কোক স্টুডিও উপমহাদেশ ও বাংলাদেশ – সঙ্গীত নিয়ে কিছু কথা, কিছু সম্ভাবনা (ভাবনা)

গানের নাম লেখা দেখাচ্ছে ঝুমুর। বর্ণনায় লেখা অসমীয় চা-বাগানের শ্রমিকদের স্থানীয় গান।

কে তোকে বানধি দেলাই হিলকি দিলকি খোঁপা হায়রে?
কে তোকে নজরি লাগায়?
কে তোকে নজরি লাগায় হে বৃন্দাবন?
হো হায়রে গো সখি
কে তোকে নজরি লাগায় হে বৃন্দাবন?

অসমীয়রা (আসাম রাজ্য) যে ভাষায় কথা বলে সেটাকে সম্ভবত আদি বাঙলা বলে। অন্তত অসমীয় উইকিপিডিয়া তাই বলছে। তাই পড়তে কিছুটা দুর্বোধ্য ঠেকতে পারে তবে শুনলে বেশ ভালই বোঝা যায়। গানটা গাওয়া হয়েছে ঝুমুর তালে (৬ মাত্রা) সেই থেকে গানের নাম কি তালের নামে মিল রেখে ‘ঝুমুর’ রেখে দিয়েছে? উত্তর জানা নেই। যে কয়টি আদিবাসী গান শোনার সৌভাগ্য হয়েছে এরমাঝে সাঁওতালদের গানে ঝুমুর তাল ব্যবহারের আধিক্য লক্ষ্য করা যায়। উপরের গানের বিষয়বস্তু গ্রামের রূপবতী বঁধু ও তার দিনলিপি নিয়ে। প্রচুর আধুনিক ও ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্রের চমৎকার সমন্বয়ে পরিবেশন করা গানটি শুনে শেষ করলাম। গতকালকের ভরা পূর্ণিমা দেখে অনেকেই স্ট্যাটাস দিচ্ছিলেন ফেইসবুকে। শীতকালে চাঁদ ডুবে যাবার আগের ৩-৪ ঘন্টা আমার এপার্টমেন্টের জানালা দিয়ে দেখা যায়। বাতি নিভিয়ে দেবার পর আলোয় ভেসে যেতে দেখে একটু উঁকি দিয়ে মন ভালো হয়ে গেল। এর সাথে এই গানটি বেশ যাচ্ছিল। যাকে ঘিরে স্বপ্ন বোনার চেষ্টা তার কথাও মনে পড়ছিল। শেষ হবার পর ঘাটানো শুরু করলাম। এই বছর বেশ কয়েকটি নতুন গান ছেড়েছে এমটিভি কোক স্টুডিও – ইন্ডিয়া। সাধারণত খেয়াল রাখা হয়না তাই এর মাঝে এআর রহমান, কৈলাশ খেরের মত বিখ্যাত শিল্পী ও সুরকারদের অনেকগুলো গান শোনা হয়নি। এআর রহমানের পরিচালনায় নেপালী বৌদ্ধ ভিক্ষু অনি চোয়িং ও জর্ডানের শিল্পী ফারাহ্ সিরাজের কন্ঠে শুনলাম ‘জারিয়া’, সেলিম সুলাইমানের পরিচালনায় কৈলাশ খেরের কন্ঠে ‘বিসমিল্লাহ্’, রাম সম্পদের পরিচালনায় গাইলো ‘সুন্দরী কমলা’, রাজস্থানী গানের সাথে ভারতীয় হিপ-হপ ও Rap (বাঙলায় লিখলে হয়ে যায় র্যাপ) মিশিয়ে গাইলো ‘কাট্টে’, পাপনের পরিচালনায় আফ্রিকান নাচুনে তালের সাথে ফাঙ্ক মিশিয়ে গাইলো ‘তওবা’ — মোটামুটি এগুলো সব চাঁদনী রাতে শুনে ফেললাম। বেশ ভালো লাগলো।

লেখাটা আসলে যেদিকে নিতে চাই সেদিকে যাওয়া শুরু করি। কোক-স্টুডিও নামক এই সঙ্গীত বিষয়ক টিভি এপিসোডের উৎপত্তি পাকিস্তানে ২০০৮ সালে। নামকরণ ও ইউটিউবে যারা ভিডিও দেখেছেন সেখান থেকে বুঝে যাবার কথা পরিবেশিত হচ্ছে কোকাকোলা কোমল পানীয়ের ব্যানারে। এক কথায় যদি বলতে চাই কোক স্টুডিও হলো ফিউশান সঙ্গীতের নতুন দিগন্ত বলা যেতে পারে। নতুন পুরোনো বিভিন্ন বিখ্যাত শিল্পী, তাদের গানে ব্যবহৃত বাদ্যযন্ত্রের সহায়তায় তাদের গানকে চমৎকার করে সম্পূর্ণ নতুন ভাবে উপস্থাপন করাই কোক স্টুডিওর মূল লক্ষ্য। পাকিস্তানের সুফী ও বাউল সঙ্গীতের সাথে মিশেছে একালের রক ও পপ ঘরানার বিখ্যাত সকলে। এর মাঝে আলী আজমত (জুনুনের গায়ক), স্ট্রিংস, শাফকাত আমানত আলী, আতিফ আসলাম, রাহাত ফতেহ আলী খান এরকম শিল্পী বিভিন্ন সিজনে তাদের গান করে গিয়েছে। উপমহাদেশে ও বিশ্বব্যাপী প্রচুর সাড়া পাবার পড়ে ভারতও বসে না থেকে ২০১১ সাল থেকে এমটিভির সাথে শুরু করে এমটিভি কোক স্টুডিও ইন্ডিয়া। ২০০৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত গান গুলো দেখে শুনে মনে হচ্ছে খুব নিষ্ঠা ও একাগ্রতার সাথে গানগুলো নতুন করে করার চেষ্টা করছেন দুই দেশের সঙ্গীত পরিচালক ও শিল্পীরা। সঙ্গীত শিল্পীরা সাধারণত যেকোন গানের রিমেক, ফিউশনের ব্যাপারে খুবই স্পর্শকাতর থাকেন। বিশেষ করে বর্ষীয়ান শিল্পীরা অনেকেই এ ব্যাপারে খুবই আবেগপ্রবণ, কর্তৃত্বসূলভ আচরণ করেন যেন ফিউশন করা গর্হিত অপরাধ। একই সাথে যারা শুনছেন তাদের মাঝেও এ নিয়ে প্রচুর বাক-বিতন্ডা ও উষ্মার সৃষ্টি হয় এই সব নতুন করে করা গানকে কেন্দ্র করে। এই বছরের শুরুর দিকের “ক্ষ” এর করা রবি ঠাকুরের আমার সোনার বাংলার (আমার ব্যাখ্যাতে ওদের গাওয়া সঙ্গীতটি জাতীয় সঙ্গীত নয় রবীন্দ্র সঙ্গীত — ব্যাখ্যা জানতে চাইলে মন্তব্যের ঘরে জানান) ফিউশান নিয়ে বেশ খানিকটা বিতর্ক সৃষ্টি হলো। সংবিধান অবমাননা ও দেশদ্রোহীতারও অভিযোগও আনা হলো দেখলাম। একই ভাবে কোক স্টুডিওর করা গান গুলোতেও ফিউশানের বিভিন্ন অংশ নিয়ে তর্ক বিতর্ক খেয়াল করেছি ইউটিউবের মন্তব্যের ঘরে। “সুন্দরী কমলা” এর সাথে ইংরেজী দরকার ছিলো না, রাজস্থানী গানের সাথে হিপ-হপ যায় না, বিলি জিনের সাথে আতিফের নিজের গান মেশানো ঠিক হয়নি, গানের দুটো অংশ খাপছাড়া ইত্যাদি নানান তর্ক বিতর্ক রয়েছে কোক স্টুডিওর বিভিন্ন সঙ্গীতগুলোতে। এই ধরণের মিশ্র বিষয়গুলোতে তর্ক-বিতর্ক থাকবেই। কিন্তু আমার মতে বড় দাগে এটি নিঃসন্দেহে একটি ভালো উদ্যোগ।

যেই কাজটা সাধারণত করতে চাইনা এবং এখন কিছুটা করা লাগবে সেটা হলো দেশ ভিত্তিক তুলনামূলক রচনা লেখা। কথা হলো বাংলাদেশ বরং বিভিন্ন গানের ফিউশান করার দিক দিয়ে অনেক এগিয়ে আছে। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান, লালন সঙ্গীত, শাহ আব্দুল করিমের লেখা ও সুর করা গান, ভাটিয়ালী, ভাওয়াইয়া, নজরুল গীতি, রবীন্দ্র সঙ্গীত ইত্যাদি সবকিছুরই চমৎকার কিছু ফিউশান উপহার দিয়েছে অর্ণব, বাংলা, বাপ্পা মজুমদার, কোম্পানী হিসেবে বাংলালিঙ্ক, রবিসহ নাম না জানা অনেক শিল্পী ও ব্যান্ড। বিশেষ করে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান গুলো মেটাল ধাঁচে নতুন করে গাওয়া আন্ডারগ্রাউন্ড ব্যান্ডগুলোর বেশ পছন্দের একটি কাজ। কিন্তু কাজ গুলোর বেশীর ভাগ ব্যক্তিগত বা খুব স্বল্প পরিসরে সমষ্টিগত। অর্ণবের শেষ এ্যালবামে চমৎকার কিছু কাজ ছিল কিন্তু নতুন কিছু সামনে আসছে বলে জানা নেই। সুতরাং যা দেখতে পাচ্ছি তা হলো বিশেষ কয়েকটি চেষ্টার পরেই প্রচেষ্টায় ভাটা পড়ছে কিংবা হারিয়ে যাচ্ছে গান গুলো। আমি বলছিনা কোক স্টুডিও বাংলাদেশ খোলা হোক, কিন্তু এক ছাতার নিচে বেশ কয়েকজন বিখ্যাত শিল্পী, বাদ্যযন্ত্র শিল্পীকে, সঙ্গীত পরিচালক নিয়ে এসে বছরে একবার স্বল্প ও নির্দিষ্ট সময়ের জন্য গান গুলো নতুন করে গেয়ে, বাজিয়ে শ্রোতাদের কিন্তু চাইলেই উপহার দিতে পারেন। উদ্যোক্তা খুঁজে বের করা হয়তো একটি বড় সমস্যা বলে মনে হতে পারে। একটি উৎকৃষ্ট মানের রেকর্ডিং ও লাইভ পারফর্মিং স্টুডিও বানানোও যথেষ্ট ঝামেলার বলে আমি মনে করি। একই সাথে বর্ষীয়ান শিল্পীদের ফিউশানের প্রতি তাচ্ছিল্যপূর্ণ দৃষ্টিকে পাশ কাটিয়ে অংশগ্রহণে রাজি করানোটাও একটা ঝামেলা। কথা হলো যদি বিশ্বকাপ ক্রিকেটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান এত জাকজমকের সাথে করতে পারি একটা উঁচুমানের স্টুডিওতে বড় কিছু শিল্পীকে নতুন প্রজন্মের শিল্পীদের সাথে একত্র করে গান গুলোকে নতুন করে গাওয়ার চেষ্টা করাটা অসম্ভব হবে বলে আমার মনে হচ্ছে না।

শাহ আব্দুল করিমের গান নতুন আঙ্গিকে করা হচ্ছে আর এতে গলা মেলাচ্ছেন ফরিদা পারভিন, লালন ব্যান্ডের গায়িকা সুমি, গীটারে আইয়ুব বাচ্চু, জুয়েল, অনি, কী-বোর্ডে মানাম আহমেদ, বেইজে সুমন, বাঁশী ধরেছেন বারী সিদ্দিকী, পারকাশন, তবলা, দোতারা, বেহালায় আছেন আরো এক ঝাঁক শিল্পী — ব্যাপারটা চিন্তা করতেই ভালো লাগছে। আপনার কি মনে হয়?

৭২ টি মন্তব্য : “কোক স্টুডিও উপমহাদেশ ও বাংলাদেশ – সঙ্গীত নিয়ে কিছু কথা, কিছু সম্ভাবনা (ভাবনা)”

  1. সিরাজ(১৯৯১-১৯৯৭)

    ভাই মোকাব্বির তোমাকে প্রথমে ধন্যবাদ দেব এরকম তথ্যহুল একটা লেখার জন্য।নিশ্চয় তোমাকে প্রচুর খাটতে হয়েছে এই লেখাটি লেখার জন্য।

    এবার আসি লেখার কথায়।তুমি যে ফিউশনের কথা বল্লে সেটা যদি হয় তাহলে খুব ভাল হবে।লালন বা শাহ আব্দুল করিমের লালনগীতিতে এক নতুন মাত্রা যোগ হবে।তুমি একজন ফরিদা বেগমের কথা বল্লা। বাংলাদেশের একজন বিখ্যাত লালনগীতি সঙ্গীত শিল্পী আছেন নাম ফরিদা পারভিন।উনারা কি একই ব্যাক্তি?নাকি আলাদা?

    বাই দ্যা ওয়ে,শাহ আব্দুল করিম কে আমরা বাউল সম্রাট বলে থাকি।কিছুদিন আগে ফরিদা পারভিন এক সাক্ষাতকারে বলেছিলেন শাহ আব্দুল করিম তো কোনকালেই বাউল ছিলেন না।এই নিয়ে রীতিমত সমালোচনার ঝড় ওঠে।

    আসলে ওনাদের কারো সমালোচনা করার মত যোগ্যতা আমার নাই।কিন্তু আমাদের অনেকেই ফরিদা পারভিন কে ধুয়ে দিয়েছেন।এখানে আমার কথা হল সাধারনত যারা বাউল দর্শন ফলো করেন তারাই লালন গান করেন কিন্তু আমার মতে বাউল আর লালন সবময় এক নয়।বাউল ধর্ম পালন না করলে যে তুমি লালনের গানের চর্চা করতে পারবেনা এমন কোন কথা নেই।দুটো ভিন্ন জিনিস।তোমাকে গাঁজা খেয়ে,চিরাচলিত সংসার ধর্ম বাদ দিয়ে একতারা আর দোতারা বাজিয়ে তার পরেই লালন গীতি গাইতে হবে এমন কোন কথা নাই।যদিও ওসব একজন বাউলের অনুষঙ্গ।
    ফরিদা পারভিন কিন্তু শাহ আব্দুল করিমের যোগ্যতা নিয়ে কোন প্রশ্ন তোলেন নাই বা কটাক্ষ করেন নি। উনি বলেছেন আমি যতদুর দেখেছি শাহ আব্দুল করিম সম্পর্কে বা জানি এবং ওনার পরিবারের কাছের লোকদের কাছ থেকে জেনেছি তাতে উনি বাউল আচার,ধর্ম পালন করেন নি তাই তিনি বাউল নন কিন্তু তার মানে এই না যে লালন শিল্পী নন। এখানে আমার কথা হচ্ছে শাহ আব্দুল করিম কিন্তু নিজে বাউল সম্রাট ঘোষনা করেন নি। আমরাই তাকে বাউল সম্রাট উপাধি দিয়েছি।বরং আমাদের উচিৎ ছিল উপাধি দেয়ার সময় খেয়াল রাখা।এখন মনে হয় লালনগীতি সম্রাট বল্লেই সঠিক হত।আর আসলে বাউল সম্রাট বলতে লালন ফকিরকেই বোঝানো উচিৎ।


    যুক্তি,সঠিক তথ্য,কমন সেন্স এবং প্রমাণের উপর বিশ্বাস রাখি

    জবাব দিন
    • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

      সিরাজ ভাই ধন্যবাদ ভুলটা ধরে দেবার জন্য। ঠিক করছি এখনি।

      এই যে শেষের প্যারায় যেই কথাটা বললেন সেটার সাথে আমিও একমত এবংআমার মতে একজন বা একটি উদ্যোক্তা কিংবা ভাল মানের একটি স্টুডিও বানানোর চেয়ে সকল শিল্পীকে তাঁদের নির্দিষ্ট গন্ডীর বাইরে একটি সামগ্রিক প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসাটা কঠিন বেশী। উপাধি নিয়েই যদি বসে থাকি তাহলে কি চলে? ফরিদা পারভিন হয়তো উপাধির নামকরণের ভুলটুকু তুলে ধরতে চেয়েছিলেন এবং আমি এটাও আঁচ করতে পারছি কি ধরনের ধোয়া উনাকে ধোয়া হয়েছে। শাহ আবদুল করিমের কোন লিরিকেও কিন্তু নিজের নামের আগে কোন কিছু যোগ করেন নাই। লালন শাহের লিরিকে নামের আগে 'ফকির' কথাটি এসেছে। উনাকেও যে বাউল সম্রাট বলা হয় সেটা কি উনার নিজের দেয়া? মনে তো হয় না। যাই হোক, আমি যেটা বলতে চাইছিলাম এসব কিছুর উর্ধ্বে যেতে পারলে এই ধরনের একটি প্রোগ্রাম দর্শক শ্রোতাদের উপহার দেয়া সম্ভব।


      \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
      অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

      জবাব দিন
    • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

      আরেকটি কথা যোগ করতে চাই লালনের ফকিরের গান কিংবা শাহ আবদুল করিমের গান কিন্তু ফিউশান করা হয়েছে এবং হচ্ছে। কিন্তু সেটা করা হচ্ছে ব্যক্তিগত কিংবা ব্যান্ড পর্যায়ে। আমার ভাবনা হলো এই প্রচেষ্টাগুলোকে আরো বড় ব্যানারে বড় আঙ্গিকে নিয়া আসতে হবে যাতে সবার কাছে পৌঁছায়।


      \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
      অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

      জবাব দিন
    • রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

      শাহ আব্দুল করীম কি লালন গান করেছেন?
      আমার তো মনে হয় তিনি বাউল গান করেছেন।
      নিজের লেখা, নিজের সুর দেয়া।


      এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

      জবাব দিন
  2. সিরাজ(১৯৯১-১৯৯৭)

    ফিউশানের ব্যাপারে আমি একটু রক্ষনশীল। ফিউশান করতে যেয়ে যেন গানের গ্রামার মানে স্বরলিপী,তাল,লয় নষ্ট না হয়। আর সবাইকে এক প্লাটফর্মে নিয়ে আসাও সহজ না। তুমি যাদের নাম বল্লা তারা সবাই যোগ্য কিন্তু সুমি কে(লালন ব্যান্ডের)আরো বেশী জানতে হবে লালনগীতি সম্পর্কে। বিশেষ করে ফরিদা পারভিনের সাথে পারফর্ম করতে হলে সেরকম যোগ্যতা থাকতে হবে। কারণ লালনগীতিতে ফরিদা পারভিন কিংবদন্তির পর্যায়ে যেমন রবীন্দ্রসংগীতে বন্যা। এক্ষেত্রে সালমা(ক্লোজ আপ ওয়ানের) ভাল হত।


    যুক্তি,সঠিক তথ্য,কমন সেন্স এবং প্রমাণের উপর বিশ্বাস রাখি

    জবাব দিন
    • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

      সুন্দরী কমলার গানের শুরুতে ও মাঝে ইংরেজী ঢোকানো হয়েছে এবং এ নিয়ে প্রচন্ড বিতর্কও হয়ছে। রাজস্থানী স্থানীয় বিখ্যাত গানের সাথে মিশিয়েছে পাঙ্ক ও হিপ হপ আর এতে ক্ষেপে গিয়েছে অনেকেই কিন্তু মজার ব্যাপার হলো বেশীরভাগ প্রশংসাসূচক মন্তব্য। পদ্মভূষন খেতাবপ্রাপ্ত ওস্তাদ গাইছেন নাম না জানা আরো ৫ গায়কের সাথে। ইউটিউবে ভিডিও হিট ও লাইক সবচেয়ে বেশী এক্সপেরিমেন্টাল কাজ গুলোতে। সময় পালটে যাচ্ছে। সেই সাথে পাল্টে যাচ্ছে তার গতি। আমি ফরিদা পারভিন, সুমি লালনের 'ল'-টাও জানে না তাই ওর সাথে গান করার প্রশ্নই আসে না এই স্থিতি ধরণের জড়তা থেকে সরে আসার সময় হয়ে গিয়েছে। কোকস্টুডিও নামক এই প্রচেষ্টার মূল উদ্দেশ্যটাই ছিল পুরোনোর সাথে নতুনের মিলন। গানে, সুরে, বাদ্যযন্ত্রে। লেখার সময়ও কেন জানি মনে হচ্ছিল, উপমহাদেশর দেশকয়টির মাঝে বাংলাদেশের উচ্চাসনে বসে থাকা যেকোন ক্ষেত্রের মানুষের সুপিরিওরিটি কমপ্লেক্স সবচাইতে বেশী। আমার মনে হয়, গবেষণা করে দেখবার বিষয়, বাঙালী হিসেবে আমরা সাধারণত সুপিওরিটি কমপ্লেক্সে বেশী ভুগি।

      উপরের যে কাল্পনিক লাইন আপ এর কথা লিখেছি সেটা একটা উদাহরণ মাত্র। (সম্পাদিত)


      \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
      অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

      জবাব দিন
      • সিরাজ(১৯৯১-১৯৯৭)

        আসলে আমি সুপিরিওরিটি কমপ্লেক্স এর কথা বলছিনা কিন্তু আমরা আস্তে আস্তে মূল গান থেকে সরে যাই। আমি যদি গানটি সমনদ্ধে খুব ভাল জানি তাহলে আমি গান টি নিয়ে অনেক এক্সপেরিমেন্ট করতে পারবো কারন ফাইনালি আমি মূল গানেই থাকবো।আর আমি যে স্বরলিপীর কথা বলেছি সেটা ভিন্ন জিনিস। এমনকি নজরুল সঙ্গীতের সব স্বরলিপী পর্যন্ত আমাদের কাছে নাই।আর স্বরলিপী না থাকলে গানটি বিকৃত হবার সম্ভাবনা থাকে। আজকের শিল্পীরা রেওয়াজ করে কম শুধুই এ্যাল্বাম বানাতে চায়। তাই এখানে সিনিয়র বা জুনিয়রের ব্যাপার না।আধুকিন গান আর রবীন্দ্র,নজরুল,লালন এসব গানের পার্থক্য এখানেই।মায়াবন বিহারিণী হরিণি গান টি ফিউশন হয়েছে কিন্তু সুর,তাল,লয় ঠিকই আছে।এগুলো কিন্তু আলাদা করা যাবেনা।রক,মেটাল গানের মধ্যে কিন্তু এসবের কোন বালাই নাই।আর এ কারণেই রবীন্দ্র,নজরুল,লালন অন্যদের তুলনায় স্বতন্ত্র।


        যুক্তি,সঠিক তথ্য,কমন সেন্স এবং প্রমাণের উপর বিশ্বাস রাখি

        জবাব দিন
        • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

          আমার মনে হয়না আমি কোথাও বলেছি পুরোনো গান গুলোকে রক কিংবা মেটালে পরিণত করতে হবে। আমি বলেছি দুই ঘরানার শিল্পীদের একসাথে করলে ঠিক মত নির্দেশনা দিতে পারলে একটা একটা কমন কম্পোজিশানে গানটা এসে দাঁড়ায় যেখানে প্রত্যেক ঘরানার শিল্পীর কিছুনা কিছু করার থাকে। স্বরলিপি নাই বিধায় বিকৃতির সম্ভাবনা তো শুধু ফিউশান নয় যেকোন মূলধারার শিল্পীর পক্ষেইগাইতে গেলে হওয়া সম্ভব।

          সুপিওরিটি কমপ্লেক্সের কথা যে বললাম সেটা আমার ধারণা এবং অনেকাংশে অভিজ্ঞতা। আপনার মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে করা হয়নি।

          একজন ভালো সঙ্গীত পরিচালকের পক্ষে সম্ভব এই দুই মেরুর গুণ ও মানের হানি না ঘটিয়ে নতুন করে কিছু করার। সমস্যাটা হলো সন্দেহপ্রবণতা। হয়তো আপনার পূর্ব অভিজ্ঞতা বলছে ফিউশান করতে দিলেই আমরা গুলিয়ে ফেলি, কিন্তু নতুন করা চেষ্টা করার অবকাশ সবসময় আমাদের আছে। সেক্ষেত্রে সুযোগ না দিলে কিন্তু বোঝা যাচ্ছে না বড় আঙ্গীকে একটা প্রচেষ্টার ফলাফল কোন দিকে যাচ্ছে।

          বললেন যে আজকালকার শিল্পীরা শুধু চায় এ্যাল্বাম বের করতে। আমি বলবো বেশ কিছু অংশে সিনিয়ার শিল্পী ও শিক্ষকেরা দায়ী। তারা হাতে ধরে শেখাচ্ছেন না কিন্তু ভাসা একটা সমালোচনা ঠিকই করে যাচ্ছেন (আমার সুপিওরিটি কমপ্লেক্স থিওরী এখানে ঢুকে যাচ্ছে) সুমী একটা গান উল্টা পাল্টা গাওয়ার পরে কেউ গিয়ে বলছে না এই যায়গায় ভুল করছো ঠিক করো। বলছে যাচ্ছেতাই গাইছে। কোন কিছু ঠিক নাই। কোন এঙ্গেলে কথাটা এনেছি আশা করি বুঝতে পারছেন।

          রক,মেটাল গানের মধ্যে কিন্তু এসবের [সুর, তাল, লয়] কোন বালাই নাই।

          যদি বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে বলে থাকেন কিছু বেশী কিছু হয়তো বলবো না, তবে বড় দাগে বলতে পারি খুব ঢালাও একটা মন্তব্য করেছেন।


          \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
          অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

          জবাব দিন
          • সিরাজ(১৯৯১-১৯৯৭)

            তোমার সাথে হয়তো আমার এ জায়গায় মিলছে না কিন্তু আমাদের উপমহাদেশের গানের ঐতিহ্য অনেক পুরাতন এবং গভীরতাও অনেক বেশী এবং সমৃদ্ধ। তুমি মেটাল বা রক গান দেখাতে পারবেনা যে শত বছরের পুরাতন কিন্ত দেখো রবীন্দ্র সংগীত আজো সমান মহীমা নিয়ে আছে। মিয়া তানসেন সেই রাগ এখনও বেঁচে আছে কয়েকশত বছর পরেও বা ঠুমরি গান,গজল,পূথি পাঠ ইত্যাদি। কিন্ত ভেবে দেখোতো ১০০ বছর পরে কি এলভিস প্রিসলি বা পিন্ক ফ্লয়েডের গানের আবেদন বা চাহিদা একই রকম থাকবে কিনা যেমন আজো আছে অতুল প্রসাদের গানের চাহিদা। সুমি ভুল গাইলে তার ভুল ধরিয়ে দিতে চাইনা কারন আমরা নিজেরাই কিছু জানিনা। আর নজরুল,রবীন্দ্রনাথ,লালন,হাসন রাজা এরা নিজেরাই এক একজন ইন্সটিটিউশন জানার,গবেষনা করার আছে অনেক কিছু।


            যুক্তি,সঠিক তথ্য,কমন সেন্স এবং প্রমাণের উপর বিশ্বাস রাখি

            জবাব দিন
            • সামিয়া (৯৯-০৫)

              ১০০ বছর পর মেটাল বা রকের শত বছরের পুরাতন গান থাকবে, তখন হয়ত রবীন্দ্র সঙ্গীতের অস্তিত্বও থাকবে না। আবার থাকতেও পারে, তবে ভিন্ন রূপে থাকবে তা শিওর।

              জবাব দিন
              • সামিয়া (৯৯-০৫)
                আজকালকার শিল্পীরা শুধু চায় এ্যাল্বাম বের করতে।

                এখন শিল্পী বলতে যদি সালমার কথা বলেন, তাইলে কথা সত্য।

                বাংলা গান, বিশেষ করে বাংলাদেশের গান এখন যারা করছে, তারা কেউই এলবামের দিকে খুব বেশি নজর দেয় বলে মনে হয়। জলের গান, বুনো, আনুশেহ এদের প্রচুর গান আছে কিন্তু এলবাম তেমন নাই। জলের গান তো দশ বারো বছর গান গাওয়ার পর এলবাম বের করল। আবার, এলবামের দিকে নজর দেয়াটাও খারাপ কিছু না, বরঞ্চ ভালই।

                বাজারে কোটি কোটি এলবাম আছে ঠিকই, কিন্তু 'গান'ও হচ্ছে। আসলে এত চিন্তিত হওয়ার কিছু নাই। বাংলাদেশে কাজ হচ্ছে প্রচুর, খুঁজে পেতে হয়।

                এই গানটা শোনেন, অতুল প্রসাদের গান। আমি শুনে মোহিত হয়ে গেছিলাম।

                জবাব দিন
              • সিরাজ(১৯৯১-১৯৯৭)

                ৬০ বা ৭০ দশকের গান গুলো কিন্তু এখনও আধুনিক.এরা আগে ১০০ বা ২০০বছর পার করুক তার পর বোঝা যাবে এর আবেদন কতটুকু থাকে.সামিয়া,তুমি বল্লে ১০০ বছর পর মেটাল বা রকের শত বছরের পুরাতন গান থাকবে, তখন হয়ত রবীন্দ্র সঙ্গীতের অস্তিত্বও থাকবে না। আবার থাকতেও পারে, তবে ভিন্ন রূপে থাকবে তা শিওর।তুমি কি জান রবীন্দ্র সঙ্গীতের অনেক গানের বয়স ১২০ থেকে ১৩০ বছর এবং একই রূপে আছে এখনও.লালনের গানগুলোর বয়স ২০০ বছরের বেশী,হাসন রাজার গানের বয়স ১৪০ বছরের কম নয় এবং আজও অবিকৃত.


                যুক্তি,সঠিক তথ্য,কমন সেন্স এবং প্রমাণের উপর বিশ্বাস রাখি

                জবাব দিন
            • রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

              এলভিস ৬০ এর, পিঙ্ক ফ্লয়েড ৭০ এর।
              আজ ২০১৩ তেও মানুষ এদের গান শোনে।
              :grr:
              সো যারা বস তারা টিকে থাকবেই।
              লেড জেপ্লিনের কনসার্টের জন্য বছর দুয়েক আগে পাবলিক পাগল হয়ে গেছিলো।


              এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

              জবাব দিন
              • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

                ডেডিকেটেড ক্রাউড বলে একটা কথা আছে। সেটা হাজার খানেক থেকে শুরু করে লক্ষাধিক ও হয়। এবং সেটা বংশ পরম্পরায় চলতে থাকে। প্রচুর শ্রোতা আছে বাবা-দাদা শুনতো দেখে ছেলে-নাতী শুনে এবং ভক্ত। নিজের ছেলেবেলা কে খুঁজে পায় গান গুলো শোনার মধ্য দিয়ে। এভাবে চলবেই!


                \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
                অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

                জবাব দিন
            • ফারাবী (২০০০-২০০৬)

              ভাই, এই বিষয়ে আমার জ্ঞান কম, খুবই কম । মূল বিষয়ে আলোচনার ধৃষ্টতায় যাচ্ছি না ।
              শুধু একটা কথা লিখতে লগিন করলাম...
              ...পিংক ফ্লয়েড ১০০ বছর পরে তো থাকবেই, ১০০০ বছর পরেও থাকতে পারে ।

              জবাব দিন
              • ফারাবী (২০০০-২০০৬)

                পর্যাপ্ত জ্ঞান নেই, তবু আরেকটু কথা বলার ধৃষ্টতা দেখাই ।

                আমার মনে হয় সঙ্গীত জিনিসটার ব্যাপকতা অসীম, এবং অসীমই হওয়া উচিত । সঙ্গীত কোন নির্দিষ্ট ৪/৫ ধরনের জীবনবোধ কিংবা দর্শনের কথা বলে না । যেকোন...যেকোন ধরনের চিন্তা, জীবনবোধ বা দর্শন সঙ্গীতের মাধ্যমে প্রকাশ করা সম্ভব । বিভিন্ন মানুষের অনুভূতির প্রকাশও ভিন্ন - আর সেই অনুভূতি প্রকাশের মাধ্যম যখন সঙ্গীত তখন জেনারে বৈচিত্র্য থাকবেই ।

                আর সত্যি বলতে কি, গানের এমন কোন জেনার নেই যেটি সৌন্দর্য্যবিহীন ।

                কালের পরিক্রমায় মানুষের চিন্তাধারা পাল্টাচ্ছে, সবসময়ই পাল্টাবে । গানেও নতুন আরো জেনার আসবে । এটাই তো হওয়া উচিত ।

                সঙ্গীত জগতের স্বর্গীয় সৌন্দর্য্যের একটা বড় কারণ কিন্তু এর বৈচিত্র্য । 🙂

                জবাব দিন
        • রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

          রক,মেটাল গানের মধ্যে কিন্তু এসবের কোন বালাই নাই।

          সম্পূর্ণ দ্বিমত।

          কিছুদিন আগে (প্রায় বছর পর ) পিঙ্ক ফ্লয়েড আর লেড জেপলিন শুনলাম।
          না তথাকথিত সুর, তাল,লয় বা মেলোডির কোন কমতি পাইলাম না।
          অনেক্দিন পর আজ এখন স্করপিয়নস শুনতেছি।
          একৈ কথা কোন কিছুর অভাব বোধ করতেছি না।


          এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

          জবাব দিন
          • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

            আমরা খুব সহজে তুলনায় চলে যাই এবং পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধ টুকু নেই। এখন ভিভালদির সাথে যদি জেপলিন তুলনা দেই তাহলে চলবে নাকি?

            শিল্পীরা যে ফিলারমোনিকের সাথে হেভি মেটাল কনসার্ট করে তাল, লয়, সুর না থাকলে কি করতে পারতো নাকি! সমস্যা হলো এগুলো এড়িয়ে যাই! 🙂


            \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
            অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

            জবাব দিন
    • রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

      সালমার একটা বাসর রাইতে কেথা দিয়া জাইত্তা ধইরা মাইরা ফালা টাইপের গান আছে।
      এরপর ওকে মনে হয় ব্যান করা হয়েছিলো কিছু দিনের জন্য।


      এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

      জবাব দিন
  3. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    যত বারই আমি কোক স্টুডিওর কোন ভিডিও দেখি, প্রথম যে কথাটা আমার মাথায় আসে সেটা হলো আমাদের দেসে কেন এরকম কিছু হয় না 🙁

    সঙ্গীত সম্পর্কে আমার জ্ঞান শুন্যের কোঠায়, নিতান্তই একজন শ্রোতা। সে হিসেবে কোন ধরনের ফিউশনেই আমার কোন আপত্তি নেই, যে যার খুশী মত ফিউশন/এক্সপেরিমেন্ট করুক। সেটা ভাল হয়েছে না জঘন্য হয়েছে সেটা বিচার করবে শ্রোতারা। ভাল হলে কাজগুলো টিকে যাবে আর খারাপ হলে হারিয়ে যাবে এবং নেগেটিভ ফিডব্যাকের কারনে এমনিতেই একসময় এক্সপেরিমেন্টকারীরা থেমে যাবে।


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  4. সামিয়া (৯৯-০৫)

    শুনে দেখতে পারেন,
    স্প্যানিশ ফ্ল্যামেঙ্কো, জ্যাজ সাথে ইন্ডিয়ান ক্লাসিকাল।

    রবীন্দ্র সংগীত, সারগাম সহ রিমিক্স।

    এখানের অধিকাংশ গানে বাংলাদেশের সুরকে খুঁজে পাবেন। একতারা, বাঁশি, চিরচেনা হলুদের বিয়ের গানের সুরের ছোঁয়া, কি নাই।

    আর আনুশেহ এর কথা আর নাই বা বললাম, আনুশেহ যতদিন বেঁচে আছে, বাংলা গানের মৃত্যু হবে না।

    জবাব দিন
  5. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    কে তোকে বানধি দেলাই হিলকি দিলকি খোঁপা হায়রে?
    কে তোকে নজরি লাগায়?
    কে তোকে নজরি লাগায় হে বৃন্দাবন?
    হো হায়রে গো সখি
    কে তোকে নজরি লাগায় হে বৃন্দাবন?

    :boss:


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  6. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    এআর রহমানের পরিচালনায় নেপালী বৌদ্ধ ভিক্ষু অনি চোয়িং ও জর্ডানের শিল্পী ফারাহ্ সিরাজের কন্ঠে শুনলাম ‘জারিয়া’, সেলিম সুলাইমানের পরিচালনায় কৈলাশ খেরের কন্ঠে ‘বিসমিল্লাহ্’, রাম সম্পদের পরিচালনায় গাইলো ‘সুন্দরী কমলা’, রাজস্থানী গানের সাথে ভারতীয় হিপ-হপ ও Rap (বাঙলায় লিখলে হয়ে যায় র্যাপ) মিশিয়ে গাইলো ‘কাট্টে’, পাপনের পরিচালনায় আফ্রিকান নাচুনে তালের সাথে ফাঙ্ক মিশিয়ে গাইলো ‘তওবা’

    লিঙ্ক্গুলা দিয়ে দিলে তো আমরাও শুনতে পারি।


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  7. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    আর যে কোন বাঙালির মতোই পাকিদের সহক ভাবে নিতে পারি না।
    কিন্তু শিল্প বা শিল্পীদের ঘৃণা করা যায় না।
    আলী আজমত (জুনুনের গায়ক), স্ট্রিংস, শাফকাত আমানত আলী, আতিফ আসলাম, রাহাত ফতেহ আলী খান
    আসলেই এরা খুব ভালো গান করে।


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
    • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

      পাকিগুলা কিন্তু ঠিকই তাদের বাউল সম্রাট, কিংবা ওস্তাদ পর্যায়ের গায়কদের এনে গান করিয়ে নিচ্ছে। ভালই হচ্ছে। বর্বর একটা জাতি যদি এটা এত সহজে করতে পারে (ধরে নিচ্ছি বন্দুক ঠেকিয়ে নিয়ে আসে নাই) তাহলে আমাদের এত নাক উঁচা কেন? হাস্যকর!


      \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
      অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

      জবাব দিন
    • সিরাজ(১৯৯১-১৯৯৭)

      এইটাতে সহমত। মানে

      আর যে কোন বাঙালির মতোই পাকিদের সহক ভাবে নিতে পারি না।
      কিন্তু শিল্প বা শিল্পীদের ঘৃণা করা যায় না।
      আলী আজমত (জুনুনের গায়ক), স্ট্রিংস, শাফকাত আমানত আলী, আতিফ আসলাম, রাহাত ফতেহ আলী খান
      আসলেই এরা খুব ভালো গান করে।


      যুক্তি,সঠিক তথ্য,কমন সেন্স এবং প্রমাণের উপর বিশ্বাস রাখি

      জবাব দিন
  8. পারভেজ (৭৮-৮৪)

    অনেক কিছুই প্রথমবার শুনলাম। কোক স্টুডিও থেকে বেশিরভাগ শিল্পির নাম। তবে পার্টিসিপেশন দেখে বুঝতে পারলাম যে সবাই আমার মত এতটা সঙ্গিত বিচ্ছিন্ন না। এটা ভালো।
    প্রথম যখন ইংলিশ গান এলো, মধ্য সত্তরে, বনি এম, অ্যাবা, ডোনা সামার তখন থেকে আমাদের ক্যাসেটে গান শোনার একটা ক্রেজ তৈরি হয়েছিল।
    ক্যাসেট প্লেয়ার বিদায় হওয়ার পর কেন যেন আর সিডিতে অভ্যস্ত হতে পারলাম না। এখনতো এফএম, আইপড, সেলফোনে গান শোনার যুগ। এতে অভ্যস্ত হওয়ার চেষ্টা করা আরও কঠিন।
    হয়তো অত কঠিনও না। আমার মেয়েকে তো দেখি দিন রাত কানে আইপডের এয়ার পিছ গুজে রাখতে।
    শিল্পিদের দুঃখ পেতে দেখি, গান সব হাত বদল হওয়ায়। যেজন্য তাঁরা রয়েলটি পাচ্ছেন না। নতুন গান নামছে না। ইত্যাদি।
    আমার মনে হয়, গান শোনার ধরন বদলে যাওয়ায় এর ডিস্ট্রিবিউশন পদ্ধতি বদলাবার সময় এসে গিয়েছে। এটা নিয়ে ভাবা উচিৎ।


    Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

    জবাব দিন
    • রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

      শিল্পীদের এজন্য পরিচিতির জন্য একটা দুটা ক্য্সেট বের করা উচিত। আর করা উচিত স্টেজ প্রোগ্রাম।

      তবে ভাইয়া গান শোনা থেকে সরে যাইয়েন না।
      ফিতা যুগের পর আমিও গান শুনে আগের মতো টেষ্ট পাই না।
      কিন্তু থেমে গেলে তো হবে না।

      আপনার মেয়ের কাছ থেকে এক দিনের জন্য ধার নিন। ভাতিজিকে বলুন কিছু চৌরাসিয়া, রবিশংকর আর বিসমিল্লাহ খাঁ ভরে দিতে বলুন।


      এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

      জবাব দিন
  9. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    মোকাব্বির গতকাল রাতেই তোদের কলেজের ৭২-৭৮ এর ফয়সাল ভাইএর সাথে ফোনে কথা হলো।
    কি মনে করে ভাইয়াকে বললাম কোক স্টুডিও তে গিয়ে যেকোন একটা প্লে লিষ্ট ছেড়া দিতে।

    কিছুক্ষণ পর ভাইয়া উচ্ছসিত ম্যাসেজ।

    আরো কিছুক্ষণ পর ফোন করলেন।

    ধন্যবাদটা তোর প্রাপ্য। :teacup:


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  10. নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

    মোকা,
    ফিউশন হবে গ্রামের লোকটার মতো, যে গ্রাম্যতা ঝেড়ে ফেলতে সমর্থ হয়েছে কিন্তু তার সারল্য ছুঁড়ে ফেলেনি; চুলে সুগন্ধি তেলের বদলে জেল দিতে শিখলেও হেয়ারস্টাইল আগের মতোই রাখতে পেরেছে - রেগে গেলে চোয়াল শক্ত করা এখনো মজ্জায় রয়ে গেছে।
    আধুনিক/ভিন্ন যন্ত্র ও সুরের মোড়কের ভেতরেও জ্বলজ্বল করবে আসল গানের স্বকীয়তা -- এটুকু আমার জন্যে অপরিহার্য ফিউশনকে হৃদয়ে স্থান দেবার জন্যে।

    জবাব দিন
  11. ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

    বর্তমান সমাজে ফিউশন একটি বাস্তবতা। সেটা গানে হোক, রান্নাতে হোক কিম্বা পোষাকেই হোক না কেন।


    “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
    ― Mahatma Gandhi

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : আহসান আকাশ (৯৬-০২)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।