কিছু একটা লিখতে চাই…অনেকদিন পর…

নানাবাড়িটি মেঘনার ঠিক পাড়েই। আশুগঞ্জ, বি-বাড়িয়া। ছোটখাট আবাসিক এলাকার মত এই নানাবাড়ির শেষ সীমানায় অবস্থিত আমার খালার ৫ তলা অট্রালিকার দো-তালায় আমার থাকা হয় পেশার সুবাদে। মেঘনা কিন্তু বয়ে চলেছে ৫০ গজ পিছন দিয়েই। নিজেকে সৌভাগ্যবান বলতে কার্পণ্য করি না কখনো। ছাদে উঠে প্রায়শই নদী ও তার আশেপাশে দেখার অভ্যাসটা বেশ ভালো ভাবেই গড়ে উঠেছে। এখন আবার শীতের আগমন। শুকিয়ে যাওয়া নদীর উপরে মাছের খোঁজে শ্যেন দৃষ্টিতে টহল দিচ্ছে শিকারী বাজ, চিল কিংবা দুঃসাহস দেখানো আদার বেপাড়ি কাক। এরই মাঝে মামাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে লুকিয়ে সিগারেট খাবার উদ্দেশ্যে ছাদে উঠে মনে হল কবিতা লিখি। দু-চার লাইন করে আবোল তাবোল লিখেছিও। সময়টা অসাধারণ কেটেছে। ঘনিয়ে আসা সূর্যাস্ত, ঝিঁমিয়ে আসা চারপাশ, দানবীয় ধাতব মেঘনা রেলসেতুর উপর দিয়ে হুইসেল বাজিয়ে চলে যাওয়া রেলগাড়ি, পাথর কিংবা তেলবাহী ট্রলার আজকের দিনের মত অভিযান শেষে নোঙরের প্রক্রিয়ায়, এসবই ছিল উপভোগ্য। তবে মাঝে একদিন শিকারী বাজের বোমারু বিমানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে ঠিক আমার মাথায় শৌচ কার্য সম্পন্ন করার বিষয়টি আমার মোটেও ভাল লাগে নি। শত্রুতা ছিলনা।
মাস দুয়েকের চেষ্টায় যা বের হয়ে আসল তা হলো…

আজ সময়ের সাথে স্বপ্নরা যাচ্ছে ভেসে।
তবে আমার এ ঘুম আর ভেঙ্গে কি হবে বল?
অজানা ভালোলাগার পিছে ছুটে আমার কাছে আজ নেই কেউ।
নেই ফিরে যাবার পথ।
এই বন্ধুর পথে বৈরী সময়ে বন্ধুরা যাচ্ছে কমে।
তবু নেই পিছুটান আমার নেই ঘরে ফেরার সময়।

দুঃখ আমার সঙ্গ ছেড়েছে।
জীবিত-মৃতের তফাৎ বোঝেনি।
মৌনতা আজ হার মেনেছে।
আমার থমকে যাওয়ার কাছে।
আমি হাসতে শিখিনি, কাদঁতে পারিনি।
অভিমানের দেয়াল তুলে হয়েছি গৃহবন্দী।

পুনশ্চঃ কবি হওয়া এত সহজ নয় এটাই বুঝে ফেললাম! 🙂

৭৭৩ বার দেখা হয়েছে

৭ টি মন্তব্য : “কিছু একটা লিখতে চাই…অনেকদিন পর…”

  1. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    আসলেই অনেকদিন পরে, আছ কেমন? তোমার ঘরের ভিউ এর কথা শুনে লোভ ই হচ্ছে।

    কবিতা বুঝি না, তবে পড়ে ভালই লাগল।


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : মোকাব্বির (১৯৯৮-২০০৪)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।