচ্ছি।
উপলব্ধি খ) দেশের বেনসন লাইটসের চাইতে এখানকার মার্লবরো লাইটসের তামাক কড়া। তবে গন্ধের দিক দিয়ে দেশী সিগারেটের ধোয়ার গন্ধ অনেক কটু।
উপলব্ধি গ) লং ডিস্ট্যান্স প্রেম ভালোবাসা নিয়ে ভয়টা বাঙালীরা ফ্যাশনেবল পর্যায়ের বেশী করে। অথচ একাধিক লেখায় পেলাম এই ধরণের প্রেম বরং মজবুত বেশী হয় ও ভাঙে কম। চোরের মন পুলিশ পুলিশ হওয়া বাদ দিয়ে যেকোন সম্পর্কে যত্নশীল হলে সম্পর্ক ভাঙার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়। (তর্ক করতে চাইলে মন্তব্যে ঝাঁপিয়ে পড়ুন)

জানুয়ারী ২০, ২০১৪, সোমবার, দুপুর ১টা ৪৭মিনিট
শূন্যের নিচে ১৭-১৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস যেন এখন কোন তাপমাত্রাই নয়। অফিসে এলাম বুটজুতো, শার্ট, জীন্স ও সবশেষে একটা ভারী জ্যাকেট চড়িয়ে। অবশ্য দেখেছি গোসল করার পরে শীত কম লাগে। কল চাপলেই যেহেতু গরম পানি নিয়মিত গোসলটা বাদ যায় না। আজকে খেয়াল করলাম আমার হাঁটার গতি বেশ দ্রুত হয়ে গিয়েছে। এই ঠান্ডায় বরফের স্তুপের উপর উপর দিয়ে ১.৬ কিলোমিটার হাঁটতে আমার সময় নিচ্ছে ১২-১৩ মিনিট। অফিসে লিবিয়ার ক্লাশমেট হামজা ছাড়া কেউ নাই। মুঠোফোনে ওর ফোন আসলো। আরবীর সুরেলা টান শুনে বুঝলাম লিবিয়া কিংবা পরিবার থেকে কেউ ফোন দেয় নি। লিবিয়ানদের নিজস্ব ভাষার নাম আমাজিগ (Amazieg) সেটা আরবী ও স্থানীয় ভাষার এক অদ্ভূত মিশেল। কথা শেষে আমাকে জিজ্ঞাসা করলো কিছু বুঝলাম কিনা? শুরুতে সালাম, মারহাবা, ইনশাল্লাহ বাদে আর কিছু ঠাউর করতে পারি নাই বলতেই হেসে দিয়ে বললো আমি অনেক কষ্টে শুদ্ধ আরবি বলার চেষ্টা করছিলাম যেটা আমার জন্য কষ্টদায়ক। ওর সাথে সবসময় এ ধরণের মজার আলাপ হয়। সে জানালো আরবের উত্তরে সুরিয়া (সিরিয়া নাকি ভুল উচ্চারণ) সীমান্তবর্তী আরবেরা অপেক্ষাকৃত শুদ্ধ ও কেতাবী আরবী বলে। এদিকে জেদ্দার দিকেও প্রায় স্বাভাবিক। কিন্তু দক্ষিণে ইয়েমেন সীমান্তের কাছের আরবেরা বলে সবচাইতে কুৎসিত আরবী। শব্দের প্রথম দিকে জোর দিয়ে বাকি শব্দগুলো পিছলে বের হয়ে যায়। এই পিছলানো আরবী আরো বলে কাতার, জর্ডান ও আমিরাতের জনগণ। তবে ভাষার ব্যাপারে আরবেরা নাকি খুব ঠোঁটকাটা। অন্য কেউ আরবীতে কথা বলতে থাকলে না বুঝলে, মুখের উপর ভুল ধরবে অথবা বলবে সঠিক ভাবে বলতে। এখানকার সৌদি ছাত্রদের সাথে কথা বলতে গেলে যেটা হামজার প্রায়শই শুনতে হয়। আন্তর্জাতিক ছাত্রছাত্রী নিয়ে থাকলে সবচেয়ে বেশী যে বিষয়টি উপভোগ করা যায় সেটা হলো আমরা মুখোমুখি আড্ডায় কিংবা ফেবুতে কমেন্টে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাষার শব্দ ব্যবহার করি। যেমনঃ ‘ওয়াল্লা’ আরবী এই শব্দটি হাতের ইশারার উপর ভিত্তি করে অর্থ ‘চলো যাই’ কিংবা ‘দূর হউ’ দুটোই হতে পারে। আবার ফেবুতে দেখা যায় কোন কিছু নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করছি। আমরা লিখি ‘ncncncnc such a baby।’ ncnc সম্ভবত তুর্কি ভাষা থেকে নেয়া এবং ইংরেজী সমসাময়িক হলো na/no। মাঝেমাঝেই “বোকা” বলা হয় অনেককে। তারাও পাল্টা জবাব দেয় I am not বোকা, you are!

২৩ জানুয়ারি ২০১৪, বৃহস্পতিবার, রাত দুইটা ছয় মিনিট
এই শীতের প্রথম তুষার ঝড়ের (ব্লিজার্ড স্টর্ম) সতর্কবার্তা পেলাম আজকে। মোটামুটি মাঝারি ধরনের তুষারঝড় এটি। মাকে একবার বলেছিলাম আমেরিকায় হ্যারিকেন, টর্নেডো হলে আমার জন্য জন্য চিন্তা করো না কিন্তু তুষারঝড়ের কোন খবর পেলে আমার জন্য চিন্তা কিছুটা হলেও করতে পারো। গত বছর হওয়া দুটো ঝড়ের একটায় অফিসে আটকা পড়েছিলাম। বিস্কুট বাদাম খেয়ে অফিসের চেয়ার একত্র করে বিছানা বানিয়ে ঘুমিয়েছিলাম। আমার এই কাহিনী এখন ডিপার্টমেন্টে বিখ্যাত। আর দ্বিতীয়বার বাসায় যাবার চেষ্টা করে বেঁচে পৌছানোর পর একটি কথাই মনে হয়েছেঃ ৮০-৯০ কিমি/ঘঃ বেগে -২৫/৩০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রার বাতাস ও তুষারপাত ঠেলে দেড় কিলোমিটার দূরের বাসায় যাবার চেষ্টা করার চেয়ে বেশী বোকামি তালিকায় খুব একটা নেই। বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারতো সেদিন কিংবা হতে পারত মৃত্যু। যাই হোক সব হঠাৎ মনে পড়লো। আগামীকাল ক্লাশ আছে। মিশিগান টেক কর্তৃপক্ষ বরাবরের মত ক্লাশ বাতিল করার চিন্তাও করছে না। সাবধানে বের হয়ে ফেরত আসতে হবে। প্রয়োজনে থেকে যেতে হবে অফিসে কিন্তু এবার আর কোন বোকামি নয়।

দুপুর ২টা ৪২ মিনিট।
তুষারঝড় ছ্যাঁকা দিল। সকালে ঘুম ভাঙলো ব্লাইন্ড তুলে দেয়া জানালা দিয়ে বাধ ভাঙা সূর্যের আলোয়। বাসের জন্য হেঁটে স্ট্যান্ডে আসছিলাম। দুই মার্কিনি তরুণী বলতে বলতে আসছে “special dinners are really special” – গ্লোবাল স্কেলে একটি চরম সত্য কথা! আপাদত দাঁড়িয়ে আছি তিন ভারতীয়র সামনে। দুইজন তামিল একজন শুধুই ভারতীয়। এভাবে বলাটা ঠিক হলো কিনা জানি না কিন্তু ব্যাপারটা স্পষ্ট ঠেকলো। কারণ প্রথমে তারা তিনজন কথা বললো হিন্দিতে। এরপরে দুইজন যেই ভাষায় কথা বলা শুরু করলো সেটা বুঝতে বেশী বেগ পেতে হলো না। ধন্যবাদ নিছক বিনোদনের জন্য হলেও দেখা বেশ কয়েকটি তামিল চলচিত্র। অন্তত পার্থক্য ধরতে পারি। ব্যাপারটা আরো স্পষ্ট হলো যখন দেখলাম তৃতীয়জন মুখ ঘুরিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে। এক দেশ বিভিন্ন ভাষা – অদ্ভূত সুন্দর একটি ব্যাপার।

বিকাল ৪টা ১২ মিনিট
ফেবুতে ঘুরছিলাম কিছুক্ষণ ধরে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সহপাঠীর প্রোফাইলে ছোট শিশুর ছবি। ইদানিং পিতা পিতা ভাব হয় তাই লোভ সামলাতে না পেরে এ্যালবামে গেলাম। ট্যাগ করা এ্যালবাম তাই ছবিগুলো দেখতে পাচ্ছি। ছবি দেখার আগে এলবামের নামটা চোখে পড়ায় বের হয়ে এলাম। এ্যালবামের নাম, “my baby doll’s 1st time eating rice ceremony” এই ব্যাপারটা যে উৎসবের মত পালন করা যেতে পারে সেটা মাথায় আসেনি। প্রয়াত পিতার হাতুড়ি কাস্তের ছায়া আমার মাঝে প্রবেশ করে নাই কিন্তু তারপরেও কিছু অপচয় বড় চোখে লাগে।

জানুয়ারী ২৫, ২০১৪, রাত ১২টা ৩৭ মিনিট
সত্য কথা গুলো এড়িয়ে যাওয়া সবচাইতে সহজ। তারপরে লিখাটা বেশ সহজ। সবশেষে বলাটা আর সহজের কোটায় থাকে না। বলাটা বেশ কঠিন। গত দুইদিন ধরে ব্যান্ড অফ ব্রাদার্স দেখা শেষ করলাম। সত্যটা হলো এই প্রথম দেখলাম। এই তালিকায় এখনো ফাইল চাপা পড়ে আছে প্রিজন ব্রেক, ব্রেকিং ব্যাড, গেম অফ থ্রোন্স ইত্যাদি। প্রচুর বিখ্যাত চলচিত্র, উপন্যাস পড়ে দেখা হয় নি। যেগুলো নিয়ে আলোচনা শুরু হলে হু-হা-আচ্ছা-বুঝলাম পদ্ধতি অবলম্বন করে আড্ডা চালিয়ে যেতে হয়। লাইনে এভাবে পিছিয়ে থাকায় মাঝেমাঝে দ্য আনকুল কিড হয়েও বসে থাকতে হয়। কারণ ইদানিং ছবি-মন্তব্য গুলোতেও এই বিখ্যাত সিরিজ বা চলচিত্রগুলো থেকে উদাহরণ দেয়া হয়। ক্রিকেট নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করতে কি চাই? নাহ চাই না। অনেকেকেই চুপ থাকতে দেখছি যাদের চুপ থাকা মানায় না। কারণ তারা এই ধরনের গণদাবীর বিষয়গুলোতে চুপ ছিলেন না। জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছেন। ব্যাপারটা আসলে অনেকটা টিউব থেকে বের করা টুথপেস্টের মত। যেহেতু শুরু থেকেই চুপ ছিলেন না আমরা এখন প্রায় সব গণবিষয়ে আপনার/আপনাদের সুচিন্তিত মন্তব্য আশা করবো। এখন যদি বলেন নাহ, সব বিষয় মন্তব্য করা আমার সাজে না তাহলে হবে না। আমার ধর্ম এখনো ক্রিকেট। দয়াকরে আমাকে নিধর্মী বানাবেন না!

ইদানিং প্রচুর কমেডি সেন্ট্রালের ডেইলি শো উইথ জন স্টুয়ার্ট দেখছি। জন স্টুয়ার্টকে বাঙলা শিখিয়ে বাঙলাদেশে শো চালাতে দিলে সে আনন্দের আতিশয্যে হার্টফেইল করবে। চারিদিকে এত বিনোদন, কোনটা ছেড়ে কোনটা বলি। আর যদি কোন কারণে বেঁচেও যায় তাহলে সপ্তাহখানেকের মাথায় গলে যাওয়া লাশ পাওয়া যাবে তালাবদ্ধ এপার্টমেন্টে। অনেক মানুষকে দেখেছি মতিকন্ঠ আক্ষরিক অর্থে নেয়। তাদের ডেইলি শো হজম হবার সম্ভাবনা শূন্যের কোঠায়। তবে দেশ আপাদত শান্ত। ভাল কিংবা মন্দ যে ভাবেই হোক দূর থেকে শান্ত ঠেকছে। আকাশে বাতাসে ককটেল-পেট্রোলবোমা উড়ছে না। তবে সব কথার আসল কথা হলো প্রেমিকার কাছে চিঠি, শুভেচ্ছা বার্তা আবারো পাঠানো যাবে। চ্যাট, স্কাইপ, আন্তর্জাতিক কলের যুগে নিখাদ আবেগটুকু হাতে লিখা চিঠিগুলোতেই পাই। সাম্প্রতিক ধ্বংসযজ্ঞ ও জ্বালাওপোড়াও এর মাঝে লিখে গিয়েছি। জমে যাওয়া চিঠিগুলো সোমবারে কিছু ছেড়ে দিতে চাই। এক মাস পুরোনো চিঠি পড়তে কিছুটা উদ্ভট লাগলেও সেটাই এখন একমুঠো ভালোলাগা। দেরীতে হলেও আমার চিঠি গুলো পৌঁছে যাচ্ছে কিন্তু ওর তিনটি এখন পর্যন্ত আমার হাতে এসে পৌঁছায়নি। এরমাঝে একটি নাকি পোস্টকোড ভুল করেছিল। আমেরিকায় পোস্টকোড ভুল করলে চিঠি কাটা পড়া ঘুড়ির মত গোত্তা খেতে খেতে প্রেরকের কাছে ফিরে যায়। এখানে প্রেরক আন্তর্জাতিক বলে হয়তো সেই সুযোগটাও হয়নি। দিনে তিন-চারবার দরজা খুলে সিড়ি ঘরে উঁকি দেয়াটা এতদিনে অভ্যাসে রূপ নিয়েছে।

১,৩০৬ বার দেখা হয়েছে

১৪ টি মন্তব্য : “পুরোনো পাতায়ঃ বরফের দেশের গল্প ৬”

  1. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    নামকরন পছন্দ হইছে, বলা যায় না পরের কোন খবরে জনপ্রিয় ব্লগ সিসিবির জনপ্রিয় ব্লগার এম সরকার বলেছেন বলে রেফারেন্স হয়ে যেতে পারে। 😉

    লবন আমি নিজে অনেক কম খাই, আমার যেকোন রান্নায় সবচেয়ে কমন কমেন্ট লবন কম হইছে। বেনসনের গন্ধ আসলেই কটু। মালবোরো লাইটস দারুন, আমার প্রথম ব্রান্ড। (লাইটস বলা কিন্তু এখন আইনত দন্ডনীয়)। নিজের সেমি লং ডিসটেন্স রিলেশন এর অভিজ্ঞতায় তোমার সাথে একমত।

    প্রথম ভাত খাওয়ার মত আরো অনেক সামাজিকতাই হিন্দি সিরিয়ালের সরাসরি অবদান। বাঙ্গালীর ১২ মাসে ১৩ পার্বনে আর পোষাচ্ছে না, ৩৩ পার্বন লাগবে। একদল আনছে হলুদের নাচ, বেবি শাওয়ার আরেক দল করছে হ্যালুয়িন।

    জন স্টুয়ার্ট, জিমি মাহের, কোলবার্ট এদের শো এর নিয়মিত দর্শক হয়ে গিয়েছি। প্রথম থেকেই একটাই আফসোস, আমাদের দেশে এরকম কেউ কবে শুরু করবে? (অবশ্যই প্রাণের মায়া ত্যাগ করে শুরু করতে হবে)

    লেখা দারুন :hatsoff:


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  2. শাহীন (৯৬-০২)

    ১। একই দেশের ভিন্ন ভাষায় অবাক হবার কিছু নাই। এমনটা আমাদেরও হতে পারে। সাথে দুইজন চট্টগ্রামবাসি থাকলেই চলতো।
    ২। আমিও বেশ সিরিয়াল দেখা শুরু করছি। চমৎকার জিনিস, একবার দেখা শুরু করলে শেষ না হওয়া পর্যন্ত শান্তি লাগে না। তবে এ ব্যাপারে আমার একটা সাজেশন আছে। যেগুলা শেষ হয়ে গেছে শুধু সেগুলাই দেখা উচিত। চলমান কিছু দেখলে ধৈর্যে কুলায় না অপেক্ষার।
    ৩। জর্ডানের নাম পড়ে, একটা কথা না বললেই না। তাদের ভাষা নিয়ে না, তাদের চারিত্রিক গুনাবলি নিয়ে। যত পার দুরে থাক।
    ৪। আর লং ডিসটেন্স রিলেশনশিপ নিয়ে অনেক কিছু বলার আছে, যা লিখে পারব না। শুধু এটাই বলব, পরিবার নিয়ে যদি একসাথে বসবাস না করা যায়, তাহলে তাকে কোন সম্পর্কে ফেলা যায় না। বিয়ের আগে চলতে পারে কিন্তু বিয়ের পরে না।


    The Bond Cadet

    জবাব দিন
    • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

      জর্ডানের কারো সাথে দেখা হয় নাই। আপাতত সম্ভাবনাও নাই। লং ডিস্ট্যান্সের ব্যাপারটা আমার আরো পরিষ্কার বলা উচিৎ ছিল। আসলে বিয়ের আগে প্রেম ভালবাসাই বুঝিয়েছি। বিয়ের পর পরিবার ছেড়ে থাকাকে সম্পর্কে ফেলা যায় না। সমমত! 🙂 পড়ার জন্য ধন্যবাদ ভাই! 🙂


      \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
      অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

      জবাব দিন
  3. ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

    অনেক টুকরো টুকরো অনুভূতি, অনেক মুহূর্ত - ভালো লাগল।

    পারলে তোমার বই আর ছবির এলিট লিস্টটা শেয়ার করো।


    “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
    ― Mahatma Gandhi

    জবাব দিন
    • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

      ধন্যবাদ আপা। 🙂

      বই ও ছবির এলিট লিস্ট মানে কি যা পড়েছি ও দেখেছি সেটা জানতে চাইছেন? ধরতে পারি নাই।


      \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
      অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

      জবাব দিন
    • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

      আচ্ছা ধরতে পারলাম মনে হয়। ঠিক ওভাবে বললে তালিকা দেয়া তো সম্ভব নয়। চলচিত্রের ক্ষেত্রে প্রতিবছর অস্কার কিংবা গোল্ডেন গ্লোব যারা মাতিয়ে রাখে, কিংবা বন্ধুদের মুখে মুখে যেসব ছবির নাম ঘুরে বেড়ায় তার বেশীরভাগ আমার দেখা হয়নি। বইয়ের ক্ষেত্রে মূল ঘাটতিটা বাঙলা সাহিত্যে। সুনীল, সমরেশ, শীর্ষেন্দুর বিখ্যাত কিছুই পড়ে দেখা হয়নি। কোন এক বন্ধু একবার একটা কথা বলেছিল যেটা ছিল কিছুটা এরকম, (নামটা সম্ভবত) "প্রথম আলো" যে পড়ে নাই সে বাঙলা উপন্যাসের অনেক কিছু থেকে বঞ্চিত। মন খারাপ হয়েছিল কিন্তু তারপরেও পড়ে দেখা হয়নি। ইংরেজী যা কিছু পড়েছি মূলত থ্রিলার, আর কিছু খুচরো অন্যান্য বিষয়। এটাই আপনার এলিট লিস্ট কিনা জানি না। তবে এটা সত্য! 🙂


      \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
      অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

      জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : মোকাব্বির (১৯৯৮-২০০৪)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।