প্লেটোনিক সুপারস্টার হুমায়ূন আহমেদ

সাহিত্য ও সংস্কৃতি দেশ ও জাতির উন্নতির সোপান। কেননা, সাহিত্য মানব সমাজের বিশুদ্ধ ও পরিচ্ছন্ন দর্পণ। যার নিপুণ ছোঁয়ায় পর্যবেক্ষণ তালিকায় উঠে আসে দেশ ও জাতির উন্নতি-অবনতি, ভাল-মন্দ ও সুখ-দুঃখের সচিত্র প্রতিবেদন। এই প্রতিবেদনের উপর পর্যালোচনা ও গবেষণা চালিয়ে সুস্থ ও সভ্য জাতি তাদের ভবিষ্যৎ কর্মধারা নির্ধারণ করে। উন্নতির হাজারো পথ উন্মুক্ত করার নিরলস চেষ্টায় নিরন্তর ব্যস্ত থাকে। অপর দিকে, যে কোন জাতির ইতিহাস, ঐতিহ্য, সভ্যতা সে জাতির সাহিত্য ও সংস্কৃতির আশ্রয়েই বেঁচে থাকে, সংরক্ষিত থাকে। তীব্র প্রতিযোগিতার এই আধুনিক পৃথিবীতে কোন জাতিই আপন ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সভ্যতার আলোকিত অধ্যায় ছাড়া টিকে থাকতে পারে না। তাই এসব উপাদান পরবর্তী জাতির পথ চলার বহুমুখী উন্নতি সাধন করার প্রধান মাইল ফলক ও গুরুত্বপূর্ণ উপজীব্য হিসেবে বিবেচিত হয়।

এমনিভাবে, প্রতিটি যুগ ও সময় সমসাময়িক লেখক, সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের দ্বারা প্রভাবিত থাকে, হাল আমলের সাহিত্য ও সংস্কৃতির দ্বারা আক্রান্ত থাকে। কেননা দেশ ও জাতির প্রধান পরিচালিকা শক্তি শিক্ষিত সমাজ সচেতন জনগোষ্ঠী লেখক, সাহিত্যিক, গবেষক ও বুদ্ধিজীবীদেরকে তাদের অনুসৃত ও প্রদর্শিত মত, আদর্শ ও দৃষ্টিভঙ্গি জীবন পথের নির্ভরযোগ্য পাথেয় হিসেবে বরণ করে। এসব বরেণ্য ও অনুকরণীয় মনীষীগণের সুস্থ, সুন্দর, বিশুদ্ধ মানসিকতার রৌশনীতে বিদগ্ধ মানুষের হৃদয় জগতকে আন্দোলিত, আলোড়িত করে, তরুণ-তরুণীর মননে আদর্শিক মূল্যবোধ সৃষ্টি করে, আলোকিত পরিচ্ছন্ন জীবনে উৎসাহিত করে। অধঃপতিত জাতিকে উন্নতির হিমালয় জয় করতে প্রেরণা যোগায়। আধুনিক বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার যোগ্য বানায়। সর্বোপরি একটি সুন্দর ও আদর্শ জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবার হাজারো পথ খুলে যায়। আর সেসব সাহিত্য, সংস্কৃতি ও তাদের ধারক বাহকরা যুগে যুগে মানুষের বিনম্র শ্রদ্ধা ও বিশুদ্ধ ভালবাসায় সিক্ত হয়, পরমাদরে সমাদৃত হয়।

কিন্তু সে সব মনীষী, ব্যক্তিবর্গ যদি সত্য ও সুন্দরের নয় বরং মিথ্যা ও অসুন্দরের পূজারী হয়, নীতি ও আদর্শের নয় বরং ভ্রান্তি ও কদর্যের সেবক হয়, মানবিক ও বাস্তবিক আবেদন সংক্রান্ত নয় উদ্ভট ও বিদঘুটে কল্পকাহিনীতে প্রবৃত্ত হয়, মানব কল্যাণে নিবেদিত জনস্বার্থ সংরক্ষণ নয় বরং অর্থ, নারী, নেশা, লোভ, চরম আত্নস্বার্থ চরিতার্থকারী অন্ধপথের পথিক হয়, তাহলে দেশ, জাতি ততটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জাতির সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ শোচনীয়ভাবে বিপর্যস্ত হয়। তরুণ ছাত্র সমাজ বিভ্রান্ত হয়, জ্ঞানী-গুণীজনদের বিবেক স্তম্ভিত হয়, বিনষ্ট ভাইরাস বিস্তারে নিমগ্ন হয়। সারকথা, গোটা জাতি অনাকাঙ্খিতভাবে এক তমসাচ্ছন্ন গন্তব্যের দিকে ধাবিত হয়। আপন ইতিহাস-ঐতিহ্য, শিক্ষা ও সংস্কৃতির গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় মুখ থুবড়ে পড়ে রয়। অবশ্য সভ্যতা বিধ্বংসী সেসব সাহিত্য সংস্কৃতি ও তাদের রূপকাররাও একসময় ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়। হাজার বছরের ইতিহাসে তার অসংখ্য প্রমাণ বিদ্যমান।

আমরা যে দেশ ও সমাজে বাস করি, তার দিকে তাকালে এই দুঃখজনক তিক্ত সত্যটাকে অবলীলায় স্বীকার করতেই হবে, আমাদের সাহিত্য ও সংস্কৃতির সিংহভাগ-গুরুত্বপূর্ণ অংশ আজো অভিশপ্ত মনীষীদের অন্ধকার কারাগারে অসহায়ভাবে বন্দি হয়ে আছে। তাদের বিনষ্ট মানসিকতার বিষ উদগীরণ করছে, উদ্ভট চিন্তা চেতনার জীবাণু বিস্তার করছে, গর্হিত নীতি ও আদর্শের দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। ফলে তরুণ-তরুণীরা হচ্ছে দিকভ্রান্ত, সর্বোচ্চ শিক্ষাঙ্গনেও শিক্ষক সমাজ তাদের আদরের শিক্ষার্থীর দ্বারা হচ্ছে লাঞ্ছিত। জাতির ভবিষ্যৎ কর্ণধার শিক্ষার্থীরা ওপেন সিক্রেট নারী ও নেশা নিয়ে মত্ত হচ্ছে। ধর্ষণের সেঞ্চুরি করে মিষ্টি বিতরণ করে স্থাপন করছে আধুনিক সভ্যতার অভূতপূর্ব চিত্র। আদর্শের জন্মভূমি এখন অসভ্যতার পালনভূমি। যাদের চিত্তাকর্ষক সাহিত্যের খপ্পরে, বুদ্ধিদীপ্ত কলমের আঁচড়ে, দেশের সর্বত্র জুড়ে যথারীতি এসব অঘটন ঘটছে, সুস্থ সুন্দর নির্মল পরিবেশ মারাত্মকভাবে বিনষ্ট হচ্ছে, সেই উদ্ভট তারকাদের অন্যতম নেপথ্য নায়ক কথা শিল্পী হুমায়ূন আহমেদ।

লেখক হিসেবে হুমায়ূন আহমেদ তারকা খ্যাতির শীর্ষে যান বিটিভির জন্যে তার লেখা কয়েকটি ধারাবাহিক নাটকের জন্যে। বিভিন্ন টিভি চ্যানেলেও তার বিপুল সংখ্যক নাটক সম্প্রচারিত হয়েছে। জাপানের এনএইচকে টিভি তার জীবন ও কর্ম সম্পর্কে একটি প্রামাণ্য চিত্র তৈরি করেছে। তার লেখালেখি এবং টিভি নাটক সম্পর্কে বিভিন্ন সাপ্তাহিক পত্রিকায় বেশ কয়েক ডজন প্রচ্ছদ কাহিনী প্রকাশিত হয়েছে যার প্রায় সবগুলোতেই হুমায়ূনের কাজের উচ্ছ্বসিত প্রশংসাই হয়েছে। এক তরফাভাবে তার গুণকীর্তন বর্ণনা করা হয়েছে, সাফাই গাওয়া হয়েছে। কিন্তু তার এতসব সৃষ্টিশীল চরিত্রের পাশাপাশি যে তার কিছু কুৎসিত বিতর্কিত নেপথ্য চরিত্রও আছে, তা বরাবরই আড়ালেই রয়ে গেছে, কিংবা লেখকরা কৌশলে তা এড়িয়ে গেছেন এবং কখনো তাতে মিথ্যার আবরণ ঢেলে দিয়েছেন। যথার্থ সত্য লুকানোর অপরাধে এসব লেখকরা বিবেকের দায়ে দায়ী থাকবেন।

হুমায়ূন আহমেদ একজন উঁচুমানের লেখক সাহিত্যিক ও বরেণ্য ব্যক্তিত্ব হলেও তার মেধা ও মনন যে কতটা রোগাক্রান্ত, তার দ্বারা সংঘটিত বিভিন্ন যৌন কেলেঙ্কারি ও পরনারী আসক্তির ঘটনা থেকেই তা প্রতীয়মান হয়। হুমায়ূন আহমেদ পরকীয়া প্রেমে মজে ২৮ বছরের বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন। কোন কোন সাপ্তাহিক এটাকে সফল মানুষের সেরা নষ্টামী বলে অভিহিত করেছে। সঙ্গত কারণে পুরুষ মানুষ একাধিক বিবাহ অর্থাৎ একই সময়ে চারটি পর্যন্ত বিবাহ করতে পারে। এটা ইসলামের দৃষ্টিতে কোন দোষের বিষয় নয়। তবে চারজন স্ত্রীর মাঝে সমতা বা ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করা আবশ্যক। হুমায়ূন আহমেদ প্রয়োজনে তার মেয়ের বয়সী মেয়ের বান্ধবী কিংবা বয়সে ষোড়শী কোন কনেকে নিকাহ করলে দোষের কিছুই নেই। দোষের বিষয় হল, বিবাহ পূর্ব সম্পর্ক স্থাপন যা বিছানা পর্যন্ত গড়ায়। হুমায়ূন আহমেদ বাইরে আলোকিত সফল মানুষের দাবিদার হলেও তার ভিতরটা খুবই অন্ধকার,কুশ্রী। তার জীবনে পরনারী আসক্তির অসংখ্য অশ্লীল ঘটনাই এর প্রমাণ বহন করে। একজন পুরুষের চারিত্রিক সার্টিফিকেটের বিশুদ্ধতার ব্যাপারে তার স্ত্রীর অভিব্যক্তি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অথচ হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী তার ঘনিষ্ঠজনদের কাছে বলেন, ষোড়শী অবিবাহিত তরুণীদের উপর বরাবরই তার প্রচণ্ড আসক্তি। আশ্চর্যের বিষয় হল, তার বেশির ভাগই হুমায়ুন আহমেদের বন্ধু কন্যা। স্ত্রী গুলতেকিন বলেন, মেয়েগুলোর সাথে সম্পর্কের ব্যাপারে কোন প্রতিবাদ করলেই তাকে নির্যাতিত হতে হয়েছে। এতে বুঝা যায়, হুমায়ূন আহমেদ শুধু জন-নন্দিত ঔপন্যাসিকই নন, স্ত্রী নির্যাতনকারীও বটে।

“তালাক” শব্দটির সাথে ধর্ম-বিমুখ সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের বৈরিতা ও বিরোধিতা ছিল বরাবরই। ইসলাম তালাক প্রথা রেখেছে বিশেষ প্রয়োজনে, বিশেষ ব্যবস্থা হিসেবে। ধর্মে যতগুলো বৈধকাজ আছে তার মধ্যে সর্বনিম্ন স্তরের বৈধ কাজ হলো “তালাক প্রথা”। তাই তালাকের প্রতি ইসলাম মানবজাতিকে নিরুৎসাহিত করেছে। অথচ হুমায়ূন সাহেব পরিশেষে সেই অসহ্য-অসুন্দর শব্দটি নিজেকে সেফ করার জন্য ব্যবহার করেছেন।। তার এই কৌশল প্রয়োগ ধর্মীয় একটি ব্যবস্থার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ দেখিয়ে বরং জনগণের রোষানল থেকে আত্মরক্ষা এবং আপন কদর্য চরিত্রকে পরিচ্ছন্ন দেখানোর হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য। অথচ সুদীর্ঘ ২৮ বছরের দাম্পত্য জীবন এবং চারটি সন্তানের দিকে তাকিয়ে তিনি এ চতুরতাপূর্ণ সিদ্ধান্ত না নিলেও পারতেন। তার বয়োবৃদ্ধ কামুক মনোভাব যে তার উপর প্রাধান্য বিস্তার করে বসেছে, শাওনের পরকীয়ার কাছে যে তার মানবিকতা, চিন্তা ভাবনার স্বচ্ছতা পদদলিত হয়েছে, পরাজয়বরণ করেছে! অবশ্য গুলতেকিনের সাথেও হুমায়ূন জীবনের আরেক নষ্ট উপাখ্যান, কলুষিত অধ্যায়।

হুমায়ূন আহমেদের জীবনে কিশোরী প্রেমের প্রবণতা ক্রমাগত তাদের দাম্পত্য জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছিল। তার লিখিত গল্প উপন্যাস ও নাটকের দিকে তাকালেও তার কিশোরী আসক্তির ব্যাপারটি আঁচ করা যায়। কেননা গত চার দশকে হুমায়ূন যে শত শত উপন্যাস লিখেছেন, তার বেশির ভাগেই কোন না কোন কিশোরী চরিত্র ছিল। কিশোরীদের সুখ-দুঃখ, প্রেম-ভালবাসার কথা তিনি তুলে ধরেন অপরিসীম মমতার সাথে। তিনি যেসব টিভি নাটক ও চলচ্চিত্র বানিয়েছেন, তার প্রায় প্রতিটিতেই রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ কিশোরী চরিত্র যেখানে অভিনয়ের জন্য তিনি একঝাঁক কিশোরী মেয়েকে অভিনয়ের সুযোগ করে দিয়েছেন। পাশাপাশি আপন অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার পথও সহজ সুগম করেছেন।

শাওনের সঙ্গে হুমায়ূন আহমেদের প্রেম রোমান্স সম্পর্কে যখন গরম গুঞ্জন উঠেছে, তার আগেও হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে একাধিক কিশোরী তরুণীর বিশেষ সম্পর্কের কাহিনী পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। “অয়োময়” এবং “বহুব্রীহি” নাটকের এক অভিনেত্রীর সঙ্গে হুমায়ূন লালমাটিয়ার এক বাসায় লিভ টুগেদার করতেন বলে নির্ভরযোগ্য এক সূত্রে অভিযোগ করা হয়। নুহাশ চলচ্চিত্রের এক সেক্রেটারির সঙ্গেও তার সম্পর্ক নিয়ে নানা কাহিনী পত্রিকায় এসেছে। হুমায়ূন, শাওন এবং শাওন পরিবারের পক্ষ থেকে স্বীকার না করলেও বেশ ক’বছর শাওনের সাথে প্রেম চালিয়ে হুমায়ূন শাওনকে গোপনে বিয়ে করে ফেলেছেন বলে যখন চাঊড় হয়-এ ব্যাপারে হুমায়ূন আহমেদকে স্পষ্ট কিছু জিজ্ঞেস করলে তিনি ক্ষিপ্ত হন। এর আগে হুমায়ূন আহমেদ একজন রিপোর্টারকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “আমি সব কথা খোলাখুলি বলব না। আমি একজন শিল্পী। শিল্পীরা সব কথা খোলাখুলি বলে না। তারা কভার ব্যবহার করেন। বিবাহিত জীবনের বাইরে আমার কারো সাথে ‘প্লেটোনিক লাভে তো দোষের কিছু নেই”। প্রকৃতার্থে প্লেটোনিক লাভের ধুঁয়া তুলে হুমায়ূন আহমেদ নোংরা লিভ টুগেদারকে বৈধ করার অপপ্রয়াস চালিয়েছেন, পশ্চিমা ধাঁচের অশ্লীল জীবন-যাপনকে বিতর্কের ঊর্ধ্বে তুলতে ফন্দি এঁটেছেন। যা একজন প্রথম শ্রেণীর লেখক-সাহিত্যিকের জন্য বড়ই লজ্জাজনক ব্যাপার।

হুমায়ূনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ একটি সূত্রে জানা যায়, শাওনকে নিয়ে শুটিং করতে গিয়েছিলেন হুমায়ূন টাঙ্গাইলের এক গ্রামে। সেখানে শাওনের সঙ্গে হুমায়ূনের ঘনিষ্ঠতা বেডরুম পর্যন্ত গড়ায়। এই অবস্থায় সেটের লোকেরাই ঘটনার খবর হুমায়ূনের স্ত্রী গুলতেকিনকে জানান। গুলতেকিন সাথে সাথে সেখানে ছুটে যান এবং শাওনকে কড়া বকুনি দেন। কিন্তু এরপরেও শাওনের সঙ্গে হুমায়ূনের অবৈধ প্রেমের সম্পর্কে কোন ভাটা পড়েনি। শাওনের সাথে হুমায়ূনের মেলামেশা এমনকি লিভ টুগেদার যথারীতি অব্যাহত রয়েছে, তারা একসঙ্গে সিনেমা দেখছে, বিভিন্ন অনুষ্ঠান করছে, সমুদ্র সৈকত দূরের শহর কিংবা গ্রামে আউটিংয়ে যাচ্ছে। হুমায়ূনের মাথায় এ সহজ সত্যটি মোটেই কাজ করছে না যে, এদেশের সহজ সরল ধর্মপ্রাণ মানুষ বিজাতীয় নোংরা সংস্কৃতির লালনকারীদেরকে সুনজরে দেখে না, বরং রাশি রাশি ঘৃণা তাদের প্রতি সর্বদাই নিক্ষিপ্ত হয়। যদিও নোংরা সংস্কৃতির ধারক-বাহক-সমর্থক একটি গোষ্ঠী এদেশেও আছে। কিন্তু সভ্যসমাজ তাদেরকে নর্দমার কীট বলেই জ্ঞান করে, দেশ ও জাতির ‘অবাল’ হিসেবেই বিবেচনা করে।

হুমায়ূন আহমেদের নির্লজ্জ অশ্লীল জীবনযাপন ও ক্রমবর্ধমান চারিত্রিক নোংরামি নিয়ে বিভিন্ন সাপ্তাহিক, মাসিক ও দৈনিক পত্র-পত্রিকায় অনেক লেখালেখি হয়েছে। লেখক, সাহিত্যিক, গবেষকগণ খোলামেলা মতবিনিময় করেছেন। সমালোচনার ঝড় তুলেছেন হুমায়ূন আহমেদের নষ্টামি নিয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষক ড. মোঃ ইসরাফিল শাহিন বলেন, “হুমায়ূন আমাদের শিক্ষক কমিউনিটিকেও ডুবিয়েছেন। সমাজে যে ভাবমূর্তি তার তৈরি হয়েছিল, সেটা সম্ভব হয়েছিল তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন বলেই। কিন্তু এখন তার সম্পর্কে যেসব কথা শোনা যাচ্ছে, তা আমাদের জন্যেও লজ্জার”। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রফেসর বিতর্কিত নাস্তিক লেখক ভাষা বিজ্ঞানী ড. হুমায়ূন আজাদও আক্রমণ করতে ভুলেননি হুমায়ূন আহমেদকে। বরং ড. আজাদ তো হুমায়ূনকে ভাল মনের কোন লেখক হিসেবেই পাত্তা দিতে চাননি। তিনি বলেন, “ও একটা নিকৃষ্ট শ্রেণীর লেখক। সেভেন এইটে পড়া মেয়েদের আবেগ হচ্ছে ওর পূঁজি। এই নিয়ে সে লেখক বনে গেছে। সাংবাদিকরা তাকে নিয়ে মাতামাতি করায় তার সুবিধা হয়েছে। এধরনের লেখকদের দৌরাত্ম্য থেকে মুক্তি পাবার পথ হচ্ছে এদের এড়িয়ে চলা। এদের সম্পর্কে মন্তব্য না করা। ওর লেখার সাহিত্য মান নিয়ে আলোচনার প্রশ্নই উঠেনা”।

বিশিষ্ট লেখক, কলামিস্ট ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আইনুদ্দীন আল আজাদ লিখেন, ”সাংস্কৃতিক জগতের হার্টথ্রব সুপারস্টার হুমায়ূন আহমেদ। যার নাম শুনলে এই প্রচলিত সংস্কৃতি সেবীরা ভাত-পানি খাওয়া ছেড়ে দেয়। এই মহানায়কের (?) ব্যাপারে একটি জাতীয় দৈনিক লিড নিউজ করেছিল, হুমায়ূন আহমেদের নিজের মেয়ের বান্ধবীর সাথে অবৈধ সম্পর্কের ফিরিস্তি নিয়ে। চরিত্র বলতে যার কোন বালাই নেই। লাজ শরমের কোন হিসেব কিতাব যার কাছে মোটেও নেই, সে আদৌ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হতে পারে না। এ জাতীয় চরিত্রহীন যৌন পাগলদের নাম সংস্কৃতিতে মেশানো হলে সংস্কৃতি শব্দকে কলঙ্কিত করা হবে”।

প্রবীণ কলামিস্ট, গবেষক ও বুদ্ধিজীবী শাহ আহমদ রেজা বলেন, পৃথিবীর সবচেয়ে অসভ্য ও চরিত্রহীন মানুষের দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনও তার আত্মজীবনীতে মেয়ের বয়সী মনিকা লিউনস্কির সঙ্গে অবৈধ ও অনৈতিক সম্পর্কের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এর মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মত দেশেও এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে গর্হিতই মনে করা হয়। অন্য দিকে হুমায়ূন আহমেদ ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে অপকর্ম তো করেছেনই; নিজের পক্ষে সাফাই গাওয়ারও হাস্যকর ও অগ্রহণযোগ্য অপচেষ্টা চালিয়েছেন। শুধু মুসলমানের কথাই বা বলি কেন, বাংলাদেশের কোন ধর্মাবলম্বীদের কাছেই হুমায়ূন আহমেদের এসব কর্মকাণ্ড সমর্থিত হবে না। কারণ, সকলেই কিছু মূলনীতি মেনে চলে- যেখানে এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে অনৈতিক ও অবৈধ বিবেচনা করা হয়। শাহ আহমদ রেজা অন্যত্র লিখেন, হুমায়ূন আহমেদকে বুঝতে হবে যে, তার কারণে বিশেষ করে তরুণ সমাজ নষ্ট ও চরিত্রহীন হয়ে যেতে পারে। প্রিয় লেখকের মত পা বাড়াতে পারে নীতিহীন ও কদর্য জীবনের দিকে। এমন অবস্থা কোন সভ্য জাতির পক্ষেই গ্রহণ করা সম্ভব নয়। সাথে সাথে হুমায়ূন আহমেদকে একথাও মনে রাখতে হবে, তিনি যত বড় লেখক আর সেলেব্রিটিই হয়ে থাকুন না কেন, তিনি যদিও আকাম-কুকাম করতে পারেন, তাহলে সাংবাদিকদেরও একশ ভাগ অধিকার রয়েছে সেসব বিষয়ে লেখার, লিখে জনগণকে জানানোর ও সতর্ক করার। এখানে “হলুদ সাংবাদিকতার’ প্রশ্ন আসে কিভাবে? একজন লেখক হয়েও হুমায়ূন কিভাবে “নোংরা” কলমের কথা বলার সাহস পেলেন? আমরা অবশ্য কথা বাড়াতে চাই না। না হলে বলা যেত, প্রায় বার্ধক্যে এসে প্রেমে পড়ে তার মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তিনি এমনকি কাণ্ডজ্ঞান পর্যন্ত হারিয়ে ফেলেছেন।

বাংলা একাডেমীর একজন কর্মকর্তা হুমায়ূনের নাম শুনে কেঁদে ফেললেন। তিনি বললেন, “ও একটা সাধু বেশী শয়তান। সে তার বন্ধুর মেয়েকে নিয়ে পর্যন্ত যাচ্ছেতাই আচরণ করেছে। নাটকের নাম করে মেয়ে পটানো তার নেশা”। হুমায়ূন আহমেদের অশ্লীলতা, বেহায়া-বেলেল্লাপনার অনুল্লিখিত তথ্যের বিরাট দফতর এখনো আমাদের হাতে মজুদ আছে। তবে আমরা সেদিকে আর যাচ্ছি না। কিন্তু সংক্ষিপ্ত ভাবে অন্তত একথাটুকু মনে রাখা দরকার, যে বুদ্ধিজীবী পরকীয়ার আসক্ত, বহুগামিতায় পারদর্শী ও লিভ টুগেদারে অভ্যস্ত, এমন লেখকের অনুসরণ, অনুকরণ ও ভক্ত হওয়া দেশবাসীর জন্য আদৌ কোন শুভ লক্ষণ নয়। এসব জ্ঞানপাপীরা এদেশের হাজার বছরের ঐতিহ্য পরিবার প্রথাকে উচ্ছেদ করে পাশ্চাত্যের নগ্ন কৃষ্টি-কালচারকে চালু করতে চায়।

একগুচ্ছ শিকড় বিচ্ছিন্ন, ভিত্তিহীন, গোঁড়া লজিকই হলো যার জ্ঞান-বিজ্ঞান আর শিক্ষা-দীক্ষার মূল উপাদান ও উপজীব্য, তার কাছ থেকে তো আর বিশুদ্ধ ধার্মিকতা আশা করা যায় না, দ্বীন ধর্মের বিন্দু কর্ম সম্পাদনের কল্পনাও করা যায় না। ধর্মের জন্য একটি অক্ষর লিখার একটি বাক্য বলার স্বপ্নও দেখা যায় না। অশ্লীলতার গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে নিজের কলঙ্কিত ইতিহাসের অভিশপ্ত রূপকার হুমায়ূন আহমেদ ধর্ম-কর্মের ব্যাপারে, পবিত্র ইসলামী জীবন ব্যবস্থার ব্যাপারে নানা আপত্তিজনক বক্তব্য দিতেও কুণ্ঠা করেননি। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ জীবন ব্যবস্থা ইসলাম সম্পর্কে তার হাস্যকর অনাকাঙ্ক্ষিত অজ্ঞতাই এর কারণ না নাস্তিকতার তমসাচ্ছন্ন মন মানসিকতায় সৃষ্ট দুষিত ভাইরাস-ই এর কারণ তা ঠিক বুঝা যাচ্ছে না। কারণ যাই হোক, এদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ কখনো কোন নাস্তিকতাকে, ধর্মের ব্যাপারে আক্রমণাত্মক কথাকে হাসি মুখে গ্রহণ করে না। বরং এসব অপলাপ জনমনে তপ্ত ক্রোধ আর ক্ষোভই উদগীরণ করে।

হুমায়ূন আহমেদের অধর্ম চর্চার আরেকটি জঘন্যতম দিক হল “আস্তিকতার বর্ম পরে নাস্তিকতা রপ্ত করা”। কেননা ভেজালকে ভেজাল বলে চালানো দোষনীয় নয়, কিন্তু ভেজালকে খাঁটি বলে চালানোর অপচেষ্টা বড়ই জঘন্য অপরাধ। তেমনি হুমায়ূন আহমেদের মূল চরিত্রও ধর্মীয় বিষয়ে প্রতারণা মূলক একটি জঘন্য ভূমিকার প্রমাণ মেলে। যা তিনি জনগণের রোষানল থেকে মুক্ত থাকার জন্য সুকৌশলে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছেন। কেননা, হুমায়ূন আহমেদ যখন তখন জনসমক্ষে সাফ সাফ বলে বেড়ান তিনি আস্তিক। জন-নন্দিত জাতীয় সাপ্তাহিক পূর্ণিমার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারেও তিনি বলেন, নিয়মিত না হলেও অনিয়মিতভাবে তিনি ধর্মকর্ম করেন। ইসলামের মূল দর্শণে তিনি বিশ্বাসী। ব্যক্তিগত জীবনে ধর্মের প্রয়োজন আছে বলে স্বীকার করেন। সিলেটে বিতর্কিত অনশন করতে গিয়ে শাহজালাল (রাহঃ) এর মাজার জিয়ারত করেন। কিন্তু দৈনিক প্রথম আলোর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তার রূপ ছিল ভিন্ন রকম। তিনি বলেন, “সামনের যে আধুনিক পৃথিবী আসবে, সে হবে ঈশ্বরমুক্ত পৃথিবী”। এই সাক্ষাৎকারে নাসির আলী মামুনের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, “ঈশ্বরমুক্ত পৃথিবী মানে মানুষ নিজেই অসম্ভব শক্তিশালী। মানুষ সবকিছুই করতে পারে বিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে“। নাসির আলী মামুন পাল্টা প্রশ্ন করেন, “একটু আগেই বললেন যে, ঈশ্বরমুক্ত পৃথিবী, কিসের উপর ভিত্তি করে কথাগুলো বললেন?” জবাবে হুমায়ূন বলেন, “বিজ্ঞানের উপর। বিজ্ঞান আমাদের হাতের কাছে থাকতে মানুষ অসহায় থাকবে এটা হতে পারে না”।

বিজ্ঞান মানুষের অনেক অসাধ্য সাধন করেছে। অনেক দুর্লভ বস্তুকে সুলভ করে দিয়েছে। গভীর সমুদ্রে, দুর্গম মাটির নিচে, বিশাল নভোমণ্ডলের অজানা বিস্ময়কর সব তথ্য উদঘাটনে সাহায্য করেছে। দূরের মানুষের কথা এক পলকেই দেখার-শোনার ব্যবস্থা করেছে। সর্বোপরি বিশ্বকে হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে। বস্তুকেন্দ্রিক উন্নতি পর্যন্ত-ই শেষ নয়। বিজ্ঞানের কল্যাণে বিশ্ব-নন্দিত দার্শনিক, ঐতিহাসিক ও বৈজ্ঞানিক ড, মরিস বুকাইলি’র মত বিদগ্ধ গবেষক নাস্তিকতার অন্ধকার থেকে আস্তিকতার, একেশ্বরবাদিতার আলোকিত ঠিকানা খুঁজে পেয়েছে। বৈজ্ঞানিকের গবেষণায় বিজ্ঞান নিজেই ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রমান করে। কিন্তু হুমায়ূন আহমেদের মত একজন উদ্ভট ভূত পেত্নীর কিচ্ছা-কাহিনীর লেখক কিভাবে বিজ্ঞানের উৎকর্ষ সাধিত পৃথিবীতে ঈশ্বরের প্রয়োজনকে অস্বীকার করার দুঃসাহস দেখালেন! কিংবা বিজ্ঞানের উন্নতির সাথে ঈশ্বরহীনতার সম্পর্ক তিনি কোথায় পেলেন? ঈশ্বরমুক্ত পৃথিবী গড়ার স্বপ্নই বা কেন দেখলেন? এটা তার কোন বৈজ্ঞানিক রিসার্চের কু-ফল, তা বোধগম্য নয়। তাই এসব অবান্তর কথাবার্তার দ্বারা তার মনের কোণে লুকিয়ে থাকা নাস্তিকতার দুর্গন্ধ-ই বিচ্ছুরিত হয়।

খুব নামি-দামী জ্ঞানী-গুণী মানুষের কথা নয়, একজন সুস্থ মস্তিস্কের সাধারণ মানুষও ধর্ম-কর্মের কাজ যতটুকুই করুক না কেন, ধর্মীয় কাজ-কর্মের প্রতি, কথাবার্তার প্রতি, ধর্মীয় পরিভাষার প্রতি, ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ শব্দাবলীর প্রতি অগাধ ও বিশুদ্ধ শ্রদ্ধাবোধ থাকে, এটা তার ধর্মীয় একটি সহজাত ও সাধারণ আবেদন, পবিত্র প্রবৃত্তি। রবি ঠাকুর, বঙ্কিম থেকে নিয়ে সব ধর্মাবলম্বী কবি, সাহিত্যিক, গবেষকরাই এই প্রবৃত্তিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে, এর প্রতি বিশুদ্ধ শ্রদ্ধাবোধ জানিয়েই নিজেদের লেখালেখি, গবেষণা ও যাবতীয় সৃষ্টিশীল কাজকর্ম সম্পাদন করেছেন। কিন্তু হুমায়ূন আহমেদ পারেন নাই ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ বিষয়াসয়ের ও শব্দাবলীর প্রতি গুরুত্ব দিতে, শ্রদ্ধা দেখাতে। শ্রদ্ধাবোধ না দেখিয়ে চুপচাপ ভদ্র-অভদ্র কিছুই না সেজে লেখালেখি চালিয়েছেন তাও কিন্তু নয় বরং এসবকে কলঙ্কিত করেছেন, অপমানিত করেছেন ন্যক্কারজনকভাবে। ‘নেক মর্‌দ’ মাদ্রাসা মসজিদে ইসলামী পরিবেশে একজন ভাল, ভদ্র ও সৎ মানুষকে বলা হয়। অথচ হুমায়ূন “তোমাদের এই নগরে” উপন্যাসে একজন নাপিতের নাম রেখেছেন ‘নেকমর্দ’। একই উপন্যাসের অন্য এক জায়গায় লিখেছেন, “এই বাড়ীতে মর্জিনার নাম যতবার নেয়া হয় আল্লার নামও ততবার নেয়া হয় না”। অন্যত্র থানার এক ওসিকে প্রায় ঈশ্বর বানিয়েছেন এভাবে: “আপনি তো স্যার মোটামুটি ঈশ্বরের কাছাকাছি চলে গেছেন, ঈশ্বর যেমন সব জানে, আপনিও তেমন সব জানেন”।

হুমায়ূন আহমেদের আরেকটি উপন্যাস ‘নবনী’। এতে দেখা যায় পাঞ্জাবী-পাজামা পরা এক কলেজ শিক্ষককে নিয়ে ছাত্রীরা হাসাহাসি করে। তাকে দেখে সবাই দলবেঁধে চিৎকার করে, “আসসালামো আলাইকুম” বলে উপহাস করে, তার পোশাক-আশাক নিয়ে বিদ্রূপ করে, বেহেশ্‌তে সুন্দর পরীর বিষয়ে কটাক্ষ করে। এই সমস্ত পবিত্র বিষয়কে হুমায়ূন আহমেদের কলঙ্কিত করার কারণ হল, তার নিজস্ব জীবন যেমন কলঙ্কিত, দিল দেমাগ মস্তিষ্কও তেমন বিকৃত। আপন ইতিহাস ঐতিহ্য সংস্কৃতির প্রতি তার মোটেও গুরুত্ব নেই। ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি বিন্দুমাত্র শ্রদ্ধাবোধ নেই। তাই ইতিমধ্যেই ধর্মপ্রাণ লক্ষ-কোটি মানুষ হুমায়ূন আহমেদকে মন দিল থেকে ঝেড়ে ফেলে দিয়েছেন। ইসলামের শাশ্বত জীবন ব্যবস্থা ব্যক্তিগত জীবন ছাড়াও পারিবারিক সামাজিক, অর্থনৈতিক, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জীবনেও যে সুখ-শান্তি-সমৃদ্ধি ও বহুমুখী ঈর্ষণীয় সফলতার সুশীতল সমীরণ বইয়ে দিতে পারে, এ কথা ও দাবীর সূর্যসম সত্যতা আজ নয় ১৪শ বছর পূর্বেই প্রমাণিত হয়েছে, প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই সত্যের সুন্দর শক্তিশালী প্রতিষ্ঠা বিশ্বের বিদগ্ধমহলকে বিস্ময়াভিভূত করেছে, আলোড়িত করেছে। ১৪শ বছর ধরে এই অপ্রতিদ্বন্দ্বী সত্যের স্বীকৃতি পৃথিবীর সব প্রখ্যাত মনীষীরাই দিয়ে আসছেন।

ইসলামের আলোকিত কোরআনী জীবন ব্যবস্থাকে ফলো করে পৃথিবীর বহু দেশ, জাতি ও জনপদ সভ্যতা ও উন্নতির পর্বতশৃঙ্গে আরোহণ করেছে। ইসলামী জীবন ব্যবস্থার অবিসংবাদিত সংবিধান ধর্মগ্রন্থ আল-কুরআন রিচার্স করে যুগ যুগ ধরে বৈজ্ঞানিকরা বিজ্ঞানের হাজারো অজানা তথ্যের সন্ধান পাচ্ছে- একথা সর্বজনবিদিত। অথচ এক সাক্ষাৎকারে সাংবাদিক যখন হুমায়ূনকে প্রশ্ন করলেন- ইসলামকে আপনি কোন দৃষ্টিতে দেখেন? হুমায়ূন উত্তরে বললেনঃ “না, ইসলামকে আমি শান্তিময় ব্যক্তিগত জীবনের জন্য প্রয়োজন বলে মনে করি”। অপর এক প্রশ্নের উত্তরে বললেন-“ইকবালের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে আমি দ্বিমত পোষণ করি। আমি মনে করি ইসলাম হচ্ছে শান্তির ধর্ম। ব্যক্তিগত জীবনেই এটি প্রয়োজনীয়”।

হুমায়ূনের কাছে জীবনের ব্যাখ্যা কি, শান্তির ব্যাখ্যা কি, আমার ঠিক বুঝে আসছে না। অনেক পাঠকও হয়ত তার এই বক্তব্যে বিব্রত বোধ করবেন। ইসলাম যদি শান্তির ধর্ম হয়, তাহলে মানুষের সামগ্রিক জীবনে কি শান্তির ব্যবস্থা করবে না? ইতিহাস কি এই সত্যের সরল স্বীকৃতি দেয় না? হুমায়ূন তাহলে কোন গরজে ব্যক্তিগত জীবনের বাইরে জীবনের আরো গুরুত্বপূর্ণ কিছু অধ্যায় থেকে ইসলামকে নির্বাসিত করলেন, পরিত্যক্ত ঘোষণা করলেন! নাকি হুমায়ূন জীবন বলতে শুধু ব্যক্তিগত জীবনকেই বুঝেন। পারিবারিক, সামাজিক সেক্টরগুলো কি মানুষের জীবনের অংশ নয়? কোন পাগলও কি একথা বলবে? একথা মানবে? অতএব, মানুষের জীবনের কল্পনা-জল্পনা যদি জীবনের সব সেক্টর নিয়েই করতে হয়, ইসলাম যদি প্রকৃতার্থে মানুষের জন্য শান্তির ধর্মই হয়, তাহলে রাজনৈতিক জীবনে, জাতীয় জীবনে ইসলামের কোন ভূমিকা থাকবে না কেন? ইসলামকে শুধু ব্যক্তিগত জীবনের সংকীর্ণ ঘরে বন্দী করে রাখতে হবে কেন? জানি না, হুমায়ূন তার ধৃষ্টতাপূর্ণ সাংঘর্ষিক বক্তব্য থেকে সৃষ্ট এই জটিল প্রশ্নের কি জবাব দেবেন। কিন্তু তার মত একজন খ্যাতিমান লেখক সাহিত্যিকের মুখে ইসলাম সম্পর্কে এমন অজ্ঞতাপূর্ণ আপত্তিজনক বক্তব্য জাতির কখনো কাম্য নয়। কেননা তার এসব বক্তব্যে ইসলাম বিমুখ মানসিকতাই স্পষ্ট প্রতিভাত হয়। তাই এসব সত্য-বিমূখ আত্মভোলা লেখক সাহিত্যিক দ্বারা মানুষ কখনো শান্তির পথের আলোকিত গন্তব্যের ঠিকানা পেতে পারে না।

সাহিত্যের চির সুন্দর ভুবনে, চির সবুজ উদ্যানে অশ্লীলতা ও যৌনতার বিষবৃক্ষ চির ধিক্কৃত, ঘৃণিত ও অপয়া। সুতরাং সত্য ও সুন্দর-ই সাহিত্য। সত্য ও সুন্দরের সেবকরাই সাহিত্যিক। দরকার শুধু সাবলীল গতি, প্রাঞ্জল বর্ণনা ও হৃদয় কাড়া উপস্থাপনা। দরকার শুধু অনুপম শব্দ চয়ন ও সুনির্বাচিত বাক্য বিন্যাস। দরকার শুধু আবেগোচ্ছ্বল প্রবাহ ও শক্ত গাঁথুনি। হ্যাঁ! হুমায়ূন আহমেদকেও যখন ‘ঘরে বাইরে হাজার প্রশ্ন’ বইয়ের প্রশ্নকর্তা মাহফুজ আহমেদ সাহিত্য বিষয়ক প্রশ্ন পর্বে প্রশ্ন করছিলেন, “একজন লেখকের কমিটমেন্ট কোথায়? লেখক তার ভূমিকা কিভাবে রাখেন”? তখন হুমায়ূন আহমেদ উচ্চ কণ্ঠে স্পষ্ট ভাষায় লেখালেখিতে সাহিত্যে আবিলতামুক্ত সৌন্দর্যের প্রয়োজনকে স্বীকার করেই উত্তর দিয়েছেন এভাবে: “লেখকের কাজ হচ্ছে সৌন্দর্য আবিষ্কার ও ব্যাখ্যা করা। আমার মতে এটাই তার একমাত্র কমিটমেন্ট”। পরবর্তীতে মাহফুজ আহমেদ সৌন্দর্যের ব্যাখ্যা চেয়ে আরেকটি প্রশ্ন করেন: “লেখকের আবিষ্কৃত সৌন্দর্যের খানিকটা ব্যাখ্যা করুন”। এ উত্তরে হুমায়ূন আহমেদ বলেন: “একজন লেখকের লেখায় উঠে আসবে জীবনের সৌন্দর্য, প্রকৃতির সৌন্দর্য, স্বাধীনতার সৌন্দর্য, বন্ধন এবং বন্ধনহীনতার সৌন্দর্য, বিশ্বাস এবং ভালবাসার সৌন্দর্য”।

কিন্তু হুমায়ূন আহমেদের সাহিত্যের ব্যাখ্যায় প্রদত্ত বক্তব্য এবং তার রচিত সৃষ্ট সাহিত্যের বাস্তব চিত্র ঐ দুয়ের মধ্যে সমন্বয় সাধন করাও বড় দুরূহ ব্যাপার। কেননা, তিনি লেখালেখির মাধ্যমে সৌন্দর্য আবিষ্কারের প্রবক্তা, অথচ তিনি নিজেই সাহিত্যে, উপন্যাসে, নাটকে উদ্ভট কল্পকাহিনী ও কদর্য আবিষ্কারের স্রষ্টা। যদিও তিনি সৌন্দর্যের ব্যাখ্যাও করেছেন সুন্দর কিছু শব্দ দিয়ে, তথাপি তার উদ্দিষ্ট সৌন্দর্য আমাদের কাছে এখনো দুর্বোধ্য, তমসার কুয়াশায় আবৃত। কেননা, ভূত-পেত্নীর অলীক কাহিনী সৌন্দর্য হয় কিভাবে? হিমু চরিত্রের পাগল ছেলেটার উদ্ভট, অবাস্তব, পঙ্কিল রচনাগুলো সৌন্দর্য হয় কিভাবে? পঞ্চাশ ষাট বছরের বুড়োর সাথে এইট নাইনে পড়ুয়া কিংবা স্কুল কলেজ পড়ুয়া কিশোরীর অবান্তর সস্তা প্রেম নিবেদনের বা পচা গান্ধা ‘প্লেটনিক লাভে’র বিশ্রী বর্ণনায় কোন বাগানের ফুল ফুটে? কোন সৌন্দর্যের মধুমক্ষি এসে বাসা বাঁধে? মিসির আলী নামের গোঁড়া যুক্তিবাদী কুশ্রী চরিত্রটায় কোন জীবনের কোন আকাশের চাঁদ উঠে? নর্দমার কীটকে যদি মালঞ্চের ফুল বলতে হয়, তাহলে বাগানের ফুলকে কি বলব? ফুলের ব্যাখ্যা কিভাবে করব?

হুমায়ূন বাগানের মালীর দায়িত্ব ও বাগানের সৌন্দর্যের শিল্প সম্মত বিশ্লেষণ করেছেন ঠিকই, কিন্তু নিজের বাগান খনন করে পুকুর কেটেছেন। পুকুরে কিছু নোংরা, বিষাক্ত কীট-পতঙ্গ লালন করেছেন, যেগুলো সৌন্দর্য পিপাসু মানুষের হাত পা ক্ষত-বিক্ষত করে দেয়, মন মস্তিস্কে পচন ধরিয়ে দেয়।

একথা দেশ ও জাতির কল্যাণার্থে নতুন প্রজন্মের মাঝি-মাল্লাদের ধারক বাহকদের জ্ঞাতার্থে বলতেই হচ্ছে, হুমায়ূনের লেখালেখি, সাহিত্য সৃষ্টি সৌন্দর্য বিনির্মাণের নয়, বিনষ্টের। আলোক বিচ্ছুরণের নয়, অন্ধকার লালনের। উৎকর্ষের নয়, অপকর্ষের। জীবন গড়ার নয়, জীবন ভাঙ্গার। তার উপন্যাস পড়ে, নাটক দেখে তরুণ-তরুণীরা উদ্ভট কথাবার্তায়, চলা-ফেরায় অভ্যস্ত হয়, লেখা পড়ার মাথা খেয়ে হিমু সেজে ঘুরে বেড়ায়। বাড়ি ঘরে পিতা-মাতা, ভাই-বোনেরা কান্নাকাটি করে অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে দিন কাটায়। এসব সাহিত্যের সেবা কখনো মানবতার সেবা হতে পারে না বরং মানবতা ধ্বংসের কারণ হতে পারে। কেননা তার লেখায় চিন্তা, দর্শন, বিশ্বাস ও মূল্যবোধের ব্যাপারটি নিয়ে একটি “খেলো” বাতাবরণ সৃষ্টি করা হয়। সত্য-অসত্য ধর্ম-অধর্ম ন্যায়-অন্যায়ের সনাতন পার্থক্যটাকে সংশয় ও অস্পষ্টতার আবর্তে ঘুলিয়ে দেয়া হয়। নীতি আদর্শকে হাস্যস্পদ করে, পাগলামি ও অসুস্থতাকে দর্শণের রূপ দেয়ার চেষ্টা করা হয়।

তাই ধ্বংসাত্মক অপ-সাহিত্যের জনক হুমায়ূনের ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। তরুণ প্রজন্মকে তার পঙ্কিল সাহিত্যের ধ্বংসাত্মক পরিণতির কথা ঠাণ্ডা মাথায় বুঝিয়ে দিতে হবে। তারুণ্যের আবেগোচ্ছ্বল উন্মাদনায় মত্ত হয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট হিমু সেজে ঘর থেকে যেন বের না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তাদের হাত “হুমায়ূন রচনা” মুক্ত রাখার চেষ্টা করতে হবে। মনে রাখতে হবে, এই বস্তাপচা উদ্ভট বিদঘুটে রচনা দিয়ে, কিশোরী পটানো উপন্যাস লিখে, নাটক করে রাতারাতি তারকা খ্যাতি অর্জন করা যেতে পারে। কোটি টাকার পাহাড় গড়া যেতে পারে। কিন্তু সভ্য মানুষের হৃদয়ের স্থায়ী সম্মানজনক অবস্থান সৃষ্টি করা যায় না।

অতএব, সুকুমারবৃত্তিতে প্রবৃত্ত হোন। খোদা প্রদত্ত যোগ্যতাকে মানবতার যথার্থ কল্যাণে একটু হলেও কাজে লাগানোর চেষ্টা করুন।

৪০ টি মন্তব্য : “প্লেটোনিক সুপারস্টার হুমায়ূন আহমেদ”

  1. নাফিস (২০০৪-১০)

    হুমায়ুন আহমদ এর লেখা আমি সব সময় ই পড়েছি জাস্ট টাইম পাস হিসেবে। এত সিরিয়াসলি কখনো নেইনি। আমি নিজে এখনো সেরকম লেভেলের জ্ঞানী হয়ে উঠতে পারিনি যে কোন জনপ্রিয় লেখকের লেখার স্টাইলের ক্রটি বিচ্যুতি নিয়ে জ্ঞান গর্ভ আলোচনা করবো। তাই তার লেখার মান সম্পর্কে আমার কোনো ব্যক্তিগত অভিমত দিলাম না.. তবে ভাই যে জিনিসটা ভালো লাগলো না সেটা হলো তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে টানা হ্যাচরা। উনি লেখালেখি করেছেন দীর্ঘ সময় জুড়ে। টিভিতে নাটক বানিয়েছেন, চলচ্চিত্র বানিয়েছেন। আমি ব্যক্তিগত ভাবে সেগুলো নিয়ে আলোচনা করতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবো। তার চলচ্চিত্র গুলো নিয়ে বিশ্লেষণ ধর্মী আলোচনা হতে পারে। আলোচনা হতে পারে তার ৯৫ পৃষ্ঠার সস্তা বইমেলার উপন্যাস গুলো নিয়ে। কিন্তু ব্যক্তি হুমায়ুন আহমদ কবে কোন নারীর সাথে কি করেছেন সেগুলো নিয়ে তার মৃত্যুর পরে আলোচনা করাটা আমার কাছে শোভনীয় লাগেনা। আর তিনি একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ ছিলেন। ব্যক্তিগত ভাবে তার কাছে যেটি ভালো মনে হয়েছে তিনি সেটাই করেছেন। হতে পারে সেটা আমাদের সমাজ ব্যবস্থা আর ধর্মীয় মূল্যবোধ এর সাথে যায় না.. কিন্তু একজন মানুষ সমাজ বা ধর্ম কে কোন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখবে এটা তার একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার। ধর্মীয় মূল্যবোধ বা রীতিনীতি অন্য কারোর উপর চাপিয়ে দেওয়া যেমন যায়না, ঠিক তেমনি ভাবে সামাজিক শিষ্টাচার বা রীতিনীতি ও কারো উপর চাপিয়ে দেওয়া যায়না। ধর্ম ও সমাজের গতি প্রায় সমান্তরাল।আসলে যে কথাটা বলতে চাচ্ছি তা হলো, আমাদের কোন অধিকার নেই উনার ব্যক্তিগত জীবনকে বিচারের কাঠগড়ায় তোলার। ব্যাপরটা আমার কাছে অনেকটা হিপোক্রেসী র মতো লাগে।

    জবাব দিন
      • হারুন (৮৫-৯১)

        নাফিস
        তোমাকে যেমন ন্যায়-অন্যায়, ভাল-মন্দ নির্ণয়ের ফয়সালার ভার দেয়া যায় না তেমনি হিপক্রেট হুমায়ূন হতেও দেয়া যায় না। কেননা তোমাকে যদি কেউ বলে, এটা জঘন্য কুকর্ম এবং অশ্লীল ও পাপ জাতীয় আকাম-কুকাম, তখন এর জবাবে তুমি বলবে এটা আদৌ কোন কুকর্ম নয়। ওটা একান্তই একজন বয়স্ক বিখ্যাত জনপ্রিয় মৃত ব্যাক্তির ব্যক্তিগত বিষয়ে অকারণে নাক গলানী। কারণ তোমার কাছে সত্য-মিথ্যা, ন্যায় অন্যায়, ভাল মন্দের সার্বজনীন কোন নীতিমালা নেই, বরং এ শব্দগুলি আপেক্ষিক ও পরিবেশ প্রতিবেশের সৃষ্টি করা কতেক ধারণার বা শব্দের শাব্দিক রূপ ছাড়া আর কিছুই নয়। হয়তো আরেকটু এগিয়ে বলবে, হে হে হারুন ভাই, আপনি এমন এক সমাজে বেড়ে উঠেছেন যেখানে এ কাজটি ঘৃণার চোখে দেখা হয়, তাই আপনার হিপক্র্যাট টাইপ সামাজিক ধর্মীয় মূল্যবোধের কারণেই আপনি এটাকে মন্দ মনে করেন, নচেৎ এটা কোন দোষ নয়।

        জনপ্রিয় হবার উপায় কি? উপায় একটা আছে এবং সেটি সহজও বটে। তুমি বিবেক বুদ্ধি, নেইতিকতা, ধার্মিকতা বিসর্জন দিয়ে আবোল তাবোল বকতে থাকো, লিখতে থাকো, তাহলে হতে পারবে খাঁটি পানি মিশ্রিত নির্ভেজাল দুধের মত একজন জনপ্রিয় লেখক সাহিত্যিক। তোমার নষ্ট হবার কষ্ট না থাকলেই হল। তুমি শুধু সমাজ বদলানোর তালেই থাকো, তালে তাল মিলাও। দেখবে, বিখ্যাত জনপ্রিয় হতে কোন বেগ পেতে হবেনা তোমাকে। যারা ভণ্ডের অনুরক্ত তারাও এক মাপের ভণ্ড, না হয় ভক্তি কি করে হয়।

        এই ইসলাম বিদ্বেষী ভণ্ডরা তাদের কলমের তরবারিকেই ব্যবহার করছে। হাজার অস্ত্রধারী যা করতে পারেনা একজন জনপ্রিয় ভণ্ড লেখক রুদ্ধদার কক্ষে বসে তার চেয়েও অধিক করতে পারেন। আমরা আবালরা কলম হতে পিছিয়ে থাকায় একবিংশ শতাব্দীর এই যান্ত্রিক যুগের অপসংস্কৃতির মোকাবেলায় আমরা চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাড়াতে পারছিনা। কিছু খুদকুঁড়োর মোহে তথাকথিত জনপ্রিয় তকমাওয়ালার কলমের খোঁচায়, বিষাক্ত জিহবার ছোবলে আমার মত কালিমার নীতিতে বিশ্বাসী শান্তিপ্রিয় আদম সন্তানের রক্তক্ষরণ ঘটাচ্ছে, তার যোগ্য জবাব দেয়া শুধু অধিকার নয় দায়িত্বও বটে।


        শুধু যাওয়া আসা শুধু স্রোতে ভাসা..

        জবাব দিন
    • সামিউল(২০০৪-১০)

      আমিও এই রকম কিছু বলতে চাচ্ছিলাম। তবে কথা বার্তা গুছায়া বলতে পারি না তো। তাই চুপ করে বসে ছিলাম কারো জন্য যে আমার কথা গুলো বলবে।

      নাফিস ভাল বলেছিস। :thumbup:


      ... কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালবাসে!

      জবাব দিন
      • শাহীন (৯৬-০২)

        সমাজে যখন কেউ জনপ্রিয় হয় কিংবা বিশেষ খ্যাতি পায় তখনই কিন্তু আমরা তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করি। কারন সবারই জানার ইচ্ছা থাকে লাইফে কোন পথটা অবলম্বন করে সে এত খ্যাতি পাইল। তাই আমার মনে হয়, বড় মানুষদের ব্যক্তিগত জীবন জানলে সমস্যা নাই।
        আমার কাছে যদি আমার বাবা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বাবা হয়, তাহলেই আমি আমার সন্তানকে সেভাবেই বড় করার চেষ্টা করবো।
        আশা করি জিনিসটা বোঝাতে পেরেছি।


        The Bond Cadet

        জবাব দিন
        • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

          আপনার কথার সাথে সহমত। বাঙলাদেশে যখন কেউ বিখ্যাত হয় তখন সবাই তার জীবন নিয়ে হাডুডু খেলে। সবাই জানতে চায়, তোমার খ্যাতির রহস্য কি? চমৎকার। আইন করে দেওয়া উচিৎ খ্যাতিমান মানুষেরা তাদের দিনলিপি না হলেও মাসলিপি সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়ে জমা দিবে। সেখান থেকে মাসিক "বিখ্যাতরা" হিসাবে বিজি প্রেস থেকে সংখ্যা বের করলেইতো হয়। Sarcasm apart দুটো বিষয় তুলে ধরবো
          ১) আমাদের সমস্যা হলো আমরা আমাদের ও আমাদের আশেপাশে থাকা মানুষগুলোর জীবনের কতটুকু ব্যক্তিগত এবং কতটুকু সবার জন্য উন্মুক্ত সেটা বুঝি না বা বোঝার চেষ্টা করি না। স্ক্যান্ডাল এক বিষয় আর একজন মানুষের ব্যক্তিগত জীবন কচলে, রঙ মিশিয়ে কাহিনী বের করা আরেক বিষয়।

          ২) তথ্য ও শোনা কথা এদুটোর মধ্যে পার্থক্য আমরা কয়জন বুঝি সে নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। বুঝলেও সেটা ঠিক ভাবে উপস্থাপন করাটাও আমরা জানি কিনা সে বিষয়েও আমার সন্দেহ আছে। এবং সিসিবিতে জমা হওয়া আমার পড়ে দেখা বিগত ৬-৭ মাসে লেখা ব্লগগুলোতে সেইটা মিলেমিশে ল্যাটকা (নরম) খিচুড়ি। "আলোচনা" ট্যাগে লেখা আসলেই আমার মাথায় নির্দিষ্ট সেটিং ঠিক হয়ে যায় যে লেখাটার একটি নির্দিষ্ট ফরম্যাট থাকবে, নির্দিষ্ট অভিযোগ/আলোচ্য প্রশ্ন থাকবে, সেই প্রশ্নগুলোর উত্তরের নির্ভরযোগ্য সূত্র থাকবে এবং শেষে সবকিছুর ভিত্তিতে লেখকের নিজস্ব মন্তব্য থাকবে। সেটা গল্পের আকারে লিখা হোক আর কষা জার্নাল পেপারের মত করে লেখা হোক।
          উদাহরণ দেইঃ কয়েকদিন আগে একটা লেখা পড়েছিলাম। "আজকালকার মেয়েরা এমন না কেমন, যেমন না তেমন, তারা কি চিন্তা করে, কি খায়, জীবনদর্শন কি?" - ইত্যাদি গড়গড় করে লিখে লেখক সিদ্ধান্তে উপনিত হলো আজকালকার মেয়েরা হিপোক্রেট। ট্যাগ ছিল "আলোচনা" ও "দর্শন।" আমার মাথায় প্রথম যে প্রশ্নটা এসেছিল সেটা পরিসংখ্যানের একটা প্রশ্ন, "তোমার এই সিদ্ধান্তের পিছনে মেয়েদের যে স্যাম্পল নিয়েছ সেটা টোটাল পপুলেশানের কতটুকু কাভার করে?" অর্থাৎ কয়জনকে দেখে বলে ফেলছ আজকালকার মেয়েরা হিপোক্রেট? প্রশ্নটা করা হয় নাই কারণ এত অহমিকাপূর্ণ, অন্ধ লেখায় মন্তব্য করার মত রুচি আমার হয়নি।

          হারুন ভাইয়ের লেখায়ও "আলোচনা" ট্যাগ দেখে স্ট্রাকচার খুঁজেছিলাম। পেলাম না। ব্যক্তিগত জীবনে হুমায়ুন রচনা খুব কম পড়া হয়েছে ১০-১২টি হবে। তাই আমি সবসময় উনার লেখা নিয়ে লেখা পেলে মন দিয়ে পড়ি। উনার জীবনের বিভিন্ন কাহিনীগুলোও চোখ বুলিয়ে যাই কিন্তু উপরে যা লেখা হয়েছে সেখানে আমার উপযোগী পড়ার মত কিছু খুঁজে পেলাম না। কারণ আমি মানুষের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কচলাকচলি করার ঘোরতর বিরোধী। আমরা হয়তো বিখ্যাত কিন্তু নবী রসূল নই।

          বিশাল মন্তব্যের জন্য অত্যন্ত দুঃখিত। :frontroll: :frontroll:


          \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
          অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

          জবাব দিন
          • হারুন (৮৫-৯১)

            মোকাব্বির
            সাধুকে সাধু, ভণ্ডকে ভণ্ড অভন্ড না বলে শুধু হিপোক্রাসি খোঁজা জনপ্রিয় বিখ্যাত ভণ্ডের অনুরক্তই প্রমাণ করে।

            বুদ্ধিবৃত্তিক বন্ধ্যাত্বের একটি লক্ষণ হচ্ছে, মূল বিষয় উপেক্ষা করে ঠুনকো বিষয় (ট্যাগ) নিয়ে আবোল তাবোল বলা।

            “সব জায়গায় বুদ্ধির ঘোড়া চলতে নাহি পারে
            ক্ষেত্র বিশেষ বাহন চড়ে স্বীয় যাত্রী ঘাড়ে।“

            বুদ্ধির কর্ম-সীমার বাইরে বুদ্ধি চালাতে গেলে তখন যথার্থ উত্তর পাওয়া যাবে না। রেজাল্ট ঠিক আসবে না।


            শুধু যাওয়া আসা শুধু স্রোতে ভাসা..

            জবাব দিন
            • মোকাব্বির (৯৮-০৪)
              বুদ্ধিবৃত্তিক বন্ধ্যাত্বের একটি লক্ষণ হচ্ছে, মূল বিষয় উপেক্ষা করে ঠুনকো বিষয় (ট্যাগ) নিয়ে আবোল তাবোল বলা।

              চুপ থাকাটাই শ্রেয় মনে হচ্ছে! 🙂


              \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
              অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

              জবাব দিন
          • শাহীন (৯৬-০২)

            ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কচলানো ভাল না, কথা ঠিক। কিন্তু আমরা সাবারটা কি ঘাটাই। হারুন ভাই এমন একজনকে বেছে নিয়েছেন যে সমাজে সমাদ্দ্রিত। রাস্তার একজনকে নিয়ে লেখেননি। ওনার আক্রোশ হওয়াটাও ঠিক আছে। এমন একটা লোককে আমরা সম্মানের কাতারে এনেছি, যার সবকিছু আদর্শ কিংবা প্রশ্নের উর্দ্ধে নয়।
            আজ তোমার নিকট কেউ খুবই প্রতিষ্ঠিত। অনেক টাকা পয়সা আছে। কিন্তু পরিবারের বাইরেও তিনি জড়িত। তুমি কি তাকে আদর্শ একজন মানুষ হিসাবে নিবা??? নাকি তুমি তোমার ভবিষ্যতকে সেভাবে গড়তে চাইবা????


            The Bond Cadet

            জবাব দিন
  2. শাহীন (৯৬-০২)

    তারপরও হারুন ভাই, আপনার লেখায় অভিযোগ অনেক কিন্তু প্রমান কম। কাউকে এভাবে দোষী বলতে চাইলে আরও কিছু প্রমান দেয়া প্রয়োজন। শুধু শাওনের সাথের সম্পর্ক নিয়ে কথা বলছেন এবং একই জিনিস বারংবার উল্লেখ করেছেন। আমি বলছি না যে সে খুব ভাল/খারাপ ছিল, আমার কথার উদ্দেশ্য, জনপ্রিয় মানুষদের উপর আরোপ করতে চাইলে আরো ফ্যাক্ট চাই, নয়তো নাফিসদের মত অনেকেরই খারাপ লাগবে এবং সেটা অতি স্বাভাবিক।


    The Bond Cadet

    জবাব দিন
    • হারুন (৮৫-৯১)

      শাহিন
      নাফিসকে যেটা বলেছি তোমাকেও তাই। কোথায় ফ্যাক্ট ইন ইস্যু আর কোথায় বারডেন অব প্রুফ- বিবেকের মাথা খাই। কাল্পনিক কোন কথা বা তথ্য পরিবেশন করা হয়নি, ভুত পেত্নির কোন কেচ্ছা কাহিনী তোমাকে বলিনি।


      শুধু যাওয়া আসা শুধু স্রোতে ভাসা..

      জবাব দিন
      • শাহীন (৯৬-০২)

        অবশ্যই হারুন ভাই, কোন কেচ্ছা কাহিনী বলেন নাই মেনে নিচ্ছি। কারন অবশ্যই আপনি যা জানেন, শুনেছেন এবং বিশ্বাস করেন তাই লিখেছেন। কিন্তু সবাইকে সেভাবে আপনার কাতারে আনতে গেলে কিছু তো ফ্যাক্ট দিতে হবে।
        কিছু মনে করেন না, আপনার লেখাটা পড়ে আমার মনে হয়েছিল কিছুটা ব্যক্তিগত আক্রোশ ব্যক্ত করেছেন। তাই প্রুফ এর কথা বলেছি। আমরাও বিশ্বাস করতে চাই। সেটার সুযোগ তো আপনাকেই দিতে হবে, না??????


        The Bond Cadet

        জবাব দিন
  3. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    হারুন ভাই ব্লগে স্বাগতম। অনেকদিন পর একটা রসালো লেখা পড়ার সৌভাগ্য হলো, কিন্তু পুরোপুরি ভাবে রস আস্বাদন করতে পারলাম না, আপনি শুধু ভাসাভাসা ভাবে হুমায়ূন আহমেদের বিভিন্ন কেচ্ছা কাহিনির আভাস দিয়ে গেলেন (যার বেশিরভাগই ছিল আমার অজানা)। কাইন্ডলি একটু বিস্তারিতভাবে যদি সব কিছু খুলে বলতেন (রেফারেন্সসহ হলে ভাল হয়, না হলে আরো ভাল) তাহলে এই শীতে একটু উষ্ণতার স্বাদ পেতাম।

    হ্যাপি ব্লগিং হারুন ভাই , আর কারো হাড়ির খবর আপনার ভান্ডারে থাকলে নতুন নতুন ব্লগে লিখতে থাকুন, সত্যের জয় সুনিশ্চিত 😀


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
    • হারুন (৮৫-৯১)

      হারুন

      কমেন্টে দারুণ।
      ব্লগ লেখায় কারুন,
      ডিগবাজী আর এড়াবে কত হারুন ?

      এত সুন্দর মন্তব্য লিখ আর ব্লগ লিখনা কেন ?

      জেগে উঠি

      আমি উচ্ছ্বাসিত হই
      নতুন সূর্যের স্নিগ্ধতায়
      ভোরের ঝিরিঝিরি মায়াবীতায়
      বটমূল আর শোভাযাত্রা
      আমাকে প্রবারই ডাকে
      আমি যেন বাতাশা

      বড় ভাইদের হুকুম তামিলের অভ্যাসটা এখনো বিলীন হয়নি মোস্তাফিজ ভাই ::salute::


      শুধু যাওয়া আসা শুধু স্রোতে ভাসা..

      জবাব দিন
    • হারুন (৮৫-৯১)
      নোংরামি অসভ্য আর গুটি কয়েক
      দালালের আত্নকাহিনী।
      ব্যক্তি স্বার্থ আর মিথ্যের আড়ালে
      ঢাকা পড়েছে জাতির বিবেক।

      বিবেক এখন সের দরে বিক্রি হয় হারুন ভাই।
      আর আপনি লেখালিখি শুরু করছেন না কেনো???
      এইটা কিন্তু জাতির বিবেক জানতে চায়। 🙂

      অনুপ্রানিত হলাম রাজীব :guitar:


      শুধু যাওয়া আসা শুধু স্রোতে ভাসা..

      জবাব দিন
  4. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    এই পোস্টে মন্তব্য করবো না বলে ভেবেছিলাম কিন্তু আমার কমেন্টের মূল সুর বুঝতে না পেরে বা পেরেও এড়িয়ে গিয়ে আপনার সত্যের জয়ের স্লোগান দেখে কিছু না বলে থাকতে পারলাম না।

    ব্যক্তি হুমায়ূন আহমেদের জীবন নিয়ে আমাদের কচলানো উচিৎ কিনা সে বিতর্ক পাশ কাটিয়ে আপনি তার প্রতি যে অভিযোগগুলো করেছেন সে বিষয়ে আগে কিছু বলি।

    আপনি হুমায়ূন আহমেদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে যে অভিযোগগুলো তুলেছেন আগে পরের ভারী কথাগুলো বাদ দিলে তার সারসংক্ষেপটা এরকমঃ

    ১। হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী তার ঘনিষ্ঠজনদের কাছে বলেন, ষোড়শী অবিবাহিত তরুণীদের উপর বরাবরই তার প্রচণ্ড আসক্তি। আশ্চর্যের বিষয় হল, তার বেশির ভাগই হুমায়ুন আহমেদের বন্ধু কন্যা।

    ২। স্ত্রী গুলতেকিন বলেন, মেয়েগুলোর সাথে সম্পর্কের ব্যাপারে কোন প্রতিবাদ করলেই তাকে নির্যাতিত হতে হয়েছে। এতে বুঝা যায়, হুমায়ূন আহমেদ শুধু জন-নন্দিত ঔপন্যাসিকই নন, স্ত্রী নির্যাতনকারীও বটে।

    ৩। তিনি যেসব টিভি নাটক ও চলচ্চিত্র বানিয়েছেন, তার প্রায় প্রতিটিতেই রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ কিশোরী চরিত্র যেখানে অভিনয়ের জন্য তিনি একঝাঁক কিশোরী মেয়েকে অভিনয়ের সুযোগ করে দিয়েছেন। পাশাপাশি আপন অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার পথও সহজ সুগম করেছেন।

    ৪। “অয়োময়” এবং “বহুব্রীহি” নাটকের এক অভিনেত্রীর সঙ্গে হুমায়ূন লালমাটিয়ার এক বাসায় লিভ টুগেদার করতেন বলে নির্ভরযোগ্য এক সূত্রে অভিযোগ করা হয়।

    ৫। নুহাশ চলচ্চিত্রের এক সেক্রেটারির সঙ্গেও তার সম্পর্ক নিয়ে নানা কাহিনী পত্রিকায় এসেছে।

    ৬। বাংলা একাডেমীর একজন কর্মকর্তা হুমায়ূনের নাম শুনে কেঁদে ফেললেন। তিনি বললেন, “ও একটা সাধু বেশী শয়তান। সে তার বন্ধুর মেয়েকে নিয়ে পর্যন্ত যাচ্ছেতাই আচরণ করেছে। নাটকের নাম করে মেয়ে পটানো তার নেশা”।

    এরকম মারাত্মক সব অভিযোগ যে কারো নামে করার সময় তার অথেনটিসিটি থাকা খুবই জরুরী। বিশ্বস্ত সুত্রে প্রকাশ, পত্রিকায় ছাপা হয়েছে, ওমুকে তমুকের কাছে বলেছেন ইত্যাদি শব্দকে রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করার দিন মনে হয় শিক্ষিত ও সচেতন পাঠক সমাজে শেষ। আর আপনি যেভাবে এই শব্দগুলো ব্যবহার করে অভিযোগ নামা সাজিয়েছেন সেভাবে ইচ্ছা করলে আজকেই যে কেউ আমার নামে এমনকি আপনার নামেও কয়েক পৃষ্ঠা লিখে দিতে পারবে। তাই কারো চরিত্র খন্ডনের সময় সেটা হুমায়ূন আহমেদের মত বিখ্যাত লোক হোক বা নাম না জানা কোন অখ্যাত লোকই হোক, তার বস্তু নিষ্টতা থাকতেই হবে।

    তাই আশা করবো এই অভিযোগগুলোর সপক্ষে তথ্যপ্রমান আপনি দিবেন তা না হলে আপনার এই লেখার সাথে 'অপরাধচিত্র' 'অপরাধ বিচিত্রা' ধরনের উত্তেজক প্রচ্ছদআলা পত্রিকার রিপোর্টের কোন পার্থক্য অন্তত আমার কাছে নেই।

    অভিযোগগুলোর প্রমান দেন, তারপরে না হয় আমরা আলোচনায় যাব তার ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে আমাদের ঘাটাঘাটির বিষয়ে। ধন্যবাদ।


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  5. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)
    অথচ সুদীর্ঘ ২৮ বছরের দাম্পত্য জীবন এবং চারটি সন্তানের দিকে তাকিয়ে তিনি এ চতুরতাপূর্ণ সিদ্ধান্ত না নিলেও পারতেন।

    ৪ বৌ নেবার কথা থাকলেও বাংলাদেশের সমাজ এখন আর বহু বিবাহ নিতে পারে না। সো এছাড়া তার উপায় ছিলো না।


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  6. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)
    বয়োবৃদ্ধ কামুক

    বয়স বাড়লে এটা হবেই।
    তসলিমা তার এক বইতে এই সমস্যার চমৎকার বর্ণনা করেছিলেন, প্রস্টেট নাকি বয়স হইলে বড়ো হয় আর সেই কারণে এই সমস্যা।
    অবশ্য শাওনের সাথে কয়েক সন্তানের জন্ম দিয়ে তিনি তার কর্মক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছেন।


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  7. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)
    “আমি সব কথা খোলাখুলি বলব না। আমি একজন শিল্পী। শিল্পীরা সব কথা খোলাখুলি বলে না। তারা কভার ব্যবহার করেন। বিবাহিত জীবনের বাইরে আমার কারো সাথে ‘প্লেটোনিক লাভে তো দোষের কিছু নেই”।

    প্লাটোনিক লাভ কথাটাই ফালতু।
    প্লেটো তার কাজের মেয়ের সাথে ২০ না ২২ বছর ছিলো কিন্তু সহবত করে নাই। সেই থিকা প্লাটোনিক কথা আসছে।
    যতদূর জানি প্লেটোর বৌ কিন্তু ছিলো।


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  8. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    আমি ধরে নিচ্ছি আপনার কাছে রেফারেন্স আছে।
    কিন্তু বিষয়টা এমনই যে রেফারেন্স ছাড়া এইসব কথাগুলো খেলো হয়ে যায়।

    আপনি কিন্তু খুব সহজে পাত্র-পাত্রীর নাম পরিবর্তন করে লিখতে পারতেন। এতে করে অন্তত রেফারেন্সের ঝামেলা এড়ানো যেতো।

    আচ্ছা একটা কথা শুনেছিলাম পাবলিক নাকি কি এক কারণে তার সেন্ট্মার্টিনের বাড়ি পুড়িয়ে বা ভেঙ্গে দিয়েছিলো।
    জানেন নাকি কিছু এই ব্যাপারে?

    আরেকবার শুনেছিলাম যে নুহাশ পল্লীর আগুনটা নাকি তিনি নিজে লাগিয়েছিলেন। গাছ কাটতে হবে বলে। অবশ্য পত্রিকায় তখন এসেছিলো তার পারিবারিক বেশ কিছু জিনিস ও নাকি তখন পুড়ে গেছে।
    জানেন কিছু ভাই এই ব্যাপারে?

    ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বেশ কিছু কথা এনেছেন। সেসব নিয়ে কিছু বলতে চাই না।


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  9. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    অনেকে হয়তো বলতে পারে লেখক হুমায়ুনের ব্যাক্তিগত জীবন নিয়ে আলোচনা কেনো?
    কথা হচ্ছে লেখক নিজে তার ব্যাক্তিগত জীবন নিয়ে কম কিছু লেখেন নি! অনেক অনেক লিখেছেন।
    এমনকি তার মা যে শাওনের ১ম সন্তান মারা যাবার পর দেখতে যান নি। এই বিষয়ে বিশদ তর্ক নিয়ে লিখেছেন এক বইয়ে।
    এইরকম অনেক অনেক উদাহরণ দেয়া যাবে।
    সো এড়ানোর উপায় নাই।


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  10. অথেনটিসিটি বলতে কিছুই ফেলাম না!
    এই ছোট মাথায় যা ডুকলো হুমায়ূন স্যার এর উপর ব্যাক্তিগত কোণ অপছন্দ আছে বলে মনে হচ্ছে!

    একজন বিখ্যাত ব্যাক্তি সম্পর্কে উল্লেখিত ঘটনাগুলো কি অথেনটিক হওয়াটা উচিত ছিলো না ???

    আপানার লেখায় দেখলাম হুমায়ূন আহমেদ নাস্তিক এটা প্রমান করতে চাইছিলেন, অথচ হুমায়ন আহমেদকে পচানোর জন্য স্বঘোশিত নাস্তিক হুমায়ুন আজাদের উদাহরন টেনে আনলেন!!!

    আপনারা পারেনও বটে!!
    কেন ভাই একজনের ব্যাক্তিগত বিষয় নিয়ে সত্য-মিথ্যা অযথাই বিতর্ক সৃষ্টি করেন!
    এগুলা না করে উনার উপন্যাস, নাটক, কবিতা, ছায়াছবি , গল্প নিয়ে ডিসকাস করতে পারেন!!!

    জবাব দিন
    • রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)
      অথচ হুমায়ন আহমেদকে পচানোর জন্য স্বঘোশিত নাস্তিক হুমায়ুন আজাদের উদাহরন টেনে আনলেন!!!

      হুমায়ুন আজাদ কি হুমায়ুন আহমেদের ধর্ম বিশ্বাস নিয়া কথা বলছে?


      এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

      জবাব দিন
  11. নাজমুল (০২-০৮)

    আমি হূমায়ুন আহমেদ এর একজন ভক্ত, আমি আমাদের ক্লাসে এরকম অনেক্কেই দেখেছি যারা বলতো হুমায়ুন আহমেদ থার্ড ক্লাস লেখক। কিন্তু কলেজে নতুন হূমায়ুন আহমেদের বই আসলেই তারা প্রথমে সিরিয়াল দিত। এবং হাস্যকর ব্যাপার হল যে তারা আর অন্য কোন লেখকের বই পড়তোনা। খালি হূমায়ুন আহমেদ এবং জাফর ইকবালের বই এর মাঝেই তাদের পড়া সীমাবদ্ধ ছিল।
    কিন্তু আমি মনে করি, বাংলাদেশে পাঠক বাড়ানোর জন্য যেই দুইজন লোককে আমি সবসময় উপরে রাখবো, হূমায়ুন আহমেদ তাদের মাঝে একজন এবং বাকি একজন হল কাজী আনোয়ার হোসেন এবং সেবা প্রকাশনি।
    আমি ব্যাক্তিগত ভাবে ৫/৬ টা বই বাদে সেবা প্রকাশনির কোনো বই পড়িনাই কিন্তু আমি কয়টা হুমায়ুন আহমেদের বই পড়িনাই সেটা খুজে পেতে কষ্ট হবে।

    আপনার লেখায় স্পষ্টভাবে এটা প্রকাশ পেয়েছে যে আপনি হুমায়ুন আহমেদকে পছন্দ করেননা তার অন্যতম কারণ সে ধর্মবিদ্বেষী। এবং এইটা বলে যেহেতু আপনি তাকে কাহিল করতে পারবেননা তাই তার চরিত্রের দিকে হাত দিয়েছেন। খুব সহজেই বাঙ্গালী মানুষকে কাবু করা যায় এই দুইটা জিনিষ দিয়ে।
    যখন ফরেন মুভী দেখেন তখন আপনার(হয়তোবা আপনি না) পছন্দের ছবিতে থাকে কাসাব্লাংকা। সেখানেও কিন্তু পরকীয়া ছিল, কিন্তু তারা ফরেনার সেটা নিয়া আপনার মাথা ব্যাথা নাই। মাথা ব্যাথা হইলো হুমায়ুন আহমেদ কেন শাওন এর মত ছোট মেয়েকে বিয়ে করলো!! শাওন প্রাপ্তবয়স্ক সে যদি হুমায়ুন আ হমেদের সাথে প্রেম করে তাতে আমাদের কি আসে যায়। হুমায়ুন আহমেদকে দোষী করা যায় সে বিবাহিত অবস্থায় কেন শাওন এর সাথে সম্পর্কে জড়ালো, এবং শাওনকে দোষ দেয়া যায় সে কেন বিবাহিত পুরুষের সাথে সম্পর্ক করতে গেল।
    কিন্তু প্রেমতো বলে কয়ে আসেনা। দুইজন দুইজনের প্রেমে পড়ে গেছে তাই তারা একসাথে থাকার পরিকল্পনা করলো এবং হুমায়ুন আহমেদ গুলতেকীনকে তালাক দিল।
    আমি জানিনা এত কথা আমি বলতেসি কেন। ব্যাক্তি হুমায়ুন আহমেদ কি করলো তার সাথে লেখক হুমায়ুন আহমেদকে জড়ানোর কি প্রয়োজন জানিনা।
    দয়া করে এখানে ধর্মীয় কোনো কোট করবেননা, সবাই এখানে মুসলমান না।

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।