একটি ব্যক্তিগত হতাশা থেকে উত্তরণের জন্য সাহায্যের প্রয়োজন

অক্ষরের প্রতি আমার আকর্ষণ অনিবার্য। দেশে থাকতে ঘুম থেকে উঠে দাঁত না মেজে পত্রিকা পড়তাম, নাস্তার সাথে গল্পের বই। রিকশা না পেয়ে বিরক্ত হয়ে হাঁটা ধরতাম দোকানের নাম, দেয়ালের বিজ্ঞাপণ পড়তে পড়তে। অফিসের গাড়ি অথবা বুয়েট বাস থেকে চোখ বুলাতাম “মায়ের দোয়া”, “থামলে ভালো লাগে”, ”মদিনা আবাসিক হোটেল” এর উপর। দুপুরের বিশ্রাম মানে আগে পড়া একটা বই হাতে বিছানায় আধশোয়া হয়ে তেঁতুল খাওয়া, রাতে গল্পের বই পড়তে পড়তে টিভি দেখা। গত ৮ মাসে ছাপার অক্ষরে বাংলা পড়ার সুযোগ হয়নি। পড়ার সীমাহীন ক্ষুধা আমি মিটাচ্ছি ব্লগ পড়ে পড়ে।
দেশ থেকে দূরে আছি বলে কিনা জানি না, দেশ নিয়ে যেকোন লেখা আগের চেয়ে অনেক মন দিয়ে পড়ি। বার বার পড়ি। দেশ সংক্রান্ত যেকোন লেখা বিপুল উৎসাহ নিয়ে পড়তে শুরু করলে এক ফুঁয়ে নেভানো দিয়াশলাই মত অনুভুতি হয়। আবার কোন একটা খারাপ খবর নয়তো? জানি আমরা স্বল্পোন্নত দেশ। যে চেতনা নিয়ে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ তার অনেকটাই এখনো বাস্তবায়িত হয় নি। দেশে রোজ অসংখ্য খুনজখম হয়। প্রতিদিন দখল হচ্ছে নদী, ভুগর্ভস্থ পানির উচ্চতা আরো নেমে যাচ্ছে। বাড়ছে লোডশেডিং, পাল্লা দিয়ে জ্যাম। তবু কোথাও কি কোনকিছু আগের দিনের চেয়ে এক বিন্দু অগ্রসর হচ্ছে না? দেশের যে ছোট ছোট উন্নতি, তা যত মন্থর ও স্বল্প পরিসরে হোক না কেন, আমরা কি একটু কষ্ট করে লিপিবদ্ধ করতে পারি না (এই পোষ্টে মন্তব্য আকারে লিখেই অভ্যাসটা শুরু করা যেতে পারে)? নিজেদের ভাল দিকগুলো না জানতে পারলে আসলে অনেক হতাশ লাগে।
আমাদের ক্ষমতা সীমাবদ্ধ। তবুও ফেঁসে যাওয়া তলার একটা ঝুড়িতে রিফু করার উদ্যোগ আমরা নিতেই পারি। কিন্তু তার আগে আমাদের তলাবিহীন ঝুড়ির অনুভব থেকে মুক্তির জন্য সাহায্য প্রয়োজন।

২,৫০৭ বার দেখা হয়েছে

৫৩ টি মন্তব্য : “একটি ব্যক্তিগত হতাশা থেকে উত্তরণের জন্য সাহায্যের প্রয়োজন”

  1. ফয়েজ (৮৭-৯৩)

    হা হা হা মেলিতা।

    হতাশ হবার কিছু নেই। বাংলাদেশের মূল সমস্যা বিশাল জনসংখ্যা। ম্যাক্রো স্কেলে সফলতার মাপকাঠিতে তাই বাংলাদেশের ইনডেক্স গুলো খুব ছোট ছোট লাগে। কিন্তু আসলে বাংলাদেশ অত ক্ষুদ্র কিন্তু নয়। বিশাল জনসংখ্যার চাপে আমরা কোন কিছু ধরে রাখতে পারিনা, কিন্তু হাসি-আনন্দ-বেচে থাকার স্বাদ তাতে ফিকে হয় না। হয় কি? বাংলাদেশের মানুষের মাঝে যে প্রান আছে, তা আমি তো ইন্ডিয়ার ছাড়া আর কোথাও দেখিনি।

    যতদ্রুত এগুলো দরকার, সামর্থ্য থাকার পড়েও এগুচ্ছে না, কিন্তু এগুচ্ছে। থ্রেসহোল্ড পিরিয়ড পেরিয়ে গেলেই দেখবা সব কিছু বদলে যাচ্ছে খুব দ্রুত।

    অধিকাংশ ইকোনমিস্ট কিন্তু তাই ধারনা করছে, দেশের, বাইরের। হতাশ হলেই বরং পিছিয়ে যাবার সম্ভবনা।

    চিয়ার আপ ইয়াং লেডী :goragori: :goragori:


    পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

    জবাব দিন
    • মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

      বাংলাদেশের অর্থনীতিকে বিশ্বের সবচাইতে প্রভাবশালী বিনিয়োগ ব্যাঙ্কের একটি " গোল্ডম্যান স্যাক্স" নেক্সট ইলেভেন বা পরবর্তী সবচাইতে সম্ভাবনাময় এবং সম্ভাব্য বৃহৎ অর্থনীতি হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।ট্র্যাফিক জ্যামে বসে এই দেশের চৌদ্দগুষ্টি আমিও উদ্ধার করি আপু,কিন্তু শাপশাপান্ত করা এই দেশের নারী অধিকার নিয়ে ভারতীয় কোন নারী যখন ভিনদেশের মাটিতে প্রশ্ন তোলে তখন তাকে জিজ্ঞাসা করি যে তার স্বামীর মৃত্যুর পর তাকেও সহমরণে যেতে হবে কিনা।আমার দেশের অবশ্যই সমস্যা আছে(নারী অধিকার সহ)-কিন্তু এই দেশের সমস্যা নিয়ে ততোধিক সমস্যায় জর্জরিত কোন দেশের নাগরিকের অঙ্গুলিহেলন সহ্য করতে আমি রাজী নই।

      একটা সত্যি কথা বলি আপু-আমাদের এই গরীব দেশটাকে আমরা অধিকাংশ মানুষই খুব বেশি ভালবাসি।আমার মায়ের মুখে বসন্তের দাগ আছে বলে তো আর তাকে মা বলে অস্বীকার করতে পারিনা,তাইনা? এই জিনিসটা এই দেশের বেশিরভাগ মানুষ জানে-তাই আজ না হয় কাল এই দেশের উন্নতি কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবেনা।

      জয়তু বাংলাদেশ।

      জবাব দিন
      • মেলিতা

        ধন্যবাদ ফয়েজ ভাই ও মাসরুফ। আমি মনে হ্য় আমার বক্তব্য ঠিক বুঝাতে পারি নি।
        আমি আমার দেশ নিয়ে খুবই আশাবাদী।
        আপনারা ২ জন সামগ্রিক ভাবে উন্নয়ন ও আশাবাদের উপর আলোকপাত করেছেন। আমার সমস্যা হল আমি একবারে পুরোটা নিয়ে চিন্তা করতে পারি না।ভেংগে ভেংগে ভাবতে হ্য়। আমি উন্নতিটা কে কয়েক ভাগে ভাগ করবো। শিক্ষা ক্ষেত্রে উন্নতি, প্রযুক্তি ক্ষেত্রে উন্নতি, পরিছন্নতায় উন্নতি ইত্যাদি। এমনকি পুরো দেশটাকে নিয়েও একবারে ভাবতে পারি না। আগে দেখি পারিবারিক ভাবে আমি সেই পর্যায়ে গেছি কিনা। তার দেখি আমার বন্ধুবান্ধবরা পেরেছে কিনা।আমার আসেপাশের সবাই পেরেছে কিনা। আমি এক্টা উদাহরন দিতে চাই
        ১০/১৫ বছর আগে ঢাকার আবর্জনা ফেলার কথা মনে আছে? অনেকেই গলির মোড়ে ল্যাম্পপোস্টের গোড়ায় ফেলে আসতো। আজকে কিন্তু আমরা ঢাকায় এটা ভাবতেই পারি না। উদ্যোগটা শুরু হয়েছিল এক্টা পাড়ায়। এর পর বিটিভির প্রচারের কারনেই কিনা জানি না এখন আবর্জনা ফেলার এক্টা ব্যবস্থা আছে। এভাবে ছোট ছোট উন্নতির খবর গুলো ছড়িয়ে দিলে সবাই সেটা পুনরাবৃত্তি, পরিবর্তন, পরিবর্ধন করে আরো বড় পরিসরে ব্যবহার করতে পারব।

        জবাব দিন
  2. আছিব (২০০০-২০০৬)

    :party: আফা+ভাবী (বুয়েটিয়ান,তাই আফা).........লেখাপড়া শেষ করিয়া দেশে ফিরিয়া আসুন.........দেখেন,ভালো কিছু করতে পারেন কিনা 🙂 .........
    আসলে ভালো অনেক কিছুই হচ্ছে।পেপার পড়ে আর কতটুকুই জানবেন,সব দুঃসংবাদের আড়ালে চাপা পড়ে যাচ্ছে।
    দেশের বাইরে থাকলে মনে হয় সবাই আপনার মতই হতাশ হন,তারপরও দেশের বাইরে যেতে ইচ্ছে করে 🙁

    জবাব দিন
    • মেলিতা

      দেশে ফিরার ইচ্ছা আছে।
      এইটাই কথা ভাইয়া তুমিও জানো অনেক ভাল কিছু হচ্ছে, আমিও জানি, বিশ্বাস করি। কিত্নু দুঃসংবাদ যত দ্রুত ছড়ায় ভালো কাজ গুলো কি সেভাবে মানুষ জানে। কিন্তু জানা দরকার।

      জবাব দিন
  3. বন্য (৯৯-০৫)

    আগে আপনার হাতাশা একটু বৃদ্ধি করি। 😀
    আমার ব্যাক্তিগত পর্যবেক্ষন হচ্ছে, আমরা একটু স্বার্থর্পর প্রকৃতির।মুখে যতই দেশপ্রেমের বুলি আউড়াই না কেন,ঠেলায় পড়লে ঠিকই দেশচিন্তা গৌণ হয়ে পড়ে। কিন্তু নিজের আর দেশের উন্নতি কিন্তু একসাথেই করা সম্ভব এবং সেটাই দরকার।কিন্তু আমরা ভাবি যে দেশের জন্য কাজ করলে হয়তবা নিজের জীবন লাইনচ্যুত হয়ে পড়তে পারে।

    র‌্যান্ডমলি উন্নতির চেষ্টাও একটা কারণ বলে মনে হয়।অনেক মানুষ কিন্তু দেশের উন্নতি চায় সত্যিকারভাবেই,অনেক মানুষ।কিন্তু কেন যেন তারা এক হতে পারেনা।ফলশ্রুতিতে উন্নতির ছোট ছোট ঢেউগুলো ছোট্ট আলোড়নেই হারিয়ে যায়..বড়সড় একটা ধাক্কা দিতে পারেনা।

    আর আশার কথা হল,এই যে আপনি চিন্তা করছেন,আপনার মত আরও অনেকেই কিন্তু দেশের জন্য চিন্তা করে,কিছু করতে চায়।এত মানুষের চাওয়া থেকেই একদিন খুব ভাল কিছু বেরিয়ে আসবে আমি নিশ্চিত।শুধু শুরুটা হওয়া দরকার,তারপর দেখবেন আমাদের দেশের তলা রিফু তো রিফু,স্টীল দিয়ে বাধিয়ে দেওয়া যাবে।

    হতাশ হওয়ার কি আদৌ কোন কারণ আছে আপু?সময় চলে গেলে না মানুষ হতাশ হয়..কিন্তু সময় তো এখনও আছে আপনার সামনে,আমার সামনে।সেই সুযোগ ও সময় গুলোকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করি আসুন...তাহলে হতাশ হওয়ার সময়টুকুই পাওয়া যাবেনা।

    ভাল থাকবেন।

    জবাব দিন
  4. কামরুলতপু (৯৬-০২)

    কি খবর মেলিটা কেমন আছ। মনে হয় প্রবাসী রোগে ধরেছে তোমাকে। ক্রিকেটে একটা কথা আছে, খেলাটা দলের মোড়কে ব্যক্তিগত খেলা (ফুটবল থেকে আলাদা), নিজে ভাল খেললে দলের ভাল হয়।
    আমাদের ও একই উপায়ে যেতে হবে। সবাই মিলে নিজের উন্নতি করি অবশ্যই আর্থিক নয়, চারিত্রিক, নৈতিক এবং সর্বোপরি দক্ষতা তাহলেই দেশ এগিয়ে যাবে। চীন এবং ভারত এইভাবেই এগিয়ে গেছে।
    ভাল খবর শুনতে চাও? দুবছর আগে নোবেল প্রাইজ এসেছে এবছর একজন নাইট উপাধি পেয়েছে বিশ্বের মধ্যে এই যে ছোট একটা দেশ থেকে এসব শুরু হয়েছে এসবই সামনে এগুবার পদক্ষেপ।
    ভাল থেকো।

    জবাব দিন
  5. সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

    আশা থাকলে হতাশা থাকবেই মেলিতা। আমাদের এই গাঙ্গেয় ব-দ্বীপের মানুষ বারবার আশায় ঘর বাঁধে, আবার হতাশায় ডুবে যায়, ফের আশা নিয়ে জেগে উঠে। এতো কমে এতো সন্তুষ্ট মানুষ বিশ্বে আর কোথাও দেখেছো? লোভ, হিংসা, চুরি, দুর্নীতি তো আমাদের মতো সমাজের কিছু মানুষের রোগ। সাধারণ মানুষ, কতো সাহসী, কতো পরিশ্রমী, কতো লড়াকু, দারুণ সৎ! ভেবে দেখো, ১৬ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিয়ে ছোট্ট এই দেশটা এখনো ভেসে আছে। শুধু তাই না, এগিয়েও যাচ্ছে। হোক না তা কচ্ছপের গতি।

    ভালো থেকো। শুভকামনা।


    "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

    জবাব দিন
  6. ধন্যবাদ ভাইয়া। আমি আপনার মন্তব্যের জন্য অপেক্ষা করছিলাম।
    সবার এত সততা, পরিশ্রম, লড়াই স্বত্তেও আমরা পিছিয়ে পরছি কেন? কয়েকজন দুর্নীতিবাজদের কাছে হেরে যাচ্ছি ঐক্যবদ্ধ না হতে পেরে। সেটা হতে পারে আমাদের প্রচার বিমুখিতার কারনে।আমি ভাইয়া হতাশার কথা জানাতে এই পোস্ট করি নি। করেছি ভাল কাজ গুলোর বিবরন সংগ্রহ করে অনুপ্রেরনা জোগানোর জন্য। আমি আসলে আমার মনের ভাব টা ঠিকমত প্রকাশ করতে পারি নি।
    আমি সাদা বাংলায় জানতে চাই

    সারাদিনে ঠিক কোন ব্যপার টা দেখে মনে হ্য় দেশ আগাচ্ছে? কয়েক বছর আগেও যেতা হত না

    জবাব দিন
  7. ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

    আমি শুনেছি আগে গ্রামের মানুষের পায়ে দু-একজন বাদে কারো চপ্পল থাকতো না, এখন সবার পায়ে স্যান্ডেল। পুরনো কাপড় নিতে কেউ আগ্রহী হয় না - তারমানে কাপড়ের সমস্যা তেমন বেশি না।
    ব্যক্তিগত পর্যায়ে অনেকে অনেক উন্নয়ন মূলক কাজ করছেন। আমাদের এখান থেকে অনেকে দেশে চলে গেছেন - কেউ কেউ আশার কথা শোনায়, কেউ কেউ হতাশার। ওসব লিখতে গেলে বিশাল ব্লগ হয়ে যাবে।


    “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
    ― Mahatma Gandhi

    জবাব দিন
    • জ্বী আপু। ব্যক্তিগত পর্যায়ে অনেকেই অনেক কাজ করছে।কিন্তু সেটার কি আরেকটু প্রচার পাওয়া উচিত না? আপনার নাম দিয়ে আমি গুগলিং করে আমার মনে হয়েছে আপনিও এইরকম কিছুর সাথে যুক্ত। আমাদের সেই ব্যপার গুলো জানতে দিন 🙂

      জবাব দিন
    • মেলিতা

      কাপড়ের সমস্যা আসলেই কমেছে।
      ভাল কাজ গুলোর ঠিকমত প্রচার হ্য় না। আপনার নাম দিয়ে গুগলিং করে আমার মনে হয়েছে আপনিও এমন কিছুর সাথে যুক্ত। আমাদের কে ব্যপারগুলো জানতে দিন 🙂

      জবাব দিন
  8. একটা উন্নয়নের কথা আমি সবার আগে বলতে চাই।আমার শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যাপক একটা পরিবর্তন এসেছে,এখন আর পরীক্ষার সময় আগের মত নকল হয় না,আমরা যখন ছোট ছিলাম,পেপার এ সব সময় দেখা যেত বোর্ড পরীক্ষা গুলোতে নকল আর বহিস্কারের ছড়াছড়ি।আব্বু আম্মুর সময় নাকি ঘটা করে নকল হতো।কিন্তু এখন সেই প্রবণতা কমে এসেছে বহুলাংশে।আমি মনে করি এর পিছনে আমাদের সচেতনতা,পড়াশুনার প্রতি আমাদের আগের চেয়ে বেশি একাগ্রতা,আর কর্তৃপক্ষের কঠোরতা এসব ই একসাথে কাজ করেছে।
    এটা কি উন্নয়নের পথে অনেক বড় অর্জন না আপু?

    জবাব দিন
    • জিহাদ (৯৯-০৫)

      আমি নিজে প্রাইমারী থাকতে কাজিনের নকল সাইজ করতে হেল্প করতাম :))
      নকলের জন্য ছোট ছোট কাগজে গুটি গুটি করে লেখা দেখতে আমার খুব ভালো লাগতো। আব্বা কলেজের টীচার বলে অনেকসময় কলেজে গিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে পিছনে গিয়ে গাদা গাদা নকলের কাগজ জড়ো করে বাসায় নিয়ে আসতাম। এইটা হবি টাইপের ছিল 😛 একবার আব্বা একটা কবিতা নিয়ে আসছিল বাসায়। সেইটা এক প্রেমিক যুবক তার প্রেমিকাকে নকলের সাথে স্ট্যাপলিং করে জানলা দিয়ে ছুড়ে মারসিল। কিন্তু ভাগ্য খারাপ। আব্বার চোখে পড়ে যাওয়া প্রেমিকার প্রেম এবং পরীক্ষা দুইটাই খতম।

      নকলের পরিমাণ এখন আসলেই আশংকাজনক হারে কমে গেছে। সেভাবে এখন নেই বললেই চলে 😀
      হয়তো অচিরেই আমরা এই শিল্পটিকে চিরকালের মত হারাতে যাচ্ছি।


      সাতেও নাই, পাঁচেও নাই

      জবাব দিন
  9. মেলিতা

    @জেরিনাপ্পু
    হুমম...
    আসলেই কিন্তু আমার ভয় লাগে নকল কমেছে শিক্ষার মান কমার সাথে সাথে কিনা!!! আমি অবশ্য জানি না।
    @জিহাদ
    নকল নিয়ে এত গল্প শুনেছি যে নকল শিল্পের বিলুপ্তি নিয়ে এক্টা বই লেখা যাবে

    জবাব দিন
  10. রাব্বী (৯২-৯৮)

    গ্রামে বেশিরভাগ মানুষ এখন স্যানেটারি ল্যাট্রিন ব্যবহার করে আর শহরে অনেক মানুষ এখন কমোড ব্যবহার করে। এছাড়া সৌচকার্য সম্পাদন করে সাবান, মাটি বা স্যানিটাইজার ব্যবহার করে। এইটা তো আশার কথা, তাই না? 😀

    এছাড়া উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে। সংখ্যানুপাতে ততোধিক বাংলাদেশি এখন ফেইসবুকিং করে আরো সামাজিক হয়েছে। এছাড়া আমরা ব্যাপকভাবে সেলুলার ফোনে সামাজিক আলাপ-সালাপ করি। এইটাও তো একটা আশার কথা কোন কোন কোম্পানি বা দেশের জন্য। 🙁

    আগেকার দিনে প্রেম-ভালবাসাকে বেশিভাগ পরিবারেই নেতিবাচক সামাজিক আচরণ হিসেবে দেখা হতো। বাংলাদেশের হাজার হাজার ছেলেমেয়ে নিরলস পরিশ্রম করে ব্যাপারটাকে একটা গ্রহনযোগ্য পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। ব্যক্তি পর্যায়ের এই বিল্পব করে সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে ‌যে সামস্টিক পরিবর্তন করলো সেটাই বা কম কিসে?! 😀


    আমার বন্ধুয়া বিহনে

    জবাব দিন
    • আরে ভাইয়া আপনি তো অনেক ভালো ভালো জিনিস বলেছেন। আমার পরিকল্পনা হচ্ছে এইখান সব আইডিয়া গুলোর এক্টা তালিকা বানায়ে রাখবো। ডিমোটিভেটেড হলেই দেখব 😀

      জবাব দিন
  11. কিবরিয়া (২০০৩-২০০৯)

    আমার বাড়ি সুন্দরগঞ্জ, গাইবান্ধা। এলাকায় শিবরাম স্কুল নামে একটা প্রাইমারী স্কুল আছে। হয়তোবা অনেকেই নাম শুনে থাকবেন। এই স্কুলটা চালায় নুরুল মাষ্টার নামে একজন। যতজন এই স্কুলে পড়ে তারা সবাই ক্লাস ফাইভে বৃত্তি পায়, সবাই এক অনন্য উপায়ে শিক্ষা লাভ করে। সব চেয়ে মজার ব্যাপার হলো, নুরুল মাষ্টারের নিজের উদ্যোগে তিনি এই স্কুল চালায়। কোনো সরকারী সাহায্যর আশায় তিনি থাকেন না। মোটকথা এটা একটা মডেল স্কুল, বিদেশের অনেক মানুষ এসে এই স্কুল দেখে গেছে এবং তারা নিজেদেরটা এইরকম করতে চাইছে, অথচ আমাদের দেশের অনেকেই এটা গ্রহন করে নাই।
    😕


    যেমন রক্তের মধ্যে জন্ম নেয় সোনালি অসুখ-তারপর ফুটে ওঠে ত্বকে মাংসে বীভৎস ক্ষরতা।
    জাতির শরীরে আজ তেম্নি দ্যাখো দুরারোগ্য ব্যাধি - ধর্মান্ধ পিশাচ আর পরকাল ব্যবসায়ি রূপে
    - রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ

    জবাব দিন
  12. কিবরিয়া (২০০৩-২০০৯)

    আপু আপনি নেটে খোজ দিলে আরো এইরকম অনেক কিছু পাবেন। আমাদের দেশটা সত্যই সোনার দেশ, কিছু সুবিধাবাদী কর্মকর্তা আর ফালতু কিছু রাজনীতিবিদ দিয়ে একটা দেশ বিচার করা কী ঠিক আপু??? আমরা আমজনতারাই বাংলাদেশ, আমরাই ফিউচার, আমাদের জেনেরেশন না পারলে বড় বেশি দেরী হয়ে যাবে, আপু। take responsibility to change the changes. :thumbup:


    যেমন রক্তের মধ্যে জন্ম নেয় সোনালি অসুখ-তারপর ফুটে ওঠে ত্বকে মাংসে বীভৎস ক্ষরতা।
    জাতির শরীরে আজ তেম্নি দ্যাখো দুরারোগ্য ব্যাধি - ধর্মান্ধ পিশাচ আর পরকাল ব্যবসায়ি রূপে
    - রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ

    জবাব দিন
  13. তারেক (৯৪ - ০০)

    মেলিতা ভাবী,
    পোস্টটা পড়ে খুব ভাল লাগলো।
    প্রবাস জীবনের শুরুতে আমার এরকম হয়েছিলো একবার। ২০০৪ এর শুরুর দিকের কথা তখন। নেট ভর্তি এরকম ব্লগ ছিলো না সে সময়, পড়ার জন্যে একমাত্র ছিলো দেশী পত্রিকাগুলো। অবশ্য তবু যে ছিলো, সে জন্যেই অনেক শোকর করি।
    তখন এরকম শুধু খারাপ খারাপ খবর পড়ে মাঝে মাঝে হতাশা চেপে বসতো।
    যায়যায়দিন পত্রিকা সেসময় বেশ ফর্মে ছিলো। আমি একসময় যাযাদি-র ব্যাপক ফ্যান ছিলাম, ৯৬ এ লীগ যখন ক্ষমতায় আসলো, যাযাদি তাদের খুব সমালোচনা করত। আমার দেখে খুব ভাল লাগতো যে এরকম একটা সাহসী পত্রিকা আছে দেশে যারা সরকারের সমালোচনা করতে পারে! আমি যে একটা বেকুব, শফিক রেহমান তার প্রমাণ দিয়ে দিলো নির্বাচন আসার আগে আগে। অতঃপর নির্বাচনের পর বিএনপি ক্ষমতায় এলে রেহমানের পত্রিকা শুরু করলো সরকার-তোষণ। সেই সময় আমার মোহ ভাঙ্গে। আমি টের পেলাম যে সরকার সমালোচনা নয়, বরং নির্দিষ্ট দলকে তেল মারাই এই পত্রিকার প্রধান কাজ। রাগের মাথায় যাযাদি পড়া ছেড়ে দিলাম।
    পরে দেশের বাইরে গিয়ে নেটে যখন সব পত্রিকা পড়তাম, তখন যাযাদিও দেখা শুরু করলাম আবার। সেসময় ওদের একটা কলাম ছিলো, "আলোয় ভুবন ভরা"। ওই নিবন্ধে বেছে বেছে বাংলাদেশের সব ভাল ভাল খবর ছাপা হতো। কোথায় কে ভাল করেছে, দেশের উন্নতির জন্যে কোথাও কেউ কী সুকীর্তি করেছে- এইসব। এই খবরগুলো পড়লে মন ভাল হয়ে যেত তখন, হতাশাও কেটে যেত। যাযাদির উপর মেজাজ খারাপ থাকলেও শুধু ঐ কলামটা এত ভাল লাগতো যে সেই কলামিস্টের কাছে ইমেইলও দিয়ে ফেলেছিলাম ধন্যবাদ জানিয়ে।

    যাকগে ভাবী, আপনার কথানুযায়ী কোন ভালো খবরের সন্ধান দেয়া হলো না, শুধু নিজের পুরনো স্মৃতির প্যাচাল পাড়লাম। 🙂

    ভাল থাকবেন।


    www.tareqnurulhasan.com

    জবাব দিন
  14. কিবরিয়া (২০০৩-২০০৯)

    আমি নতুন এই ব্লগে :shy:
    তাই প্রথমে বুঝবার পারি নাই, সবাই ভাবী ভাবী করতে ছিল কেনো??!! ~x(
    এখন বুঝলাম। :goragori:
    বিশাল মিস করছি মনে হয় 🙁
    কনগ্রাচুলেশন আপু + ভাবী ( যেহেতু একবার আপু কইয়া ফালাইছি 🙂 )


    যেমন রক্তের মধ্যে জন্ম নেয় সোনালি অসুখ-তারপর ফুটে ওঠে ত্বকে মাংসে বীভৎস ক্ষরতা।
    জাতির শরীরে আজ তেম্নি দ্যাখো দুরারোগ্য ব্যাধি - ধর্মান্ধ পিশাচ আর পরকাল ব্যবসায়ি রূপে
    - রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ

    জবাব দিন
  15. খায়রুল আহসান (৬৭-৭৩)

    আমি গত ৪/৫ বছর যাবত "Serving The Humanity" নামের এক সমাজকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত আছি। এটা মুলতঃ কিছু প্রাক্তন এমসিসি ক্যাডেটদের নিয়ে গঠিত, যারা জনদরদী মনোভাবাপন্ন এবং প্রত্যেকেই নিজ নিজ পেশায় প্রতিভার উজ্জ্বল স্বাক্ষর রেখেছেন। এই প্রতিষ্ঠানটি এর বাইরেও কিছু পরোপকারী উৎসাহী ব্যক্তিদের নিয়ে জামালপুর জেলার মেলান্দহ উপজেলার দূরমুট নামক এক প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রথমে খুবই ছোট্ট পরিসরে একটা স্বাস্থ্যসেবা ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করে, যার উদ্দেশ্য ছিলো এলাকার মূলতঃ নারী ও শিশুদের কাছে অন্ততঃ গড় মানের চিকিৎসা সেবা প্রদান করা। এটা জানা কথা যে গ্রাম ও চর এলেকার হতদরিদ্র নারীদেরকে তাদের জীবন সংকটাপন্ন হবার আগে পর্যন্ত পরিবারের কেউ ডাক্তারের কাছে নেয়না। তাই মূলতঃ তাদেরকে লক্ষ্য করেই আমা্দের এ উদ্যোগ ছিলো। সেখানে টিনছাদসহ একটি পাকা ঘর নির্মাণ করে ক্লিনিকের কার্যক্রম শুরু করা হয়, যার জন্য জমি দান করেছে এমসিসিরই দুই প্রাক্তন ক্যাডেটের (সহোদর) পরিবার। মাত্র দশ টাকার বিনিময়ে যে কেউ সেখানে ঔষধসহ (নির্দ্দিষ্ট তালিকার অন্তর্গত) চিকিৎসা সেবা পেতে পারে। খুবই আনন্দের বিষয় যে সেখান থেকে এখন গড়ে মাসে প্রায় ১৪০০-১৫০০ রোগী চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকে, যাদের মধ্যে বেশীরভাগই হতদরিদ্র নারী ও শিশু। ঐ প্রজেক্ট থেকে সেখানে শিশুদের জন্য কৃ্মিনাশক (Deworming) কার্যক্রমও গ্রহণ করা হয়।
    যাহোক, এই ক্লিনিক সম্বন্ধে জানানোটা আমার এ লেখার মূল উদ্দেশ্য ছিলনা, কথা প্রসঙ্গে বলতে হয়, তাই প্রথমে এসব কথা বলে নিলাম। ক্লিনিকটার জন্য যখন একটা পাকা ঘর বানাতে হবে, তখন ইট বালু সিমেন্ট ইত্যদি কেনা হলো। দ্রুতই কাজও শুরু হলো। ইট ভাঙ্গার কাজে মূলতঃ নারী ও শিশুরা যুক্ত হলো। একজন প্রাক্তন ক্যাডেট যিনি এই প্রতিষ্ঠানের চালিকাশক্তি, ইটভাঙ্গারত সেই নারী ও শিশুদের কিছু ছবি তুলে পোস্ট করে দিলো গ্রুপ মেইলে, যেন গ্রুপের ডোনাররা অগ্রগতি সম্পর্কে অবগত হন। ব্যস, এখান থেকেই শুরু হলো এক নতুন মোড়, কাজের এক নতুন শাখা। দেশী প্রবাসী ডোনাররা প্রশ্ন তুলতে থাকলো, শিশুদের কেন এ কাজে নিয়োগ করা হলো। সেখান থেকেই শুরু হলো নতুন চিন্তা ভাবনা। ক্লিনিকের পাশাপাশি এই শিশুদের কাছে শিক্ষাকে কিভাবে সহজলভ্য করা যায়, সে নিয়ে চিন্তা ভাবনা। সিদ্ধান্ত হলো, এসব শিশুকে আমাদেরই উদ্যোগে স্কুলে ভর্তি করানো হবে। পাশেই একটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিলো, খুবই জীর্ণ শীর্ণ দশা। প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলা হলো। তিনি রাজী হলেন দুপুরের পর একটি কক্ষ ছেড়ে দিতে, আমাদের ব্যবস্থাপনায় একজন শিক্ষক নিয়োগ করে সেখানে ঐসব শিশুদের জন্য ক্লাস নেয়া হবে। আমি নিজে সেখানে ব্যক্তিগত পরিদর্শনে গিয়ে অবাক হয়ে যাই গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর দৈন্যদশা দেখে। বিদ্যালয়ে মাসের প্রায় ২৮ দিনই ছাত্র বা শিক্ষক কেউই আসেনা। শুধু সরকারের ভাতা পাবার জন্য মাসে দুই একদিন এসে সবাই রেজিস্টারে সই করে যায়। বাকী দিনগুলোতে বিদ্যালয়ের মাঠে ও বারান্দায় গরু ছাগল ভাগাভাগি করে বিচরণ করে, আর শ্রেণীকক্ষ ও শিক্ষক কক্ষে কুকুর ও ছাগল ভাগাভাগি করে সুখনিদ্রা যায়।
    পরের বছরই আমরা সেখানে অবস্থিত ব্যক্তি মালিকানায় পরিচালিত একটা কিন্ডারগার্টেনের সাথে যোগাযোগ করে আমরা আমাদের শিশুদেরকে সেখানে ভর্তি করে দেই। সুখের কথা, আজ আমাদের নির্বাচিত প্রায় ৮০ জন শিশু ও বালক বালিকা সেখানে আমাদের অর্থায়নে শিক্ষালাভ করছে। আরও অনেকে আরও অনেক শিশুকে স্পনসর করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছে, কিন্তু ম্যানেজমেন্ট সম্ভব নয় বলে আমরা আপাততঃ আর এর কলেবর বাড়াচ্ছিনা। ভর্তি হওয়া শিশুদের অভিভাবকগণকে আমরা তাদের আয়বঞ্চিত হবার জন্য ক্ষতিপূরণ অফার করেছিলাম। কয়েকমাস নেবার পরে তারা তাদের সন্তানদের অভাবনীয় সাফল্য দেখে কতজ্ঞতাস্বরূপ তা নিতে বিনয়ের সাথে অস্বীকৃ্তি জানায়। আমাদের সমাজের এই দরিদ্র শ্রেণীর আত্মসম্মানবোধ দেখে আমি অভিভূত হয়ে যাই। এর ক্ষুদ্রাংশও যদি আমাদের মত স্বার্থলোভী, সুবিধাভোগী শ্রেণীর মধ্যে থাকতো!
    এই দুটো ছোট সাফল্যের কথা আপনাকে জানাতে গিয়ে লেখার কলেবরটা অনেক বড় হয়ে গেলো। এখন দেখছি এটা নিজেই আলাদাভাবে একটা ব্লগ হতে পারতো!

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : কচুপাতা (১৯৯২-৯৮)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।