মালায়শিয়ার চিঠি – ০৮


ঈদ আসছে আবার। ছেলেবেলায়, সারা বছর অপেক্ষা করে থাকতাম এই দিনটার জন্যে। অনেক মজার একটা দিন, পড়াশুনার বালাই নেই, নেই বকা ঝকা। সারা দিন ইচ্ছেমত ঘুরা আর টিভি দেখা। এখন অনেক বড় হয়ে গেছি, পড়াশুনা আর করা লাগে না, বকা ঝকার দিনও দেখতে দেখতে শেষ হল। তাই হয়তো ঈদ গুলো আর সেই ছেলে বেলার মত রঙ্গিন নেই আজকাল। তার পরেও গত দুই বছর বেশ মিস করেছি ঈদ। একলা থাকার এই শহরে, মায়ের হাতের লাচ্চা সেমাই আর পোলাঊ-কোরমা খুব মিস করতাম। এবার ঈদে আর মিস করতে ইচ্ছে করলো না। অফিসে ২ সপ্তাহের ছুটি নিয়ে, টিকেট কিনে এবার দেশে যাবার দিন গুনছি। ১৮ তারিখ বিকেলে অফিস শেষ করেই সোজা এয়ারপোর্ট। রাত ১০ টায় ফ্লাইট। ঢাকা পৌছে যাব ১ টায়, ছোট ভাই আসবে এয়ারপোর্ট। রাতটা কাছাকাছি কোন হোটেলে কাটিয়ে সকাল ১০টায় গাবতলি থেকে বাস ধরতে হবে। মায়ের কাছে যেতে যেতে বিকেল হয়ে যাবে। তার পরেও অনেক দিন পরে দেশে ফেরা। আহ আমার নিজের দেশ। নিজের প্রানের কাছে ফেরা।


অবশেষে, স্টুডেন্ট ভিসাকে বিদায় জানানোর সময় চলে আসছে। এই ভিসা অনেক ঝামেলার, কাজ করা যাবে না, গাড়ি কেনা যাবে না, ক্রেডিট কার্ড পাওয়া যাবে না। এবার সেই অপেক্ষাও শেষ হচ্ছে। মালেয়শিয়ান সরকার কাজ করার অনুমতি দিয়ে দিয়েছে। স্টুডেন্ট ভিসা শেষ হবে ১৯ তারিখ, ঈদের পরে ঢাকায় মালয়শিয়ান হাইকমিশন থেকে নতুন ওয়ার্কিং ভিসা নিয়ে ৩ তারিখ আবার চলে আসব। ২-৩ তারিখ ঢাকাতেই থাকব, আশাকরি তখন সিসিবির বস পাবলিক দের সাথে দেখা হবে। আড্ডাও হবে। কামস ভাইয়ের ‘কনডম গলি’ তে আড্ডা দিব, চা খাব। সানা ভাইয়ের কথা বন্ধুদের দেখব আর আইস্ক্রিম খাব। নয়া আর পুরান জামাইরে দেখব। পিরা ভাই, কাইয়ুম ভাই, তানভির ভাই, তাইফু মামার সাথে দেখা হবে। কি বলেন কাইয়ুম ভাই ?


পর পর দুটা লং উইকেন্ড পেলাম। আলসেমি করে কেটে গেল দিন গুলো। প্লান করেছিলাম শহরের বাইরে যাব ছুটি কাটাতে। কিন্তু দেশে যাবার আবেশে তাও যাওয়া হলনা। তাই কাল রাতে গেলাম সিনেমা দেখতে। ফাইনাল ডেস্টিনেশান ৪ দেখে আসলাম। আগের গুলোর চেয়ে এখানে আরও বিভৎস ভাবে মৃত্যুকে দেখানো ছাড়া এই সিনেমায় আর কিছু পেলাম না। তার চেয়ে মনে হয় ‘আপ’ দেখাই ভালো হত।


ইউটিউব থেকে গান বা মুভি ডাউন লোড করা অনেকে ঝামেলায় পড়ে যান। রিয়েল প্লেয়ার প্লাগইন দিয়ে সহজে ডাউনলোড করা যায়। তবে নতুন মজিলা ফায়ার ফক্সে এই প্লাগইন কাজ করে না। তবে সব সহজ উপায় হল, ইউটিউব থেকে যে ক্লিপটি ডাউনলোড করতে চান, তার ইউ আর এল এর আগে শুধু কিস(kiss) যোগ করে দিলেই ডাউনলোড শুরু হয়ে যাবে। উদাহরনঃ
সাধারন ইউ আর এলঃ http://www.youtube.com/watch?v=dSNsAZh5kt8
কিস ইউ আর এলঃ http://www.kissyoutube.com/watch?v=dSNsAZh5kt8
মজিলা ফায়ার ফক্সের চেহারা নিজের মত করে বদলে নিতে চাইলে, পারসোনাস ফর ফায়ার ফক্স (http://www.getpersonas.com/) প্লাগইন ব্যবহার করতে পারেন। এদের অনেক গুলো থিম আছে খুব সুন্দর।


একটা তথ্য দরকার, বিদেশে কাজ করতে যাবার সময়, জন শক্তি ও কর্মসংস্থান বুরো থেকে একটি ছাড় পত্র নিতে হয়। এটা কিভাবে পাব ? কত দিন লাগবে ? কেউ কি জানেন ?
সবাই কে আবার ঈদের শুভেচ্ছা। আসেন সবাই একটা গান শুনেন। আমার খুব প্রিয় একটা গান।

২,৪৯৩ বার দেখা হয়েছে

৩৮ টি মন্তব্য : “মালায়শিয়ার চিঠি – ০৮”

  1. তানভীর (৯৪-০০)

    তাড়াতাড়ি দেশে আইসা পর। আরও কয়েকটা দিন আগে আসলেই তো ইফতার পার্টিতে আসতে পারতা। ব্যাপার না, ঈদের পরে আরেকটা গেট-টুগেদারের ইচ্ছা আছে।

    লেখাটা ভালো লাগল। 🙂

    জবাব দিন
    • মইনুল (১৯৯২-১৯৯৮)

      প্রথমে ভাবছিলাম তোমারে ফোন দিয়া বলবো। পরে মনে হলো এইখানেই লিখে দেই।
      শ্রম ও জনশক্তি মন্ত্রনালয়ের অফিস শান্তিনগরের শেষ মাথায়, হোটেল রাজমনি ঈশাখার পাশে। ওই অফিসে ফরম পাওয়া যাবার কথা, কিন্তু পাওয়া যাবে না। বরং ওই অফিস থেকে কোনো পিওন তোমাকে অফিসের পাশের মার্কেটে দোতালায় কোনো একটা দোকানে নিয়ে যাবে। ওই দোকানের লোকেরাই তোমার ফরম পুরন করে ষ্ট্যাম্প পেপার লিখে দেবে, এমনকি তোমার অভিভাবক হিসেবে সইও দিয়ে দেবে। খুব সম্ভবত ৩০০০ টাকার ষ্ট্যাম্প কিনতে হয়। আর ওদের সার্ভিস চার্জ নেগোশিয়েবল।

      এই সব কাজ যদি ১০ টার মধ্যে করে জমা দিয়ে দিতে পারো, ওরা একটা কাগজ দেবে। সেটা নিয়ে ঈশাখা হোটেলের ঠিক বিপরীতে আরেকটা অফিস আছে, ওইখানে রেজিসট্রেশন করে আসতে হবে। আমি যখন করিয়েছিলাম, যে গার্ড ছিলো তার কাছে করুন মুখ করে জিজ্ঞেস করেছিলাম, একটু তাড়াতাড়ি করা যায় না?? সেই গার্ড ভেতরে গিয়ে কাজ করিয়ে আনে এবং আমি ৫০ টাকা সার্ভিস চার্জ দেই।

      এর পরে আবার অফিসে গেলে তোমার পাসপোর্টে ছাপ মেরে দেবে এবং তারপরে তিনতলায় গিয়ে কোনো এক অফিসারের সাথে দেখা করতে বলবে যার কাছে থেকে তুমি তোমার চুড়ান্ত অনুমোদন স্লিপ পাবে।

      তবে এইসব অফিসের লোকেরা খুব সততার সাথে ঘুষ খায়। তাই আমি এতো কাজ করতে হবে শুনে, যে কেরানীর সাথে বেশি দেখা হচ্ছিল, তাকে কিছু সার্ভিস চার্জ দিয়ে সিনেমার হলের অপোজিটে হোটেলে বসে বিরানী খেয়েছি। সে সমস্ত কাজ কারবার করে আমাকে স্লিপ দিয়ে গেসে।

      জবাব দিন
  2. বাংলাদেশে স্বাগতম, রাস্তাঘাট দেখে চলবেন, অপরিচিত লোকের দেয়া কিছু খাবেন না, বাসের জানালা দিয়ে হাত বাইরে দিয়েন না, আর পকেট সাবধানে রাখবেন।
    একটা ব্যাগ বোঝাই কইরা ম্যাগাজিন আর পকেটে ব্রিক গেম (tetris) নিয়া আইসেন, ঢাকা শহরে জ্যামের যা অবস্থা, ভাল কামে দিবো।
    বেস্ট অফ লাক।

    জবাব দিন
  3. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    সহিসালামতে দেশে এসে পৌছান...

    লেখা ভাল ছিল :thumbup:


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  4. দিহান আহসান

    ভাইয়া তাহলে দেশে যাচ্ছো, ঘুরে এসো। সবার সাথে দেখা করো, ছবিসহ পোষ্ট দাও। দেখি এইখান থেকে। 🙂

    ফাইনাল ডেস্টিনেশান দেখিনাই, এখনো। আজকে দেখার কথা অবশ্য।

    ফোন দিলে ভাইয়া? তোমার পোলাউ রান্না কেমন হলে জানালেনাতো? 😕

    ভালো থেকো, ভালোভাবে দেশে যাও। 😀

    জবাব দিন
  5. মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

    রাতটা কাছাকাছি কোন হোটেলে কাটিয়ে সকাল ১০টায় গাবতলি থেকে বাস ধরতে হবে।

    ক্যান? হোটেলে থাকতে হবে ক্যান?আমি কি মইরা গেছি নাকি? সোজা আমার বাসায় চইলা আসবেন,আমার রুম ছাইড়া দিমু।আমারে একটা মেইল দ্যান ঠিকানা পাঠায় দিতেছিঃ mash34th@hotmail.com

    আমার বাসা থুইয়া হটেল মোটেলে উঠলে কইলাম খুনাখুনি হইয়া যাইবো x-( x-( x-(

    জবাব দিন
  6. সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

    ক্যাব আর অটোরিকশা থেকে সাবধান!! প্রবাসী বুঝলে খবর আছে। মলম পার্টি সক্রিয় আছে। তারচেয়ে ভয় জীবনটা নিয়ে। কোনো ঝুঁকি নিও না, বীরত্ব দেখাতে যেও না। ক্যাব বা অটোরিকশায় একা চড়ো না, সঙ্গে কাউকে রেখো।

    দেশে অগ্রীম সুস্বাগতম। দেখা না হলে খবর আছে। ফোন নম্বর আছে তো? কামরুলদের ওখানে যখন যাবে, এই ভাইয়ের সঙ্গে মোলাকাতের ভাবনাটা বাদ দিও না!!
    :grr: :grr: :grr:


    "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : স্বপ্নচারী (১৯৯২-১৯৯৮)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।