ঝিনাইদহের গাছ হওয়া….

ব্যাপারটা প্রথম টের পাই বিয়ের পর। ২০০০ সালের সামান্য কিছুদিন পর। একদিন কথাপ্রসঙ্গে আমার শ্যালিকা (বাচ্চালোগ! লাভ নাই, ওর বিয়ে হয়ে গেছে। আরেকটা অবশ্য এখনও আছে। দেখি, আগে লাইনে দাঁড়িয়ে লাইন সোজা কর।) হঠাৎ একদিন বলল, “ভাইয়া তোরা ঝিনাইদহের ক্যাডেটরা তো সবাই এক একটা গাছ”। আমি অবাক হয়ে বললাম, “কেন?”। “তা তো জানি না, তবে আমার ফ্রেন্ডরা দেখি ওদেরকে গাছ ডাকে”।

এর পরে বিভিন্ন জায়গায়, গাছ সম্বোধনটা শুনেছি। কিন্তু আজ পর্যন্ত জানতে পারিনি কেন আমাদের কপালে জুটল এই খেতাব। কি এমন দোষ করলাম আমরা যে জলজ্যান্ত মানুষ থেকে গাছে পরিণত হলাম। আমাদের সময়ে (in our time, in the year of…) যতদূর মনে পড়ে আমরা মানুষই ছিলাম। আর মনে পড়ে ঝিনাইদহে অনেক গাছ ছিল। ICCLM বা ICCSM এও তো এই বিশেষণটা শুনিনি।

সম্প্রতি মাহমুদের (১৯৯০-৯৬) প্রেসক্রিপ্‌শনে আমকে ‘গাছন্ত’ আয়ুর্বেদি সাজেস্ট করায় প্রশ্নটা আবার চাঙ্গা হল। দেশ ও জাতির কেউ কি আছে, আমকে ব্যাপারটা খোলসা করবে?

২,৪৩৮ বার দেখা হয়েছে

২২ টি মন্তব্য : “ঝিনাইদহের গাছ হওয়া….”

  1. মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

    ইউসুফ ভাই,

    মাইন্ড করেছেন নাকি? আরে বস, আমাদের বাংলা সিলেবাসে (এসএসসি) একটা গল্প ছিল না যেখানে আমাদের 'গাছের মত' হতে পরামর্শ দিয়েছে। কইছে, আমরা যেন গাছদের মত সহনশীল, পরোপকারী হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলি। -

    কাজেই, গাছ হওয়াটা মোটেই দোষের কিছু না। বরং আমাদের সবারই উচিত গাছ হবার চেস্টা করা।

    জুলহাস ভাইকে 'গাছ' বলে উপহাস করাই তার 'বিবাহিত' শালীর আজীবোন ব্যান চাই। :grr:


    There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

    জবাব দিন
      • রকিব (০১-০৭)

        ক্যাডেট কলেজ ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলের পর বাবা এক আংকেলের বাসায় নিয়ে গেছেন। উনার মেয়ে তখন এমজিসিসির ক্লাস ১২ এর ক্যাডেট। তো সেই আপু আমাকে জিজ্ঞেস করছে, কোন কলেজে যাচ্ছো? আমি হাসিমুখে বলছি, ঝকক 😀 । উনি বলেন, ওহ তুমিও তাইলে গাছ হচ্ছো 😮 x-( !!!


        আমি তবু বলি:
        এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

        জবাব দিন
    • ইউসুফ ভাই,

      মাইন্ড করেছেন নাকি?

      মাহমুদ, আমাকে মাইন্ড খাওয়ানো এত সহজ মনে করায় তোমার ব্যান্চাই। ব্যান না হওয়া পর্যন্ত তুমি আপাতত লাগাতার :frontroll: চালিয়ে যাও।

      অফটপিক: আমি গাছ ভালবাসি।

      জবাব দিন
  2. জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

    এই সবাই লাইনে দাঁড়াও... :chup:
    হুম...গুড!!! :grr:

    ইয়ে, ইউসুফ ভাই, আপনার সাথে একটূ কথা ছিল... ;;) :salute:
    আরে না না...পারসোনাল না...জেক্সকা রিলেটেড... :-B
    তাহলে ভিতরেই আসি... 😀
    থ্যাংকু... :thumbup:

    :awesome: :awesome: :awesome:


    ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

    জবাব দিন
  3. মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

    জুলহাস ভাই,
    ইয়ে মানে আমার অনেক আগের একটা ব্লগে কাহিনীটা আছে।এইখানে লিঙ্ক টা দিলামঃটেকি ভাইয়েরা লিঙ্কটা পিলিজ "জেসিসি কেন গাছ" শিরোনামে এইখানে তুইলা দিয়েন।//cadetcollegeblog.com/mashroof/804
    মূল কাহিনীটা একটু বড়,এইখানের একটা অংশে গাছের “শানে নুযুল” তুইলা ধরা হইছে।

    চামে দিয়া বামে আমার অপাঠ্য ব্লগটাও পড়াইয় নেওনের ব্যবস্থা করলাম আরকি...মুয়াহাহাহাহাহা :grr: :grr: :grr:

    জবাব দিন
  4. মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

    🙁 🙁 🙁 এত্ত বড় ব্লগ অকারণে পড়াইয়া বড় ভাইগো কাছ থিকা গালি খাওয়ার ভয়ে এর চুম্বক অংশ এইখানে তুইলা দিলাম

    ...ততক্ষনে মাসুদ ভাই আমার পাশে বসে “গাছ” নিয়া আমাকে পচানো শুরু করে দিয়েছেন।উনি তো আর জানেন না যে সেই দিন আর নাই-এখন বৃক্ষ হচ্ছে মহিমান্বিত(!!) ঐতিহ্যের(??!!) এক অমর(!!??!!)প্রতীক,বৃক্ষ পরিচয়ে আমরা আজ আর লজ্জিত নই। মার্টিন লুথার কিং না কোন মনীষী যেন বলেছিলেন-“তুমি কালো, আর তাই তুমি গর্বিত হবে”।আমরা বৃক্ষরাও আজকাল তাই গাছ পরিচয়েই পার্ট নেই-এমনকী এই সেদিনও শুনলাম বিএমএ তে জেসিসির গেট টুগেদারে কেকের উপর লিখা ছিল “বৃক্ষমেলা-২০০৮” না কি জানি…। তাই আমি নিজেই বৃক্ষ নামের শানে নুজুল বলা শুরু করলাম। কিংবদন্তী অনুযায়ী,আমাদের এক সিপি যশোর বোর্ডে প্রথম হয়েছিলেন।কোন এক মিটে ভিলেজ থুক্কু আরসিসিতে গিয়ে বাস থেকে নেমে তিনি হ্যান্ড শেক করলেন এইভাবে-“হাই,আমি “***”,ফার্স্ট স্টান্ড,জেসিসি”(নামটা দিলাম না কারণ কলেজে থাকতে শুনেছিলাম উনি জাপানে আছেন যেখানে অনেক ক্যাডেট আছে-আর বেচারাকে প্রবাস জীবনেও বিব্রত করার কোন ইচ্ছা আমার নেই,যদিও শুনেছি উনাকে বেশ কিছুদিন জেসিসিতে অবাঞ্ছিত করা হয়েছিল)। তো, তাঁর এই আচরণের ফলে “গাছ” নাম যে অবধারিত-এ আর বেশি কথা কি!আমি নিজেও আজকাল নসুতে “ভাইয়া আপনি কোন কলেজ” প্রশ্নের উত্তরে বাইরের ছেলেপেলেকেও “গাছ” বলে উত্তর দেই,পরে হাঁ করে তাকিয়ে থাকা দেখে আসল নাম বলি। মাসুদ ভাই আমার এহেন আচরণে খানিকটা ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়ায় উনাকে আমার পিসিসির বন্ধুর কথা বললাম-যে কিনা আমার চেয়েও এক কাঠি সরেস। একবার এক বান্ধবীকে নিয়ে খেতে যাচ্ছি,পথে দেখা আমার সেই পিসিসির দোস্তের সাথে। আমার সেই বান্ধবী মাশাআল্লাহ বড়ই খুবসুরত,সেটা দেখে ওই বেটার উসখুস ভালই টের পাওয়া যাচ্ছিল। আমার মত গরিলা টাইপের সুরতধারীর সাথে কিভাবে এই মেয়ে খেতে যায়-দুনিয়াতে ন্যায় বিচার কি সব উঠে গেল-দাউ আর্ট ফ্লেড টু ব্রুটিশ বীস্টস এন্ড মেন হ্যাভ লস্ট দেয়ার রিজনস(কলেজে থাকতে এলুকিউশন ড্রামাটিক ডায়ালগে শেখা)- এইসব ভাবনা আমি একেবারে তার চোখেমুখে পড়তে পারছিলাম। বেচারা তো আর জানেনা যে আমি ডেট এ না, খেতে খেতে সুন্দরীকে “গেম থিওরী” বুঝাতে নিয়া যাচ্ছিলাম-সুন্দরীর আইকিউ আবার মাইনাস ২০ থেকে শুরু কিনা!যাই হোক, তাকে ডেকে তখন আমি সতর্ক করে দিচ্ছি-“ওই ব্যাটা, খবরদার এই মাইয়ার দিকে কুনজর দিবিনা”। এটা বলে যেই আমি আরো বলতে যাব “ব্যাটা পিসিসি , তোরা তো……”-তার আগেই সে নিজে থেকেই বলে উঠল-“দোস্ত চ্যাতস কেন,জানস-ই তো আমি পিসিসি,তোর বান্ধবীর প্রতি আমার কুনু আগ্রহ নাই। কিন্তু এই মাইয়ার ছুডু ভাই থাকলে ভুলেও আমার সামনে আনিস না”। আমার কথায় মাসুদ ভাই তো ভ্যাবাচ্যাকা খেয়েছিলেন,ওই বন্ধুর কথা শুনে আমি তখন একেবারে ইংরেজিতে যাকে বলে “ডাম্ব-ফাউন্ডেড” বা হতভম্ব-সেটা হয়ে গিয়েছিলাম। উল্লেখ্য, আমার সেই পিসিসির বন্ধুর গার্লফ্রেন্ড আছে,আর পিসিসি নিয়ে প্রচলিত কথার সত্যতা বিষয়েও আমি যথেষ্ট সন্দেহ প্রকাশ করি। কিন্তু দেখা হলে তাদের টিজ করতে(আর তারা আশে পাশে না থাকলে নানা রসালো মন্তব্য করতে) আমাকেই সর্বদা অগ্রগন্য ভূমিকায় পাওয়া যায়। আসলে এটাই মনে হয় ক্যাডেটীয় বন্ধুত্বের অন্যতম সৌন্দর্য,নিজেরা নিজেদের সবচেয়ে কাছের মানুষ বলে মনে করি বলেই আমরা কলেজে থাকতে সবচেয়ে স্পর্শকাতর হিসেবে বিবেচিত বিষয়গুলো নিয়েও অবলীলায় তাদের সাথে দুষ্টামি করতে পারি।আর এ কারণেই আমার ক্যাডেট বন্ধুদের “কিরে বৃক্ষ”ডাকে আমি অবলীলায় সাড়া দেই-অথচ কলেজে থাকতে এটা নিয়ে হয়তোবা হাতাহাতি করতেও পিছপা হতাম না।

    জবাব দিন
  5. রকিব (০১-০৭)
    আমার সেই বান্ধবী মাশাআল্লাহ বড়ই খুবসুরত,সেটা দেখে ওই বেটার উসখুস ভালই টের পাওয়া যাচ্ছিল।

    বান্ধবীর কথা শুনানোর জন্য আবার লিঙ্ক দিছেন, বুইজা ফেলাইছি।


    আমি তবু বলি:
    এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

    জবাব দিন
  6. ফয়েজ (৮৭-৯৩)

    ইয়ে ভাইয়া একটা ডাউট ছিল। শুনলাম শ্যালিকা তুই বলে,

    ভাইয়া তোরা ঝিনাইদহের ক্যাডেটরা তো সবাই এক একটা গাছ

    ইয়ে মানে ভাবীও কি? আর ভাবী যদি তুই বলেই থাকে তাহলে ভাবীর বাচ্চা কি বলে? B-)

    আইচ্ছা যাই দুইটা ডিগাব্জি দিয়া ফালাই :frontroll: :frontroll:


    পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : ইউসুফ (১৯৮৩–৮৯)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।