পুরোনো পাতায়ঃ বরফের দেশের গল্প ৪

ডিসেম্বর ২৯, ২০১৩ (সময় লিখে রাখিনি) – ভাবনা
নামের শেষে এক বা একাধিক মার্কিনি ডিগ্রী থাকলে দেশে সাধারণত বাজার মূল্য চড়া থাকে। তা সে চাকুরীর বাজার হোক আর বিয়ের বাজার হোক। ছেলে আমার আমেরিকা থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েছে। মেয়েটা আমার ঘরের লক্ষী আবার কেমিস্ট। স্কলারশিপে পড়েছে, যেনতেন কথা নয়। তবে রাজনৈতিক, কূটনৈতিক (কূটনামী সম্পর্কিত নীতি) পরিসরে মার্কিনি ডিগ্রী মাঝে মধ্যে বিপদ ডেকে আনে। ধরুন আলোচনা, তর্ক-বিতর্ক চলছে। এরমাঝে আপনি একটা কথা বললেন সেটা একজন পছন্দ করলো না। উনি পাল্টা উত্তর দিলেন। আপনি অসম্মান যেন না হয় সেইরূপ সতর্কতা অবলম্বন করে জানিয়ে দিলেন যে মতের পার্থক্য থাকতেই পারে তবে কোন বিশেষ বিষয়ে আপনার ব্যক্তিগত ধারণা ও বিশ্বাস নিম্মরূপ। আলোচনাকে জোরপূর্বক রূপ দেয়া হলো তর্কের। জ্ঞানের অপ্রতুলতা, দৃষ্টিভঙ্গীর সঙ্কীর্ণতা এবং অন্ধত্বের মাঝে বসবাস করছেন বলে জানানো হলো আপনাকে। আপনি দ্বিগুণ সতর্কতার সাথে, সঠিক শব্দ চয়নে জানিয়ে দিলেন যে উনি তর্কের নামে যে কাজটি করেছেন সেটি আপনার পছন্দ নয় এবং সেই আলোচনা থেকে বের হয়ে আসলেন। এরপরের আক্রমনটা হবে কিন্তু আপনার মার্কিনি কিংবা বিলাতি ডিগ্রীর উপর। বিভিন্ন ধরনের (অ)জ্ঞাত জ্ঞান আপনার দিকে ছুঁড়ে দিয়ে দুই ধরণের অভিযোগ আনতে পারেঃ ক) পশ্চিমা বিশ্বে পড়াশুনা করে আপনি গোল্লায় গিয়েছেন অথবা খ) পশ্চিমা বিশ্বে পড়াশোনা করে আসা আপনার এহেন ব্যবহার নিতান্তই অনভিপ্রেত। ধরা কিন্তু পড়ে গেলেন। ঘুরে যদি উত্তর দিতে চান আপনার ডিগ্রী কিন্তু ফর্দাফাই করে দিবে সেখানেই। কর্কট রাশির জাতক হিসেবে উপদেশ, এরূপ পরিস্থিতিতে লেজ গুঁটিয়ে পালানোই উত্তম।

পুনশ্চঃ উপরের ঘটনাটির মত একটি ঘটনা গতকাল আমার সাথে ঘটেছে। ভাবলাম লিখে রাখি। পরবর্তীতে বিনোদন পাওয়া ও দেয়া যাবে।

দুপুর ১টা ৩০ মিনিট (মঙ্গলবার), ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৩ – ভাবনা চলছে
এভারনোট ব্যবহার করা শুরু করলাম। সিএন,এন এর ২০১৩ সালের মোস্ট ইনফ্লুয়েন্সিয়াল ৩০টি গ্যাজেটের তালিকায় স্থান পেয়েছে এই মোবাইল এপ্লিকেশানটি। কথাবার্তায় আলোচনায় বুঝলাম এই এপ্লিকেশানটি অনেক কিছু করতে সক্ষম। এমনকি কথা বললে সেখান থেকে শব্দ তুলে নিয়ে নোটে জমা রাখতে পারে এভারনোট। যাই হোক দেখা যাক। তবে লেখালিখির কাজটুকু মোবাইলে বসে করার জন্য প্রাইভেট ডায়েরী নামক আরেকটি এপ্লিকেশন ব্যবহার করতাম। সেখান থেকে এখানে এসে পড়বো কিনা নিশ্চিত নই।

সকালে ঘুম ভেঙেছে সূর্যের তীর্যক আলোতে। শীতকালে সূর্যটা এখানে চাঁদের মত উকি দেয়ার চেষ্টা করে। বেশীরভাগ সময় যেই আলোটা থাকে সেটা দেশের কোন শীতের কুয়াশাচ্ছন্ন সকালের সমতুল্য। সারাদিন ঠিক একভাবে এই বিসন্ন আলো দেখাটা খুব বিরক্তিকর। লাফ দিয়ে উঠলাম। বাহ সকালটা তো বেশ ঝকঝকে। হাতঘড়িতে সময় দেখতেই চুপসে গেলাম। বেলা ১২টা ১০ বাজে। গত কয়দিন ধরে বেশ রাত করে ঘুমানো হচ্ছে। আগে উঠতে পারার কথা নয়। তারপরেও বিরক্তি নিয়ে চোখ ডলতে ডলতে উঠে পড়লাম। প্রতিদিন চিন্তা করি আজকে ছবি তুলতে বের হবো। মনে হচ্ছে আজকেও হাবিজাবি কাজ সেরে উঠতে দিনের আলো ফুরিয়ে যাবে। রাতে বানানো দুধ, কলা, স্ট্রবেরী, ওটমিল দিয়ে বানানো নাশতা নিয়ে বসলাম। আমি আবার দিনের কোন নির্দিষ্ট বেলার খাবার ফ্লাইট শিডিউলের মত বাদ দেই না। পিছিয়ে নিয়ে আসি। এখন যেমন দুপুরের খাবার হিসেবে নাশতা খাবো।

খাবার মাঝেই ফেবু খুললাম। ১৯টি নোটিফিকেশান। খুশিতে আমি বাকবাকুম পায়রা। নিউজ ফীডে রাজনৈতিক ‘গরম মসলা’ (রূপক কথাটা হামিমের কাছ থেকে ধার নিলাম) সযত্নে এড়িয়ে নিচে নামছি। বন্ধু তালিকায় এক মেয়ের বিয়ের ছবি দেখে ভয় পেয়ে গেলাম। সাধারণ ভাবে বেশ সুন্দর এই মেয়েকে বিয়ের সাজে সাজানোর নামে আক্ষরিক অর্থে ‘ঢেলে’ সাজিয়েছে। বেচারা। বিয়ের সাজ ব্যাপারটির উপর আমার ভয়াবহ এলার্জি আছে।

দুপুর ২টা ২০মিনিট, বুধবার, ২ জানুয়ারী, ২০১৪ – ইংরেজী বর্ষবরণ ও পরবর্তী
জনশূন্য এই ছোট শহরে ৩১ ডিসেম্বর রাত একেবারে খারাপ যায়নি। সাধারণত আন্তর্জাতিক ছাত্রদের যেই গ্রুপটা আছে আমাদের, আমরা সবাই একসাথে ডিনার করি, তারপর আড্ডাবাজি চলে যতক্ষণ ক্লান্তি এসে ভর না করে। সাধারণত এই ধরণের পার্টির আহ্বায়ক কমিটির প্রধান নাইমা। কিন্তু এবারে শহরে নেই। নেপালের আসমা ও ভিয়েতনামের হোআকে নিয়ে কলোরাডো চষে বেড়াচ্ছে। ফেবুতে ছবিগুলো দেখে গা জ্বলে যাচ্ছিল। আরো একটি ৩১ ডিসেম্বর রাত ঘুমিয়ে কাটানোর সিদ্ধান্ত নিচ্ছিলাম। ২৯ তারিখ আলবেনিয়ার বান্ধবী জানালো ৩১ রাতে ইথিওপিয়ার বান্ধবীর বাসায় সবার দাওয়াত। হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। ভাল সময় কেটেছে। ধন্যবাদ দিতে চাই আমার এইসব আন্তর্জাতিক বন্ধুদের। হাস্যরস এমন একটি বিষয় যেটা ছড়িয়ে দিতে ভাষার ব্যবধান খুব একটা বড় বাধা নয়। আধখানা চাঁদ ও একপাটি দাঁত মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ে। বেশ কিছু ভাল ছবিও তুলেছি। ওদের ধৈর্য্য প্রশংসনীয়। ক্যান্ডিড পোর্ট্রেট তুলেছি সাধ মিটিয়ে। নতুন বান্ধবী হিসেবে পরিচয় হয়েছে ঘানার সান্ড্রার সাথে। আলাদা করে কেন বললাম আশা করি বোঝানো লাগবে না। পরের দিন ছবিগুলো দেখছিলাম আর ভাবছিলাম, দেশে যাবার পর এই স্মৃতিগুলোই থাকবে।

গতকাল স্থানীয় পানশালা থেকে বিয়ার কিনলাম। নাম Sneaky Bastard। স্বাদের সাথে নামকরণের স্বার্থকতা ও সম্পর্ক বের করার চিন্তা করতে করতে ঘুম পেয়ে গিয়েছিল। ঘুমিয়েছি রাত বারোটায় পরের দিন সকালে উঠবার দৃঢ শপথ নিয়ে। আমার খুব বাজে একটা অভ্যাস হলো ফোন করে কাঁচা ঘুম ভাঙিয়ে কেউ কথা বললে প্রথমেই ঘুমাচ্ছিলাম কিনা সেই ব্যাপারে নির্জলা মিথ্যা বলা। কেন বলি জানি না। মনে আছে একবার এক বন্ধু রাত তিনটার দিকে ফোন করে জিজ্ঞাসা করেছিল ঘুমাচ্ছিলাম কিনা। অবশ্যই রাত তিনটার সময় হাস্যকর একটি প্রশ্ন। তারপরেও অভ্যাসের বসে বলেছিলাম নাহ। ও হেসে দিয়ে বলেছিল, ‘**** রাত তিনটার সময় জাইগা কি ***** করতেস? ঘুমাইলে ভাল, মিথ্যা বলার কি দরকার?’ যাই হোক। যা বলছিলাম, রাত একটার দিকে ঘুমটা হয়তো ইতস্তত ঘোরাফেরা শেষে লেপ মুড়ি দিয়ে আমার মাথায় রাতটা কাটাতে যাচ্ছিল, এমন সময় মাছি ভনভন, মুঠোফোন ঝনঝন। তাকিয়ে দেখি মা জননী। সাথে সাথে মাথায় একটা কথাই আসলো — সর্বশেষ কথা বলেছি সপ্তাহ তিনেক আগে। ভাদাইম্যা ছেলে বেঁচে আছে কিনা খোঁজ নিতে মায়ের মরিয়া চেষ্টা। গলার জড়তা ঠিক করে কেটে দিয়ে নিজে ফোন দিলাম। ধরে হ্যালো বলতেই, ‘ঘুমাচ্ছিলে?’ আরো একটা নির্জলা মিথ্যা…কিন্তু ধরা পড়ে গেলাম। স্বীকার করতেই আক্রমনাত্মক মায়ের এবার অপরাধ লুকানোর চেষ্টা, ‘তুমি তো জেগেই থাকো এই সময়!’ ‘হ্যা যাই হোক, কি খবর বলো?’ ‘তোমার খবর বলো, কোন ফোন নাই কিছু নাই।’ প্রায় আধা ঘন্টা চললো কথা। বন্ধু ফয়সালের বিয়ে, নিজের সম্ভাব্য বিয়ে, সবকিছু নিয়ে জ্ঞানগর্ভ আলোচনা শেষে জেগে থাকতে হলো আরো দুটি ঘন্টা। মায়ের সাথে আমার অভিমান চলে, অভিমান ভাঙানো চলে কিন্তু ঘুমের ভাব বেশী তল্পিতল্পা গুটিয়ে চলে গিয়েছিল।

ভোর ৪টা ২০ মিনিট (রবিবার), ৫ ডিসেম্বর, ২০১৪ – অনন্য সাধারণ।
কথাটি আগেও শুনেছি। আমার লেখা টুকিটাকি ফেবু স্ট্যাটাস পড়তে নাকি মাঝেমাঝে হুমায়ুন আহমেদের উপন্যাসের মত লাগে। কিছু ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট উপন্যাসের উদাহরণও টেনেছে অনেকে বলে মনে পড়ে। অবাক হতাম। আমি কি এত ভাল লিখি? নিঃসন্দেহে না। তাহলে সমাস্যাটা কোথায়। সমস্যাটা সেদিন বের করলাম। সম্পূর্ণ নিজস্ব বক্তব্য যেখানে উনাকে খাটো করে দেখার প্রয়াস নেই। তারপরেও উনার ভক্তরা এই ব্যাখ্যা পড়লে চটে যেতে পারেন। প্রত্যেকটা মানুষের স্বকীয় কিছু চিন্তা ভাবনা আছে, চিন্তা করার ধরন আছে যেগুলো অনেকটা উদ্ভট, হাস্যকর, কিংবা ভয়াবহ। দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় সেই ভাবনাগুলো প্রকাশ পায় না। কিন্তু এই ভাবনাগুলো লেখায় প্রকাশ করা হলেই পড়তে কেমন জানি লাগে। উদাঃ আমার গতকালের ফেবু স্ট্যাটাস। দেড়-দুই বছর বিদেশেরেও বিদেশে পড়ে থাকা আমার মত ছাত্রের প্রিয় বন্ধুর বিয়েতে থাকতে না পারার বেদনা ছাপিয়ে কাচ্চিবিরিয়ানি না খেতে পাবার বেদনা মূখ্য হয়ে উঠতেই পারে। সেই দুঃখে জান্তে কিংবা অজান্তে মুঠোফোনের পর্দার কাছে নাক নিয়ে শুঁকে দেখতে চাইছিলাম কারণ কাচ্চিবিরিয়ানির গন্ধ মনে হলো ভুলে গিয়েছি। নিস্তব্ধ ভোররাতে হিস্টিরিয়াগ্রস্ত রোগীর মত হেসেছি কিছুক্ষণ। ব্যাপারটা আসলেই হাস্যকর ছিল। এই ঘটনাটি গুছিয়ে লিখেছি বলেই সেটা খুব পরিচিত মনে হচ্ছে। সেটা এখন হুমায়ুন আহমেদের লেখার মত মনে হচ্ছে। কেন মনে হচ্ছে? কারণ উনি মানুষের মনের চিন্তার উদ্ভট রেলগাড়িগুলোকে উপন্যাসে রূপ দিয়েছেন। এবং এই কাজটি এর আগে কেউ করে উপন্যাস লেখার চেষ্টা করেছেন বলে আমার মনে হয় না। প্রত্যেকটা মানুষের ভিতরের এই চিন্তার রেলগাড়ি যদি মনের স্টেশান ছেড়ে যায়, তাহলে মনে হবে দেশে নতুন হুমায়ুন আহমেদে সয়লাব হয়ে গিয়েছে। ম্যাট্রিক্স রিলোডেড। উনার লেখা খুব একটা পড়ে দেখা হয়নি। সংখ্যার হিসেবে ১০-১২টির বেশী ছাড়ায়নি। প্রচুর ভাল লেখা আছে উনার যেগুলোর বেশীরভাগ বা কোনটাই পড়া হয়নি। একটি মানুষের একজন লেখকের দ্বারা অনুপ্রাণিত হতে চাইলে আরো অভিজ্ঞতা প্রয়োজন। অন্তত আমার কেতাবী জ্ঞানে তাই বলে। সেই হিসাবে আমার লেখা পড়ে যদি মানুষের হুমায়ুন আহমেদের কথা মনে পড়ে তাহলে কারণ যেটা বললাম সেটা ছাড়া আর কিছুই নয়। ট্রেডমার্ক আইন পড়ার সময় অধ্যাপক বুঝিয়েছিলেন, সাধারণত বহুল ব্যবহৃত শব্দকে ট্রেডমার্ক করা যায় না। যেমন কুমিল্লার মাতৃভান্ডার মিস্টান্ন একটি ট্রেডমার্ক নাম কারণ এখানে নতুনত্ব আনতে বেশ কয়েকটি শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। কেউ যদি বলে আমি চমচম কিংবা রসমালাই কিংবা কালোজাম কিংবা শুধু “মিস্টান্ন ভান্ডার” নামে ট্রেডমার্ক করবো তাকে সেটা করতে দেয়া হবে না। কারণ এগুলো বহুল ব্যবহৃত শব্দ। শুধু এসব শব্দ বা নাম ট্রেডমার্ক করলে সবার ব্যবসা বানিজ্য বন্ধ হয়ে যাবে। আমাদের মাথার সেই উদ্ভট ভাবনাগুলো হলো সেইসব বহুল ব্যবহৃত শব্দ যেগুলোর লিখিত রূপ এখন বিখ্যাত। সাধারণ এখন অনন্য সাধারণ।

বিকাল ৩টা ৫ মিনিট (রবিবার), ৫ জানুয়ারী ২০১৪ – একটাই ফিল্টারঃ ১৯৭১
হুম! মজার ব্যাপার। গতকাল লিখেছি লেখক হুমায়ুন আহমেদ কে নিয়ে। এখন লিখছি উনার ছোট ভাই জাফর ইকবাল স্যারকে নিয়ে। জাফর ইকবাল স্যারের কোন একটা সম্মেলনের ভিডিওটি বেশ কয়েকবার শেয়ার হলো ফেবুতে। দেখলাম কি বলছেন। উনি বলেছেন উনার মাথায় ফিল্টার একটাইঃ মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১, যেকোন কিছু সেটা পার করে এপারে আসতে পারলেই সব ঠিক। জামাতকে বাদ দিয়ে কিভাবে রাজনীতি চালানো যায় সেটার গাইবান্ধার একটি উদাহরণ উনি তুলে ধরে বলেছেন কেন জাতীয় পর্যায়ে তা সম্ভব নয়? কাজটি কিন্তু আসলেই সহজ। শুধু দরকার স্বদিচ্ছা যেটা সম্ভবত কারো মাঝে নেই। স্যার কিভাবে কথা বলেন সেটা মনে ছিলনা। দেখে মনে পড়লো উনি আর দশটা-পাঁচটা মানুষের মতই কথা বলেন। কিছু মানুষ ফ্যাশনেবল কায়দায় উনাকে সমালোচনা কবে করবেন সেটার জন্য বসে ছিলাম। বেশীক্ষণ বসে থাকতে হয়নি। দেখা মিললো এক মহাজনের। উনি বলছেন বর্তমান প্রেক্ষাপটে ১৯৭১ একমাত্র ফিল্টার হতে পারে না। আমি বলবো এটি জামাতে ইসলামীর স্বাধীনতা বিরোধী প্রচারণার এক দুর্দান্ত মাইলফলকঃ তরুণ প্রজন্ম স্ক্র্যাচ পরা ডিভিডির মত যদি-কিন্তুতে আটকেই আছে। ঝকঝকে ব্রেইনওয়াশদের কথা বাদই দিলাম। উনি আরো বললেন, শেখ হাসিনার আত্মীয়তায় ও উনার দলে যুদ্ধপরাধীর অবস্থানের কথা। সেটা হয়তো সত্য কিন্তু স্যারের কথাটার মূল বক্তব্যটা এখানে অনেকেই ধরতে পারছেন না কিংবা ধরার চেষ্টা করছেন না — ১৯৭১ এর ফিল্টার দিয়ে ছেঁকে নিলে কিন্তু বড় কাঁকর-পাথর গুলো আটকে যাবে। পরবর্তি পদক্ষেপে শক্তিশালী রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি চাইলেই গণদাবী তুলে আওয়ামীলীগকে বিপাকে ফেলতে পারে। ১৯৭১ একটা প্রাথমিক ফিল্টার এই দেশের অস্তিত্বের জন্য। কিন্তু শুরুটাই হচ্ছে না।

ছোটভাই ফজলে রাব্বীর একটা ফেবু স্ট্যাটাসে পড়েছিলাম আওয়ামীলীগের গুটিবাজি রাজনীতির কাছে বিএনপি দুধের শিশু। তার উপর জামাতের আস্তিনের ভেতর আরাম করে বসে আছে। সরকার হটানোর আন্দোলন এবং বিশেষ করে আওয়ামী সরকার হটানোর আন্দোলন করতে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী দরকার। কথাটা চরম সত্য। আমার চোখে আওয়ামীলীগ সাম্প্রতিক সময়ে প্রচুর ভুল করেছে যেগুলোর সুযোগ বিএনপি স্বাচ্ছন্দে নিতে পারতো কিন্তু নেয়নি। কেন নেয়নি তা জানা নেই। তাদের ডেমোক্রেসী ফর মার্চ কিংবা মার্চ ফর ডেমোক্রেসীতে হয়তো সাধারণ মানুষ নেমে আসতো রাস্তায় (কিংবা সেই পরিস্থিতি পর্যন্ত আসাই লাগতো না) যদি না রাস্তায় রাস্তায় পেট্রোল বোমায় জ্যান্ত মানুষ পোড়ানোর উৎসবে বাহবা না দিত তারা। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও এখন জানের মায়ায় মরিয়া হয়ে আসল গুলি ছুঁড়ে। অনেকে দাবী করেন এগুলো রাজনৈতিক প্রতিশোধ পরায়নতার ফল। জ্বী, আপনারা ৮-১০ কেজি ওজনের কনক্রিটের টুকরো পুলিশের দিকে ছুঁড়ে মারবেন আর উনারা হোলস্টারে পিস্তল রেখে খালি দুইহাতে সেটা ঠেকানোর চেষ্টা করে যাবেন এই তো চান? মোটরবাইকে দুইজন আরোহন বন্ধ করা হলোঃ খুব মাথামোটা, হাস্যকর বলে হাসি ঠাট্টা আমিও করেছি কারণ আমার দেহ পুড়ে যায়নি মোটরবাইকের দ্বিতীয় আরোহীর ছোঁড়া ককটেল ও পেট্র‌োল বোমায়। কারণ আমি কন্সটেবল সিদ্ধার্থ নই।

১,৭৪৬ বার দেখা হয়েছে

১৭ টি মন্তব্য : “পুরোনো পাতায়ঃ বরফের দেশের গল্প ৪”

  1. নাফিস (২০০৪-১০)

    কলোরাডো তো হিট স্টেট ! ব্লকবাস্টার জায়গা এখন... মাইনষে এখন দল বাইন্ধা কলোরাডো যাবো উইড কিনতে। এই ফাকে ওরা টাকা পয়সা কামাইয়া এক্কেবারে লালে লাল হয়ে যাবে। স্টেট গভর্নমেন্ট ব্যাপক চালাক। আপনার বান্ধবী কিছু নিয়ে আসছে নাকি? 😛

    জবাব দিন
    • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

      নাহ বলসিলাম! নেপালের বান্দরটারে প্রায় ম্যানেজ করে ফেলসিলাম। ভিয়েতনামের ভাল মেয়ে হোআ আর আমার পেটড্ডরাইল্যা দেশী বান্ধবীর ঠেলায় কিছু কিনতে পারে নাই! 🙁


      \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
      অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

      জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : জিয়া হায়দার (৮৯-৯৫)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।