মালেয়শিয়ার চিঠি – ২

[ গতকালের আমার লেখা পরে অনেকের খারাপ লেগেছে। আজকে তাই একটি মজার ঘটনা লিখলাম ]

আজকের সকালে বাসার নিচের দোকানে গেলাম কিছু কেনাকাটা করতে। দোকানের লোকটা জানে আমি বাংলাদেশি। সে আমাকে মালায়শিয়ান জাতিয় পত্রিকা কসমোর একটা পাতা দেখিয়ে বলছে,
“দেখ, তোমাদের দেশের কথা লিখছে”। কসমো মালায় ভাষার পত্রিকা, তাই উনি আমাকে বলেদিলেন কি লেখা আছে। পত্রিকার হেডিং হল “বাংলাদেশি মানুষের আকষন”। এক মালায়শিয়ান মেয়ে বাংলাদেশি একছেলের প্রেমে পরে বাংলাদেশ এ চলে গেছে। মেয়ের বাবা মা মেয়ে কোন খোঁজ পাচ্ছে না , এই সব।

এর পাশেই বাংলাদেশি ছেলেদের নিয়ে মালায়শিয়ান মেয়ে দের একটা জরিপের ফলাফল, আমি কয়েকটা মেয়ের কথা দিলামঃ

” মালায়শিয়ান ছেলেরা বাংলাদেশি ছেলেদের চেয়ে অনেক হিংস্র তারা জানে না কিভাবে একটি আধুনিক মেয়েকে আনন্দ দিতে হয় ” – আজিজি নুর আরশাদ

“আমি বাংলাদেশি ছেলেদের ভালবাসতে চাই না, তবে আমার বন্ধুরা বলেছে যে, বাংলাদেশি ছেলারা অনেক বেশি কেয়ারিং, সবসময় বেশি আত্মত্যাগ করে এবং প্রশংশা করতে জানে” – সিতি নুর বুলিয়ানা

“তারা (বাংলাদেশি) সবসময় অনেক ভাল ব্যবহার করে, যেখানে আমাদের দেশিরা সব সময় শুধু অভিযোগ করে ” – নুর হায়াতি হাশমি

আর এ শুধু এই কারনেই বাংলাদেশি ছেলেদের দেখতে পারেনা মালায়শিয়ান পুলিশ । কিছুদিন আগে সরকার আইন করে দিয়েছে, যাতে বাংলাদেশি শ্রমিকরা কোন মালায়শিয়ান মেয়ে বিয়ে করতে পারবে না। তবে স্টুডেন্ট আর এক্সপাটরা চাইলে মালায়শিয়ান মেয়ে বিয়ে করতে পারবে এবং তাদের কে পি-আর অথবা লং টাম ভিসা দেওয়া হবে । 🙂 এই প্রোগাম কে বলে “স্পাউস ভিসা”। ইতি মধ্যে বেশ কিছু বাংলাদেশি ছাত্র মালায়শিয়ান মেয়ে বিয়ে করে “হাফ মালায়ু” হয়ে গেছে। আসলে, এই প্রোগামটা বেশ ভাল, বিশেষ করে বাংলাদেশি দের জন্যে, কারন অনেক ছেলে আছে টিউশন ফি না দিতে পেরে, অবৈধ হয়ে যায়। তারা হয়ত এখন বৈধ ভাবে মালায়শিয়া অনেক দিন থাকতে পারবে, কাজও করতে পারবে।

ল-ইয়াত প্লাজায় বাংলাদেশি দোকান

আরেকটা খবর দেখলাম, ল-ইয়াত প্লাজা নিয়ে, ল-ইয়াত মালায়শিয়ার সব ছেয়ে বড় কম্পিউটার মাকেট। এই খানে প্রায় ৫০ টা বাংলাদেশী দোকান আছে, আভিযোগ এসেছে, এখানে নাকি বাংলাদেশিরা প্রতারনা করছে। পুরাতন ও নকল জিনিস বিক্রি করছে। আসলে কিন্তু ঘটনা সত্য। আমার এক নাইজেরিয়ায় বন্ধু বাংলাদেশি দোকান থেকে কম্পিউটার কিনেছে, তার মেশিনে প্রায় প্রতিদিন সমস্যা দেখা দিত । পরে আমি একদিন গেলাম। বাংলাদেশি দেখে বললাম ভাই এই কম্পিউটার এর সমস্যা কি । আমাকে বলে, আপনার বন্ধু তো আবুল। ওরে একটু কাশেম বানাইছি। পরে বলে ১০ মিনিট পরে আসেন। ১০ মিনিট পরে দেখলাম সব ঠিক। এর পরে আমি আমার কম্পিউটার বা মোবাইল কিনতে আর বাংলাদেশি দোকানে যাই না ।

(আসছে…)

২,৮১৭ বার দেখা হয়েছে

২৭ টি মন্তব্য : “মালেয়শিয়ার চিঠি – ২”

  1. সাকেব (মকক) (৯৩-৯৯)
    কিভাবে একটি আধুনিক মেয়েকে আনন্দ দিতে হয়

    বাঙালী/ বাংলাদেশী পুরুষ হিসেবে পুরা জাতির এই গর্বে আমিও গর্বিত 😉


    "আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
    আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস"

    জবাব দিন
  2. তাইফুর (৯২-৯৮)
    তবে স্টুডেন্ট আর এক্সপাটরা চাইলে মালায়শিয়ান মেয়ে বিয়ে করতে পারবে এবং তাদের কে পি-আর অথবা লং টাম ভিসা দেওয়া হবে

    বাজান, তুমার ভিজা-ভিজির দরকার নাই। তাড়াতাড়ি পড়াশুনা শেষ কইরা দেশে চইলা আস। পড়াশুনা করতে গ্যাছ, পড়াশুনা কর। ভুলেও খাড়া..না করবানা।


    পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
    মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥

    জবাব দিন
  3. মালায়শিয়ান ছেলেরা বাংলাদেশি ছেলেদের চেয়ে অনেক হিংস্র তারা জানে না কিভাবে একটি আধুনিক মেয়েকে আনন্দ দিতে হয়

    তাইলে হালার মালেশিয়ায় যামু 😉

    জবাব দিন
  4. ফয়েজ (৮৭-৯৩)

    প্রথম নিউজ টা ব্যাপক আনন্দ দিল, পুরা রোমারিও জাতি আমরা।

    পরেরটা ব্যাপক দুঃখ দিল। বাংগালীদের শষ্ট-টার্ম প্ল্যান এখনো গেল না।


    পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : রবিন (৯৪/ককক)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।