লোডশেডিং এবং …

বহুদিন পরে ব্লগে আসা হলো তাই কলেজের একটা অম্লমধুর স্মৃতি সবার জন্য তুলে দিলাম একটু অন্যভাবে –

“রংপুর ক্যাডেট কলেজের জেনারেটরের বর্তমান অবস্থা কেমন তাহা জানি না, তবে আমাদের সময় কারেন্ট চলিয়া গেলে জেনারেটর চালু হইয়া কারেন্ট আসিতে পাঁচ মিনিটের মত সময় তো লাগিতোই। এই সময়টা ছিলো সিনিয়র জুনিয়র সবার জন্য অনির্ধারিত উপভোগের উপলক্ষ । যাহা হউক, আমরা তখন ক্লাস ইলেভেনে পড়ি। কলেজে নতুন এক টিচার আসিলেন শাহীন স্যার, কেমিস্টির । বেশ ভাবগম্ভীর থাকিবার কারনে অচিরেই ক্যাডেটদের অত্যাচারের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হইলেন।অতঃপর এক রাত্রিকালীন পাঠপ্রস্তুতির সময় শাহীন স্যার আমাদের ফর্মে । ফ্রন্ট ডেস্কের সামনে দাঁড়িয়ে কি যেন বলছেন । হঠাৎ -ই কারেন্ট চলিয়া গেল। আমরাও বৈদ্যুতিক বিভ্রাটজনিত ফর্মাল আনন্দ উৎসবে জেমসের মীরা বাঈ শুরু করিয়া দিলাম । নর্তন কুর্দনের মাঝে হঠাৎ সপাং সপাং শব্দজ্ঞানে যে যার মত ডেস্ক দখল করিয়া জেন্টেলম্যান ক্যাডেট হইয়া বসিয়া পরিল। এরিমধ্যে সপাং সপাং শব্দের মধ্যেই নিয়মমাফিক কারেন্ট মহোদয় নির্লজ্জের মত উপস্থিত হইলেন। কিন্তু একী ! যাহা দেখিলাম তাহা মনে হয় এই মস্তিস্কনামের হার্ড ডিস্ক হইতে কখনোই বিলুপ্ত হইবে না। শাহীন স্যার সোজা দাঁড়াইয়া আছেন , আর আমাদের শ্রদ্ধেয় ভাইস প্রিন্সিপাল জাহিদুল হক সরকার সশব্দে তাহার পশ্বাতদেশে সপাং সপাং সরল ছন্দিত ধ্বনি তুলিয়া যাচ্ছেন । এরপর নির্দয় আলোতে যাহা দৃষ্ট হইল তাহাতে জাহিদুল স্যার সম্বিত পাইয়া গলা খাকারি দিলেন” তুমি এখানে কি কর” – বলিয়া ব্যপার সহজ করিবার ব্যর্থ চেষ্টা বুঝিয়া সরিয়া পরিলেন, শাহীন স্যার নিরস বিষন্ন বদনে তাহাকে অনুসরন করিয়া প্রস্থান করিলেন । ফর্মে যথারীতি সবাই ঝাকিয়া ঝাকিয়া কাঁপিয়া কাঁপিয়া হাসিতে লাগিলো , অনুকরণকুশলীরা জনস্বার্থে রিপ্লে দেখাতে মনযোগী হইলো । শুধু চৈনিক কে দেখিলাম , খুব শান্ত হয়ে একটা কথাই বলিল,” একবারো উহ্‌ করলো না , লোহার ————- 😐 😐 😐 “

১,৫৩৪ বার দেখা হয়েছে

১৩ টি মন্তব্য : “লোডশেডিং এবং …”

  1. নাফিজ (০৩-০৯)

    :pira: :pira: :pira: :khekz: :khekz: :khekz:


    আলোর দিকে তাকাও, ভোগ করো এর রূপ। চক্ষু বোজো এবং আবার দ্যাখো। প্রথমেই তুমি যা দেখেছিলে তা আর নেই,এর পর তুমি যা দেখবে, তা এখনও হয়ে ওঠেনি।

    জবাব দিন
  2. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    খুব দুঃখজনক ঘটনা।
    কাহিনী মজার হলেও মনে হল ইত্তেফাকের সম্পাদকীয় পড়ছি।


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
    • রাজিব (১৯৯৮-২০০৪)

      জাহিদুল হক স্যার-কে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি, রংপুর ক্যাডেট কলেজের প্রতি এই স্বল্পভাষী মানুষটার অবদান অনেক। শাহীন স্যার ক্যাডেট কলেজের চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলেন , বিসিএস - এ ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নিয়োগ পাবার পর। আসলে ঘটনাটা তাদের জন্য বিব্রতকর ছিলো...........। এমন কিছু স্মৃতি আছে যা শুধু ক্যাডেটদের সাথেই শেয়ার করা যায়........... 🙂 🙂 🙂 ।।

      জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : ইশতিয়াক (৯৯-০৫)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।