ডায়েরীর পাতা থেকে উদ্ধার করা কিছু জঞ্জাল – ৩

কিছুটা অসুস্থ আজকে। সর্দি লেগেছে। আমার অসহ্য লাগে এই রোগটাকে। যাবতীয় অনুভূতি লোপ পায়। ঠিক এখন যেমনটা হচ্ছে। আগামীকাল Principal Assembly বিষয়টা নিতান্তই আরেকটি বিরক্তির উৎস। যেহেতু বাধ্যতামূলক তাই কিছুই করার নেই। আমি আবার পরীক্ষায় ফেল করেছি তাই মনের মাঝে চাপা ভয় কখন নাম ডেকে বসে। রাত বাজে ১১টা। মনটা প্রতিদিনের ধকলের পর দেহের মতই ক্লান্ত। একটা মজার ব্যাপার ঘটেছে। আমি সাধারণত সাধারণ জ্ঞান পরীক্ষায় কোনমতে পাশ করে যাই। এবারেও পেয়েছি ৫০ এ ২৬। কিন্তু এবারে আমি ব্যাচ হাইয়েস্ট মানে ২৬ এর উপরে ৩৬তম ব্যাচের কেউ উঠাতে পারে নাই।

রাতের খাবারে পরটা ছিল। বেশ কয়েকটা খেয়েছি তাই ঘুম বলা যায় উড়ে উড়ে আসছে। কিছুক্ষণের মধ্যে আমাদের অন্য সবার মত আমাকেও মরতে (মঞ্জুরের ভাষ্যমতে) হবে অর্থাৎ ঘুমাতে হবে। পায়ে ব্যথা পেয়েছিলাম কয়েকদিন আগে। চামড়া ছিলে গিয়েছিল কিন্তু ভাল না হওয়ার বদলে আরো খারাপ হয়েছে। যদিও সেটা নিয়ে মাথা ব্যথা নেই আমার। সকালে একাডেমী ব্লকে তেমন কিছু ঘটেনি। ইংরেজী এবং জীববিজ্ঞান খাতা দিল আর আমাদের বিখ্যাত ব্যাটসম্যান ফর্মমাস্টার জনাব ফখর উদ্দিন স্যার ফেল করার জন্য আমাকে কিঞ্চিত ব্যাটিং করল। আসলে ব্যাটিং না বলে নকিং প্র্যাক্টিস বললেই মানানসই হয়।

প্রেপ চলেছে অন্যান্য দিনের মত পোকার ব্যাপক আগ্রাসন, আক্রমন, বিষাক্ত বিকট গন্ধ এবং ভ্যাপ্সা গরমের মধ্য দিয়ে। আন্তঃ হাউস চিত্রাংকন প্রতিযোগীতা চলছে চারুকলা ডিপার্টমেন্টে। কিছুক্ষণ গিয়ে মজা দেখতে এসেছি কি মনে করে। চারুকলা বিভাগ আবার আমাদের কলেজ মিউজিয়াম। বেশ কিছু মজার জিনিস আছে সেখানে। যেমন এখন পর্যন্ত সকল প্রিন্সিপালের ছবি, প্রাচীন প্রস্তর (কোথা থেকে পেয়েছে বুঝতে পারলাম না), ৭০, ৮০ দশকের কলেজের ফটো ইত্যাদি আরো অনেক কিছু। সেগুলো দেখলাম। মজা লাগল। আগের ক্যাডেট, আগের কলেজ সব কিছুই interesting। কোন এক কলেজ প্রিফেক্টের বিশাল বড় জাদরেল গোঁফ দেখলাম। পরে অন্যান্য ছবিতে দেখি আগের অনেক প্রিফেক্টই গোঁফ রাখত।

কিছুক্ষণের জন্য লেখা বন্ধ রাখতে হয়েছিল কারন হাউস মাস্টার হাসিম উদ্দিন স্যার লাইট অফ করতে বললেন। লাইটস অফের সময় হয়ে গিয়েছে বহু আগেই তবুও অন করে রেখেছি। নিয়মে নেই হাহাহাহা…হায়রে নিয়ম…!!! আর লিখতে চাচ্ছি না। গোসল দিয়ে আসা যায় আবার যেতে ইচ্ছে করছে না কারন সর্দি লেগেছে। ভাবছি দাড়ি গোঁফ রেখে দিব যে কয়দিন কলেজে আছি আর পুরো ছুটি। দাড়ি কাটতে বিরক্তি লাগে। ঘুম পাচ্ছে। যাই ঘুমাতে।

১,২৭১ বার দেখা হয়েছে

১৫ টি মন্তব্য : “ডায়েরীর পাতা থেকে উদ্ধার করা কিছু জঞ্জাল – ৩”

  1. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    সাধারন জ্ঞান পরীক্ষাতে ব্যাপক মজা হতো, পোলাপাইন এমন আজগুবি আর ফানি টাইপ উত্তর লেখত :)) :))


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
    • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

      শুকরিয়া...!! 🙂
      রাতে করার কিছু ছিল না। তাই লিখে ফেললাম। তার উপর আমি ইদানিং ঢাকা থাকি না। সপ্তাহ শেষে আসি। আরেকটা ব্লগ লেখার জন্য আগামী সপ্তাহের জন্য অপেক্ষা করতে হত। 🙁


      \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
      অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

      জবাব দিন
  2. মুসতাকীম (২০০২-২০০৮)

    নেক্সট পর্ব তারাতারি দেন । ব্যাপক মজাতো আরেকজনের ডায়েরী পরতে :grr: :grr: :grr: :grr:


    "আমি খুব ভাল করে জানি, ব্যক্তিগত জীবনে আমার অহংকার করার মত কিছু নেই। কিন্তু আমার ভাষাটা নিয়ে তো আমি অহংকার করতেই পারি।"

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : আদনান (১৯৯৪-২০০০)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।